ইসলাম ও হিন্দুধর্ম সম্পকে হিন্দুগনের প্রশ্নোত্তর

ইসলাম ও হিন্দুধর্ম সম্পকে হিন্দুগনের প্রশ্ন
মূল: ড. জাকির নায়েক
অনুবাদ: শাহরিয়ার আজম
 ১)প্রশ্ন:- হিন্দুগন বলেন মূর্তি হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার আরাধনার জন্য প্রথম পর্যায় ও মনোযোগ আকর্ষনের মাধ্যম, মনোযোগ এলে আর মূর্তির প্রয়োজন হয়না?
✔ জবাব:-
মনোসংযোগের অজুহাত-
হিন্দু শাস্ত্র বিশারদ ও বিজ্ঞ পন্ডিতগন সকলে একবাক্যে স্বীকার করেন সৃষ্টিকর্তার কোন আকার বা র্মূতি নেই, তিনি নিরাকার। কিছু বলেন প্রত্যেক হিন্দুদের আকৃতিবিহিন পালনকর্তার আরাধনা করা উচিৎ কিন্তু কেউ বলেন সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে যাদের মনোযোগের দৃঢ়তা কম তাদেঁর জন্য মূর্তি দরকার আর যাদের পূর্ন মনোসংযোগ আছে তাদেরঁ মূর্তি নিষ্প্রয়োজন। তবে আমি বলি মুসলিমগন উচুঁ মনোযোগে ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে তাদের মূর্তির প্রয়োজন হয়না। অনেক হিন্দু পন্ডিত বলেন বাচ্চাদের সামনে মূর্তি থাকলে বোঝানো সহজ হয়।
মিথ্যা শিক্ষা-
অনেক সময় বজ্রপাত হলে বাচ্চারা মা-বাবাকে জিজ্ঞেস করে বজ্রপাতের কারন কি তখন তারাঁ খেলাচ্ছলে জবাব দেন তোমার দাদী আকাশে আটা পিষলে বজ্রপাত হয়। আমি বলি ইসলামে মিথ্যা বলা হারাম এমনকি সেটা যত ক্ষুদ্রই হোক ও হাস্যকর হলেও। আপনার বাচ্চা পরবতীতে স্কুলে যাবার পর যখন শিখবে মেঘের ঘর্ষনের কারনে বজ্রপাত হয় তখন মা-বাবা সম্পর্কে সে একটা ভুল ধারনা করবে যে-তার মা-বাবা মিথ্যা শিক্ষা দিয়েছে।
১+১=?
ধরুন ১+১=২ ক্লাস ওয়ানেও যেমন মাষ্টার্স বা পি.এইপ.ডি-তে তেমন ১+১=২। একই ফমূর্লা। কোন গরমিল নেই, সুপরিষ্কার। একটাই নিয়ম। আপনি নিয়ম পরিবর্তন করতে পারেননা। তবে কি আপনি আপনার বাচ্চাকে বলেন ক্লাস ওয়ানে ১+১=৪ শিখ যখন তুমি ডিগ্রি পাশ করবে তখন ১+১=২ হবে?
হিন্দুশাস্ত্র কি বলে?-
আপনি যদি হিন্দুদের প্রধান শাস্ত্র পড়েন যাযুরবেদে উল্লেখ রয়েছে-
‘‘না কাছিয়া প্রতিমাআস্থি’’
অর্থাৎ তাঁর কোন ছবি নেই। অধ্যায়-৩২,শ্লোকা-৩
‘‘তিনি আকৃতিহীন ত্রবং পবিত্র’’। যাযুরবেদ অধ্যায়-৪, শ্লোকা ৮
‘‘অন্ধাত্নম্মা প্রভিশান্তি ইয়া আসামভুতি মুপাস্তে’’।
অর্থাৎ ‘‘তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা প্রকৃতি পুজা করে (যেমন আকাশ, পানি, আগুন ইত্যাদি) আরো বলা হয়েছে তারা আরো গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় যারা সৃষ্টি জিনিষ পুজা করে (যেমন- ঠেবিল, চেয়ার,মূর্তি)।’’ যাযুরবেদ অধ্যায়-৪০,শ্লোকা-৯
 ২)প্রশ্ন: হিন্দুগন বলেন সৃষ্টিকর্তা মানুষের আবতার(আকৃতি) গ্রহন করেন এটা কতটুকু সত্য ?
