বিবাহ ও দাম্পত্য
✔ ৪২৪. প্রশ্নঃ বহু বিবাহ বা
একাধিক বিবাহকে অনেক মুসলিমও ঘৃণা করে। যদিও অনেকে তা কামনা করে। ইসলামে বহু
বিবাহের মান কী?
উত্তরঃ অধিকাংশ মানুষ বহু বিবাহকে ঘৃণা করার কারণ হচ্ছে সতীনের সংসারে অশান্তির
বহিঃপ্রকাশ। পুরুষ তার একাধিক স্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না অথবা ইনসাফ ও
ন্যায়পরায়ণতা বজায় রাখতে পারে না বলে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়, তা দেখে মানুষ বহু বিবাহকে ঘৃণা করে। অথচ ইসলামে বিবাহের ব্যাপারে
মৌলিক বিধান হল, সামর্থ্য থাকলে পুরুষ একাধিক বিবাহ করবে।
তবে হবু স্ত্রীর মাঝে ইনসাফ বজায় না রাখতে পারলে একটি নিয়ে সন্তষ্ট হবে। মহান
আল্লাহ বলেছেন,
“আর তোমরা যদি আশংকা কর যে, পিতৃহীনাদের
প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিবাহ কর
(স্বাধীন)নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দুই,
তিন অথবা চার। আর যদি আশংকা কর যে, সুবিচার
করতে পারবে না, তবে একজনকে (বিবাহ কর) অথবা তোমাদের
অধিকারভুক্ত (ক্রীত অথবা যুদ্ধবন্দিনী) দাসীকে (স্ত্রীরূপে ব্যবহার কর)। এটাই
তোমাদের পক্ষপাতিত্ব না করার অধিকতর নিকটবর্তী।” (নিসাঃ
৩)
পরন্ত বহু বিবাহ করা শর্তসাপেক্ষে সুন্নত ও আফযল।
যেহেতু আমাদের গুরু মহানবী (ﷺ) বহু বিবাহ
করেছেন। ইবনে আব্বাস (ﷺ) সাঈদ বিন
জুবাইরকে বলেছিলেন, ‘বিবাহ কর। কারণ এই উম্মতের
সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি , যার সবার বেশি স্ত্রী।’ অথবা ‘এই উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সবার
চেয়ে বেশি স্ত্রী ছিল।’ ৫৩৯ (আহমাদ, বুখারী)
উল্লেখ্য যে, একই সাথে
চারটির বেশি স্ত্রী রাখা হারাম। যেমন উক্ত আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে। সমানঅধিকার দিয়ে
রাখার ক্ষমতা না হলে একটাই বিবাহ করতে হবে। তাতেও সক্ষম হলে রোযা পালন করে যেতে
হবে। ৫৪০ (বুখারী ৫০৬৫, মুসলিম ১৪০০ নং)
উত্তরঃ কাউকে রক্ত দিলেই তার সাথে রক্তের সম্পর্ক কায়েম হয় না। সুতরাং তার সাথে
বিবাহ বৈধ। ৫৪১ (লাজনাহে দায়েমাহ)
উত্তরঃ কোন বিবাহিত স্বামী ওয়ালী সধবা মহিলাকে বিবাহ করা বৈধ নয়, যতক্ষণ না তার তালাক হয়েছে অথবা তার স্বামী মারা গেছে এবং তার
নির্ধারিত ইদ্দত কাল অতিবাহিত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ব্যতিত সকল সধবা
তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এ হল আল্লাহর বিধান।
উল্লেখিত নারীগণ ব্যতিত আর সকলকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ করা হল; এই শর্তে যে, তোমরা তাঁদেরকে নিজ সম্পদের
বিনিময়ে বিবাহের মাধ্যমে গ্রহণ করবে, অবৈধ যৌন সম্পর্কের
মাধ্যমে নয়।” (নিসাঃ ২৪)
উত্তরঃ মহান আল্লাহ যে সকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম বলেছেন, তার মধ্যে একজন হল বিবাহিত মহিলা, যে কোন
স্বামীর বিবাহ বন্ধনে বর্তমানে সংসার করছে এবং তালাক হয়নি। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ব্যাতিত সকল
সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এ হল আল্লাহর
বিধান। উল্লেখিত নারীগণ ব্যাতীত আর সকলকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ করা হল;
এই শর্তে যে, তোমরা তাঁদেরকে নিজ
সম্পদের বিনিময়ে বিবাহের মাধ্যমে গ্রহণ করবে, অবৈধ যৌন
সম্পর্কের মাধ্যমে নয়।” (নিসাঃ ২৪)
বলা বাহুল্য একজনের স্ত্রী অবস্থায় থাকাকালে
অন্যের সাথে বিবাহ বন্ধনই শুদ্ধ হবে না, কিন্তু
অন্ধ প্রেম সেই দম্পতিকে চির ব্যভিচারের নর্দমায় ফেলে রাখে।
✔ ৪২৮ প্রশ্নঃ এক ব্যক্তি এক
কুমারীর সাথে (প্রেম করে) ব্যভিচার করেছে, এখন সে
তাকে বিবাহ করতে চায়। এটা কি তার জন্য বৈধ?
উত্তরঃ যদি বাস্তবে তাই হয়ে থাকে, তাহলে ওদের প্রত্যেকের উপর
আল্লাহর নিকট তওবা করা ওয়াজেব; এই নিকৃষ্টতম অপরাধ হতে
বিরত হবে, অশালীনতায় পড়ার ফলে যা ঘটে গেছে, তার উপর খুব লজ্জিত হবে, এমন নোংরামীর পথে
পুনরায় পা না বাড়াতে দৃঢ়সংকল্প হবে এবং অধিক অধিক সৎকাজ করবে। সম্ভবতঃ আল্লাহ
উভয়কে ক্ষমা করে দেবেন এবং তাদেরকে পাপসমূহকে পুন্যে পরিণত করবেন। যেমন তিনি বলেন,
“যার আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যকে আহবান করে না, আল্লাহ যাকে যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে হত্যা নিষেধ করেছেন, তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা এগুলো করে তারা শাস্তি
ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন ওদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে তারা হীন অবস্থায়
স্থায়ী হবে। তবে তারা নয়, যারা তওবা করে, (পূর্ণ) ঈমান এনে সৎকার্য করে, আল্লাহ ওদের
পাপরাশীকে পুন্যে পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম
দয়ালু। যে ব্যক্তি তওবা করে ও সৎকাজ করে, সে সম্পূর্ণরূপে
আল্লাহর অভিমুখী হয়।” (সূরা ফুরকান ৬৮-৭১ আয়াত)
আর ঐ ব্যক্তি যদি ঐ মহিলাকে বিবাহ করতে চায়, তাহলে বিবাহ বন্ধনের পূর্বে এক মাসিক দেখে তাকে (গর্ভবতী কি না তা)
পরীক্ষা করে নেবে। যদি (মাসিক না হয় এবং) তার গর্ভ প্রকাশ পায়, তাহলে তার বিবাহ বন্ধন ততক্ষণ পর্যন্ত বৈধ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে সন্তান প্রসব করেছে। যেহেতু রসূল (ﷺ) অপরের ফসলকে
নিজের পানি দ্বারা সিঞ্চিত (অর্থাৎ গর্ভবতী নারীকে বিবাহ করে সঙ্গম) করতে নিষেধ
করেছেন। ৫৪২ (আবূ দাঊদ) (লাজনাহ দায়েমাহ)
উত্তরঃ কোন মুসলিম মহিলার কোন অমুসলিম পুরুষের সাথে বিবাহ বৈধ নয়। যেহেতু মহান
আল্লাহ বলেছেন,
“অংশীবাদী রমণী যে পর্যন্ত না (ইসলাম ধর্মে) বিশ্বাস করে,
তোমরা তাঁদেরকে বিবাহ করোনা। অংশীবাদী নারী তোমাদেরকে চমৎকৃত
করলেও নিশ্চয় (ইসলাম ধর্মে) বিশ্বাসী ক্রীতদাসী তার থেকেও উত্তম। (ইসলাম
ধর্মে)বিশ্বাস না করা পর্যন্ত অংশীবাদী পুরুষের সাথে (তোমাদের কন্যার) বিবাহ না।
অংশীবাদী পুরুষ তোমাদেরকে চমৎকৃত করলেও (ইসলাম ধর্মে)বিশ্বাসী ক্রীতদাস তার থেকেও
উত্তম। কারণ, ওরা তোমাদের আগুনের দিকে আহবান করে এবং
আল্লাহ তোমাদের স্বীয় ইচ্ছায় বেহেশত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন। তিনি মানুষের জন্য
স্বীয় নিদর্শনসমূহ সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা
তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।” (বাকারাহঃ ২২১)
“হে বিশ্বাসীগন! তোমাদের নিকট বিশ্বাসী নারীরা দেশ ত্যাগ
করে আসলে, তোমরা তাঁদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান
(বিশ্বাস) সম্বন্ধে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা বিশ্বাসিনী, তবে তাঁদেরকে অবিশ্বাসীদের
কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিয়ো না। বিশ্বাসী নারীরা অবিশ্বাসীদের জন্য বৈধ নয়। অবিশ্বাসীরা
বিশ্বাসী নারীদের জন্য বৈধ নয়। অবিশ্বাসীরা যা ব্যয় করেছে, তা তাদেরকে ফিরিয়ে দাও। অতঃপর তোমরা তাদেকে বিবাহ করলে তোমাদের কোন
অপরাধ হবে না; যদি তোমরা তাঁদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও।
তোমরা অবিশ্বাসী নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা যা ব্যয় করেছ,
তা ফেরত চেয়ে নাও এবং অবিশ্বাসীরা ফেরত চেয়ে নিক, যা তারা ব্যয় করেছে। এটাই আল্লাহর ফয়সালা। তিনি তোমদের মধ্যে ফয়সালা
করেছেন। আর আল্লাহর সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (মুমতাহিনাহঃ ১০)
বলা বাহুল্য, ইসলাম
গ্রহণ করলেও তার সাথে মুসলিম মহিলার বিবাহ বৈধ।
অনুরূপ কোন মুসলিম পুরুষও কোন অমুসলিম মহিলাকে
বিবাহ করতে পারে না। অবশ্য কিছু শর্তের সাথে কেবল ইয়াহুদী-খ্রিস্টান মহিলাকে বিবাহ
করতে পারে। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“বিশ্বাসী সচ্চরিত্রা নারীগণ ও তোমাদের পূর্বে যাদেরকে
কিতাব দেওয়া হয়েছে, তাদের সচ্চরিত্রা নারীগণ (তোমাদের
জন্য বৈধ করা হল); যদি তোমরা তাঁদেরকে মোহর প্রদান করে
বিবাহ কর, প্রকাশ্য ব্যভিচার অথবা উপপত্নীরূপে গ্রহণ করার
জন্য নয়।”(মায়িদাহঃ ৫)
কিন্তু কোন মুসলিম মহিলা কোন ইয়াহুদি-খ্রিস্টান
পুরুষকে বিবাহ করতে পারে না। কারণ মুসলিমরা তাদের নবীর প্রতি ঈমান রাখে, কিন্তু তারা মুসলিমদের নবীর প্রতি ঈমান রাখে না।
উত্তরঃ স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার পর লজ্জিত হয়ে ভুল বুঝতে পেরে তাকে ফিরে পেতে ‘হালালা’ পন্থা অবলম্বন বৈধ নয়। অর্থাৎ,
স্ত্রীকে হালাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে কোন বন্ধু বা
চাচাত-মামাতো ভায়ের সাথে বিবাহ দিয়ে এক রাত্রি বাস করে তালাক দিলে পরে ইদ্দতের পর
নিজে বিবাহ করা এক প্রকার ধোঁকা এবং ব্যভিচার। যাতে দ্বিতীয় স্বামী এক রাত্রি
ব্যভিচার করে এবং প্রথম স্বামী ঐ স্ত্রীকে হালাল মনে করে ফিরে নিয়েও তার সাথে
চিরদিন ব্যভিচার করতে থাকে। কারণ, প্রকৃতপক্ষে স্ত্রী
ঐভাবে তার জন্য হালাল হয় না।
যে ব্যক্তি হালাল করার জন্য ঐরূপ বিবাহ করে, হাদীসের ভাষায় সে হল ‘ধার করা ষাঁড়’। ৫৪৩ (ইরওয়াউল গালীল ৬/৩০৯) এই ব্যক্তি এবং যার জন্য হালাল করা হয়,
সে ব্যক্তি (অর্থাৎ প্রথম স্বামী)আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের
অভিশপ্ত।৫৪৪ (ঐ ১৮৯ নং, মিশকাত ৩২৯৬)
উত্তরঃ জয়বদলি বা বিনিময় বিবাহ বিনা পৃথক মোহরে বৈধ নয়। এ ওর বোন বা বেটিকে এবং ও
ওর বোন বা বেটিকে বিনিময় করে পাত্রীর বদলে পাত্রীর মোহর বানিয়ে বিবাহ ইসলামে
হারাম। ৫৪৫ (বুখারী, মুসলিম ইত্যাদি)অবশ্য বহু
উলামার নিকট উভয় পৃথক মোহর হলেও জয়বদলী বিবাহ বৈধ নয়। (যদি তাতে কোন ধোঁকা ধাপ্পা
দিয়ে নামকে ওয়াস্তে মোহর বাঁধা হয় তাহলে)।৫৪৬ (মাজাল্লাতুল বুহূষিল ইসলামিয়্যাহ
৪/৩২৮, ৯/৬৮)
উত্তরঃ মুতআহ বা সাময়িক বিবাহ ইসলাম বৈধ নয়। কিছুর বিনিময়ে কেবল এক সপ্তাহ বা এক
মাস বা বছর স্ত্রীসঙ্গ গ্রহণ করে বিচ্ছিন্ন হওয়ার যেহেতু ঐ স্ত্রী ও তার সন্তানের দুর্দিন আসে, তাই
ইসলাম এমন বিবাহকে হারাম ঘোষণা করেছে। ৫৪৭ (বুখারী, মুসলিম,
মিশকাত ৩১৪৭ নং)
উত্তরঃ তালাকের নিয়তে বিবাহ এক প্রকার ধোঁকাবাজি। বিদেশে গিয়ে বা দেশেই বিবাহ
বন্ধনের সময় মনে মনে এই নিয়ত রাখা যে, কিছুদিন
সুখ লুটে তালাক দিয়ে দেশে ফিরব বা চম্পট দেব, তবে এমন
বিবাহও বৈধ নয়। (এরূপ করলে ব্যভিচার করা হয়।) কারণ, এতেও
ঐ স্ত্রী ও তার সন্তানের অসহায় অবস্থা নেমে আসে। ৫৪৮(ফাতাওয়াল মারাআহ ৪৯ পৃঃ) তাতে
নারীর মান ও অধিকার খর্ব হয়।
উত্তরঃ বাল্য বিবাহ বৈধ। ৫৪৯ (মুসলিম, মিশকাত
৩১২৯ নং) তবে সাবালক হওয়ার পর স্বামী স্ত্রীর এক অপরকে পছন্দ না হলে তারা বিবাহ
বন্ধন ছিন্ন করতে পারে। ৫৫০ (বুখারী ৫১৩৮ নং, আবূ দাঊদ,
মিশকাত ৩১৩৬ নং)
উত্তরঃ কোন মুসলিম কোন ব্যভিচারিণী নারীকে বিবাহ করতে পারে না। বরং ঐ ব্যাপারে
ঐরূপ নারী মনোমুগ্ধকর সুন্দরী রুপের ডালি বা ডানা কাটা পরি হলেও মুসলিম পুরুষের
তাতে রুচি হওয়াই উচিত নয়। একান্ত প্রেমের নেশায় নেশাগ্রস্থ হলেও তাকে সহধর্মিণী
করা হারাম। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক বলেন,
“ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা অংশীবাদিনীকে এবং
ব্যভিচারিণী কেবল ব্যভিচারী অথবা অংশীবাদী পুরুষকে বিবাহ করে থাকে। আর মুমিন
পুরুষদের জন্য তা হারাম করা হল।”(নূরঃ ৩)
সুতরাং অসতী নারী মুশরিকের উপযুক্ত; মুসলিমের নয়। কারণ উভয়েই অংশীবাদী; এ পতির
প্রেমে উপপতিকে অংশীস্থাপন করে ও করে একক মা’বুদের ইবাদতে
অন্য বাতিল মা’বুদকে শরীক। (অবশ্য অসতী হলেও কোন মুশরিকের
সাথে কোন মুসলিম নারীর বিবাহ বৈধ নয়।)
পক্ষান্তরে ব্যভিচারিনী যদি তওবা করে প্রকৃত
মুসলিম নারী হয়, তাহলে এক মাসিক অপেক্ষার পর
তবেই তাকে বিবাহ করা বৈধ হতে পারে। গর্ভ হলে গর্ভাবস্থায় বিবাহ বন্ধন শুদ্ধ নয়। প্রসবের
পরই বিবাহ হতে হবে। ৫৫১(ইউঃ ২/৭৮০)
উত্তরঃ ইসলামী বিধানে প্রয়োজনে ৪ টি মহিলাকে একই সময় স্ত্রীরূপে রাখা যায়। তার
বেশি নয়। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“আর তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে, পিতৃহীনদের
প্রতি সুবিচার করতে পারবে নাম তবে বিবাহ কর (স্বাধীন) নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের
ভাল লাগে; দুই, তিন অথবা চার। আর
যদি আশংকা কর যে, সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকেই (স্ত্রীরূপে ব্যবহার কর)। এটাই তোমাদের পক্ষপাতিত্ব না
করার অধিকতর নিকটবর্তী।” (নিসাঃ ৩)
✔ ৪৩৭ প্রশ্নঃ নাতিন বা
পুতিনকে ঠাট্টাছলে অনেকে ‘গিন্নি’ বলে। তাহলে তাদের সাথে কি নানা বা দাদার বিবাহ বৈধ?
