তাফসীরঃ ফাতহুল মাজীদ
ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এই. ই. আর. এফ)
অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সংকলিত।ও সম্পাদিত
সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ-আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
সম্পাদনা পরিষদঃ-
প্রফেসর এ.কে.এম শামসুল আলম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ লাকমান হুসেন
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফী |
অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ আল-মাদানী
শায়খ মুস্তফা বিন বাহারুদ্দীন সালাফী
শায়খ ড. হাফিয় রফিকুল আল-মাদানী
শায়খ মাসউদুল আলম উমরী
শায়খ মুফায়যাল হুসাইন আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ঈসা মিয়া আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ইরফান আলী আব্বাস আল-মাদানী
শায়খ হাবিবুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী |
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
পরিবেশনায়ঃ আল খাইর
পাবলিকেশন্ম, নাজির বাজার, | ঢাকা।
সাম্প্রতিককালে সংকলিত অন্যতম কিছু তাফসীরের মধ্যে তাফসীর ফাতহুল মাজীদ
উল্লেখযোগ্য। এই তাফসীরটি শাইখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানীর তত্ত্বাবধানে
সংকলন করা হয়েছে।
খণ্ড সংখ্যাঃ ৩
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৯৮ (৮২৪ + ৯৬০ + ৮১৪)
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫০ (৯০০ + ৮৫০ + ৮০০)
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ-এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
০১. আরবী আয়াতের পাশাপাশি অতি সহজ - সরল বাংলা অনুবাদ।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
2:1
الٓـمّٓ ۚ﴿۱﴾
সুরার নাম- বাকারা,(বকনা- \বাছুর)
اِنَّ الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡا وَ الَّذِیۡنَ ہَادُوۡا وَ النَّصٰرٰی وَ الصّٰبِئِیۡنَ مَنۡ اٰمَنَ
بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَلَہُمۡ اَجۡرُہُمۡ عِنۡدَ
رَبِّہِمۡ ۪ۚ وَ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۶۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
যারা উম্মাতে মুহাম্মাদীর সৎ লোক, আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনয়ন করতঃ শরীয়ত মোতাবেক আমল করে এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাসূল হিসেবে প্রেরণের পূর্বে যে সকল ইয়াহূদী-খ্রিস্টান ও সাবিয়ী তাদের স্বীয় ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল ও তাওহীদভিত্তিক ঈমান এনেছিল, আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসী ছিল এবং আল্লাহ তা‘আলা যে সকল আমল পছন্দ করেন সে অনুপাতে আমল করেছিল, তাদের সকলকে আল্লাহ তা‘আলা নিজের পক্ষ থেকে প্রতিদানস্বরূপ জান্নাত প্রদান করবেন। তাদের কোন ভয় ও চিন্তা থাকবে না। কিন্তু নাবী (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাবী হিসেবে আগমনের পর কোন জাতির ধর্ম আল্লাহ তা‘আলা কবূল করবেন না। কেবল ইসলাম ছাড়া যা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়ে এসেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللّٰهِ الْإِسْلَامُ)
“আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দীন (জীবন ব্যবস্থা) কেবল ইসলাম।”(সূরা আল-ইমরান ৩: ১৯)
صابئين ‘সাবিয়ী’দ্বারা কাদের বুঝানো হয়েছে এ সম্পর্কে কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়।
কেউ কেউ বলেন: তারা ইয়াহূদীও নয়, খ্রিস্টানও নয়। অন্য একদল বলেন: তারা হল, যাদের কাছে নাবীর দাওয়াত পৌঁছেনি। আরেক দল বলেন: তারা কোন এক ধর্মের অনুসারী। তাদের কোন আমল, কোন কিতাব, কোন নাবী ছিল না কেবল এ কথা বলা ছাড়া যে, لا إله إلا اللّٰه আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সঠিক কথা হচ্ছে তারা হল খ্রিস্টানদের একটি দল। (তাফসীরে সা‘দী ৩২পৃঃ)
এ আয়াতকে কেন্দ্র করে অনেকে বলে থাকে, সকল ধর্ম সমান। অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা জরুরী নয়, যে কোন ধর্মের অনুসরণ করলেই চলবে। এ দর্শন বিভ্রান্তিকর দর্শন। বরং সঠিক কথা হল তা-ই যা পূর্বে উল্লেখ করেছি- নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগমনের পর সকল ধর্ম বাতিল হয়ে গেছে। ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের অনুসরণ করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ ج وَهُوَ فِي الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِيْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৮৫)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুখের দাবি নয়, বরং প্রকৃত অবস্থা লক্ষণীয়। ইয়াহূদ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা যতই দাবি করুক যে তারা সঠিক ধর্মের অনুসারী তা কখনই সঠিক নয়। কারণ ইসলামের আগমনের পর সকল ধর্ম বাতিল।
২. যারা ইসলামে বিশ্বাসী হবে ও সৎ আমল করবে তাদের পরকালে রয়েছে মহাপুরষ্কার এবং তাদের কোন ভয়ও থাকবে না, কোন চিন্তাও থাকবে না।
যারা উম্মাতে মুহাম্মাদীর সৎ লোক, আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনয়ন করতঃ শরীয়ত মোতাবেক আমল করে এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাসূল হিসেবে প্রেরণের পূর্বে যে সকল ইয়াহূদী-খ্রিস্টান ও সাবিয়ী তাদের স্বীয় ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল ও তাওহীদভিত্তিক ঈমান এনেছিল, আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসী ছিল এবং আল্লাহ তা‘আলা যে সকল আমল পছন্দ করেন সে অনুপাতে আমল করেছিল, তাদের সকলকে আল্লাহ তা‘আলা নিজের পক্ষ থেকে প্রতিদানস্বরূপ জান্নাত প্রদান করবেন। তাদের কোন ভয় ও চিন্তা থাকবে না। কিন্তু নাবী (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাবী হিসেবে আগমনের পর কোন জাতির ধর্ম আল্লাহ তা‘আলা কবূল করবেন না। কেবল ইসলাম ছাড়া যা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়ে এসেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللّٰهِ الْإِسْلَامُ)
“আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দীন (জীবন ব্যবস্থা) কেবল ইসলাম।”(সূরা আল-ইমরান ৩: ১৯)
صابئين ‘সাবিয়ী’দ্বারা কাদের বুঝানো হয়েছে এ সম্পর্কে কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়।
কেউ কেউ বলেন: তারা ইয়াহূদীও নয়, খ্রিস্টানও নয়। অন্য একদল বলেন: তারা হল, যাদের কাছে নাবীর দাওয়াত পৌঁছেনি। আরেক দল বলেন: তারা কোন এক ধর্মের অনুসারী। তাদের কোন আমল, কোন কিতাব, কোন নাবী ছিল না কেবল এ কথা বলা ছাড়া যে, لا إله إلا اللّٰه আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সঠিক কথা হচ্ছে তারা হল খ্রিস্টানদের একটি দল। (তাফসীরে সা‘দী ৩২পৃঃ)
এ আয়াতকে কেন্দ্র করে অনেকে বলে থাকে, সকল ধর্ম সমান। অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা জরুরী নয়, যে কোন ধর্মের অনুসরণ করলেই চলবে। এ দর্শন বিভ্রান্তিকর দর্শন। বরং সঠিক কথা হল তা-ই যা পূর্বে উল্লেখ করেছি- নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগমনের পর সকল ধর্ম বাতিল হয়ে গেছে। ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের অনুসরণ করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ ج وَهُوَ فِي الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِيْنَ)
“আর যে কেউ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা তালাশ করবে তার কাছ থেকে কিছুই কবূল করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৮৫)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুখের দাবি নয়, বরং প্রকৃত অবস্থা লক্ষণীয়। ইয়াহূদ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা যতই দাবি করুক যে তারা সঠিক ধর্মের অনুসারী তা কখনই সঠিক নয়। কারণ ইসলামের আগমনের পর সকল ধর্ম বাতিল।
২. যারা ইসলামে বিশ্বাসী হবে ও সৎ আমল করবে তাদের পরকালে রয়েছে মহাপুরষ্কার এবং তাদের কোন ভয়ও থাকবে না, কোন চিন্তাও থাকবে না।
2:63
وَ اِذۡ اَخَذۡنَا
مِیۡثَاقَکُمۡ وَ رَفَعۡنَا فَوۡقَکُمُ الطُّوۡرَ ؕ خُذُوۡا مَاۤ اٰتَیۡنٰکُمۡ
بِقُوَّۃٍ وَّ اذۡکُرُوۡا مَا فِیۡہِ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۶۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৩ নং আয়াতের তাফসীর:
مِيْثَاقٌ বা অঙ্গীকার দ্বারা উদ্দেশ্য হল একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা, নিকটাত্মীয় ও পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা, সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَ بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَ لَا تَعْبُدُوْنَ اِلَّا اللہَﺤ وَبِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّذِی الْقُرْبٰی وَالْیَتٰمٰی وَالْمَسٰکِیْنِ وَقُوْلُوْا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَّاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّکٰوةَﺚ ثُمَّ تَوَلَّیْتُمْ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْکُمْ وَاَنْتُمْ مُّعْرِضُوْنَﮢوَاِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَکُمْ لَا تَسْفِکُوْنَ دِمَا۬ءَکُمْ وَلَا تُخْرِجُوْنَ اَنْفُسَکُمْ مِّنْ دِیَارِکُمْ ثُمَّ اَقْرَرْتُمْ وَاَنْتُمْ تَشْھَدُوْنَ)
“আর যখন আমি বানী ইসরাঈল হতে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো ইবাদত করবে না, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে ও আত্মীয়দের, অনাথদের ও মিসকিনদের সঙ্গেও (সদ্ব্যবহার করবে), আর তোমরা মানুষের সাথে উত্তমভাবে কথা বলবে এবং সালাত কায়িম করবে ও যাকাত প্রদান করবে; তৎপর তোমাদের মধ্য হতে অল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা সকলেই বিমুখ হয়েছিলে যেহেতু তোমরা অগ্রাহ্যকারী ছিলে। এবং আমি যখন তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করছিলাম যে, পরস্পর রক্তপাত করবে না এবং স্বীয় বাসস্থান হতে আপন ব্যক্তিদেরকে বহিস্কৃত করবে না; তৎপর তোমরা স্বীকৃতি দিয়েছিলে এবং তোমরাই ওর সাক্ষী ছিলে।”(বাকারাহ ২:৮৩-৮৪)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পাহাড় তুলে ধরলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذْ نَتَقْنَا الْجَبَلَ فَوْقَھُمْ کَاَنَّھ۫ ظُلَّةٌ وَّظَنُّوْٓا اَنَّھ۫ وَاقِعٌۭ بِھِمْﺆ خُذُوْا مَآ اٰتَیْنٰکُمْ بِقُوَّةٍ وَّاذْکُرُوْا مَا فِیْھِ لَعَلَّکُمْ تَتَّقُوْنَ)
“স্মরণ কর, আমি পর্বতকে তাদের ঊর্ধ্বে উত্তোলন করি ছায়া সদৃশ। তারা মনে করল যে, সেটা তাদের ওপর পড়ে যাবে। বললাম, ‘আমি যা দিলাম তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং তাতে যা আছে তা স্মরণ কর, যাতে তোমরা তাক্ওয়ার অধিকারী হও।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৭১)
তারা আল্লাহ তা‘আলার অঙ্গীকার সঠিকভাবে পালন না করায় আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ভীতিপ্রদর্শন মূলক তাদের মাথার ওপর পর্বত তুলে ধরে তাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা সকল জাতির কাছ থেকে একমাত্র তাঁর ইবাদত করার অঙ্গীকার নিয়েছেন।
২. আমাদের উচিত নাবী ইসরাঈলের মত কিতাবকে ছেড়ে না দিয়ে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা, ফলে ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তি লাভ করি।
مِيْثَاقٌ বা অঙ্গীকার দ্বারা উদ্দেশ্য হল একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করা, নিকটাত্মীয় ও পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা, সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَ بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَ لَا تَعْبُدُوْنَ اِلَّا اللہَﺤ وَبِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّذِی الْقُرْبٰی وَالْیَتٰمٰی وَالْمَسٰکِیْنِ وَقُوْلُوْا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَّاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّکٰوةَﺚ ثُمَّ تَوَلَّیْتُمْ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْکُمْ وَاَنْتُمْ مُّعْرِضُوْنَﮢوَاِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَکُمْ لَا تَسْفِکُوْنَ دِمَا۬ءَکُمْ وَلَا تُخْرِجُوْنَ اَنْفُسَکُمْ مِّنْ دِیَارِکُمْ ثُمَّ اَقْرَرْتُمْ وَاَنْتُمْ تَشْھَدُوْنَ)
“আর যখন আমি বানী ইসরাঈল হতে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো ইবাদত করবে না, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে ও আত্মীয়দের, অনাথদের ও মিসকিনদের সঙ্গেও (সদ্ব্যবহার করবে), আর তোমরা মানুষের সাথে উত্তমভাবে কথা বলবে এবং সালাত কায়িম করবে ও যাকাত প্রদান করবে; তৎপর তোমাদের মধ্য হতে অল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা সকলেই বিমুখ হয়েছিলে যেহেতু তোমরা অগ্রাহ্যকারী ছিলে। এবং আমি যখন তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করছিলাম যে, পরস্পর রক্তপাত করবে না এবং স্বীয় বাসস্থান হতে আপন ব্যক্তিদেরকে বহিস্কৃত করবে না; তৎপর তোমরা স্বীকৃতি দিয়েছিলে এবং তোমরাই ওর সাক্ষী ছিলে।”(বাকারাহ ২:৮৩-৮৪)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পাহাড় তুলে ধরলেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاِذْ نَتَقْنَا الْجَبَلَ فَوْقَھُمْ کَاَنَّھ۫ ظُلَّةٌ وَّظَنُّوْٓا اَنَّھ۫ وَاقِعٌۭ بِھِمْﺆ خُذُوْا مَآ اٰتَیْنٰکُمْ بِقُوَّةٍ وَّاذْکُرُوْا مَا فِیْھِ لَعَلَّکُمْ تَتَّقُوْنَ)
“স্মরণ কর, আমি পর্বতকে তাদের ঊর্ধ্বে উত্তোলন করি ছায়া সদৃশ। তারা মনে করল যে, সেটা তাদের ওপর পড়ে যাবে। বললাম, ‘আমি যা দিলাম তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং তাতে যা আছে তা স্মরণ কর, যাতে তোমরা তাক্ওয়ার অধিকারী হও।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৭১)
তারা আল্লাহ তা‘আলার অঙ্গীকার সঠিকভাবে পালন না করায় আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ভীতিপ্রদর্শন মূলক তাদের মাথার ওপর পর্বত তুলে ধরে তাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা সকল জাতির কাছ থেকে একমাত্র তাঁর ইবাদত করার অঙ্গীকার নিয়েছেন।
২. আমাদের উচিত নাবী ইসরাঈলের মত কিতাবকে ছেড়ে না দিয়ে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা, ফলে ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তি লাভ করি।
2:64
ثُمَّ تَوَلَّیۡتُمۡ
مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ ۚ فَلَوۡ لَا فَضۡلُ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ وَ رَحۡمَتُہٗ
لَکُنۡتُمۡ مِّنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۶۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৪-৬৬ নং আয়াতের তাফসীর:
শনিবারের অবাধ্যতার ঘটনার কথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ইয়াহূদীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্মরণ করে দিচ্ছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সূরা আ‘রাফে বিস্তারিতভাবে বলেন:
(وَاسْئَلْھُمْ عَنِ الْقَرْیَةِ الَّتِیْ کَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِﺭ اِذْ یَعْدُوْنَ فِی السَّبْتِ اِذْ تَاْتِیْھِمْ حِیْتَانُھُمْ یَوْمَ سَبْتِھِمْ شُرَّعًا وَّیَوْمَ لَا یَسْبِتُوْنَﺫ لَا تَاْتِیْھِمْﹱ کَذٰلِکَﹱ نَبْلُوْھُمْ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯲوَاِذْ قَالَتْ اُمَّةٌ مِّنْھُمْ لِمَ تَعِظُوْنَ قَوْمَاﺫ اۨللہُ مُھْلِکُھُمْ اَوْ مُعَذِّبُھُمْ عَذَابًا شَدِیْدًاﺚ قَالُوْا مَعْذِرَةً اِلٰی رَبِّکُمْ وَلَعَلَّھُمْ یَتَّقُوْنَﯳفَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُکِّرُوْا بِھ۪ٓ اَنْجَیْنَا الَّذِیْنَ یَنْھَوْنَ عَنِ السُّوْ۬ئِ وَاَخَذْنَا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا بِعَذَابٍۭ بَئِیْسٍۭ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯴفَلَمَّا عَتَوْا عَمَّا نُھُوْا عَنْھُ قُلْنَا لَھُمْ کُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِیْنَ )
“তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত, শনিবার উদ্যাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদ্যাপন করত না সেদিন তারা তাদের নিকট আসত না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্যত্যাগ করত। স্মরণ কর, তাদের এক দল বলেছিল, ‘আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে উপদেশ দাও কেন?’তারা বলেছিল, ‘তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এজন্য’, যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎকার্য হতে নিবৃত্ত হত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্যসহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ‘ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৬৩-১৬৬)
ঐ লোকগুলো আইলা নামক গ্রামের অধিবাসী ছিল। শনিবার দিনের সম্মান করা তাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। তাদের জন্য ঐদিনে শিকার করা নিষিদ্ধ ছিল। আর আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে সেই দিনেই নদীর ধারে মাছ খুব বেশি আসত, তাই তারা একটা কৌশল অবলম্বন করত। ঐ অপরাধের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের আকৃতি বদলে দেন।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যুবকরা বানর হয়েছিল এবং বুড়োরা শূকর হয়েছিল।
কাতাদাহ (রাঃ) বলেন: নারী-পুরুষ সবাই লেজযুক্ত বানর হয়ে গিয়েছিল। আকাশ থেকে ঘোষণা আসে: “তোমরা সব বানর হয়ে যাও।” যারা তাদেরকে ঐ কৌশল অবলম্বন করতে নিষেধ করেছিল, তারা তখন তাদের নিকট এসে বলতে থাকে: আমরা কি তোমাদেরকে পূর্বেই নিষেধ করিনি? তখন তারা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: অল্প সময়ের মধ্যে তারা সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি। দুনিয়ায় কোন আকার পরিবর্তিত গোত্র তিন দিনের বেশি বাঁচেনি। এরাও তিন দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। নাক ঘষতে ঘষতে তারা সব মারা যায়। পানাহার ও বংশ বৃদ্ধি সবই বিদায় নেয়। যে বানরগুলো এখানো আছে এরা তো জন্তু এবং এরা এভাবেই সৃষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যা চান এবং যেভাবে চান তাই সৃষ্টি করেন এবং সেভাবেই সৃষ্টি করেন।
ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা: ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: শুক্রবারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা তাদের ওপর ফরয করা হয়, কিন্তু তারা শুক্রবারের পরবর্তীতে শনিবারকে পছন্দ করে। ঐ দিনের সম্মানার্থে তাদের জন্য ঐ দিনে মৎস শিকার হারাম করে দেয়া হয়। অপরদিকে আল্লাহ তা‘আলার পরীক্ষা হিসেবে ঐদিনই সমস্ত মাছ নদীর ধারে চলে আসত এবং লাফ-ঝাঁপ দিত। অন্য দিনে ওগুলো দেখাই যেত না। কিছু দিন পর্যন্ত ঐসব লোক নীরবই থাকে এবং শিকার করা হতে বিরত থাকে। একদিন ওদের মধ্যে একটি লোক এ ফন্দি বের করে শনিবার মাছ ধরে জালের মধ্যে আটকে দেয় এবং ঘাটের কোন জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন গিয়ে ওগুলো বের করে নেয় এবং বাড়িতে এনে রেখে দেয়। মাছের সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, “আমি তো আজ (রবিবার) মাছ শিকার করেছি। অবশেষে এ রহস্য প্রকাশ হয়ে যায়। লোকেরাও ঐ কৌশল পছন্দ করে এবং ঐভাবে তারা মাছ শিকার করতে থাকে। এর এক পর্যায়ে দেখা গেল যে, ঐ অবাধ্য লোকেদের নারী-পুরুষ সবাই নিকৃষ্ট বা লাঞ্ছিত বানর হয়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আর আল্লাহ তা‘আলা এ ঘটনাকে ঐ সময়কার ও তৎপরবর্তী সকল লোকেদের জন্য উপদেশস্বরূপ বর্ণনা করেছেন, যাতে মানুষ জেনে-শুনে আল্লাহ তা‘আলার বিধান অমান্য না করে এবং হালাল ও হারামকে পরিবর্তন করার জন্য কোন রকম কৌশল ও ফন্দির পথ অবলম্বন না করে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদীরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে হালালরূপে গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীতে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাক। (ইরওয়াউল গালীল হা: ১৫৩৫)
সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকা উচিত যাতে মাযহাব বা দলের মতের সাথে না মিলের কারণে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন বিধানকে পরিবর্তন করার অপপ্রয়াস না চালাই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদীরা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অমান্য করার অপকৌশল গ্রহণ করার কারণে তাদের ওপর আপতিত শাস্তির কথা জানলাম।
২. শরীয়তের বিধানকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা ইয়াহূদীদের কাজ।
৩. বিজ্ঞানী ডারউনের অভিমত (বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি) সঠিক নয়, কারণ এ আয়াত থেকে জানতে পারলাম তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি, দুনিয়ায় তারা তিন দিনের বেশি বাঁচেনি।
শনিবারের অবাধ্যতার ঘটনার কথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ইয়াহূদীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্মরণ করে দিচ্ছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সূরা আ‘রাফে বিস্তারিতভাবে বলেন:
(وَاسْئَلْھُمْ عَنِ الْقَرْیَةِ الَّتِیْ کَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِﺭ اِذْ یَعْدُوْنَ فِی السَّبْتِ اِذْ تَاْتِیْھِمْ حِیْتَانُھُمْ یَوْمَ سَبْتِھِمْ شُرَّعًا وَّیَوْمَ لَا یَسْبِتُوْنَﺫ لَا تَاْتِیْھِمْﹱ کَذٰلِکَﹱ نَبْلُوْھُمْ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯲوَاِذْ قَالَتْ اُمَّةٌ مِّنْھُمْ لِمَ تَعِظُوْنَ قَوْمَاﺫ اۨللہُ مُھْلِکُھُمْ اَوْ مُعَذِّبُھُمْ عَذَابًا شَدِیْدًاﺚ قَالُوْا مَعْذِرَةً اِلٰی رَبِّکُمْ وَلَعَلَّھُمْ یَتَّقُوْنَﯳفَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُکِّرُوْا بِھ۪ٓ اَنْجَیْنَا الَّذِیْنَ یَنْھَوْنَ عَنِ السُّوْ۬ئِ وَاَخَذْنَا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا بِعَذَابٍۭ بَئِیْسٍۭ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯴفَلَمَّا عَتَوْا عَمَّا نُھُوْا عَنْھُ قُلْنَا لَھُمْ کُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِیْنَ )
“তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত, শনিবার উদ্যাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদ্যাপন করত না সেদিন তারা তাদের নিকট আসত না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্যত্যাগ করত। স্মরণ কর, তাদের এক দল বলেছিল, ‘আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে উপদেশ দাও কেন?’তারা বলেছিল, ‘তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এজন্য’, যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎকার্য হতে নিবৃত্ত হত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্যসহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ‘ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৬৩-১৬৬)
ঐ লোকগুলো আইলা নামক গ্রামের অধিবাসী ছিল। শনিবার দিনের সম্মান করা তাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। তাদের জন্য ঐদিনে শিকার করা নিষিদ্ধ ছিল। আর আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে সেই দিনেই নদীর ধারে মাছ খুব বেশি আসত, তাই তারা একটা কৌশল অবলম্বন করত। ঐ অপরাধের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের আকৃতি বদলে দেন।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যুবকরা বানর হয়েছিল এবং বুড়োরা শূকর হয়েছিল।