✔ জবাব:-
সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টির মৌলিকত্ব এক নয়-
অনেক হিন্দুগন বলেন মানুষের সুখ,ব্যথা,কষ্ট,দুঃখ বোঝার জন্য সৃষ্টিকর্তা মানুষের রূপ ধারন করেন মানুষরূপে পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করেন। এটা অযৌক্তিক কারন সৃষ্টিকর্তার মৌলিকত্ব এবং মানুষের মৌল গুনাবলী বিপরীত-
✔ মানুষ মরনশীল কিন্তু সৃষ্টিকর্তা অমর। অতএব অমর এবং মরনশীল একসাথে হতে পারেনা ।
✔ মানুষের খাবার প্রয়োজন হয়
✔ ঘুমের প্রয়োজন হয়, সৃষ্টিকর্তার নিষ্প্রেয়োজন
✔ মানুষের শুরু আছে , সৃষ্টিকর্তা কোন শুরু নেই
✔ আল্লাহর প্রয়োজন হয়না খাবারের, ঘুমের অথবা তাঁর মানুষকে প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে হয় যা সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে নিষ্প্রয়োজন ।
সুতরাং মানুষের এবং সৃষ্টিকর্তার গুনাবলী একই মানুষের উপর আরোপ করা হাস্যকর ব্যপার । পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে -
‘‘তিনি সবাইকে আহার প্রদান করেন কিন্তু তাঁর আহারের প্রয়োজন হয়না।’’ সুরা আনাম-৬,আয়াত-১৪
এছারাও উল্লেখ আছে -
‘‘ তাঁর কোন বিশ্রাম বা নিদ্রার প্রয়োজন হয়না ।’’ সুরা বাকারা -২,আয়াত-২৫৫
 VCD দৃষ্টান্ত-
ধরুন আপনি একজন VCD মেকার,vcd, কিভাবে চালাতে হবে তারজন্য আপনারা vcd হবার প্রয়োজন নেই আপনি যা করতে পারেন তাহলো আপনি ব্যবহার কারীদের জন্য vcd-র বিবরনী লিখে দিতে পারেন কিভাবে vcd চালাতে,বন্ধ করতে,সামনে পেছনে নিতে কিভাবে রক্ষনাবেক্ষন করতে হবে আপনি তা লিখে দিতে পারেন একই ভাবে সৃষ্টিকর্তার মানুষ হবার প্রয়োজন নেই এবং তিনি মানুষের জীবন-যাপন সঠিক ভাবে পালন করার জন্য নিয়ম-নীতি পাঠিয়েছেন আর সর্বশেষ বিবরনী হল পবিত্র কুরআন ,সৃষ্টিকর্তার পৃথিবীতে মানুষ হয়ে আসার ভাবনাটা অযৌক্তিক। তিনি মানুষের মধ্য হতে বার্তাবাহক বা নবী পছন্দ করে তাঁর মাধ্যমে এই বিবরনী প্রকাশ করেন ।
আবতারবাদ’ প্রকৃতার্থে কি বোঝায়?-
সাধারন হিন্দুগন বিস্বাস করেন সৃষ্টিকর্তার মানবাকৃতিতে পৃথিবীতে নেমে আসাই হলো ‘আবতার’। ‘আবতার’ ‘আও’ অর্থ নীচে এবং ‘তরঅ’ অর্থ নামা অথাৎ নীচে নামা। অক্সফোর্ড ডিকশনারির মতে আবতার অর্থ- ’শরীর আকৃতিতে অবতারন করা’। এই ধারনা এসেছে -
‘‘যদা যদাহি ধর্ন্মস্য গ্লানির্ভবাতি ভারত । অভুত্থনমধর্মস্য তদাত্নানং সৃজাম্যহাম। পরিত্রানায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম। ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।’’
অর্থাৎ যে যে সময়ে ধর্মের পতন আর পাপের প্রার্দূভাব হয়, সেই সময়ে আমি জন্ম লইয়া থাকি। এইভাবে পাপিদের বিনাশ করিতে আর সৎ লোকদের বাঁচাইতে, এবং ধর্মকে আবার প্রতিষ্ঠিত করিতে যুগে যুগে আমি জন্মগ্রহন করি। ভগবৎগীতা-অধ্যায়-৪, শ্লোকা-৭-৮
একই বানী রয়েছে -
‘‘যখন পাপ বৃদ্ধি পায় আমি অবর্তীন হই।’’ ভগবৎপুরানা খন্ড-৯, অধ্যায়-২৪, শ্লোকা-৫৬
বেদ কি বলে আবতার সম্বন্ধে?-
