তাফসীরঃ ফাতহুল মাজীদ
2:118
ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এই. ই. আর. এফ)
অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সংকলিত।ও সম্পাদিত
সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ-আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
সম্পাদনা পরিষদঃ-
প্রফেসর এ.কে.এম শামসুল আলম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ লাকমান হুসেন
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফী |
অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ আল-মাদানী
শায়খ মুস্তফা বিন বাহারুদ্দীন সালাফী
শায়খ ড. হাফিয় রফিকুল আল-মাদানী
শায়খ মাসউদুল আলম উমরী
শায়খ মুফায়যাল হুসাইন আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ঈসা মিয়া আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ইরফান আলী আব্বাস আল-মাদানী
শায়খ হাবিবুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী |
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
পরিবেশনায়ঃ আল খাইর
পাবলিকেশন্ম, নাজির বাজার, | ঢাকা।
সাম্প্রতিককালে সংকলিত অন্যতম কিছু তাফসীরের মধ্যে তাফসীর ফাতহুল মাজীদ
উল্লেখযোগ্য। এই তাফসীরটি শাইখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানীর তত্ত্বাবধানে
সংকলন করা হয়েছে।
খণ্ড সংখ্যাঃ ৩
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৯৮ (৮২৪ + ৯৬০ + ৮১৪)
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫০ (৯০০ + ৮৫০ + ৮০০)
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ-এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
০১. আরবী আয়াতের পাশাপাশি অতি সহজ - সরল বাংলা অনুবাদ।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
2:1
الٓـمّٓ ۚ﴿۱﴾
সুরার নাম- বাকারা,(বকনা- \বাছুর)
وَقَالَ الَّذِينَ لَا
يَعْلَمُونَ لَوْلَا يُكَلِّمُنَا اللَّهُ أَوْ تَأْتِينَآ ءَايَةٌ ۗ كَذٰلِكَ
قَالَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّثْلَ قَوْلِهِمْ ۘ تَشٰبَهَتْ قُلُوبُهُمْ ۗ
قَدْ بَيَّنَّا الْءَايٰتِ لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১১৮ ও ১১৯ নং আয়াতের তাফসীর:
আহলে কিতাব ও অন্যান্য জাতির অজ্ঞ লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে, তিনি যদি সত্যি রাসূল হন তাহলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে আমাদেরকে কথা বলিয়ে দিক বা কোন নিদর্শন নিয়ে আসুক।
তাদের এ অহেতুক দাবির কথা কুরআনের সূরা নিসা ১৫৩, সূরা আন‘আম ১২, সূরা ফুরকান ২১, সূরা ইসরা ৯০-৯৩, সূরা মুদ্দাসসির ৫২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের চাহিদানুযায়ী সব নিদর্শন দেখানোর পরও তারা কক্ষনো ঈমান আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ حَقَّتْ عَلَیْھِمْ کَلِمَةُ رَبِّکَ لَا یُؤْمِنُوْنَﮯﺫوَلَوْ جَا۬ءَتْھُمْ کُلُّ اٰیَةٍ حَتّٰی یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ)
“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাণী সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না, যদিও তাদের নিকট প্রত্যেকটি নিদর্শন আসে, যতক্ষণ না তারা মর্মান্তিক শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।”(সূরা ইউনুস ১০:৯৬-৯৭)
তাদের অন্তর পূর্ববর্তী কাফির-মুশরিকদের অন্তরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(کَذٰلِکَ مَآ اَتَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِھِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا قَالُوْا سَاحِرٌ اَوْ مَجْنُوْنٌﮃﺤاَتَوَاصَوْا بِھ۪ﺆ بَلْ ھُمْ قَوْمٌ طَاغُوْنَ)
“এভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রাসূল এসেছে, তারা বলেছেঃ তুমি তো এক জাদুকর অথবা উন্মাদ। তারা কি একে অপরকে এ উপদেশই দিয়ে এসেছে? বস্তুতঃ তারা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।”(সূরা যারিয়াত ৫১:৫২-৫৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলেন, আমি তোমাকে সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। তোমার কাজ সৎ বান্দাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করা আর নাফরমানদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা। কে জাহান্নামে যাবে আর কে যাবে না সে বিষয়ে তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যারা ঈমান আনার নয় তাদেরকে শত নিদর্শন দেখালেও ঈমান আনবে না।
২. মু’মিনদের কাজ মানুষকে আল্লাহ তা‘আলার দিকে আহ্বান করা, হিদায়াত দেয়া নয়। কারণ হিদায়াতের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার পথে একজন আহ্বানকারী মাত্র। কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সে দায়িত্ব তাঁর নয়।
আহলে কিতাব ও অন্যান্য জাতির অজ্ঞ লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে, তিনি যদি সত্যি রাসূল হন তাহলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে আমাদেরকে কথা বলিয়ে দিক বা কোন নিদর্শন নিয়ে আসুক।
তাদের এ অহেতুক দাবির কথা কুরআনের সূরা নিসা ১৫৩, সূরা আন‘আম ১২, সূরা ফুরকান ২১, সূরা ইসরা ৯০-৯৩, সূরা মুদ্দাসসির ৫২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের চাহিদানুযায়ী সব নিদর্শন দেখানোর পরও তারা কক্ষনো ঈমান আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ حَقَّتْ عَلَیْھِمْ کَلِمَةُ رَبِّکَ لَا یُؤْمِنُوْنَﮯﺫوَلَوْ جَا۬ءَتْھُمْ کُلُّ اٰیَةٍ حَتّٰی یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ)
“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাণী সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না, যদিও তাদের নিকট প্রত্যেকটি নিদর্শন আসে, যতক্ষণ না তারা মর্মান্তিক শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।”(সূরা ইউনুস ১০:৯৬-৯৭)
তাদের অন্তর পূর্ববর্তী কাফির-মুশরিকদের অন্তরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(کَذٰلِکَ مَآ اَتَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِھِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا قَالُوْا سَاحِرٌ اَوْ مَجْنُوْنٌﮃﺤاَتَوَاصَوْا بِھ۪ﺆ بَلْ ھُمْ قَوْمٌ طَاغُوْنَ)
“এভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রাসূল এসেছে, তারা বলেছেঃ তুমি তো এক জাদুকর অথবা উন্মাদ। তারা কি একে অপরকে এ উপদেশই দিয়ে এসেছে? বস্তুতঃ তারা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।”(সূরা যারিয়াত ৫১:৫২-৫৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলেন, আমি তোমাকে সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। তোমার কাজ সৎ বান্দাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করা আর নাফরমানদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা। কে জাহান্নামে যাবে আর কে যাবে না সে বিষয়ে তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যারা ঈমান আনার নয় তাদেরকে শত নিদর্শন দেখালেও ঈমান আনবে না।
২. মু’মিনদের কাজ মানুষকে আল্লাহ তা‘আলার দিকে আহ্বান করা, হিদায়াত দেয়া নয়। কারণ হিদায়াতের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার পথে একজন আহ্বানকারী মাত্র। কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সে দায়িত্ব তাঁর নয়।
2:119
إِنَّآ أَرْسَلْنٰكَ
بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا ۖ وَلَا تُسْـَٔلُ عَنْ أَصْحٰبِ الْجَحِيمِ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১১৮ ও ১১৯ নং আয়াতের তাফসীর:
আহলে কিতাব ও অন্যান্য জাতির অজ্ঞ লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে, তিনি যদি সত্যি রাসূল হন তাহলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে আমাদেরকে কথা বলিয়ে দিক বা কোন নিদর্শন নিয়ে আসুক।
তাদের এ অহেতুক দাবির কথা কুরআনের সূরা নিসা ১৫৩, সূরা আন‘আম ১২, সূরা ফুরকান ২১, সূরা ইসরা ৯০-৯৩, সূরা মুদ্দাসসির ৫২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের চাহিদানুযায়ী সব নিদর্শন দেখানোর পরও তারা কক্ষনো ঈমান আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ حَقَّتْ عَلَیْھِمْ کَلِمَةُ رَبِّکَ لَا یُؤْمِنُوْنَﮯﺫوَلَوْ جَا۬ءَتْھُمْ کُلُّ اٰیَةٍ حَتّٰی یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ)
“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাণী সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না, যদিও তাদের নিকট প্রত্যেকটি নিদর্শন আসে, যতক্ষণ না তারা মর্মান্তিক শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।”(সূরা ইউনুস ১০:৯৬-৯৭)
তাদের অন্তর পূর্ববর্তী কাফির-মুশরিকদের অন্তরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(کَذٰلِکَ مَآ اَتَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِھِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا قَالُوْا سَاحِرٌ اَوْ مَجْنُوْنٌﮃﺤاَتَوَاصَوْا بِھ۪ﺆ بَلْ ھُمْ قَوْمٌ طَاغُوْنَ)
“এভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রাসূল এসেছে, তারা বলেছেঃ তুমি তো এক জাদুকর অথবা উন্মাদ। তারা কি একে অপরকে এ উপদেশই দিয়ে এসেছে? বস্তুতঃ তারা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।”(সূরা যারিয়াত ৫১:৫২-৫৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলেন, আমি তোমাকে সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। তোমার কাজ সৎ বান্দাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করা আর নাফরমানদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা। কে জাহান্নামে যাবে আর কে যাবে না সে বিষয়ে তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যারা ঈমান আনার নয় তাদেরকে শত নিদর্শন দেখালেও ঈমান আনবে না।
২. মু’মিনদের কাজ মানুষকে আল্লাহ তা‘আলার দিকে আহ্বান করা, হিদায়াত দেয়া নয়। কারণ হিদায়াতের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার পথে একজন আহ্বানকারী মাত্র। কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সে দায়িত্ব তাঁর নয়।
আহলে কিতাব ও অন্যান্য জাতির অজ্ঞ লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে, তিনি যদি সত্যি রাসূল হন তাহলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে আমাদেরকে কথা বলিয়ে দিক বা কোন নিদর্শন নিয়ে আসুক।
তাদের এ অহেতুক দাবির কথা কুরআনের সূরা নিসা ১৫৩, সূরা আন‘আম ১২, সূরা ফুরকান ২১, সূরা ইসরা ৯০-৯৩, সূরা মুদ্দাসসির ৫২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের চাহিদানুযায়ী সব নিদর্শন দেখানোর পরও তারা কক্ষনো ঈমান আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ حَقَّتْ عَلَیْھِمْ کَلِمَةُ رَبِّکَ لَا یُؤْمِنُوْنَﮯﺫوَلَوْ جَا۬ءَتْھُمْ کُلُّ اٰیَةٍ حَتّٰی یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ)
“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাণী সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না, যদিও তাদের নিকট প্রত্যেকটি নিদর্শন আসে, যতক্ষণ না তারা মর্মান্তিক শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।”(সূরা ইউনুস ১০:৯৬-৯৭)
তাদের অন্তর পূর্ববর্তী কাফির-মুশরিকদের অন্তরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(کَذٰلِکَ مَآ اَتَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِھِمْ مِّنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا قَالُوْا سَاحِرٌ اَوْ مَجْنُوْنٌﮃﺤاَتَوَاصَوْا بِھ۪ﺆ بَلْ ھُمْ قَوْمٌ طَاغُوْنَ)
“এভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রাসূল এসেছে, তারা বলেছেঃ তুমি তো এক জাদুকর অথবা উন্মাদ। তারা কি একে অপরকে এ উপদেশই দিয়ে এসেছে? বস্তুতঃ তারা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।”(সূরা যারিয়াত ৫১:৫২-৫৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলেন, আমি তোমাকে সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। তোমার কাজ সৎ বান্দাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করা আর নাফরমানদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা। কে জাহান্নামে যাবে আর কে যাবে না সে বিষয়ে তোমাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যারা ঈমান আনার নয় তাদেরকে শত নিদর্শন দেখালেও ঈমান আনবে না।
২. মু’মিনদের কাজ মানুষকে আল্লাহ তা‘আলার দিকে আহ্বান করা, হিদায়াত দেয়া নয়। কারণ হিদায়াতের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার পথে একজন আহ্বানকারী মাত্র। কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে সে দায়িত্ব তাঁর নয়।
2:120
وَلَن تَرْضٰى عَنكَ
الْيَهُودُ وَلَا النَّصٰرٰى حَتّٰى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ ۗ قُلْ إِنَّ هُدَى
اللَّهِ هُوَ الْهُدٰى ۗ وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَآءَهُم بَعْدَ الَّذِى جَآءَكَ
مِنَ الْعِلْمِ ۙ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن وَلِىٍّ وَلَا نَصِيرٍ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২০-১২১ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা যত ছলনা, প্রশ্ন ইত্যাদি করছে সবকিছুর মূল উদ্দেশ্য হল- তারা তো তোমার ধর্মের অনুসারী হবেই না বরং তুমি যাতে তাদের ধর্মের অনুসারী হয়ে যাও এটাই তারা চায়। যদি তাদের ধর্মাবলম্বী হয়ে যাও তাহলে তোমার প্রতি তাদের কোন অভিযোগ থাকবে না এবং তারা তোমার প্রতি খুব খুশি হবে।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিখিয়ে দিচ্ছেন- বল, আমি যে দীন ইসলামের ওপর আছি তা-ই সঠিক।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধমক দিয়ে বলছেন, যদি তোমার কাছে ওয়াহী আসার পরও তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হও তাহলে তোমার প্রতি আল্লাহ তা‘আলার কোন অভিভাবকত্ব থাকবে না।
আজও ইয়াহূদী-খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে সঠিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত করার জন্য নানা পাঁয়তারা ও কৌশল অবলম্বন করছে। মনে রাখতে হবে মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদীরা ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই মুসলিমদের ক্ষতি করার জন্য পেছনে লেগে আছে, কয়েকবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হত্যা করার অপচেষ্টাও চালিয়েছিল, তাদের কোন থাকার জায়গা ছিলনা, মুসলিমরাই তাদেরকে থাকার একটু জায়গা দিয়েছে, এখন তারা মুসলিমদেরকে চ্যালেঞ্জ করছে। সুতরাং সাবধান! তারা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ থেকে দূরে সরানোর জন্য সংস্কৃতির নামে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান, লেবাস-পোষাক ও উৎসব নিয়ে আসবে, আমরা যেন কোনক্রমেই তাদের ধোঁকায় না পড়ি।
(اَلَّذِيْنَ اٰتَيْنٰهُمُ الْكِتٰبَ يَتْلُوْنَه۫)
আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি’অর্থাৎ আহলে কিতাবদের মধ্যে যেমন খারাপ চরিত্রের লোক ছিল তেমনি ভাল লোকও ছিল, যারা ধর্মগ্রন্থ তেলাওয়াত করত। যেমন আব্দুল্লাহ বিন সালাম, ওহাব বিন মুনাব্বাহসহ আরো অনেক ইয়াহূদী যারা ইসলাম গ্রহণ করার তাওফীক পেয়েছিলেন।
(حَقَّ تِلَاوَتِه۪) –
‘সত্যভাবে বুঝার মত পাঠ করে’অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে নাযিল করেছেন সেভাবে তেলাওয়াত করে। যখন জান্নাতের সুখ-শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন জান্নাত চায়। আর যখন জাহান্নামের শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন তা থেকে মুক্তি চায়। যথাযথ জানা ও মানার চেষ্টা করে। যথা-
মুহকাম আয়াতের ওপর আমল করে এবং মুতাশাবাহ আয়াতের ওপর বিশ্বাস রাখে। যা সমস্যা মনে হয় তা আলেমদের কাছে সোপর্দ করে। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, ৩৫৫)
এরাই হল সৌভাগ্যবান যারা আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতকে চিনতে পেরেছে এবং তাঁর শুকরিয়া আদায় করেছে, সকল নাবীর প্রতি ঈমান এনেছে, ঈমান আনার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে কোন পার্থক্য করেনি; এরাই প্রকৃত মু’মিন। এদেরই উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِھ۪ ھُمْ بِھ۪ یُؤْمِنُوْنَﮃوَاِذَا یُتْلٰی عَلَیْھِمْ قَالُوْٓا اٰمَنَّا بِھ۪ٓ اِنَّھُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّنَآ اِنَّا کُنَّا مِنْ قَبْلِھ۪ مُسْلِمِیْنَﮄاُولٰ۬ئِکَ یُؤْتَوْنَ اَجْرَھُمْ مَّرَّتَیْنِ بِمَا صَبَرُوْا وَیَدْرَءُوْنَ بِالْحَسَنَةِ السَّیِّئَةَ وَمِمَّا رَزَقْنٰھُمْ یُنْفِقُوْنَ)
“তার পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম, তারা তাতে বিশ্বাস করে। যখন তাদের নিকট তা আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এতে ঈমান আনি, এটা আমাদের প্রতিপালক হতে আগত সত্য। আমরা তো পূর্বেও আত্মসমর্পণকারী ছিলাম; তাদেরকে দু‘বার প্রতিদান প্রদান করা হবে, যেহেতু তারা ধৈর্যশীল এবং তারা ভাল দ্বারা মন্দের মোকাবেলা করে ও আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা হতে তারা ব্যয় করে।”(সূরা কাসাস ২৮:৫২-৫৪)
পক্ষান্তরে আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির, তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَن يَّكْفُرْ بِه۪ مِنَ الأَحْزَابِ فَالنَّارُ مَوْعِدُه۫)
“যারা একে অস্বীকার করে, জাহান্নামই তাদের প্রতিশ্র“ত স্থান।”(সূরা হুদ ১১:১৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ ولايَهُودِي وَلاَ نَصْرَانِيٌّ ثُم لَا يُؤْمِنُ بِي إِلاَّ دَخَلَ النَّارِ
(রাঃ) সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! এ উম্মাতের মধ্যে যে কেউ ইয়াহূদী হোক বা খ্রিস্টান হোক আমার নির্দেশ শোনার পর আমার প্রতি ঈমান আনল না সে জাহান্নামে যাবে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৪০)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদী, তারা চায় মুসলিমরা সঠিক ধর্ম থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাক।
২. যারা ইসলাম ধর্মের অনুশাসন যথাযথ মেনে চলে তাদের জন্য সুসংবাদ।
৩. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের পর যারা তাঁর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির ও জাহান্নামের অধিবাসী।
অত্র আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা যত ছলনা, প্রশ্ন ইত্যাদি করছে সবকিছুর মূল উদ্দেশ্য হল- তারা তো তোমার ধর্মের অনুসারী হবেই না বরং তুমি যাতে তাদের ধর্মের অনুসারী হয়ে যাও এটাই তারা চায়। যদি তাদের ধর্মাবলম্বী হয়ে যাও তাহলে তোমার প্রতি তাদের কোন অভিযোগ থাকবে না এবং তারা তোমার প্রতি খুব খুশি হবে।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিখিয়ে দিচ্ছেন- বল, আমি যে দীন ইসলামের ওপর আছি তা-ই সঠিক।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধমক দিয়ে বলছেন, যদি তোমার কাছে ওয়াহী আসার পরও তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হও তাহলে তোমার প্রতি আল্লাহ তা‘আলার কোন অভিভাবকত্ব থাকবে না।
আজও ইয়াহূদী-খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে সঠিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত করার জন্য নানা পাঁয়তারা ও কৌশল অবলম্বন করছে। মনে রাখতে হবে মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদীরা ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই মুসলিমদের ক্ষতি করার জন্য পেছনে লেগে আছে, কয়েকবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হত্যা করার অপচেষ্টাও চালিয়েছিল, তাদের কোন থাকার জায়গা ছিলনা, মুসলিমরাই তাদেরকে থাকার একটু জায়গা দিয়েছে, এখন তারা মুসলিমদেরকে চ্যালেঞ্জ করছে। সুতরাং সাবধান! তারা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ থেকে দূরে সরানোর জন্য সংস্কৃতির নামে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান, লেবাস-পোষাক ও উৎসব নিয়ে আসবে, আমরা যেন কোনক্রমেই তাদের ধোঁকায় না পড়ি।
(اَلَّذِيْنَ اٰتَيْنٰهُمُ الْكِتٰبَ يَتْلُوْنَه۫)
আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি’অর্থাৎ আহলে কিতাবদের মধ্যে যেমন খারাপ চরিত্রের লোক ছিল তেমনি ভাল লোকও ছিল, যারা ধর্মগ্রন্থ তেলাওয়াত করত। যেমন আব্দুল্লাহ বিন সালাম, ওহাব বিন মুনাব্বাহসহ আরো অনেক ইয়াহূদী যারা ইসলাম গ্রহণ করার তাওফীক পেয়েছিলেন।
(حَقَّ تِلَاوَتِه۪) –
‘সত্যভাবে বুঝার মত পাঠ করে’অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে নাযিল করেছেন সেভাবে তেলাওয়াত করে। যখন জান্নাতের সুখ-শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন জান্নাত চায়। আর যখন জাহান্নামের শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন তা থেকে মুক্তি চায়। যথাযথ জানা ও মানার চেষ্টা করে। যথা-
মুহকাম আয়াতের ওপর আমল করে এবং মুতাশাবাহ আয়াতের ওপর বিশ্বাস রাখে। যা সমস্যা মনে হয় তা আলেমদের কাছে সোপর্দ করে। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, ৩৫৫)
এরাই হল সৌভাগ্যবান যারা আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতকে চিনতে পেরেছে এবং তাঁর শুকরিয়া আদায় করেছে, সকল নাবীর প্রতি ঈমান এনেছে, ঈমান আনার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে কোন পার্থক্য করেনি; এরাই প্রকৃত মু’মিন। এদেরই উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِھ۪ ھُمْ بِھ۪ یُؤْمِنُوْنَﮃوَاِذَا یُتْلٰی عَلَیْھِمْ قَالُوْٓا اٰمَنَّا بِھ۪ٓ اِنَّھُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّنَآ اِنَّا کُنَّا مِنْ قَبْلِھ۪ مُسْلِمِیْنَﮄاُولٰ۬ئِکَ یُؤْتَوْنَ اَجْرَھُمْ مَّرَّتَیْنِ بِمَا صَبَرُوْا وَیَدْرَءُوْنَ بِالْحَسَنَةِ السَّیِّئَةَ وَمِمَّا رَزَقْنٰھُمْ یُنْفِقُوْنَ)
“তার পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম, তারা তাতে বিশ্বাস করে। যখন তাদের নিকট তা আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এতে ঈমান আনি, এটা আমাদের প্রতিপালক হতে আগত সত্য। আমরা তো পূর্বেও আত্মসমর্পণকারী ছিলাম; তাদেরকে দু‘বার প্রতিদান প্রদান করা হবে, যেহেতু তারা ধৈর্যশীল এবং তারা ভাল দ্বারা মন্দের মোকাবেলা করে ও আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা হতে তারা ব্যয় করে।”(সূরা কাসাস ২৮:৫২-৫৪)
পক্ষান্তরে আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির, তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَن يَّكْفُرْ بِه۪ مِنَ الأَحْزَابِ فَالنَّارُ مَوْعِدُه۫)
“যারা একে অস্বীকার করে, জাহান্নামই তাদের প্রতিশ্র“ত স্থান।”(সূরা হুদ ১১:১৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ ولايَهُودِي وَلاَ نَصْرَانِيٌّ ثُم لَا يُؤْمِنُ بِي إِلاَّ دَخَلَ النَّارِ
(রাঃ) সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! এ উম্মাতের মধ্যে যে কেউ ইয়াহূদী হোক বা খ্রিস্টান হোক আমার নির্দেশ শোনার পর আমার প্রতি ঈমান আনল না সে জাহান্নামে যাবে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৪০)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদী, তারা চায় মুসলিমরা সঠিক ধর্ম থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাক।
২. যারা ইসলাম ধর্মের অনুশাসন যথাযথ মেনে চলে তাদের জন্য সুসংবাদ।
৩. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের পর যারা তাঁর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির ও জাহান্নামের অধিবাসী।
2:121
الَّذِينَ ءَاتَيْنٰهُمُ
الْكِتٰبَ يَتْلُونَهُۥ حَقَّ تِلَاوَتِهِۦٓ أُولٰٓئِكَ يُؤْمِنُونَ بِهِۦ ۗ وَمَن
يَكْفُرْ بِهِۦ فَأُولٰٓئِكَ هُمُ الْخٰسِرُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২০-১২১ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা যত ছলনা, প্রশ্ন ইত্যাদি করছে সবকিছুর মূল উদ্দেশ্য হল- তারা তো তোমার ধর্মের অনুসারী হবেই না বরং তুমি যাতে তাদের ধর্মের অনুসারী হয়ে যাও এটাই তারা চায়। যদি তাদের ধর্মাবলম্বী হয়ে যাও তাহলে তোমার প্রতি তাদের কোন অভিযোগ থাকবে না এবং তারা তোমার প্রতি খুব খুশি হবে।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিখিয়ে দিচ্ছেন- বল, আমি যে দীন ইসলামের ওপর আছি তা-ই সঠিক।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধমক দিয়ে বলছেন, যদি তোমার কাছে ওয়াহী আসার পরও তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হও তাহলে তোমার প্রতি আল্লাহ তা‘আলার কোন অভিভাবকত্ব থাকবে না।
আজও ইয়াহূদী-খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে সঠিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত করার জন্য নানা পাঁয়তারা ও কৌশল অবলম্বন করছে। মনে রাখতে হবে মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদীরা ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই মুসলিমদের ক্ষতি করার জন্য পেছনে লেগে আছে, কয়েকবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হত্যা করার অপচেষ্টাও চালিয়েছিল, তাদের কোন থাকার জায়গা ছিলনা, মুসলিমরাই তাদেরকে থাকার একটু জায়গা দিয়েছে, এখন তারা মুসলিমদেরকে চ্যালেঞ্জ করছে। সুতরাং সাবধান! তারা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ থেকে দূরে সরানোর জন্য সংস্কৃতির নামে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান, লেবাস-পোষাক ও উৎসব নিয়ে আসবে, আমরা যেন কোনক্রমেই তাদের ধোঁকায় না পড়ি।
(اَلَّذِيْنَ اٰتَيْنٰهُمُ الْكِتٰبَ يَتْلُوْنَه۫)
‘আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি’অর্থাৎ আহলে কিতাবদের মধ্যে যেমন খারাপ চরিত্রের লোক ছিল তেমনি ভাল লোকও ছিল, যারা ধর্মগ্রন্থ তেলাওয়াত করত। যেমন আব্দুল্লাহ বিন সালাম, ওহাব বিন মুনাব্বাহসহ আরো অনেক ইয়াহূদী যারা ইসলাম গ্রহণ করার তাওফীক পেয়েছিলেন।
(حَقَّ تِلَاوَتِه۪) –
‘সত্যভাবে বুঝার মত পাঠ করে’অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে নাযিল করেছেন সেভাবে তেলাওয়াত করে। যখন জান্নাতের সুখ-শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন জান্নাত চায়। আর যখন জাহান্নামের শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন তা থেকে মুক্তি চায়। যথাযথ জানা ও মানার চেষ্টা করে। যথা-