উত্তরঃ নাতিন ও পুতিনের কাছে তাদের নানা ও দাদা পিতা স্বরূপ এবং নানা দাদার কাছে
তারা ‘কন্যা’ বা মেয়ে স্বরূপ। তাদের
আপোষে বিবাহ বৈধ নয় এবং ঐ শ্রেণীর ঠাট্টা উপহাসও বৈধ নয়। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“তোমাদের জন্য হারাম (নিষিদ্ধ) করা হয়েছে তোমাদের মাতাগণ,
কন্যাগণ....।”(নিসাঃ ২৩)
✔ ৪৩৮ প্রশ্নঃ স্ত্রী থাকতে
তার বোনকে অথবা তার বুনঝি বা ভাইঝিকে অথবা তার খালা বা ফুফুকে বিবাহ করা বৈধ কি?
উত্তরঃ দুই বোনকে সতীন বানানো কুরআনী বিধানে নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“(হারাম করা হয়েছে) দুই ভাগিনীকে একত্রে বিবাহ করা;
কিন্তু যা গত হয়ে গেছে, তা (ধর্তব্য
নয়)। নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (নিসাঃ ২৩)
আর হাদীসের বিধানে ফুফু ভাইঝি বা খালা বুনঝিকে
সতীন বানাতে নিষেধ করা হয়েছে। ৫৫২ (বুখারী, মুসলিম,
মিশকাত ৩১৬০ নং)
✔ ৪৩৯ প্রশ্নঃ কোন কোন সময় এমন
হয় যে, জোরপূর্বক বর বা কনেকে বিবাহের কাবিন নামা বা তালাক
পত্রে সই করিয়ে বিবাহ বা তালাক দেওয়া হয়। কিন্তু জোরপূর্বক বিবাহ বা তালাক কি গণ্য?
উত্তরঃ জোরপূর্বক বিবাহ বা তালাক গণ্য নয়। ভয় দেখিয়ে বা হুমকির মুখে কাউকে বিয়ে
করে সংসার করলে ব্যভিচার করা হয়। অনুরূপ তালাকও। জোরপূর্বক মুসলিম বানানো হলে যেমন
কেউ মুসলিম হয়ে যায় না, জোরপূর্বক কুফরী করলে যেমন কেউ
কাফের হয় না, তেমন বিবাহ ও তালাকও। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“কেউ বিশ্বাস করার পরে আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং
অবিশ্বাসের জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর ক্রোধে এবং তার
জন্য রয়েছে মহাশাস্তি; তবে তার জন্য নয়, যাকে অবিশ্বাসে বাধ্য করা হয়েছে, অথচ তার
চিত্ত বিশ্বাসে অবিচল।” (নাহলঃ ১০৬)
রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মতের ভুল, বিস্মৃত এবং
যার উপর তাকে নিরুপায় করা হয়, তার (পাপ)কে অতিক্রম
(ক্ষমা) করেন।” ৫৫৩ (ইবনে মাজাহ ২০৪৫ নং)
✔ ৪৪০ প্রশ্নঃ আমি বিবাহের বয়স
উত্তীর্ণ একজন ধনী ও রোগী মহিলা। আমি একজন সুপুরুষকে বিবাহ করে কেবল স্ত্রীর
মর্যাদা পেতে চাই। আমি আমার পৈত্রিক বাড়িতেই থাকতে চাই। আমি তার নিকট কোন প্রকার
খোরপোশ দাবী করব না। সে কেবল মাঝে মাঝে আমার সাথে সাক্ষাৎ করে যাবে। তার প্রথম
স্ত্রী আছে। সে তার ঐ স্ত্রীর কাছে আমার কথা গোপন রাখবে। সে রাজী, আমি রাজী, আমার অভিভাবক ও রাজী। এমন বিবাহে
কোন সমস্যা আছে কি?
উত্তরঃ বিবাহের যে সকল শর্ত আছে, তা পূরণ হলে এমন বিবাহ বৈধ।
আপনার অভিভাবক, সাক্ষীস্বরূপ কমপক্ষে দুইজন সৎ ব্যক্তি,
দেনমোহর, বিবাহের প্রচার ইত্যাদি।
খোরপোশ স্বামীর উপর ফরয, কিন্তু আপনি তা থেকে তাকে মুক্তি
দিলে তা বৈধ হবে। আর তার প্রথম স্ত্রী এর খবর না জানলে বা অনুমতি না দিলেও কোন
ক্ষতি হবে না। ৫৫৪ (ইবনে বায)
✔ ৪৪১ প্রশ্নঃ অনেক সময়
উপযুক্ত পাত্র বিবাহের প্রস্তাব দিলে মেয়ে অথবা মেয়ের বাপ এই বলে রদ করে দেয় যে, পড়া শেষ হলে তবেই বিয়ে হবে। এটা কি বৈধ?
উত্তরঃ এটা বৈধ নয়। পড়া ওজর নয়। তাছাড়া বিয়ের পরেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া যায়। আর
মহানবী (ﷺ) বলেছেন,
“যার দ্বীন ও চরিত্র তোমাদেরকে মুগ্ধ করে, তার সাথে (তোমাদের ছেলে কিংবা মেয়ের) বিবাহ দাও। যদি তা না কর, তবে পৃথিবীতে বড় ফিতনা ও মস্ত ফাসাদ, বিঘ্ন ও
অশান্তি সৃষ্টি হবে।” ৫৫৫(তীরমিযী ১০৮৫ নং, ইবনে মাজাহ ১৯৬৭ নং)
উত্তরঃ বিবাহের ব্যাপারটা দুটি জীবনের চির বন্ধন। সুতরাং ধোঁকাবাজির আশঙ্কায়
টেলিফোন বা নেটের মাধ্যমে বিয়ে পড়ানো একান্ত জরুরী হলে যেখানে সে থাকে, সেখানের পরিচিত কাউকে উকীল বা প্রতিনিধি বানিয়ে বিয়ে পড়ানো যায়।
৫৫৬(মাজমাউল ফিকহিল ইসলামী)
উত্তরঃ স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলে, স্পর্শ করলে, নির্জনতা অবলম্বন করলে অথবা বিবাহের পর মারা গেলে মোহর ওয়াজেব হয়। কেবল
বিয়ে পড়ালেই মোহর ওয়াজেব হয় না।৫৫৭ (ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ দেশীয় আইনে সাবালিকা হয় ১৮ বছর পূর্ণ হলে। কিন্তু শরীয়তের আইনে সাবালিকা হল
সেই মেয়ে, যার স্বাভাবিকভাবে মাসিক শুরু হয়েছে। সে ক্ষেত্রে তার
অনুমতিক্রমে বিবাহ দিলে কোন বাধা নেই। অবশ্য মেয়ে না চাইলে জোরপূর্বক বিবাহ শুদ্ধ
নয়।
উত্তরঃ মেয়ে ও তার অভিভাবকের সম্মতি থাকলে সে বিবাহ বৈধ।
উত্তরঃ কোন কোন মানুষ এই ভেদাভেদ জ্ঞান রেখে উপযুক্ত পাত্র বা পাত্রী হাতছাড়া করে।
অথচ টা বৈধ নয়। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক
নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও
গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার।
তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে অধিক আল্লাহ ভীরু।
আল্লাহ সবকিছু জানেন, সব কিছুর খবর রাখেন।” (১৩)
আর মহানবী (ﷺ) বলেন, “আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়তম বান্দা হল সেই যার চরিত্র সুন্দর।”
৫৫৮ (ত্বাবারানী, সহীহুল জামে ১৭৯ নং)
ইবনে আব্বাস (রঃ) বলেন, “আল্লাহর নিকট সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি সে, যে সবচেয়ে বেশী পরহেযগার। আর সবচেয়ে উচ্চ বংশীয় লোক সে, যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর।” ৫৫৯ (আল-আদাবুল
মুফরাদ)
নবী (ﷺ) বলেন, “যার দ্বীন ও চরিত্র তোমাদেরকে মুগ্ধ করে, তার
সাথে (তোমাদের ছেলে কিংবা মেয়ের)বিবাহ দাও। যদি তা না কর (শুধুমাত্র দ্বীন ও
চরিত্র দেখে তাদের বিবাহ না দাও বরং দ্বীন বা চরিত্র থাকলেও কেবলমাত্র বংশ,
রূপ বা ধন সম্পত্তির লোভে বিবাহ দাও), তবে
পৃথিবীতে বর ফিতনা ও মস্ত ফাসাদ, বিঘ্ন ও অশান্তি সৃষ্টি
হবে।” ৫৬০(তিরমিযী ১০৮৫ নং, ইবনে
মাজাহ ১৯৬৭ নং)
উত্তরঃ মেয়ে রাজী না থাকলে কারো সাথে জোড় করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া শরীয়তসম্মত নয়।
যেহেতু মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “অকুমারীর পরামর্শ বা জবানী অনুমতি না নিয়ে এবং কুমারীর সম্মতি না নিয়ে
তাদের বিবাহ দেওয়া যাবে না। আর কুমারীর সম্মতি হল মৌন থাকা।” ৫৬১ (বুখারী, মুসলিম, সহীহ নাসাঈ ৩০৫৮, সহীহ ইবনে মাজাহ ১৫১৬ নং)
✔ ৪৪৮ প্রশ্নঃ বিয়েতে বাপ রাজী
ছিল না। ভাই দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে অবশ্য বাপ রাজী হয়ে গেছে। এখন সে
বিয়ের মান কি ?
উত্তরঃ বাপ থাকতে ভাই শরয়ী অভিভাবক হতে পারে না। সুতরাং বিবাহ শুদ্ধ নয়। পরবর্তীতে
রাজী হলেও পুনরায় বিয়ে পড়াতে হবে। ৫৬২ (মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম) অনুরূপ যারা
পালিয়ে গিয়ে মেয়ের অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই বিয়ে করে তাদের অবস্থা।
✔ ৪৪৯ প্রশ্নঃ অবৈধ প্রনয়ের
মাধ্যমে কোট ম্যারেজ বা লাভ ম্যারেজ বৈধ কি? তাতে যদি
মেয়ের অভিভাবক সম্মত না থাকে, তাহলে সে বিবাহ বৈধ কি?