আবতার’ সম্পর্কীয় ধারনা হিন্দুগন যা পোষন করেন বেদের কোথাও তা খুজেঁ পাওয়া যায়না। এজন্য হিন্দু পন্ডিতগন বলেন হিন্দুগনের আবতার সম্পকীয় ভাবনা ভুল। তারাঁ বলেন সৃষ্টিকর্তা মানব হয়ে পৃথিবীতে অবতার করেননা তিনি মানবজাতির মধ্য থেকে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন বার্তা প্রেরনের জন্য। আপনি যদি বেদ পড়েন আবতার সর্ম্পকীয় কোন মতবাদ কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু বেদ উল্লেখ করেছে ঋষি বা বার্তাবাহকের কথা যা সৃষ্টিকর্তা মানবজাতির পথপ্রর্দশকরুপে প্রেরন করেছেন। যা পুরোপুরি ইসলামের ধারনার সাথে সামঞ্জস্য যে- সৃষ্টিকর্তা মানুষকে পথপ্রর্দশকরুপে নির্বাচন করে মানবজাতির মধ্যে যোগসুত্র স্থাপন করেছেন।
 ৩)প্রশ্ন :পূর্নজন্ম সম্পর্কে হিন্দুধর্মে ও ইসলামধর্মে কি বলা হয়েছে?
✔ জবাব:-
গীতা ও উপনিশদ কি বলে?-
সংস্কৃতে পূর্নজন্ম এর অর্থ ‘সমসকারা’। বলা হয়েছে -
‘‘ প্রতিটি মানুষ যেমন পুরানো কাপড় পরিবর্তন করে নতুন পোষাক পরিধান করে তেমনি আত্না এক দেহ পরিবর্তন করে আরেক দেহে প্রতিস্থাপিত হয়।’’
ভাগবৎগীতায়-অধ্যায়-৪, শ্লোকা-২২
এছারাও বলা হয়েছে-
‘‘শুয়োপোকা যেমন একঘাস হতে অন্য ঘাসে স্থানান্তরিত ঠিক তেমনি মানবাত্না পুরানো দেহ ছুড়েঁ ফেলে নতুন দেহে প্রবেশ করে।’ ভাদনাঙ্কার উপনিশদ -অধ্যায়-৪, শ্লোকা-৩
কিন্তু সর্বোচ্চ ধর্মীয়শাস্ত্র বেদে-র বিশ্লেষন কি?
প্রকৃতপক্ষে আমি মনে করি এ সম্পর্কে বেদে বলা হয়েছে-
পুর্নর অর্থ পরবর্তী জনম অর্থ জীবন” রিগ্বেদ-১০, হিম-১৬, শ্লোকা -৪-৫
কিন্তু তার মানে এই নয় যে বারবার জীবন মরন এবং মরন জীবন, মৃত্যুর পর পর প্রতিটি আত্নাকে জীবিত করা হবে। পৃথিবীতে একজন মানুষের আগমন একবারই যথেষ্ঠ, এই তত্ত্বজ্ঞান হিন্দু পন্ডিতগন অনেকেই না বোঝার দরুন তাঁরা ‘সমসকারা’-কে অপব্যাখ্যা দিয়েছেন কারন পৃথিবীতে অনেক বধির,বোবা,কালা,গরীব,ধনী হয়ে জন্মগ্রহন করেন মানুষের এই পারস্পরিক পার্থক্য দুর করার জন্য তাঁরা র্পূনরজন্ম-কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা বলেন যদি আপনি পৃথিবীতে সৎ কাজ করেন তাহলে মানুষ হয়ে জন্মাবেন অসৎ হলে পখি,বাঘ, পিঁপড়া ইত্যাদি নিচুস্তরের প্রানী হয়ে জন্মাবেন। এভাবে ৭বার।
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের আগমন একবারই যথেষ্ঠ-
আল্লাহ বলেন -
যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদের যাচাই করতে যে তোমাদের মধ্যে কে কাজেকর্মে শ্রেষ্ঠ।’ সুরা মুলক-৬৭, আয়াত-২
আল্লাহ মানুষকে অর্থ,সাস্থ্য,সন্তান দিয়ে পরীক্ষা কে কর্মে শ্রেষ্ঠ অথবা হীন, কেউ যদি গরীব হয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করে তবে আল্লাহ তাকে যাকাত ও হজ্জ্ব সম্পর্কে জিঙ্গাসাবাদ করবেন না কিন্তু যাকে সম্পদ দেয়া হয়েছে সে জিজ্ঞাসিত হবে, কারো সন্তান মৃত্যু বরন করে অসময়ে অথবা বাবা-মা মৃত্যু বরন করে কারও ভাল সাস্থ্য রোগ শোকে পূর্ন হয়ে যায়। এরপর আল্লাহ তাকে পরীক্ষা করে দেখেন যে আল্লাহর প্রতি সে কৃতঙ্গ না অকৃতজ্ঞ?