মুহকাম আয়াতের ওপর আমল করে এবং মুতাশাবাহ আয়াতের ওপর বিশ্বাস রাখে। যা সমস্যা মনে হয় তা আলেমদের কাছে সোপর্দ করে। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, ৩৫৫)
এরাই হল সৌভাগ্যবান যারা আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতকে চিনতে পেরেছে এবং তাঁর শুকরিয়া আদায় করেছে, সকল নাবীর প্রতি ঈমান এনেছে, ঈমান আনার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে কোন পার্থক্য করেনি; এরাই প্রকৃত মু’মিন। এদেরই উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِھ۪ ھُمْ بِھ۪ یُؤْمِنُوْنَﮃوَاِذَا یُتْلٰی عَلَیْھِمْ قَالُوْٓا اٰمَنَّا بِھ۪ٓ اِنَّھُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّنَآ اِنَّا کُنَّا مِنْ قَبْلِھ۪ مُسْلِمِیْنَﮄاُولٰ۬ئِکَ یُؤْتَوْنَ اَجْرَھُمْ مَّرَّتَیْنِ بِمَا صَبَرُوْا وَیَدْرَءُوْنَ بِالْحَسَنَةِ السَّیِّئَةَ وَمِمَّا رَزَقْنٰھُمْ یُنْفِقُوْنَ)
“তার পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম, তারা তাতে বিশ্বাস করে। যখন তাদের নিকট তা আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এতে ঈমান আনি, এটা আমাদের প্রতিপালক হতে আগত সত্য। আমরা তো পূর্বেও আত্মসমর্পণকারী ছিলাম; তাদেরকে দু‘বার প্রতিদান প্রদান করা হবে, যেহেতু তারা ধৈর্যশীল এবং তারা ভাল দ্বারা মন্দের মোকাবেলা করে ও আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা হতে তারা ব্যয় করে।”(সূরা কাসাস ২৮:৫২-৫৪)
পক্ষান্তরে আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির, তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَن يَّكْفُرْ بِه۪ مِنَ الأَحْزَابِ فَالنَّارُ مَوْعِدُه۫)
যারা একে অস্বীকার করে, জাহান্নামই তাদের প্রতিশ্র“ত স্থান।”(সূরা হুদ ১১:১৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ ولايَهُودِي وَلاَ نَصْرَانِيٌّ ثُم لَا يُؤْمِنُ بِي إِلاَّ دَخَلَ النَّارِ
(রাঃ) সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! এ উম্মাতের মধ্যে যে কেউ ইয়াহূদী হোক বা খ্রিস্টান হোক আমার নির্দেশ শোনার পর আমার প্রতি ঈমান আনল না সে জাহান্নামে যাবে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৪০)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদী, তারা চায় মুসলিমরা সঠিক ধর্ম থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাক।
২. যারা ইসলাম ধর্মের অনুশাসন যথাযথ মেনে চলে তাদের জন্য সুসংবাদ।
৩. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের পর যারা তাঁর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির ও জাহান্নামের অধিবাসী।
অত্র আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা যত ছলনা, প্রশ্ন ইত্যাদি করছে সবকিছুর মূল উদ্দেশ্য হল- তারা তো তোমার ধর্মের অনুসারী হবেই না বরং তুমি যাতে তাদের ধর্মের অনুসারী হয়ে যাও এটাই তারা চায়। যদি তাদের ধর্মাবলম্বী হয়ে যাও তাহলে তোমার প্রতি তাদের কোন অভিযোগ থাকবে না এবং তারা তোমার প্রতি খুব খুশি হবে।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিখিয়ে দিচ্ছেন- বল, আমি যে দীন ইসলামের ওপর আছি তা-ই সঠিক।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধমক দিয়ে বলছেন, যদি তোমার কাছে ওয়াহী আসার পরও তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হও তাহলে তোমার প্রতি আল্লাহ তা‘আলার কোন অভিভাবকত্ব থাকবে না।
আজও ইয়াহূদী-খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে সঠিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত করার জন্য নানা পাঁয়তারা ও কৌশল অবলম্বন করছে। মনে রাখতে হবে মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদীরা ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই মুসলিমদের ক্ষতি করার জন্য পেছনে লেগে আছে, কয়েকবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হত্যা করার অপচেষ্টাও চালিয়েছিল, তাদের কোন থাকার জায়গা ছিলনা, মুসলিমরাই তাদেরকে থাকার একটু জায়গা দিয়েছে, এখন তারা মুসলিমদেরকে চ্যালেঞ্জ করছে। সুতরাং সাবধান! তারা আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ থেকে দূরে সরানোর জন্য সংস্কৃতির নামে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান, লেবাস-পোষাক ও উৎসব নিয়ে আসবে, আমরা যেন কোনক্রমেই তাদের ধোঁকায় না পড়ি।
(اَلَّذِيْنَ اٰتَيْنٰهُمُ الْكِتٰبَ يَتْلُوْنَه۫)
‘আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি’অর্থাৎ আহলে কিতাবদের মধ্যে যেমন খারাপ চরিত্রের লোক ছিল তেমনি ভাল লোকও ছিল, যারা ধর্মগ্রন্থ তেলাওয়াত করত। যেমন আব্দুল্লাহ বিন সালাম, ওহাব বিন মুনাব্বাহসহ আরো অনেক ইয়াহূদী যারা ইসলাম গ্রহণ করার তাওফীক পেয়েছিলেন।
(حَقَّ تِلَاوَتِه۪) –
‘সত্যভাবে বুঝার মত পাঠ করে’অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে নাযিল করেছেন সেভাবে তেলাওয়াত করে। যখন জান্নাতের সুখ-শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন জান্নাত চায়। আর যখন জাহান্নামের শাস্তি সম্বলিত আয়াত তেলাওয়াত করে তখন তা থেকে মুক্তি চায়। যথাযথ জানা ও মানার চেষ্টা করে। যথা-
মুহকাম আয়াতের ওপর আমল করে এবং মুতাশাবাহ আয়াতের ওপর বিশ্বাস রাখে। যা সমস্যা মনে হয় তা আলেমদের কাছে সোপর্দ করে। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, ৩৫৫)
এরাই হল সৌভাগ্যবান যারা আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতকে চিনতে পেরেছে এবং তাঁর শুকরিয়া আদায় করেছে, সকল নাবীর প্রতি ঈমান এনেছে, ঈমান আনার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে কোন পার্থক্য করেনি; এরাই প্রকৃত মু’মিন। এদেরই উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِھ۪ ھُمْ بِھ۪ یُؤْمِنُوْنَﮃوَاِذَا یُتْلٰی عَلَیْھِمْ قَالُوْٓا اٰمَنَّا بِھ۪ٓ اِنَّھُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّنَآ اِنَّا کُنَّا مِنْ قَبْلِھ۪ مُسْلِمِیْنَﮄاُولٰ۬ئِکَ یُؤْتَوْنَ اَجْرَھُمْ مَّرَّتَیْنِ بِمَا صَبَرُوْا وَیَدْرَءُوْنَ بِالْحَسَنَةِ السَّیِّئَةَ وَمِمَّا رَزَقْنٰھُمْ یُنْفِقُوْنَ)
“তার পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম, তারা তাতে বিশ্বাস করে। যখন তাদের নিকট তা আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এতে ঈমান আনি, এটা আমাদের প্রতিপালক হতে আগত সত্য। আমরা তো পূর্বেও আত্মসমর্পণকারী ছিলাম; তাদেরকে দু‘বার প্রতিদান প্রদান করা হবে, যেহেতু তারা ধৈর্যশীল এবং তারা ভাল দ্বারা মন্দের মোকাবেলা করে ও আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা হতে তারা ব্যয় করে।”(সূরা কাসাস ২৮:৫২-৫৪)
পক্ষান্তরে আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির, তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَن يَّكْفُرْ بِه۪ مِنَ الأَحْزَابِ فَالنَّارُ مَوْعِدُه۫)
যারা একে অস্বীকার করে, জাহান্নামই তাদের প্রতিশ্র“ত স্থান।”(সূরা হুদ ১১:১৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ ولايَهُودِي وَلاَ نَصْرَانِيٌّ ثُم لَا يُؤْمِنُ بِي إِلاَّ دَخَلَ النَّارِ
(রাঃ) সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! এ উম্মাতের মধ্যে যে কেউ ইয়াহূদী হোক বা খ্রিস্টান হোক আমার নির্দেশ শোনার পর আমার প্রতি ঈমান আনল না সে জাহান্নামে যাবে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৪০)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুসলিমদের প্রধান শত্র“ ইয়াহূদী, তারা চায় মুসলিমরা সঠিক ধর্ম থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাক।
২. যারা ইসলাম ধর্মের অনুশাসন যথাযথ মেনে চলে তাদের জন্য সুসংবাদ।
৩. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের পর যারা তাঁর প্রতি ঈমান আনবে না তারা কাফির ও জাহান্নামের অধিবাসী।
2:122
يٰبَنِىٓ إِسْرٰٓءِيلَ
اذْكُرُوا نِعْمَتِىَ الَّتِىٓ أَنْعَمْتُ عَلَيْكُمْ وَأَنِّى فَضَّلْتُكُمْ
عَلَى الْعٰلَمِينَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২২-১২৪ নং আয়াতের তাফসীর:
১২২ ও ১২৩ নং আয়াতের তাফসীর ৪৯ নং আয়াতে করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর খলিল ইবরাহীম (রাঃ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি ইবরাহীমকে কিছু “কালিমা” দ্বারা পরীক্ষা করেছেন। এ আয়াত “كلمات” বা বাক্য দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে মুফাসসিরদের কয়েকটি মত পাওয়া যায়। যেমন:
১. ইবনু আব্বাস (রাঃ)-সহ কয়েকজন সাহাবী বলেন: বাক্যগুলো হল- “الطهارة” বা পবিত্রতা। ৫টি শরীরের সাথে সম্পৃক্ত আর ৫টি মাথার সাথে সম্পৃক্ত।
মাথার সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. গোঁফ খাট করা, ২. কুলি করা, ৩. নাক পরিস্কার করা ৪. মিসওয়াক করা এবং ৫. মাথা সিঁথি করা।
শরীরের সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. নখ কাটা, ২. নাভীর নিচের লোম পরিস্কার করা, ৩. খাৎনা করা, ৪. বগলের পশম তোলা এবং ৫. শৌচকার্য করা।
এ কথা সহীহ মুসলিমের হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যশীল। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬১)
হাসান বসরী বলেন: তাঁকে পরীক্ষা করেছেন কতগুলো নির্দেশ দ্বারা; তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন। যেমন, নক্ষত্র, সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১ম খণ্ড, ৩৬০)
কেউ বলেছেন, বাক্যগুলো হল কতগুলো আদেশ ও নিষেধ। (তাফসীরে সা‘দী, পৃঃ ৪৫, তাফসীরে মুয়াসসমার: ১৯)
সঠিক কথা হল- বাক্যসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শরীয়তের বিধি-বিধান। যেমন হজ্জ ও হিজরতের বিধান এবং নমরুদের আগুনে নিক্ষেপ ইত্যাদি।
তবে হাফিয ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: আমার কাছে গ্রহণযোগ্য কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যেসকল বাক্য দ্বারা ইবরাহীমকে পরীক্ষা করেছেন তা পরেই উল্লেখ করে দিয়েছেন অর্থাৎ ইবরাহীমকে আল্লাহ তা‘আলা বললেন- “আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য ইমাম বা নেতা বানাবো।
ইবরাহীম (আঃ) নিজ বংশধরের জন্য দু‘আ করলেন। আল্লাহ তা‘আলা জবাবে বললেন, কোন যালিমকে আমি ‘মিল্লাতে ইবরাহীমের ইমামতের দায়িত্বে নিয়োগ করব না।”
“আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর দু‘আ কবূল করে তাঁর বংশে নবুওয়াত ও কিতাব দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلْنَا فِيْ ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتٰبَ)
“তার বংশধরদের দিলাম নবূওয়াত ও কিতাব।”(সূরা আনকাবুত ২৯:২৭)
তাই আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর পরবর্তীতে যত নাবী ও কিতাব প্রেরণ করেছেন সবই তাঁর বংশধরের মাঝেই প্রেরণ করেছেন। কিন্তু ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার কাছে এত মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বংশে যারা জালিম ও মুশরিক হবে তাদের কেউ আল্লাহ তা‘আলার এ প্রতিশ্র“তি পাবে না। যদি ঈমান ও সৎ আমল না থাকে তাহলে বাপ-দাদা যত বড় নাবী বা ওলী হোক আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার কোন মূল্য নেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যার আমল তাকে পিছিয়ে দিয়েছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬৯৯)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমানের দিক দিয়ে মানুষ যত বড় তার পরীক্ষাও তত বড় হয়ে থাকে।
২. কোন যালিম ও মুশরিক ইসলামী খেলাফতের উপযুক্ত নয়।
৩. যারা ঈমান, আমল, ইলম ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত তাদের নিকট থেকে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের প্রতিশ্র“তি নেয়া যাবে।
৪. নিজের ঈমান ও আমল না থাকলে বংশ মর্যাদা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
১২২ ও ১২৩ নং আয়াতের তাফসীর ৪৯ নং আয়াতে করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর খলিল ইবরাহীম (রাঃ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি ইবরাহীমকে কিছু “কালিমা” দ্বারা পরীক্ষা করেছেন। এ আয়াত “كلمات” বা বাক্য দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে মুফাসসিরদের কয়েকটি মত পাওয়া যায়। যেমন:
১. ইবনু আব্বাস (রাঃ)-সহ কয়েকজন সাহাবী বলেন: বাক্যগুলো হল- “الطهارة” বা পবিত্রতা। ৫টি শরীরের সাথে সম্পৃক্ত আর ৫টি মাথার সাথে সম্পৃক্ত।
মাথার সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. গোঁফ খাট করা, ২. কুলি করা, ৩. নাক পরিস্কার করা ৪. মিসওয়াক করা এবং ৫. মাথা সিঁথি করা।
শরীরের সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. নখ কাটা, ২. নাভীর নিচের লোম পরিস্কার করা, ৩. খাৎনা করা, ৪. বগলের পশম তোলা এবং ৫. শৌচকার্য করা।
এ কথা সহীহ মুসলিমের হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যশীল। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬১)
হাসান বসরী বলেন: তাঁকে পরীক্ষা করেছেন কতগুলো নির্দেশ দ্বারা; তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন। যেমন, নক্ষত্র, সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১ম খণ্ড, ৩৬০)
কেউ বলেছেন, বাক্যগুলো হল কতগুলো আদেশ ও নিষেধ। (তাফসীরে সা‘দী, পৃঃ ৪৫, তাফসীরে মুয়াসসমার: ১৯)
সঠিক কথা হল- বাক্যসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শরীয়তের বিধি-বিধান। যেমন হজ্জ ও হিজরতের বিধান এবং নমরুদের আগুনে নিক্ষেপ ইত্যাদি।
তবে হাফিয ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: আমার কাছে গ্রহণযোগ্য কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যেসকল বাক্য দ্বারা ইবরাহীমকে পরীক্ষা করেছেন তা পরেই উল্লেখ করে দিয়েছেন অর্থাৎ ইবরাহীমকে আল্লাহ তা‘আলা বললেন- “আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য ইমাম বা নেতা বানাবো।
ইবরাহীম (আঃ) নিজ বংশধরের জন্য দু‘আ করলেন। আল্লাহ তা‘আলা জবাবে বললেন, কোন যালিমকে আমি ‘মিল্লাতে ইবরাহীমের ইমামতের দায়িত্বে নিয়োগ করব না।”
“আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর দু‘আ কবূল করে তাঁর বংশে নবুওয়াত ও কিতাব দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلْنَا فِيْ ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتٰبَ)
“তার বংশধরদের দিলাম নবূওয়াত ও কিতাব।”(সূরা আনকাবুত ২৯:২৭)
তাই আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর পরবর্তীতে যত নাবী ও কিতাব প্রেরণ করেছেন সবই তাঁর বংশধরের মাঝেই প্রেরণ করেছেন। কিন্তু ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার কাছে এত মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বংশে যারা জালিম ও মুশরিক হবে তাদের কেউ আল্লাহ তা‘আলার এ প্রতিশ্র“তি পাবে না। যদি ঈমান ও সৎ আমল না থাকে তাহলে বাপ-দাদা যত বড় নাবী বা ওলী হোক আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার কোন মূল্য নেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যার আমল তাকে পিছিয়ে দিয়েছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬৯৯)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমানের দিক দিয়ে মানুষ যত বড় তার পরীক্ষাও তত বড় হয়ে থাকে।
২. কোন যালিম ও মুশরিক ইসলামী খেলাফতের উপযুক্ত নয়।
৩. যারা ঈমান, আমল, ইলম ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত তাদের নিকট থেকে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের প্রতিশ্র“তি নেয়া যাবে।
৪. নিজের ঈমান ও আমল না থাকলে বংশ মর্যাদা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
2:123
وَاتَّقُوا يَوْمًا لَّا
تَجْزِى نَفْسٌ عَن نَّفْسٍ شَيْـًٔا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا
تَنفَعُهَا شَفٰعَةٌ وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২২-১২৪ নং আয়াতের তাফসীর:
১২২ ও ১২৩ নং আয়াতের তাফসীর ৪৯ নং আয়াতে করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর খলিল ইবরাহীম (রাঃ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি ইবরাহীমকে কিছু “কালিমা” দ্বারা পরীক্ষা করেছেন। এ আয়াত “كلمات” বা বাক্য দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে মুফাসসিরদের কয়েকটি মত পাওয়া যায়। যেমন:
১. ইবনু আব্বাস (রাঃ)-সহ কয়েকজন সাহাবী বলেন: বাক্যগুলো হল- “الطهارة” বা পবিত্রতা। ৫টি শরীরের সাথে সম্পৃক্ত আর ৫টি মাথার সাথে সম্পৃক্ত।মাথার সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. গোঁফ খাট করা, ২. কুলি করা, ৩. নাক পরিস্কার করা ৪. মিসওয়াক করা এবং ৫. মাথা সিঁথি করা।
শরীরের সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. নখ কাটা, ২. নাভীর নিচের লোম পরিস্কার করা, ৩. খাৎনা করা, ৪. বগলের পশম তোলা এবং ৫. শৌচকার্য করা।এ কথা সহীহ মুসলিমের হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যশীল। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬১)
হাসান বসরী বলেন: তাঁকে পরীক্ষা করেছেন কতগুলো নির্দেশ দ্বারা; তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন। যেমন, নক্ষত্র, সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১ম খণ্ড, ৩৬০)
কেউ বলেছেন, বাক্যগুলো হল কতগুলো আদেশ ও নিষেধ। (তাফসীরে সা‘দী, পৃঃ ৪৫, তাফসীরে মুয়াসসমার: ১৯)
সঠিক কথা হল- বাক্যসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শরীয়তের বিধি-বিধান। যেমন হজ্জ ও হিজরতের বিধান এবং নমরুদের আগুনে নিক্ষেপ ইত্যাদি।
তবে হাফিয ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: আমার কাছে গ্রহণযোগ্য কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যেসকল বাক্য দ্বারা ইবরাহীমকে পরীক্ষা করেছেন তা পরেই উল্লেখ করে দিয়েছেন অর্থাৎ ইবরাহীমকে আল্লাহ তা‘আলা বললেন- “আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য ইমাম বা নেতা বানাবো।
ইবরাহীম (আঃ) নিজ বংশধরের জন্য দু‘আ করলেন। আল্লাহ তা‘আলা জবাবে বললেন, কোন যালিমকে আমি ‘মিল্লাতে ইবরাহীমের ইমামতের দায়িত্বে নিয়োগ করব না।”
“আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর দু‘আ কবূল করে তাঁর বংশে নবুওয়াত ও কিতাব দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلْنَا فِيْ ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتٰبَ)
“তার বংশধরদের দিলাম নবূওয়াত ও কিতাব।”(সূরা আনকাবুত ২৯:২৭)
তাই আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর পরবর্তীতে যত নাবী ও কিতাব প্রেরণ করেছেন সবই তাঁর বংশধরের মাঝেই প্রেরণ করেছেন। কিন্তু ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার কাছে এত মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বংশে যারা জালিম ও মুশরিক হবে তাদের কেউ আল্লাহ তা‘আলার এ প্রতিশ্র“তি পাবে না। যদি ঈমান ও সৎ আমল না থাকে তাহলে বাপ-দাদা যত বড় নাবী বা ওলী হোক আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার কোন মূল্য নেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যার আমল তাকে পিছিয়ে দিয়েছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬৯৯)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমানের দিক দিয়ে মানুষ যত বড় তার পরীক্ষাও তত বড় হয়ে থাকে।
২. কোন যালিম ও মুশরিক ইসলামী খেলাফতের উপযুক্ত নয়।
৩. যারা ঈমান, আমল, ইলম ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত তাদের নিকট থেকে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের প্রতিশ্র“তি নেয়া যাবে।
৪. নিজের ঈমান ও আমল না থাকলে বংশ মর্যাদা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
১২২ ও ১২৩ নং আয়াতের তাফসীর ৪৯ নং আয়াতে করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর খলিল ইবরাহীম (রাঃ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি ইবরাহীমকে কিছু “কালিমা” দ্বারা পরীক্ষা করেছেন। এ আয়াত “كلمات” বা বাক্য দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে মুফাসসিরদের কয়েকটি মত পাওয়া যায়। যেমন:
১. ইবনু আব্বাস (রাঃ)-সহ কয়েকজন সাহাবী বলেন: বাক্যগুলো হল- “الطهارة” বা পবিত্রতা। ৫টি শরীরের সাথে সম্পৃক্ত আর ৫টি মাথার সাথে সম্পৃক্ত।মাথার সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. গোঁফ খাট করা, ২. কুলি করা, ৩. নাক পরিস্কার করা ৪. মিসওয়াক করা এবং ৫. মাথা সিঁথি করা।
শরীরের সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. নখ কাটা, ২. নাভীর নিচের লোম পরিস্কার করা, ৩. খাৎনা করা, ৪. বগলের পশম তোলা এবং ৫. শৌচকার্য করা।এ কথা সহীহ মুসলিমের হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যশীল। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬১)
হাসান বসরী বলেন: তাঁকে পরীক্ষা করেছেন কতগুলো নির্দেশ দ্বারা; তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন। যেমন, নক্ষত্র, সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১ম খণ্ড, ৩৬০)
কেউ বলেছেন, বাক্যগুলো হল কতগুলো আদেশ ও নিষেধ। (তাফসীরে সা‘দী, পৃঃ ৪৫, তাফসীরে মুয়াসসমার: ১৯)
সঠিক কথা হল- বাক্যসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শরীয়তের বিধি-বিধান। যেমন হজ্জ ও হিজরতের বিধান এবং নমরুদের আগুনে নিক্ষেপ ইত্যাদি।
তবে হাফিয ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: আমার কাছে গ্রহণযোগ্য কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যেসকল বাক্য দ্বারা ইবরাহীমকে পরীক্ষা করেছেন তা পরেই উল্লেখ করে দিয়েছেন অর্থাৎ ইবরাহীমকে আল্লাহ তা‘আলা বললেন- “আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য ইমাম বা নেতা বানাবো।
ইবরাহীম (আঃ) নিজ বংশধরের জন্য দু‘আ করলেন। আল্লাহ তা‘আলা জবাবে বললেন, কোন যালিমকে আমি ‘মিল্লাতে ইবরাহীমের ইমামতের দায়িত্বে নিয়োগ করব না।”
“আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর দু‘আ কবূল করে তাঁর বংশে নবুওয়াত ও কিতাব দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلْنَا فِيْ ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتٰبَ)
“তার বংশধরদের দিলাম নবূওয়াত ও কিতাব।”(সূরা আনকাবুত ২৯:২৭)
তাই আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর পরবর্তীতে যত নাবী ও কিতাব প্রেরণ করেছেন সবই তাঁর বংশধরের মাঝেই প্রেরণ করেছেন। কিন্তু ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার কাছে এত মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বংশে যারা জালিম ও মুশরিক হবে তাদের কেউ আল্লাহ তা‘আলার এ প্রতিশ্র“তি পাবে না। যদি ঈমান ও সৎ আমল না থাকে তাহলে বাপ-দাদা যত বড় নাবী বা ওলী হোক আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার কোন মূল্য নেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যার আমল তাকে পিছিয়ে দিয়েছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬৯৯)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমানের দিক দিয়ে মানুষ যত বড় তার পরীক্ষাও তত বড় হয়ে থাকে।
২. কোন যালিম ও মুশরিক ইসলামী খেলাফতের উপযুক্ত নয়।
৩. যারা ঈমান, আমল, ইলম ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত তাদের নিকট থেকে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের প্রতিশ্র“তি নেয়া যাবে।
৪. নিজের ঈমান ও আমল না থাকলে বংশ মর্যাদা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
2:124
وَإِذِ ابْتَلٰىٓ
إِبْرٰهِۦمَ رَبُّهُۥ بِكَلِمٰتٍ فَأَتَمَّهُنَّ ۖ قَالَ إِنِّى جَاعِلُكَ
لِلنَّاسِ إِمَامًا ۖ قَالَ وَمِن ذُرِّيَّتِى ۖ قَالَ لَا يَنَالُ عَهْدِى
الظّٰلِمِينَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২২-১২৪ নং আয়াতের তাফসীর:
১২২ ও ১২৩ নং আয়াতের তাফসীর ৪৯ নং আয়াতে করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর খলিল ইবরাহীম (রাঃ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি ইবরাহীমকে কিছু “কালিমা” দ্বারা পরীক্ষা করেছেন। এ আয়াত “كلمات” বা বাক্য দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে মুফাসসিরদের কয়েকটি মত পাওয়া যায়। যেমন:
১. ইবনু আব্বাস (রাঃ)-সহ কয়েকজন সাহাবী বলেন: বাক্যগুলো হল- “الطهارة” বা পবিত্রতা। ৫টি শরীরের সাথে সম্পৃক্ত আর ৫টি মাথার সাথে সম্পৃক্ত।
মাথার সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. গোঁফ খাট করা, ২. কুলি করা, ৩. নাক পরিস্কার করা ৪. মিসওয়াক করা এবং ৫. মাথা সিঁথি করা।
শরীরের সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. নখ কাটা, ২. নাভীর নিচের লোম পরিস্কার করা, ৩. খাৎনা করা, ৪. বগলের পশম তোলা এবং ৫. শৌচকার্য করা।
এ কথা সহীহ মুসলিমের হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যশীল। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬১)
হাসান বসরী বলেন: তাঁকে পরীক্ষা করেছেন কতগুলো নির্দেশ দ্বারা; তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন। যেমন, নক্ষত্র, সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১ম খণ্ড, ৩৬০)
কেউ বলেছেন, বাক্যগুলো হল কতগুলো আদেশ ও নিষেধ। (তাফসীরে সা‘দী, পৃঃ ৪৫, তাফসীরে মুয়াসসমার: ১৯)
সঠিক কথা হল- বাক্যসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শরীয়তের বিধি-বিধান। যেমন হজ্জ ও হিজরতের বিধান এবং নমরুদের আগুনে নিক্ষেপ ইত্যাদি।
তবে হাফিয ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: আমার কাছে গ্রহণযোগ্য কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যেসকল বাক্য দ্বারা ইবরাহীমকে পরীক্ষা করেছেন তা পরেই উল্লেখ করে দিয়েছেন অর্থাৎ ইবরাহীমকে আল্লাহ তা‘আলা বললেন- “আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য ইমাম বা নেতা বানাবো।
ইবরাহীম (আঃ) নিজ বংশধরের জন্য দু‘আ করলেন। আল্লাহ তা‘আলা জবাবে বললেন, কোন যালিমকে আমি ‘মিল্লাতে ইবরাহীমের ইমামতের দায়িত্বে নিয়োগ করব না।”
“আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর দু‘আ কবূল করে তাঁর বংশে নবুওয়াত ও কিতাব দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلْنَا فِيْ ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتٰبَ)
“তার বংশধরদের দিলাম নবূওয়াত ও কিতাব।”(সূরা আনকাবুত ২৯:২৭)