কাতাদাহ (রাঃ) বলেন: নারী-পুরুষ সবাই লেজযুক্ত বানর হয়ে গিয়েছিল। আকাশ থেকে ঘোষণা আসে: “তোমরা সব বানর হয়ে যাও।” যারা তাদেরকে ঐ কৌশল অবলম্বন করতে নিষেধ করেছিল, তারা তখন তাদের নিকট এসে বলতে থাকে: আমরা কি তোমাদেরকে পূর্বেই নিষেধ করিনি? তখন তারা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: অল্প সময়ের মধ্যে তারা সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি। দুনিয়ায় কোন আকার পরিবর্তিত গোত্র তিন দিনের বেশি বাঁচেনি। এরাও তিন দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। নাক ঘষতে ঘষতে তারা সব মারা যায়। পানাহার ও বংশ বৃদ্ধি সবই বিদায় নেয়। যে বানরগুলো এখানো আছে এরা তো জন্তু এবং এরা এভাবেই সৃষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যা চান এবং যেভাবে চান তাই সৃষ্টি করেন এবং সেভাবেই সৃষ্টি করেন।
ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা: ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: শুক্রবারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা তাদের ওপর ফরয করা হয়, কিন্তু তারা শুক্রবারের পরবর্তীতে শনিবারকে পছন্দ করে। ঐ দিনের সম্মানার্থে তাদের জন্য ঐ দিনে মৎস শিকার হারাম করে দেয়া হয়। অপরদিকে আল্লাহ তা‘আলার পরীক্ষা হিসেবে ঐদিনই সমস্ত মাছ নদীর ধারে চলে আসত এবং লাফ-ঝাঁপ দিত। অন্য দিনে ওগুলো দেখাই যেত না। কিছু দিন পর্যন্ত ঐসব লোক নীরবই থাকে এবং শিকার করা হতে বিরত থাকে। একদিন ওদের মধ্যে একটি লোক এ ফন্দি বের করে শনিবার মাছ ধরে জালের মধ্যে আটকে দেয় এবং ঘাটের কোন জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন গিয়ে ওগুলো বের করে নেয় এবং বাড়িতে এনে রেখে দেয়। মাছের সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, “আমি তো আজ (রবিবার) মাছ শিকার করেছি। অবশেষে এ রহস্য প্রকাশ হয়ে যায়। লোকেরাও ঐ কৌশল পছন্দ করে এবং ঐভাবে তারা মাছ শিকার করতে থাকে। এর এক পর্যায়ে দেখা গেল যে, ঐ অবাধ্য লোকেদের নারী-পুরুষ সবাই নিকৃষ্ট বা লাঞ্ছিত বানর হয়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আর আল্লাহ তা‘আলা এ ঘটনাকে ঐ সময়কার ও তৎপরবর্তী সকল লোকেদের জন্য উপদেশস্বরূপ বর্ণনা করেছেন, যাতে মানুষ জেনে-শুনে আল্লাহ তা‘আলার বিধান অমান্য না করে এবং হালাল ও হারামকে পরিবর্তন করার জন্য কোন রকম কৌশল ও ফন্দির পথ অবলম্বন না করে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদীরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে হালালরূপে গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীতে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাক। (ইরওয়াউল গালীল হা: ১৫৩৫)
সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকা উচিত যাতে মাযহাব বা দলের মতের সাথে না মিলের কারণে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন বিধানকে পরিবর্তন করার অপপ্রয়াস না চালাই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদীরা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অমান্য করার অপকৌশল গ্রহণ করার কারণে তাদের ওপর আপতিত শাস্তির কথা জানলাম।
২. শরীয়তের বিধানকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা ইয়াহূদীদের কাজ।
৩. বিজ্ঞানী ডারউনের অভিমত (বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি) সঠিক নয়, কারণ এ আয়াত থেকে জানতে পারলাম তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি, দুনিয়ায় তারা তিন দিনের বেশি বাঁচেনি।
2:65
وَ لَقَدۡ عَلِمۡتُمُ
الَّذِیۡنَ اعۡتَدَوۡا مِنۡکُمۡ فِی السَّبۡتِ فَقُلۡنَا لَہُمۡ کُوۡنُوۡا
قِرَدَۃً خٰسِئِیۡنَ ﴿ۚ۶۵﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৪-৬৬ নং আয়াতের তাফসীর:
শনিবারের অবাধ্যতার ঘটনার কথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ইয়াহূদীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্মরণ করে দিচ্ছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সূরা আ‘রাফে বিস্তারিতভাবে বলেন:
(وَاسْئَلْھُمْ عَنِ الْقَرْیَةِ الَّتِیْ کَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِﺭ اِذْ یَعْدُوْنَ فِی السَّبْتِ اِذْ تَاْتِیْھِمْ حِیْتَانُھُمْ یَوْمَ سَبْتِھِمْ شُرَّعًا وَّیَوْمَ لَا یَسْبِتُوْنَﺫ لَا تَاْتِیْھِمْﹱ کَذٰلِکَﹱ نَبْلُوْھُمْ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯲوَاِذْ قَالَتْ اُمَّةٌ مِّنْھُمْ لِمَ تَعِظُوْنَ قَوْمَاﺫ اۨللہُ مُھْلِکُھُمْ اَوْ مُعَذِّبُھُمْ عَذَابًا شَدِیْدًاﺚ قَالُوْا مَعْذِرَةً اِلٰی رَبِّکُمْ وَلَعَلَّھُمْ یَتَّقُوْنَﯳفَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُکِّرُوْا بِھ۪ٓ اَنْجَیْنَا الَّذِیْنَ یَنْھَوْنَ عَنِ السُّوْ۬ئِ وَاَخَذْنَا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا بِعَذَابٍۭ بَئِیْسٍۭ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯴفَلَمَّا عَتَوْا عَمَّا نُھُوْا عَنْھُ قُلْنَا لَھُمْ کُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِیْنَ )
“তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত, শনিবার উদ্যাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদ্যাপন করত না সেদিন তারা তাদের নিকট আসত না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্যত্যাগ করত। স্মরণ কর, তাদের এক দল বলেছিল, ‘আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে উপদেশ দাও কেন?’তারা বলেছিল, ‘তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এজন্য’, যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎকার্য হতে নিবৃত্ত হত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্যসহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ‘ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৬৩-১৬৬)
ঐ লোকগুলো আইলা নামক গ্রামের অধিবাসী ছিল। শনিবার দিনের সম্মান করা তাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। তাদের জন্য ঐদিনে শিকার করা নিষিদ্ধ ছিল। আর আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে সেই দিনেই নদীর ধারে মাছ খুব বেশি আসত, তাই তারা একটা কৌশল অবলম্বন করত। ঐ অপরাধের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের আকৃতি বদলে দেন।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যুবকরা বানর হয়েছিল এবং বুড়োরা শূকর হয়েছিল।
কাতাদাহ (রাঃ) বলেন: নারী-পুরুষ সবাই লেজযুক্ত বানর হয়ে গিয়েছিল। আকাশ থেকে ঘোষণা আসে: “তোমরা সব বানর হয়ে যাও।” যারা তাদেরকে ঐ কৌশল অবলম্বন করতে নিষেধ করেছিল, তারা তখন তাদের নিকট এসে বলতে থাকে: আমরা কি তোমাদেরকে পূর্বেই নিষেধ করিনি? তখন তারা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: অল্প সময়ের মধ্যে তারা সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি। দুনিয়ায় কোন আকার পরিবর্তিত গোত্র তিন দিনের বেশি বাঁচেনি। এরাও তিন দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। নাক ঘষতে ঘষতে তারা সব মারা যায়। পানাহার ও বংশ বৃদ্ধি সবই বিদায় নেয়। যে বানরগুলো এখানো আছে এরা তো জন্তু এবং এরা এভাবেই সৃষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যা চান এবং যেভাবে চান তাই সৃষ্টি করেন এবং সেভাবেই সৃষ্টি করেন।
ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা: ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: শুক্রবারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা তাদের ওপর ফরয করা হয়, কিন্তু তারা শুক্রবারের পরবর্তীতে শনিবারকে পছন্দ করে। ঐ দিনের সম্মানার্থে তাদের জন্য ঐ দিনে মৎস শিকার হারাম করে দেয়া হয়। অপরদিকে আল্লাহ তা‘আলার পরীক্ষা হিসেবে ঐদিনই সমস্ত মাছ নদীর ধারে চলে আসত এবং লাফ-ঝাঁপ দিত। অন্য দিনে ওগুলো দেখাই যেত না। কিছু দিন পর্যন্ত ঐসব লোক নীরবই থাকে এবং শিকার করা হতে বিরত থাকে। একদিন ওদের মধ্যে একটি লোক এ ফন্দি বের করে শনিবার মাছ ধরে জালের মধ্যে আটকে দেয় এবং ঘাটের কোন জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন গিয়ে ওগুলো বের করে নেয় এবং বাড়িতে এনে রেখে দেয়। মাছের সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, “আমি তো আজ (রবিবার) মাছ শিকার করেছি। অবশেষে এ রহস্য প্রকাশ হয়ে যায়। লোকেরাও ঐ কৌশল পছন্দ করে এবং ঐভাবে তারা মাছ শিকার করতে থাকে। এর এক পর্যায়ে দেখা গেল যে, ঐ অবাধ্য লোকেদের নারী-পুরুষ সবাই নিকৃষ্ট বা লাঞ্ছিত বানর হয়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আর আল্লাহ তা‘আলা এ ঘটনাকে ঐ সময়কার ও তৎপরবর্তী সকল লোকেদের জন্য উপদেশস্বরূপ বর্ণনা করেছেন, যাতে মানুষ জেনে-শুনে আল্লাহ তা‘আলার বিধান অমান্য না করে এবং হালাল ও হারামকে পরিবর্তন করার জন্য কোন রকম কৌশল ও ফন্দির পথ অবলম্বন না করে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদীরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে হালালরূপে গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীতে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাক। (ইরওয়াউল গালীল হা: ১৫৩৫)
সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকা উচিত যাতে মাযহাব বা দলের মতের সাথে না মিলের কারণে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন বিধানকে পরিবর্তন করার অপপ্রয়াস না চালাই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদীরা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অমান্য করার অপকৌশল গ্রহণ করার কারণে তাদের ওপর আপতিত শাস্তির কথা জানলাম।
২. শরীয়তের বিধানকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা ইয়াহূদীদের কাজ।
৩. বিজ্ঞানী ডারউনের অভিমত (বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি) সঠিক নয়, কারণ এ আয়াত থেকে জানতে পারলাম তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি, দুনিয়ায় তারা তিন দিনের বেশি বাঁচেনি।
শনিবারের অবাধ্যতার ঘটনার কথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ইয়াহূদীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্মরণ করে দিচ্ছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সূরা আ‘রাফে বিস্তারিতভাবে বলেন:
(وَاسْئَلْھُمْ عَنِ الْقَرْیَةِ الَّتِیْ کَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِﺭ اِذْ یَعْدُوْنَ فِی السَّبْتِ اِذْ تَاْتِیْھِمْ حِیْتَانُھُمْ یَوْمَ سَبْتِھِمْ شُرَّعًا وَّیَوْمَ لَا یَسْبِتُوْنَﺫ لَا تَاْتِیْھِمْﹱ کَذٰلِکَﹱ نَبْلُوْھُمْ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯲوَاِذْ قَالَتْ اُمَّةٌ مِّنْھُمْ لِمَ تَعِظُوْنَ قَوْمَاﺫ اۨللہُ مُھْلِکُھُمْ اَوْ مُعَذِّبُھُمْ عَذَابًا شَدِیْدًاﺚ قَالُوْا مَعْذِرَةً اِلٰی رَبِّکُمْ وَلَعَلَّھُمْ یَتَّقُوْنَﯳفَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُکِّرُوْا بِھ۪ٓ اَنْجَیْنَا الَّذِیْنَ یَنْھَوْنَ عَنِ السُّوْ۬ئِ وَاَخَذْنَا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا بِعَذَابٍۭ بَئِیْسٍۭ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯴفَلَمَّا عَتَوْا عَمَّا نُھُوْا عَنْھُ قُلْنَا لَھُمْ کُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِیْنَ )
“তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত, শনিবার উদ্যাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদ্যাপন করত না সেদিন তারা তাদের নিকট আসত না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্যত্যাগ করত। স্মরণ কর, তাদের এক দল বলেছিল, ‘আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে উপদেশ দাও কেন?’তারা বলেছিল, ‘তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এজন্য’, যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎকার্য হতে নিবৃত্ত হত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্যসহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ‘ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৬৩-১৬৬)
ঐ লোকগুলো আইলা নামক গ্রামের অধিবাসী ছিল। শনিবার দিনের সম্মান করা তাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। তাদের জন্য ঐদিনে শিকার করা নিষিদ্ধ ছিল। আর আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে সেই দিনেই নদীর ধারে মাছ খুব বেশি আসত, তাই তারা একটা কৌশল অবলম্বন করত। ঐ অপরাধের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের আকৃতি বদলে দেন।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যুবকরা বানর হয়েছিল এবং বুড়োরা শূকর হয়েছিল।
কাতাদাহ (রাঃ) বলেন: নারী-পুরুষ সবাই লেজযুক্ত বানর হয়ে গিয়েছিল। আকাশ থেকে ঘোষণা আসে: “তোমরা সব বানর হয়ে যাও।” যারা তাদেরকে ঐ কৌশল অবলম্বন করতে নিষেধ করেছিল, তারা তখন তাদের নিকট এসে বলতে থাকে: আমরা কি তোমাদেরকে পূর্বেই নিষেধ করিনি? তখন তারা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: অল্প সময়ের মধ্যে তারা সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি। দুনিয়ায় কোন আকার পরিবর্তিত গোত্র তিন দিনের বেশি বাঁচেনি। এরাও তিন দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। নাক ঘষতে ঘষতে তারা সব মারা যায়। পানাহার ও বংশ বৃদ্ধি সবই বিদায় নেয়। যে বানরগুলো এখানো আছে এরা তো জন্তু এবং এরা এভাবেই সৃষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যা চান এবং যেভাবে চান তাই সৃষ্টি করেন এবং সেভাবেই সৃষ্টি করেন।
ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা: ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: শুক্রবারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা তাদের ওপর ফরয করা হয়, কিন্তু তারা শুক্রবারের পরবর্তীতে শনিবারকে পছন্দ করে। ঐ দিনের সম্মানার্থে তাদের জন্য ঐ দিনে মৎস শিকার হারাম করে দেয়া হয়। অপরদিকে আল্লাহ তা‘আলার পরীক্ষা হিসেবে ঐদিনই সমস্ত মাছ নদীর ধারে চলে আসত এবং লাফ-ঝাঁপ দিত। অন্য দিনে ওগুলো দেখাই যেত না। কিছু দিন পর্যন্ত ঐসব লোক নীরবই থাকে এবং শিকার করা হতে বিরত থাকে। একদিন ওদের মধ্যে একটি লোক এ ফন্দি বের করে শনিবার মাছ ধরে জালের মধ্যে আটকে দেয় এবং ঘাটের কোন জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন গিয়ে ওগুলো বের করে নেয় এবং বাড়িতে এনে রেখে দেয়। মাছের সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, “আমি তো আজ (রবিবার) মাছ শিকার করেছি। অবশেষে এ রহস্য প্রকাশ হয়ে যায়। লোকেরাও ঐ কৌশল পছন্দ করে এবং ঐভাবে তারা মাছ শিকার করতে থাকে। এর এক পর্যায়ে দেখা গেল যে, ঐ অবাধ্য লোকেদের নারী-পুরুষ সবাই নিকৃষ্ট বা লাঞ্ছিত বানর হয়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আর আল্লাহ তা‘আলা এ ঘটনাকে ঐ সময়কার ও তৎপরবর্তী সকল লোকেদের জন্য উপদেশস্বরূপ বর্ণনা করেছেন, যাতে মানুষ জেনে-শুনে আল্লাহ তা‘আলার বিধান অমান্য না করে এবং হালাল ও হারামকে পরিবর্তন করার জন্য কোন রকম কৌশল ও ফন্দির পথ অবলম্বন না করে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদীরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে হালালরূপে গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীতে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাক। (ইরওয়াউল গালীল হা: ১৫৩৫)
সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকা উচিত যাতে মাযহাব বা দলের মতের সাথে না মিলের কারণে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন বিধানকে পরিবর্তন করার অপপ্রয়াস না চালাই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদীরা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অমান্য করার অপকৌশল গ্রহণ করার কারণে তাদের ওপর আপতিত শাস্তির কথা জানলাম।
২. শরীয়তের বিধানকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা ইয়াহূদীদের কাজ।
৩. বিজ্ঞানী ডারউনের অভিমত (বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি) সঠিক নয়, কারণ এ আয়াত থেকে জানতে পারলাম তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি, দুনিয়ায় তারা তিন দিনের বেশি বাঁচেনি।
2:66
فَجَعَلۡنٰہَا نَکَالًا
لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡہَا وَ مَا خَلۡفَہَا وَ مَوۡعِظَۃً لِّلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۶۶﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৪-৬৬ নং আয়াতের তাফসীর:
শনিবারের অবাধ্যতার ঘটনার কথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ইয়াহূদীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্মরণ করে দিচ্ছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সূরা আ‘রাফে বিস্তারিতভাবে বলেন:
(وَاسْئَلْھُمْ عَنِ الْقَرْیَةِ الَّتِیْ کَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِﺭ اِذْ یَعْدُوْنَ فِی السَّبْتِ اِذْ تَاْتِیْھِمْ حِیْتَانُھُمْ یَوْمَ سَبْتِھِمْ شُرَّعًا وَّیَوْمَ لَا یَسْبِتُوْنَﺫ لَا تَاْتِیْھِمْﹱ کَذٰلِکَﹱ نَبْلُوْھُمْ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯲوَاِذْ قَالَتْ اُمَّةٌ مِّنْھُمْ لِمَ تَعِظُوْنَ قَوْمَاﺫ اۨللہُ مُھْلِکُھُمْ اَوْ مُعَذِّبُھُمْ عَذَابًا شَدِیْدًاﺚ قَالُوْا مَعْذِرَةً اِلٰی رَبِّکُمْ وَلَعَلَّھُمْ یَتَّقُوْنَﯳفَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُکِّرُوْا بِھ۪ٓ اَنْجَیْنَا الَّذِیْنَ یَنْھَوْنَ عَنِ السُّوْ۬ئِ وَاَخَذْنَا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا بِعَذَابٍۭ بَئِیْسٍۭ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯴفَلَمَّا عَتَوْا عَمَّا نُھُوْا عَنْھُ قُلْنَا لَھُمْ کُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِیْنَ )
“তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত, শনিবার উদ্যাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদ্যাপন করত না সেদিন তারা তাদের নিকট আসত না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্যত্যাগ করত। স্মরণ কর, তাদের এক দল বলেছিল, ‘আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে উপদেশ দাও কেন?’তারা বলেছিল, ‘তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এজন্য’, যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎকার্য হতে নিবৃত্ত হত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্যসহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ‘ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৬৩-১৬৬)
ঐ লোকগুলো আইলা নামক গ্রামের অধিবাসী ছিল। শনিবার দিনের সম্মান করা তাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। তাদের জন্য ঐদিনে শিকার করা নিষিদ্ধ ছিল। আর আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে সেই দিনেই নদীর ধারে মাছ খুব বেশি আসত, তাই তারা একটা কৌশল অবলম্বন করত। ঐ অপরাধের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের আকৃতি বদলে দেন।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যুবকরা বানর হয়েছিল এবং বুড়োরা শূকর হয়েছিল।
কাতাদাহ (রাঃ) বলেন: নারী-পুরুষ সবাই লেজযুক্ত বানর হয়ে গিয়েছিল। আকাশ থেকে ঘোষণা আসে: “তোমরা সব বানর হয়ে যাও।” যারা তাদেরকে ঐ কৌশল অবলম্বন করতে নিষেধ করেছিল, তারা তখন তাদের নিকট এসে বলতে থাকে: আমরা কি তোমাদেরকে পূর্বেই নিষেধ করিনি? তখন তারা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: অল্প সময়ের মধ্যে তারা সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি। দুনিয়ায় কোন আকার পরিবর্তিত গোত্র তিন দিনের বেশি বাঁচেনি। এরাও তিন দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। নাক ঘষতে ঘষতে তারা সব মারা যায়। পানাহার ও বংশ বৃদ্ধি সবই বিদায় নেয়। যে বানরগুলো এখানো আছে এরা তো জন্তু এবং এরা এভাবেই সৃষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যা চান এবং যেভাবে চান তাই সৃষ্টি করেন এবং সেভাবেই সৃষ্টি করেন।
ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা: ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: শুক্রবারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা তাদের ওপর ফরয করা হয়, কিন্তু তারা শুক্রবারের পরবর্তীতে শনিবারকে পছন্দ করে। ঐ দিনের সম্মানার্থে তাদের জন্য ঐ দিনে মৎস শিকার হারাম করে দেয়া হয়। অপরদিকে আল্লাহ তা‘আলার পরীক্ষা হিসেবে ঐদিনই সমস্ত মাছ নদীর ধারে চলে আসত এবং লাফ-ঝাঁপ দিত। অন্য দিনে ওগুলো দেখাই যেত না। কিছু দিন পর্যন্ত ঐসব লোক নীরবই থাকে এবং শিকার করা হতে বিরত থাকে। একদিন ওদের মধ্যে একটি লোক এ ফন্দি বের করে শনিবার মাছ ধরে জালের মধ্যে আটকে দেয় এবং ঘাটের কোন জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন গিয়ে ওগুলো বের করে নেয় এবং বাড়িতে এনে রেখে দেয়। মাছের সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, “আমি তো আজ (রবিবার) মাছ শিকার করেছি। অবশেষে এ রহস্য প্রকাশ হয়ে যায়। লোকেরাও ঐ কৌশল পছন্দ করে এবং ঐভাবে তারা মাছ শিকার করতে থাকে। এর এক পর্যায়ে দেখা গেল যে, ঐ অবাধ্য লোকেদের নারী-পুরুষ সবাই নিকৃষ্ট বা লাঞ্ছিত বানর হয়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আর আল্লাহ তা‘আলা এ ঘটনাকে ঐ সময়কার ও তৎপরবর্তী সকল লোকেদের জন্য উপদেশস্বরূপ বর্ণনা করেছেন, যাতে মানুষ জেনে-শুনে আল্লাহ তা‘আলার বিধান অমান্য না করে এবং হালাল ও হারামকে পরিবর্তন করার জন্য কোন রকম কৌশল ও ফন্দির পথ অবলম্বন না করে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদীরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে হালালরূপে গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীতে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাক। (ইরওয়াউল গালীল হা: ১৫৩৫)
সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকা উচিত যাতে মাযহাব বা দলের মতের সাথে না মিলের কারণে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন বিধানকে পরিবর্তন করার অপপ্রয়াস না চালাই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদীরা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অমান্য করার অপকৌশল গ্রহণ করার কারণে তাদের ওপর আপতিত শাস্তির কথা জানলাম।
২. শরীয়তের বিধানকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা ইয়াহূদীদের কাজ।
৩. বিজ্ঞানী ডারউনের অভিমত (বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি) সঠিক নয়, কারণ এ আয়াত থেকে জানতে পারলাম তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি, দুনিয়ায় তারা তিন দিনের বেশি বাঁচেনি।
শনিবারের অবাধ্যতার ঘটনার কথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ইয়াহূদীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্মরণ করে দিচ্ছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সূরা আ‘রাফে বিস্তারিতভাবে বলেন:
(وَاسْئَلْھُمْ عَنِ الْقَرْیَةِ الَّتِیْ کَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِﺭ اِذْ یَعْدُوْنَ فِی السَّبْتِ اِذْ تَاْتِیْھِمْ حِیْتَانُھُمْ یَوْمَ سَبْتِھِمْ شُرَّعًا وَّیَوْمَ لَا یَسْبِتُوْنَﺫ لَا تَاْتِیْھِمْﹱ کَذٰلِکَﹱ نَبْلُوْھُمْ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯲوَاِذْ قَالَتْ اُمَّةٌ مِّنْھُمْ لِمَ تَعِظُوْنَ قَوْمَاﺫ اۨللہُ مُھْلِکُھُمْ اَوْ مُعَذِّبُھُمْ عَذَابًا شَدِیْدًاﺚ قَالُوْا مَعْذِرَةً اِلٰی رَبِّکُمْ وَلَعَلَّھُمْ یَتَّقُوْنَﯳفَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُکِّرُوْا بِھ۪ٓ اَنْجَیْنَا الَّذِیْنَ یَنْھَوْنَ عَنِ السُّوْ۬ئِ وَاَخَذْنَا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا بِعَذَابٍۭ بَئِیْسٍۭ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَﯴفَلَمَّا عَتَوْا عَمَّا نُھُوْا عَنْھُ قُلْنَا لَھُمْ کُوْنُوْا قِرَدَةً خَاسِئِیْنَ )
“তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত, শনিবার উদ্যাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদ্যাপন করত না সেদিন তারা তাদের নিকট আসত না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্যত্যাগ করত। স্মরণ কর, তাদের এক দল বলেছিল, ‘আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে উপদেশ দাও কেন?’তারা বলেছিল, ‘তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এজন্য’, যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎকার্য হতে নিবৃত্ত হত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্যসহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ‘ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৬৩-১৬৬)
ঐ লোকগুলো আইলা নামক গ্রামের অধিবাসী ছিল। শনিবার দিনের সম্মান করা তাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। তাদের জন্য ঐদিনে শিকার করা নিষিদ্ধ ছিল। আর আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে সেই দিনেই নদীর ধারে মাছ খুব বেশি আসত, তাই তারা একটা কৌশল অবলম্বন করত। ঐ অপরাধের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের আকৃতি বদলে দেন।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যুবকরা বানর হয়েছিল এবং বুড়োরা শূকর হয়েছিল।
কাতাদাহ (রাঃ) বলেন: নারী-পুরুষ সবাই লেজযুক্ত বানর হয়ে গিয়েছিল। আকাশ থেকে ঘোষণা আসে: “তোমরা সব বানর হয়ে যাও।” যারা তাদেরকে ঐ কৌশল অবলম্বন করতে নিষেধ করেছিল, তারা তখন তাদের নিকট এসে বলতে থাকে: আমরা কি তোমাদেরকে পূর্বেই নিষেধ করিনি? তখন তারা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: অল্প সময়ের মধ্যে তারা সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি। দুনিয়ায় কোন আকার পরিবর্তিত গোত্র তিন দিনের বেশি বাঁচেনি। এরাও তিন দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। নাক ঘষতে ঘষতে তারা সব মারা যায়। পানাহার ও বংশ বৃদ্ধি সবই বিদায় নেয়। যে বানরগুলো এখানো আছে এরা তো জন্তু এবং এরা এভাবেই সৃষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা যা চান এবং যেভাবে চান তাই সৃষ্টি করেন এবং সেভাবেই সৃষ্টি করেন।
ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা: ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: শুক্রবারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা তাদের ওপর ফরয করা হয়, কিন্তু তারা শুক্রবারের পরবর্তীতে শনিবারকে পছন্দ করে। ঐ দিনের সম্মানার্থে তাদের জন্য ঐ দিনে মৎস শিকার হারাম করে দেয়া হয়। অপরদিকে আল্লাহ তা‘আলার পরীক্ষা হিসেবে ঐদিনই সমস্ত মাছ নদীর ধারে চলে আসত এবং লাফ-ঝাঁপ দিত। অন্য দিনে ওগুলো দেখাই যেত না। কিছু দিন পর্যন্ত ঐসব লোক নীরবই থাকে এবং শিকার করা হতে বিরত থাকে। একদিন ওদের মধ্যে একটি লোক এ ফন্দি বের করে শনিবার মাছ ধরে জালের মধ্যে আটকে দেয় এবং ঘাটের কোন জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন গিয়ে ওগুলো বের করে নেয় এবং বাড়িতে এনে রেখে দেয়। মাছের সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, “আমি তো আজ (রবিবার) মাছ শিকার করেছি। অবশেষে এ রহস্য প্রকাশ হয়ে যায়। লোকেরাও ঐ কৌশল পছন্দ করে এবং ঐভাবে তারা মাছ শিকার করতে থাকে। এর এক পর্যায়ে দেখা গেল যে, ঐ অবাধ্য লোকেদের নারী-পুরুষ সবাই নিকৃষ্ট বা লাঞ্ছিত বানর হয়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
আর আল্লাহ তা‘আলা এ ঘটনাকে ঐ সময়কার ও তৎপরবর্তী সকল লোকেদের জন্য উপদেশস্বরূপ বর্ণনা করেছেন, যাতে মানুষ জেনে-শুনে আল্লাহ তা‘আলার বিধান অমান্য না করে এবং হালাল ও হারামকে পরিবর্তন করার জন্য কোন রকম কৌশল ও ফন্দির পথ অবলম্বন না করে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ইয়াহূদীরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে হালালরূপে গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীতে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাক। (ইরওয়াউল গালীল হা: ১৫৩৫)
সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকা উচিত যাতে মাযহাব বা দলের মতের সাথে না মিলের কারণে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন বিধানকে পরিবর্তন করার অপপ্রয়াস না চালাই।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদীরা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ অমান্য করার অপকৌশল গ্রহণ করার কারণে তাদের ওপর আপতিত শাস্তির কথা জানলাম।
২. শরীয়তের বিধানকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা ইয়াহূদীদের কাজ।
৩. বিজ্ঞানী ডারউনের অভিমত (বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি) সঠিক নয়, কারণ এ আয়াত থেকে জানতে পারলাম তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়নি, দুনিয়ায় তারা তিন দিনের বেশি বাঁচেনি।
2:67
وَ اِذۡ قَالَ مُوۡسٰی
لِقَوۡمِہٖۤ اِنَّ اللّٰہَ یَاۡمُرُکُمۡ اَنۡ تَذۡبَحُوۡا بَقَرَۃً ؕ قَالُوۡۤا
اَتَتَّخِذُنَا ہُزُوًا ؕ قَالَ اَعُوۡذُ بِاللّٰہِ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡجٰہِلِیۡنَ
﴿۶۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৭ থেকে ৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
2:68
قَالُوا ادۡعُ لَنَا
رَبَّکَ یُبَیِّنۡ لَّنَا مَا ہِیَ ؕ قَالَ اِنَّہٗ یَقُوۡلُ اِنَّہَا بَقَرَۃٌ
لَّا فَارِضٌ وَّ لَا بِکۡرٌ ؕ عَوَانٌۢ بَیۡنَ ذٰلِکَ ؕ فَافۡعَلُوۡا مَا
تُؤۡمَرُوۡنَ ﴿۶۸﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৭ থেকে ৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
2:69
قَالُوا ادۡعُ لَنَا
رَبَّکَ یُبَیِّنۡ لَّنَا مَا لَوۡنُہَا ؕ قَالَ اِنَّہٗ یَقُوۡلُ اِنَّہَا
بَقَرَۃٌ صَفۡرَآءُ ۙ فَاقِعٌ لَّوۡنُہَا تَسُرُّ النّٰظِرِیۡنَ ﴿۶۹﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৭ থেকে ৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
2:70
قَالُوا ادۡعُ لَنَا
رَبَّکَ یُبَیِّنۡ لَّنَا مَا ہِیَ ۙ اِنَّ الۡبَقَرَ تَشٰبَہَ عَلَیۡنَا ؕ وَ
اِنَّاۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ لَمُہۡتَدُوۡنَ ﴿۷۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৭ থেকে ৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
2:71
قَالَ اِنَّہٗ یَقُوۡلُ
اِنَّہَا بَقَرَۃٌ لَّا ذَلُوۡلٌ تُثِیۡرُ الۡاَرۡضَ وَ لَا تَسۡقِی الۡحَرۡثَ ۚ
مُسَلَّمَۃٌ لَّا شِیَۃَ فِیۡہَا ؕ قَالُوا الۡـٰٔنَ جِئۡتَ بِالۡحَقِّ ؕ
فَذَبَحُوۡہَا وَ مَا کَادُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿٪۷۱﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৭ থেকে ৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
2:72
وَ اِذۡ قَتَلۡتُمۡ
نَفۡسًا فَادّٰرَءۡتُمۡ فِیۡہَا ؕ وَ اللّٰہُ مُخۡرِجٌ مَّا کُنۡتُمۡ تَکۡتُمُوۡنَ
﴿ۚ۷۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৭ থেকে ৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
2:73
فَقُلۡنَا اضۡرِبُوۡہُ
بِبَعۡضِہَا ؕ کَذٰلِکَ یُحۡیِ اللّٰہُ الۡمَوۡتٰی ۙ وَ یُرِیۡکُمۡ اٰیٰتِہٖ
لَعَلَّکُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۷۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৬৭ থেকে ৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
মুসনাদ ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মধ্যে একটি ধনী লোক ছিল, যার কোন সন্তান ছিল না। তার উত্তরাধিকারী ছিল তার এক ভ্রাতুষ্পুত্র। সত্বর উত্তরাধিকার প্রাপ্তির আশায় সে তার চাচাকে হত্যা করে ফেলে এবং রাতে তাদের গ্রামের একটি লোকের দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ঐ লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে এর দলের ও ওর দলের লোকেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সময় তাদের জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন: তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ) বিদ্যমান থাকতে তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা মূসা (আঃ)-এর নিকট এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
তখন তিনি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশে তাদেরকে বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَةً)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘যবেহ’কর।”একথা শুনে তারা বলল:
(أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا)
“তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ?” তখন মূসা (আঃ) বললেন:
(قَالَ أَعُوْذُ بِاللّٰهِ أَنْ أَكُوْنَ مِنَ الْجَاهِلِيْنَ)
“আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই।”
তখন যদি তারা যেকোন একটি গরু যবাই করত তাহলেই যথেষ্ট হত। কিন্তু তারা কাঠিন্য অবলম্বন করল তখন আল্লাহ তা‘আলাও তাদের ওপর তা কঠিন করে দিলেন।
তারপর তারা ঐরূপ গরু একটি লোকের নিকট পেল। যা তার কাছে ব্যতীত অন্য কারো নিকট ছিল না। লোকটি বলল: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! এ গরুর চামড়া পূর্ণ স্বর্ণের কম মূল্যে আমি বিক্রয় করব না। সুতরাং তারা ঐ মূল্যেই তা কিনে নেয় এবং যবেহ করে। তারপর তারা ঐ যবেহকৃত গরুর একখণ্ড গোশ্ত দ্বারা ঐ মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাত করে। তখন মৃতলোকটি দাঁড়িয়ে যায়। লোকগুলো তাকে জিজ্ঞাসা করে: তোমাকে কে হত্যা করেছে? সে বলল: “আমার এ ভ্রাতুষ্পুত্র।” একথা বলেই সে পুনরায় মরে যায়। ফলে তাকে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ দেয়া হয়নি। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৫)
এ আয়াতে বানী ইসরাঈলকে লক্ষ করে বলা হচ্ছে যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার এ নেয়ামতকে ভুলে না যায়, তিনি এমন এক স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনা ঘটালেন যার ফলে গরুর এক টুকরা গোশতের দ্বারা মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত করায় সে জীবিত হয়ে যায় এবং সে তার হত্যাকারীর নাম বলে দেয়। ফলে একটি বড় বিবাদের নিস্পত্তি ঘটে। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সতর্ক করলেন যে, “এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।”
সুতরাং আমাদের সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কর্ম আল্লাহ তা‘আলা জানেন ও দেখেন। তাঁকেই ভয় করে আমাদের সকল অপকর্ম বর্জন করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা যে বিধান দেন তা মাথা পেতে নেয়া অবশ্য কর্তব্য, আর তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরয়ী বিধান পাওয়ার পর অহেতুক প্রশ্ন করা নিষেধ, এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়।
৩. ইনশা-আল্লাহ বলার উপকার জানলাম। যেমন শেষবারে ইয়াহূদী ইনশা-আল্লাহ না বললে হয়তো আদিষ্ট গরু খুঁজে পেত না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের উক্ত ব্যক্তিকে যেমন মৃত্যুর পর জীবিত করেছেন আমাদেরকেও তেমন মৃত্যুর পর জীবিত করবেন।
2:74
ثُمَّ قَسَتۡ
قُلُوۡبُکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ فَہِیَ کَالۡحِجَارَۃِ اَوۡ اَشَدُّ قَسۡوَۃً ؕ
وَ اِنَّ مِنَ الۡحِجَارَۃِ لَمَا یَتَفَجَّرُ مِنۡہُ الۡاَنۡہٰرُ ؕ وَ اِنَّ
مِنۡہَا لَمَا یَشَّقَّقُ فَیَخۡرُجُ مِنۡہُ الۡمَآءُ ؕ وَ اِنَّ مِنۡہَا لَمَا
یَہۡبِطُ مِنۡ خَشۡیَۃِ اللّٰہِ ؕوَ مَا اللّٰہُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۷۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৭৪ নং আয়াতের তাফসীর:
বানী ইসরাঈলরা আল্লাহ তা‘আলার এতসব নিদর্শন প্রত্যক্ষ করার পরেও যখন আল্লাহ তা‘আলার নাফরমানি করল ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হল তখন তিনি তাদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে এ কথা বললেন। তাদের অন্তর কঠিন হবার কারণ এখানে বর্ণিত না হলেও আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বর্ণনা করে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ وَنَسُوْا حَظًّا مِّمَّا ذُکِّرُوْا بِھ۪ﺆ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلٰی خَا۬ئِنَةٍ مِّنْھُمْ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْھُمْ فَاعْفُ عَنْھُمْ وَاصْفَحْﺚ اِنَّ اللہَ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَﭜ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয়কে কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করেছে এবং তারা যা আদিষ্ট হয়েছিল তার এক অংশ ভুলে গিয়েছে। তুমি সর্বদা তাদের অল্পসংখ্যক ব্যতীত সকলকেই বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখতে পাবে, সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কর্মপরায়ণদেরকে ভালবাসেন।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
এ ঘটনা তুলে ধরার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে এরূপ কঠোর হৃদয়ের মানুষ হতে নিষেধ করেছেন।
অন্তরকে পাথরের চেয়ে কঠিন বলার কারণ হল, অনেক পাথর রয়েছে যা থেকে ঝর্ণা প্রবাহিত হয়। আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে তারা কাঁদে এমনকি আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহও তারা পাঠ করে। কিন্তু অন্তর যখন কঠিন হয় তখন আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে চক্ষু থেকে পানি ঝরে না, আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহও পাঠ করে না বরং আল্লাহ বিমুখ হয়ে যায়। অত্র আয়াতে প্রমাণিত হয় যে, পাথর আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে, শুধু তাই নয় বরং আসমান ও জমিনের মাঝে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারি না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(تُسَبِّحُ لَھُ السَّمٰوٰتُ السَّبْعُ وَالْاَرْضُ وَمَنْ فِیْھِنَّﺚ وَاِنْ مِّنْ شَیْءٍ اِلَّا یُسَبِّحُ بِحَمْدِھ۪ وَلٰکِنْ لَّا تَفْقَھُوْنَ تَسْبِیْحَھُمْﺚ اِنَّھ۫ کَانَ حَلِیْمًا غَفُوْرًا)
“সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং তাদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পার না; নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।”(সূরা বানী ইসরাঈল ১৭:৪৪)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنِّى لأَعْرِفُ حَجَرًا بِمَكَّةَ كَانَ يُسَلِّمُ عَلَىَّ قَبْلَ أَنْ أُبْعَثَ إِنِّى لأَعْرِفُهُ الآنَ
আমি মক্কার ঐ পাথরকে চিনি, যে আমার নবুওয়াতের পূর্বে আমাকে সালাম দিত। (সহীহ মুসলিম হা: ২২৭৭, তিরমিযী হা: ৩৬২৪) উহুদ পাহাড় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ
এ পাহাড়টি আমাদেরকে ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪২)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলাকে দেয়া অঙ্গীকার ভঙ্গ করার কারণে বানী ইসরাঈলের অন্তর কঠিন করে দেয়া হয়েছিল এবং তাদের ওপর লা‘নত করা হয়েছিল। আমাদেরকে তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
২. মু’মিনদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল তারা কোমল হৃদয়ের অধিকারী।
৩. আসমান ও জমিনের মাঝে যা কিছু আছে সব আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে।
বানী ইসরাঈলরা আল্লাহ তা‘আলার এতসব নিদর্শন প্রত্যক্ষ করার পরেও যখন আল্লাহ তা‘আলার নাফরমানি করল ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হল তখন তিনি তাদেরকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করে এ কথা বললেন। তাদের অন্তর কঠিন হবার কারণ এখানে বর্ণিত না হলেও আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বর্ণনা করে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ وَنَسُوْا حَظًّا مِّمَّا ذُکِّرُوْا بِھ۪ﺆ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلٰی خَا۬ئِنَةٍ مِّنْھُمْ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْھُمْ فَاعْفُ عَنْھُمْ وَاصْفَحْﺚ اِنَّ اللہَ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَﭜ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয়কে কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করেছে এবং তারা যা আদিষ্ট হয়েছিল তার এক অংশ ভুলে গিয়েছে। তুমি সর্বদা তাদের অল্পসংখ্যক ব্যতীত সকলকেই বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখতে পাবে, সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কর্মপরায়ণদেরকে ভালবাসেন।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
এ ঘটনা তুলে ধরার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে এরূপ কঠোর হৃদয়ের মানুষ হতে নিষেধ করেছেন।
অন্তরকে পাথরের চেয়ে কঠিন বলার কারণ হল, অনেক পাথর রয়েছে যা থেকে ঝর্ণা প্রবাহিত হয়। আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে তারা কাঁদে এমনকি আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহও তারা পাঠ করে। কিন্তু অন্তর যখন কঠিন হয় তখন আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে চক্ষু থেকে পানি ঝরে না, আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহও পাঠ করে না বরং আল্লাহ বিমুখ হয়ে যায়। অত্র আয়াতে প্রমাণিত হয় যে, পাথর আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে, শুধু তাই নয় বরং আসমান ও জমিনের মাঝে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারি না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(تُسَبِّحُ لَھُ السَّمٰوٰتُ السَّبْعُ وَالْاَرْضُ وَمَنْ فِیْھِنَّﺚ وَاِنْ مِّنْ شَیْءٍ اِلَّا یُسَبِّحُ بِحَمْدِھ۪ وَلٰکِنْ لَّا تَفْقَھُوْنَ تَسْبِیْحَھُمْﺚ اِنَّھ۫ کَانَ حَلِیْمًا غَفُوْرًا)
“সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং তাদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পার না; নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।”(সূরা বানী ইসরাঈল ১৭:৪৪)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنِّى لأَعْرِفُ حَجَرًا بِمَكَّةَ كَانَ يُسَلِّمُ عَلَىَّ قَبْلَ أَنْ أُبْعَثَ إِنِّى لأَعْرِفُهُ الآنَ
আমি মক্কার ঐ পাথরকে চিনি, যে আমার নবুওয়াতের পূর্বে আমাকে সালাম দিত। (সহীহ মুসলিম হা: ২২৭৭, তিরমিযী হা: ৩৬২৪) উহুদ পাহাড় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ
এ পাহাড়টি আমাদেরকে ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪২)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলাকে দেয়া অঙ্গীকার ভঙ্গ করার কারণে বানী ইসরাঈলের অন্তর কঠিন করে দেয়া হয়েছিল এবং তাদের ওপর লা‘নত করা হয়েছিল। আমাদেরকে তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
২. মু’মিনদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল তারা কোমল হৃদয়ের অধিকারী।
৩. আসমান ও জমিনের মাঝে যা কিছু আছে সব আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে।
2:75
اَفَتَطۡمَعُوۡنَ اَنۡ
یُّؤۡمِنُوۡا لَکُمۡ وَ قَدۡ کَانَ فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ یَسۡمَعُوۡنَ کَلٰمَ
اللّٰہِ ثُمَّ یُحَرِّفُوۡنَہٗ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا عَقَلُوۡہُ وَ ہُمۡ یَعۡلَمُوۡنَ
﴿۷۵﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৭৫ থেকে ৭৭ নং আয়াতের তাফসীর:
পথভ্রষ্ট ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সাহাবীবর্গকে আশা রাখতে নিষেধ করেছেন। এসব লোক যখন বড় বড় নিদর্শন দেখেও অন্তর কঠিন করে ফেলেছে, আল্লাহ তা‘আলার কালাম শুনে বুঝার পরেও পরিবর্তন করে ফেলেছে তখন তাদের কাছে আর ঈমানের আশা করা যায় না। ঠিক এমনটিই আল্লাহ তা‘আলা অন্য আয়াতে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করে।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের আরেকটি ঘৃণিত আচরণের কথা বলেছেন। তা হল যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা ঈমানের কথা বলে আবার যখন ইয়াহূদী-মুনাফিকদের সাথে মিলিত হয় তখন তা অস্বীকার করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সতর্ক করে বলে দিচ্ছেন, তারা যতই টালবাহানা করুক তারা জানে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হক গ্রহণ ও শ্রবণ করা থেকে ইয়াহূদী সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে।
২. সত্য জানার পরেও তা অস্বীকার করা খুবই নিন্দনীয়।
৩. যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার গযব পতিত হয়েছে তাদের কাছ থেকে ঈমানের আশা না করাই উচিত।
পথভ্রষ্ট ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সাহাবীবর্গকে আশা রাখতে নিষেধ করেছেন। এসব লোক যখন বড় বড় নিদর্শন দেখেও অন্তর কঠিন করে ফেলেছে, আল্লাহ তা‘আলার কালাম শুনে বুঝার পরেও পরিবর্তন করে ফেলেছে তখন তাদের কাছে আর ঈমানের আশা করা যায় না। ঠিক এমনটিই আল্লাহ তা‘আলা অন্য আয়াতে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করে।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের আরেকটি ঘৃণিত আচরণের কথা বলেছেন। তা হল যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা ঈমানের কথা বলে আবার যখন ইয়াহূদী-মুনাফিকদের সাথে মিলিত হয় তখন তা অস্বীকার করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সতর্ক করে বলে দিচ্ছেন, তারা যতই টালবাহানা করুক তারা জানে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হক গ্রহণ ও শ্রবণ করা থেকে ইয়াহূদী সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে।
২. সত্য জানার পরেও তা অস্বীকার করা খুবই নিন্দনীয়।
৩. যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার গযব পতিত হয়েছে তাদের কাছ থেকে ঈমানের আশা না করাই উচিত।
2:76
وَ اِذَا لَقُوا
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قَالُوۡۤا اٰمَنَّا ۚۖ وَ اِذَا خَلَا بَعۡضُہُمۡ اِلٰی
بَعۡضٍ قَالُوۡۤا اَتُحَدِّثُوۡنَہُمۡ بِمَا فَتَحَ اللّٰہُ عَلَیۡکُمۡ
لِیُحَآجُّوۡکُمۡ بِہٖ عِنۡدَ رَبِّکُمۡ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۷۶﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৭৫ থেকে ৭৭ নং আয়াতের তাফসীর:
পথভ্রষ্ট ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সাহাবীবর্গকে আশা রাখতে নিষেধ করেছেন। এসব লোক যখন বড় বড় নিদর্শন দেখেও অন্তর কঠিন করে ফেলেছে, আল্লাহ তা‘আলার কালাম শুনে বুঝার পরেও পরিবর্তন করে ফেলেছে তখন তাদের কাছে আর ঈমানের আশা করা যায় না। ঠিক এমনটিই আল্লাহ তা‘আলা অন্য আয়াতে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করে।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের আরেকটি ঘৃণিত আচরণের কথা বলেছেন। তা হল যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা ঈমানের কথা বলে আবার যখন ইয়াহূদী-মুনাফিকদের সাথে মিলিত হয় তখন তা অস্বীকার করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সতর্ক করে বলে দিচ্ছেন, তারা যতই টালবাহানা করুক তারা জানে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হক গ্রহণ ও শ্রবণ করা থেকে ইয়াহূদী সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে।