উত্তরঃ বিয়ের পূর্বে কোন যুবক যুবতীর ভালবাসা করা হারাম। অতঃপর আপোষে মেলামেশা ও
ব্যাভিচার করা তো কবীরা গোনাহর পর্যায়ভুক্ত। আর ব্যাভিচার হল ১০০ চাবুক ও কারা
শাস্তি ভোগের পাপ। পরন্ত বিবাহিত হলে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার উপযুক্ত। অতঃপর যে মা বাপ
কতো মায়া মমতার সাথে মানুষ করে, সেই মা বাপের মাথায় লাথি মেরে
চোরের মতো পালিয়ে গিয়ে লাভ ম্যারেজ বা কোর্ট ম্যারেজ করে! কিন্তু সে বিয়েতে মেয়ের
বাপ রাজী না থাকলে বিয়ে শুদ্ধ হবে না। যেহেতু নবী (ﷺ) বলেছেন, “যে নারী তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই নিজে নিজে বিবাহ করে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।” ৫৬৩ (আহমাদ, আবূ
দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ,
দারেমী, মিশকাত ৩১৩১ নং)
এমন চোরদের দাম্পত্য, চির ব্যভিচার হয়। যেহেতু তাদের বিবাহ শুদ্ধ নয়।
✔ ৪৫০ প্রশ্নঃ মা বাপের
পছন্দমতো বিয়ে করা কি ছেলের জন্য জরুরী? মা বাপ
যখন নিজেদের কোন আত্নিয় বন্ধুর মেয়ের সাথে বিয়ে দিতে চায়, অথবা বেশি পণদাতা ঘরের মেয়ের সাথে বিয়ে দিতে চায়, অথচ ছেলের পছন্দ না হয়, তাহলে কি তাদের বাধ্য
হয়ে সেই বিয়ে করা জরুরী? দ্বীনদার মেয়ে যদি বাপ মা পছন্দ
না করে, তাহলে ছেলে কী করতে পারে?
উত্তরঃ ছেলের মেয়ের পছন্দ নয়, তার সাথে জোড় করে বিয়ে দেওয়া বাপের
জন্য জায়েয নয়। বরং বরের সম্মতি না থাকলে জোড় করে বিয়ের বন্ধনই হবে না। সুতরাং
ছেলে সে ক্ষেত্রে বাপের কথা মানতে বাধ্য নয়। বাপ মা নিজেদের স্বার্থ দেখলে বউ
পছন্দে দ্বীনদারিকে প্রাধান্য না দিলে ছেলে নিজেই সে বিয়ে করতে পারে, ৫৬৪ (ইবনে উষাইমীন) কিন্তু যে মেয়ে মা বাপের পছন্দ নয়, সে মেয়েকে নিজে নিজে বিয়ে করে ঘরে আনলে যদি তারা ঘরে জায়গা না দেয়,
তাহলে অবশ্যই টা বড় অন্যায়। অবশ্য মেয়ে খারাপ বা অসতী হওয়ার ফলে
যদি মা বাপ বাদ সাধে, তাহলে সে কথা ভিন্ন।
✔ ৪৫১ প্রশ্নঃ পাত্রী দেখতে
গিয়ে পাত্রীর কি কি দেখা যায়? বর ছাড়া কি বরের বাপ চাচা,
ভাই বন্ধু বা বুনাইও কি পাত্রী দেখতে পারে?
উত্তরঃ পাত্রী দেখতে গিয়ে বরের জন্য পাত্রীর চেহারা, হাত ও পায়ের পাতা দেখা বৈধ। অনেকে বলেছেন, খোলা
মাথাও দেখা যায়। তবে শর্ত হল, পাত্রীকে নিয়ে নির্জনতা অবলম্বন
করা বৈধ নয়। বরং তার সঙ্গে তার কোন এগানা পুরুষ (বাপ-ভাই)অবশ্যই থাকবে। বাপ-মায়েরও
উচিত নয়, তাঁদেরকে কোন রুমে একাকী ছেড়ে দেওয়া। মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “কোন পুরুষ যেন কোন বেগানা নারীর সঙ্গে তার সাথে এগানা পুরুষ ছাড়া
অবশ্যই নির্জনতা অবলম্বন না করে।” ৫৬৫ (বুখারী ও মুসলিম,
ইবনে বায)
বর ছাড়া ঐ পাত্রীকে অন্য পুরুষ, বরের বাপ-চাচা, ভাই-বন্ধু বা বুনাই দেখতে পারে
না। পক্ষান্তরে মেয়ে যদি বেপর্দা হয় অথবা বর যদি পর্দা-বিরোধী হয়, তাহলে আর ফতোয়া কিসের?
✔ ৪৫২ প্রশ্নঃ অনেক ছেলে আছে, যার
বিয়ের আগে হবু বউকে দেখতে লজ্জা করে এবং বলে, ‘মা-বোন
দেখলেই যথেষ্ট। তাদের পছন্দ হলে আমারও পছন্দ হয়ে যাবে।’ এটা
কি ঠিক?
উত্তরঃ এ হল সেই ছেলেদের কথা, যার নিজের মা বোনকে চরম
শ্রদ্ধা ও ভক্তি করে। কিন্তু তার ফলে নিজের জীবনের একটি মহাফয়সালার সময়ে তাদের
অন্ধভক্তি সাজা ঠিক নয়। বরং অন্ধভক্ত সাজাতে হলে তাদের থেকেও বেশি প্রিয় মহানবী (ﷺ) এর সাজাতে হয়।
তিনি বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ কোন মহিলাকে
বিবাহ প্রস্তাব দেয়, তখন যদি প্রস্তাবের জন্যই তাকে দেখে,
তবে তা দূষণীয় নয়; যদিও ঐ মহিলা তা
জানতে না পারে।” ৫৬৬ (সিলসিলাহ সহীহাহ ৯৭ নং)
এক মহিলার সাথে মুগীরাহ বিন শু’বাহর বিয়ের কথা পাকা হল। তিনি তাকে বললেন, ‘তাকে
দেখে নাও। কারণ তাতে বেশি আশা করা যায় যে, তোমাদের
ভালবাসা চিরস্থায়ী হবে।’ ৫৬৭ (আহমাদ ৪/২৪৪,২৪৬, তিরমিযী ১০৮৭ নং, নাসাঈ ৬/৬৯, ইবনে মাজাহ ৮৬৬ নং) সুতরাং এই
নির্দেশের উপরে মা বোনের দেখার প্রাধান্য দেওয়া জ্ঞানী যুবকের উচিত নয়। যাতে তাকে
পরে পস্তাতে না হয় এবং মা বোনের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে তাদের প্রতি অভক্তি না চলে আসে।
যেহেতু বিয়ের আগে দেখে অপছন্দ হলে তাকে বর্জন করার সুযোগ থাকবে, কিন্তু বিয়ের পরে সে সুযোগ বিরল।
উত্তরঃ বিয়ের আগে কনেকে দেখে নেওয়া বিধেয়। যাকে পছন্দ অপছন্দ করার মতো সুযোগ
হাতছাড়া না হয়ে যায়। সুতরাং যদি কেউ বিবাহ করার পাক্কা নিয়তে নিজ পাত্রীকে তার ও
তার অভিভাবকের অজান্তে গোপনে থেকে লুকিয়ে দেখে, তাহলে
তাও বৈধ। তবে এমন স্থান থেকে লুকিয়ে দেখা বৈধ নয়, যেখানে
সে তার একান্ত গোপনীয় অঙ্গ প্রকাশ করতে পারে। অতএব স্কুলের পথে বা কোন আত্নীয়ের
বাড়িতে থেকেও দেখা যায়। প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “যখন তোমাদের কেউ কোন রমণীকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তখন যদি প্রস্তাব এর জন্যই তাকে দেখে, তবে তা
দূষণীয় নয়; যদিও রমণী তা জানতে না পারে।” ৫৬৮ (সিঃ সহীহাহ ৯৭ নং)
সাহেবী জাবের বিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি এক তরুণীকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তাকে দেখার জন্য লুকিয়ে থাকতাম।
শেষ পর্যন্ত আমি তার সেই সৌন্দর্য দেখলাম, যা আমাকে বিবাহ
করতে উৎসাহিত করল। অতঃপর আমি তাকে বিবাহ করলাম।’ ৫৬৯ (সিঃ
সহীহাহ ৯৯ নং)
উত্তরঃ এটি একটি ইউরোপীয় ও বিজাতীয় প্রথা। মুসলিমদের বৈধ নয়, বিজাতির অনুসরণ করা।
✔ ৪৫৫ প্রশ্নঃ আমাদের বিবাহ
ঠিক হয়েছে। আগামী বছর বিবাহ হবে। ততদিন পর্যন্ত আমি কি হবু স্ত্রীকে টেলিফোনের
মাধ্যমে দ্বীন শিক্ষা দিতে পারি? কোন সাংসারিক আলাপ আলোচনা করতে
পারি কি?
উত্তরঃ পাত্রী দেখার পর বিবাহ ঠিক হয়ে গেল অথবা পাকা কথা বা তার দিন স্থির হয়ে
গেলে হবু স্ত্রীর সাথে পর্দার সাথে বা টেলিফোনের অথবা পত্রালাপের মাধ্যমে দ্বীনী
বা সাংসারিক কোন আলোচনা করা হারাম নয়। তবে তা হারামের দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে।
তবুও যদি সত্যই আপনি হারামের দিকে না যান, অর্থাৎ
কোন যৌন বিষয় বা প্রেম ভালবাসার কথা আলোচনা না করেন--- আর তা অবশ্যই কঠিন--- তাহলে
আপনি তা করতে পারেন। নচেৎ ক্ষেতের পাশে চরতে চরতে যদি ক্ষেতের ফসলও খেতে শুরু করেন,
তাহলে অবশ্যই আপনি গোনাহগার হবেন।
উত্তরঃ কনের মাসিক অবস্থায় বিয়ে পরানোতে কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হল, বাসর রাতে স্বামী সহবাস করা। যেহেতু তাতে রয়েছে মহাপাপ।
উত্তরঃ বিয়ের সময় উলু-উলু খুশীর ধনী বৈধ নয়। এ সময় বর কনেকে দুআ দিতে হয়। ৫৭০
(ইবনে জিবরীন)
উত্তরঃ মহিলাদের নাচে অনেক প্রকার ফিতনার আশঙ্কা আছে। তাই তা মাকরূহ। ৫৭১(ইবনে
উষাইমীন)
উত্তরঃ কেবল মহিলাদের সামনে হলে ও কেবল তাদের কানে গেলে ‘দুফা’ (একমুখো ঢোলক) বাজিয়ে বৈধ গান গাওয়া
যায়। (সাফা) তার মানে বেগানা পুরুষের সামনে বা তাঁদেরকে শুনিয়ে গাইলে অথবা তার
সঙ্গে ঢোল বা অন্য কোন মিউজিক হলে অথবা গান অশালীন বা শিরক বা বিদআতী হলে চলবে না।
✔ ৪৬০ প্রশ্নঃ বিবাহে দুফ
বাজিয়ে গান মেয়েরা গাইতে পারে, কিন্তু কতদিন? কোন দিনে এই গীত বা গান গাওয়া যায়?
উত্তরঃ বিবাহের প্রচার স্বরূপ দুফ বাজিয়ে অথবা না বাজিয়ে বৈধ গীত বাসরের রাতে গাওয়া
বিধেয়। এ ছাড়া অন্য দিনে গাওয়ার অনুমতি নেই। ৫৭২ (ইবনে উষাইমীন)
✔ ৪৬১ প্রশ্নঃ বিবাহের পর
মহিলা মহলে বর কনেকে ‘একঠাই’ করা বৈধ কি? উল্লেখ্য যে, সেখানে বরের সাথে তার বুনাই বন্ধুও থাকে। সেখানে বর কনেকে নিয়ে চলে
নানা লেকচার, নানা কীর্তি।
উত্তরঃ বাড়ীর ভিতরে বেপর্দা মেয়েদের এমন ‘একঠাই’
আচার বৈধ নয়। শরীয়তে এমন বেহায়ামির সমর্থন নেই। ৫৭৩ (ইবনে বায,
ইবনে উষাইমীন, ইবনে জিবরীন)
✔ ৪৬২ প্রশ্নঃ বিবাহের পর
মহিলা মহলে বর কনেকে ‘একঠাই’ করা বৈধ কি? উল্লেখ্য যে, সেখানে বরের সাথে তার বুনাই বন্ধুও থাকে। সেখানে বর কনেকে নিয়ে চলে
নানা লেকচার, নানা কীর্তি
উত্তরঃ তাতে কোন বাধা নেই। ৫৭৪ (আলবানী)
উত্তরঃ স্বামী স্ত্রী একে অপরকে প্রেমের গান গেয়ে শোনাতে পারে। তবে তাতে শর্ত হলঃ
যেন তার সাথে বাজনা না থাকে এবং তারা ছাড়া অন্য কেউ তা শুনতে না পায়। এমনকি তাদের
সন্তানরাও তা না শোনে। কারণ এটিও এক প্রকার স্পর্শ ও চুম্বনের মতো মিলনের ভূমিকা।
✔ ৪৬৪ প্রশ্নঃ স্বামীর হাতে
স্ত্রীর আংটি বা স্ত্রীর চুড়ি রাখা কি জরুরী? তা খুলে
ফেললে কি কোন অমঙ্গল বা বিপদের আশঙ্কা আছে?