তাই আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর পরবর্তীতে যত নাবী ও কিতাব প্রেরণ করেছেন সবই তাঁর বংশধরের মাঝেই প্রেরণ করেছেন। কিন্তু ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার কাছে এত মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বংশে যারা জালিম ও মুশরিক হবে তাদের কেউ আল্লাহ তা‘আলার এ প্রতিশ্র“তি পাবে না। যদি ঈমান ও সৎ আমল না থাকে তাহলে বাপ-দাদা যত বড় নাবী বা ওলী হোক আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার কোন মূল্য নেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যার আমল তাকে পিছিয়ে দিয়েছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬৯৯)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমানের দিক দিয়ে মানুষ যত বড় তার পরীক্ষাও তত বড় হয়ে থাকে।
২. কোন যালিম ও মুশরিক ইসলামী খেলাফতের উপযুক্ত নয়।
৩. যারা ঈমান, আমল, ইলম ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত তাদের নিকট থেকে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের প্রতিশ্র“তি নেয়া যাবে।
৪. নিজের ঈমান ও আমল না থাকলে বংশ মর্যাদা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
১২২ ও ১২৩ নং আয়াতের তাফসীর ৪৯ নং আয়াতে করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর খলিল ইবরাহীম (রাঃ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি ইবরাহীমকে কিছু “কালিমা” দ্বারা পরীক্ষা করেছেন। এ আয়াত “كلمات” বা বাক্য দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে মুফাসসিরদের কয়েকটি মত পাওয়া যায়। যেমন:
১. ইবনু আব্বাস (রাঃ)-সহ কয়েকজন সাহাবী বলেন: বাক্যগুলো হল- “الطهارة” বা পবিত্রতা। ৫টি শরীরের সাথে সম্পৃক্ত আর ৫টি মাথার সাথে সম্পৃক্ত।
মাথার সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. গোঁফ খাট করা, ২. কুলি করা, ৩. নাক পরিস্কার করা ৪. মিসওয়াক করা এবং ৫. মাথা সিঁথি করা।
শরীরের সাথে সম্পৃক্তগুলো হচ্ছে: ১. নখ কাটা, ২. নাভীর নিচের লোম পরিস্কার করা, ৩. খাৎনা করা, ৪. বগলের পশম তোলা এবং ৫. শৌচকার্য করা।
এ কথা সহীহ মুসলিমের হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যশীল। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬১)
হাসান বসরী বলেন: তাঁকে পরীক্ষা করেছেন কতগুলো নির্দেশ দ্বারা; তিনি তাতে ধৈর্য ধারণ করেছেন। যেমন, নক্ষত্র, সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১ম খণ্ড, ৩৬০)
কেউ বলেছেন, বাক্যগুলো হল কতগুলো আদেশ ও নিষেধ। (তাফসীরে সা‘দী, পৃঃ ৪৫, তাফসীরে মুয়াসসমার: ১৯)
সঠিক কথা হল- বাক্যসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শরীয়তের বিধি-বিধান। যেমন হজ্জ ও হিজরতের বিধান এবং নমরুদের আগুনে নিক্ষেপ ইত্যাদি।
তবে হাফিয ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: আমার কাছে গ্রহণযোগ্য কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যেসকল বাক্য দ্বারা ইবরাহীমকে পরীক্ষা করেছেন তা পরেই উল্লেখ করে দিয়েছেন অর্থাৎ ইবরাহীমকে আল্লাহ তা‘আলা বললেন- “আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য ইমাম বা নেতা বানাবো।
ইবরাহীম (আঃ) নিজ বংশধরের জন্য দু‘আ করলেন। আল্লাহ তা‘আলা জবাবে বললেন, কোন যালিমকে আমি ‘মিল্লাতে ইবরাহীমের ইমামতের দায়িত্বে নিয়োগ করব না।”
“আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর দু‘আ কবূল করে তাঁর বংশে নবুওয়াত ও কিতাব দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَجَعَلْنَا فِيْ ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتٰبَ)
“তার বংশধরদের দিলাম নবূওয়াত ও কিতাব।”(সূরা আনকাবুত ২৯:২৭)
তাই আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর পরবর্তীতে যত নাবী ও কিতাব প্রেরণ করেছেন সবই তাঁর বংশধরের মাঝেই প্রেরণ করেছেন। কিন্তু ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার কাছে এত মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বংশে যারা জালিম ও মুশরিক হবে তাদের কেউ আল্লাহ তা‘আলার এ প্রতিশ্র“তি পাবে না। যদি ঈমান ও সৎ আমল না থাকে তাহলে বাপ-দাদা যত বড় নাবী বা ওলী হোক আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার কোন মূল্য নেই। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যার আমল তাকে পিছিয়ে দিয়েছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে দিতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৬৯৯)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমানের দিক দিয়ে মানুষ যত বড় তার পরীক্ষাও তত বড় হয়ে থাকে।
২. কোন যালিম ও মুশরিক ইসলামী খেলাফতের উপযুক্ত নয়।
৩. যারা ঈমান, আমল, ইলম ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত তাদের নিকট থেকে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের প্রতিশ্র“তি নেয়া যাবে।
৪. নিজের ঈমান ও আমল না থাকলে বংশ মর্যাদা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
2:125
وَإِذْ جَعَلْنَا
الْبَيْتَ مَثَابَةً لِّلنَّاسِ وَأَمْنًا وَاتَّخِذُوا مِن مَّقَامِ إِبْرٰهِۦمَ
مُصَلًّى ۖ وَعَهِدْنَآ إِلٰىٓ إِبْرٰهِۦمَ وَإِسْمٰعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيْتِىَ
لِلطَّآئِفِينَ وَالْعٰكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২৫ নং আয়াতের তাফসীর:
উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনটি বিষয়ে আমার প্রতিপালক আমার সাথে একমত হয়েছেন। (তার মধ্যে ১টি হল: আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি “মাকামে ইবরাহীম”কে সালাতের স্থান হিসেবে গ্রহণ করে নিতেন। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী: ৪৪৮৩)
এছাড়াও এ আয়াতের কয়েকটি শানে নুযূল পাওয়া যায়। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল পৃঃ ৩০)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন একটি নিদর্শনের কথা তুলে ধরলেন যা ইবরাহীম (আঃ)-এর ইমামতের ওপর প্রমাণ বহন করে। তা হল বাইতুল্লাহ যা ইসলামের অন্যতম একটি রুকন। এ ঘরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষের প্রত্যাবর্তন স্থল বানিয়েছেন। মানুষ একবার আগমন করে পরিবারে ফিরে যাবে আবার আসবে। এরূপ বারবার মানুষের মন চাইবে আরো যাওয়ার। আরেকটি নিদর্শন হল এ ঘরকে নিরাপদ স্থান করেছেন। যত বড় অপরাধীই এখানে প্রবেশ করুক না কেন কোন প্রকার ঝগড়া, মারামারি, লুণ্ঠন এখানে করা যাবে না। এমনকি পশু পাখি ও বৃক্ষলতাও নিরাপদে থাকবে। জাহিলি যুগের মুশরিকরাও এ ঘরের সম্মান করত। ইসলাম এসে এ সম্মান আরো বৃদ্ধি করে দিয়েছে।
‘মাকামে ইবরাহীম’দ্বারা কোন্ জায়গাকে বোঝোনো হয়েছে এ নিয়ে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ দু’টি বর্ণনা হল:
১. সে পাথর যার ওপর পা রেখে ইবরাহীম (আঃ) কাবা নির্মাণ করেছিলেন। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ১৯)
২. হজ্জের সকল মাশ‘আর (স্থানসমূহ)। (তাফসীর সা‘দী পৃঃ ৪৬) তবে প্রথম মত-ই সঠিক।
এ আয়াতটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে শিয়া ও বিদ‘আতী সম্প্রদায় বলে: ওলীদের কবরে সালাত আদায় করা যাবে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা বরকত লাভের জন্য মুসল্লী ও হাজীদেরকে মাকামে ইবরাহীমে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন ।
এ আয়াতকে ওলীদের কবরে সালাত আদায়ের সপক্ষে দলীল গ্রহণ করা প্রবৃত্তির মনগড়া চিন্তার অনুসরণ ছাড়া কিছুই নয়। কারণ মাকামে ইবরাহীম কোন কবর নয় এবং কবর সংশ্লিষ্ট কোন স্থানও নয়। বরং তা বাইতুল্লাহ সংশ্লিষ্ট স্থান। এ দৃষ্টিকোণ থেকে সে স্থানটি বরকতময়। অপরপক্ষে কোন ব্যক্তির কবর শরীয়তে বরকতময় বলে প্রমাণিত নয় এবং কবরকে কেন্দ্র করে সালাত বা অন্য কোন ইবাদতও শরীয়তসম্মত নয়। এমনকি কবরস্থানে সিজদা ও সালাত আদায় করলে আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত প্রাপ্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা তাদের নাবীদের কবরকে সিজদার স্থানে পরিণত করায় তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত। (সহীহ বুখারী হা: ১৩৩০, সহীহ মুসলিম হা: ৫৩০)
আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-কে ওয়াহী করেছেন এ ঘর অপবিত্রতা ও মূর্তি হতে পবিত্র রাখতে, যাতে সকল ইবাদত পালনে কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়। এখানে শুধু কাবা ঘর সীমাবদ্ধ নয় বরং সকল মাসজিদ এ নির্দেশের শামিল। তাই প্রত্যেক মাসজিদ সকল প্রকার অপবিত্রতা ও মূর্তি থেকে পবিত্র রাখা ঈমানি দায়িত্ব।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-এর মর্যাদা জানা গেল।
২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা জানতে পারলাম।
৩. সকল মাসজিদকে অপবিত্রতা ও মূর্তি হতে পবিত্র রাখতে হবে।
৪. কোন কবরে সালাত আদায় করা যাবে না, কবরবাসী যদিও নাবী বা ওলী হয়ে থাকেন।
উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনটি বিষয়ে আমার প্রতিপালক আমার সাথে একমত হয়েছেন। (তার মধ্যে ১টি হল: আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি “মাকামে ইবরাহীম”কে সালাতের স্থান হিসেবে গ্রহণ করে নিতেন। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী: ৪৪৮৩)
এছাড়াও এ আয়াতের কয়েকটি শানে নুযূল পাওয়া যায়। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল পৃঃ ৩০)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন একটি নিদর্শনের কথা তুলে ধরলেন যা ইবরাহীম (আঃ)-এর ইমামতের ওপর প্রমাণ বহন করে। তা হল বাইতুল্লাহ যা ইসলামের অন্যতম একটি রুকন। এ ঘরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষের প্রত্যাবর্তন স্থল বানিয়েছেন। মানুষ একবার আগমন করে পরিবারে ফিরে যাবে আবার আসবে। এরূপ বারবার মানুষের মন চাইবে আরো যাওয়ার। আরেকটি নিদর্শন হল এ ঘরকে নিরাপদ স্থান করেছেন। যত বড় অপরাধীই এখানে প্রবেশ করুক না কেন কোন প্রকার ঝগড়া, মারামারি, লুণ্ঠন এখানে করা যাবে না। এমনকি পশু পাখি ও বৃক্ষলতাও নিরাপদে থাকবে। জাহিলি যুগের মুশরিকরাও এ ঘরের সম্মান করত। ইসলাম এসে এ সম্মান আরো বৃদ্ধি করে দিয়েছে।
‘মাকামে ইবরাহীম’দ্বারা কোন্ জায়গাকে বোঝোনো হয়েছে এ নিয়ে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ দু’টি বর্ণনা হল:
১. সে পাথর যার ওপর পা রেখে ইবরাহীম (আঃ) কাবা নির্মাণ করেছিলেন। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ১৯)
২. হজ্জের সকল মাশ‘আর (স্থানসমূহ)। (তাফসীর সা‘দী পৃঃ ৪৬) তবে প্রথম মত-ই সঠিক।
এ আয়াতটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে শিয়া ও বিদ‘আতী সম্প্রদায় বলে: ওলীদের কবরে সালাত আদায় করা যাবে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা বরকত লাভের জন্য মুসল্লী ও হাজীদেরকে মাকামে ইবরাহীমে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন ।
এ আয়াতকে ওলীদের কবরে সালাত আদায়ের সপক্ষে দলীল গ্রহণ করা প্রবৃত্তির মনগড়া চিন্তার অনুসরণ ছাড়া কিছুই নয়। কারণ মাকামে ইবরাহীম কোন কবর নয় এবং কবর সংশ্লিষ্ট কোন স্থানও নয়। বরং তা বাইতুল্লাহ সংশ্লিষ্ট স্থান। এ দৃষ্টিকোণ থেকে সে স্থানটি বরকতময়। অপরপক্ষে কোন ব্যক্তির কবর শরীয়তে বরকতময় বলে প্রমাণিত নয় এবং কবরকে কেন্দ্র করে সালাত বা অন্য কোন ইবাদতও শরীয়তসম্মত নয়। এমনকি কবরস্থানে সিজদা ও সালাত আদায় করলে আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত প্রাপ্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা তাদের নাবীদের কবরকে সিজদার স্থানে পরিণত করায় তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত। (সহীহ বুখারী হা: ১৩৩০, সহীহ মুসলিম হা: ৫৩০)
আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-কে ওয়াহী করেছেন এ ঘর অপবিত্রতা ও মূর্তি হতে পবিত্র রাখতে, যাতে সকল ইবাদত পালনে কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়। এখানে শুধু কাবা ঘর সীমাবদ্ধ নয় বরং সকল মাসজিদ এ নির্দেশের শামিল। তাই প্রত্যেক মাসজিদ সকল প্রকার অপবিত্রতা ও মূর্তি থেকে পবিত্র রাখা ঈমানি দায়িত্ব।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-এর মর্যাদা জানা গেল।
২. উমার (রাঃ)-এর মর্যাদা জানতে পারলাম।
৩. সকল মাসজিদকে অপবিত্রতা ও মূর্তি হতে পবিত্র রাখতে হবে।
৪. কোন কবরে সালাত আদায় করা যাবে না, কবরবাসী যদিও নাবী বা ওলী হয়ে থাকেন।
2:126
وَإِذْ قَالَ إِبْرٰهِۦمُ
رَبِّ اجْعَلْ هٰذَا بَلَدًا ءَامِنًا وَارْزُقْ أَهْلَهُۥ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَنْ
ءَامَنَ مِنْهُم بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْءَاخِرِ ۖ قَالَ وَمَن كَفَرَ
فَأُمَتِّعُهُۥ قَلِيلًا ثُمَّ أَضْطَرُّهُۥٓ إِلٰى عَذَابِ النَّارِ ۖ وَبِئْسَ
الْمَصِيرُ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২৬ থেকে ১২৯ নং আয়াতের তাফসীর:
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
2:127
وَإِذْ يَرْفَعُ
إِبْرٰهِۦمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمٰعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ
مِنَّآ ۖ إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২৬ থেকে ১২৯ নং আয়াতের তাফসীর:
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
2:128
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا
مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا
مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ ۖ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২৬ থেকে ১২৯ নং আয়াতের তাফসীর:
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
2:129
رَبَّنَا وَابْعَثْ
فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُوا عَلَيْهِمْ ءَايٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ
الْكِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ ۚ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১২৬ থেকে ১২৯ নং আয়াতের তাফসীর:
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছেন মক্কা নগরীর জন্য আর আমাদের নাবী দু‘আ করেছেন মদীনার জন্য। অত্র আয়াতে ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীদের জন্য দু‘আ করে বলেছেন, এ শহরের যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে তাদেরকে রিযিক দিন এবং শহরকে নিরাপদ করে দিন।
আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ কবূল করতঃ কাফিরদের জন্য কিছু ভোগ করার সুযোগ রেখে দিলেন কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১২৬-১২৯ নং আয়াতে ইবরাহীম (আঃ)-এর চারটি দু‘আ রয়েছে:
১২৬ নং আয়াতে মক্কার জন্য ও তার মু’মিন অধিবাসীদের জন্য।
১২৭ নং আয়াতে নিজের ও পুত্রের কাবা নির্মাণের সৎ আমল কবূল করার জন্য।
১২৮ নং আয়াতে নিজেদেরকে ও পরবর্তী বংশধরকে আনুগত্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের তাওবাহ কবূল করার জন্য।
১২৯ নং আয়াতে ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরে যাতে একজন রাসূল প্রেরণ করেন যিনি কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেবেন। কিতাব হল কুরআন, আর হিকমাত হল সুন্নাহ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ২০)
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সব দু‘আ কবূল করেছিলেন। তাঁর বংশধরে নাবীও প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّ۪نَ رَسُوْلًا مِّنْھُمْ یَتْلُوْا عَلَیْھِمْ اٰیٰتِھ۪ وَیُزَکِّیْھِمْ وَیُعَلِّمُھُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَةَﺠ وَاِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ)
“তিনিই উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) মধ্যে তাদের একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত (সুন্নাত); যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল স্পষ্ট গোমরাহীতে।” (সূরা জুমুআহ ৬২:২)
الْعَزِیْزُ অর্থ পরাক্রমশালী, সবকিছুর উপর বিজয়ী, যার ওপর কেউ জয় লাভ করতে পারে না। الْعَزِیْزُ শব্দটি عَزَّ -يَعِزُّ থেকে গঠিত, এর মূল অর্থ হল সম্মান, ইজ্জত। মূলত ইজ্জত-সম্মান হল বিজয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ)
“ইজ্জত-সম্মান আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের জন্য”(সূরা মুনাফিকুন ৬৩:৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন কাফির তার কুফরীর কারণে দুনিয়াতে রিযিক থেকে বঞ্চিত হবে না বরং তারা ইসলাম বা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।
২. মাসজিদ নির্মাণে নিজেকে সম্পৃক্ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলীর ওসিলায় দু‘আ করলে দু‘আ কবূল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. ইবাদতকারীকে ইবাদত করার পূর্বে অবশ্যই ইবাদত সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
2:130
وَمَن يَرْغَبُ عَن
مِّلَّةِ إِبْرٰهِۦمَ إِلَّا مَن سَفِهَ نَفْسَهُۥ ۚ وَلَقَدِ اصْطَفَيْنٰهُ فِى
الدُّنْيَا ۖ وَإِنَّهُۥ فِى الْءَاخِرَةِ لَمِنَ الصّٰلِحِينَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID সুরা আল বাকারা ১৩০ থেকে ১৫২ পর্যন্ত-
১৩০ থেকে ১৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
2:131
إِذْ قَالَ لَهُۥ
رَبُّهُۥٓ أَسْلِمْ ۖ قَالَ أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعٰلَمِينَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩০ থেকে ১৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
2:132
وَوَصّٰى بِهَآ
إِبْرٰهِۦمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يٰبَنِىَّ إِنَّ اللَّهَ اصْطَفٰى لَكُمُ
الدِّينَ فَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩০ থেকে ১৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
2:133
أَمْ كُنتُمْ شُهَدَآءَ
إِذْ حَضَرَ يَعْقُوبَ الْمَوْتُ إِذْ قَالَ لِبَنِيهِ مَا تَعْبُدُونَ مِنۢ
بَعْدِى قَالُوا نَعْبُدُ إِلٰهَكَ وَإِلٰهَ ءَابَآئِكَ إِبْرٰهِۦمَ وَإِسْمٰعِيلَ
وَإِسْحٰقَ إِلٰهًا وٰحِدًا وَنَحْنُ لَهُۥ مُسْلِمُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩০ থেকে ১৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
2:134
تِلْكَ أُمَّةٌ قَدْ
خَلَتْ ۖ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَلَكُم مَّا كَسَبْتُمْ ۖ وَلَا تُسْـَٔلُونَ عَمَّا
كَانُوا يَعْمَلُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩০ থেকে ১৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
এ আয়াতগুলোতে মুশরিকদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। তারা নিজেদেরকে ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করত। অথচ তারা পূর্ণ মুশরিক ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ইবরাহীম (আঃ) তো তাওহীদ মান্যকারীদের ইমাম ছিলেন। তিনি তাওহীদকে শির্ক হতে পৃথককারী ছিলেন। বরং তিনি প্রত্যেক অংশীবাদীকে ও শির্ককে এবং কৃত্রিম মা‘বূদকে আন্তরিকভাবে ঘৃণা করতেন এবং তাদের প্রতি অসস্তুষ্ট ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(قُلْ اِنَّنِیْ ھَدٰنِیْ رَبِّیْٓ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍﹰ دِیْنًا قِیَمًا مِّلَّةَ اِبْرٰھِیْمَ حَنِیْفًاﺆ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন। তা সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”(সূরা আন‘আম ৬:১৬১)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিলেন, মিল্লাতে ইবরাহীম হল দীন ইসলাম যা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ)
“এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। (সূরা নাহল ১৬:১২৩)
সুতরাং যারা ইবরাহীম (আঃ)-এর এ তাওহীদী মিল্লাত থেকে বিমুখ হবে তারা নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীম (আঃ)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করেছেন যে, তাকে দুনিয়াতে নির্বাচিত বান্দাদের আর আখিরাতে সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যখনই আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন তখনই তিনি তা যথাযথভাবে পালন করেছেন।
ইবরাহীম (আঃ) ও ইয়াকুব (আঃ) তাদের পরবর্তী বংশধরদের যে দীনের ওসীয়ত করে গেছেন তা কোন ইয়াহূদী ধর্ম নয়, কোন নাসরানী ধর্মও নয়। তা হল একমাত্র ইসলাম। এ ব্যাপারে কুরআনে অনেক আয়াত বিদ্যমান। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللہِ الْاِسْلَامُﺤ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۭا بَیْنَھُمْﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِاٰیٰتِ اللہِ فَاِنَّ اللہَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন-বিধান হচ্ছে ইসলাম। আর আহলে কিতাবরা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পরস্পরে বিদ্বেষবশতঃ মতভেদ করেছে। আর যে আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করবে, (তার জেনে রাখা উচিত) আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।”(সূরা আল ইমরান ৩:১৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْھُﺆ وَھُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আল ইমরান ৩:৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে বলেন- তোমরা দাবি কর যে, ইবরাহীম ও ইয়াকুব (আঃ) পরবর্তী বংশধরকে ইয়াহূদী ধর্মে প্রতিষ্ঠিত থাকার অসিয়ত করেছেন। তোমরা কি অসিয়তের সময় উপস্থিত ছিলে? যদি তা না হয় তাহলে তোমাদের দাবি মিথ্যা ও অহেতুক। বরং সকলেই একটাই দীনের অসিয়ত করেছেন তা হল ইসলাম। যদিও বিধি-বিধানে কিছু পার্থক্য ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّي وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
নাবীরা সকলে বৈমাত্রেয় ভাই, মাতা ভিন্ন কিন্তু সকলের দীন একটাই। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের লক্ষ করে আরো বলেন, তোমরা যারা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের সঠিক ধর্মের অনুসারী দাবি করছ, তোমাদের ঐ দোহাই দিয়ে লাভ নেই। তারা যা কিছু করেছে তা নিয়ে চলে গেছে। সুতরাং তাদের দোহাই দিয়ে কোন লাভ নেই, প্রকৃত জামিন হল সঠিক ঈমান ও সৎ আমল। যারা এ দু’টি নিয়ে আসবে তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম বর্জন করে অন্য ধর্ম অন্বেষণ করা বোকামির পরিচয়।
২. মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করা শরীয়তসম্মত। তবে তা যেন কোন জুলুম না হয়।
৩. ইয়াহূদীদের ভ্রান্ত দাবি সম্পর্কে অবগত হলাম।
৪. সকল নাবীর ধর্ম ছিল ইসলাম এবং এর দিকেই তারা স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন।
2:135
وَقَالُوا كُونُوا هُودًا
أَوْ نَصٰرٰى تَهْتَدُوا ۗ قُلْ بَلْ مِلَّةَ إِبْرٰهِۦمَ حَنِيفًا ۖ وَمَا كَانَ
مِنَ الْمُشْرِكِينَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩৫-১৩৮ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎ
الزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎ
الزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
2:136
قُولُوٓا ءَامَنَّا
بِاللَّهِ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَآ أُنزِلَ إِلٰىٓ إِبْرٰهِۦمَ
وَإِسْمٰعِيلَ وَإِسْحٰقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَمَآ أُوتِىَ مُوسٰى
وَعِيسٰى وَمَآ أُوتِىَ النَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ
أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُۥ مُسْلِمُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩৫-১৩৮ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।
নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎ
الزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।
নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎ
الزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
2:137
فَإِنْ ءَامَنُوا
بِمِثْلِ مَآ ءَامَنتُم بِهِۦ فَقَدِ اهْتَدَوا ۖ وَّإِن تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا
هُمْ فِى شِقَاقٍ ۖ فَسَيَكْفِيكَهُمُ اللَّهُ ۚ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩৫-১৩৮ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।
নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎالزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।
নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎالزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
2:138
صِبْغَةَ اللَّهِ ۖ
وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ صِبْغَةً ۖ وَنَحْنُ لَهُۥ عٰبِدُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩৫-১৩৮ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।
নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎ
الزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
ইয়াহূদীরা মুসলিমদেরকে ইয়াহূদী ধর্মের দিকে আর খ্রিস্টানরা খ্রিস্ট-ধর্মের দিকে আহ্বান করত এবং বলত: এটাই হিদায়াতের পথ।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলে দাও, মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত হিদায়াত। তিনি ছিলেন ‘হানিফ’(একনিষ্ঠ অর্থাৎ সমস্ত মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতকারী) এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। অথচ ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানধর্মের মাঝে শির্কের মিশ্রণ রয়েছে।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে এ হাদীস নিয়ে এসেছেন- আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আহলে কিতাবগণ ইবরানি ভাষায় তাওরাত পড়ে মুসলিমদের জন্য আরবি ভাষায় তাফসীর করত। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لَا تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلَا تُكَذِّبُوهُمْ، وَقُولُوا: آمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا
আহলে কিতাবদেরকে বিশ্বাস করো না আবার মিথ্যা প্রতিপন্নও করো না। বরং বল আমরা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ও আমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৫)