পূর্নরজন্ম’ সত্য হলে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে কেন?-
হিন্দুপন্ডিতগনের ‘পূর্নরজন্ম’ তত্ত্ববিশেষন যদি সত্য হয় তবে তো পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা কমার কথা কারন বর্তমানে অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত মানুষের সংখ্যা ও বাড়ছে, ব্যাখ্যা অনুযায়ী অপরাধী- পাপীদের গরু-ছাগল ,পেকা-মাকড় হয়ে জন্মানোর কথা ক্নিতু তা তো হচ্ছেনা উল্টেটা ঘটছে মানুষের সংখ্যা দিনদিন উতোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাহলে পূর্নরজন্মের অবস্থানটা কোথায়? অতএব পৃথিবীতে মানুষের আগমন একবারই হবে এবং তার জীবনের সময়টার মাধ্যমেই প্রমান করতে হবে সে সঠিক কর্ম না ভুল কর্ম করেছে।

৪)প্রশ্ন : ইসলামই যদি আল্লাহর মনোনিত ধর্ম হয় তবে কেন আল্লাহ খ্রীষ্টান, হিন্দু এবং ইহুদি বানিয়ে দুনিয়াতে পাঠান?
✔ জবাব :-
প্রত্যেক শিশুই মুসলিম হয়ে জন্মগ্রহন করে-
রাসূল ( )বলেন-‘‘প্রত্যেক শিশুই মুসলিম হয়ে জন্মগ্রহন করে’’ মুসলিম অর্থ নিজের ইচ্ছা বা আকাংখা আল্লাহর নিকট সমর্পন করে দেয়া। সে বড় হবার পর মা-বাবা বা তার অভিভাবকের ধর্ম অনুসরন করে। সে হয়তো আগুনের পুজা করে ,পাথরের পূজা করে, মূর্তির পূজা করে।
ধ্রুবসত্য আল্লাহ প্রত্যেকের নিকট পৌঁছে দেবেন-
যদি কোন শিশু হিন্দু ঘরে জন্মগ্রহন করে মৃত্যু বরন করে তবে সে স্বর্গবাসী হবে কারন সে নিরাপরাধ। কিন্তু পরবর্তীতে সে বেড়ে ওঠার পর যখন সে জানতে ও বুঝতে শিখে এরেপরও যদি সে ভ্রান্ত ধারনায় নিমজ্জিত থাকে তবে তার ভুলের সমূহ মাশুল তাকেই বহন করতে হবে। যদিও হিন্দু ধর্ম অনেকাংশে মানুষের দ্বারা বিকৃত হয়েছে তবুও সেখানে উল্লেখ রয়েছে ’অন্তিম ঋষি’ মুহাম্মদ ()-এর নাম যা পূর্বেই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। খ্রীষ্টানদের ধর্মগ্রন্থে উলেখ রয়েছে তিনি পথপ্রদর্শক হয়ে আসবেন এবং তাঁকে পবিত্র কুরআন দেয়া হবে। হিন্দুধর্মগ্রন্থ ,খ্রীষ্টানধর্মগ্রন্থ বা বৌদ্ধধর্মগ্রন্থ যাই পড়েন আপনাকে কুরআনের দিকেই ফিরে আসতে হবে। প্রত্যেকেই নিজের জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে চিন্তা ভাবনা করা উচিৎ সঠিক পথ কোনটি। আল্লাহ বলেন
‘‘ আমরা অচিরেই তাদের দেখবো আমার নির্দেশ বানী দিগন্তে এবং তাঁদের নিজেদের মধ্যেও; যে পর্যন্ত না তাদের কাছে সুষ্পষ্ট হয়ে যায় এটা ধ্রুবসত্য নিঃসন্দেহে।’’ সুরা ফুসিলাত-৪১, আয়াত-৫৩-
কি সমস্যা সত্যকে আলিঙ্গন করতে?-
অতএব আল্লাহ প্রত্যেককেই সত্যের আলোয় পথ দেখাবেন কিন্তু সত্য অনুধাবন করার পরও সে যদি ভাবে-