উত্তরঃ দাম্পতের চিহ্নস্বরূপ হাতে আংটি দেওয়া বৈধ নয়। কারণ তা অমুসলিমদের আচরণ।
৫৭৫ (ইবনে উষাইমীন) হাতের সৌন্দর্যের জন্য মহিলাদের চুড়ি পরা বৈধ। তবে তাতে এই
বিশ্বাস রাখা অমূলক যে, তা খুলে ফেললে স্বামীর কোন
অমঙ্গল ঘটবে।
✔ ৪৬৫ প্রশ্নঃ আমাদের বিবাহের দিনে আমি কি আমার স্ত্রীকে কোন
উপহার দিয়ে স্মৃতিচারণা করে খুশী করতে পারি?
উত্তরঃ এ দরজা খুলে দেওয়া ঠিক মনে করি না। কারণ ধীরে ধীরে তা বিজাতির ‘হানিমুন’ ও ‘বিবাহ
বার্ষিকী’ পালনের প্রথা হিসেবে পালন শুরু হয়ে যাবে।
সুতরাং প্রত্যহ না পারলেও অনির্দিষ্ট দিনে কোন উপহার পেশ করে ঐ খুশী করা যায়। নচেৎ
মুসলিম দম্পতির তো সর্বদা খোশ থাকার কথা। ৫৭৬ (ইবনে উষাইমীন) মহানবী (ﷺ) বলেন, “সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী হল সে, যার দিকে তার
স্বামী তাকালে তাকে খোশ করে দেয়, যাকে কোন আদেশ করলে তা
পালন করে এবং সে তার নিজের ব্যপারে এবং স্বামীর মালের ব্যপারে কোন অপছন্দনীয়
বিরুদ্ধাচরণ করে না।”৫৭৭ (আহমাদ, নাসাঈ)
উত্তরঃ মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “যদি কোন কিছুতে কুলক্ষণ থাকে,
তাহলে তা আছে নারী, বাড়ী ও সাওয়ারী
(গাড়ী)তে।” ৫৭৮ (বুখারী)
ভাগ্যদোষে এমন কুলক্ষণা স্ত্রী এসে স্বামীর সুখী
জীবনকে দুঃখময় করে তুলতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে তকদীরের উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহর
উপর পরিপূর্ণ ভরসা রাখতে হয়। আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, “কিছুকে অশুভ লক্ষণ বলে মনে করা শিরক। কিছুকে কুপয়া মনে করা শিরক,
কিছুকে কুলক্ষণ মনে করা শিরক। কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই
যার মনে কুধারনা জন্মে না। তবে আল্লাহ (তারই উপর) তাওয়াক্কুল (ভরসার) ফলে তা
(আমাদের হৃদয় থেকে) দুর করে দেন।” ৫৭৯ (আহমাদ ১/৩৮৯,
৪৪০, আবূ দাউদ ৩৯১০, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান, হাকেম প্রমুখ, সিঃ সহীহাহ ৪৩০ নং)
✔ ৪৬৭ প্রশ্নঃ আমার স্বামী বড়
কৃপণ। আমার ব্যাপারে এবং আমাদের ছেলেমেয়ের ব্যাপারে পয়সা খরচ করতে বড় কৃপণতা করে।
এখন তার অজান্তে যদি টাকা পয়সা নিয়ে খরচ করি, তাহলে
সেটা কি চুরি হবে?
উত্তরঃ স্বামী যদি সত্য সত্যই কৃপণ হয় এবং বাস্তবেই যদি স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের খরচ
করা বৈধ। তবে তা যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত না হয়। অধিক বিলাসিতা করার জন্য না হয়।
অথবা অন্য কোন আত্নীয়কে দেওয়ার জন্য না হয়। একদা আবূ সুফয়ানের স্ত্রী হিন্দ নবী (ﷺ) কে বললেন যে, ‘আবূ সুফইয়ান একজন কৃপণ লোক। আমি তার সম্পদ থেকে (তার অজান্তে) যা কিছু
নিই, তা ছাড়া সে আমার ও আমার সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণ
খরচ দেয় না।’ রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, “তোমআর ও তোমার সন্তানের প্রয়োজন মোতাবেক খরচ (তার অজান্তে) নিতে পার।”
৫৮০ (বুখারী ও মুসলিম)
✔ ৪৬৮ প্রশ্নঃ আমার স্বামী
আমাকে ভালবাসে না। কথায় কথায় আমাকে গালাগালি করে, মারধরও করে। ছেলেমেয়ে এবং নিকট ও দুরের মানুষের কাছে আমাকে অপমানিতা
করে। কিন্তু সে আবার স্বলাতও পড়ে। সুখ শান্তির জন্য আমি এখন কি করতে পারি?
উত্তরঃ (১)আপনি ধৈর্য ধরুন এবং গালি ও মারের বদলা নেওয়া থেকে দূরে থাকুন। (২)
আল্লাহর কাছে স্বলাত দুআ করুন, যেন আল্লাহ আপনার স্বামীকে
সৎশীল বানায়। (৩) কেন আপনাকে গালাগালি বা মারধর করছে, তার
কারণ আবিষ্কার করুন। আপনি বলছেন, ‘সে স্বলাতী’। তাহলে আশা করি, সে পাগল নয় এবং মাদকদ্রব্যও
সেবন করে না। তাহলে কেন খামোকা আপনাকে গালাগালি করবে? ভেবে
দেখুন, দোষ আপনার মধ্যে নেই তো? আপনার
পারিপাট্য, সাজগোজ বা সময়ানুবর্তিতাতে কোন ত্রুটি নেই তো?
আপনি কি আপনার স্বামীর সব চাহিদা মিটাতে পেরেছেন? আপনি কি সেই স্ত্রী, যার ব্যাপারে মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “ সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী হল সে, যার দিকে তার
স্বামী তাকালে তাকে খোশ করে দেয়, যাকে কোন আদেশ করলে তা
পালন করে এবং সে তার নিজের ব্যাপারে এবং স্বামীর মালের ব্যাপারে কোন অপছন্দনীয়
বিরুদ্ধাচারণ করে না।” ৫৮১ (আহমাদ, নাসাঈ)
আপনি হয়তো কোন কোন ব্যাপারে তার মতের সাথে মত
মিলাতে পারছেন না। আপনি হয়তো চাচ্ছেন, সে আপনার
মতে চলুক। অথচ বৈধ বিষয়ে তার অনুগত্য করা আপনার জন্য ওয়াজেব। সে আপনার কর্তা,
অথচ আপনি হয়ত তাকে নিজের কর্তা বলে মেনে নিতে পারছেন না। আর তার জন্যই সে আপনার
প্রতি খাপ্পা। আপনি হয়ত তার মুখের ওপর মুখ দেন, পার প্রতি
মুখ চালান। আর তার জন্যই সে আপনাকে মারধর করে। যাই হোক, কারণ
নির্ণয় করে জ্ঞানী মেয়ের মতো তার বাধ্য হয়ে যান। আর এতে নিজেকে ছোট মনে করবেন না।
কারণ, স্বামীর মর্যাদার কাছে প্রত্যেক স্ত্রীই ছোট;
যদিও স্ত্রী ধনে, বংশে ও শিক্ষায়
স্বামীর তুলনায় বড় হয়। এ কথা মেনে নিতে পারলে সুখ শান্তির বাগানে আবার বসন্ত ফিরে
আসবে।
✔ ৪৬৯ প্রশ্নঃ বিবাহের চার মাস
পর আমার স্ত্রীর সাথে আমার মায়ের মনোমালিন্য শুরু হয়ে গেল। এক সময় অশান্তি করে সে
মায়ের ঘরে চলে গেল। অতঃপর পুনরায় সে আমাদের বাড়ী আসতে চাইল না। সে বলল, ‘যদি আমাকে নিয়ে আপনি অন্য কোথাও অথবা আমার বাপের বাড়িতে থাকতে পারেন,
তাহলে সংসার করব। নচেৎ না।’ এখন আমি কি
করি? আমার মা বাপ বউ এর খিদমত চায়। কিন্তু আমরা অশান্তি
চাই না। এখন শান্তি বজায় রাখার জন্য যদি অন্যত্র কোথাও মা বাবাকে ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে
বাস করি, তাহলে কি আমি গোনাহগার হব? নাকি আমি স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেব?
উত্তরঃ সংসারে এটি একটি মহাসমস্যা। মা ও বউ এর খেয়াল খুশীর মাঝে পুরুষ দিশেহারা
হয়ে যায়। মায়ের মন রক্ষা করা জরুরী। আবার বিনা পর্যাপ্ত কারণে তালাক দেওয়া হারাম।
সুতরাং শেষ পথ এটাই যে, আপনি বউ নিয়ে অন্যত্র বাস করুন,
মায়ের সংসার থেকে পৃথক হয়ে যান। তবে মা বাপের সুবিধা অসুবিধা কথা
ভুলবেন না। আপনার দ্বারা যতটা সম্ভভ, আপনি ততটা তাদের
খিদমত করবেন। পারলে তাদের জন্য দাসী রেখে নেবেন। ৫৮২ (ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ বাপ মায়ের আদেশ পালন করা ওয়াজেব। কিন্তু তারা যদি অন্যায় আদেশ করে, তাহলে তা পালন করা হারাম। সুতরাং বউ তালাক দিতে বললে কারণ জানতে হবে।
কারণ যদি সঠিক হয় এবং সে কারণে বউ তালাক দেওয়া ওয়াজেব হয়, তাহলে বুঝানোর পর তালাক দেবে। পক্ষান্তরে কারণ যদি সঠিক না হয়, কেবল বউয়ের প্রতি ঈর্ষাবশতঃ হয়, তাহলে তালাক
দেওয়া বৈধ নয়। পুরুষকে পরীক্ষা দিতে হবে সংসারের এই মা বউয়ের দ্বন্দ্বে। শরীয়তই
হবে সঠিক ফয়সালাদাতা। কোন আবেগ বা প্রেম, কোন ঈর্ষা বা
হিংসা অথবা কোন পার্থিব লোভ লালসা যেন পুরুষকে কারো প্রতি অন্যায়াচরণে বাধ্য না
করে।
উত্তরঃ অবশ্যই ঠিক নয়। কারণ রুযীর মালিক আল্লাহ। কেউ কারো রুযীর দায়িত্ব নিতে পারে
না। মহান আল্লাহ বলেন, “এমন বহু জীব জন্তু আছে,
যারা নিজেদের রুযী বহন করে না; আল্লাহ্ই
ওদেরকে এবং তোমাদেরকে রুযী দান করেন। আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।” (আনকাবূতঃ ৬০)
“দারিদ্র্যের কারণে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো
না। আমি তোমাদেরকে ও তাঁদেরকে জীবিকা দিয়ে থাকি।” (আনআমঃ
১৫১)
“তোমাদের সন্তানদেরকে তোমরা দারিদ্রের ভয়ে হত্যা করো না,
আমি তাঁদেরকে জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয়
তাঁদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।”(বানী ইস্রাঈলঃ ৩১)
উত্তরঃ মুসলিমের উচিত, সংখ্যা বৃদ্ধিতে শরীয়তের
উদ্দেশ্যকে সফল করা। তবুও যদি ওটি প্রয়োজন পড়ে, যেমন
মহিলা যদি রোগা হয়, প্রত্যেক বছর সন্তান হওয়ার ফলে অতি
দুর্বল হয়ে পড়ে, অথবা অন্য কোন সমস্যা থাকে, তাহলে ট্যাবলেট ব্যবহার করে সাময়িক ভাবে সন্তান বন্ধ রাখতে পারে।
অবশ্যই সেই সাথে স্বামীর অনুমতি ও ডাক্তারের পরামর্শও জরুরী। পক্ষান্তরে জীবন
হানির আশঙ্কা ছাড়া ছাড়া চিরতরের জন্য গর্ভধারণের পথ বন্ধ করে দেওয়া বৈধ নয়। ৫৮৩
(ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ বীর্য স্বামীর হলেও তা টেস্ট টিউবের মধ্যে রেখে স্ত্রী গর্ভে রাখতে গিয়ে
তার লজ্জাস্থান খোলা যায়, তা স্পর্শ করা হয় ইত্যাদি।
আমার মতে বলে স্বামী স্ত্রীর উচিত, এ কাজ না করে আল্লাহর
তকদীরে সন্তষ্ট থাকা। ৫৮৪ (ইবনে জিবরীন)
উত্তরঃ কৃত্রিম উপায়ে সন্তান প্রজনন মূলতঃ দুইভাবে হয়ে থাকেঃ
(ক) অভ্যান্তরিক প্রজনন। আর তা এভাবে হয় যে, পুরুষের
বীর্য সিরিঞ্জের সাহায্যে নারীর গর্ভাশয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে রাখা হয়।
(খ) বাহ্যিক প্রজনন। আর তা এইভাবে হয় যে, নারী
পুরুষের বীর্য নির্দিষ্ট টেস্ট টিউবে নিয়ে মিলন ঘটানোর পর যথাসময়ে নারীর গর্ভাশয়ে
রাখা হয়।
উক্ত দুই পদ্ধতির প্রজনন অনুসারে ছয় ভাবে সন্তান
নেওয়া হয়ে থাকে। ইসলামী শরীয়তে তার কিছু বৈধ, কিছু
অবৈধ।
প্রথমতঃ অভ্যান্তরিক প্রজননঃ-
১। সঙ্গমের সময় স্বামীর বীর্য স্ত্রীর গর্ভাশয়ে কারণবশতঃ না পৌছলে তা নিয়ে
সিরিঞ্জের সাহায্যে স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
২। স্বামীর বীর্যে শুক্রকীট না থাকলে অন্য কোন পুরুষের বীর্য নিয়ে সিরিঞ্জের
সাহায্যে স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
দ্বিতীয়তঃ বাহ্যিক প্রজননঃ-
৩। স্বামী স্ত্রীর বীর্য নিয়ে টেস্ট টিউবে রেখে মিলন ঘটিয়ে যথাসময়ে তা স্ত্রীর
গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
৪। স্ত্রীর গর্ভাশয় সুস্থ, কিন্তু ডিম্বাণু না থাকার ফলে
স্বামীর বীর্য এবং অন্য কোন মহিলার ডিম্বাণু নিয়ে প্রজনন টেস্ট টিউবে মিলন ঘটিয়ে
স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
৫। স্বামীর বীর্যে শুক্রকীট না থাকলে এবং স্ত্রীর গর্ভাশয় সুস্থ, কিন্তু তার ডিম্বাণু না থাকার ফলে অন্য পুরুষের বীর্য এবং কোন মহিলার
ডিম্বাণু নিয়ে প্রজনন টেস্ট টিউবে মিলন ঘটিয়ে স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান
নেওয়া।
৬। স্ত্রীর গর্ভাশয় সন্তান ধারনে অক্ষম হলে অথবা গর্ভ ধারণের কষ্ট বরণ না করতে
চাইলে স্বামী স্ত্রীর বীর্য নিয়ে টেস্ট টিউবে রেখে মিলন ঘটিয়ে যথা সময়ে তা অন্য
কোন মহিলার গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া যায়।
সরাসরি ব্যভিচার ছাড়া উক্ত ছয় উপায়ে সন্তান গ্রহণ
প্রচলিত রয়েছে বিশ্বের বহু দেশে এবং সে জন্য বীর্য ব্যাংকও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে এই শ্রেণীর সন্তান
নেওয়ার বিধান নিম্নরূপঃ-
কেবল বিলাসিতার জন্য কৃত্রিম পদ্ধতিতে সন্তান
নেওয়া ইসলামে বৈধ হতে পারে না। কারণ, পর্যাপ্ত
কারণ ব্যতিরেকে স্বামী ছাড়া অন্য কোন পুরুষের নিকট স্ত্রীর লজ্জাস্থান প্রকাশ করা
বৈধ নয়। তাছাড়া চিকিৎসার জন্য প্রথমতঃ মুসলিম মহিলা ডাক্তারের সাহায্য গ্রহণ করা
ওয়াজেব। তা না পাওয়া গেলে অমুসলিম মহিলা ডাক্তার। তা না পাওয়া গেলে অমুসলিম
ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করানো বৈধ। তাতেও কোন পুরুষ ডাক্তারের সাথে কোন রুমে
একাকিনী চিকিৎসা করানো বৈধ নয়। জরুরী হলে, সেই রুমে তার
স্বামী অথবা অন্য মহিলা থাকবে।
বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণের উদ্দেশ্যে মুসলিম মহিলার
ডাক্তারের কাছে যাওয়া বৈধ। তবে সন্তান গ্রহণের ছয়টি পদ্ধতির মধ্যে কেবল প্রথম ও
তৃতীয় পদ্ধতি ব্যবহার করা বৈধ। আর উক্ত উভয় পদ্ধতিতে যে সন্তান হবে, তা হবে বৈধও সন্তান।
পরিশেষে সতর্কতার বিষয় এই যে, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া যেন মুসলিম উক্ত দুটি বৈধ পদ্ধতিও অবলম্বন না করে,
কারণ তাতেও টেস্ট টিউবের মাধ্যমে অজ্ঞাত পরিচয় শুক্রাণুর
অনুপ্রবেশ ঘটার আশঙ্কা থাকে। ৫৮৫ (মাজলিসুল মাজমাইল ফিকহী)
✔ ৪৭৫ প্রশ্নঃ অনেক পুরুষ আছে, যাঁদের কন্যা সন্তান হলে স্ত্রীকে দোষ দেয়, তাকে
ঘৃণা করতে শুরু করে। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় হলে তো রেহাই নেই। এমন পুরুষদের ব্যাপারে
শরীয়তের বিধান কি?