অত্র আয়াতে আমাদেরকে সকল নাবী-রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সকল নাবী-রাসূল এবং তাদের ওপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব সত্য বলে বিশ্বাস করব, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাব কুরআন ও তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করব।
أسباط ‘আসবাত’হল ইয়া‘কূব (আঃ)-এর বংশধরে বানী ইসরাঈলের বারটি গোত্রে যে সকল নাবী রাসূল এসেছেন তারা।
নাবী রাসূলগণের প্রতি ঈমানে চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত:
১. এ বিশ্বাস রাখা যে, তাদের রিসালাত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।
২. যে সকল নাবী-রাসলের নাম জানা যায় তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন ঈসা, মূসা, ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ।
৩. তাদের ব্যাপারে যেসব সহীহ সংবাদ এসেছে তা বিশ্বাস করা।
৪. এসব নাবী-রাসূলের মধ্যে যাকে আমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীয়ত অনুসরণ করা। (মাজমু ফাতাওয়া লি উসায়মীন)।
সকল নাবীদের ওপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাথর্ক্য করি না, অর্থাৎ এমন নয় যে, কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি আর কতক নাবীর প্রতি ঈমান রাখি না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَیْھِ مِنْ رَّبِّھ۪ وَالْمُؤْمِنُوْنَﺚ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللہِ وَمَلٰ۬ئِکَتِھ۪ وَکُتُبِھ۪ وَرُسُلِھ۪ﺤ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِھ۪ﺤ)
“রাসূল বিশ্বাস করেছেন যা তার রবের পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে এবং ঈমানদাররাও। প্রত্যেকেই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছেন। আমরা তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।”(সূরা বাকারাহ ২:২৮৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এ ঈমান আনার ফলাফল বর্ণনা করেছেন:
(وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪ وَلَمْ یُفَرِّقُوْا بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْھُمْ اُولٰ۬ئِکَ سَوْفَ یُؤْتِیْھِمْ اُجُوْرَھُمْﺚ وَکَانَ اللہُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا)
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে এবং তাঁদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য করে না তাদেরকে তিনি অবশ্যই পুরস্কার দেবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নিসা ৪:১৫২)
যদি আহলে কিতাবগণ সকল আসমানী কিতাব এবং রাসূলের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে কোন পাথর্ক্য না করে তাহলে তারা সুপথপ্রাপ্ত। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন।
(صِبْغَةَ اللّٰهِ) ‘আল্লাহর রং’অর্থাৎ
الزموا صبغة اللّٰه
আল্লাহর রং আঁকড়ে ধর। ইবনু আব্বাস (রাঃ) সহ অধিকাংশ মুফাসসির বলেন: আল্লাহর রং হল আল্লাহর দীন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দীন ইসলামে যে সকল আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে পালন কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক, তাহলেই আল্লাহ তা‘আলার রঙে রঙ্গিন হওয়া যাবে।
খ্রিস্টানদের নিকট এক প্রকার হলুদ রঙের পানি থাকে; যা প্রত্যেক খ্রিস্টানশিশুকে এবং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে পান করানো হয় যাকে খ্রিস্টান বানানোর উদ্দেশ্য থাকে।
এ অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাপটিজম’(পবিত্র বারি দ্বারা সিঞ্চিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষাদানোৎসব)। এটা তাদের কাছে অত্যধিক জরুরী ব্যাপার। এছাড়া তারা কাউকেও পবিত্র গণ্য করে না। মহান আল্লাহ তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন: আসল রং তো আল্লাহর রং। এর চেয়ে উত্তম কোন রং নেই। আর আল্লাহর রঙের তাৎপর্য হল, ইসলাম ধর্ম, যার দিকে প্রত্যেক নাবী স্বীয় জাতিকে আহ্বান করেছেন; যা ছিল তাওহীদের আহ্বান।
সুতরাং একমাত্র ইসলামই সঠিক ধর্ম, এ ধর্মের দাওয়াত নিয়ে প্রত্যেক নাবী দুনিয়াতে আগমন করেছেন। আমাদের উচিত এ ধর্মের আদেশ-নিষেধগুলো যথাযথভাবে পালন করা। বিভিন্ন দিক থেকে যারা তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে তাদের আহ্বানে সাড়া না দেয়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে হিদায়াত ও সফলতা নেই।
২. কোন একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মূলত সকল রাসূলকে অস্বীকার করার শামিল। তাই সকলের প্রতি কোন পার্থক্য ছাড়াই ঈমান আনতে হবে।
৩. ইয়াহূদ ও খ্রিস্টানরা মুসলিমদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাহায্য, প্রলোভন ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করবে আমাদের সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
৪. আমাদের সকলের উচিত ইসলামের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা, তাহলেই আমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হতে পারব।
2:139
قُلْ أَتُحَآجُّونَنَا
فِى اللَّهِ وَهُوَ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ وَلَنَآ أَعْمٰلُنَا وَلَكُمْ
أَعْمٰلُكُمْ وَنَحْنُ لَهُۥ مُخْلِصُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩৯ থেকে ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর:
المحاجة বলা হয় المجادلة বা বাদানুবাদ। যা দু’বা তার বেশি লোকের মাঝে হয়ে থাকে। যেখানে কোন মতবিরোধপূর্ণ মাসআলা নিয়ে উভয় দলে বিবাদ হলে একপক্ষ বিরোধী পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নিজের দলীল ও মতামতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ প্রয়াস চালায়।
অত্র আয়াতে এমনি একটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, আহলে কিতাবগণ বিশ্বাস করে যে, আমরাই মুসলিমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে বেশি হকদার। তিনি আমাদেরই প্রতিপালক।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি খণ্ডন করে রাসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেন যে, বল: তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং আমাদেরও প্রতিপালক। অতএব এতে ঝগড়া করার কিছুই নেই। কিন্তু তোমরা যা কিছু কর তার ফলাফল তোমরাই পাবে আর আমরা যা কিছু করছি তারও ফলাফল আমরাই পাব। আমরা এক আল্লাহ তা‘আলার ওপর বিশ্বাসী, তাঁর সাথে কোন অংশী স্থাপন করি না।
১৪০ নং আয়াত এটা তাদের আরেকটি দাবি যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও অন্যান্য নাবীগণ সবাই ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিবাদে উত্তর দিচ্ছেন,
(مَا کَانَ اِبْرٰھِیْمُ یَھُوْدِیًّا وَّلَا نَصْرَانِیًّا وَّلٰکِنْ کَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًاﺚ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“ইবরাহীম ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না, বরং তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিলেন না।”(সূরা আল ইমরান ৩:৬৭)
যাদের ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে তারাও জানে যে, ইবরাহীম (আঃ) ও অন্যান্য নাবীরা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না। তারা এ জ্ঞান ও সাক্ষ্য গোপন করেছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَه۫ مِنَ اللّٰهِ) “আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে তার চেয়ে বেশি অত্যাচারী আর কে আছে?” (সূরা বাকারাহ ২:১৪০) তাই তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত। তারা যা কিছু করে আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়ে অবগত আছেন। ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর ১৩৪ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবাদতের ক্ষেত্রে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার ফযীলত অপরিসীম।
২. প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমলের প্রতিদান দেয়া হবে, অন্যের আমলের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না, যদি না সে অন্যের আমলের কারণ হয়ে থাকে।
৩. ইয়াহূদীবাদ ও খ্রিস্টবাদ তাদের নিজেদের তৈরি করা মতবাদ।
৪. কোন প্রকার সাক্ষ্য বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে সাক্ষ্য গোপন করা হারাম।
৫. ইবরাহীম (আঃ)-সহ সকল নাবী ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন।
المحاجة বলা হয় المجادلة বা বাদানুবাদ। যা দু’বা তার বেশি লোকের মাঝে হয়ে থাকে। যেখানে কোন মতবিরোধপূর্ণ মাসআলা নিয়ে উভয় দলে বিবাদ হলে একপক্ষ বিরোধী পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নিজের দলীল ও মতামতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ প্রয়াস চালায়।
অত্র আয়াতে এমনি একটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, আহলে কিতাবগণ বিশ্বাস করে যে, আমরাই মুসলিমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে বেশি হকদার। তিনি আমাদেরই প্রতিপালক।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি খণ্ডন করে রাসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেন যে, বল: তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং আমাদেরও প্রতিপালক। অতএব এতে ঝগড়া করার কিছুই নেই। কিন্তু তোমরা যা কিছু কর তার ফলাফল তোমরাই পাবে আর আমরা যা কিছু করছি তারও ফলাফল আমরাই পাব। আমরা এক আল্লাহ তা‘আলার ওপর বিশ্বাসী, তাঁর সাথে কোন অংশী স্থাপন করি না।
১৪০ নং আয়াত এটা তাদের আরেকটি দাবি যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও অন্যান্য নাবীগণ সবাই ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিবাদে উত্তর দিচ্ছেন,
(مَا کَانَ اِبْرٰھِیْمُ یَھُوْدِیًّا وَّلَا نَصْرَانِیًّا وَّلٰکِنْ کَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًاﺚ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“ইবরাহীম ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না, বরং তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিলেন না।”(সূরা আল ইমরান ৩:৬৭)
যাদের ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে তারাও জানে যে, ইবরাহীম (আঃ) ও অন্যান্য নাবীরা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না। তারা এ জ্ঞান ও সাক্ষ্য গোপন করেছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَه۫ مِنَ اللّٰهِ) “আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে তার চেয়ে বেশি অত্যাচারী আর কে আছে?” (সূরা বাকারাহ ২:১৪০) তাই তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত। তারা যা কিছু করে আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়ে অবগত আছেন। ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর ১৩৪ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবাদতের ক্ষেত্রে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার ফযীলত অপরিসীম।
২. প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমলের প্রতিদান দেয়া হবে, অন্যের আমলের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না, যদি না সে অন্যের আমলের কারণ হয়ে থাকে।
৩. ইয়াহূদীবাদ ও খ্রিস্টবাদ তাদের নিজেদের তৈরি করা মতবাদ।
৪. কোন প্রকার সাক্ষ্য বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে সাক্ষ্য গোপন করা হারাম।
৫. ইবরাহীম (আঃ)-সহ সকল নাবী ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন।
2:140
أَمْ تَقُولُونَ إِنَّ
إِبْرٰهِۦمَ وَإِسْمٰعِيلَ وَإِسْحٰقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطَ كَانُوا هُودًا
أَوْ نَصٰرٰى ۗ قُلْ ءَأَنتُمْ أَعْلَمُ أَمِ اللَّهُ ۗ وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن
كَتَمَ شَهٰدَةً عِندَهُۥ مِنَ اللَّهِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمَّا
تَعْمَلُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩৯ থেকে ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর:
المحاجة বলা হয় المجادلة বা বাদানুবাদ। যা দু’বা তার বেশি লোকের মাঝে হয়ে থাকে। যেখানে কোন মতবিরোধপূর্ণ মাসআলা নিয়ে উভয় দলে বিবাদ হলে একপক্ষ বিরোধী পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নিজের দলীল ও মতামতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ প্রয়াস চালায়।
অত্র আয়াতে এমনি একটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, আহলে কিতাবগণ বিশ্বাস করে যে, আমরাই মুসলিমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে বেশি হকদার। তিনি আমাদেরই প্রতিপালক।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি খণ্ডন করে রাসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেন যে, বল: তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং আমাদেরও প্রতিপালক। অতএব এতে ঝগড়া করার কিছুই নেই। কিন্তু তোমরা যা কিছু কর তার ফলাফল তোমরাই পাবে আর আমরা যা কিছু করছি তারও ফলাফল আমরাই পাব। আমরা এক আল্লাহ তা‘আলার ওপর বিশ্বাসী, তাঁর সাথে কোন অংশী স্থাপন করি না।
১৪০ নং আয়াত এটা তাদের আরেকটি দাবি যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও অন্যান্য নাবীগণ সবাই ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিবাদে উত্তর দিচ্ছেন,
(مَا کَانَ اِبْرٰھِیْمُ یَھُوْدِیًّا وَّلَا نَصْرَانِیًّا وَّلٰکِنْ کَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًاﺚ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“ইবরাহীম ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না, বরং তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিলেন না।”(সূরা আল ইমরান ৩:৬৭)
যাদের ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে তারাও জানে যে, ইবরাহীম (আঃ) ও অন্যান্য নাবীরা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না। তারা এ জ্ঞান ও সাক্ষ্য গোপন করেছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَه۫ مِنَ اللّٰهِ) “আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে তার চেয়ে বেশি অত্যাচারী আর কে আছে?” (সূরা বাকারাহ ২:১৪০) তাই তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত। তারা যা কিছু করে আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়ে অবগত আছেন। ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর ১৩৪ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবাদতের ক্ষেত্রে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার ফযীলত অপরিসীম।
২. প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমলের প্রতিদান দেয়া হবে, অন্যের আমলের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না, যদি না সে অন্যের আমলের কারণ হয়ে থাকে।
৩. ইয়াহূদীবাদ ও খ্রিস্টবাদ তাদের নিজেদের তৈরি করা মতবাদ।
৪. কোন প্রকার সাক্ষ্য বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে সাক্ষ্য গোপন করা হারাম।
৫. ইবরাহীম (আঃ)-সহ সকল নাবী ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন।
المحاجة বলা হয় المجادلة বা বাদানুবাদ। যা দু’বা তার বেশি লোকের মাঝে হয়ে থাকে। যেখানে কোন মতবিরোধপূর্ণ মাসআলা নিয়ে উভয় দলে বিবাদ হলে একপক্ষ বিরোধী পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নিজের দলীল ও মতামতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ প্রয়াস চালায়।
অত্র আয়াতে এমনি একটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, আহলে কিতাবগণ বিশ্বাস করে যে, আমরাই মুসলিমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে বেশি হকদার। তিনি আমাদেরই প্রতিপালক।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি খণ্ডন করে রাসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেন যে, বল: তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং আমাদেরও প্রতিপালক। অতএব এতে ঝগড়া করার কিছুই নেই। কিন্তু তোমরা যা কিছু কর তার ফলাফল তোমরাই পাবে আর আমরা যা কিছু করছি তারও ফলাফল আমরাই পাব। আমরা এক আল্লাহ তা‘আলার ওপর বিশ্বাসী, তাঁর সাথে কোন অংশী স্থাপন করি না।
১৪০ নং আয়াত এটা তাদের আরেকটি দাবি যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও অন্যান্য নাবীগণ সবাই ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিবাদে উত্তর দিচ্ছেন,
(مَا کَانَ اِبْرٰھِیْمُ یَھُوْدِیًّا وَّلَا نَصْرَانِیًّا وَّلٰکِنْ کَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًاﺚ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“ইবরাহীম ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না, বরং তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিলেন না।”(সূরা আল ইমরান ৩:৬৭)
যাদের ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে তারাও জানে যে, ইবরাহীম (আঃ) ও অন্যান্য নাবীরা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না। তারা এ জ্ঞান ও সাক্ষ্য গোপন করেছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَه۫ مِنَ اللّٰهِ) “আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে তার চেয়ে বেশি অত্যাচারী আর কে আছে?” (সূরা বাকারাহ ২:১৪০) তাই তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত। তারা যা কিছু করে আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়ে অবগত আছেন। ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর ১৩৪ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবাদতের ক্ষেত্রে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার ফযীলত অপরিসীম।
২. প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমলের প্রতিদান দেয়া হবে, অন্যের আমলের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না, যদি না সে অন্যের আমলের কারণ হয়ে থাকে।
৩. ইয়াহূদীবাদ ও খ্রিস্টবাদ তাদের নিজেদের তৈরি করা মতবাদ।
৪. কোন প্রকার সাক্ষ্য বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে সাক্ষ্য গোপন করা হারাম।
৫. ইবরাহীম (আঃ)-সহ সকল নাবী ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন।
2:141
تِلْكَ أُمَّةٌ قَدْ
خَلَتْ ۖ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَلَكُم مَّا كَسَبْتُمْ ۖ وَلَا تُسْـَٔلُونَ عَمَّا
كَانُوا يَعْمَلُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৩৯ থেকে ১৪১ নং
আয়াতের তাফসীর:
المحاجة বলা হয় المجادلة বা বাদানুবাদ। যা দু’বা তার বেশি লোকের মাঝে হয়ে থাকে। যেখানে কোন মতবিরোধপূর্ণ মাসআলা নিয়ে উভয় দলে বিবাদ হলে একপক্ষ বিরোধী পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নিজের দলীল ও মতামতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ প্রয়াস চালায়।
অত্র আয়াতে এমনি একটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, আহলে কিতাবগণ বিশ্বাস করে যে, আমরাই মুসলিমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে বেশি হকদার। তিনি আমাদেরই প্রতিপালক।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি খণ্ডন করে রাসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেন যে, বল: তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং আমাদেরও প্রতিপালক। অতএব এতে ঝগড়া করার কিছুই নেই। কিন্তু তোমরা যা কিছু কর তার ফলাফল তোমরাই পাবে আর আমরা যা কিছু করছি তারও ফলাফল আমরাই পাব। আমরা এক আল্লাহ তা‘আলার ওপর বিশ্বাসী, তাঁর সাথে কোন অংশী স্থাপন করি না।
১৪০ নং আয়াত এটা তাদের আরেকটি দাবি যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও অন্যান্য নাবীগণ সবাই ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিবাদে উত্তর দিচ্ছেন,
(مَا کَانَ اِبْرٰھِیْمُ یَھُوْدِیًّا وَّلَا نَصْرَانِیًّا وَّلٰکِنْ کَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًاﺚ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“ইবরাহীম ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না, বরং তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিলেন না।”(সূরা আল ইমরান ৩:৬৭)
যাদের ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে তারাও জানে যে, ইবরাহীম (আঃ) ও অন্যান্য নাবীরা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না। তারা এ জ্ঞান ও সাক্ষ্য গোপন করেছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَه۫ مِنَ اللّٰهِ) “আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে তার চেয়ে বেশি অত্যাচারী আর কে আছে?” (সূরা বাকারাহ ২:১৪০) তাই তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত। তারা যা কিছু করে আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়ে অবগত আছেন। ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর ১৩৪ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবাদতের ক্ষেত্রে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার ফযীলত অপরিসীম।
২. প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমলের প্রতিদান দেয়া হবে, অন্যের আমলের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না, যদি না সে অন্যের আমলের কারণ হয়ে থাকে।
৩. ইয়াহূদীবাদ ও খ্রিস্টবাদ তাদের নিজেদের তৈরি করা মতবাদ।
৪. কোন প্রকার সাক্ষ্য বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে সাক্ষ্য গোপন করা হারাম।
৫. ইবরাহীম (আঃ)-সহ সকল নাবী ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন।
المحاجة বলা হয় المجادلة বা বাদানুবাদ। যা দু’বা তার বেশি লোকের মাঝে হয়ে থাকে। যেখানে কোন মতবিরোধপূর্ণ মাসআলা নিয়ে উভয় দলে বিবাদ হলে একপক্ষ বিরোধী পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নিজের দলীল ও মতামতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ প্রয়াস চালায়।
অত্র আয়াতে এমনি একটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, আহলে কিতাবগণ বিশ্বাস করে যে, আমরাই মুসলিমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে বেশি হকদার। তিনি আমাদেরই প্রতিপালক।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি খণ্ডন করে রাসূলুলাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেন যে, বল: তিনি তোমাদের প্রতিপালক এবং আমাদেরও প্রতিপালক। অতএব এতে ঝগড়া করার কিছুই নেই। কিন্তু তোমরা যা কিছু কর তার ফলাফল তোমরাই পাবে আর আমরা যা কিছু করছি তারও ফলাফল আমরাই পাব। আমরা এক আল্লাহ তা‘আলার ওপর বিশ্বাসী, তাঁর সাথে কোন অংশী স্থাপন করি না।
১৪০ নং আয়াত এটা তাদের আরেকটি দাবি যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব ও অন্যান্য নাবীগণ সবাই ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিবাদে উত্তর দিচ্ছেন,
(مَا کَانَ اِبْرٰھِیْمُ یَھُوْدِیًّا وَّلَا نَصْرَانِیًّا وَّلٰکِنْ کَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًاﺚ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ)
“ইবরাহীম ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না, বরং তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিলেন না।”(সূরা আল ইমরান ৩:৬৭)
যাদের ন্যূনতম জ্ঞান রয়েছে তারাও জানে যে, ইবরাহীম (আঃ) ও অন্যান্য নাবীরা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না। তারা এ জ্ঞান ও সাক্ষ্য গোপন করেছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَه۫ مِنَ اللّٰهِ) “আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে তার চেয়ে বেশি অত্যাচারী আর কে আছে?” (সূরা বাকারাহ ২:১৪০) তাই তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত। তারা যা কিছু করে আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়ে অবগত আছেন। ১৪১ নং আয়াতের তাফসীর ১৩৪ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইবাদতের ক্ষেত্রে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতার ফযীলত অপরিসীম।
২. প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমলের প্রতিদান দেয়া হবে, অন্যের আমলের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না, যদি না সে অন্যের আমলের কারণ হয়ে থাকে।
৩. ইয়াহূদীবাদ ও খ্রিস্টবাদ তাদের নিজেদের তৈরি করা মতবাদ।
৪. কোন প্রকার সাক্ষ্য বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে সাক্ষ্য গোপন করা হারাম।
৫. ইবরাহীম (আঃ)-সহ সকল নাবী ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন।
2:142
سَيَقُولُ السُّفَهَآءُ
مِنَ النَّاسِ مَا وَلّٰىهُمْ عَن قِبْلَتِهِمُ الَّتِى كَانُوا عَلَيْهَا ۚ قُل
لِّلَّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ ۚ يَهْدِى مَن يَشَآءُ إِلٰى صِرٰطٍ
مُّسْتَقِيمٍ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪২ থেকে ১৪৪ নং
আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
সাহাবী বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মদীনায় আগমণ করার পর) বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন আর বারবার আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের অপেক্ষা করতেন। (কখন বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করার নির্দেশ আসবে) তখন
قَدْ نَرَي .... يَعْمَلُونَ এ আয়াত নাযিল হয়। (ইবনু কাসীর)
এরপর বাইতুল্লাহ কেবলা হিসেবে নির্ধারিত হয়। এ সময় সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, কেবলা পরিবর্তনের পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের অবস্থা কী হবে? যদি আমরা জানতে পারতাম এবং আমরা যে এতদিন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেছি তার কী হবে? তখন وَمَا كَانَ اللّٰهُ.... আয়াত নাযিল হয়।
যখন কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেল তখন আহলে কিতাবের নির্বোধ লোকেরা বলতে লাগল কিসে তাদেরকে পূর্বের কেবলা থেকে ফিরিয়ে নিল? তখন
(سَيَقُولُ السُّفَهَاء مِنَ النَّاسِ... )
আয়াত নাযিল হয়।
বারা বিন আযিব (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার পর ১৬-১৭ মাস পর্যন্ত বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন। কিন্তু তিনি পছন্দ করতেন কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে। তখন
(قَدْ نَرَي . يَعْمَلُونَ....)