২. সত্য জানার পরেও তা অস্বীকার করা খুবই নিন্দনীয়।
৩. যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার গযব পতিত হয়েছে তাদের কাছ থেকে ঈমানের আশা না করাই উচিত।
পথভ্রষ্ট ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সাহাবীবর্গকে আশা রাখতে নিষেধ করেছেন। এসব লোক যখন বড় বড় নিদর্শন দেখেও অন্তর কঠিন করে ফেলেছে, আল্লাহ তা‘আলার কালাম শুনে বুঝার পরেও পরিবর্তন করে ফেলেছে তখন তাদের কাছে আর ঈমানের আশা করা যায় না। ঠিক এমনটিই আল্লাহ তা‘আলা অন্য আয়াতে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করে।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের আরেকটি ঘৃণিত আচরণের কথা বলেছেন। তা হল যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা ঈমানের কথা বলে আবার যখন ইয়াহূদী-মুনাফিকদের সাথে মিলিত হয় তখন তা অস্বীকার করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সতর্ক করে বলে দিচ্ছেন, তারা যতই টালবাহানা করুক তারা জানে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হক গ্রহণ ও শ্রবণ করা থেকে ইয়াহূদী সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে।
২. সত্য জানার পরেও তা অস্বীকার করা খুবই নিন্দনীয়।
৩. যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার গযব পতিত হয়েছে তাদের কাছ থেকে ঈমানের আশা না করাই উচিত।
2:77
اَ وَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ
اَنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا یُسِرُّوۡنَ وَ مَا یُعۡلِنُوۡنَ ﴿۷۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৭৫ থেকে ৭৭ নং আয়াতের তাফসীর:
পথভ্রষ্ট ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সাহাবীবর্গকে আশা রাখতে নিষেধ করেছেন। এসব লোক যখন বড় বড় নিদর্শন দেখেও অন্তর কঠিন করে ফেলেছে, আল্লাহ তা‘আলার কালাম শুনে বুঝার পরেও পরিবর্তন করে ফেলেছে তখন তাদের কাছে আর ঈমানের আশা করা যায় না। ঠিক এমনটিই আল্লাহ তা‘আলা অন্য আয়াতে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করে।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের আরেকটি ঘৃণিত আচরণের কথা বলেছেন। তা হল যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা ঈমানের কথা বলে আবার যখন ইয়াহূদী-মুনাফিকদের সাথে মিলিত হয় তখন তা অস্বীকার করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সতর্ক করে বলে দিচ্ছেন, তারা যতই টালবাহানা করুক তারা জানে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:১. হক গ্রহণ ও শ্রবণ করা থেকে ইয়াহূদী সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে।
২. সত্য জানার পরেও তা অস্বীকার করা খুবই নিন্দনীয়।
৩. যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার গযব পতিত হয়েছে তাদের কাছ থেকে ঈমানের আশা না করাই উচিত।
পথভ্রষ্ট ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের ঈমানের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সাহাবীবর্গকে আশা রাখতে নিষেধ করেছেন। এসব লোক যখন বড় বড় নিদর্শন দেখেও অন্তর কঠিন করে ফেলেছে, আল্লাহ তা‘আলার কালাম শুনে বুঝার পরেও পরিবর্তন করে ফেলেছে তখন তাদের কাছে আর ঈমানের আশা করা যায় না। ঠিক এমনটিই আল্লাহ তা‘আলা অন্য আয়াতে বলেন:
(فَبِمَا نَقْضِھِمْ مِّیْثَاقَھُمْ لَعَنّٰھُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوْبَھُمْ قٰسِیَةًﺆ یُحَرِّفُوْنَ الْکَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِھ۪ﺫ)
“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লা‘নত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি; তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করে।”(সূরা মায়িদাহ ৫:১৩)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের আরেকটি ঘৃণিত আচরণের কথা বলেছেন। তা হল যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা ঈমানের কথা বলে আবার যখন ইয়াহূদী-মুনাফিকদের সাথে মিলিত হয় তখন তা অস্বীকার করে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সতর্ক করে বলে দিচ্ছেন, তারা যতই টালবাহানা করুক তারা জানে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:১. হক গ্রহণ ও শ্রবণ করা থেকে ইয়াহূদী সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে।
২. সত্য জানার পরেও তা অস্বীকার করা খুবই নিন্দনীয়।
৩. যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার গযব পতিত হয়েছে তাদের কাছ থেকে ঈমানের আশা না করাই উচিত।
2:78
وَ مِنۡہُمۡ اُمِّیُّوۡنَ
لَا یَعۡلَمُوۡنَ الۡکِتٰبَ اِلَّاۤ اَمَانِیَّ وَ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا یَظُنُّوۡنَ ﴿۷۸﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৭৮ ও ৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:
اُمِّي বলা হয় ঐ ব্যক্তি যে ভালভাবে লেখতে ও পড়তে জানে না। اُمِّیُّوْنَ শব্দটি তার বহুবচন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বিশেষণ হচ্ছে اُمِّي, তিনি লেখতে ও পড়তে জানতেন না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا کُنْتَ تَتْلُوْا مِنْ قَبْلِھ۪ مِنْ کِتٰبٍ وَّلَا تَخُطُّھ۫ بِیَمِیْنِکَ اِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُوْنَ)
“তুমি তো পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করনি এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লেখনি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।”(সূরা আনকাবুত ২৯:৪৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنَّا أُمَّةٌ أُمِّيَّةٌ لَا نَكْتُبُ وَلَا نَحْسُبُ الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا
আমরা নিরক্ষর লোক, আমরা লেখতেও জানি না এবং হিসাবও বুঝি না, মাস কখন এরকম হয় এবং কখনও এ রকম, এ রকম হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৯১৩, সহীহ মুসলিম হা: ১১০৮০)
أَمَا نِيْ (ধারণা) দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে দু’টি মতামত পাওয়া যায়-
১. যারা শুধু কিতাব তেলাওয়াত ছাড়া এর অর্থ কিছুই জানে না। তবে অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য নয়।
২. যারা কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না কিন্তু বাতিল আশা-আকাক্সক্ষা করে যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوْا لَنْ یَّدْخُلَ الْجَنَّةَ اِلَّا مَنْ کَانَ ھُوْدًا اَوْ نَصٰرٰیﺚ تِلْکَ اَمَانِیُّھُمْﺚ قُلْ ھَاتُوْا بُرْھَانَکُمْ اِنْ کُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ﮾)
“আর তারা বলে, যারা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান হয়েছে তারা ছাড়া আর কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, এটা তাদের বাসনা মাত্র। তুমি বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।” (সূরা বাকারাহ ২:১১১) অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য। (আযউয়াউল বায়ান, ১/৮৫)
(فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ)
‘তাদের জন্য অভিশম্পাত’এটা ইয়াহূদীদের অন্য এক শ্রেণির লোক যারা মানুষদেরকে ভ্রান্ত পথের দিকে আহ্বান করত, আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করত এবং শিষ্যদের নিকট হতে অন্যায়ভাবে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে খেত। তারা স্বহস্তে মনগড়া কিতাব লিপিবদ্ধ করে তা আল্লাহ তা‘আলার দিকে সোপর্দ করত। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এ সকল অন্যায়ের কারণে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলেছেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমান ও সৎ আমল না থাকলে বংশ ও প্রভাব প্রতিপত্তি পরকালে কোন উপকারে আসবে না।
২. ছোট ও বড় সকল প্রকার গুনাহ থেকে সতর্ক থাকা দরকার। মৃত্যুর পূর্বেই গুনাহ থেকে তাওবাহ করা উচিত।
৩. শরীয়তের কোন হালাল বিধানকে হারাম করে দেয় অথবা কোন হারামকে হালাল করে দেয় এমন ফতওয়া দেয়া থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক। অথবা নিজের তৈরি কোন কথা আল্লাহ তা‘আলার নামে চালিয়ে দেয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এসব ইয়াহূদীদের চরিত্র।
اُمِّي বলা হয় ঐ ব্যক্তি যে ভালভাবে লেখতে ও পড়তে জানে না। اُمِّیُّوْنَ শব্দটি তার বহুবচন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বিশেষণ হচ্ছে اُمِّي, তিনি লেখতে ও পড়তে জানতেন না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا کُنْتَ تَتْلُوْا مِنْ قَبْلِھ۪ مِنْ کِتٰبٍ وَّلَا تَخُطُّھ۫ بِیَمِیْنِکَ اِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُوْنَ)
“তুমি তো পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করনি এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লেখনি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।”(সূরা আনকাবুত ২৯:৪৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنَّا أُمَّةٌ أُمِّيَّةٌ لَا نَكْتُبُ وَلَا نَحْسُبُ الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا
আমরা নিরক্ষর লোক, আমরা লেখতেও জানি না এবং হিসাবও বুঝি না, মাস কখন এরকম হয় এবং কখনও এ রকম, এ রকম হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৯১৩, সহীহ মুসলিম হা: ১১০৮০)
أَمَا نِيْ (ধারণা) দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে দু’টি মতামত পাওয়া যায়-
১. যারা শুধু কিতাব তেলাওয়াত ছাড়া এর অর্থ কিছুই জানে না। তবে অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য নয়।
২. যারা কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না কিন্তু বাতিল আশা-আকাক্সক্ষা করে যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوْا لَنْ یَّدْخُلَ الْجَنَّةَ اِلَّا مَنْ کَانَ ھُوْدًا اَوْ نَصٰرٰیﺚ تِلْکَ اَمَانِیُّھُمْﺚ قُلْ ھَاتُوْا بُرْھَانَکُمْ اِنْ کُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ﮾)
“আর তারা বলে, যারা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান হয়েছে তারা ছাড়া আর কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, এটা তাদের বাসনা মাত্র। তুমি বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।” (সূরা বাকারাহ ২:১১১) অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য। (আযউয়াউল বায়ান, ১/৮৫)
(فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ)
‘তাদের জন্য অভিশম্পাত’এটা ইয়াহূদীদের অন্য এক শ্রেণির লোক যারা মানুষদেরকে ভ্রান্ত পথের দিকে আহ্বান করত, আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করত এবং শিষ্যদের নিকট হতে অন্যায়ভাবে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে খেত। তারা স্বহস্তে মনগড়া কিতাব লিপিবদ্ধ করে তা আল্লাহ তা‘আলার দিকে সোপর্দ করত। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এ সকল অন্যায়ের কারণে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলেছেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমান ও সৎ আমল না থাকলে বংশ ও প্রভাব প্রতিপত্তি পরকালে কোন উপকারে আসবে না।
২. ছোট ও বড় সকল প্রকার গুনাহ থেকে সতর্ক থাকা দরকার। মৃত্যুর পূর্বেই গুনাহ থেকে তাওবাহ করা উচিত।
৩. শরীয়তের কোন হালাল বিধানকে হারাম করে দেয় অথবা কোন হারামকে হালাল করে দেয় এমন ফতওয়া দেয়া থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক। অথবা নিজের তৈরি কোন কথা আল্লাহ তা‘আলার নামে চালিয়ে দেয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এসব ইয়াহূদীদের চরিত্র।
2:79
فَوَیۡلٌ لِّلَّذِیۡنَ
یَکۡتُبُوۡنَ الۡکِتٰبَ بِاَیۡدِیۡہِمۡ ٭ ثُمَّ یَقُوۡلُوۡنَ ہٰذَا مِنۡ عِنۡدِ
اللّٰہِ لِیَشۡتَرُوۡا بِہٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ فَوَیۡلٌ لَّہُمۡ مِّمَّا
کَتَبَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ وَیۡلٌ لَّہُمۡ مِّمَّا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۷۹﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৭৮ ও ৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:
اُمِّي বলা হয় ঐ ব্যক্তি যে ভালভাবে লেখতে ও পড়তে জানে না। اُمِّیُّوْنَ শব্দটি তার বহুবচন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বিশেষণ হচ্ছে اُمِّي, তিনি লেখতে ও পড়তে জানতেন না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا کُنْتَ تَتْلُوْا مِنْ قَبْلِھ۪ مِنْ کِتٰبٍ وَّلَا تَخُطُّھ۫ بِیَمِیْنِکَ اِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُوْنَ)
“তুমি তো পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করনি এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লেখনি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।”(সূরা আনকাবুত ২৯:৪৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنَّا أُمَّةٌ أُمِّيَّةٌ لَا نَكْتُبُ وَلَا نَحْسُبُ الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا
আমরা নিরক্ষর লোক, আমরা লেখতেও জানি না এবং হিসাবও বুঝি না, মাস কখন এরকম হয় এবং কখনও এ রকম, এ রকম হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৯১৩, সহীহ মুসলিম হা: ১১০৮০)
أَمَا نِيْ (ধারণা) দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে দু’টি মতামত পাওয়া যায়-
১. যারা শুধু কিতাব তেলাওয়াত ছাড়া এর অর্থ কিছুই জানে না। তবে অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য নয়।
২. যারা কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না কিন্তু বাতিল আশা-আকাক্সক্ষা করে যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوْا لَنْ یَّدْخُلَ الْجَنَّةَ اِلَّا مَنْ کَانَ ھُوْدًا اَوْ نَصٰرٰیﺚ تِلْکَ اَمَانِیُّھُمْﺚ قُلْ ھَاتُوْا بُرْھَانَکُمْ اِنْ کُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ﮾)
“আর তারা বলে, যারা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান হয়েছে তারা ছাড়া আর কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, এটা তাদের বাসনা মাত্র। তুমি বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।” (সূরা বাকারাহ ২:১১১) অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য। (আযউয়াউল বায়ান, ১/৮৫)
(فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ)
‘তাদের জন্য অভিশম্পাত’এটা ইয়াহূদীদের অন্য এক শ্রেণির লোক যারা মানুষদেরকে ভ্রান্ত পথের দিকে আহ্বান করত, আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করত এবং শিষ্যদের নিকট হতে অন্যায়ভাবে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে খেত। তারা স্বহস্তে মনগড়া কিতাব লিপিবদ্ধ করে তা আল্লাহ তা‘আলার দিকে সোপর্দ করত। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এ সকল অন্যায়ের কারণে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলেছেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমান ও সৎ আমল না থাকলে বংশ ও প্রভাব প্রতিপত্তি পরকালে কোন উপকারে আসবে না।
২. ছোট ও বড় সকল প্রকার গুনাহ থেকে সতর্ক থাকা দরকার। মৃত্যুর পূর্বেই গুনাহ থেকে তাওবাহ করা উচিত।
৩. শরীয়তের কোন হালাল বিধানকে হারাম করে দেয় অথবা কোন হারামকে হালাল করে দেয় এমন ফতওয়া দেয়া থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক। অথবা নিজের তৈরি কোন কথা আল্লাহ তা‘আলার নামে চালিয়ে দেয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এসব ইয়াহূদীদের চরিত্র।
اُمِّي বলা হয় ঐ ব্যক্তি যে ভালভাবে লেখতে ও পড়তে জানে না। اُمِّیُّوْنَ শব্দটি তার বহুবচন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বিশেষণ হচ্ছে اُمِّي, তিনি লেখতে ও পড়তে জানতেন না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا کُنْتَ تَتْلُوْا مِنْ قَبْلِھ۪ مِنْ کِتٰبٍ وَّلَا تَخُطُّھ۫ بِیَمِیْنِکَ اِذًا لَّارْتَابَ الْمُبْطِلُوْنَ)
“তুমি তো পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করনি এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লেখনি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।”(সূরা আনকাবুত ২৯:৪৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنَّا أُمَّةٌ أُمِّيَّةٌ لَا نَكْتُبُ وَلَا نَحْسُبُ الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا
আমরা নিরক্ষর লোক, আমরা লেখতেও জানি না এবং হিসাবও বুঝি না, মাস কখন এরকম হয় এবং কখনও এ রকম, এ রকম হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৯১৩, সহীহ মুসলিম হা: ১১০৮০)
أَمَا نِيْ (ধারণা) দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে দু’টি মতামত পাওয়া যায়-
১. যারা শুধু কিতাব তেলাওয়াত ছাড়া এর অর্থ কিছুই জানে না। তবে অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য নয়।
২. যারা কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না কিন্তু বাতিল আশা-আকাক্সক্ষা করে যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوْا لَنْ یَّدْخُلَ الْجَنَّةَ اِلَّا مَنْ کَانَ ھُوْدًا اَوْ نَصٰرٰیﺚ تِلْکَ اَمَانِیُّھُمْﺚ قُلْ ھَاتُوْا بُرْھَانَکُمْ اِنْ کُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ﮾)
“আর তারা বলে, যারা ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান হয়েছে তারা ছাড়া আর কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, এটা তাদের বাসনা মাত্র। তুমি বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।” (সূরা বাকারাহ ২:১১১) অত্র আয়াতে এটা উদ্দেশ্য। (আযউয়াউল বায়ান, ১/৮৫)
(فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ)
‘তাদের জন্য অভিশম্পাত’এটা ইয়াহূদীদের অন্য এক শ্রেণির লোক যারা মানুষদেরকে ভ্রান্ত পথের দিকে আহ্বান করত, আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করত এবং শিষ্যদের নিকট হতে অন্যায়ভাবে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে খেত। তারা স্বহস্তে মনগড়া কিতাব লিপিবদ্ধ করে তা আল্লাহ তা‘আলার দিকে সোপর্দ করত। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এ সকল অন্যায়ের কারণে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলেছেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ঈমান ও সৎ আমল না থাকলে বংশ ও প্রভাব প্রতিপত্তি পরকালে কোন উপকারে আসবে না।
২. ছোট ও বড় সকল প্রকার গুনাহ থেকে সতর্ক থাকা দরকার। মৃত্যুর পূর্বেই গুনাহ থেকে তাওবাহ করা উচিত।
৩. শরীয়তের কোন হালাল বিধানকে হারাম করে দেয় অথবা কোন হারামকে হালাল করে দেয় এমন ফতওয়া দেয়া থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক। অথবা নিজের তৈরি কোন কথা আল্লাহ তা‘আলার নামে চালিয়ে দেয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এসব ইয়াহূদীদের চরিত্র।
2:80
وَ قَالُوۡا لَنۡ
تَمَسَّنَا النَّارُ اِلَّاۤ اَیَّامًا مَّعۡدُوۡدَۃً ؕ قُلۡ اَتَّخَذۡتُمۡ عِنۡدَ
اللّٰہِ عَہۡدًا فَلَنۡ یُّخۡلِفَ اللّٰہُ عَہۡدَہٗۤ اَمۡ تَقُوۡلُوۡنَ عَلَی
اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۸۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮০ হতে ৮২ নং আয়াতের তাফসীর:
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের একটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন যে, তারা বলে আমরা মাত্র কয়েকদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব তারপর নাজাত পেয়ে যাব।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবির প্রতিবাদ করে বলছেন: হে নাবী আপনি বলে দিন তোমরা কি এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে কোন অঙ্গীকারনামা নিয়েছ? মূলত আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে তারা মিথ্যা আরোপ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: ইয়াহূদীরা বলে, আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীরা বলে আমরা কেবল যে চল্লিশ দিন গো-বৎসের পূজা করেছিলাম সে চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব।
ইকরামার বর্ণনায় পাওয়া যায়, একদা ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বিবাদ করে। তারা বলল: আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। অতঃপর আমাদের স্থানে মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীরা যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মাথার দিকে ইশারা করে বললেন: বরং তোমরাই জাহান্নামে আজীবন থাকবে। তোমাদের স্থলাভিষিক্ত আর কেউ হবে না। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল বারী ১০/২৫৭)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিলেন যে, মৌখিক দাবি যথেষ্ট নয় বরং যারা অপরাধ করবে তারা জাহান্নামী আর যারা সৎ আমল করবে তারা জান্নাতে যাবে। আর তথায় চিরস্থায়ী হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা শুধু মুখে বললে হবে না বরং এর জন্য প্রয়োজন ঈমান ও সৎ আমল।
২. যে কোন ধর্মের অনুসরণ করে তার বিধি-বিধান মেনে চললেই জান্নাতে যাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, বরং ইসলামের অনুসরণ আবশ্যক, তবেই জান্নাত পাওয়া সম্ভব।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের একটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন যে, তারা বলে আমরা মাত্র কয়েকদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব তারপর নাজাত পেয়ে যাব।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবির প্রতিবাদ করে বলছেন: হে নাবী আপনি বলে দিন তোমরা কি এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে কোন অঙ্গীকারনামা নিয়েছ? মূলত আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে তারা মিথ্যা আরোপ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: ইয়াহূদীরা বলে, আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীরা বলে আমরা কেবল যে চল্লিশ দিন গো-বৎসের পূজা করেছিলাম সে চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব।
ইকরামার বর্ণনায় পাওয়া যায়, একদা ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বিবাদ করে। তারা বলল: আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। অতঃপর আমাদের স্থানে মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীরা যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মাথার দিকে ইশারা করে বললেন: বরং তোমরাই জাহান্নামে আজীবন থাকবে। তোমাদের স্থলাভিষিক্ত আর কেউ হবে না। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল বারী ১০/২৫৭)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিলেন যে, মৌখিক দাবি যথেষ্ট নয় বরং যারা অপরাধ করবে তারা জাহান্নামী আর যারা সৎ আমল করবে তারা জান্নাতে যাবে। আর তথায় চিরস্থায়ী হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা শুধু মুখে বললে হবে না বরং এর জন্য প্রয়োজন ঈমান ও সৎ আমল।
২. যে কোন ধর্মের অনুসরণ করে তার বিধি-বিধান মেনে চললেই জান্নাতে যাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, বরং ইসলামের অনুসরণ আবশ্যক, তবেই জান্নাত পাওয়া সম্ভব।
2:81
بَلٰی مَنۡ کَسَبَ