✔ আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করি আমি অসৎ হতে পারবোনা,
✔ মিথ্যা বলতে পারবোনা,
✔ মদ-গাঁজা খেতে পারবোনা,
✔ জুয়া খেলা যাবেনা,
✔ রাস্তাঘাটে মহিলাদের উক্তক্ত করার সুযোগ পাওয়া যাবে না
✔ আমাকে ইসলামী পোষাক পড়তে হবে।
✔ আমাকে সন্ত্রাসী, গোড়াঁ বলা হবে।
✔ আত্নীয়-স্বজন আমাকে ত্যাজ্য করবে ইত্যাদি।
এসব চিন্তা-ভাবনা তাকে পেছন হতে টেনে ধরে যার ফলে সে সত্য হতে ধীরে ধীরে দুরে সরে যায়। সত্যকে জানার পরেও যদি তার মনোভাব এমন হয় সে কখনোই ইসলামের ছায়াতলে আসতে পারবেনা।
মিথ্যাকে ছুড়েঁ ফেলে যেকোন মুল্যে সত্যকে আকড়েঁ ধরা-
আরো বিভিন্ন অপচিন্তা আপনাকে পেছনে টেনে ধরে, সত্য গ্রহনে বিপত্তি সৃষ্টি করে। সৃষ্টিকর্তা আপনার নিকট যেকোন না কোন ভাবে তারঁ একত্ববাদের বার্তা পৌঁছেঁ দিবেনই পবিএ কুরআনে এটা তারঁ চ্যালেঞ্জ সত্য আপনার সামনে তিনি উম্মোচিত করবেন। এরপরে দায়-দায়িত্ব আপনার যুক্তিকতার মাধ্যমে বাছ-বিচার করে মিথ্যাকে ছুড়েঁ ফেলে যেকোন মুল্যে সত্যকে আকড়েঁ ধরা। যেদিন প্রতিটি মানুষের কর্মের হিসাব নেয়া হবে তখন আপনি এই অনুযোগ সৃষ্টিকর্তার নিকট করতে পারবেননা আপনি সত্যের সন্ধান পাননি। আজ আপনি যদি ইসলাম গ্রহন করেন পূর্বের সমস্ত পাপ আপনার ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং আপনার সৎ কর্মের পুরষ্কার দেয়া হবে দ্বিগুন অন্যান্য মুসলিমদের চাইতে।
মুসলিমগনের দায়বদ্ধতা-
তাই প্রতিটি মুসলিমদের উচিত অমুসলিমগনের নিকট ইসলামের বার্তা পৌছে দেয়া, ইসলাম জোর- জবরদস্তিতে বিশ্বাসী নয় । আপনার কাজ বার্তা পৌছে দেয়া, আল্লাহ বলেন-
‘‘ তোমার কাজ বার্তা পৌছেঁ দেয়া।’’ সুরা গাশিয়া -৮৮,আয়াত -২১,২২
যখনই আপনি বার্তার সত্যতা বুঝতে পারবেন আপনার ইসলামের ছায়াতলে আসতে হবে আর যদি না আসেন আপনার কর্মের জন্য দায়ী হতে হবে আপনাকেই। একই ভাবে অনেকে মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করে কিন্তু কর্মে এবং চিন্তায় তারা মুসলিম নয় তারা নামে মাত্র মুসলিম , তারা বেহেশতে যাবেনা। এটা ভুল ধারনা মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করে, নাম মোহাম্মদ, কাদের, মানিক, হলেই সে স্বর্গে যাবেনা, অনেকেই বলে কলেমা পড়লেই বেহেশতে প্রবেশ করবে ,কালেমা পড়ে তার মর্ম অনুযায়ী কাজ করা না হয় তবে তা নিরর্থক । এমনকি মদিনার মুনাফিকরা কালেমা পড়েছিল তারা কি বেহেশতে প্রবেশ করবে? আল্লাহু আলম।

৫) প্রশ্ন:- মহানবী () এর আগমনবার্তা হিন্দু শাস্ত্রে (বেদ) উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং বেদ কি সৃষ্টিকর্তা হতে আগত নয়? পৃথিবীতে অনেক নবী এসেছেন রাম কি নবী হতে পারেনা?