আয়াত নাযিল হয়।
এ আয়াত অবতীর্ণের পর থেকে মুসলিমগণ কাবামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় ইয়াহূদী নির্বোধেরা বলতে লাগল-
(مَا وَلّٰهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِيْ كَانُوْا عَلَيْهَا)
“কিসে তাদেরকে সেই কেবলা হতে ফিরিয়ে দিল যার দিকে তারা ছিল?” তখন
(قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ ...... مُّسْتَقِیْمٍ)
নাযিল হয়। এছাড়া আরো বর্ণনা রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬, ইবনু কাসীর ১খণ্ড, পৃঃ ৪০৬)
কেবলা পরিবর্তন কোন্ সালাতে হয়েছিল তা নিয়ে বেশ মতামত পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল, আসর সালাতে (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬)। অন্যান্য বর্ণনা এর বিপরীত নয়। কারণ যারা যে সালাতের সময় পরিবর্তন পেয়েছিলেন তারা সে সালাতের কথা বলেছেন।
আয়াতে أمة وسطا এর অর্থ أمة خياراً وعدولاً বা সর্বশ্রেষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ ও মধ্যমপন্থী জাতি। যেমন বলা হয়
قريش أوسط العرب نسباً وداراً
বা কুরাইশগণ বংশ ও ঘর বাড়ির দিক দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ আরব। আরো বলা হয়:
صلاة العصر صلاة الوسطي
আসরের সালাত উৎকৃষ্ট ও মধ্যম সালাত। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ উৎকৃষ্ট ও মধ্যমপন্থী জাতিকে একটি পরিপূর্ণ শরীয়ত ও সুপ্রতিষ্ঠিত দীন দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ اجْتَبٰٿکُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَیْکُمْ فِی الدِّیْنِ مِنْ حَرَجٍﺚ مِلَّةَ اَبِیْکُمْ اِبْرٰھِیْمَﺚ ھُوَ سَمّٰٿکُمُ الْمُسْلِمِیْنَﺃ مِنْ قَبْلُ وَفِیْ ھٰذَا لِیَکُوْنَ الرَّسُوْلُ شَھِیْدًا عَلَیْکُمْ وَتَکُوْنُوْا شُھَدَا۬ئَ عَلَی النَّاسِﺊ)
“তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’এবং এ কিতাবেও; যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্য।”(সূরা হজ্জ ২২:৭৮)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত দিবসে নূহ (আঃ)-কে ডাকা হবে, তিনি বলবেন, হে প্রভু! আমি উপস্থিত। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি কি তোমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেন: হ্যাঁ পৌঁছে দিয়েছিলাম। তখন তাঁর উম্মাতকে জিজ্ঞাসা করা হবে। নূহ তোমাদের নিকট (নবুওয়াতের বাণী) পৌঁছে দিয়েছে কি? তারা বলবে: আমাদের কাছে কোন ভীতি প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সাক্ষী কে? নূহ (আঃ) বলবেন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাত। তখন (উম্মাতে মুহাম্মাদী) সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, তিনি দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন:
(وَكذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا)
(সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৭)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَکَیْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ کُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَھِیْدٍ وَّجِئْنَا بِکَ عَلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ شَھِیْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?”। (সূরা নিসা ৪:৪১)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত মু’মিনের মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছেন।
এ কেবলা পরিবর্তন এ জন্য করা হয়েছে যাতে আল্লাহ তা‘আলা জেনে নেন কারা প্রকৃতপক্ষে রাসূলের অনুসারী আর কারা মুনাফিক।
ইসলামের কোন আদেশ পালন বা নিষেধকৃত বিষয় বর্জন করা মু’মিন ছাড়া অন্যদের জন্য বড়ই কঠিন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذَا مَآ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْھُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ اَیُّکُمْ زَادَتْھُ ھٰذِھ۪ٓ اِیْمَانًاﺆ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْھُمْ اِیْمَانًا وَّھُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَوَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِھِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْھُمْ رِجْسًا اِلٰی رِجْسِھِمْ)
“যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করলো?’যারা মু’মিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়। এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরও কলুষ যুক্ত করে।”(সূরা তাওবাহ ৯:১২৪-২৫)
(وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ)
‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমান (সালাত) বিনষ্ট করে দিবেন’এখানে ঈমান সালাত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সালাতকে ঈমান বলার কারণ হল সালাত ঈমানের পরিচায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الْفَرْقُ بَيْنَ الْعَبْدِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
আল্লাহ তা‘আলার দাসত্ব ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হল সালাত বর্জন করা। (সহীহ মুসলিম হা:৮২)
(فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا)
‘তাই আমি তোমাকে ঐ কেবলামুখীই করব যা তুমি কামনা করছ’এ অংশটুকুর তাফসীর হল
(فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ)
“তুমি মাসজিদে হারামের দিকে (কা‘বার দিকে) তোমার মুখমণ্ডল ফিরিয়ে নাও।”
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষকে সালাতে কাবামুখী হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। সে ব্যক্তি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ দিকের অর্থাৎ পৃথিবীর যে কোন দিকের অধিবাসীই হোক না কেন।
সালাতের কেবলা হল বাইতুল্লাহ, তবে সফরে নফল সালাত ও যুদ্ধের ময়দানের ফরয সালাত ব্যতীত। কেননা তাতে কেবলামুখী হওয়া কঠিন বিধায় জরুরী নয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৫)
আহলে কিতাব বিশেষ করে ইয়াহূদীরা জানে যে, এ কেবলা পরিবর্তন সত্য এবং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। কিন্তু অহঙ্কারবশত তা প্রত্যাখ্যান করে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা কেন এ বিধান দিলেন বা কেন পূর্বের বিধান বাতিল করলেন ইত্যাদি প্রশ্ন করা ঈমানদারদের সমীচীন নয়। বরং ঈমানের পরিচয় হল আল্লাহ তা‘আলা যখন যে বিধান দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেয়া।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামে বিধান রহিতকরণ শরীয়তসিদ্ধ। যেমন এখানে বাইতুল মুকাদ্দাসের কেবলা রহিত করে বাইতুল্লাহকে নির্ধারণ করা হল।
২. কেবল মুনাফিক ও কাফিররাই শরীয়তের বিধি-বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকে।
৩. সকল উম্মাতের ওপর উম্মাতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠত্ব সর্ম্পকে জানলাম।
৪. বিভিন্ন সময় বিধি-বিধানের বদল করে আল্লাহ তা‘আলা পরীক্ষা করেন কারা প্রকৃত ঈমানদার।
৫. শরীয়তের বিধান যত বড়ই হোক না কেন মু’মিনের কাছে তা সহজসাধ্য; পক্ষান্তরে মুনাফিক ও কাফিরের কাছে আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার মত কঠিন।
৬. অজানার কারণে কেবলার ভিন্নদিকে সালাত আদায় করলে সালাত পুনরাবৃত্তি করতে হবে না।
৭. সারা পৃথিবীবাসীর জন্য একমাত্র কেবলা কাবা, কেউ স্বেচ্ছায় অন্য কেবলা গ্রহণ করলে তা প্রত্যাখ্যাত।
শানে নুযূল:
সাহাবী বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মদীনায় আগমণ করার পর) বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন আর বারবার আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের অপেক্ষা করতেন। (কখন বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করার নির্দেশ আসবে) তখন
قَدْ نَرَي .... يَعْمَلُونَ এ আয়াত নাযিল হয়। (ইবনু কাসীর)
এরপর বাইতুল্লাহ কেবলা হিসেবে নির্ধারিত হয়। এ সময় সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, কেবলা পরিবর্তনের পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের অবস্থা কী হবে? যদি আমরা জানতে পারতাম এবং আমরা যে এতদিন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেছি তার কী হবে? তখন وَمَا كَانَ اللّٰهُ.... আয়াত নাযিল হয়।
যখন কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেল তখন আহলে কিতাবের নির্বোধ লোকেরা বলতে লাগল কিসে তাদেরকে পূর্বের কেবলা থেকে ফিরিয়ে নিল? তখন
(سَيَقُولُ السُّفَهَاء مِنَ النَّاسِ... )
আয়াত নাযিল হয়।
বারা বিন আযিব (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার পর ১৬-১৭ মাস পর্যন্ত বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন। কিন্তু তিনি পছন্দ করতেন কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে। তখন
(قَدْ نَرَي . يَعْمَلُونَ....)
আয়াত নাযিল হয়।
এ আয়াত অবতীর্ণের পর থেকে মুসলিমগণ কাবামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় ইয়াহূদী নির্বোধেরা বলতে লাগল-
(مَا وَلّٰهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِيْ كَانُوْا عَلَيْهَا)
“কিসে তাদেরকে সেই কেবলা হতে ফিরিয়ে দিল যার দিকে তারা ছিল?” তখন
(قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ ...... مُّسْتَقِیْمٍ)
নাযিল হয়। এছাড়া আরো বর্ণনা রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬, ইবনু কাসীর ১খণ্ড, পৃঃ ৪০৬)
কেবলা পরিবর্তন কোন্ সালাতে হয়েছিল তা নিয়ে বেশ মতামত পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল, আসর সালাতে (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬)। অন্যান্য বর্ণনা এর বিপরীত নয়। কারণ যারা যে সালাতের সময় পরিবর্তন পেয়েছিলেন তারা সে সালাতের কথা বলেছেন।
আয়াতে أمة وسطا এর অর্থ أمة خياراً وعدولاً বা সর্বশ্রেষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ ও মধ্যমপন্থী জাতি। যেমন বলা হয়
قريش أوسط العرب نسباً وداراً
বা কুরাইশগণ বংশ ও ঘর বাড়ির দিক দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ আরব। আরো বলা হয়:
صلاة العصر صلاة الوسطي
আসরের সালাত উৎকৃষ্ট ও মধ্যম সালাত। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ উৎকৃষ্ট ও মধ্যমপন্থী জাতিকে একটি পরিপূর্ণ শরীয়ত ও সুপ্রতিষ্ঠিত দীন দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ اجْتَبٰٿکُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَیْکُمْ فِی الدِّیْنِ مِنْ حَرَجٍﺚ مِلَّةَ اَبِیْکُمْ اِبْرٰھِیْمَﺚ ھُوَ سَمّٰٿکُمُ الْمُسْلِمِیْنَﺃ مِنْ قَبْلُ وَفِیْ ھٰذَا لِیَکُوْنَ الرَّسُوْلُ شَھِیْدًا عَلَیْکُمْ وَتَکُوْنُوْا شُھَدَا۬ئَ عَلَی النَّاسِﺊ)
“তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’এবং এ কিতাবেও; যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্য।”(সূরা হজ্জ ২২:৭৮)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত দিবসে নূহ (আঃ)-কে ডাকা হবে, তিনি বলবেন, হে প্রভু! আমি উপস্থিত। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি কি তোমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেন: হ্যাঁ পৌঁছে দিয়েছিলাম। তখন তাঁর উম্মাতকে জিজ্ঞাসা করা হবে। নূহ তোমাদের নিকট (নবুওয়াতের বাণী) পৌঁছে দিয়েছে কি? তারা বলবে: আমাদের কাছে কোন ভীতি প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সাক্ষী কে? নূহ (আঃ) বলবেন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাত। তখন (উম্মাতে মুহাম্মাদী) সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, তিনি দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন:
(وَكذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا)
(সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৭)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَکَیْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ کُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَھِیْدٍ وَّجِئْنَا بِکَ عَلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ شَھِیْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?”। (সূরা নিসা ৪:৪১)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত মু’মিনের মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছেন।
এ কেবলা পরিবর্তন এ জন্য করা হয়েছে যাতে আল্লাহ তা‘আলা জেনে নেন কারা প্রকৃতপক্ষে রাসূলের অনুসারী আর কারা মুনাফিক।
ইসলামের কোন আদেশ পালন বা নিষেধকৃত বিষয় বর্জন করা মু’মিন ছাড়া অন্যদের জন্য বড়ই কঠিন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذَا مَآ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْھُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ اَیُّکُمْ زَادَتْھُ ھٰذِھ۪ٓ اِیْمَانًاﺆ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْھُمْ اِیْمَانًا وَّھُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَوَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِھِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْھُمْ رِجْسًا اِلٰی رِجْسِھِمْ)
“যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করলো?’যারা মু’মিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়। এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরও কলুষ যুক্ত করে।”(সূরা তাওবাহ ৯:১২৪-২৫)
(وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ)
‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমান (সালাত) বিনষ্ট করে দিবেন’এখানে ঈমান সালাত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সালাতকে ঈমান বলার কারণ হল সালাত ঈমানের পরিচায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الْفَرْقُ بَيْنَ الْعَبْدِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
আল্লাহ তা‘আলার দাসত্ব ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হল সালাত বর্জন করা। (সহীহ মুসলিম হা:৮২)
(فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا)
‘তাই আমি তোমাকে ঐ কেবলামুখীই করব যা তুমি কামনা করছ’এ অংশটুকুর তাফসীর হল
(فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ)
“তুমি মাসজিদে হারামের দিকে (কা‘বার দিকে) তোমার মুখমণ্ডল ফিরিয়ে নাও।”
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষকে সালাতে কাবামুখী হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। সে ব্যক্তি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ দিকের অর্থাৎ পৃথিবীর যে কোন দিকের অধিবাসীই হোক না কেন।
সালাতের কেবলা হল বাইতুল্লাহ, তবে সফরে নফল সালাত ও যুদ্ধের ময়দানের ফরয সালাত ব্যতীত। কেননা তাতে কেবলামুখী হওয়া কঠিন বিধায় জরুরী নয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৫)
আহলে কিতাব বিশেষ করে ইয়াহূদীরা জানে যে, এ কেবলা পরিবর্তন সত্য এবং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। কিন্তু অহঙ্কারবশত তা প্রত্যাখ্যান করে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা কেন এ বিধান দিলেন বা কেন পূর্বের বিধান বাতিল করলেন ইত্যাদি প্রশ্ন করা ঈমানদারদের সমীচীন নয়। বরং ঈমানের পরিচয় হল আল্লাহ তা‘আলা যখন যে বিধান দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেয়া।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামে বিধান রহিতকরণ শরীয়তসিদ্ধ। যেমন এখানে বাইতুল মুকাদ্দাসের কেবলা রহিত করে বাইতুল্লাহকে নির্ধারণ করা হল।
২. কেবল মুনাফিক ও কাফিররাই শরীয়তের বিধি-বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকে।
৩. সকল উম্মাতের ওপর উম্মাতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠত্ব সর্ম্পকে জানলাম।
৪. বিভিন্ন সময় বিধি-বিধানের বদল করে আল্লাহ তা‘আলা পরীক্ষা করেন কারা প্রকৃত ঈমানদার।
৫. শরীয়তের বিধান যত বড়ই হোক না কেন মু’মিনের কাছে তা সহজসাধ্য; পক্ষান্তরে মুনাফিক ও কাফিরের কাছে আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার মত কঠিন।
৬. অজানার কারণে কেবলার ভিন্নদিকে সালাত আদায় করলে সালাত পুনরাবৃত্তি করতে হবে না।
৭. সারা পৃথিবীবাসীর জন্য একমাত্র কেবলা কাবা, কেউ স্বেচ্ছায় অন্য কেবলা গ্রহণ করলে তা প্রত্যাখ্যাত।
2:143
وَكَذٰلِكَ جَعَلْنٰكُمْ
أُمَّةً وَسَطًا لِّتَكُونُوا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ
عَلَيْكُمْ شَهِيدًا ۗ وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِى كُنتَ عَلَيْهَآ
إِلَّا لِنَعْلَمَ مَن يَتَّبِعُ الرَّسُولَ مِمَّن يَنقَلِبُ عَلٰى عَقِبَيْهِ ۚ
وَإِن كَانَتْ لَكَبِيرَةً إِلَّا عَلَى الَّذِينَ هَدَى اللَّهُ ۗ وَمَا كَانَ
اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمٰنَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪২ থেকে ১৪৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
সাহাবী বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মদীনায় আগমণ করার পর) বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন আর বারবার আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের অপেক্ষা করতেন। (কখন বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করার নির্দেশ আসবে) তখন
قَدْ نَرَي .... يَعْمَلُونَ এ আয়াত নাযিল হয়। (ইবনু কাসীর)
এরপর বাইতুল্লাহ কেবলা হিসেবে নির্ধারিত হয়। এ সময় সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, কেবলা পরিবর্তনের পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের অবস্থা কী হবে? যদি আমরা জানতে পারতাম এবং আমরা যে এতদিন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেছি তার কী হবে? তখন وَمَا كَانَ اللّٰهُ.... আয়াত নাযিল হয়।
যখন কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেল তখন আহলে কিতাবের নির্বোধ লোকেরা বলতে লাগল কিসে তাদেরকে পূর্বের কেবলা থেকে ফিরিয়ে নিল? তখন
(سَيَقُولُ السُّفَهَاء مِنَ النَّاسِ... )
আয়াত নাযিল হয়।
বারা বিন আযিব (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার পর ১৬-১৭ মাস পর্যন্ত বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন। কিন্তু তিনি পছন্দ করতেন কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে। তখন
(قَدْ نَرَي . يَعْمَلُونَ....)