উত্তরঃ নিঃসন্দেহে এমন আচরণ বর্তমানের পণ ও যৌতূক প্রথার করাল গ্রাসের শিকার হওয়ার
আশঙ্কায় দুর্বল ঈমানের মানুষ দ্বারা ঘটে থাকে। আর যে স্বামী কন্য প্রসব করার জন্য
স্ত্রীকে দায়ী করে, তার জ্ঞানও দুর্বল। কারণ,
বীজ তো তারই। জমির দোষ কি? তাছাড়া কন্যা
তার জন্য ভালো হবে না মন্দ, তাই বা সে জানল কি করে?
সমাজে দেখা যায় যে, কত কন্যার পিতামাতা
সুখী এবং কত পুত্রের পিতা মাতা চিরদুঃখী। তাহলে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে তার দেওয়া
ভাগ ও ভাগ্য নিয়ে কি সন্তষ্ট হওয়া উচিত নয়?
পরন্ত কন্যা সন্তান অপছন্দ করা জাহেলী যুগের আচরণ।
মহান আল্লাহ বলেছেন,
“তাকে সে সংবাদ দেওয়া হয়, তার
গ্লানি হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হতে আত্নগোপন করে; সে
চিন্তা করে যে, হীনতা সত্বেও সে তাকে রেখে দেবে, না মাটিতে পুতে দেবে। সাবধান! তারা যা সিধান্ত করে, তা কতই না নিকৃষ্ট।” (নাহলঃ ৫৯)
✔ ৪৭৬ প্রশ্নঃ কোন লম্পট যদি
শালী বা শাশুড়ির সাথে অথবা পুত্রবধূর সাথে ব্যভিচার করে, তাহলে তার বিবাহিতা স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে কি?
উত্তরঃ এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কোন মাহরামের সাথে ব্যাভিচার
করা সবচেয়ে বড় ব্যাভিচার। কিন্তু কোন অবৈধ সম্পর্ক বৈধ সম্পর্ককে ছিন্ন করতে পারে
না। অবৈধভাবে মিলন ঘটালেই সে তার স্ত্রী হয়ে যায় না এবং তার মা বা মেয়ে স্ত্রীর
বন্ধন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উন্মুক্ত হয়ে যায় না।
মহান আল্লাহ কাকে কাকে বিবাহ হারাম--- সে কথা বলার
পর বলেছেন,
“উল্লেখিত নারীগণ ব্যতীত আর সকলকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য
বৈধ করা হল; এই শর্তে যে, তোমরা
তাঁদেরকে নিজ সম্পদের বিনিময়ে বিবাহের মাধ্যমে গ্রহণ করবে, অবৈধ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে নয়।” (নিসাঃ ২৪)
যেখানে বৈধ মিলনের ফলে অনেক মহিলা হারাম হওয়ার কথা
বলা হয়েছে, কিন্তু অবৈধ মিলন ব্যভিচার এর ফলে কেউ হারাম হবে কি না,
সে কথা বলেননি। সুতরাং বুঝা যায় যে, উক্ত
মহিলাগন ছাড়া অন্য কেউ হারাম নয়। হাদিসে কিছু মহিলার হারাম হওয়ার কথা বলা হলেও
ব্যাভিচারের ফলে হারাম হওয়ার কথা বলা হয়নি। অথচ জাহেলি যুগে ব্যভিচারের প্রকোপ খুব
বেশী ছিল। সুতরাং বুঝা যায় যে, কোন অপবিত্র সম্পর্ক কোন
পবিত্র সম্পর্কের বন্ধনকে ধ্বংস করতে পারে না। ৫৮৬ (দ্রঃ ৭/৯০, আযওয়াউল বায়ান ৬/৩৪১, মুমতে ৫/২০৩)
✔ ৪৭৭ প্রশ্নঃ একজন স্বামী তার
স্ত্রীকে মা বলে ‘যিহার’ করেছে। অতঃপর তাকে তালাক দিয়েছে। তাকে কি ‘যিহারের’
কাফফারা আদায় করতে হবে?
উত্তরঃ তালাক দেওয়ার পর যিহারের কাফফারা আদায় করতে হবে না। যেহেতু সে তার স্ত্রীকে
স্পর্শ করবে না। মহান আল্লাহ বলেন,
“যারা নিজেদের স্ত্রীর সাথে যিহার করে এবং পরে তাদের
উক্তি প্রত্যাহার করে, তাহলে (এর প্রায়শ্চিত্ত)একে অপরকে
স্পর্শ করার পূর্বে একটি দাসের মুক্তিদান। এর দ্বারা তোমাদেরকে সদুপদেশ দেওয়া
হচ্ছে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন।” (মুজাদালাহঃ ৩)
সুতরাং স্ত্রীকে স্পর্শ না করতে হলে, কাফফারা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
✔ ৪৭৮ প্রশ্নঃ কোন হতভাগা
স্বামী স্ত্রীকে ‘তুই আমার মা বা মায়ের মত’
বললে ‘যিহার’ হয়।
কিন্তু যদি কোন হতভাগী স্ত্রী ‘তুমি আমার বাপ বা বাপের মত’
বলে। তাহলে তার বিধান কি?
উত্তরঃ এ ক্ষেত্রে মহিলার পক্ষ থেকে যিহার হবে না। কেবল মহিলাকে কসমের কাফফারা
আদায় করতে হবে। ৫৮৭ (ইবনে বায)
✔ ৪৭৯ প্রশ্নঃ যদি কোন স্ত্রী
তার স্বামীকে বলে, ‘আমি তোমার নিকট থেকে আল্লাহর
পানাহ চাচ্ছি’ তাহলে কি তাকে স্ত্রী রূপে রাখা যাবে?
উত্তরঃ স্ত্রী যদি স্বামী থেকে আল্লাহর পানাহ চাইলে আল্লাহর নামের তা’যীম করে তাকে তা দেওয়া ওয়াজেব। মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “কেউ আল্লহর আশ্রয় প্রার্থনা করলে, তাকে আশ্রয়
দাও। আর যে আল্লাহর নামে যাচঞা করবে, তাকে দান কর।”(আবূ দাঊদ, নাসাঈ) তার এক স্ত্রী তার নিকট
আল্লাহর পানাহ চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি বিশাল সত্তার
পানাহ চেয়েছ। সুতরাং তুমি তোমার মায়ের বাড়ী চলে যাও।’ ৫৮৮
(বুখারী ৫২৫৪ নং)
উত্তরঃ যখন স্বামী এমন কাজ করবে, যা কবীরা গোনাহ এবং তা কুফরী
নয়, বুঝানোর পরও মানতে চাইবে না, তখন তালাক নেওয়া বৈধ। যেমন ব্যভিচার, মদ্যপান
ইত্যাদি। কিন্তু সে কাজ করার ফলে মানুষ ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়, তার সাথে সংসার করা বৈধ নয়। তউবা না করলে সে ক্ষত্রে তালাক নেওয়া
ওয়াজেব। যেমন মাযার যাওয়া, শিরক করা, দ্বীন, আল্লাহ বা তার রাসুলকে গালি দেওয়া,
স্বলাত ত্যাগ করা ইত্যাদি। ৫৮৯ (ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ যেহেতু পুরুষ মহিলার তুলনায় জ্ঞানে পাকা, ক্রোধের সময় বেশী ধৈর্যশীল। নচেৎ স্ত্রীর হাতেও তালাক থাকলে সামান্য
ঝামেলাতেই সে ‘তোমাকে তালাক’ বলে
বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে থাকত। যেমন অনেক মহিলা সামান্য কিছু হলেই রেগে বলে বসে,
‘আমাকে তালাক দাও’, ‘আমি তোমার ভাত খাব
না’ ইত্যাদি।
✔ ৪৮২ প্রশ্নঃ বিয়ে পড়ানোর পর
স্বামী স্ত্রীর দেখা সাক্ষাৎ হওায়ার আগেই যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেয়, তাহলে স্ত্রী কি মোহর পাওয়ার অধিকার রাখে?
উত্তরঃ মোহর বাধা হলে অর্ধেক মোহর পাবে। বাধা না হলে কিছু খরচ পত্র পাবে। আর তার
কোন ইদ্দত নেই। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“ যদি স্পর্শ করবার পূর্বে স্ত্রীদের তালাক দাও, অথচ মোহর পূর্বেই ধার্য করে থাক, তাহলে
নির্দিষ্ট মোহরের অর্ধেক আদায় করতে হবে। কিন্তু যদি স্ত্রী অথবা যার হাতে বিবাহ
বন্ধন, সে যদি মাফ করে দেয়, (তাহলে
আলাদা কথা।) অবশ্য তোমাদের মাফ করে দেওয়াই আত্নসংযমের নিকটতর। তোমরা নিজেদের মধ্যে
সহানুভূতি (ও মর্যাদার) কথা বিস্মৃত হয়ো না। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ তার সাম্যক দ্রষ্টা। (বাকারাহঃ ২৩৭)”
“হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা বিশ্বাসী রমণীদেরকে বিবাহ করার পর
ওদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে তোমাদের জন্য তাদের কোন পালনীয় ইদ্দত নেই।
সুতরাং তোমরা ওদেরকে কিছু সামগ্রী প্রদান কর এবং সৌজন্যের সাথে ওদেরকে বিদায় কর।”
(আহযাবঃ ৪৯)
✔ ৪৮৩ প্রশ্নঃ কোন স্বামী যদি
স্ত্রীকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘তুমি অমুকের বাড়ী গেলে তোমাকে
তালাক।’ অতঃপর স্ত্রী তা অমান্য করে অমুকের বাড়ী চলে গেলে
তালাক হয়ে যাবে কি?
উত্তরঃ তালাক নির্ভর করছে স্বামীর নিয়তের উপর। স্বামীর উদ্দেশ্যে যদি সত্যই তালাক
দেওয়ার থাকে, তাহলে তালাক হয়ে যাবে। তালাকের
নিয়ত না থাকলে এবং স্ত্রী যাতে অমুকের বাড়ী না যায়, সে
ব্যপারে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে থাকলে তালাক হবে না। তবে সে ক্ষেত্রে কসমের কাফফারা
আদায় করতে হবে। ৫৯০ (ইবনে জিবরীন)
✔ ৪৮৪ প্রশ্নঃ আমি স্ত্রীকে
বলেছিলাম, ‘তুমি তোমার দোলাভাইয়ের বাড়ী গেলে তোমাকে তালাক।’
অতঃপর সে আমার কথা মানেনি, সে তার
দোলাভাইয়ের বাড়ী গেছে। এখন কি তালাক হয়ে যাবে? এখন আমার
করণীয় কি?