سَیِّئَۃً وَّ اَحَاطَتۡ بِہٖ خَطِیۡٓــَٔتُہٗ فَاُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ
ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۸۱﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮০ হতে ৮২ নং আয়াতের তাফসীর:
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের একটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন যে, তারা বলে আমরা মাত্র কয়েকদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব তারপর নাজাত পেয়ে যাব।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবির প্রতিবাদ করে বলছেন: হে নাবী আপনি বলে দিন তোমরা কি এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে কোন অঙ্গীকারনামা নিয়েছ? মূলত আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে তারা মিথ্যা আরোপ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: ইয়াহূদীরা বলে, আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীরা বলে আমরা কেবল যে চল্লিশ দিন গো-বৎসের পূজা করেছিলাম সে চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব।
ইকরামার বর্ণনায় পাওয়া যায়, একদা ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বিবাদ করে। তারা বলল: আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। অতঃপর আমাদের স্থানে মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীরা যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মাথার দিকে ইশারা করে বললেন: বরং তোমরাই জাহান্নামে আজীবন থাকবে। তোমাদের স্থলাভিষিক্ত আর কেউ হবে না। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল বারী ১০/২৫৭)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিলেন যে, মৌখিক দাবি যথেষ্ট নয় বরং যারা অপরাধ করবে তারা জাহান্নামী আর যারা সৎ আমল করবে তারা জান্নাতে যাবে। আর তথায় চিরস্থায়ী হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:১. জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা শুধু মুখে বললে হবে না বরং এর জন্য প্রয়োজন ঈমান ও সৎ আমল।
২. যে কোন ধর্মের অনুসরণ করে তার বিধি-বিধান মেনে চললেই জান্নাতে যাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, বরং ইসলামের অনুসরণ আবশ্যক, তবেই জান্নাত পাওয়া সম্ভব।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের একটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন যে, তারা বলে আমরা মাত্র কয়েকদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব তারপর নাজাত পেয়ে যাব।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবির প্রতিবাদ করে বলছেন: হে নাবী আপনি বলে দিন তোমরা কি এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে কোন অঙ্গীকারনামা নিয়েছ? মূলত আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে তারা মিথ্যা আরোপ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: ইয়াহূদীরা বলে, আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীরা বলে আমরা কেবল যে চল্লিশ দিন গো-বৎসের পূজা করেছিলাম সে চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব।
ইকরামার বর্ণনায় পাওয়া যায়, একদা ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বিবাদ করে। তারা বলল: আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। অতঃপর আমাদের স্থানে মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীরা যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মাথার দিকে ইশারা করে বললেন: বরং তোমরাই জাহান্নামে আজীবন থাকবে। তোমাদের স্থলাভিষিক্ত আর কেউ হবে না। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল বারী ১০/২৫৭)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিলেন যে, মৌখিক দাবি যথেষ্ট নয় বরং যারা অপরাধ করবে তারা জাহান্নামী আর যারা সৎ আমল করবে তারা জান্নাতে যাবে। আর তথায় চিরস্থায়ী হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:১. জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা শুধু মুখে বললে হবে না বরং এর জন্য প্রয়োজন ঈমান ও সৎ আমল।
২. যে কোন ধর্মের অনুসরণ করে তার বিধি-বিধান মেনে চললেই জান্নাতে যাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, বরং ইসলামের অনুসরণ আবশ্যক, তবেই জান্নাত পাওয়া সম্ভব।
2:82
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا
وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا
خٰلِدُوۡنَ ﴿٪۸۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮০ হতে ৮২ নং আয়াতের তাফসীর:
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের একটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন যে, তারা বলে আমরা মাত্র কয়েকদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব তারপর নাজাত পেয়ে যাব।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবির প্রতিবাদ করে বলছেন: হে নাবী আপনি বলে দিন তোমরা কি এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে কোন অঙ্গীকারনামা নিয়েছ? মূলত আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে তারা মিথ্যা আরোপ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: ইয়াহূদীরা বলে, আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীরা বলে আমরা কেবল যে চল্লিশ দিন গো-বৎসের পূজা করেছিলাম সে চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব।
ইকরামার বর্ণনায় পাওয়া যায়, একদা ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বিবাদ করে। তারা বলল: আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। অতঃপর আমাদের স্থানে মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীরা যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মাথার দিকে ইশারা করে বললেন: বরং তোমরাই জাহান্নামে আজীবন থাকবে। তোমাদের স্থলাভিষিক্ত আর কেউ হবে না। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল বারী ১০/২৫৭)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিলেন যে, মৌখিক দাবি যথেষ্ট নয় বরং যারা অপরাধ করবে তারা জাহান্নামী আর যারা সৎ আমল করবে তারা জান্নাতে যাবে। আর তথায় চিরস্থায়ী হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা শুধু মুখে বললে হবে না বরং এর জন্য প্রয়োজন ঈমান ও সৎ আমল।
২. যে কোন ধর্মের অনুসরণ করে তার বিধি-বিধান মেনে চললেই জান্নাতে যাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, বরং ইসলামের অনুসরণ আবশ্যক, তবেই জান্নাত পাওয়া সম্ভব।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের একটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন যে, তারা বলে আমরা মাত্র কয়েকদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করব তারপর নাজাত পেয়ে যাব।
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবির প্রতিবাদ করে বলছেন: হে নাবী আপনি বলে দিন তোমরা কি এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে কোন অঙ্গীকারনামা নিয়েছ? মূলত আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে তারা মিথ্যা আরোপ করে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: ইয়াহূদীরা বলে, আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: ইয়াহূদীরা বলে আমরা কেবল যে চল্লিশ দিন গো-বৎসের পূজা করেছিলাম সে চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব।
ইকরামার বর্ণনায় পাওয়া যায়, একদা ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বিবাদ করে। তারা বলল: আমরা কেবল চল্লিশ দিন জাহান্নামে অবস্থান করব। অতঃপর আমাদের স্থানে মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীরা যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মাথার দিকে ইশারা করে বললেন: বরং তোমরাই জাহান্নামে আজীবন থাকবে। তোমাদের স্থলাভিষিক্ত আর কেউ হবে না। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল বারী ১০/২৫৭)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিলেন যে, মৌখিক দাবি যথেষ্ট নয় বরং যারা অপরাধ করবে তারা জাহান্নামী আর যারা সৎ আমল করবে তারা জান্নাতে যাবে। আর তথায় চিরস্থায়ী হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা শুধু মুখে বললে হবে না বরং এর জন্য প্রয়োজন ঈমান ও সৎ আমল।
২. যে কোন ধর্মের অনুসরণ করে তার বিধি-বিধান মেনে চললেই জান্নাতে যাওয়া ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, বরং ইসলামের অনুসরণ আবশ্যক, তবেই জান্নাত পাওয়া সম্ভব।
2:83
وَ اِذۡ اَخَذۡنَا
مِیۡثَاقَ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ لَا تَعۡبُدُوۡنَ اِلَّا اللّٰہَ ۟ وَ
بِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا وَّ ذِی الۡقُرۡبٰی وَ الۡیَتٰمٰی وَ الۡمَسٰکِیۡنِ
وَ قُوۡلُوۡا لِلنَّاسِ حُسۡنًا وَّ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ ؕ
ثُمَّ تَوَلَّیۡتُمۡ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّنۡکُمۡ وَ اَنۡتُمۡ مُّعۡرِضُوۡنَ ﴿۸۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৩ ও ৮৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে বানী ইসরাঈদেরকে যে সমস্ত আদেশ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সে আদেশগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল তাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে, সালাত কায়িম করবে, যাকাত প্রদান করবে। আদম (আঃ) থেকে শুরু করে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত সকল নাবী-রাসূলগণকে এ পয়গাম প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللّٰهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ)
“আল্লাহর ‘ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেবার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি।”(সূরা নাহল ১৬:৩৬)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَمَآ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِکَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِیْٓ اِلَیْھِ اَنَّھ۫ لَآ اِلٰھَ اِلَّآ اَنَا فَاعْبُدُوْنِ)
আমি তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি তার প্রতি এ ওয়াহী ব্যতীত যে, ‘আমি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই; সুতরাং আমারই ‘ইবাদত করো।’(সূরা আম্বিয়া ২১:২৫)
এবং এ তাওহীদ বা এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তা‘আলা সকল জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ)
“আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এজন্য যে, তারা একমাত্র আমার ইবাদত করবে।” (সূরা যারিআত ৫১:৫৬)
এটাই হল বান্দার ওপর আল্লাহ তা‘আলার সবচেয়ে বড় হক। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হকের সাথে সাথে মাখলুকের মধ্যে যারা সদাচরণ পাবার অধিক হকদার তাদের কথাও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَقَضٰي رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوآ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا)
“তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন তিনি ব্যতীত অন্য কারও ‘ইবাদত না করতে ও পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে।”(সূরা ইসরা ১৭:২৩)
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কোন আমল আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেন: যথাসময়ে সালাত আদায় করা, তারপর পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার করা। তারপর আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৭)
তাই সালাত, যাকাত ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদ বা একত্ববাদের ইবাদত ও পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার এটা সকল উম্মাতের মধ্যেই ছিল। এ উম্মাতে মুহাম্মাদীকেও আল্লাহ তা‘আলা একই নির্দেশ দিয়ে বলেন,
(وَاعْبُدُوا اللہَ وَلَا تُشْرِکُوْا بِھ۪ شَیْئًا وَّبِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّبِذِی الْقُرْبٰی وَالْیَتٰمٰی والْمَسٰکِیْنِ وَالْجَارِ ذِی الْقُرْبٰی وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْۭبِ وَابْنِ السَّبِیْلِﺫ وَمَا مَلَکَتْ اَیْمَانُکُمْﺚ اِنَّ اللہَ لَا یُحِبُّ مَنْ کَانَ مُخْتَالًا فَخُوْرَا)
“তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে ও কোন কিছুকে তাঁর শরীক করবে না; এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে।”(সূরা নিসা ৪:৩৬)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের থেকে আরো অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা জমিনে রক্তপাত করবে না, আত্মীয়-স্বজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেবে না ইত্যাদি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. প্রত্যেক উম্মাতেই সালাত, সিয়াম ও যাকাত ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত ছিল, তবে পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য ছিল।
২. আল্লাহ তা‘আলার হকের পর মাখলুকের মাঝে যারা সবচেয়ে বেশি সদাচরণ পাওয়ার হকদার তারা হলেন পিতা-মাতা।
৩. প্রত্যেক নাবী তাদের স্বজাতীর কাছে তাওহীদের পয়গাম নিয়ে আগমন করেছেন এবং এ দিকেই আহ্বান করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে বানী ইসরাঈদেরকে যে সমস্ত আদেশ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সে আদেশগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল তাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে, সালাত কায়িম করবে, যাকাত প্রদান করবে। আদম (আঃ) থেকে শুরু করে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত সকল নাবী-রাসূলগণকে এ পয়গাম প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللّٰهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ)
“আল্লাহর ‘ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেবার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি।”(সূরা নাহল ১৬:৩৬)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَمَآ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِکَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِیْٓ اِلَیْھِ اَنَّھ۫ لَآ اِلٰھَ اِلَّآ اَنَا فَاعْبُدُوْنِ)
আমি তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি তার প্রতি এ ওয়াহী ব্যতীত যে, ‘আমি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই; সুতরাং আমারই ‘ইবাদত করো।’(সূরা আম্বিয়া ২১:২৫)
এবং এ তাওহীদ বা এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তা‘আলা সকল জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ)
“আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এজন্য যে, তারা একমাত্র আমার ইবাদত করবে।” (সূরা যারিআত ৫১:৫৬)
এটাই হল বান্দার ওপর আল্লাহ তা‘আলার সবচেয়ে বড় হক। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হকের সাথে সাথে মাখলুকের মধ্যে যারা সদাচরণ পাবার অধিক হকদার তাদের কথাও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَقَضٰي رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوآ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا)
“তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন তিনি ব্যতীত অন্য কারও ‘ইবাদত না করতে ও পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে।”(সূরা ইসরা ১৭:২৩)
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কোন আমল আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেন: যথাসময়ে সালাত আদায় করা, তারপর পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার করা। তারপর আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৭)
তাই সালাত, যাকাত ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদ বা একত্ববাদের ইবাদত ও পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার এটা সকল উম্মাতের মধ্যেই ছিল। এ উম্মাতে মুহাম্মাদীকেও আল্লাহ তা‘আলা একই নির্দেশ দিয়ে বলেন,
(وَاعْبُدُوا اللہَ وَلَا تُشْرِکُوْا بِھ۪ شَیْئًا وَّبِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّبِذِی الْقُرْبٰی وَالْیَتٰمٰی والْمَسٰکِیْنِ وَالْجَارِ ذِی الْقُرْبٰی وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْۭبِ وَابْنِ السَّبِیْلِﺫ وَمَا مَلَکَتْ اَیْمَانُکُمْﺚ اِنَّ اللہَ لَا یُحِبُّ مَنْ کَانَ مُخْتَالًا فَخُوْرَا)
“তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে ও কোন কিছুকে তাঁর শরীক করবে না; এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে।”(সূরা নিসা ৪:৩৬)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের থেকে আরো অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা জমিনে রক্তপাত করবে না, আত্মীয়-স্বজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেবে না ইত্যাদি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. প্রত্যেক উম্মাতেই সালাত, সিয়াম ও যাকাত ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত ছিল, তবে পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য ছিল।
২. আল্লাহ তা‘আলার হকের পর মাখলুকের মাঝে যারা সবচেয়ে বেশি সদাচরণ পাওয়ার হকদার তারা হলেন পিতা-মাতা।
৩. প্রত্যেক নাবী তাদের স্বজাতীর কাছে তাওহীদের পয়গাম নিয়ে আগমন করেছেন এবং এ দিকেই আহ্বান করেছেন।
2:84
وَ اِذۡ اَخَذۡنَا
مِیۡثَاقَکُمۡ لَا تَسۡفِکُوۡنَ دِمَآءَکُمۡ وَ لَا تُخۡرِجُوۡنَ اَنۡفُسَکُمۡ
مِّنۡ دِیَارِکُمۡ ثُمَّ اَقۡرَرۡتُمۡ وَ اَنۡتُمۡ تَشۡہَدُوۡنَ ﴿۸۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৩ ও ৮৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে বানী ইসরাঈদেরকে যে সমস্ত আদেশ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সে আদেশগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল তাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে, সালাত কায়িম করবে, যাকাত প্রদান করবে। আদম (আঃ) থেকে শুরু করে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত সকল নাবী-রাসূলগণকে এ পয়গাম প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللّٰهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ)
“আল্লাহর ‘ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেবার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি।”(সূরা নাহল ১৬:৩৬)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَمَآ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِکَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِیْٓ اِلَیْھِ اَنَّھ۫ لَآ اِلٰھَ اِلَّآ اَنَا فَاعْبُدُوْنِ)
আমি তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি তার প্রতি এ ওয়াহী ব্যতীত যে, ‘আমি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই; সুতরাং আমারই ‘ইবাদত করো।’(সূরা আম্বিয়া ২১:২৫)
এবং এ তাওহীদ বা এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তা‘আলা সকল জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ)
“আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এজন্য যে, তারা একমাত্র আমার ইবাদত করবে।” (সূরা যারিআত ৫১:৫৬)
এটাই হল বান্দার ওপর আল্লাহ তা‘আলার সবচেয়ে বড় হক। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হকের সাথে সাথে মাখলুকের মধ্যে যারা সদাচরণ পাবার অধিক হকদার তাদের কথাও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَقَضٰي رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوآ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا)
“তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন তিনি ব্যতীত অন্য কারও ‘ইবাদত না করতে ও পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে।”(সূরা ইসরা ১৭:২৩)
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কোন আমল আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেন: যথাসময়ে সালাত আদায় করা, তারপর পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার করা। তারপর আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৭)
তাই সালাত, যাকাত ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদ বা একত্ববাদের ইবাদত ও পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার এটা সকল উম্মাতের মধ্যেই ছিল। এ উম্মাতে মুহাম্মাদীকেও আল্লাহ তা‘আলা একই নির্দেশ দিয়ে বলেন,
(وَاعْبُدُوا اللہَ وَلَا تُشْرِکُوْا بِھ۪ شَیْئًا وَّبِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّبِذِی الْقُرْبٰی وَالْیَتٰمٰی والْمَسٰکِیْنِ وَالْجَارِ ذِی الْقُرْبٰی وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْۭبِ وَابْنِ السَّبِیْلِﺫ وَمَا مَلَکَتْ اَیْمَانُکُمْﺚ اِنَّ اللہَ لَا یُحِبُّ مَنْ کَانَ مُخْتَالًا فَخُوْرَا)
“তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে ও কোন কিছুকে তাঁর শরীক করবে না; এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে।”(সূরা নিসা ৪:৩৬)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের থেকে আরো অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা জমিনে রক্তপাত করবে না, আত্মীয়-স্বজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেবে না ইত্যাদি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. প্রত্যেক উম্মাতেই সালাত, সিয়াম ও যাকাত ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত ছিল, তবে পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য ছিল।
২. আল্লাহ তা‘আলার হকের পর মাখলুকের মাঝে যারা সবচেয়ে বেশি সদাচরণ পাওয়ার হকদার তারা হলেন পিতা-মাতা।
৩. প্রত্যেক নাবী তাদের স্বজাতীর কাছে তাওহীদের পয়গাম নিয়ে আগমন করেছেন এবং এ দিকেই আহ্বান করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে বানী ইসরাঈদেরকে যে সমস্ত আদেশ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সে আদেশগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল তাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে, সালাত কায়িম করবে, যাকাত প্রদান করবে। আদম (আঃ) থেকে শুরু করে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত সকল নাবী-রাসূলগণকে এ পয়গাম প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللّٰهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ)
“আল্লাহর ‘ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেবার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি।”(সূরা নাহল ১৬:৩৬)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَمَآ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِکَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِیْٓ اِلَیْھِ اَنَّھ۫ لَآ اِلٰھَ اِلَّآ اَنَا فَاعْبُدُوْنِ)
আমি তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি তার প্রতি এ ওয়াহী ব্যতীত যে, ‘আমি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই; সুতরাং আমারই ‘ইবাদত করো।’(সূরা আম্বিয়া ২১:২৫)
এবং এ তাওহীদ বা এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তা‘আলা সকল জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ)
“আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এজন্য যে, তারা একমাত্র আমার ইবাদত করবে।” (সূরা যারিআত ৫১:৫৬)