আয়াত নাযিল হয়।
এ আয়াত অবতীর্ণের পর থেকে মুসলিমগণ কাবামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় ইয়াহূদী নির্বোধেরা বলতে লাগল-
(مَا وَلّٰهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِيْ كَانُوْا عَلَيْهَا)
“কিসে তাদেরকে সেই কেবলা হতে ফিরিয়ে দিল যার দিকে তারা ছিল?” তখন
(قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ ...... مُّسْتَقِیْمٍ)
নাযিল হয়। এছাড়া আরো বর্ণনা রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬, ইবনু কাসীর ১খণ্ড, পৃঃ ৪০৬)
কেবলা পরিবর্তন কোন্ সালাতে হয়েছিল তা নিয়ে বেশ মতামত পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল, আসর সালাতে (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬)। অন্যান্য বর্ণনা এর বিপরীত নয়। কারণ যারা যে সালাতের সময় পরিবর্তন পেয়েছিলেন তারা সে সালাতের কথা বলেছেন।
আয়াতে أمة وسطا এর অর্থ أمة خياراً وعدولاً বা সর্বশ্রেষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ ও মধ্যমপন্থী জাতি। যেমন বলা হয়
قريش أوسط العرب نسباً وداراً
বা কুরাইশগণ বংশ ও ঘর বাড়ির দিক দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ আরব। আরো বলা হয়:
صلاة العصر صلاة الوسطي
আসরের সালাত উৎকৃষ্ট ও মধ্যম সালাত। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ উৎকৃষ্ট ও মধ্যমপন্থী জাতিকে একটি পরিপূর্ণ শরীয়ত ও সুপ্রতিষ্ঠিত দীন দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ اجْتَبٰٿکُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَیْکُمْ فِی الدِّیْنِ مِنْ حَرَجٍﺚ مِلَّةَ اَبِیْکُمْ اِبْرٰھِیْمَﺚ ھُوَ سَمّٰٿکُمُ الْمُسْلِمِیْنَﺃ مِنْ قَبْلُ وَفِیْ ھٰذَا لِیَکُوْنَ الرَّسُوْلُ شَھِیْدًا عَلَیْکُمْ وَتَکُوْنُوْا شُھَدَا۬ئَ عَلَی النَّاسِﺊ)
“তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’এবং এ কিতাবেও; যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্য।”(সূরা হজ্জ ২২:৭৮)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত দিবসে নূহ (আঃ)-কে ডাকা হবে, তিনি বলবেন, হে প্রভু! আমি উপস্থিত। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি কি তোমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেন: হ্যাঁ পৌঁছে দিয়েছিলাম। তখন তাঁর উম্মাতকে জিজ্ঞাসা করা হবে। নূহ তোমাদের নিকট (নবুওয়াতের বাণী) পৌঁছে দিয়েছে কি? তারা বলবে: আমাদের কাছে কোন ভীতি প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সাক্ষী কে? নূহ (আঃ) বলবেন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাত। তখন (উম্মাতে মুহাম্মাদী) সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, তিনি দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন:
(وَكذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا)
(সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৭)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَکَیْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ کُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَھِیْدٍ وَّجِئْنَا بِکَ عَلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ شَھِیْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?”। (সূরা নিসা ৪:৪১)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত মু’মিনের মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছেন।
এ কেবলা পরিবর্তন এ জন্য করা হয়েছে যাতে আল্লাহ তা‘আলা জেনে নেন কারা প্রকৃতপক্ষে রাসূলের অনুসারী আর কারা মুনাফিক।
ইসলামের কোন আদেশ পালন বা নিষেধকৃত বিষয় বর্জন করা মু’মিন ছাড়া অন্যদের জন্য বড়ই কঠিন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذَا مَآ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْھُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ اَیُّکُمْ زَادَتْھُ ھٰذِھ۪ٓ اِیْمَانًاﺆ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْھُمْ اِیْمَانًا وَّھُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَوَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِھِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْھُمْ رِجْسًا اِلٰی رِجْسِھِمْ)
“যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করলো?’যারা মু’মিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়। এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরও কলুষ যুক্ত করে।”(সূরা তাওবাহ ৯:১২৪-২৫)
(وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ)
‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমান (সালাত) বিনষ্ট করে দিবেন’এখানে ঈমান সালাত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সালাতকে ঈমান বলার কারণ হল সালাত ঈমানের পরিচায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الْفَرْقُ بَيْنَ الْعَبْدِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
আল্লাহ তা‘আলার দাসত্ব ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হল সালাত বর্জন করা। (সহীহ মুসলিম হা:৮২)
(فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا)
‘তাই আমি তোমাকে ঐ কেবলামুখীই করব যা তুমি কামনা করছ’এ অংশটুকুর তাফসীর হল
(فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ)
“তুমি মাসজিদে হারামের দিকে (কা‘বার দিকে) তোমার মুখমণ্ডল ফিরিয়ে নাও।”
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষকে সালাতে কাবামুখী হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। সে ব্যক্তি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ দিকের অর্থাৎ পৃথিবীর যে কোন দিকের অধিবাসীই হোক না কেন।
সালাতের কেবলা হল বাইতুল্লাহ, তবে সফরে নফল সালাত ও যুদ্ধের ময়দানের ফরয সালাত ব্যতীত। কেননা তাতে কেবলামুখী হওয়া কঠিন বিধায় জরুরী নয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৫)
আহলে কিতাব বিশেষ করে ইয়াহূদীরা জানে যে, এ কেবলা পরিবর্তন সত্য এবং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। কিন্তু অহঙ্কারবশত তা প্রত্যাখ্যান করে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা কেন এ বিধান দিলেন বা কেন পূর্বের বিধান বাতিল করলেন ইত্যাদি প্রশ্ন করা ঈমানদারদের সমীচীন নয়। বরং ঈমানের পরিচয় হল আল্লাহ তা‘আলা যখন যে বিধান দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেয়া।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামে বিধান রহিতকরণ শরীয়তসিদ্ধ। যেমন এখানে বাইতুল মুকাদ্দাসের কেবলা রহিত করে বাইতুল্লাহকে নির্ধারণ করা হল।
২. কেবল মুনাফিক ও কাফিররাই শরীয়তের বিধি-বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকে।
৩. সকল উম্মাতের ওপর উম্মাতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠত্ব সর্ম্পকে জানলাম।
৪. বিভিন্ন সময় বিধি-বিধানের বদল করে আল্লাহ তা‘আলা পরীক্ষা করেন কারা প্রকৃত ঈমানদার।
৫. শরীয়তের বিধান যত বড়ই হোক না কেন মু’মিনের কাছে তা সহজসাধ্য; পক্ষান্তরে মুনাফিক ও কাফিরের কাছে আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার মত কঠিন।
৬. অজানার কারণে কেবলার ভিন্নদিকে সালাত আদায় করলে সালাত পুনরাবৃত্তি করতে হবে না।
৭. সারা পৃথিবীবাসীর জন্য একমাত্র কেবলা কাবা, কেউ স্বেচ্ছায় অন্য কেবলা গ্রহণ করলে তা প্রত্যাখ্যাত।
শানে নুযূল:
সাহাবী বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মদীনায় আগমণ করার পর) বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন আর বারবার আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের অপেক্ষা করতেন। (কখন বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করার নির্দেশ আসবে) তখন
قَدْ نَرَي .... يَعْمَلُونَ এ আয়াত নাযিল হয়। (ইবনু কাসীর)
এরপর বাইতুল্লাহ কেবলা হিসেবে নির্ধারিত হয়। এ সময় সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, কেবলা পরিবর্তনের পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের অবস্থা কী হবে? যদি আমরা জানতে পারতাম এবং আমরা যে এতদিন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেছি তার কী হবে? তখন وَمَا كَانَ اللّٰهُ.... আয়াত নাযিল হয়।
যখন কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেল তখন আহলে কিতাবের নির্বোধ লোকেরা বলতে লাগল কিসে তাদেরকে পূর্বের কেবলা থেকে ফিরিয়ে নিল? তখন
(سَيَقُولُ السُّفَهَاء مِنَ النَّاسِ... )
আয়াত নাযিল হয়।
বারা বিন আযিব (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার পর ১৬-১৭ মাস পর্যন্ত বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন। কিন্তু তিনি পছন্দ করতেন কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে। তখন
(قَدْ نَرَي . يَعْمَلُونَ....)
আয়াত নাযিল হয়।
এ আয়াত অবতীর্ণের পর থেকে মুসলিমগণ কাবামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় ইয়াহূদী নির্বোধেরা বলতে লাগল-
(مَا وَلّٰهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِيْ كَانُوْا عَلَيْهَا)
“কিসে তাদেরকে সেই কেবলা হতে ফিরিয়ে দিল যার দিকে তারা ছিল?” তখন
(قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ ...... مُّسْتَقِیْمٍ)
নাযিল হয়। এছাড়া আরো বর্ণনা রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬, ইবনু কাসীর ১খণ্ড, পৃঃ ৪০৬)
কেবলা পরিবর্তন কোন্ সালাতে হয়েছিল তা নিয়ে বেশ মতামত পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল, আসর সালাতে (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬)। অন্যান্য বর্ণনা এর বিপরীত নয়। কারণ যারা যে সালাতের সময় পরিবর্তন পেয়েছিলেন তারা সে সালাতের কথা বলেছেন।
আয়াতে أمة وسطا এর অর্থ أمة خياراً وعدولاً বা সর্বশ্রেষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ ও মধ্যমপন্থী জাতি। যেমন বলা হয়
قريش أوسط العرب نسباً وداراً
বা কুরাইশগণ বংশ ও ঘর বাড়ির দিক দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ আরব। আরো বলা হয়:
صلاة العصر صلاة الوسطي
আসরের সালাত উৎকৃষ্ট ও মধ্যম সালাত। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ উৎকৃষ্ট ও মধ্যমপন্থী জাতিকে একটি পরিপূর্ণ শরীয়ত ও সুপ্রতিষ্ঠিত দীন দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ اجْتَبٰٿکُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَیْکُمْ فِی الدِّیْنِ مِنْ حَرَجٍﺚ مِلَّةَ اَبِیْکُمْ اِبْرٰھِیْمَﺚ ھُوَ سَمّٰٿکُمُ الْمُسْلِمِیْنَﺃ مِنْ قَبْلُ وَفِیْ ھٰذَا لِیَکُوْنَ الرَّسُوْلُ شَھِیْدًا عَلَیْکُمْ وَتَکُوْنُوْا شُھَدَا۬ئَ عَلَی النَّاسِﺊ)
“তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’এবং এ কিতাবেও; যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্য।”(সূরা হজ্জ ২২:৭৮)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত দিবসে নূহ (আঃ)-কে ডাকা হবে, তিনি বলবেন, হে প্রভু! আমি উপস্থিত। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি কি তোমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেন: হ্যাঁ পৌঁছে দিয়েছিলাম। তখন তাঁর উম্মাতকে জিজ্ঞাসা করা হবে। নূহ তোমাদের নিকট (নবুওয়াতের বাণী) পৌঁছে দিয়েছে কি? তারা বলবে: আমাদের কাছে কোন ভীতি প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সাক্ষী কে? নূহ (আঃ) বলবেন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাত। তখন (উম্মাতে মুহাম্মাদী) সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, তিনি দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন:
(وَكذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا)
(সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৭)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَکَیْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ کُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَھِیْدٍ وَّجِئْنَا بِکَ عَلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ شَھِیْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?”। (সূরা নিসা ৪:৪১)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত মু’মিনের মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছেন।
এ কেবলা পরিবর্তন এ জন্য করা হয়েছে যাতে আল্লাহ তা‘আলা জেনে নেন কারা প্রকৃতপক্ষে রাসূলের অনুসারী আর কারা মুনাফিক।
ইসলামের কোন আদেশ পালন বা নিষেধকৃত বিষয় বর্জন করা মু’মিন ছাড়া অন্যদের জন্য বড়ই কঠিন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذَا مَآ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْھُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ اَیُّکُمْ زَادَتْھُ ھٰذِھ۪ٓ اِیْمَانًاﺆ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْھُمْ اِیْمَانًا وَّھُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَوَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِھِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْھُمْ رِجْسًا اِلٰی رِجْسِھِمْ)
“যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করলো?’যারা মু’মিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়। এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরও কলুষ যুক্ত করে।”(সূরা তাওবাহ ৯:১২৪-২৫)
(وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ)
‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমান (সালাত) বিনষ্ট করে দিবেন’এখানে ঈমান সালাত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সালাতকে ঈমান বলার কারণ হল সালাত ঈমানের পরিচায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الْفَرْقُ بَيْنَ الْعَبْدِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
আল্লাহ তা‘আলার দাসত্ব ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হল সালাত বর্জন করা। (সহীহ মুসলিম হা:৮২)
(فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا)
‘তাই আমি তোমাকে ঐ কেবলামুখীই করব যা তুমি কামনা করছ’এ অংশটুকুর তাফসীর হল
(فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ)
“তুমি মাসজিদে হারামের দিকে (কা‘বার দিকে) তোমার মুখমণ্ডল ফিরিয়ে নাও।”
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষকে সালাতে কাবামুখী হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। সে ব্যক্তি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ দিকের অর্থাৎ পৃথিবীর যে কোন দিকের অধিবাসীই হোক না কেন।
সালাতের কেবলা হল বাইতুল্লাহ, তবে সফরে নফল সালাত ও যুদ্ধের ময়দানের ফরয সালাত ব্যতীত। কেননা তাতে কেবলামুখী হওয়া কঠিন বিধায় জরুরী নয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৫)
আহলে কিতাব বিশেষ করে ইয়াহূদীরা জানে যে, এ কেবলা পরিবর্তন সত্য এবং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। কিন্তু অহঙ্কারবশত তা প্রত্যাখ্যান করে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা কেন এ বিধান দিলেন বা কেন পূর্বের বিধান বাতিল করলেন ইত্যাদি প্রশ্ন করা ঈমানদারদের সমীচীন নয়। বরং ঈমানের পরিচয় হল আল্লাহ তা‘আলা যখন যে বিধান দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেয়া।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামে বিধান রহিতকরণ শরীয়তসিদ্ধ। যেমন এখানে বাইতুল মুকাদ্দাসের কেবলা রহিত করে বাইতুল্লাহকে নির্ধারণ করা হল।
২. কেবল মুনাফিক ও কাফিররাই শরীয়তের বিধি-বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকে।
৩. সকল উম্মাতের ওপর উম্মাতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠত্ব সর্ম্পকে জানলাম।
৪. বিভিন্ন সময় বিধি-বিধানের বদল করে আল্লাহ তা‘আলা পরীক্ষা করেন কারা প্রকৃত ঈমানদার।
৫. শরীয়তের বিধান যত বড়ই হোক না কেন মু’মিনের কাছে তা সহজসাধ্য; পক্ষান্তরে মুনাফিক ও কাফিরের কাছে আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার মত কঠিন।
৬. অজানার কারণে কেবলার ভিন্নদিকে সালাত আদায় করলে সালাত পুনরাবৃত্তি করতে হবে না।
৭. সারা পৃথিবীবাসীর জন্য একমাত্র কেবলা কাবা, কেউ স্বেচ্ছায় অন্য কেবলা গ্রহণ করলে তা প্রত্যাখ্যাত।
2:144
قَدْ نَرٰى تَقَلُّبَ
وَجْهِكَ فِى السَّمَآءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضٰىهَا ۚ فَوَلِّ
وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا
وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُۥ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتٰبَ لَيَعْلَمُونَ
أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪২ থেকে ১৪৪ নং
আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
সাহাবী বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মদীনায় আগমণ করার পর) বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন আর বারবার আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের অপেক্ষা করতেন। (কখন বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করার নির্দেশ আসবে) তখন
قَدْ نَرَي .... يَعْمَلُونَ এ আয়াত নাযিল হয়। (ইবনু কাসীর)
এরপর বাইতুল্লাহ কেবলা হিসেবে নির্ধারিত হয়। এ সময় সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, কেবলা পরিবর্তনের পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের অবস্থা কী হবে? যদি আমরা জানতে পারতাম এবং আমরা যে এতদিন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেছি তার কী হবে? তখন وَمَا كَانَ اللّٰهُ.... আয়াত নাযিল হয়।
যখন কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেল তখন আহলে কিতাবের নির্বোধ লোকেরা বলতে লাগল কিসে তাদেরকে পূর্বের কেবলা থেকে ফিরিয়ে নিল? তখন
(سَيَقُولُ السُّفَهَاء مِنَ النَّاسِ... )
আয়াত নাযিল হয়।
বারা বিন আযিব (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার পর ১৬-১৭ মাস পর্যন্ত বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন। কিন্তু তিনি পছন্দ করতেন কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে। তখন
(قَدْ نَرَي . يَعْمَلُونَ....)
আয়াত নাযিল হয়।
এ আয়াত অবতীর্ণের পর থেকে মুসলিমগণ কাবামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় ইয়াহূদী নির্বোধেরা বলতে লাগল-
(مَا وَلّٰهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِيْ كَانُوْا عَلَيْهَا)
“কিসে তাদেরকে সেই কেবলা হতে ফিরিয়ে দিল যার দিকে তারা ছিল?” তখন
(قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ ...... مُّسْتَقِیْمٍ)
নাযিল হয়। এছাড়া আরো বর্ণনা রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬, ইবনু কাসীর ১খণ্ড, পৃঃ ৪০৬)
কেবলা পরিবর্তন কোন্ সালাতে হয়েছিল তা নিয়ে বেশ মতামত পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল, আসর সালাতে (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬)। অন্যান্য বর্ণনা এর বিপরীত নয়। কারণ যারা যে সালাতের সময় পরিবর্তন পেয়েছিলেন তারা সে সালাতের কথা বলেছেন।
আয়াতে أمة وسطا এর অর্থ أمة خياراً وعدولاً বা সর্বশ্রেষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ ও মধ্যমপন্থী জাতি। যেমন বলা হয়
قريش أوسط العرب نسباً وداراً
বা কুরাইশগণ বংশ ও ঘর বাড়ির দিক দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ আরব। আরো বলা হয়:
صلاة العصر صلاة الوسطي
আসরের সালাত উৎকৃষ্ট ও মধ্যম সালাত। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ উৎকৃষ্ট ও মধ্যমপন্থী জাতিকে একটি পরিপূর্ণ শরীয়ত ও সুপ্রতিষ্ঠিত দীন দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ اجْتَبٰٿکُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَیْکُمْ فِی الدِّیْنِ مِنْ حَرَجٍﺚ مِلَّةَ اَبِیْکُمْ اِبْرٰھِیْمَﺚ ھُوَ سَمّٰٿکُمُ الْمُسْلِمِیْنَﺃ مِنْ قَبْلُ وَفِیْ ھٰذَا لِیَکُوْنَ الرَّسُوْلُ شَھِیْدًا عَلَیْکُمْ وَتَکُوْنُوْا شُھَدَا۬ئَ عَلَی النَّاسِﺊ)
“তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’এবং এ কিতাবেও; যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্য।”(সূরা হজ্জ ২২:৭৮)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত দিবসে নূহ (আঃ)-কে ডাকা হবে, তিনি বলবেন, হে প্রভু! আমি উপস্থিত। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি কি তোমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেন: হ্যাঁ পৌঁছে দিয়েছিলাম। তখন তাঁর উম্মাতকে জিজ্ঞাসা করা হবে। নূহ তোমাদের নিকট (নবুওয়াতের বাণী) পৌঁছে দিয়েছে কি? তারা বলবে: আমাদের কাছে কোন ভীতি প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সাক্ষী কে? নূহ (আঃ) বলবেন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাত। তখন (উম্মাতে মুহাম্মাদী) সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, তিনি দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন:
(وَكذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا)
(সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৭)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَکَیْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ کُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَھِیْدٍ وَّجِئْنَا بِکَ عَلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ شَھِیْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?”। (সূরা নিসা ৪:৪১)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত মু’মিনের মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছেন।
এ কেবলা পরিবর্তন এ জন্য করা হয়েছে যাতে আল্লাহ তা‘আলা জেনে নেন কারা প্রকৃতপক্ষে রাসূলের অনুসারী আর কারা মুনাফিক।
ইসলামের কোন আদেশ পালন বা নিষেধকৃত বিষয় বর্জন করা মু’মিন ছাড়া অন্যদের জন্য বড়ই কঠিন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذَا مَآ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْھُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ اَیُّکُمْ زَادَتْھُ ھٰذِھ۪ٓ اِیْمَانًاﺆ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْھُمْ اِیْمَانًا وَّھُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَوَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِھِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْھُمْ رِجْسًا اِلٰی رِجْسِھِمْ)
“যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করলো?’যারা মু’মিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়। এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরও কলুষ যুক্ত করে।”(সূরা তাওবাহ ৯:১২৪-২৫)
(وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ)
‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমান (সালাত) বিনষ্ট করে দিবেন’এখানে ঈমান সালাত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সালাতকে ঈমান বলার কারণ হল সালাত ঈমানের পরিচায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الْفَرْقُ بَيْنَ الْعَبْدِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
আল্লাহ তা‘আলার দাসত্ব ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হল সালাত বর্জন করা। (সহীহ মুসলিম হা:৮২)
(فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا)
‘তাই আমি তোমাকে ঐ কেবলামুখীই করব যা তুমি কামনা করছ’এ অংশটুকুর তাফসীর হল
(فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ)
“তুমি মাসজিদে হারামের দিকে (কা‘বার দিকে) তোমার মুখমণ্ডল ফিরিয়ে নাও।”
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষকে সালাতে কাবামুখী হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। সে ব্যক্তি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ দিকের অর্থাৎ পৃথিবীর যে কোন দিকের অধিবাসীই হোক না কেন।
সালাতের কেবলা হল বাইতুল্লাহ, তবে সফরে নফল সালাত ও যুদ্ধের ময়দানের ফরয সালাত ব্যতীত। কেননা তাতে কেবলামুখী হওয়া কঠিন বিধায় জরুরী নয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৫)
আহলে কিতাব বিশেষ করে ইয়াহূদীরা জানে যে, এ কেবলা পরিবর্তন সত্য এবং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। কিন্তু অহঙ্কারবশত তা প্রত্যাখ্যান করে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা কেন এ বিধান দিলেন বা কেন পূর্বের বিধান বাতিল করলেন ইত্যাদি প্রশ্ন করা ঈমানদারদের সমীচীন নয়। বরং ঈমানের পরিচয় হল আল্লাহ তা‘আলা যখন যে বিধান দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেয়া।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামে বিধান রহিতকরণ শরীয়তসিদ্ধ। যেমন এখানে বাইতুল মুকাদ্দাসের কেবলা রহিত করে বাইতুল্লাহকে নির্ধারণ করা হল।
২. কেবল মুনাফিক ও কাফিররাই শরীয়তের বিধি-বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকে।
৩. সকল উম্মাতের ওপর উম্মাতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠত্ব সর্ম্পকে জানলাম।
৪. বিভিন্ন সময় বিধি-বিধানের বদল করে আল্লাহ তা‘আলা পরীক্ষা করেন কারা প্রকৃত ঈমানদার।
৫. শরীয়তের বিধান যত বড়ই হোক না কেন মু’মিনের কাছে তা সহজসাধ্য; পক্ষান্তরে মুনাফিক ও কাফিরের কাছে আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার মত কঠিন।
৬. অজানার কারণে কেবলার ভিন্নদিকে সালাত আদায় করলে সালাত পুনরাবৃত্তি করতে হবে না।
৭. সারা পৃথিবীবাসীর জন্য একমাত্র কেবলা কাবা, কেউ স্বেচ্ছায় অন্য কেবলা গ্রহণ করলে তা প্রত্যাখ্যাত।
শানে নুযূল:
সাহাবী বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মদীনায় আগমণ করার পর) বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতেন আর বারবার আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশের অপেক্ষা করতেন। (কখন বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করার নির্দেশ আসবে) তখন
قَدْ نَرَي .... يَعْمَلُونَ এ আয়াত নাযিল হয়। (ইবনু কাসীর)
এরপর বাইতুল্লাহ কেবলা হিসেবে নির্ধারিত হয়। এ সময় সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, কেবলা পরিবর্তনের পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের অবস্থা কী হবে? যদি আমরা জানতে পারতাম এবং আমরা যে এতদিন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেছি তার কী হবে? তখন وَمَا كَانَ اللّٰهُ.... আয়াত নাযিল হয়।
যখন কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেল তখন আহলে কিতাবের নির্বোধ লোকেরা বলতে লাগল কিসে তাদেরকে পূর্বের কেবলা থেকে ফিরিয়ে নিল? তখন
(سَيَقُولُ السُّفَهَاء مِنَ النَّاسِ... )
আয়াত নাযিল হয়।
বারা বিন আযিব (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার পর ১৬-১৭ মাস পর্যন্ত বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করেন। কিন্তু তিনি পছন্দ করতেন কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে। তখন
(قَدْ نَرَي . يَعْمَلُونَ....)