উত্তরঃ অবাধ্য বউকে বাধ্য করার জন্য তালাকের হুমকি দেওয়া যায়, কিন্তু তাকে জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার সংকল্প না থাকলে তালাক দিয়ে ফেলতে
হয় না। তবুও নিয়ত যদি জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার এবং তালাক দেওয়ার থাকে, তাহলে তালাক হয়ে যাবে। ইদ্দতের মধ্যে তাকে যথা নিয়মে ফিরিয়ে নিতে হবে।
পক্ষান্তরে তাকে কেবল সক্তভাবে বাধা দেওয়ার নিয়ত থাকলে এবং তালাকের নিয়ত আদৌ না
থাকলে তালাক হবে না। বরং তার মান হবে কসমের। সে ক্ষেত্রে কসমের কাফফারা আদায় করতে
হবে।
✔ ৪৮৫ প্রশ্নঃ আমি মায়ের
বাড়িতে ছিলাম। স্বামী বলেছিল, ‘আজ তুমি বাড়ী না ফিরলে,
তোমাকে তালাক।’ আমি বাড়ী ফিরতে
চাইছিলাম। কিন্তু আমার ভাই জেদ ধরে আমাকে ফিরতে দিল না। এখন আমার কি তালাক হয়ে
গেছে?
উত্তরঃ যদি আপনার ভাইয়ের আপনাকে জোরপূর্বক আটকে রাখার কথা সত্য হয়, তাহলে তালাক হবে না। ৫৯১ (মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহিম)পরন্ত স্বামীর মনে
তালাকের নিয়ত না থাকলে এবং কেবল তাকীদ উদ্দেশ্য হলে তাকে কসমের কাফফারা আদায় করতে
হবে।
উত্তরঃ শরীয়তে আপনা আপনি তালাক বলে কোন কথা নেই। তালাক দিতে হয়, না হয় নিতে হয়। উভয় পক্ষ সম্মত থাকলে ছয় মাস কেন, ছয় বছরও দূরে থাকতে পারে। অবশ্য স্বামী নিখোঁজ হয়ে গেলে, সে কথা ভিন্ন। নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে পূর্ণ চার বছর অপেক্ষা করার পর আর
চার মাস দশদিন স্বামী মৃত্যুতে ইদ্দত পালন করে স্ত্রী দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করতে
পারে। ‘লিআন’ হওয়ার পর স্বামী
স্ত্রীর মাঝে আপনা আপনি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তদনুরূপ বিবাহ অবৈধ প্রমাণিত হলে,
স্বামী স্ত্রীর একজন মুরতাদ হয়ে গেলে সাথে সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ
ঘটে।
✔ ৪৮৭ প্রশ্নঃ স্বামী দ্বিতীয়
বিবাহ করেছে বলে কি প্রথম স্ত্রীর তালাক চাওয়া বৈধ; যদিও বৈধভাবে শরীয়তসম্মত বিবাহ হয়।
উত্তরঃ শরীয়তের শর্ত মেনে দুজনকেই সুখী রাখতে পারলে প্রথমার তালাক চাওয়া বৈধ নয়।
যেমন দ্বিতীয়ার জন্যও বৈধ নয় প্রথমাকে তালাক দিতে স্বামীকে চাপ দেওয়া।
মহানবী (ﷺ) বলেন, “যে স্ত্রীলোক অকারণে তার স্বামীর নিকট থেকে তালাক চাইবে, সে স্ত্রীলোকের জন্য জান্নাতের সুগন্ধও হারাম হয়ে যাবে।” ৫৯২ (আবূ দাঊদ ২২২৬, তিরমিযী ১১৮৭, ইবনে মাজাহ ২০৫৫ নং, ইবনে হিব্বান, বাইহাকী ৭/৩১৬, সহীহুল জামে ২৭০৬ নং)
নবী (ﷺ) বলেন, “কোন মহিলা তার বোনের (সতীনের)তালাক চাইবে না; যাতে
সে তার পাত্রে যা আছে, তা ঢেলে ফেলে দেয়। (এবং একাই
স্বামী প্রেমের অধিকারীনী হয়)” ৫৯৩ (আবূ দাঊদ ২২২৬,
তিরমিযী ১১৮৭, ইবনে মাজাহ ২০৫৫ নং,
ইবনে হিব্বান, বাইহাকী ৭/৩১৬, সাহীহুল জামে ২৭০
উত্তরঃ তিন সময় মাসিক থাকলেও তালাক দেওয়া যায়। (১) তার সাথে মিলন না হয়ে থাকলে।
(২) গর্ভাবস্থায় মাসিক অব্যাহত থাকলে। (৩) খোলা তালাক হলে।৫৯৪ (বুখারি, মুসলিম)
উত্তরঃ একই সঙ্গে তিন বা ততোধিক বার অথবা একবার তালাক দিলে তা এক তালাক রজয়ী হয়।
তাকে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়া যায়। ইদ্দত পার হয়ে গেলে স্ত্রী হারাম হয়ে যায়।
তারপরেও তাকে পেতে চাইলে নতুনভাবে বিয়ে করতে হবে। কিন্তু নিয়মিত তিন তালাক দেওয়ার
পর সে সুযোগ আর থাকে না। অবশ্য সে মহিলার অন্যত্র বিবাহ হলে, অতঃপর স্বামী তাকে স্বেচ্ছায় তালাক দিলে অথবা মারা গেলে ইদ্দতের পর
আগের স্বামী তাকে পূর্ণবিবাহ করতে পারে। মহান আল্লাহ বলেছেন, “ অতঃপর উক্ত স্ত্রীকে যদি সে (তৃতীয়) তালাক দেয়, তবে সে পর্যন্ত না ঐ স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিবাহ করবে, তার পক্ষে সে বৈধ হবে না। অতঃপর ঐ দ্বিতীয় স্বামী যদি তাকে তালাক দেয়
এবং যদি উভয় মনে করে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে
চলতে পারবে, তাহলে তাদের (পুনর্বিবাহের মাধ্যমে দাম্পত্য
জীবনে) ফিরে আসায় কোন দোষ নেই। এ সব আল্লহর নির্ধারিত সীমারেখা, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহ ঐগুলি স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন।”
(বাকারাহঃ ২৩০)
জ্ঞাতব্য যে, এ
ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে ‘হালালা-বিবাহ’ দিয়ে স্ত্রী হালাল করা বৈধ নয়। যেহেতু তাতে স্ত্রী হালাল হয় না।
সতর্কতার বিষয় যে, তালাকের বিষয় যে, তালাকের বিষয়টি সকল ক্ষেত্রে
এক রকম নয়। সুতরাং সে ক্ষেত্রে স্থানীয় কাযীর সহযোগিতা প্রয়োজন।
✔ ৪৯০ প্রশ্নঃ রজয়ী তালাক দিয়ে
ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় স্ত্রী যদি ফিরতে না চায়, তাহলেও কি সে স্ত্রী থাকবে?
উত্তরঃ রজয়ী তালাক দেওয়ার পর ইদ্দতের মধ্যে দু’জনকে
সাক্ষী রেখে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলে সে স্ত্রীই থাকবে, যদিও
সে ফিরতে রাজী না হয়।৫৯৬ (লাজনাহ দায়েমাহ) তালাকের পর এমন স্বামীর সাথে স্ত্রী সংসার
করতে না চাইলে খোলা তালাক নিতে পারে।
উত্তরঃ মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “পূর্ণবিবাহ না হওয়া পর্যন্ত মহিলা তার সন্তানের বেশী হকদার।” ৫৯৭ (দারাকুত্বনী ৪১৮ নং, সিসঃ ৩৬৮ নং) অবশ্য
মায়ের মধ্যে কোন প্রতিকূল গুণ থাকলে আলাদা কথা। সেক্ষেত্রে বাপই সন্তানের অধিকার
পাবে। যেমন মায়ের হাতে সন্তান থাকলে খারাপ হয়ে যাবে--- এই আশঙ্কা থাকলে সে
সন্তানের অধিকার হারাবে। পরন্ত সন্তান যদি জ্ঞান সম্পন্ন হয়, তাহলে তাকে এখতিয়ার দেওয়া হবে। সে যাকে বেছে নেবে, সেই তার প্রতিপালনের দায়িত্ব পাবে। ৫৯৮ (তিরমিযী ১৩৫৭, ইবনে মাজাহ ২৩৫১ নং)
✔ ৪৯২ প্রশ্নঃ তালাক ও শোক
পালনের ইদ্দত কখন থেকে শুরু হবে? খবর জানার পর থেকে, নাকি তালাক ও মরনের দিন থেকে?
উত্তরঃ তালাক ও শোক পালনের ইদ্দত খবর জানার পর থেকে নয়, বরং তালাক ও মরনের দিন থেকে গণ্য হবে। সুতরাং যদি কোন মহিলা তিন
মাসিকের পর খবর পায় যে, তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে,
তাহলে নতুন করে সে আর ইদ্দত পালন করবে না। অনুরূপ যদি কোন মহিলা
৪ মাস ১০ দিন পর জানতে পারে যে, তার স্বামী মারা গেছে,
তাহলে তাকে আর ইদ্দত পালন করতে হবে না।
প্রকাশ থাকে যে, তালাকের ইদ্দত অন্য মহিলাদের জন্য ভিন্ন রকম।
“তোমাদের যেসব স্ত্রীদের মাসিক হবার আশা নেই, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস
এবং যাঁদের এখনো মাসিক হয়নি তাঁদেরও। আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব
করা পর্যন্ত।” (ত্বালাক্বঃ ৪)
যেমন শোকপালনের ইদ্দতও গর্ভকাল পর্যন্ত।
উত্তরঃ যে গৃহ থেকে স্বামী মরার খবর পাবে, সেই গৃহ
তার জন্য নিরাপদ ও সুবিধাজনক হলে সেখানে ৪ মাস ১০ দিন অথবা গর্ভকাল ইদ্দত পালন
করবে। মহানবী (ﷺ) ফুরাইআহকে
বলেছিলেন,
“তুমি সেই গৃহে অবস্থান কর, যে
গৃহে তোমার কাছে তোমার স্বামীর মৃত্যু সংবাদ এসেছে।” ৫৯৯
(আহমাদ ৬/৩৭০, ইবনে মাজাহ ২০৩১, হাকেম
২/২২৬, ত্বাবারানীর কাবীর ১০৮৪ নং, বাইহাক্বী ৭/ ৪৩৪)
সুতরাং সে যদি সেই সময় স্ত্রীর মায়ের বাড়িতে থাকে
এবং শ্বশুরবাড়ি অপেক্ষা সেই বাড়ি সুবিধাজনক ও নিরাপদ হয়, তাহলে সেখানেই ইদ্দত পালন করতে হবে। মেয়েরা বাড়িতে থাকলেও তাই। নচেৎ
স্বামী গৃহে ফিরে যেতে হবে।
পক্ষান্তরে স্বামী গৃহে থাকা অবস্থায় স্বামী মারা
গেলে এবং সেখানে তাকে দেখাশোনা করার মতো কোন মাহরাম পুরুষ বা তেমন কেউ না থাকলে, সেখানে বসবাস করা তার অসুবিধাজনক বা ক্ষতিকর হলে মায়ের বাড়িতে গিয়ে
ইদ্দত পালন করতে পারে।
✔ ৪৯৪ প্রশ্নঃ কোন পড়ুয়া
ছাত্রীর স্বামী মারা গেলে সে কীভাবে ইদ্দত পালন করবে? তার কি বিদ্যালয়ে যাওয়া বৈধ হবে?
উত্তরঃ অন্যান্য মহিলাদের মতো তার জন্যও স্বগৃহে ইদ্দত পালন করা তাতে সকল প্রকার
সৌন্দর্য ও সুগন্ধি বর্জন করা জরুরী। অবশ্য নিজের একান্ত প্রয়োজনে বাইরে যেতে
পারে। সুতরাং দিনের বেলায় সে বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস করে আসতে পারে। ৬০০ (লাজনাহ
দায়েমাহ)
অবশ্য ইদ্দতের ভিতরে হজ্জ সফরে যেতে পারে না।
✔ ৪৯৫ প্রশ্নঃ স্ত্রীকে তালাক
দেওয়ার পর স্বামী হটাৎ মারা যায়। ঐ স্ত্রীকে কি ইদ্দত পালন করতে হবে? ঐ স্ত্রী কি তার ওয়ারেস হবে?