✔ জবাব :-
আল্লাহ বলেন -
‘‘আর এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাদের মধ্যে একজন না সর্তককারী গেছেন।’’ সুরা ফাতির-৩৫, আয়াত-২৪
সুনিশ্চিত বক্তব্য বিদ্যমান নয়-
কুরআনে ২৫ জন নবী বা বার্তাবাহকের নাম উল্লেখ রয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে-১ লক্ষ ২৪ হাজার নবী মতান্তরে ২ লক্ষ ২৪ হাজার পৃথিবীতে প্রেরন করা হয়েছে । যাদের নাম আমরা জানিনা। এক্ষেত্রে ‘বেদ’ সৃস্টিকর্তা হতে আসতেও পারে আবার তা নাও হতে পারে। নিশ্চিত করে বলা যাবেনা কারন বেদের সম্পর্কে সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, আমরা বলতে পারি- হয়তোবা...আসুন দেখা যাক বেদ ও কুরআনের মধ্যে মিল কোথায় রয়েছে-
‘‘না কাছিয়া প্রতিমাআস্থি’’
অর্থাৎ তাঁর কোন ছবি নেই । যাযুরবেদ-৩২:শ্নোকা -৩
‘‘তিনি আকৃতিহীন ত্রবং পবিত্র’’। যাযুরবেদ-৪০,শ্লোকা-৮
‘‘তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা প্রকৃতি পুজা করে (যেমন আকাশ, বাতাস, পানি, আগুন ইত্যাদি) আরো বলা হয়েছে তারা আরো গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় যারা সৃষ্টি জিনিষ পুজা করে (যেমন ঠেবিল ,চেয়ার,মূতি)। যাযুরবেদ-৪০, শ্লোকা-৯
বেদ-এ আরও বর্ননা রয়েছে-
‘‘সৃষ্টিকর্তা একজনই দুজন নয়, কখনোই নয় এবং কখনোই নয়।
‘‘ইক্কাম সাত ভিপ্রবহুদা বেদান্তে’’
সত্য এক সৃষ্টিকর্তা এক। রিগবেদ-১,হিম-১৬৪ শ্লোকা-৪৬
বেদ সেই সময়ের জাতির জন্য এসেছিল-
কুরআন সর্বশেষ কিতাব সঠিক ও ভুলের পরিমাপক। বেদের অন্যান্য শ্লোকা হয়তো মানুষ নিজ হাতে যুগে যুগে বিকৃত করে আসছে যা মুসলিমগন অস্বীকার করেন। এটা শুধু বেদের ক্ষেত্রেই নয় যা তাওরাত ও ইনজিল কিতাবও মানুষ যুগের হাওয়ার সাথে তাল মিলানোর উদ্দেশ্যে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করেছে। রাম হতে পারেন এক জন নবী আবার নাও হতে পারেন । যদিও রাম নবী হন অথবা বেদ সৃষ্টির্কতা হতে আগত হয় তবে তা সেই সময়ের জাতির জন্য সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য এসেছিল।
কুরআন সর্বশেষ কিতাব যা বর্তমান ও ভবিষ্যত জাতির জন্য পথপ্রদর্শক , হযরত মুহাম্মদ () বর্তমান সময়ের জন্য সর্বশেষ বার্তাবাহক সত্যের আলোক সন্ধানে আপনাকে কুরআন পড়তে হবে এবং জানতে হবে।
 ৬) প্রশ্ন : হিন্দু ও মুসলিমগন ধর্মের ক্ষেত্রে কিভাবে একই ধারনায় আসতে পারেন?