আয়াত নাযিল হয়।
এ আয়াত অবতীর্ণের পর থেকে মুসলিমগণ কাবামুখী হয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় ইয়াহূদী নির্বোধেরা বলতে লাগল-
(مَا وَلّٰهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِيْ كَانُوْا عَلَيْهَا)
“কিসে তাদেরকে সেই কেবলা হতে ফিরিয়ে দিল যার দিকে তারা ছিল?” তখন
(قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ ...... مُّسْتَقِیْمٍ)
নাযিল হয়। এছাড়া আরো বর্ণনা রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬, ইবনু কাসীর ১খণ্ড, পৃঃ ৪০৬)
কেবলা পরিবর্তন কোন্ সালাতে হয়েছিল তা নিয়ে বেশ মতামত পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল, আসর সালাতে (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৬)। অন্যান্য বর্ণনা এর বিপরীত নয়। কারণ যারা যে সালাতের সময় পরিবর্তন পেয়েছিলেন তারা সে সালাতের কথা বলেছেন।
আয়াতে أمة وسطا এর অর্থ أمة خياراً وعدولاً বা সর্বশ্রেষ্ঠ, ন্যায়পরায়ণ ও মধ্যমপন্থী জাতি। যেমন বলা হয়
قريش أوسط العرب نسباً وداراً
বা কুরাইশগণ বংশ ও ঘর বাড়ির দিক দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ আরব। আরো বলা হয়:
صلاة العصر صلاة الوسطي
আসরের সালাত উৎকৃষ্ট ও মধ্যম সালাত। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ উৎকৃষ্ট ও মধ্যমপন্থী জাতিকে একটি পরিপূর্ণ শরীয়ত ও সুপ্রতিষ্ঠিত দীন দিয়েছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ھُوَ اجْتَبٰٿکُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَیْکُمْ فِی الدِّیْنِ مِنْ حَرَجٍﺚ مِلَّةَ اَبِیْکُمْ اِبْرٰھِیْمَﺚ ھُوَ سَمّٰٿکُمُ الْمُسْلِمِیْنَﺃ مِنْ قَبْلُ وَفِیْ ھٰذَا لِیَکُوْنَ الرَّسُوْلُ شَھِیْدًا عَلَیْکُمْ وَتَکُوْنُوْا شُھَدَا۬ئَ عَلَی النَّاسِﺊ)
“তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’এবং এ কিতাবেও; যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্য।”(সূরা হজ্জ ২২:৭৮)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত দিবসে নূহ (আঃ)-কে ডাকা হবে, তিনি বলবেন, হে প্রভু! আমি উপস্থিত। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি কি তোমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছিলে? তিনি বলবেন: হ্যাঁ পৌঁছে দিয়েছিলাম। তখন তাঁর উম্মাতকে জিজ্ঞাসা করা হবে। নূহ তোমাদের নিকট (নবুওয়াতের বাণী) পৌঁছে দিয়েছে কি? তারা বলবে: আমাদের কাছে কোন ভীতি প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সাক্ষী কে? নূহ (আঃ) বলবেন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর উম্মাত। তখন (উম্মাতে মুহাম্মাদী) সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, তিনি দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন:
(وَكذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَّسَطًا)
(সহীহ বুখারী হা: ৪৪৮৭)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَکَیْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ کُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَھِیْدٍ وَّجِئْنَا بِکَ عَلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ شَھِیْدًا)
“যখন আমি প্রত্যেক উম্মত হতে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব তখন কী অবস্থা হবে?”। (সূরা নিসা ৪:৪১)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত মু’মিনের মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছেন।
এ কেবলা পরিবর্তন এ জন্য করা হয়েছে যাতে আল্লাহ তা‘আলা জেনে নেন কারা প্রকৃতপক্ষে রাসূলের অনুসারী আর কারা মুনাফিক।
ইসলামের কোন আদেশ পালন বা নিষেধকৃত বিষয় বর্জন করা মু’মিন ছাড়া অন্যদের জন্য বড়ই কঠিন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذَا مَآ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْھُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ اَیُّکُمْ زَادَتْھُ ھٰذِھ۪ٓ اِیْمَانًاﺆ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْھُمْ اِیْمَانًا وَّھُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَوَاَمَّا الَّذِیْنَ فِیْ قُلُوْبِھِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْھُمْ رِجْسًا اِلٰی رِجْسِھِمْ)
“যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে ‘এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করলো?’যারা মু’মিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়। এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের কলুষের সাথে আরও কলুষ যুক্ত করে।”(সূরা তাওবাহ ৯:১২৪-২৫)
(وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُضِيْعَ إِيْمَانَكُمْ)
‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমান (সালাত) বিনষ্ট করে দিবেন’এখানে ঈমান সালাত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সালাতকে ঈমান বলার কারণ হল সালাত ঈমানের পরিচায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الْفَرْقُ بَيْنَ الْعَبْدِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ
আল্লাহ তা‘আলার দাসত্ব ও কুফরীর মাঝে পার্থক্য হল সালাত বর্জন করা। (সহীহ মুসলিম হা:৮২)
(فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا)
‘তাই আমি তোমাকে ঐ কেবলামুখীই করব যা তুমি কামনা করছ’এ অংশটুকুর তাফসীর হল
(فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ)
“তুমি মাসজিদে হারামের দিকে (কা‘বার দিকে) তোমার মুখমণ্ডল ফিরিয়ে নাও।”
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষকে সালাতে কাবামুখী হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। সে ব্যক্তি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ দিকের অর্থাৎ পৃথিবীর যে কোন দিকের অধিবাসীই হোক না কেন।
সালাতের কেবলা হল বাইতুল্লাহ, তবে সফরে নফল সালাত ও যুদ্ধের ময়দানের ফরয সালাত ব্যতীত। কেননা তাতে কেবলামুখী হওয়া কঠিন বিধায় জরুরী নয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৫)
আহলে কিতাব বিশেষ করে ইয়াহূদীরা জানে যে, এ কেবলা পরিবর্তন সত্য এবং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। কিন্তু অহঙ্কারবশত তা প্রত্যাখ্যান করে।
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা কেন এ বিধান দিলেন বা কেন পূর্বের বিধান বাতিল করলেন ইত্যাদি প্রশ্ন করা ঈমানদারদের সমীচীন নয়। বরং ঈমানের পরিচয় হল আল্লাহ তা‘আলা যখন যে বিধান দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেয়া।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামে বিধান রহিতকরণ শরীয়তসিদ্ধ। যেমন এখানে বাইতুল মুকাদ্দাসের কেবলা রহিত করে বাইতুল্লাহকে নির্ধারণ করা হল।
২. কেবল মুনাফিক ও কাফিররাই শরীয়তের বিধি-বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকে।
৩. সকল উম্মাতের ওপর উম্মাতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠত্ব সর্ম্পকে জানলাম।
৪. বিভিন্ন সময় বিধি-বিধানের বদল করে আল্লাহ তা‘আলা পরীক্ষা করেন কারা প্রকৃত ঈমানদার।
৫. শরীয়তের বিধান যত বড়ই হোক না কেন মু’মিনের কাছে তা সহজসাধ্য; পক্ষান্তরে মুনাফিক ও কাফিরের কাছে আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার মত কঠিন।
৬. অজানার কারণে কেবলার ভিন্নদিকে সালাত আদায় করলে সালাত পুনরাবৃত্তি করতে হবে না।
৭. সারা পৃথিবীবাসীর জন্য একমাত্র কেবলা কাবা, কেউ স্বেচ্ছায় অন্য কেবলা গ্রহণ করলে তা প্রত্যাখ্যাত।
2:145
وَلَئِنْ أَتَيْتَ
الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتٰبَ بِكُلِّ ءَايَةٍ مَّا تَبِعُوا قِبْلَتَكَ ۚ وَمَآ
أَنتَ بِتَابِعٍ قِبْلَتَهُمْ ۚ وَمَا بَعْضُهُم بِتَابِعٍ قِبْلَةَ بَعْضٍ ۚ
وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَآءَهُم مِّنۢ بَعْدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِ ۙ
إِنَّكَ إِذًا لَّمِنَ الظّٰلِمِينَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪৫ নং আয়াতের
তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের কুফরী, অবাধ্যতা ও জেনে-শুনে সত্য ত্যাগের কথা তুলে ধরছেন। তাদের বিষয়টি এমন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা নিয়ে এসেছেন তা প্রমাণ করার জন্য সকল প্রকার দলিল নিয়ে এলেও তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মেনে নেবে না।
এদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ حَقَّتْ عَلَیْھِمْ کَلِمَةُ رَبِّکَ لَا یُؤْمِنُوْنَﮯﺫوَلَوْ جَا۬ءَتْھُمْ کُلُّ اٰیَةٍ حَتّٰی یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ)
“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাণী সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না। যদিও তাদের নিকট সকল নিদর্শন আসে যতক্ষণ না তারা মর্র্মন্তুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।”(সূরা ইউনুস ১০:৯৬-৯৭)
(وَمَا بَعْضُهُمْ بِتَابِعٍ قِبْلَةَ بَعْضٍ) “আর তারা পরস্পর একজন অন্যজনের কেবলার অনুসারী নয়”
তারপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিষেধ করছেন তাদের কেবলার অনুকরণ করতে, কারণ তারাই তো একে অপরের কেবলা অনসুরণ করে না।
ইয়াহূদীদের কেবলা হল, বায়তুল মুকাদ্দাসের পাথর (যার ওপর গম্বুজ নির্মিত আছে)। আর খ্রিস্টানদের কেবলা হল, বায়তুল মুক্বাদ্দাসের পূর্বদিক। আহলে কিতাবের এ দু’টি দল যখন আপোষে একটি কেবলার ওপর ঐক্যমত হতে পারে না তাহলে তাদের কাছ থেকে কিভাবে আশা করা যায় যে, তারা মুসলিমদের সাথে একমত হবে।
তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হুশিয়ার করে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন- তুমি যদি ওয়াহী আসার পরেও তাদের অনুসরণ কর তাহলে নিশ্চয় যালিমদের মধ্যে শামিল হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আহলে কিতাবের অধিকাংশ লোকই জেনেশুনে কুফরী করে।
২. যারা সঠিক পথ গ্রহণ করার তাদের জন্য অল্প বুঝই যথেষ্ট।
৩. অধিকাংশ মানুষ সঠিক পথ পরিত্যাগ করলেই আমিও ত্যাগ করব এ নীতি ভ্রান্ত নীতি।
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের কুফরী, অবাধ্যতা ও জেনে-শুনে সত্য ত্যাগের কথা তুলে ধরছেন। তাদের বিষয়টি এমন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা নিয়ে এসেছেন তা প্রমাণ করার জন্য সকল প্রকার দলিল নিয়ে এলেও তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মেনে নেবে না।
এদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ حَقَّتْ عَلَیْھِمْ کَلِمَةُ رَبِّکَ لَا یُؤْمِنُوْنَﮯﺫوَلَوْ جَا۬ءَتْھُمْ کُلُّ اٰیَةٍ حَتّٰی یَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِیْمَ)
“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাণী সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না। যদিও তাদের নিকট সকল নিদর্শন আসে যতক্ষণ না তারা মর্র্মন্তুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।”(সূরা ইউনুস ১০:৯৬-৯৭)
(وَمَا بَعْضُهُمْ بِتَابِعٍ قِبْلَةَ بَعْضٍ) “আর তারা পরস্পর একজন অন্যজনের কেবলার অনুসারী নয়”
তারপর আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিষেধ করছেন তাদের কেবলার অনুকরণ করতে, কারণ তারাই তো একে অপরের কেবলা অনসুরণ করে না।
ইয়াহূদীদের কেবলা হল, বায়তুল মুকাদ্দাসের পাথর (যার ওপর গম্বুজ নির্মিত আছে)। আর খ্রিস্টানদের কেবলা হল, বায়তুল মুক্বাদ্দাসের পূর্বদিক। আহলে কিতাবের এ দু’টি দল যখন আপোষে একটি কেবলার ওপর ঐক্যমত হতে পারে না তাহলে তাদের কাছ থেকে কিভাবে আশা করা যায় যে, তারা মুসলিমদের সাথে একমত হবে।
তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হুশিয়ার করে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন- তুমি যদি ওয়াহী আসার পরেও তাদের অনুসরণ কর তাহলে নিশ্চয় যালিমদের মধ্যে শামিল হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আহলে কিতাবের অধিকাংশ লোকই জেনেশুনে কুফরী করে।
২. যারা সঠিক পথ গ্রহণ করার তাদের জন্য অল্প বুঝই যথেষ্ট।
৩. অধিকাংশ মানুষ সঠিক পথ পরিত্যাগ করলেই আমিও ত্যাগ করব এ নীতি ভ্রান্ত নীতি।
2:146
الَّذِينَ ءَاتَيْنٰهُمُ
الْكِتٰبَ يَعْرِفُونَهُۥ كَمَا يَعْرِفُونَ أَبْنَآءَهُمْ ۖ وَإِنَّ فَرِيقًا
مِّنْهُمْ لَيَكْتُمُونَ الْحَقَّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪৬ ও ১৪৭ নং
আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা বলছেন- আহলে কিতাবের একশ্রেণীর আলেম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা যে সত্য তেমনিভাবে জানত ও চিনত যেমন তারা তাদের সন্তানদেরকে চিনত। এর পরেও মানত না। এখানে সন্তানকে চেনার সাথে তুলনা করার কারণ হল, পিতা-মাতাই সন্তানকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেনে।
উমার (রাঃ) বলেন: আবদুল্লাহ বিন সালামকে বললাম: তোমার সন্তানের মত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চেনো? তিনি বললেন: হ্যাঁ, বরং তার চেয়েও বেশি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে এসে বলল: তাদের একজন পুরুষ ও একজন মহিলা ব্যভিচার করেছে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, প্রস্তর নিক্ষেপ করে হত্যা করা সম্পর্কে তাওরাতে কী বিধান পেয়েছো? তারা বলল: আমরা এদেরকে অপমানিত করব এবং বেত্রাঘাত করব। আবদুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বললেন: তোমরা মিথ্যা বলছো। তাওরাতে প্রস্তর নিক্ষেপের বিধান রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এসে বের করল এবং প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করা সম্পর্কীয় আয়াতের ওপর হাত রেখে তার আগে ও পরের আয়াতগুলো পাঠ করল। আবদুল্লাহ বিন সালাম বললেন, তোমার হাত সরাও। সে হাত সরাল। তখন দেখা গেল প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করার আয়াত আছে। তখন ইয়াহূদীরা বলল: হে মুহাম্মাদ! তিনি সত্যই বলেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৬৩৫, মুসলিম হা: ১৩৯৯)
(اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّکَ)
‘সত্য তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে এসেছে’হে মুহাম্মাদ! যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি তা সত্য। অতএব তুমি এ বিষয়ে কোন সন্দেহে নিপতিত হয়ো না।
আল্লাহ তা‘আলা বলছেন- আহলে কিতাবের একশ্রেণীর আলেম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা যে সত্য তেমনিভাবে জানত ও চিনত যেমন তারা তাদের সন্তানদেরকে চিনত। এর পরেও মানত না। এখানে সন্তানকে চেনার সাথে তুলনা করার কারণ হল, পিতা-মাতাই সন্তানকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেনে।
উমার (রাঃ) বলেন: আবদুল্লাহ বিন সালামকে বললাম: তোমার সন্তানের মত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চেনো? তিনি বললেন: হ্যাঁ, বরং তার চেয়েও বেশি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে এসে বলল: তাদের একজন পুরুষ ও একজন মহিলা ব্যভিচার করেছে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, প্রস্তর নিক্ষেপ করে হত্যা করা সম্পর্কে তাওরাতে কী বিধান পেয়েছো? তারা বলল: আমরা এদেরকে অপমানিত করব এবং বেত্রাঘাত করব। আবদুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বললেন: তোমরা মিথ্যা বলছো। তাওরাতে প্রস্তর নিক্ষেপের বিধান রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এসে বের করল এবং প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করা সম্পর্কীয় আয়াতের ওপর হাত রেখে তার আগে ও পরের আয়াতগুলো পাঠ করল। আবদুল্লাহ বিন সালাম বললেন, তোমার হাত সরাও। সে হাত সরাল। তখন দেখা গেল প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করার আয়াত আছে। তখন ইয়াহূদীরা বলল: হে মুহাম্মাদ! তিনি সত্যই বলেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৬৩৫, মুসলিম হা: ১৩৯৯)
(اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّکَ)
‘সত্য তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে এসেছে’হে মুহাম্মাদ! যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি তা সত্য। অতএব তুমি এ বিষয়ে কোন সন্দেহে নিপতিত হয়ো না।
2:147
الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ ۖ
فَلَا تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪৬ ও ১৪৭ নং
আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা বলছেন- আহলে কিতাবের একশ্রেণীর আলেম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা যে সত্য তেমনিভাবে জানত ও চিনত যেমন তারা তাদের সন্তানদেরকে চিনত। এর পরেও মানত না। এখানে সন্তানকে চেনার সাথে তুলনা করার কারণ হল, পিতা-মাতাই সন্তানকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেনে।
উমার (রাঃ) বলেন: আবদুল্লাহ বিন সালামকে বললাম: তোমার সন্তানের মত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চেনো? তিনি বললেন: হ্যাঁ, বরং তার চেয়েও বেশি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে এসে বলল: তাদের একজন পুরুষ ও একজন মহিলা ব্যভিচার করেছে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, প্রস্তর নিক্ষেপ করে হত্যা করা সম্পর্কে তাওরাতে কী বিধান পেয়েছো? তারা বলল: আমরা এদেরকে অপমানিত করব এবং বেত্রাঘাত করব। আবদুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বললেন: তোমরা মিথ্যা বলছো। তাওরাতে প্রস্তর নিক্ষেপের বিধান রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এসে বের করল এবং প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করা সম্পর্কীয় আয়াতের ওপর হাত রেখে তার আগে ও পরের আয়াতগুলো পাঠ করল। আবদুল্লাহ বিন সালাম বললেন, তোমার হাত সরাও। সে হাত সরাল। তখন দেখা গেল প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করার আয়াত আছে। তখন ইয়াহূদীরা বলল: হে মুহাম্মাদ! তিনি সত্যই বলেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৬৩৫, মুসলিম হা: ১৩৯৯)
(اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّکَ)
‘সত্য তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে এসেছে’হে মুহাম্মাদ! যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি তা সত্য। অতএব তুমি এ বিষয়ে কোন সন্দেহে নিপতিত হয়ো না।
আল্লাহ তা‘আলা বলছেন- আহলে কিতাবের একশ্রেণীর আলেম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা যে সত্য তেমনিভাবে জানত ও চিনত যেমন তারা তাদের সন্তানদেরকে চিনত। এর পরেও মানত না। এখানে সন্তানকে চেনার সাথে তুলনা করার কারণ হল, পিতা-মাতাই সন্তানকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেনে।
উমার (রাঃ) বলেন: আবদুল্লাহ বিন সালামকে বললাম: তোমার সন্তানের মত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে চেনো? তিনি বললেন: হ্যাঁ, বরং তার চেয়েও বেশি। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে এসে বলল: তাদের একজন পুরুষ ও একজন মহিলা ব্যভিচার করেছে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, প্রস্তর নিক্ষেপ করে হত্যা করা সম্পর্কে তাওরাতে কী বিধান পেয়েছো? তারা বলল: আমরা এদেরকে অপমানিত করব এবং বেত্রাঘাত করব। আবদুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বললেন: তোমরা মিথ্যা বলছো। তাওরাতে প্রস্তর নিক্ষেপের বিধান রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এসে বের করল এবং প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করা সম্পর্কীয় আয়াতের ওপর হাত রেখে তার আগে ও পরের আয়াতগুলো পাঠ করল। আবদুল্লাহ বিন সালাম বললেন, তোমার হাত সরাও। সে হাত সরাল। তখন দেখা গেল প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করার আয়াত আছে। তখন ইয়াহূদীরা বলল: হে মুহাম্মাদ! তিনি সত্যই বলেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৬৩৫, মুসলিম হা: ১৩৯৯)
(اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّکَ)
‘সত্য তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে এসেছে’হে মুহাম্মাদ! যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি তা সত্য। অতএব তুমি এ বিষয়ে কোন সন্দেহে নিপতিত হয়ো না।
2:148
وَلِكُلٍّ وِجْهَةٌ هُوَ
مُوَلِّيهَا ۖ فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرٰتِ ۚ أَيْنَ مَا تَكُونُوا يَأْتِ بِكُمُ
اللَّهُ جَمِيعًا ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪৮ নং আয়াতের
তাফসীর:
(وَلِکُلٍّ وِّجْھَةٌ ھُوَ مُوَلِّیْھَا...)
“প্রত্যেকের জন্য এক একটি লক্ষ্যস্থল রয়েছে সেদিকেই সে মুখ ফেরায়। এর প্রথম অর্থ হল: প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের পছন্দমত কেবলা বানিয়ে নিয়েছে যে দিকে তারা মুখ করে থাকে। এর দ্বিতীয় অর্থ হল: প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের জন্য একটি নির্দিষ্ট পন্থা ও তরীকা বানিয়ে নিয়েছে। যেমন কুরআনে এসেছে:
(لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَّمِنْهَاجًا ط وَلَوْ شَا۬ءَ اللّٰهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَّاحِدَةً وَّلٰكِنْ لِّيَبْلُوَكُمْ فِيْ مَآ اٰتَاكُمْ)
“আমি তোমাদের প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছি একটি নির্দিষ্ট শরীয়ত ও একটি নির্দিষ্ট পথ। আর যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে অবশ্যই তিনি তোমাদের সবাইকে এক সম্প্রদায় করে দিতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের যাচাই করতে চান যা তিনি তোমাদের দিয়েছেন তার মাধ্যমে।”(সূরা মায়িদা ৫:৪৮)
আবূল আলিয়া (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীদের কেবলা রয়েছে যেদিকে ফিরে তারা ইবাদত করে। খ্রিস্টানদের কেবলা রয়েছে যেদিকে তারা অভিমুখী হয়। কিন্তু উম্মাতে মুহাম্মাদীকে আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত কেবলার হিদায়াত দিয়েছেন। অতএব হে উম্মাতে মুহাম্মাদী! তোমরা কল্যাণকর কাজে অগ্রগামী হও। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের সাফসীর)
(فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرٰتِ)
‘অতএব তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও’অর্থাৎ সকল কল্যাণময় কাজে যেমন সালাত, যাকাত ও সদাকা ইত্যাদি কাজে দ্রুত অগ্রসর হও। তাই সালাত প্রথম ওয়াক্তে আদায় করা উত্তম। হাদীসেও প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করার তাগীদ এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো কোন্ আমল উত্তম? জবাবে বলেন: প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা। (সহীহ, তিরমিযী হা: ১৭০)
আল্লাহ তা‘আলা সকলকে অবশ্যই কিয়ামাতের দিন একত্রিত করবেন। যদিও তোমাদের শরীর, হাড়, মাংস ইত্যাদি ছিন্ন-বিছিন্ন হয়ে যায়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সর্ববিষয়ে সক্ষম।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. প্রত্যেক জাতির কেবলা আছে। তবে আমরা মুসলিমরা সঠিক কেবলা প্রাপ্ত হয়েছি।
২. কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা‘আলা সকলকে একত্রিত করবেন, অতএব তাঁর কাছে ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
৩. আল্লাহ তা‘আলা সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
৪. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য নাবী, এটা ইয়াহূদীরা ভালভাবেই জানত, কিন্তু অহংকারবশত মেনে নেয়নি।
৫. প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা উত্তম।
(وَلِکُلٍّ وِّجْھَةٌ ھُوَ مُوَلِّیْھَا...)