উত্তরঃ যে তালাকে স্ত্রী প্রত্যনয়ণযোগ্য থাকে সেই (রজয়ী) তালাক পাওয়া অবস্থায়
স্ত্রীকে শোকপালনের ইদ্দত পালন করতে হবে এবং স্বামীর ওয়ারেসও হবে। কারণ পূর্বেই
মতোই। পক্ষান্তরে বায়েন বা খোলা তালাক পাওয়ার ইদ্দতে অথবা ফাসখের ইদ্দতে থাকলে
স্ত্রীকে শোকপালনের ইদ্দত পালন করতে হবে না এবং সে স্বামীর ওয়ারেসও হবে না। ৬০১
(ইবনে উষাইমীন)
✔ ৪৯৬ প্রশ্নঃ বিবাহের পর
স্বামীর সাথে বাসর বা মিলন হওয়ার আগেই যদি স্বামী মারা যায়, তাহলে কি ইদ্দত পালন করতে হবে? ঐ স্ত্রী কি
তার ওয়ারেস হবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, ঐ স্ত্রীকে ৪ মাস ১০ দিন ইদ্দত
পালন করতে হবে। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন,
“তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যায়, তাদের স্ত্রীগন চার মাস দশ দিন অপেক্ষা করবে।” (বাকারাহঃ ২৩৪)
এখানে মহান আল্লাহ আমভাবে সকল স্ত্রীর প্রতিই একই
নির্দেশ দিয়েছেন।
আর আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেছেন, “যে স্ত্রীলোক আল্লাহ ও কিয়ামতের প্রতি ঈমান রাখে, তার পক্ষে স্বামী ছাড়া অন্য কোন মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশী শোক
পালন করা জায়েয নয়। তার স্বামীর জন্য সে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে।” ৬০২ (বুখারী ও মুসলিম)
এখানে মহানবী (ﷺ) আমভাবে সকল
স্ত্রীর প্রতিই একই নির্দেশ দিয়েছেন।
অনুরূপ মীরাসের আয়াতেও আম নির্দেশ আছে। সুতরাং সে
স্বামীর (এক চতুর্থাংশ সম্পত্তির) ওয়ারেশ হবে; যদি অন্য
কোন বাধা না থাকে। ৬০৩ (ইবনে বায)
উত্তরঃ ভ্রুন ভূমিষ্ঠ হলেই গর্ভবতীর ইদ্দত শেষ হয়ে যাবে। (সাদী)যেহেতু মহান আল্লাহ
বলেছেন,
“ গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।”
(ত্বালাক্বঃ ৪)
✔ ৪৯৮ প্রশ্নঃ ইদ্দত যদি
মহিলার গর্ভে সন্তান আছে কি না, তা দেখার জন্য হয়, তাহলে স্বামী ছেড়ে এক দেড় বছর মায়ের বাড়িতে থাকার পর যে মহিলাকে স্বামী
তালাক দেয়, তাঁকেও কি অতিরিক্ত তিন মাসিক অথবা মাসিক না
হলে তিন মাস ইদ্দত পালন করতে হবে?
উত্তরঃ আসলে ইদ্দত শুরু হবে তালাকের পর থেকে। ইতিপূর্বে সে স্বামীর সাথে বহু দিন
যাবৎ মিলন না করে থাকলেও বিধান এটাই যে, তালাক
হওয়ার পর নির্ধারিত ইদ্দত পালন করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“”তালাকপ্রাপ্তা (বর্জিতা) নারীগণ তিন রজঃস্রাব কাল
প্রতীক্ষায় থাকবে। (অর্থাৎ বিবাহ করা থেকে বিরত থাকবে) (বাকারাহঃ ২২৮)
✔ ৪৯৯ প্রশ্নঃ স্বামী মারা গেলে
এবং গর্ভে দুই মাস এর বাচ্চা থাকলে ৪ মাস ১০ দিন ইদ্দত পালন করবে, নাকি প্রসব হওয়া পর্যন্ত আরো প্রায় ৭ মাস ইদ্দত পালন করবে?
উত্তরঃ গর্ভবতীর ইদ্দত শেষ হবে প্রসবের পর; যদিও তা
তুলনামূলক লম্বা। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন,
“ গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।”
(ত্বালাক্বঃ ৪)
একই কারণে গর্ভের শেষের দিকে স্বামী মারা গেলে
স্ত্রীর ইদ্দত মাত্র কয়েক ঘণ্টা হতে পারে।
উত্তরঃ ইদ্দতে থাকা বিধবাকে সরাসরি বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া বৈধ নয়। অবশ্য আভাসে
ইঙ্গিতে বিয়ের কথা জানানোতে দোষ নেই। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“ আর তোমরা যদি আভাসে ইঙ্গিতে উক্ত রমণীদেরকে বিবাহের
প্রস্তাব দাও অথবা অন্তরে তা গোপন রাখ, তাতে তোমাদের দোষ
হবে না। আল্লাহ জানেন যে, তোমরা তাদের সম্বন্ধে আলোচনা
করবে। কিন্তু বিধিমত কথা বার্তা গোপনে তাদের নিকট কোন অঙ্গীকার করো না; নির্দিষ্ট সময়ে (ইদ্দত)পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ কার্য সম্পন্ন করার
সংকল্প করো না। আর জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের মনোভাব
জানেন। অতএব তাকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ পরম
ক্ষমাশীল, বড় সহিষ্ণু।” (বাকারাহঃ
২৩৫)
উত্তরঃ মোটেই না। মৃত্যুর পর থেকেই সে সময় শুরু হয়ে যায়। ৬০৪ (ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ কেবল সময় দেখার উদ্দেশ্যে পরা যায়। জরুরী না হলে না পরাই উত্তম। যেহেতু তা
অলঙ্কারের মতো। ৬০৫ (লাজনাহ দায়েমাহ)
উত্তরঃ ইদ্দত পালনের জন্য কোন নির্দিষ্ট রঙের লেবাস নেই। যে লেবাসে সৌন্দর্য আছে, তা বর্জন করে সাদাসিধা লেবাস পড়তে হবে। যে সাদা রঙের কাপড়ে সৌন্দর্য আছে, তাও
পরা যাবে না।
✔ ৫০৪ প্রশ্নঃ ইদ্দত পালনের সময় বিধবা কি ছাত্রী হলে বিদ্যালয়ে
অথবা চাকুরে হলে চাকুরিস্থলে যেতে পারবে?
উত্তরঃ যে কাজে যাওয়া জরুরী, সে কাজে যাওয়া চলবে। ৬০৬
(মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম)
উত্তরঃ যে ঘরে থাকা অবস্থায় স্বামী মারা গেছে, সে ঘরেই
ইদ্দত পালন করতে হবে। অবশ্য সেখানে যদি দেখাশোনা করার কেউ না থাকে, তাহলে শ্বশুরবাড়ি অথবা মায়ের বাড়িতে ফিরে গিয়ে ইদ্দত পালন করতে পারবে।
৬০৭ (লাজনাহ দায়েমাহ)
উত্তরঃ নিজের স্বামীগৃহে ফিরে এসে ইদ্দত পালন করবে। ৬০৮ (ইবনে উষাইমিন)
উত্তরঃ কোন মহিলার স্বামী নিখোঁজ হলে নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে পূর্ণ চার বছর অপেক্ষা
করার পর আর চার মাস দশ দিন স্বামী মৃত্যুর ইদ্দত পালন করে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ
করতে পারবে। এই নির্ধারিত সময়ের পূর্বে তার বিবাহ হারাম। বিবাহের পর তার
পূর্বস্বামী ফিরে এলে তার এখতিয়ার হবে; স্ত্রী
ফেরত নিতে পারে অথবা মোহর ফেরত নিয়ে তাকে ঐ স্বামীর জন্য ত্যাগ করতেও পারে। ৬০৯
(মানারুস সাবীল ২/৮৮ পৃঃ)
স্ত্রী চাইলে আর নতুনভাবে বিবাহ আকদের প্রয়োজন
নেই। কারণ, স্ত্রী তারই এবং দ্বিতীয় আকদ তার ফিরে আসার পর বাতিল।
তবে তাকে ফিরে নেওয়ার পূর্বে ঐ স্ত্রী (এক মাসিক) ইদ্দত পালন করবে। ৬১০ (ইউঃ
২/৭৬৬) গর্ভবতী হলে প্রসবকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর সে সময়ে দ্বিতীয় স্বামী
থেকে পর্দা ওয়াজেব হয়ে যাবে।
উত্তরঃ না। কারণ দুধ পান করলে দুধের আত্নীয়তা কায়েম হয় ঠিকই, কিন্তু মীরাসের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয় না। সুতরাং সেই মহিলার সম্পত্তি
বায়তুল মালে জমা হবে।৬১১ (ইবনে উষাইমীন)
✔ ৫০৯ প্রশ্নঃ আমি বৃদ্ধ
মানুষ। আমার ভয় হয়, আমার মৃত্যুর পর জমি সম্পত্তি
নিয়ে ছেলেরা ঝগড়া ঝামেলা করবে। সুতরাং আমি কি এখন আমার স্থাবর অস্থাবর সকল অর্থ
সম্পত্তি মীরাসের ভাগ বণ্ঠন অনুযায়ী প্রতেকের নামে লিখে দিতে পারি?
উত্তরঃ আপনার এ কাজ ঠিক হবে না। কারণ আপনি জানেন না যে, কে কখন মারা যাবে। হতে পারে আপনার কোন ওয়ারেসেরই আপনি ওয়ারেস হবেন।
সুতরাং আপনার মৃত্যুর পর আপনার ছেলে মেয়েরা শরয়ী মীরাস অনুযায়ী বিলি বণ্ঠন করে
নেবে। তারা ঝগড়া করলে আপনার দোষ হবে না। আপনি তাঁদেরকে ঝগড়া না করতে অসিয়ত করুন।
কারো নামে কিছু লিখে না দিয়ে সব নিজের নামেই রাখুন। ৬১২ (ইবনে ইষাইমীন)
✔ ৫১০ প্রশ্নঃ আমার তিনটি মেয়ে, কোন ছেলে নেই। শুনেছি, আমার মৃত্যুর পর আমার
মেয়ের দুইয়ের তিন ভাগ সম্পত্তি পাবে এবং বাকী পাবে আমার ভাই। অথচ সে আমার ভাই হলেও,
সে আমার দুশমন। আমি চাই না, সে আমার কোন
সম্পত্তি পাক। এখন কি আমি আমার সব সম্পত্তি আমার মেয়েদের নামে লিখে দিতে পারি?
উত্তরঃ আপনার সম্পত্তি কে পাবে, আর কে পাবে না, তাতে আপনার ইচ্ছা নেই। সে ইচ্ছা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর। আর বিধানে সে যা
পাবে, তাতে বাদ সাধবার অধিকার আপনার নেই। মহান আল্লাহ
মীরাসের ভাগ বণ্ঠনের বিধান দেওয়ার পর বলেছেন,
“এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। আর যে আল্লাহ ও রাসূলের
অনুগত হয়ে চলবে, আল্লাহ তাকে বেহেশেত স্থান দান করবেন;
যার নীচে নদী সমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এবং এ মহা
সাফল্য। পক্ষান্তরে যে আল্লাহ ও তার রাসুলের অবাধ্য হবে এবং তার নির্ধারিত সীমা
লংঘন করবে, তিনি তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন। সেখানে সে
চিরকাল থাকবে, আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা দায়ক শাস্তি।”
(নিসাঃ ১৩-১৪)
সুতরাং আপনার
ভাই আপনার দুশমন হলেও আল্লাহর ইচ্ছায় সে আপনার সম্পত্তির ভাগ পাবে। অবশ্য সে যদি
কাফের বা মুশরিক হয়, তাহলে সে আল্লাহর বিধানে
মুসলিমের নিকট থেকে কোন অংশ পাবে না। ৬১৩ (ইবনে উষাইমীন)
বিবাহ ও দাম্পত্য বিষয়ে প্রশ্নোত্তর
নং
|
বিবাহ ও দাম্পত্য বিষয়ে প্রশ্নোত্তর
|
৪২৪
|
বহু বিবাহ বা একাধিক বিবাহকে অনেক মুসলিমও ঘৃণা করে। যদিও অনেকে তা কামনা করে। ইসলামে বহু বিবাহের মান কী?
|
৪২৫
|
যাকে রক্ত দেওয়া হয়েছে, তার সাথে কি বিবাহ কি বৈধ?
|
৪২৬
|
কোন বিবাহিত মহিলাকে বিবাহ করা বৈধ কি?
|
৪২৭
|
একজনের বিবাহিত স্ত্রী হয়ে থাকা অবস্থায় অন্যের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে বৈধ কি?
|
৪২৮
|
এক ব্যক্তি এক কুমারীর সাথে (প্রেম করে) ব্যভিচার করেছে, এখন সে তাকে বিবাহ করতে চায়। এটা কি তার জন্য বৈধ?
|
৪২৯
|
কোন মুসলিমের সাথে কোন অমুসলিমের বিবাহ কি বৈধ ?
|
৪৩০
|
হালালা বিবাহ বৈধ কি?
|
৪৩১
|
জায়বদলি বিবাহ বৈধ কি?
|
৪৩২
|
মুতাআহ বিবাহ বৈধ কি?
|
৪৩৩
|
তালাকের নিয়তে বিবাহ বৈধ কি?
|
৪৩৪
|
বাল্য বিবাহ বৈধ কি?
|
৪৩৫
|
কোন মুসলিম বেশ্যা বা অসতী মহিলাকে বিবাহ করা বৈধ কি?
|
৪৩৬
|
একই সাথে ৫ টি বা তারও বেশি মহিলাকে স্ত্রীরূপে রাখা বৈধ কি?
|
৪৩৭
|
নাতিন বা পুতিনকে ঠাট্টাছলে অনেকে ‘গিন্নি’ বলে। তাহলে তাদের সাথে কি নানা বা দাদার বিবাহ বৈধ?
|
৪৩৮
|
স্ত্রী থাকতে তার বোনকে অথবা তার বুনঝি বা ভাইঝিকে অথবা তার খালা বা ফুফুকে বিবাহ করা বৈধ কি?
|
৪৩৯
|
কোন কোন সময় এমন হয় যে, জোরপূর্বক বর বা কনেকে বিবাহের কাবিন নামা বা তালাক পত্রে সই করিয়ে বিবাহ বা তালাক দেওয়া হয়।
|
৪৪০
|
আমি বিবাহের বয়স উত্তীর্ণ একজন ধনী ও রোগী মহিলা। আমি একজন সুপুরুষকে বিবাহ করে কেবল স্ত্রীর মর্যাদা পেতে চাই। আমি আমার পৈত্রিক বাড়িতেই থাকতে চাই।
|
৪৪১
|
অনেক সময় উপযুক্ত পাত্র বিবাহের প্রস্তাব দিলে মেয়ে অথবা মেয়ের বাপ এই বলে রদ করে দেয় যে, পড়া শেষ হলে তবেই বিয়ে হবে। এটা কি বৈধ?
|
৪৪২
|
বর ভিন্ন দেশে থাকলে টেলিফোনের মাধ্যমে বিয়ে পড়ালে শুদ্ধ হবে কি?