এটাই হল বান্দার ওপর আল্লাহ তা‘আলার সবচেয়ে বড় হক। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হকের সাথে সাথে মাখলুকের মধ্যে যারা সদাচরণ পাবার অধিক হকদার তাদের কথাও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَقَضٰي رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوآ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا)
“তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন তিনি ব্যতীত অন্য কারও ‘ইবাদত না করতে ও পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে।”(সূরা ইসরা ১৭:২৩)
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কোন আমল আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেন: যথাসময়ে সালাত আদায় করা, তারপর পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার করা। তারপর আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৭)
তাই সালাত, যাকাত ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদ বা একত্ববাদের ইবাদত ও পিতা-মাতার সাথে সদ্বব্যবহার এটা সকল উম্মাতের মধ্যেই ছিল। এ উম্মাতে মুহাম্মাদীকেও আল্লাহ তা‘আলা একই নির্দেশ দিয়ে বলেন,
(وَاعْبُدُوا اللہَ وَلَا تُشْرِکُوْا بِھ۪ شَیْئًا وَّبِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّبِذِی الْقُرْبٰی وَالْیَتٰمٰی والْمَسٰکِیْنِ وَالْجَارِ ذِی الْقُرْبٰی وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْۭبِ وَابْنِ السَّبِیْلِﺫ وَمَا مَلَکَتْ اَیْمَانُکُمْﺚ اِنَّ اللہَ لَا یُحِبُّ مَنْ کَانَ مُخْتَالًا فَخُوْرَا)
“তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে ও কোন কিছুকে তাঁর শরীক করবে না; এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে।”(সূরা নিসা ৪:৩৬)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের থেকে আরো অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন যে, তারা জমিনে রক্তপাত করবে না, আত্মীয়-স্বজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেবে না ইত্যাদি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. প্রত্যেক উম্মাতেই সালাত, সিয়াম ও যাকাত ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত ছিল, তবে পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য ছিল।
২. আল্লাহ তা‘আলার হকের পর মাখলুকের মাঝে যারা সবচেয়ে বেশি সদাচরণ পাওয়ার হকদার তারা হলেন পিতা-মাতা।
৩. প্রত্যেক নাবী তাদের স্বজাতীর কাছে তাওহীদের পয়গাম নিয়ে আগমন করেছেন এবং এ দিকেই আহ্বান করেছেন।
2:85
ثُمَّ اَنۡتُمۡ
ہٰۤـؤُلَآءِ تَقۡتُلُوۡنَ اَنۡفُسَکُمۡ وَ تُخۡرِجُوۡنَ فَرِیۡقًا مِّنۡکُمۡ
مِّنۡ دِیَارِہِمۡ ۫ تَظٰہَرُوۡنَ عَلَیۡہِمۡ بِالۡاِثۡمِ وَ الۡعُدۡوَانِ ؕ وَ
اِنۡ یَّاۡتُوۡکُمۡ اُسٰرٰی تُفٰدُوۡہُمۡ وَ ہُوَ مُحَرَّمٌ عَلَیۡکُمۡ
اِخۡرَاجُہُمۡ ؕ اَفَتُؤۡمِنُوۡنَ بِبَعۡضِ الۡکِتٰبِ وَ تَکۡفُرُوۡنَ بِبَعۡضٍ ۚ
فَمَا جَزَآءُ مَنۡ یَّفۡعَلُ ذٰلِکَ مِنۡکُمۡ اِلَّا خِزۡیٌ فِی الۡحَیٰوۃِ
الدُّنۡیَا ۚ وَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ یُرَدُّوۡنَ اِلٰۤی اَشَدِّ الۡعَذَابِ ؕ وَ
مَا اللّٰہُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸۵﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৫ ও ৮৬ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের থেকে যে সকল অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন তারা তা ভঙ্গ করে নিজেরা পরস্পর রক্তপাত, ঝগড়া-বিবাদ শুরু করল। একে অপরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দিল এবং জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করতে শুরু করল।
মদীনার আনসারদের দু’টি গোত্র ছিল: ১. আউস ও ২. খাযরায। ইসলাম পূর্বযুগে এ গোত্রদ্বয়ের মধ্যে কখনো কোন মিল ছিল না। পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকত। মদীনার ইয়াহূদীদের তিনটি গোত্র ছিল: ১. বনু-কাইনুকা, ২. বনু নাযীর ও ৩. বনু কুরাইযা।
বনু কাইনুকা ও বনু নাযীর খাযরাজের পক্ষপাতি ছিল এবং তাদের বন্ধুতে পরিণত হয়েছিল। আর বনু কুরাইযার বন্ধুত্ব ছিল আউসের সঙ্গে। আউস ও খাযরাজের মধ্যে যখন যুদ্ধ শুরু হত তখন ইয়াহূদীদের তিনটি দল নিজ নিজ মিত্রের সঙ্গে যোগ দিয়ে শত্র“দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত। দুই পক্ষের ইয়াহূদী স্বয়ং তাদেরই হাতে নিহত হত এবং সুযোগ পেলে একে অপরের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিত এবং দেশ থেকে তাড়িয়ে দিত। ধন-সম্পদও দখল করে নিত। যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে পরাজিত দলের বন্দীদেরকে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিত এবং বলত, আমাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ আছে যে, আমাদের মধ্যে যদি কেউ বন্দী হয়ে যায় তবে আমরা যেন তাদেরকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নেই। তারই উত্তরে মহান আল্লাহ তাদেরকে বলেছেন: এর কারণ কী যে, আমার এ হুকুম মানছ, কিন্তু আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম তোমরা পরস্পর হানাহানি কর না, একে অপরকে বাড়ি হতে বের করে দিও না, তা মানছ না কেন? এক হুকুমের ওপর ঈমান আনা এবং অন্য হুকুমকে অমান্য করা- এটা আবার কোন্ ঈমানদারী? আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ اَنْتُمْ ھٰٓؤُلَا۬ئِ تَقْتُلُوْنَ اَنْفُسَکُمْ وَتُخْرِجُوْنَ فَرِیْقًا مِّنْکُمْ)
“অনন্তর তোমরাই সেই লোক যারা (পরস্পর) তোমাদের নফসসমূহকে হত্যা করছ এবং তোমরা তোমাদের মধ্য হতে এক দলকে তাদের গৃহ হতে বহিষ্কার করে দিচ্ছ।”(সূরাহ বাকারাহ ২:৮৫)
কারণ তোমরা এক মতের লোক এবং সবাই এক আত্মার মত।
(اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْکِتٰبِ) –
‘তবে কি তোমরা গ্রন্থের (তাওরাতের) কিয়দাংশ বিশ্বাস কর’এর পূর্বের অংশ দ্বারা সুস্পষ্ট হয় যে, তারা বন্দীদের মুক্তিপণের ওপরই শুধু ঈমান এনেছিল। আর লোকজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেয়, তাদের সাথে যুদ্ধ করে এ অংশের প্রতি কুফরী করেছিল। যারা এ সমস্ত কর্মকাণ্ড করে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও পরকালে কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। এ বিধান শুধু ইয়াহূদীদের জন্য নয় বরং মুসলিমদের জন্যও প্রযোজ্য। অতএব কুরআনের কিছু বিধান মানব আর কিছু বিধান মানব না এমন আচরণ হলে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নিজের কুপ্রবৃত্তি বা দলের ও মতের সাথে শরীয়তের যে সকল বিধান মুআফিক হবে তা মানব আর যা মুআফিক হবে না তা মানব না এরূপ করা কুফরী কাজ।
২. আমাদের উচিত ইসলামের সকল বিধানকে মাথা পেতে মেনে নেয়া। অন্যথায় মুসলিম হতে পারব না।
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের থেকে যে সকল অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন তারা তা ভঙ্গ করে নিজেরা পরস্পর রক্তপাত, ঝগড়া-বিবাদ শুরু করল। একে অপরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দিল এবং জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করতে শুরু করল।
মদীনার আনসারদের দু’টি গোত্র ছিল: ১. আউস ও ২. খাযরায। ইসলাম পূর্বযুগে এ গোত্রদ্বয়ের মধ্যে কখনো কোন মিল ছিল না। পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকত। মদীনার ইয়াহূদীদের তিনটি গোত্র ছিল: ১. বনু-কাইনুকা, ২. বনু নাযীর ও ৩. বনু কুরাইযা।
বনু কাইনুকা ও বনু নাযীর খাযরাজের পক্ষপাতি ছিল এবং তাদের বন্ধুতে পরিণত হয়েছিল। আর বনু কুরাইযার বন্ধুত্ব ছিল আউসের সঙ্গে। আউস ও খাযরাজের মধ্যে যখন যুদ্ধ শুরু হত তখন ইয়াহূদীদের তিনটি দল নিজ নিজ মিত্রের সঙ্গে যোগ দিয়ে শত্র“দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত। দুই পক্ষের ইয়াহূদী স্বয়ং তাদেরই হাতে নিহত হত এবং সুযোগ পেলে একে অপরের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিত এবং দেশ থেকে তাড়িয়ে দিত। ধন-সম্পদও দখল করে নিত। যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে পরাজিত দলের বন্দীদেরকে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিত এবং বলত, আমাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ আছে যে, আমাদের মধ্যে যদি কেউ বন্দী হয়ে যায় তবে আমরা যেন তাদেরকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নেই। তারই উত্তরে মহান আল্লাহ তাদেরকে বলেছেন: এর কারণ কী যে, আমার এ হুকুম মানছ, কিন্তু আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম তোমরা পরস্পর হানাহানি কর না, একে অপরকে বাড়ি হতে বের করে দিও না, তা মানছ না কেন? এক হুকুমের ওপর ঈমান আনা এবং অন্য হুকুমকে অমান্য করা- এটা আবার কোন্ ঈমানদারী? আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ اَنْتُمْ ھٰٓؤُلَا۬ئِ تَقْتُلُوْنَ اَنْفُسَکُمْ وَتُخْرِجُوْنَ فَرِیْقًا مِّنْکُمْ)
“অনন্তর তোমরাই সেই লোক যারা (পরস্পর) তোমাদের নফসসমূহকে হত্যা করছ এবং তোমরা তোমাদের মধ্য হতে এক দলকে তাদের গৃহ হতে বহিষ্কার করে দিচ্ছ।”(সূরাহ বাকারাহ ২:৮৫)
কারণ তোমরা এক মতের লোক এবং সবাই এক আত্মার মত।
(اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْکِتٰبِ) –
‘তবে কি তোমরা গ্রন্থের (তাওরাতের) কিয়দাংশ বিশ্বাস কর’এর পূর্বের অংশ দ্বারা সুস্পষ্ট হয় যে, তারা বন্দীদের মুক্তিপণের ওপরই শুধু ঈমান এনেছিল। আর লোকজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেয়, তাদের সাথে যুদ্ধ করে এ অংশের প্রতি কুফরী করেছিল। যারা এ সমস্ত কর্মকাণ্ড করে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও পরকালে কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। এ বিধান শুধু ইয়াহূদীদের জন্য নয় বরং মুসলিমদের জন্যও প্রযোজ্য। অতএব কুরআনের কিছু বিধান মানব আর কিছু বিধান মানব না এমন আচরণ হলে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নিজের কুপ্রবৃত্তি বা দলের ও মতের সাথে শরীয়তের যে সকল বিধান মুআফিক হবে তা মানব আর যা মুআফিক হবে না তা মানব না এরূপ করা কুফরী কাজ।
২. আমাদের উচিত ইসলামের সকল বিধানকে মাথা পেতে মেনে নেয়া। অন্যথায় মুসলিম হতে পারব না।
2:86
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ
اشۡتَرَوُا الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا بِالۡاٰخِرَۃِ ۫ فَلَا یُخَفَّفُ عَنۡہُمُ
الۡعَذَابُ وَ لَا ہُمۡ یُنۡصَرُوۡنَ ﴿٪۸۶﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৫ ও ৮৬ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের থেকে যে সকল অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন তারা তা ভঙ্গ করে নিজেরা পরস্পর রক্তপাত, ঝগড়া-বিবাদ শুরু করল। একে অপরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দিল এবং জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করতে শুরু করল।
মদীনার আনসারদের দু’টি গোত্র ছিল: ১. আউস ও ২. খাযরায। ইসলাম পূর্বযুগে এ গোত্রদ্বয়ের মধ্যে কখনো কোন মিল ছিল না। পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকত। মদীনার ইয়াহূদীদের তিনটি গোত্র ছিল: ১. বনু-কাইনুকা, ২. বনু নাযীর ও ৩. বনু কুরাইযা।
বনু কাইনুকা ও বনু নাযীর খাযরাজের পক্ষপাতি ছিল এবং তাদের বন্ধুতে পরিণত হয়েছিল। আর বনু কুরাইযার বন্ধুত্ব ছিল আউসের সঙ্গে। আউস ও খাযরাজের মধ্যে যখন যুদ্ধ শুরু হত তখন ইয়াহূদীদের তিনটি দল নিজ নিজ মিত্রের সঙ্গে যোগ দিয়ে শত্র“দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত। দুই পক্ষের ইয়াহূদী স্বয়ং তাদেরই হাতে নিহত হত এবং সুযোগ পেলে একে অপরের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিত এবং দেশ থেকে তাড়িয়ে দিত। ধন-সম্পদও দখল করে নিত। যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে পরাজিত দলের বন্দীদেরকে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিত এবং বলত, আমাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ আছে যে, আমাদের মধ্যে যদি কেউ বন্দী হয়ে যায় তবে আমরা যেন তাদেরকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নেই। তারই উত্তরে মহান আল্লাহ তাদেরকে বলেছেন: এর কারণ কী যে, আমার এ হুকুম মানছ, কিন্তু আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম তোমরা পরস্পর হানাহানি কর না, একে অপরকে বাড়ি হতে বের করে দিও না, তা মানছ না কেন? এক হুকুমের ওপর ঈমান আনা এবং অন্য হুকুমকে অমান্য করা- এটা আবার কোন্ ঈমানদারী? আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ اَنْتُمْ ھٰٓؤُلَا۬ئِ تَقْتُلُوْنَ اَنْفُسَکُمْ وَتُخْرِجُوْنَ فَرِیْقًا مِّنْکُمْ)
“অনন্তর তোমরাই সেই লোক যারা (পরস্পর) তোমাদের নফসসমূহকে হত্যা করছ এবং তোমরা তোমাদের মধ্য হতে এক দলকে তাদের গৃহ হতে বহিষ্কার করে দিচ্ছ।”(সূরাহ বাকারাহ ২:৮৫)
কারণ তোমরা এক মতের লোক এবং সবাই এক আত্মার মত।
(اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْکِتٰبِ) –
‘তবে কি তোমরা গ্রন্থের (তাওরাতের) কিয়দাংশ বিশ্বাস কর’এর পূর্বের অংশ দ্বারা সুস্পষ্ট হয় যে, তারা বন্দীদের মুক্তিপণের ওপরই শুধু ঈমান এনেছিল। আর লোকজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেয়, তাদের সাথে যুদ্ধ করে এ অংশের প্রতি কুফরী করেছিল। যারা এ সমস্ত কর্মকাণ্ড করে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও পরকালে কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। এ বিধান শুধু ইয়াহূদীদের জন্য নয় বরং মুসলিমদের জন্যও প্রযোজ্য। অতএব কুরআনের কিছু বিধান মানব আর কিছু বিধান মানব না এমন আচরণ হলে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নিজের কুপ্রবৃত্তি বা দলের ও মতের সাথে শরীয়তের যে সকল বিধান মুআফিক হবে তা মানব আর যা মুআফিক হবে না তা মানব না এরূপ করা কুফরী কাজ।
২. আমাদের উচিত ইসলামের সকল বিধানকে মাথা পেতে মেনে নেয়া। অন্যথায় মুসলিম হতে পারব না।
আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদীদের থেকে যে সকল অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন তারা তা ভঙ্গ করে নিজেরা পরস্পর রক্তপাত, ঝগড়া-বিবাদ শুরু করল। একে অপরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দিল এবং জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করতে শুরু করল।
মদীনার আনসারদের দু’টি গোত্র ছিল: ১. আউস ও ২. খাযরায। ইসলাম পূর্বযুগে এ গোত্রদ্বয়ের মধ্যে কখনো কোন মিল ছিল না। পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকত। মদীনার ইয়াহূদীদের তিনটি গোত্র ছিল: ১. বনু-কাইনুকা, ২. বনু নাযীর ও ৩. বনু কুরাইযা।
বনু কাইনুকা ও বনু নাযীর খাযরাজের পক্ষপাতি ছিল এবং তাদের বন্ধুতে পরিণত হয়েছিল। আর বনু কুরাইযার বন্ধুত্ব ছিল আউসের সঙ্গে। আউস ও খাযরাজের মধ্যে যখন যুদ্ধ শুরু হত তখন ইয়াহূদীদের তিনটি দল নিজ নিজ মিত্রের সঙ্গে যোগ দিয়ে শত্র“দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত। দুই পক্ষের ইয়াহূদী স্বয়ং তাদেরই হাতে নিহত হত এবং সুযোগ পেলে একে অপরের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিত এবং দেশ থেকে তাড়িয়ে দিত। ধন-সম্পদও দখল করে নিত। যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে পরাজিত দলের বন্দীদেরকে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিত এবং বলত, আমাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ আছে যে, আমাদের মধ্যে যদি কেউ বন্দী হয়ে যায় তবে আমরা যেন তাদেরকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নেই। তারই উত্তরে মহান আল্লাহ তাদেরকে বলেছেন: এর কারণ কী যে, আমার এ হুকুম মানছ, কিন্তু আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম তোমরা পরস্পর হানাহানি কর না, একে অপরকে বাড়ি হতে বের করে দিও না, তা মানছ না কেন? এক হুকুমের ওপর ঈমান আনা এবং অন্য হুকুমকে অমান্য করা- এটা আবার কোন্ ঈমানদারী? আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(ثُمَّ اَنْتُمْ ھٰٓؤُلَا۬ئِ تَقْتُلُوْنَ اَنْفُسَکُمْ وَتُخْرِجُوْنَ فَرِیْقًا مِّنْکُمْ)
“অনন্তর তোমরাই সেই লোক যারা (পরস্পর) তোমাদের নফসসমূহকে হত্যা করছ এবং তোমরা তোমাদের মধ্য হতে এক দলকে তাদের গৃহ হতে বহিষ্কার করে দিচ্ছ।”(সূরাহ বাকারাহ ২:৮৫)
কারণ তোমরা এক মতের লোক এবং সবাই এক আত্মার মত।
(اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْکِتٰبِ) –
‘তবে কি তোমরা গ্রন্থের (তাওরাতের) কিয়দাংশ বিশ্বাস কর’এর পূর্বের অংশ দ্বারা সুস্পষ্ট হয় যে, তারা বন্দীদের মুক্তিপণের ওপরই শুধু ঈমান এনেছিল। আর লোকজনদেরকে স্বীয় বাসস্থান থেকে বের করে দেয়, তাদের সাথে যুদ্ধ করে এ অংশের প্রতি কুফরী করেছিল। যারা এ সমস্ত কর্মকাণ্ড করে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও পরকালে কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। এ বিধান শুধু ইয়াহূদীদের জন্য নয় বরং মুসলিমদের জন্যও প্রযোজ্য। অতএব কুরআনের কিছু বিধান মানব আর কিছু বিধান মানব না এমন আচরণ হলে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নিজের কুপ্রবৃত্তি বা দলের ও মতের সাথে শরীয়তের যে সকল বিধান মুআফিক হবে তা মানব আর যা মুআফিক হবে না তা মানব না এরূপ করা কুফরী কাজ।
২. আমাদের উচিত ইসলামের সকল বিধানকে মাথা পেতে মেনে নেয়া। অন্যথায় মুসলিম হতে পারব না।
2:87
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا
مُوۡسَی الۡکِتٰبَ وَ قَفَّیۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِہٖ بِالرُّسُلِ ۫ وَ اٰتَیۡنَا
عِیۡسَی ابۡنَ مَرۡیَمَ الۡبَیِّنٰتِ وَ اَیَّدۡنٰہُ بِرُوۡحِ الۡقُدُسِ ؕ
اَفَکُلَّمَا جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌۢ بِمَا لَا تَہۡوٰۤی اَنۡفُسُکُمُ
اسۡتَکۡبَرۡتُمۡ ۚ فَفَرِیۡقًا کَذَّبۡتُمۡ ۫ وَ فَرِیۡقًا تَقۡتُلُوۡنَ ﴿۸۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের অবাধ্যতা, অহমিকা ও প্রবৃত্তি পূজার বর্ণনা তুলে ধরার পর যে সকল নেয়ামত তাদেরকে প্রদান করেছিলেন তার অন্যতম একটি এখানে উল্লেখ করে বলছেন যে, আমি মূসাকে কিতাব তথা তাওরাত দান করেছি। কিন্তু তারা (ইয়াহূদীরা) তাওরাতেও পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেছে এবং তার নির্দেশ অমান্য করেছে ও অপব্যাখ্যা করেছে। মূসা (আঃ)-এর পর বানী ইসরাঈলের মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা ধারাবাহিকভাবে নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। যেন তারা তাওরাতের বিধি-বিধান অনুপাতে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّآ اَنْزَلْنَا التَّوْرٰٿةَ فِیْھَا ھُدًی وَّنُوْرٌﺆ یَحْکُمُ بِھَا النَّبِیُّوْنَ الَّذِیْنَ اَسْلَمُوْا لِلَّذِیْنَ ھَادُوْا وَالرَّبّٰنِیُّوْنَ وَالْاَحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوْا مِنْ کِتٰبِ اللہِ وَکَانُوْا عَلَیْھِ شُھَدَا۬ئَﺆ)
“আমি তো অবতীর্ণ করেছিলাম তাওরাত যাতে ছিল হিদায়াত ও নূর। এ তাওরাতের মাধ্যমে ইয়াহূদীদের মীমাংসা দিত আল্লাহর অনুগত নাবী, দরবেশ ও ‘আলিমরা। কেননা তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের হিফাযাতের আদেশ প্রদান করা হয়েছিল আর তারা ছিল তার সাক্ষী।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৪৪)
কিন্তু বানী ইসরাঈলরা নাবীদের সাথে খুব অসদাচরণ করত। এসনদটি তারা কোন কোন নাবীদেরকে হত্যাও করেছে। আবার কোন কোন নাবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। এর কারণ ছিল এটাই যে, নাবীরা যা কিছু নিয়ে আসত তা তাদের মনঃপুত হত না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَفَکُلَّمَا جَا۬ءَکُمْ رَسُوْلٌۭ بِمَا لَا تَھْوٰٓی اَنْفُسُکُمُ اسْتَکْبَرْتُمْﺆ فَفَرِیْقًا کَذَّبْتُمْﺑ وَفَرِیْقًا تَقْتُلُوْنَ)
“কিন্তু পরে যখন তোমাদের নিকট কোন রাসূল তোমাদের প্রবৃত্তি যা ইচ্ছা করত না তা নিয়ে উপস্থিত হল, তখন তোমরা অহংকার করলে; অবশেষে একদলকে মিথ্যাবাদী বললে এবং একদলকে হত্যা করলে।”(সূরা বাকারাহ ২:৮৭)
বানী ইসরাঈলের মাঝে নাবীদের আগমনের ধারাবাহিকতায় মূসা (আঃ)-র পর ঈসা (আঃ)- আগমন করেন। তিনি বানী ইসরাঈলের সর্বশেষ নাবী ও কিতাবধারী রাসূল। তিনি ইঞ্জিল প্রাপ্ত হয়েছিলেন। তাঁর পর থেকে শেষ নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আবির্ভাব পর্যন্ত কোন নাবী আগমন করেননি। এ সময়টাকে
فَتْرَةُ الرُّسُلِ
বা রাসূল আগমনের বিরতিকাল বলা হয়। কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বে ঈসা (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে পুনরায় পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং মুহাম্মাদী শরীয়ত অনুসরণে ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে সারা পৃথিবীতে শান্তির রাজ্য কায়িম করবেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী প্রদান করেছিলেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَرَسُوْلًا اِلٰی بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَﺃ اَنِّیْ قَدْ جِئْتُکُمْ بِاٰیَةٍ مِّنْ رَّبِّکُمْﺫ اَنِّیْٓ اَخْلُقُ لَکُمْ مِّنَ الطِّیْنِ کَھَیْئَةِ الطَّیْرِ فَاَنْفُخُ فِیْھِ فَیَکُوْنُ طَیْرًۭا بِاِذْنِ اللہِﺆ وَاُبْرِیُٔ الْاَکْمَھَ وَالْاَبْرَصَ وَاُحْیِ الْمَوْتٰی بِاِذْنِ اللہِﺆ وَاُنَبِّئُکُمْ بِمَا تَاْکُلُوْنَ وَمَا تَدَّخِرُوْنَﺫ فِیْ بُیُوْتِکُمْﺚ)
“আর তিনি হবেন বানী ইসরাঈলের একজন রাসূল। (তিনি কওমের কাছে গিয়ে বলবেন) আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে কিছু নিদর্শন নিয়ে এসেছি। যেমন আমি তোমাদের জন্য কাদামাটি দিয়ে পাখি আকৃতির ন্যায় তৈরী করব, তারপর তাতে ফুঁৎকার দেব, ফলে আল্লাহর নির্দেশে তা পাখিতে পরিণত হবে। আর আমি আল্লাহর নির্দেশে জন্মান্ধ ও শ্বেত রোগীকে ভাল করে দেব, মৃতকে জীবিত করব এবং তোমরা যা খাও এবং তোমাদের ঘরে যা জমা রাখ তাও বলে দেব।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৪৯)
(وَاَیَّدْنٰھُ بِرُوْحِ الْقُدُسِ)
‘জিবরীল দ্বারা তাকে শক্তিশালী করেছি’রুহুল কুদুস হলেন জিবরীল (আঃ)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(نَزَلَ بِهِ الرُّوحُ الْأَمِينُ)
জিব্রাঈল এটা নিয়ে অবতরণ করেছে। (সূরা শুআ‘রা ২৬:১৯৩)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
اللّٰهُمَّ أَيِّدْهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ ما نَافَحَ عن نَبِيِّكَ
হে আল্লাহ! তুমি হাসানকে রুহুল কুদুস দ্বারা শক্তিশালী কর যতক্ষণ সে আপনার নাবীর পক্ষ থেকে উত্তর দিচ্ছে। (আবূ দাঊদ হা: ৫০১৫, তিরমিযী হা: ২৮৪৬, সহীহ) অতএব বুঝা যাচ্ছে রুহুল কুদুস দ্বারা উদ্দেশ্য হল জিবরীল (আঃ)। আল্লাহ তা‘আলা ঈসা (আঃ)-কে জিবরীল দ্বারা সহযোগিতা করেছিলেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা নাবীদেরকে ফেরেশতার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন।
২. নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা দেন তা মাথা পেতে মেনে নিতে হবে অন্যথায় মু’মিন হওয়া যাবে না, যেমন বানী ইসরাঈলের এক শ্রেণি নাবীদের পয়গাম মনঃপুত না হলে মেনে নিত না।