“প্রত্যেকের জন্য এক একটি লক্ষ্যস্থল রয়েছে সেদিকেই সে মুখ ফেরায়। এর প্রথম অর্থ হল: প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের পছন্দমত কেবলা বানিয়ে নিয়েছে যে দিকে তারা মুখ করে থাকে। এর দ্বিতীয় অর্থ হল: প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের জন্য একটি নির্দিষ্ট পন্থা ও তরীকা বানিয়ে নিয়েছে। যেমন কুরআনে এসেছে:
(لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَّمِنْهَاجًا ط وَلَوْ شَا۬ءَ اللّٰهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَّاحِدَةً وَّلٰكِنْ لِّيَبْلُوَكُمْ فِيْ مَآ اٰتَاكُمْ)
“আমি তোমাদের প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছি একটি নির্দিষ্ট শরীয়ত ও একটি নির্দিষ্ট পথ। আর যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে অবশ্যই তিনি তোমাদের সবাইকে এক সম্প্রদায় করে দিতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের যাচাই করতে চান যা তিনি তোমাদের দিয়েছেন তার মাধ্যমে।”(সূরা মায়িদা ৫:৪৮)
আবূল আলিয়া (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীদের কেবলা রয়েছে যেদিকে ফিরে তারা ইবাদত করে। খ্রিস্টানদের কেবলা রয়েছে যেদিকে তারা অভিমুখী হয়। কিন্তু উম্মাতে মুহাম্মাদীকে আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত কেবলার হিদায়াত দিয়েছেন। অতএব হে উম্মাতে মুহাম্মাদী! তোমরা কল্যাণকর কাজে অগ্রগামী হও। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের সাফসীর)
(فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرٰتِ)
‘অতএব তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও’অর্থাৎ সকল কল্যাণময় কাজে যেমন সালাত, যাকাত ও সদাকা ইত্যাদি কাজে দ্রুত অগ্রসর হও। তাই সালাত প্রথম ওয়াক্তে আদায় করা উত্তম। হাদীসেও প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করার তাগীদ এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো কোন্ আমল উত্তম? জবাবে বলেন: প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা। (সহীহ, তিরমিযী হা: ১৭০)
আল্লাহ তা‘আলা সকলকে অবশ্যই কিয়ামাতের দিন একত্রিত করবেন। যদিও তোমাদের শরীর, হাড়, মাংস ইত্যাদি ছিন্ন-বিছিন্ন হয়ে যায়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সর্ববিষয়ে সক্ষম।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. প্রত্যেক জাতির কেবলা আছে। তবে আমরা মুসলিমরা সঠিক কেবলা প্রাপ্ত হয়েছি।
২. কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা‘আলা সকলকে একত্রিত করবেন, অতএব তাঁর কাছে ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
৩. আল্লাহ তা‘আলা সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
৪. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য নাবী, এটা ইয়াহূদীরা ভালভাবেই জানত, কিন্তু অহংকারবশত মেনে নেয়নি।
৫. প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা উত্তম।
2:149
وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ
فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۖ وَإِنَّهُۥ لَلْحَقُّ مِن
رَّبِّكَ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪৯ ও ১৫০ নং আয়াতের তাফসীর:
এ দু’টি আয়াতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হবার জন্য তিনবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রথম দু’টি নির্দেশ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে এবং পরের নির্দেশটি সর্বসাধারণের জন্য।
যাতে আহলে কিতাবরা তোমাদের ওপর যুক্তি ও বিতর্কের কোন অবকাশ না পায়। কেননা তারা জানে যে, এ উম্মাতের বৈশিষ্ট্য হল- কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করা। যখন তারা এ বৈশিষ্ট্য এ উম্মাতের মধ্যে দেখতে পাবে না তখন তাদের সন্দেহ জাগবে। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে গেলেন তখন তাদের কোন সন্দেহের অবকাশ রইল না। তবে তাদের মধ্যে যারা যালিম তাদের কথা ব্যতীত। কাতাদাহ ও সুদ্দী (রহঃ) বলেন, যালিম হল কুরাইশ মুশরিকগণ। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, পৃঃ ৪১৮)
অতএব কেবল আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করা উচিত, মানুষকে নয়।
(لِئَلَّا یَکُوْنَ لِلنَّاسِ)
‘অন্য কেউ তোমাদের সাথে বিতর্ক করতে না পারে’অর্থাৎ যাতে আহলে কিতাবগণ বলতে না পারে যে, আমাদের কিতাবে তো তাদের কেবলা কাবা বলা হয়েছে অথচ তারা বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হওয়া ওয়াজিব।
২. সকল ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করতে হবে।
৩. নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত, নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে আরো বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
এ দু’টি আয়াতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হবার জন্য তিনবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রথম দু’টি নির্দেশ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে এবং পরের নির্দেশটি সর্বসাধারণের জন্য।
যাতে আহলে কিতাবরা তোমাদের ওপর যুক্তি ও বিতর্কের কোন অবকাশ না পায়। কেননা তারা জানে যে, এ উম্মাতের বৈশিষ্ট্য হল- কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করা। যখন তারা এ বৈশিষ্ট্য এ উম্মাতের মধ্যে দেখতে পাবে না তখন তাদের সন্দেহ জাগবে। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে গেলেন তখন তাদের কোন সন্দেহের অবকাশ রইল না। তবে তাদের মধ্যে যারা যালিম তাদের কথা ব্যতীত। কাতাদাহ ও সুদ্দী (রহঃ) বলেন, যালিম হল কুরাইশ মুশরিকগণ। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, পৃঃ ৪১৮)
অতএব কেবল আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করা উচিত, মানুষকে নয়।
(لِئَلَّا یَکُوْنَ لِلنَّاسِ)
‘অন্য কেউ তোমাদের সাথে বিতর্ক করতে না পারে’অর্থাৎ যাতে আহলে কিতাবগণ বলতে না পারে যে, আমাদের কিতাবে তো তাদের কেবলা কাবা বলা হয়েছে অথচ তারা বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হওয়া ওয়াজিব।
২. সকল ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করতে হবে।
৩. নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত, নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে আরো বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
2:150
وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ
فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا
وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُۥ لِئَلَّا يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَيْكُمْ حُجَّةٌ إِلَّا
الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْهُمْ فَلَا تَخْشَوْهُمْ وَاخْشَوْنِى وَلِأُتِمَّ
نِعْمَتِى عَلَيْكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৪৯ ও ১৫০ নং
আয়াতের তাফসীর:
এ দু’টি আয়াতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হবার জন্য তিনবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রথম দু’টি নির্দেশ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে এবং পরের নির্দেশটি সর্বসাধারণের জন্য।
যাতে আহলে কিতাবরা তোমাদের ওপর যুক্তি ও বিতর্কের কোন অবকাশ না পায়। কেননা তারা জানে যে, এ উম্মাতের বৈশিষ্ট্য হল- কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করা। যখন তারা এ বৈশিষ্ট্য এ উম্মাতের মধ্যে দেখতে পাবে না তখন তাদের সন্দেহ জাগবে। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে গেলেন তখন তাদের কোন সন্দেহের অবকাশ রইল না। তবে তাদের মধ্যে যারা যালিম তাদের কথা ব্যতীত। কাতাদাহ ও সুদ্দী (রহঃ) বলেন, যালিম হল কুরাইশ মুশরিকগণ। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, পৃঃ ৪১৮)
অতএব কেবল আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করা উচিত, মানুষকে নয়।
(لِئَلَّا یَکُوْنَ لِلنَّاسِ)
‘অন্য কেউ তোমাদের সাথে বিতর্ক করতে না পারে’অর্থাৎ যাতে আহলে কিতাবগণ বলতে না পারে যে, আমাদের কিতাবে তো তাদের কেবলা কাবা বলা হয়েছে অথচ তারা বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হওয়া ওয়াজিব।
২. সকল ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করতে হবে।
৩. নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত, নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে আরো বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
এ দু’টি আয়াতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হবার জন্য তিনবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রথম দু’টি নির্দেশ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে এবং পরের নির্দেশটি সর্বসাধারণের জন্য।
যাতে আহলে কিতাবরা তোমাদের ওপর যুক্তি ও বিতর্কের কোন অবকাশ না পায়। কেননা তারা জানে যে, এ উম্মাতের বৈশিষ্ট্য হল- কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করা। যখন তারা এ বৈশিষ্ট্য এ উম্মাতের মধ্যে দেখতে পাবে না তখন তাদের সন্দেহ জাগবে। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে গেলেন তখন তাদের কোন সন্দেহের অবকাশ রইল না। তবে তাদের মধ্যে যারা যালিম তাদের কথা ব্যতীত। কাতাদাহ ও সুদ্দী (রহঃ) বলেন, যালিম হল কুরাইশ মুশরিকগণ। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, পৃঃ ৪১৮)
অতএব কেবল আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করা উচিত, মানুষকে নয়।
(لِئَلَّا یَکُوْنَ لِلنَّاسِ)
‘অন্য কেউ তোমাদের সাথে বিতর্ক করতে না পারে’অর্থাৎ যাতে আহলে কিতাবগণ বলতে না পারে যে, আমাদের কিতাবে তো তাদের কেবলা কাবা বলা হয়েছে অথচ তারা বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতে বাইতুল্লাহর দিকে কেবলামুখী হওয়া ওয়াজিব।
২. সকল ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করতে হবে।
৩. নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত, নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে আরো বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
2:151
كَمَآ أَرْسَلْنَا
فِيكُمْ رَسُولًا مِّنكُمْ يَتْلُوا عَلَيْكُمْ ءَايٰتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ
وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا
تَعْلَمُونَ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫১ ও ১৫২ নং আয়াতের তাফসীর:
১২৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছিলেন যাতে মক্কায় ইসমাঈলের বংশে একজন রাসূল আগমন করে। যিনি আল্লাহ তা‘আলার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, মানুষকে কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা দেবেন এবং শির্ক ও অশালীন আচরণ থেকে পবিত্র করবেন। সে কথাই এ আয়াতে বলা হয়েছে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। পবিত্র কুরআনে অনেক জায়গায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা তাঁর স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তন্মধ্যে অন্যতম যেমন-
১. সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলছেন-
(وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةً وَّأَصِيلًا)
“এবং তোমাদের প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর সকাল-সন্ধ্যায়।”(সূরা দাহার ৭৬:২৫)
২. বেশি বেশি তাঁর যিকির বা স্মরণের কথা বলেন:
(وَاذْكُرْ رَبَّكَ كَثِيرًا وَّسَبِّحْ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ)
“আর খুব বেশি করে তোমার রবের যিকির কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা বর্ণনা কর।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৪১)
এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তবে যিকির অর্থ এই নয় যে, কিছু লোক একত্রিত হয়ে সমস্বরে উচ্চকণ্ঠে হেলেদুলে এমনভাবে আওয়াজ করা যাতে মানুষ পাগল বলে। যেমন এ ব্যাপারে একটি বানোয়াট হাদীস উল্লেখ করা হয়:
أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللّٰهِ حَتَّي يَقُولُوا مَجْنُونٌ
বেশি বেশি আল্লাহ তা‘আলার যিকির কর যেন মানুষ তোমাকে পাগল বলে। (সিলসিলা যঈফাহ হা: ৫১৭)
বরং সালাত একটি যিকির, সিয়াম একটি যিকির, তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ ইত্যাদিসহ শরীয়তের সকল ইবাদত আল্লাহ তা‘আলার যিকির। এবং যিকির যে কিছুক্ষণের সাথে সম্পৃক্ত তা নয় বরং সর্বক্ষণ আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণ আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(الَّذِیْنَ یَذْکُرُوْنَ اللہَ قِیٰمًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰی جُنُوْبِھِمْ)
যারা দণ্ডায়মান, উপবেশন ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে। (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৯১)
এ যিকিরের ফযীলত সম্পর্কে সহীহ হাদীস রয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ حِينَ يَذْكُرُنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَأٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَأٍ خَيْرٍ مِنْهُ
আমি আমার বান্দার নিকট তেমন, যেমন সে আমাকে মনে করে এবং আমি তার সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি আমাকে একাকি স্মরণ করে আমিও তাকে একাকি স্মরণ করি। আর যদি কোন সমাবেশে স্মরণ করে আমিও তাকে তার চেয়ে উত্তম সমাবেশে স্মরণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৭৪০৫)
আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ করার অর্থ হল আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দেবেন, উত্তম প্রতিদান দেবেন। (তাফসীর মুয়াসসার পৃঃ ২৩)
সাঈদ বিন যুবাইর বলেন: এর অর্থ হল আমার আনুগত্য ও ইবাদাতের মাধ্যমে স্মরণ কর আমি আমার ক্ষমার মাধ্যমে তোমাদের স্মরণ করব। অন্য বর্ণনায় রয়েছে রহমাতের মাধ্যমে স্মরণ করব। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৯)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর শুকরিয়া আদায় করার কথা বললেন আর কুফরী করতে নিষেধ করলেন। শুকরিয়া আদায় করার ফলাফল হল- আল্লাহ তা‘আলা অধিক বরকত দান করবেন:
(لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ)
‘তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই বৃদ্ধি করে দেব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’(সূরা ইবরাহীম ১৪:৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মাটির তৈরি মানুষ, নূরের তৈরি নন।
২. যতটুকু না জানলে ফরয ইবাদত করা যায় না কমপক্ষে ততটুকু জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য ফরয।
৩. সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করা উচিত।
৪. নেয়ামতের কুফরী করা হারাম।
১২৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছিলেন যাতে মক্কায় ইসমাঈলের বংশে একজন রাসূল আগমন করে। যিনি আল্লাহ তা‘আলার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, মানুষকে কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা দেবেন এবং শির্ক ও অশালীন আচরণ থেকে পবিত্র করবেন। সে কথাই এ আয়াতে বলা হয়েছে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। পবিত্র কুরআনে অনেক জায়গায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা তাঁর স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তন্মধ্যে অন্যতম যেমন-
১. সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলছেন-
(وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةً وَّأَصِيلًا)
“এবং তোমাদের প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর সকাল-সন্ধ্যায়।”(সূরা দাহার ৭৬:২৫)
২. বেশি বেশি তাঁর যিকির বা স্মরণের কথা বলেন:
(وَاذْكُرْ رَبَّكَ كَثِيرًا وَّسَبِّحْ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ)
“আর খুব বেশি করে তোমার রবের যিকির কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা বর্ণনা কর।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৪১)
এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তবে যিকির অর্থ এই নয় যে, কিছু লোক একত্রিত হয়ে সমস্বরে উচ্চকণ্ঠে হেলেদুলে এমনভাবে আওয়াজ করা যাতে মানুষ পাগল বলে। যেমন এ ব্যাপারে একটি বানোয়াট হাদীস উল্লেখ করা হয়:
أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللّٰهِ حَتَّي يَقُولُوا مَجْنُونٌ
বেশি বেশি আল্লাহ তা‘আলার যিকির কর যেন মানুষ তোমাকে পাগল বলে। (সিলসিলা যঈফাহ হা: ৫১৭)
বরং সালাত একটি যিকির, সিয়াম একটি যিকির, তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ ইত্যাদিসহ শরীয়তের সকল ইবাদত আল্লাহ তা‘আলার যিকির। এবং যিকির যে কিছুক্ষণের সাথে সম্পৃক্ত তা নয় বরং সর্বক্ষণ আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণ আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(الَّذِیْنَ یَذْکُرُوْنَ اللہَ قِیٰمًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰی جُنُوْبِھِمْ)
যারা দণ্ডায়মান, উপবেশন ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে। (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৯১)
এ যিকিরের ফযীলত সম্পর্কে সহীহ হাদীস রয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ حِينَ يَذْكُرُنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَأٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَأٍ خَيْرٍ مِنْهُ
আমি আমার বান্দার নিকট তেমন, যেমন সে আমাকে মনে করে এবং আমি তার সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি আমাকে একাকি স্মরণ করে আমিও তাকে একাকি স্মরণ করি। আর যদি কোন সমাবেশে স্মরণ করে আমিও তাকে তার চেয়ে উত্তম সমাবেশে স্মরণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৭৪০৫)
আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ করার অর্থ হল আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দেবেন, উত্তম প্রতিদান দেবেন। (তাফসীর মুয়াসসার পৃঃ ২৩)
সাঈদ বিন যুবাইর বলেন: এর অর্থ হল আমার আনুগত্য ও ইবাদাতের মাধ্যমে স্মরণ কর আমি আমার ক্ষমার মাধ্যমে তোমাদের স্মরণ করব। অন্য বর্ণনায় রয়েছে রহমাতের মাধ্যমে স্মরণ করব। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৯)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর শুকরিয়া আদায় করার কথা বললেন আর কুফরী করতে নিষেধ করলেন। শুকরিয়া আদায় করার ফলাফল হল- আল্লাহ তা‘আলা অধিক বরকত দান করবেন:
(لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ)
‘তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই বৃদ্ধি করে দেব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’(সূরা ইবরাহীম ১৪:৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মাটির তৈরি মানুষ, নূরের তৈরি নন।
২. যতটুকু না জানলে ফরয ইবাদত করা যায় না কমপক্ষে ততটুকু জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য ফরয।
৩. সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করা উচিত।
৪. নেয়ামতের কুফরী করা হারাম।
2:152
فَاذْكُرُونِىٓ
أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوا لِى وَلَا تَكْفُرُونِ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫১ ও ১৫২ নং আয়াতের তাফসীর:
১২৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছিলেন যাতে মক্কায় ইসমাঈলের বংশে একজন রাসূল আগমন করে। যিনি আল্লাহ তা‘আলার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, মানুষকে কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা দেবেন এবং শির্ক ও অশালীন আচরণ থেকে পবিত্র করবেন। সে কথাই এ আয়াতে বলা হয়েছে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। পবিত্র কুরআনে অনেক জায়গায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা তাঁর স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তন্মধ্যে অন্যতম যেমন-
১. সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলছেন-
(وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةً وَّأَصِيلًا)
“এবং তোমাদের প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর সকাল-সন্ধ্যায়।”(সূরা দাহার ৭৬:২৫)
২. বেশি বেশি তাঁর যিকির বা স্মরণের কথা বলেন:
(وَاذْكُرْ رَبَّكَ كَثِيرًا وَّسَبِّحْ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ)
“আর খুব বেশি করে তোমার রবের যিকির কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা বর্ণনা কর।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৪১)
এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তবে যিকির অর্থ এই নয় যে, কিছু লোক একত্রিত হয়ে সমস্বরে উচ্চকণ্ঠে হেলেদুলে এমনভাবে আওয়াজ করা যাতে মানুষ পাগল বলে। যেমন এ ব্যাপারে একটি বানোয়াট হাদীস উল্লেখ করা হয়:
أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللّٰهِ حَتَّي يَقُولُوا مَجْنُونٌ
বেশি বেশি আল্লাহ তা‘আলার যিকির কর যেন মানুষ তোমাকে পাগল বলে। (সিলসিলা যঈফাহ হা: ৫১৭)
বরং সালাত একটি যিকির, সিয়াম একটি যিকির, তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ ইত্যাদিসহ শরীয়তের সকল ইবাদত আল্লাহ তা‘আলার যিকির। এবং যিকির যে কিছুক্ষণের সাথে সম্পৃক্ত তা নয় বরং সর্বক্ষণ আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণ আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(الَّذِیْنَ یَذْکُرُوْنَ اللہَ قِیٰمًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰی جُنُوْبِھِمْ)
যারা দণ্ডায়মান, উপবেশন ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে। (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৯১)
এ যিকিরের ফযীলত সম্পর্কে সহীহ হাদীস রয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ حِينَ يَذْكُرُنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَأٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَأٍ خَيْرٍ مِنْهُ
আমি আমার বান্দার নিকট তেমন, যেমন সে আমাকে মনে করে এবং আমি তার সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি আমাকে একাকি স্মরণ করে আমিও তাকে একাকি স্মরণ করি। আর যদি কোন সমাবেশে স্মরণ করে আমিও তাকে তার চেয়ে উত্তম সমাবেশে স্মরণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৭৪০৫)
আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ করার অর্থ হল আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দেবেন, উত্তম প্রতিদান দেবেন। (তাফসীর মুয়াসসার পৃঃ ২৩)
সাঈদ বিন যুবাইর বলেন: এর অর্থ হল আমার আনুগত্য ও ইবাদাতের মাধ্যমে স্মরণ কর আমি আমার ক্ষমার মাধ্যমে তোমাদের স্মরণ করব। অন্য বর্ণনায় রয়েছে রহমাতের মাধ্যমে স্মরণ করব। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৯)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর শুকরিয়া আদায় করার কথা বললেন আর কুফরী করতে নিষেধ করলেন। শুকরিয়া আদায় করার ফলাফল হল- আল্লাহ তা‘আলা অধিক বরকত দান করবেন:
(لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ)
‘তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই বৃদ্ধি করে দেব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’(সূরা ইবরাহীম ১৪:৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মাটির তৈরি মানুষ, নূরের তৈরি নন।
২. যতটুকু না জানলে ফরয ইবাদত করা যায় না কমপক্ষে ততটুকু জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য ফরয।
৩. সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করা উচিত।
৪. নেয়ামতের কুফরী করা হারাম।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite১২৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইবরাহীম (আঃ) দু‘আ করেছিলেন যাতে মক্কায় ইসমাঈলের বংশে একজন রাসূল আগমন করে। যিনি আল্লাহ তা‘আলার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, মানুষকে কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা দেবেন এবং শির্ক ও অশালীন আচরণ থেকে পবিত্র করবেন। সে কথাই এ আয়াতে বলা হয়েছে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। পবিত্র কুরআনে অনেক জায়গায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা তাঁর স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তন্মধ্যে অন্যতম যেমন-
১. সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলছেন-
(وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةً وَّأَصِيلًا)
“এবং তোমাদের প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর সকাল-সন্ধ্যায়।”(সূরা দাহার ৭৬:২৫)
২. বেশি বেশি তাঁর যিকির বা স্মরণের কথা বলেন:
(وَاذْكُرْ رَبَّكَ كَثِيرًا وَّسَبِّحْ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ)
“আর খুব বেশি করে তোমার রবের যিকির কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা বর্ণনা কর।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৪১)
এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণের কথা বলা হয়েছে।
তবে যিকির অর্থ এই নয় যে, কিছু লোক একত্রিত হয়ে সমস্বরে উচ্চকণ্ঠে হেলেদুলে এমনভাবে আওয়াজ করা যাতে মানুষ পাগল বলে। যেমন এ ব্যাপারে একটি বানোয়াট হাদীস উল্লেখ করা হয়:
أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللّٰهِ حَتَّي يَقُولُوا مَجْنُونٌ
বেশি বেশি আল্লাহ তা‘আলার যিকির কর যেন মানুষ তোমাকে পাগল বলে। (সিলসিলা যঈফাহ হা: ৫১৭)
বরং সালাত একটি যিকির, সিয়াম একটি যিকির, তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ ইত্যাদিসহ শরীয়তের সকল ইবাদত আল্লাহ তা‘আলার যিকির। এবং যিকির যে কিছুক্ষণের সাথে সম্পৃক্ত তা নয় বরং সর্বক্ষণ আল্লাহ তা‘আলার যিকির বা স্মরণ আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(الَّذِیْنَ یَذْکُرُوْنَ اللہَ قِیٰمًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰی جُنُوْبِھِمْ)
যারা দণ্ডায়মান, উপবেশন ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে। (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৯১)
এ যিকিরের ফযীলত সম্পর্কে সহীহ হাদীস রয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ حِينَ يَذْكُرُنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَأٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَأٍ خَيْرٍ مِنْهُ
আমি আমার বান্দার নিকট তেমন, যেমন সে আমাকে মনে করে এবং আমি তার সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি আমাকে একাকি স্মরণ করে আমিও তাকে একাকি স্মরণ করি। আর যদি কোন সমাবেশে স্মরণ করে আমিও তাকে তার চেয়ে উত্তম সমাবেশে স্মরণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৭৪০৫)
আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ করার অর্থ হল আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দেবেন, উত্তম প্রতিদান দেবেন। (তাফসীর মুয়াসসার পৃঃ ২৩)
সাঈদ বিন যুবাইর বলেন: এর অর্থ হল আমার আনুগত্য ও ইবাদাতের মাধ্যমে স্মরণ কর আমি আমার ক্ষমার মাধ্যমে তোমাদের স্মরণ করব। অন্য বর্ণনায় রয়েছে রহমাতের মাধ্যমে স্মরণ করব। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৪১৯)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর শুকরিয়া আদায় করার কথা বললেন আর কুফরী করতে নিষেধ করলেন। শুকরিয়া আদায় করার ফলাফল হল- আল্লাহ তা‘আলা অধিক বরকত দান করবেন:
(لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ)
‘তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই বৃদ্ধি করে দেব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’(সূরা ইবরাহীম ১৪:৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মাটির তৈরি মানুষ, নূরের তৈরি নন।
২. যতটুকু না জানলে ফরয ইবাদত করা যায় না কমপক্ষে ততটুকু জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য ফরয।
৩. সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করা উচিত।
৪. নেয়ামতের কুফরী করা হারাম।
0 Comments