|
৪৪৩
|
বিবাহের পর মোহর কখন ওয়াজেব হয় ?
|
৪৪৪
|
নাবালিকার বিবাহ কি শুদ্ধ নয়?
|
৪৪৫
|
অনেক বৃদ্ধ অল্প বয়সের মেয়েকে বিয়ে করে, এটা কি শরীয়তে বৈধ ?
|
৪৪৬
|
নাম করা বংশের ছেলে বা মেয়ের সাথে কি বংশ পরিচয়হীন ছেলে বা মেয়ের বিবাহ শুদ্ধ নয়?
|
৪৪৭
|
মেয়ে যাকে বিয়ে করতে রাজী নয়, তার সাথে বাপ জোরপূর্বক বিয়ে দিতে পারে কি?
|
৪৪৮
|
বিয়েতে বাপ রাজী ছিল না। ভাই দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে অবশ্য বাপ রাজী হয়ে গেছে। এখন সে বিয়ের মান কি ?
|
৪৪৯
|
অবৈধ প্রনয়ের মাধ্যমে কোট ম্যারেজ বা লাভ ম্যারেজ বৈধ কি? তাতে যদি মেয়ের অভিভাবক সম্মত না থাকে, তাহলে সে বিবাহ বৈধ কি?
|
৪৫০
|
মা বাপের পছন্দমতো বিয়ে করা কি ছেলের জন্য জরুরী?
|
৪৫১
|
পাত্রী দেখতে গিয়ে পাত্রীর কি কি দেখা যায়? বর ছাড়া কি বরের বাপ চাচা, ভাই বন্ধু বা বুনাইও কি পাত্রী দেখতে পারে?
|
৪৫২
|
অনেক ছেলে আছে, যার বিয়ের আগে হবু বউকে দেখতে লজ্জা করে এবং বলে, ‘মা-বোন দেখলেই যথেষ্ট। তাদের পছন্দ হলে আমারও পছন্দ হয়ে যাবে।’ এটা কি ঠিক?
|
৪৫৩
|
যাকে বিবাহ করব, তাকে তার অজান্তে লুকিয়ে দেখতে পারি কি?
|
৪৫৪
|
ইনগেইজমেন্ট বা বাগদানের সময় বরকনের আংটি পরা কি ঠিক?
|
৪৫৫
|
আমাদের আগামী বছর বিবাহ হবে। ততদিন পর্যন্ত আমি কি হবু স্ত্রীকে টেলিফোনের মাধ্যমে দ্বীন শিক্ষা দিতে পারি? কোন সাংসারিক আলাপ আলোচনা করতে পারি কি?
|
৪৫৬
|
কনের মাসিক অবস্থায় কি বিয়ে পড়ানো যায় ?
|
৪৫৭
|
বিয়ের সময় উলুধ্বনি দেওয়া বৈধ কি?
|
৪৫৮
|
বিবাহের সময় খাস মহিলা মহলে কেবল মহিলাদের সামনে মহিলারা নাচতে পারে কি?
|
৪৫৯
|
বিবাহের সময় মেয়েরা ঢোল বাজিয়ে গান করতে পারে কি না?
|
৪৬০
|
বিবাহে দুফ বাজিয়ে গান মেয়েরা গাইতে পারে, কিন্তু কতদিন? কোন দিনে এই গীত বা গান গাওয়া যায়?
|
৪৬১
|
বিবাহের পর মহিলা মহলে বর কনেকে ‘একঠাই’ করা বৈধ কি? উল্লেখ্য যে, সেখানে বরের সাথে তার বুনাই বন্ধুও থাকে। সেখানে বর কনেকে নিয়ে চলে নানা লেকচার, নানা কীর্তি
|
৪৬২
|
বিবাহের পর মহিলা মহলে বর কনেকে ‘একঠাই’ করা বৈধ কি? উল্লেখ্য যে, সেখানে বরের সাথে তার বুনাই বন্ধুও থাকে। সেখানে বর কনেকে নিয়ে চলে নানা লেকচার, নানা কীর্তি
|
৪৬৩
|
গান বাজনা হারাম। কিন্তু স্বামী স্ত্রী যদি একে অপরকে শোনায়, তাহলে তাতে ক্ষতি আছে কি?
|
৪৬৪
|
স্বামীর হাতে স্ত্রীর আংটি বা স্ত্রীর চুড়ি রাখা কি জরুরী? তা খুলে ফেললে কি কোন অমঙ্গল বা বিপদের আশঙ্কা আছে?
|
৪৬৫
|
আমাদের বিবাহের দিনে আমি কি আমার স্ত্রীকে কোন উপহার দিয়ে স্মৃতিচারণা করে খুশী করতে পারি?
|
৪৬৬
|
স্ত্রী কি কুলক্ষণা হতে পারে?
|
৪৬৭
|
আমার স্বামী আমার ব্যাপারে এবং আমাদের ছেলেমেয়ের ব্যাপারে পয়সা খরচ করতে বড় কৃপণতা করে। তার অজান্তে যদি টাকা পয়সা নিয়ে খরচ করি, তাহলে সেটা কি চুরি হবে?
|
৪৬৮
|
আমার স্বামী আমাকে ভালবাসে না। কথায় কথায় আমাকে গালাগালি করে, মারধরও করে। ছেলেমেয়ে এবং নিকট ও দুরের মানুষের কাছে আমাকে অপমানিতা করে।
|
৪৬৯
|
বিবাহের চার মাস পর আমার স্ত্রীর সাথে আমার মায়ের মনোমালিন্য শুরু হয়ে গেল। এক সময় অশান্তি করে সে মায়ের ঘরে চলে গেল।...
|
৪৭০
|
বাপ মায়ের আদেশ পালন করা ওয়াজেব। কিন্তু তারা যদি বউ তালাক দিতে বলে, তাহলে করণীয় কি?
|
৪৭১
|
সন্তান বেশি হলে মানুষ গরীব হয়ে যায়। এ কথা বলা কি ঠিক?
|
৪৭২
|
গর্ভ নিরোধক ট্যাবলেট ব্যবহার বৈধ কি?
|
৪৭৩
|
টেস্ট টিউবের মাধ্যমে গর্ভ সঞ্চার করা কি বৈধ ?
|
৪৭৪
|
কৃত্রিমভাবে সন্তান নেওয়ার বিধান কি?
|
৪৭৫
|
অনেক পুরুষ আছে, যাঁদের কন্যা সন্তান হলে স্ত্রীকে দোষ দেয়, তাকে ঘৃণা করে। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় হলে তো রেহাই নেই। এমন পুরুষদের ব্যাপারে শরীয়তের বিধান কি?
|
৪৭৬
|
কোন লম্পট যদি শালী বা শাশুড়ির সাথে অথবা পুত্রবধূর সাথে ব্যভিচার করে, তাহলে তার বিবাহিতা স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে কি?
|
৪৭৭
|
একজন স্বামী তার স্ত্রীকে মা বলে ‘যিহার’ করেছে। অতঃপর তাকে তালাক দিয়েছে। তাকে কি ‘যিহারের’ কাফফারা আদায় করতে হবে?
|
৪৭৮
|
কোন হতভাগা স্বামী স্ত্রীকে ‘তুই আমার মা বা মায়ের মত’ বললে ‘যিহার’ হয়। কিন্তু যদি কোন হতভাগী স্ত্রী ‘তুমি আমার বাপ বা বাপের মত’ বলে। তাহলে তার বিধান কি?
|
৪৭৯
|
যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীকে বলে, ‘আমি তোমার নিকট থেকে আল্লাহর পানাহ চাচ্ছি’ তাহলে কি তাকে স্ত্রী রূপে রাখা যাবে?
|
৪৮০
|
স্বামীর নিকট থেকে কখন তালাক নেওয়া বৈধ এবং কখন ওয়াজেব?
|
৪৮১
|
তালাক স্বামীর হাতে দেওয়া হল কেন? স্ত্রী তালাক নিতে পারে দিতে পারেনা কেন?
|
৪৮২
|
বিয়ে পড়ানোর পর স্বামী স্ত্রীর দেখা সাক্ষাৎ হওায়ার আগেই যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেয়, তাহলে স্ত্রী কি মোহর পাওয়ার অধিকার রাখে?
|
৪৮৩
|
কোন স্বামী যদি স্ত্রীকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘তুমি অমুকের বাড়ী গেলে তোমাকে তালাক।’ অতঃপর স্ত্রী তা অমান্য করে অমুকের বাড়ী চলে গেলে তালাক হয়ে যাবে কি?
|
৪৮৪
|
আমি স্ত্রীকে বলেছিলাম, ‘তুমি তোমার দোলাভাইয়ের বাড়ী গেলে তোমাকে তালাক।’ অতঃপর সে আমার কথা মানেনি, সে তার দোলাভাইয়ের বাড়ী গেছে।
|
৪৮৫
|
আমি মায়ের বাড়িতে ছিলাম। স্বামী বলেছিল, ‘আজ তুমি বাড়ী না ফিরলে, তোমাকে তালাক।’ আমি বাড়ী ফিরতে চাইছিলাম। কিন্তু আমার ভাই জেদ ধরে আমাকে ফিরতে দিল না।
|
৪৮৬
|
স্বামী ছয় মাস স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক না রাখলে আপনা আপনি তালাক হয়ে যায় কি?
|
৪৮৭
|
স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করেছে বলে কি প্রথম স্ত্রীর তালাক চাওয়া বৈধ; যদিও বৈধভাবে শরীয়তসম্মত বিবাহ হয়।
|
৪৮৮
|
স্ত্রীর মাসিক অবস্থায় তালাক দেওয়া হারাম। কিন্তু কোন সময় মাসিক থাকলেও তালাক দেওয়া যায়?
|
৪৮৯
|
স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় ফিরে পেতে চাইলে করণীয় কি?
|
৪৯০
|
রজয়ী তালাক দিয়ে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় স্ত্রী যদি ফিরতে না চায়, তাহলেও কি সে স্ত্রী থাকবে?
|
৪৯১
|
শরয়ী পর্দা করলে স্বামী তালাক দিতে চায়। সুতরাং আমি কি করতে পারি?
|
৪৯২
|
তালাক ও শোক পালনের ইদ্দত কখন থেকে শুরু হবে? খবর জানার পর থেকে, নাকি তালাক ও মরনের দিন থেকে?
|
৪৯৩
|
স্বামী মারা গেলে মহিলা কোথায় ইদ্দত পালন করবে?
|
৪৯৪
|
কোন পড়ুয়া ছাত্রীর স্বামী মারা গেলে সে কীভাবে ইদ্দত পালন করবে? তার কি বিদ্যালয়ে যাওয়া বৈধ হবে?
|
৪৯৫
|
স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর স্বামী হটাৎ মারা যায়। ঐ স্ত্রীকে কি ইদ্দত পালন করতে হবে? ঐ স্ত্রী কি তার ওয়ারেস হবে?
|
৪৯৬
|
বিবাহের পর স্বামীর সাথে বাসর বা মিলন হওয়ার আগেই যদি স্বামী মারা যায়, তাহলে কি ইদ্দত পালন করতে হবে? ঐ স্ত্রী কি তার ওয়ারেস হবে?
|
৪৯৭
|
গর্ভস্থ ভ্রুন যদি গর্ভচ্যুত হয়, তাহলে কি গর্ভবতীর ইদ্দতকাল শেষ হয়ে যাবে?
|
৪৯৮
|
ইদ্দত যদি মহিলার গর্ভে সন্তান আছে কি না, তা দেখার জন্য হয়, তাহলে স্বামী ছেড়ে এক দেড় বছর মায়ের বাড়িতে থাকার পর যে মহিলাকে স্বামী তালাক দেয়,...
|
৪৯৯
|
স্বামী মারা গেলে এবং গর্ভে দুই মাস এর বাচ্চা থাকলে ৪ মাস ১০ দিন ইদ্দত পালন করবে, নাকি প্রসব হওয়া পর্যন্ত আরো প্রায় ৭ মাস ইদ্দত পালন করবে?
|
৫০০
|
যে মহিলা স্বামী মরার ইদ্দত আছে, সে মহিলাকে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া যায় কি না?
|
৫০১
|
ইদ্দত পালনের সময়কাল কি পিছিয়ে দেওয়া যায়?
|
৫০২
|
ইদ্দত পালন করার সময় কি ঘড়ি পরা যায়?
|
৫০৩
|
ইদ্দত পালনের সময়ে কি বিধবাকে সাদা কাপড়ই পড়তে হবে?
|
৫০৪
|
ইদ্দত পালনের সময় বিধবা কি ছাত্রী হলে বিদ্যালয়ে অথবা চাকুরে হলে চাকুরিস্থলে যেতে পারবে?
|
৫০৫
|
বিদেশে থাকা অবস্থায় বিধবা হলে মহিলা কোথায় ইদ্দত পালন করবে?
|
৫০৬
|
স্বামী মরার সময় স্ত্রী মায়ের বাড়িতে ছিল। সে কোথায় ইদ্দত পালন করবে?
|
৫০৭
|
কোন স্ত্রীর স্বামী নিখোঁজ হলে করণীয় কি?
|
৫০৮
|
এক মহিলার দুধ বেটা ছাড়া আর কেউ নেই। সে মারা গেলে কি ঐ বেটা তার ওয়ারেস হবে?
|
৫০৯
|
আমি বৃদ্ধ মানুষ। আমার ভয় হয়, আমার মৃত্যুর পর জমি সম্পত্তি নিয়ে ছেলেরা ঝগড়া ঝামেলা করবে। সুতরাং আমি কি এখন আমার স্থাবর অস্থাবর সকল অর্থ...
|
৫১০
|
আমার তিনটি মেয়ে, কোন ছেলে নেই। শুনেছি, আমার মৃত্যুর পর আমার মেয়ের দুইয়ের তিন ভাগ সম্পত্তি পাবে এবং বাকী পাবে আমার ভাই। ...
|
0 Comments