আল্লাহ তা‘আলা বানী ইসরাঈলের অবাধ্যতা, অহমিকা ও প্রবৃত্তি পূজার বর্ণনা তুলে ধরার পর যে সকল নেয়ামত তাদেরকে প্রদান করেছিলেন তার অন্যতম একটি এখানে উল্লেখ করে বলছেন যে, আমি মূসাকে কিতাব তথা তাওরাত দান করেছি। কিন্তু তারা (ইয়াহূদীরা) তাওরাতেও পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেছে এবং তার নির্দেশ অমান্য করেছে ও অপব্যাখ্যা করেছে। মূসা (আঃ)-এর পর বানী ইসরাঈলের মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা ধারাবাহিকভাবে নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। যেন তারা তাওরাতের বিধি-বিধান অনুপাতে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّآ اَنْزَلْنَا التَّوْرٰٿةَ فِیْھَا ھُدًی وَّنُوْرٌﺆ یَحْکُمُ بِھَا النَّبِیُّوْنَ الَّذِیْنَ اَسْلَمُوْا لِلَّذِیْنَ ھَادُوْا وَالرَّبّٰنِیُّوْنَ وَالْاَحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوْا مِنْ کِتٰبِ اللہِ وَکَانُوْا عَلَیْھِ شُھَدَا۬ئَﺆ)
“আমি তো অবতীর্ণ করেছিলাম তাওরাত যাতে ছিল হিদায়াত ও নূর। এ তাওরাতের মাধ্যমে ইয়াহূদীদের মীমাংসা দিত আল্লাহর অনুগত নাবী, দরবেশ ও ‘আলিমরা। কেননা তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের হিফাযাতের আদেশ প্রদান করা হয়েছিল আর তারা ছিল তার সাক্ষী।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৪৪)
কিন্তু বানী ইসরাঈলরা নাবীদের সাথে খুব অসদাচরণ করত। এসনদটি তারা কোন কোন নাবীদেরকে হত্যাও করেছে। আবার কোন কোন নাবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। এর কারণ ছিল এটাই যে, নাবীরা যা কিছু নিয়ে আসত তা তাদের মনঃপুত হত না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَفَکُلَّمَا جَا۬ءَکُمْ رَسُوْلٌۭ بِمَا لَا تَھْوٰٓی اَنْفُسُکُمُ اسْتَکْبَرْتُمْﺆ فَفَرِیْقًا کَذَّبْتُمْﺑ وَفَرِیْقًا تَقْتُلُوْنَ)
“কিন্তু পরে যখন তোমাদের নিকট কোন রাসূল তোমাদের প্রবৃত্তি যা ইচ্ছা করত না তা নিয়ে উপস্থিত হল, তখন তোমরা অহংকার করলে; অবশেষে একদলকে মিথ্যাবাদী বললে এবং একদলকে হত্যা করলে।”(সূরা বাকারাহ ২:৮৭)
বানী ইসরাঈলের মাঝে নাবীদের আগমনের ধারাবাহিকতায় মূসা (আঃ)-র পর ঈসা (আঃ)- আগমন করেন। তিনি বানী ইসরাঈলের সর্বশেষ নাবী ও কিতাবধারী রাসূল। তিনি ইঞ্জিল প্রাপ্ত হয়েছিলেন। তাঁর পর থেকে শেষ নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আবির্ভাব পর্যন্ত কোন নাবী আগমন করেননি। এ সময়টাকে
فَتْرَةُ الرُّسُلِ
বা রাসূল আগমনের বিরতিকাল বলা হয়। কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বে ঈসা (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে পুনরায় পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং মুহাম্মাদী শরীয়ত অনুসরণে ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে সারা পৃথিবীতে শান্তির রাজ্য কায়িম করবেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী প্রদান করেছিলেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَرَسُوْلًا اِلٰی بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَﺃ اَنِّیْ قَدْ جِئْتُکُمْ بِاٰیَةٍ مِّنْ رَّبِّکُمْﺫ اَنِّیْٓ اَخْلُقُ لَکُمْ مِّنَ الطِّیْنِ کَھَیْئَةِ الطَّیْرِ فَاَنْفُخُ فِیْھِ فَیَکُوْنُ طَیْرًۭا بِاِذْنِ اللہِﺆ وَاُبْرِیُٔ الْاَکْمَھَ وَالْاَبْرَصَ وَاُحْیِ الْمَوْتٰی بِاِذْنِ اللہِﺆ وَاُنَبِّئُکُمْ بِمَا تَاْکُلُوْنَ وَمَا تَدَّخِرُوْنَﺫ فِیْ بُیُوْتِکُمْﺚ)
“আর তিনি হবেন বানী ইসরাঈলের একজন রাসূল। (তিনি কওমের কাছে গিয়ে বলবেন) আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে কিছু নিদর্শন নিয়ে এসেছি। যেমন আমি তোমাদের জন্য কাদামাটি দিয়ে পাখি আকৃতির ন্যায় তৈরী করব, তারপর তাতে ফুঁৎকার দেব, ফলে আল্লাহর নির্দেশে তা পাখিতে পরিণত হবে। আর আমি আল্লাহর নির্দেশে জন্মান্ধ ও শ্বেত রোগীকে ভাল করে দেব, মৃতকে জীবিত করব এবং তোমরা যা খাও এবং তোমাদের ঘরে যা জমা রাখ তাও বলে দেব।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:৪৯)
(وَاَیَّدْنٰھُ بِرُوْحِ الْقُدُسِ)
‘জিবরীল দ্বারা তাকে শক্তিশালী করেছি’রুহুল কুদুস হলেন জিবরীল (আঃ)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(نَزَلَ بِهِ الرُّوحُ الْأَمِينُ)
জিব্রাঈল এটা নিয়ে অবতরণ করেছে। (সূরা শুআ‘রা ২৬:১৯৩)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
اللّٰهُمَّ أَيِّدْهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ ما نَافَحَ عن نَبِيِّكَ
হে আল্লাহ! তুমি হাসানকে রুহুল কুদুস দ্বারা শক্তিশালী কর যতক্ষণ সে আপনার নাবীর পক্ষ থেকে উত্তর দিচ্ছে। (আবূ দাঊদ হা: ৫০১৫, তিরমিযী হা: ২৮৪৬, সহীহ) অতএব বুঝা যাচ্ছে রুহুল কুদুস দ্বারা উদ্দেশ্য হল জিবরীল (আঃ)। আল্লাহ তা‘আলা ঈসা (আঃ)-কে জিবরীল দ্বারা সহযোগিতা করেছিলেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা নাবীদেরকে ফেরেশতার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন।
২. নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা দেন তা মাথা পেতে মেনে নিতে হবে অন্যথায় মু’মিন হওয়া যাবে না, যেমন বানী ইসরাঈলের এক শ্রেণি নাবীদের পয়গাম মনঃপুত না হলে মেনে নিত না।
2:88
وَ قَالُوۡا قُلُوۡبُنَا
غُلۡفٌ ؕ بَلۡ لَّعَنَہُمُ اللّٰہُ بِکُفۡرِہِمۡ فَقَلِیۡلًا مَّا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۸۸﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৮-৯০ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ঈমান না আনার ওযর পেশ করে বলে আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত। অতএব হে নাবী! তুমি যা বল আমরা তা বুঝতে পারি না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ)
“তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহ্বান করছো সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত।”(সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১:৫)
এটা তাদের মিথ্যা বানোয়াট উক্তি বরং আল্লাহ তা‘আলা তাদের কুফরীর কারণে তাদের ওপর লা‘নত করেছেন।
জেনে-বুঝে ইয়াহূদীরা কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রত্যাখ্যান করেছে- তারই বর্ণনা এখানে দেয়া হয়েছে।
যখন ইয়াহূদী ও আরবের মুশরিকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধত তখন ইয়াহূদীরা কাফিরদেরকে বলত, অতি সত্বরই একজন বড় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার সত্য কিতাব নিয়ে আবির্ভুত হবেন। আমরা তাঁর অনুসারী হয়ে তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করব যে, তোমাদের নাম-নিশানা দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাবে। তারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করত: হে আল্লাহ! আপনি অতি সত্বরই ঐ নাবীকে পাঠিয়ে দিন যাঁর গুণাবলী আমরা তাওরাতে পাচ্ছি, যাতে আমরা তাঁর ওপর ঈমান এনে তাঁর সঙ্গ লাভ করত আমাদের বাহু মজবুত করতে পারি। আপনার শত্র“দের প্রতিশোধ নিতে পারি। তারা কাফিরদেরকে বলত যে, ঐ নাবীর আগমনের সময় খুবই নিকটবর্তী হয়েছে।
অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হলেন তখন তারা তাঁর মধ্যে সমস্ত নিদর্শন দেখতে পেল, তাকে চিনতে পারল এবং মনে মনে বিশ্বাস করল। কিন্তু যেহেতু তিনি তাদের বংশদ্ভূত ছিলেন না বিধায় তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নবুওয়াতকে অস্বীকার করে বসল। তখন তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ নেমে আসল। বরং মদীনার লোকেরা যারা তাদের (ইয়াহূদীদের) মুখেই এ কথা শুনে আসছিল তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গী হয়ে ইয়াহূদীদের ওপর বিজয় লাভ করে।
একদা মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) বাসার বিন বারা (রাঃ) এবং দাঊদ বিন সালমা (রাঃ) মদীনার ঐ ইয়াহূদীদেরকে বলেই ফেললেন: ‘তোমরাই তো আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের আলোচনা করতে, তাঁর যে গুণাবলী তোমরা বর্ণনা করতে তা সবই তাঁর মধ্যে রয়েছে। এমনকি তোমরা তাকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে কত কথা শোনাতে আর এখন তোমরাই তার প্রতি ঈমান আনছ না কেন? তার সঙ্গী হচ্ছ না কেন? সালাম বিন মিশকিম উত্তর দেয়: আমরা তাঁর কথা বলতাম না। এ আয়াতের মধ্যে তারই বর্ণনা রয়েছে যে, তারা প্রথম হতেই মানত, অপেক্ষমানও ছিল, কিন্তু তাঁর আগমনের পর হিংসা ও অহঙ্কারবশত এবং শাসন ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা কিছু নাযিল করেছেন তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বসে। ফলশ্র“তিতে তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধ এবং অপমানজনক শাস্তি অবধারিত হলো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: অহঙ্কারী লোকেদেরকে কিয়ামাতের দিন মানুষের আকারে পিঁপড়ার ন্যায় উঠানো হবে। তাদেরকে সমস্ত জিনিস পদদলিত করে চলে যাবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের বুলাস নামক কয়েদখানায় নিক্ষেপ করা হবে, যে স্থানের আগুন অন্য স্থানের আগুন অপেক্ষা অনেক বেশী দাহ্যসম্পন্ন। আর তাদেরকে জাহান্নামের পুঁজ, রক্ত ইত্যাদি পান করানো হবে। (তিরমিযী হা: ২৪৯, মুসনাদ আহমাদ হা: ১৬৭৭. হাদীসটি হাসান সহীহ)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অহংকার মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা দেয়, যেমন ইবলিস অহংকারের কারণে বিতাড়িত হয়েছে।
২. অহংকারীদের জাহান্নামের শাস্তির কথা জানতে পারলাম।
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ঈমান না আনার ওযর পেশ করে বলে আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত। অতএব হে নাবী! তুমি যা বল আমরা তা বুঝতে পারি না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ)
“তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহ্বান করছো সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত।”(সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১:৫)
এটা তাদের মিথ্যা বানোয়াট উক্তি বরং আল্লাহ তা‘আলা তাদের কুফরীর কারণে তাদের ওপর লা‘নত করেছেন।
জেনে-বুঝে ইয়াহূদীরা কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রত্যাখ্যান করেছে- তারই বর্ণনা এখানে দেয়া হয়েছে।
যখন ইয়াহূদী ও আরবের মুশরিকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধত তখন ইয়াহূদীরা কাফিরদেরকে বলত, অতি সত্বরই একজন বড় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার সত্য কিতাব নিয়ে আবির্ভুত হবেন। আমরা তাঁর অনুসারী হয়ে তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করব যে, তোমাদের নাম-নিশানা দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাবে। তারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করত: হে আল্লাহ! আপনি অতি সত্বরই ঐ নাবীকে পাঠিয়ে দিন যাঁর গুণাবলী আমরা তাওরাতে পাচ্ছি, যাতে আমরা তাঁর ওপর ঈমান এনে তাঁর সঙ্গ লাভ করত আমাদের বাহু মজবুত করতে পারি। আপনার শত্র“দের প্রতিশোধ নিতে পারি। তারা কাফিরদেরকে বলত যে, ঐ নাবীর আগমনের সময় খুবই নিকটবর্তী হয়েছে।
অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হলেন তখন তারা তাঁর মধ্যে সমস্ত নিদর্শন দেখতে পেল, তাকে চিনতে পারল এবং মনে মনে বিশ্বাস করল। কিন্তু যেহেতু তিনি তাদের বংশদ্ভূত ছিলেন না বিধায় তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নবুওয়াতকে অস্বীকার করে বসল। তখন তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ নেমে আসল। বরং মদীনার লোকেরা যারা তাদের (ইয়াহূদীদের) মুখেই এ কথা শুনে আসছিল তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গী হয়ে ইয়াহূদীদের ওপর বিজয় লাভ করে।
একদা মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) বাসার বিন বারা (রাঃ) এবং দাঊদ বিন সালমা (রাঃ) মদীনার ঐ ইয়াহূদীদেরকে বলেই ফেললেন: ‘তোমরাই তো আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের আলোচনা করতে, তাঁর যে গুণাবলী তোমরা বর্ণনা করতে তা সবই তাঁর মধ্যে রয়েছে। এমনকি তোমরা তাকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে কত কথা শোনাতে আর এখন তোমরাই তার প্রতি ঈমান আনছ না কেন? তার সঙ্গী হচ্ছ না কেন? সালাম বিন মিশকিম উত্তর দেয়: আমরা তাঁর কথা বলতাম না। এ আয়াতের মধ্যে তারই বর্ণনা রয়েছে যে, তারা প্রথম হতেই মানত, অপেক্ষমানও ছিল, কিন্তু তাঁর আগমনের পর হিংসা ও অহঙ্কারবশত এবং শাসন ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা কিছু নাযিল করেছেন তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বসে। ফলশ্র“তিতে তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধ এবং অপমানজনক শাস্তি অবধারিত হলো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: অহঙ্কারী লোকেদেরকে কিয়ামাতের দিন মানুষের আকারে পিঁপড়ার ন্যায় উঠানো হবে। তাদেরকে সমস্ত জিনিস পদদলিত করে চলে যাবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের বুলাস নামক কয়েদখানায় নিক্ষেপ করা হবে, যে স্থানের আগুন অন্য স্থানের আগুন অপেক্ষা অনেক বেশী দাহ্যসম্পন্ন। আর তাদেরকে জাহান্নামের পুঁজ, রক্ত ইত্যাদি পান করানো হবে। (তিরমিযী হা: ২৪৯, মুসনাদ আহমাদ হা: ১৬৭৭. হাদীসটি হাসান সহীহ)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অহংকার মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা দেয়, যেমন ইবলিস অহংকারের কারণে বিতাড়িত হয়েছে।
২. অহংকারীদের জাহান্নামের শাস্তির কথা জানতে পারলাম।
2:89
وَ لَمَّا جَآءَہُمۡ
کِتٰبٌ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَہُمۡ ۙ وَ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ
یَسۡتَفۡتِحُوۡنَ عَلَی الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ۚۖ فَلَمَّا جَآءَہُمۡ مَّا
عَرَفُوۡا کَفَرُوۡا بِہٖ ۫ فَلَعۡنَۃُ اللّٰہِ عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۸۹﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৮-৯০ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ঈমান না আনার ওযর পেশ করে বলে আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত। অতএব হে নাবী! তুমি যা বল আমরা তা বুঝতে পারি না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ)
“তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহ্বান করছো সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত।”(সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১:৫)
এটা তাদের মিথ্যা বানোয়াট উক্তি বরং আল্লাহ তা‘আলা তাদের কুফরীর কারণে তাদের ওপর লা‘নত করেছেন।
জেনে-বুঝে ইয়াহূদীরা কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রত্যাখ্যান করেছে- তারই বর্ণনা এখানে দেয়া হয়েছে।
যখন ইয়াহূদী ও আরবের মুশরিকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধত তখন ইয়াহূদীরা কাফিরদেরকে বলত, অতি সত্বরই একজন বড় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার সত্য কিতাব নিয়ে আবির্ভুত হবেন। আমরা তাঁর অনুসারী হয়ে তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করব যে, তোমাদের নাম-নিশানা দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাবে। তারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করত: হে আল্লাহ! আপনি অতি সত্বরই ঐ নাবীকে পাঠিয়ে দিন যাঁর গুণাবলী আমরা তাওরাতে পাচ্ছি, যাতে আমরা তাঁর ওপর ঈমান এনে তাঁর সঙ্গ লাভ করত আমাদের বাহু মজবুত করতে পারি। আপনার শত্র“দের প্রতিশোধ নিতে পারি। তারা কাফিরদেরকে বলত যে, ঐ নাবীর আগমনের সময় খুবই নিকটবর্তী হয়েছে।
অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হলেন তখন তারা তাঁর মধ্যে সমস্ত নিদর্শন দেখতে পেল, তাকে চিনতে পারল এবং মনে মনে বিশ্বাস করল। কিন্তু যেহেতু তিনি তাদের বংশদ্ভূত ছিলেন না বিধায় তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নবুওয়াতকে অস্বীকার করে বসল। তখন তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ নেমে আসল। বরং মদীনার লোকেরা যারা তাদের (ইয়াহূদীদের) মুখেই এ কথা শুনে আসছিল তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গী হয়ে ইয়াহূদীদের ওপর বিজয় লাভ করে।
একদা মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) বাসার বিন বারা (রাঃ) এবং দাঊদ বিন সালমা (রাঃ) মদীনার ঐ ইয়াহূদীদেরকে বলেই ফেললেন: ‘তোমরাই তো আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের আলোচনা করতে, তাঁর যে গুণাবলী তোমরা বর্ণনা করতে তা সবই তাঁর মধ্যে রয়েছে। এমনকি তোমরা তাকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে কত কথা শোনাতে আর এখন তোমরাই তার প্রতি ঈমান আনছ না কেন? তার সঙ্গী হচ্ছ না কেন? সালাম বিন মিশকিম উত্তর দেয়: আমরা তাঁর কথা বলতাম না। এ আয়াতের মধ্যে তারই বর্ণনা রয়েছে যে, তারা প্রথম হতেই মানত, অপেক্ষমানও ছিল, কিন্তু তাঁর আগমনের পর হিংসা ও অহঙ্কারবশত এবং শাসন ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা কিছু নাযিল করেছেন তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বসে। ফলশ্র“তিতে তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধ এবং অপমানজনক শাস্তি অবধারিত হলো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: অহঙ্কারী লোকেদেরকে কিয়ামাতের দিন মানুষের আকারে পিঁপড়ার ন্যায় উঠানো হবে। তাদেরকে সমস্ত জিনিস পদদলিত করে চলে যাবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের বুলাস নামক কয়েদখানায় নিক্ষেপ করা হবে, যে স্থানের আগুন অন্য স্থানের আগুন অপেক্ষা অনেক বেশী দাহ্যসম্পন্ন। আর তাদেরকে জাহান্নামের পুঁজ, রক্ত ইত্যাদি পান করানো হবে। (তিরমিযী হা: ২৪৯, মুসনাদ আহমাদ হা: ১৬৭৭. হাদীসটি হাসান সহীহ)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অহংকার মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা দেয়, যেমন ইবলিস অহংকারের কারণে বিতাড়িত হয়েছে।
২. অহংকারীদের জাহান্নামের শাস্তির কথা জানতে পারলাম।
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ঈমান না আনার ওযর পেশ করে বলে আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত। অতএব হে নাবী! তুমি যা বল আমরা তা বুঝতে পারি না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ)
“তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহ্বান করছো সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত।”(সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১:৫)
এটা তাদের মিথ্যা বানোয়াট উক্তি বরং আল্লাহ তা‘আলা তাদের কুফরীর কারণে তাদের ওপর লা‘নত করেছেন।
জেনে-বুঝে ইয়াহূদীরা কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রত্যাখ্যান করেছে- তারই বর্ণনা এখানে দেয়া হয়েছে।
যখন ইয়াহূদী ও আরবের মুশরিকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধত তখন ইয়াহূদীরা কাফিরদেরকে বলত, অতি সত্বরই একজন বড় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার সত্য কিতাব নিয়ে আবির্ভুত হবেন। আমরা তাঁর অনুসারী হয়ে তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করব যে, তোমাদের নাম-নিশানা দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাবে। তারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করত: হে আল্লাহ! আপনি অতি সত্বরই ঐ নাবীকে পাঠিয়ে দিন যাঁর গুণাবলী আমরা তাওরাতে পাচ্ছি, যাতে আমরা তাঁর ওপর ঈমান এনে তাঁর সঙ্গ লাভ করত আমাদের বাহু মজবুত করতে পারি। আপনার শত্র“দের প্রতিশোধ নিতে পারি। তারা কাফিরদেরকে বলত যে, ঐ নাবীর আগমনের সময় খুবই নিকটবর্তী হয়েছে।
অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হলেন তখন তারা তাঁর মধ্যে সমস্ত নিদর্শন দেখতে পেল, তাকে চিনতে পারল এবং মনে মনে বিশ্বাস করল। কিন্তু যেহেতু তিনি তাদের বংশদ্ভূত ছিলেন না বিধায় তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নবুওয়াতকে অস্বীকার করে বসল। তখন তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ নেমে আসল। বরং মদীনার লোকেরা যারা তাদের (ইয়াহূদীদের) মুখেই এ কথা শুনে আসছিল তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গী হয়ে ইয়াহূদীদের ওপর বিজয় লাভ করে।
একদা মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) বাসার বিন বারা (রাঃ) এবং দাঊদ বিন সালমা (রাঃ) মদীনার ঐ ইয়াহূদীদেরকে বলেই ফেললেন: ‘তোমরাই তো আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের আলোচনা করতে, তাঁর যে গুণাবলী তোমরা বর্ণনা করতে তা সবই তাঁর মধ্যে রয়েছে। এমনকি তোমরা তাকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে কত কথা শোনাতে আর এখন তোমরাই তার প্রতি ঈমান আনছ না কেন? তার সঙ্গী হচ্ছ না কেন? সালাম বিন মিশকিম উত্তর দেয়: আমরা তাঁর কথা বলতাম না। এ আয়াতের মধ্যে তারই বর্ণনা রয়েছে যে, তারা প্রথম হতেই মানত, অপেক্ষমানও ছিল, কিন্তু তাঁর আগমনের পর হিংসা ও অহঙ্কারবশত এবং শাসন ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা কিছু নাযিল করেছেন তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বসে। ফলশ্র“তিতে তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধ এবং অপমানজনক শাস্তি অবধারিত হলো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: অহঙ্কারী লোকেদেরকে কিয়ামাতের দিন মানুষের আকারে পিঁপড়ার ন্যায় উঠানো হবে। তাদেরকে সমস্ত জিনিস পদদলিত করে চলে যাবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের বুলাস নামক কয়েদখানায় নিক্ষেপ করা হবে, যে স্থানের আগুন অন্য স্থানের আগুন অপেক্ষা অনেক বেশী দাহ্যসম্পন্ন। আর তাদেরকে জাহান্নামের পুঁজ, রক্ত ইত্যাদি পান করানো হবে। (তিরমিযী হা: ২৪৯, মুসনাদ আহমাদ হা: ১৬৭৭. হাদীসটি হাসান সহীহ)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অহংকার মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা দেয়, যেমন ইবলিস অহংকারের কারণে বিতাড়িত হয়েছে।
২. অহংকারীদের জাহান্নামের শাস্তির কথা জানতে পারলাম।
2:90
بِئۡسَمَا اشۡتَرَوۡا
بِہٖۤ اَنۡفُسَہُمۡ اَنۡ یَّکۡفُرُوۡا بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ بَغۡیًا اَنۡ
یُّنَزِّلَ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖ عَلٰی مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ۚ
فَبَآءُوۡ بِغَضَبٍ عَلٰی غَضَبٍ ؕ وَ لِلۡکٰفِرِیۡنَ عَذَابٌ مُّہِیۡنٌ ﴿۹۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৮৮-৯০ নং আয়াতের তাফসীর:
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ঈমান না আনার ওযর পেশ করে বলে আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত। অতএব হে নাবী! তুমি যা বল আমরা তা বুঝতে পারি না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ)
“তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহ্বান করছো সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত।”(সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১:৫)
এটা তাদের মিথ্যা বানোয়াট উক্তি বরং আল্লাহ তা‘আলা তাদের কুফরীর কারণে তাদের ওপর লা‘নত করেছেন।
জেনে-বুঝে ইয়াহূদীরা কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রত্যাখ্যান করেছে- তারই বর্ণনা এখানে দেয়া হয়েছে।
যখন ইয়াহূদী ও আরবের মুশরিকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধত তখন ইয়াহূদীরা কাফিরদেরকে বলত, অতি সত্বরই একজন বড় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার সত্য কিতাব নিয়ে আবির্ভুত হবেন। আমরা তাঁর অনুসারী হয়ে তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করব যে, তোমাদের নাম-নিশানা দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাবে। তারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করত: হে আল্লাহ! আপনি অতি সত্বরই ঐ নাবীকে পাঠিয়ে দিন যাঁর গুণাবলী আমরা তাওরাতে পাচ্ছি, যাতে আমরা তাঁর ওপর ঈমান এনে তাঁর সঙ্গ লাভ করত আমাদের বাহু মজবুত করতে পারি। আপনার শত্র“দের প্রতিশোধ নিতে পারি। তারা কাফিরদেরকে বলত যে, ঐ নাবীর আগমনের সময় খুবই নিকটবর্তী হয়েছে।
অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হলেন তখন তারা তাঁর মধ্যে সমস্ত নিদর্শন দেখতে পেল, তাকে চিনতে পারল এবং মনে মনে বিশ্বাস করল। কিন্তু যেহেতু তিনি তাদের বংশদ্ভূত ছিলেন না বিধায় তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নবুওয়াতকে অস্বীকার করে বসল। তখন তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ নেমে আসল। বরং মদীনার লোকেরা যারা তাদের (ইয়াহূদীদের) মুখেই এ কথা শুনে আসছিল তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গী হয়ে ইয়াহূদীদের ওপর বিজয় লাভ করে।
একদা মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) বাসার বিন বারা (রাঃ) এবং দাঊদ বিন সালমা (রাঃ) মদীনার ঐ ইয়াহূদীদেরকে বলেই ফেললেন: ‘তোমরাই তো আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের আলোচনা করতে, তাঁর যে গুণাবলী তোমরা বর্ণনা করতে তা সবই তাঁর মধ্যে রয়েছে। এমনকি তোমরা তাকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে কত কথা শোনাতে আর এখন তোমরাই তার প্রতি ঈমান আনছ না কেন? তার সঙ্গী হচ্ছ না কেন? সালাম বিন মিশকিম উত্তর দেয়: আমরা তাঁর কথা বলতাম না। এ আয়াতের মধ্যে তারই বর্ণনা রয়েছে যে, তারা প্রথম হতেই মানত, অপেক্ষমানও ছিল, কিন্তু তাঁর আগমনের পর হিংসা ও অহঙ্কারবশত এবং শাসন ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা কিছু নাযিল করেছেন তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বসে। ফলশ্র“তিতে তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধ এবং অপমানজনক শাস্তি অবধারিত হলো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: অহঙ্কারী লোকেদেরকে কিয়ামাতের দিন মানুষের আকারে পিঁপড়ার ন্যায় উঠানো হবে। তাদেরকে সমস্ত জিনিস পদদলিত করে চলে যাবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের বুলাস নামক কয়েদখানায় নিক্ষেপ করা হবে, যে স্থানের আগুন অন্য স্থানের আগুন অপেক্ষা অনেক বেশী দাহ্যসম্পন্ন। আর তাদেরকে জাহান্নামের পুঁজ, রক্ত ইত্যাদি পান করানো হবে। (তিরমিযী হা: ২৪৯, মুসনাদ আহমাদ হা: ১৬৭৭. হাদীসটি হাসান সহীহ)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অহংকার মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা দেয়, যেমন ইবলিস অহংকারের কারণে বিতাড়িত হয়েছে।
২. অহংকারীদের জাহান্নামের শাস্তির কথা জানতে পারলাম।
ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ঈমান না আনার ওযর পেশ করে বলে আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত। অতএব হে নাবী! তুমি যা বল আমরা তা বুঝতে পারি না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ)
“তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহ্বান করছো সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত।”(সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১:৫)
এটা তাদের মিথ্যা বানোয়াট উক্তি বরং আল্লাহ তা‘আলা তাদের কুফরীর কারণে তাদের ওপর লা‘নত করেছেন।
জেনে-বুঝে ইয়াহূদীরা কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রত্যাখ্যান করেছে- তারই বর্ণনা এখানে দেয়া হয়েছে।
যখন ইয়াহূদী ও আরবের মুশরিকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধত তখন ইয়াহূদীরা কাফিরদেরকে বলত, অতি সত্বরই একজন বড় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার সত্য কিতাব নিয়ে আবির্ভুত হবেন। আমরা তাঁর অনুসারী হয়ে তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করব যে, তোমাদের নাম-নিশানা দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাবে। তারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রার্থনা করত: হে আল্লাহ! আপনি অতি সত্বরই ঐ নাবীকে পাঠিয়ে দিন যাঁর গুণাবলী আমরা তাওরাতে পাচ্ছি, যাতে আমরা তাঁর ওপর ঈমান এনে তাঁর সঙ্গ লাভ করত আমাদের বাহু মজবুত করতে পারি। আপনার শত্র“দের প্রতিশোধ নিতে পারি। তারা কাফিরদেরকে বলত যে, ঐ নাবীর আগমনের সময় খুবই নিকটবর্তী হয়েছে।
অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রেরিত হলেন তখন তারা তাঁর মধ্যে সমস্ত নিদর্শন দেখতে পেল, তাকে চিনতে পারল এবং মনে মনে বিশ্বাস করল। কিন্তু যেহেতু তিনি তাদের বংশদ্ভূত ছিলেন না বিধায় তারা হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নবুওয়াতকে অস্বীকার করে বসল। তখন তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ নেমে আসল। বরং মদীনার লোকেরা যারা তাদের (ইয়াহূদীদের) মুখেই এ কথা শুনে আসছিল তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গী হয়ে ইয়াহূদীদের ওপর বিজয় লাভ করে।
একদা মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) বাসার বিন বারা (রাঃ) এবং দাঊদ বিন সালমা (রাঃ) মদীনার ঐ ইয়াহূদীদেরকে বলেই ফেললেন: ‘তোমরাই তো আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের আলোচনা করতে, তাঁর যে গুণাবলী তোমরা বর্ণনা করতে তা সবই তাঁর মধ্যে রয়েছে। এমনকি তোমরা তাকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে কত কথা শোনাতে আর এখন তোমরাই তার প্রতি ঈমান আনছ না কেন? তার সঙ্গী হচ্ছ না কেন? সালাম বিন মিশকিম উত্তর দেয়: আমরা তাঁর কথা বলতাম না। এ আয়াতের মধ্যে তারই বর্ণনা রয়েছে যে, তারা প্রথম হতেই মানত, অপেক্ষমানও ছিল, কিন্তু তাঁর আগমনের পর হিংসা ও অহঙ্কারবশত এবং শাসন ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা কিছু নাযিল করেছেন তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বসে। ফলশ্র“তিতে তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধ এবং অপমানজনক শাস্তি অবধারিত হলো।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: অহঙ্কারী লোকেদেরকে কিয়ামাতের দিন মানুষের আকারে পিঁপড়ার ন্যায় উঠানো হবে। তাদেরকে সমস্ত জিনিস পদদলিত করে চলে যাবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের বুলাস নামক কয়েদখানায় নিক্ষেপ করা হবে, যে স্থানের আগুন অন্য স্থানের আগুন অপেক্ষা অনেক বেশী দাহ্যসম্পন্ন। আর তাদেরকে জাহান্নামের পুঁজ, রক্ত ইত্যাদি পান করানো হবে। (তিরমিযী হা: ২৪৯, মুসনাদ আহমাদ হা: ১৬৭৭. হাদীসটি হাসান সহীহ)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অহংকার মানুষকে সত্য গ্রহণে বাধা দেয়, যেমন ইবলিস অহংকারের কারণে বিতাড়িত হয়েছে।
২. অহংকারীদের জাহান্নামের শাস্তির কথা জানতে পারলাম।
2:91
وَ اِذَا قِیۡلَ لَہُمۡ
اٰمِنُوۡا بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ قَالُوۡا نُؤۡمِنُ بِمَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡنَا
وَ یَکۡفُرُوۡنَ بِمَا وَرَآءَہٗ ٭ وَ ہُوَ الۡحَقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَہُمۡ
ؕ قُلۡ فَلِمَ تَقۡتُلُوۡنَ اَنۡۢبِیَآءَ اللّٰہِ مِنۡ قَبۡلُ اِنۡ کُنۡتُمۡ
مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۹۱﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৯১ ও ৯২ নং আয়াতের তাফসীর:
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াহূদীদেরকে তার প্রতি ঈমান আনয়ন করার কথা বলা হলে তারা বলে, আমাদের ওপর যে তাওরাত ও ইঞ্জিল নাযিল হয়েছে তাই যথেষ্ট। অথচ তারা জানে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য নাবী এবং তার প্রতি যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তাও সত্য, এমনকি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাদের নিজেদের সন্তানের চেয়েও বেশি চেনে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ یَعْرِفُوْنَھ۫ کَمَا یَعْرِفُوْنَ اَبْنَا۬ءَھُمْ)
যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি, তারা রাসূলুল্লাহকে (মুহাম্মাদ [(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-কে) এরূপ চেনে যেমন চিনে নিজেদের পুত্রকে। (সরা বাকারাহ ২:১৪৬, সূরা আন‘আম ৬:২০) এরপরেও অহংকার ও হঠকারিতা তাদেরকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনতে বাধা দেয়।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের মিথ্যা দাবির প্রতিবাদ করে বলেন, যদি তোমরা প্রকৃতপক্ষে তাওরাত ও ইঞ্জিলের প্রতি ঈমান এনে থাক তাহলে তাওরাত ও ইঞ্জিলের সত্যায়নকারী নাবী-রাসূলগণকে কেন হত্যা করেছ? মূলত তারা হিংসার বশীভূত হয়ে এ সমস্ত ঘৃণিত কাজে জড়িত হয়েছে। যা এ সূরার ৮৭ নং আয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
(وَلَقَدْ جَا۬ءَكُمْ مُّوْسٰي بِالْبَيِّنٰتِ)
‘এবং নিশ্চয়ই মূসা উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীসহ তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়েছিলেন’আল্লাহ তা‘আলা মূসাকে যে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে অন্যত্র বলেন:
(وَلَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسٰی تِسْعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ فَسْئَلْ بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَ اِذْ جَا۬ءَھُمْ فَقَالَ لَھ۫ فِرْعَوْنُ اِنِّیْ لَاَظُنُّکَ یٰمُوْسٰی مَسْحُوْرًا)
“তুমি বানী ইস্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করে দেখ, আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম; যখন সে তাদের নিকট এসেছিল, ফির‘আউন তাকে বলেছিল, ‘হে মূসা! আমি মনে করি তুমি জাদুগ্রস্ত।”(সূরা ইসরা ১৭:১০১)
উক্ত নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন হল- তুফান, ফড়িং, ব্যাঙ, রক্ত, উকুন, লাঠি, হাত চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বল হওয়া, পাথর হতে নদী বা ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوْفَانَ وَالْجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ اٰيٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ)
“অতঃপর আমি তাদেরকে প্লাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্তের বিপদ পাঠিয়েছিলাম। এগুলো স্পষ্ট নিদর্শন।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৩০)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(فَاَلْقٰی عَصَاھُ فَاِذَا ھِیَ ثُعْبَانٌ مُّبِیْنٌ﮺ﺊوَّنَزَعَ یَدَھ۫ فَاِذَا ھِیَ بَیْضَا۬ئُ لِلنّٰظِرِیْنَ)
অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তৎক্ষণাৎ সেটা এক সাক্ষাত অজগর হল। এবং সে তার হাত বের করল আর তৎক্ষণাৎ সেটা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল। (সূরা আ‘রাফ ৭:১০৭-১০৮)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(فَاَوْحَیْنَآ اِلٰی مُوْسٰٓی اَنِ اضْرِبْ بِّعَصَاکَ الْبَحْرَﺚ فَانْفَلَقَ)
অতঃপর মূসার প্রতি ওয়াহী করলাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত করো।’(সূরা শুআরা ২৬:৬৩)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অপরাধীদেরকে অপরাধের কারণে তিরস্কার করা শরীয়তসম্মত।
২. শরয়ী বিধানকে খুব মজবুত ও দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ করতে হবে।
৩. প্রকৃত ঈমান কখনো ঈমানদারকে খারাপ কাজের দিকে নির্দেশ করে না।
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াহূদীদেরকে তার প্রতি ঈমান আনয়ন করার কথা বলা হলে তারা বলে, আমাদের ওপর যে তাওরাত ও ইঞ্জিল নাযিল হয়েছে তাই যথেষ্ট। অথচ তারা জানে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য নাবী এবং তার প্রতি যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তাও সত্য, এমনকি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাদের নিজেদের সন্তানের চেয়েও বেশি চেনে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ یَعْرِفُوْنَھ۫ کَمَا یَعْرِفُوْنَ اَبْنَا۬ءَھُمْ)
যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি, তারা রাসূলুল্লাহকে (মুহাম্মাদ [(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-কে) এরূপ চেনে যেমন চিনে নিজেদের পুত্রকে। (সরা বাকারাহ ২:১৪৬, সূরা আন‘আম ৬:২০) এরপরেও অহংকার ও হঠকারিতা তাদেরকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনতে বাধা দেয়।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের মিথ্যা দাবির প্রতিবাদ করে বলেন, যদি তোমরা প্রকৃতপক্ষে তাওরাত ও ইঞ্জিলের প্রতি ঈমান এনে থাক তাহলে তাওরাত ও ইঞ্জিলের সত্যায়নকারী নাবী-রাসূলগণকে কেন হত্যা করেছ? মূলত তারা হিংসার বশীভূত হয়ে এ সমস্ত ঘৃণিত কাজে জড়িত হয়েছে। যা এ সূরার ৮৭ নং আয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
(وَلَقَدْ جَا۬ءَكُمْ مُّوْسٰي بِالْبَيِّنٰتِ)
‘এবং নিশ্চয়ই মূসা উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীসহ তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়েছিলেন’আল্লাহ তা‘আলা মূসাকে যে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে অন্যত্র বলেন:
(وَلَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسٰی تِسْعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ فَسْئَلْ بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَ اِذْ جَا۬ءَھُمْ فَقَالَ لَھ۫ فِرْعَوْنُ اِنِّیْ لَاَظُنُّکَ یٰمُوْسٰی مَسْحُوْرًا)
“তুমি বানী ইস্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করে দেখ, আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম; যখন সে তাদের নিকট এসেছিল, ফির‘আউন তাকে বলেছিল, ‘হে মূসা! আমি মনে করি তুমি জাদুগ্রস্ত।”(সূরা ইসরা ১৭:১০১)
উক্ত নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন হল- তুফান, ফড়িং, ব্যাঙ, রক্ত, উকুন, লাঠি, হাত চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বল হওয়া, পাথর হতে নদী বা ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوْفَانَ وَالْجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ اٰيٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ)
“অতঃপর আমি তাদেরকে প্লাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্তের বিপদ পাঠিয়েছিলাম। এগুলো স্পষ্ট নিদর্শন।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৩০)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(فَاَلْقٰی عَصَاھُ فَاِذَا ھِیَ ثُعْبَانٌ مُّبِیْنٌ﮺ﺊوَّنَزَعَ یَدَھ۫ فَاِذَا ھِیَ بَیْضَا۬ئُ لِلنّٰظِرِیْنَ)
অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তৎক্ষণাৎ সেটা এক সাক্ষাত অজগর হল। এবং সে তার হাত বের করল আর তৎক্ষণাৎ সেটা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল। (সূরা আ‘রাফ ৭:১০৭-১০৮)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(فَاَوْحَیْنَآ اِلٰی مُوْسٰٓی اَنِ اضْرِبْ بِّعَصَاکَ الْبَحْرَﺚ فَانْفَلَقَ)
অতঃপর মূসার প্রতি ওয়াহী করলাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত করো।’(সূরা শুআরা ২৬:৬৩)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অপরাধীদেরকে অপরাধের কারণে তিরস্কার করা শরীয়তসম্মত।
২. শরয়ী বিধানকে খুব মজবুত ও দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ করতে হবে।
৩. প্রকৃত ঈমান কখনো ঈমানদারকে খারাপ কাজের দিকে নির্দেশ করে না।
2:92
وَ لَقَدۡ جَآءَکُمۡ مُّوۡسٰی
بِالۡبَیِّنٰتِ ثُمَّ اتَّخَذۡتُمُ الۡعِجۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِہٖ وَ اَنۡتُمۡ
ظٰلِمُوۡنَ ﴿۹۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম,
মী-ম।
FATHUL MAJID
৯১ ও ৯২ নং আয়াতের তাফসীর:
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াহূদীদেরকে তার প্রতি ঈমান আনয়ন করার কথা বলা হলে তারা বলে, আমাদের ওপর যে তাওরাত ও ইঞ্জিল নাযিল হয়েছে তাই যথেষ্ট। অথচ তারা জানে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য নাবী এবং তার প্রতি যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তাও সত্য, এমনকি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাদের নিজেদের সন্তানের চেয়েও বেশি চেনে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ یَعْرِفُوْنَھ۫ کَمَا یَعْرِفُوْنَ اَبْنَا۬ءَھُمْ)
যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি, তারা রাসূলুল্লাহকে (মুহাম্মাদ [(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-কে) এরূপ চেনে যেমন চিনে নিজেদের পুত্রকে। (সরা বাকারাহ ২:১৪৬, সূরা আন‘আম ৬:২০) এরপরেও অহংকার ও হঠকারিতা তাদেরকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনতে বাধা দেয়।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের মিথ্যা দাবির প্রতিবাদ করে বলেন, যদি তোমরা প্রকৃতপক্ষে তাওরাত ও ইঞ্জিলের প্রতি ঈমান এনে থাক তাহলে তাওরাত ও ইঞ্জিলের সত্যায়নকারী নাবী-রাসূলগণকে কেন হত্যা করেছ? মূলত তারা হিংসার বশীভূত হয়ে এ সমস্ত ঘৃণিত কাজে জড়িত হয়েছে। যা এ সূরার ৮৭ নং আয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
(وَلَقَدْ جَا۬ءَكُمْ مُّوْسٰي بِالْبَيِّنٰتِ)
‘এবং নিশ্চয়ই মূসা উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীসহ তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়েছিলেন’আল্লাহ তা‘আলা মূসাকে যে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে অন্যত্র বলেন:
(وَلَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسٰی تِسْعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ فَسْئَلْ بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَ اِذْ جَا۬ءَھُمْ فَقَالَ لَھ۫ فِرْعَوْنُ اِنِّیْ لَاَظُنُّکَ یٰمُوْسٰی مَسْحُوْرًا)
“তুমি বানী ইস্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করে দেখ, আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম; যখন সে তাদের নিকট এসেছিল, ফির‘আউন তাকে বলেছিল, ‘হে মূসা! আমি মনে করি তুমি জাদুগ্রস্ত।”(সূরা ইসরা ১৭:১০১)
উক্ত নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন হল- তুফান, ফড়িং, ব্যাঙ, রক্ত, উকুন, লাঠি, হাত চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বল হওয়া, পাথর হতে নদী বা ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوْفَانَ وَالْجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ اٰيٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ)
“অতঃপর আমি তাদেরকে প্লাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্তের বিপদ পাঠিয়েছিলাম। এগুলো স্পষ্ট নিদর্শন।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৩০)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(فَاَلْقٰی عَصَاھُ فَاِذَا ھِیَ ثُعْبَانٌ مُّبِیْنٌ﮺ﺊوَّنَزَعَ یَدَھ۫ فَاِذَا ھِیَ بَیْضَا۬ئُ لِلنّٰظِرِیْنَ)
অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তৎক্ষণাৎ সেটা এক সাক্ষাত অজগর হল। এবং সে তার হাত বের করল আর তৎক্ষণাৎ সেটা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল। (সূরা আ‘রাফ ৭:১০৭-১০৮)
ল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(فَاَوْحَیْنَآ اِلٰی مُوْسٰٓی اَنِ اضْرِبْ بِّعَصَاکَ الْبَحْرَﺚ فَانْفَلَقَ)
অতঃপর মূসার প্রতি ওয়াহী করলাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত করো।’(সূরা শুআরা ২৬:৬৩)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অপরাধীদেরকে অপরাধের কারণে তিরস্কার করা শরীয়তসম্মত।
২. শরয়ী বিধানকে খুব মজবুত ও দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ করতে হবে।
৩. প্রকৃত ঈমান কখনো ঈমানদারকে খারাপ কাজের দিকে নির্দেশ করে না।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaiteমুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে ইয়াহূদীদেরকে তার প্রতি ঈমান আনয়ন করার কথা বলা হলে তারা বলে, আমাদের ওপর যে তাওরাত ও ইঞ্জিল নাযিল হয়েছে তাই যথেষ্ট। অথচ তারা জানে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য নাবী এবং তার প্রতি যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তাও সত্য, এমনকি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাদের নিজেদের সন্তানের চেয়েও বেশি চেনে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ یَعْرِفُوْنَھ۫ کَمَا یَعْرِفُوْنَ اَبْنَا۬ءَھُمْ)
যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি, তারা রাসূলুল্লাহকে (মুহাম্মাদ [(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-কে) এরূপ চেনে যেমন চিনে নিজেদের পুত্রকে। (সরা বাকারাহ ২:১৪৬, সূরা আন‘আম ৬:২০) এরপরেও অহংকার ও হঠকারিতা তাদেরকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনতে বাধা দেয়।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের মিথ্যা দাবির প্রতিবাদ করে বলেন, যদি তোমরা প্রকৃতপক্ষে তাওরাত ও ইঞ্জিলের প্রতি ঈমান এনে থাক তাহলে তাওরাত ও ইঞ্জিলের সত্যায়নকারী নাবী-রাসূলগণকে কেন হত্যা করেছ? মূলত তারা হিংসার বশীভূত হয়ে এ সমস্ত ঘৃণিত কাজে জড়িত হয়েছে। যা এ সূরার ৮৭ নং আয়াতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
(وَلَقَدْ جَا۬ءَكُمْ مُّوْسٰي بِالْبَيِّنٰتِ)
‘এবং নিশ্চয়ই মূসা উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীসহ তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়েছিলেন’আল্লাহ তা‘আলা মূসাকে যে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে অন্যত্র বলেন:
(وَلَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسٰی تِسْعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ فَسْئَلْ بَنِیْٓ اِسْرَا۬ءِیْلَ اِذْ جَا۬ءَھُمْ فَقَالَ لَھ۫ فِرْعَوْنُ اِنِّیْ لَاَظُنُّکَ یٰمُوْسٰی مَسْحُوْرًا)
“তুমি বানী ইস্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করে দেখ, আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম; যখন সে তাদের নিকট এসেছিল, ফির‘আউন তাকে বলেছিল, ‘হে মূসা! আমি মনে করি তুমি জাদুগ্রস্ত।”(সূরা ইসরা ১৭:১০১)
উক্ত নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন হল- তুফান, ফড়িং, ব্যাঙ, রক্ত, উকুন, লাঠি, হাত চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বল হওয়া, পাথর হতে নদী বা ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوْفَانَ وَالْجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ اٰيٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ)
“অতঃপর আমি তাদেরকে প্লাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্তের বিপদ পাঠিয়েছিলাম। এগুলো স্পষ্ট নিদর্শন।”(সূরা আ‘রাফ ৭:১৩০)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(فَاَلْقٰی عَصَاھُ فَاِذَا ھِیَ ثُعْبَانٌ مُّبِیْنٌ﮺ﺊوَّنَزَعَ یَدَھ۫ فَاِذَا ھِیَ بَیْضَا۬ئُ لِلنّٰظِرِیْنَ)
অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তৎক্ষণাৎ সেটা এক সাক্ষাত অজগর হল। এবং সে তার হাত বের করল আর তৎক্ষণাৎ সেটা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল। (সূরা আ‘রাফ ৭:১০৭-১০৮)
ল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(فَاَوْحَیْنَآ اِلٰی مُوْسٰٓی اَنِ اضْرِبْ بِّعَصَاکَ الْبَحْرَﺚ فَانْفَلَقَ)
অতঃপর মূসার প্রতি ওয়াহী করলাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত করো।’(সূরা শুআরা ২৬:৬৩)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অপরাধীদেরকে অপরাধের কারণে তিরস্কার করা শরীয়তসম্মত।
২. শরয়ী বিধানকে খুব মজবুত ও দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ করতে হবে।
৩. প্রকৃত ঈমান কখনো ঈমানদারকে খারাপ কাজের দিকে নির্দেশ করে না।
0 Comments