✔ জবাব :-
মানুষের চিন্তা ধারায় নিঃসন্দেহে পার্থক্য বিদ্যমান সেক্ষেত্রে আমাদের তথা মানবজাতিকে শান্তির ছায়াতলে আনয়নের লক্ষ্যে কুরআন মাজীদে আল্লাহপাক অতীব সুন্দর একটি সূত্র আমাদের সামনে পেশ করেছেন -
‘‘হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা , আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে পরস্পর সমঝোথার মাঝে যেন আমরা সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কারো প্রার্থনা করবোনা’’ সুরা আল ইমরান-৩, আয়াত-৩৪
দুই ধর্মের মাপে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ভিন্নতা আমরা ভুলে যাই। পার্থক্যটা আমরা দুরে সরিয়ে দিয়ে আগে সমঝোথায় আসি দুধর্মের মধ্যে একই মতবাত কি, সাদৃশ্যতা খুজেঁ বের করি। আমরা বাইবেল, গীতা, কুরআন সবকিছু একসাথে নিয়ে আগে দেখি সবগুলোর মধ্যে মিল রয়েছে কোথায়, যেটা সবচাইতে মিল সেটা হলো -
‘‘ আমরা এক সৃষ্টিকর্তার প্রার্থনা করবো।’’ হিন্দুধর্মে উলেখ রয়েছে -
‘‘ইক্কাম ইভাদিতিয়াম’’ অর্থ -সৃষ্টিকর্তা অদ্বিতীয়। ছন্দগয়া উপনিশদ-৬, খন্ড-২,শ্লোকা-১
‘‘না চাসয়া কাছিজ জানিতা না চাদিপা’’ অর্থ -”তার কোন সৃষ্টিকর্তা নেই মাতাপিতা নেই” সেতালভেতারা উপনিশদ-৬, শ্লোকা-৯
‘‘না কাছিয়া প্রতিমাআস্থি’’ অর্থ তাঁর কোন প্রতিচ্ছবি বা মূর্তি নেই। সেতাসভেতারা উপনিশদ-৪, শ্লোকা-১৯
 অনুরুপ আল্লাহ বলেন-
‘‘ আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়, আল্লাহ আত্ননির্ভর ,তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকে কেউ জন্ম দেয়নি । তাঁর মত আর কেউ নেই ’’ সুরা ইখলাস-১১২,আয়াত-১-৪
 ৭)প্রশ্ন:-ইসলাম কি বহু খোদায় বিস্বাস করে কারন অনেক স্থানে আমি-র পরিবর্তে আমরা ব্যবহার করা হয়েছে?
✔ জবাব :-
ইসলাম এক সৃষ্টিকর্তায় বিস্বাসী-
আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ নিজেই পবিত্র কুরআনে আমরা শব্দটি ব্যবহার করেছেন তারমানে এই নয় তিনি বহু। ভাষায় দু’ধরনের বহুবচন আছে একটি হল পরিমান বোঝাতে আরেকটি হল সম্মানার্থে ইংরেজিতে ইংল্যান্ডের রানীকে আমরা বলে সম্মানার্থে সম্বোধন করা হয়। যা রাজকীয় মর্যাদা। বাংলাতে এর ব্যবহার না থাকায় আমরা ব্যাপারটা ভুল বুঝি। ইন্ডিয়াতেও রাজিব গান্ধি বলেন-‘হাম দেখনা চাতেহে’ এখানে হাম মানে আমরা এটি সম্মানার্থে ব্যবহার হয়েছে। একইভাবে আরবীতে ‘নাহনু’ শব্দটি মর্যাদা অর্থে প্রয়োগ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে:-
‘‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ’’।অর্থাৎ তিনি এক ও অদ্বিতীয়। সুরা ইখলাস-১১২,আয়াত-১

 ইসলাম ও হিন্দুধর্ম সম্পকে হিন্দুগনের প্রশ্ন
মূল: ড. জাকির নায়েক
অনুবাদ: শাহরিয়ার আজম
নং
ইসলাম ও হিন্দুধর্ম সম্পকে হিন্দুগনের প্রশ্ন
  হিন্দুগন বলেন মূর্তি হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার আরাধনার জন্য প্রথম পর্যায় ও মনোযোগ আকর্ষনের মাধ্যম, মনোযোগ এলে আর মূর্তির প্রয়োজন হয়না?
  হিন্দুগন বলেন সৃষ্টিকর্তা মানুষের আবতার(আকৃতি) গ্রহন করেন এটা কতটুকু সত্য ?
  পূর্নজন্ম সম্পর্কে হিন্দুধর্মে ও ইসলামধর্মে কি বলা হয়েছে?
  ইসলামই যদি আল্লাহর মনোনিত ধর্ম হয় তবে কেন আল্লাহ খ্রীষ্টান, হিন্দু এবং ইহুদি বানিয়ে দুনিয়াতে পাঠান?
  মহানবী (ﷺ) এর আগমনবার্তা হিন্দু শাস্ত্রে (বেদ) উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং বেদ কি সৃষ্টিকর্তা হতে আগত নয়? পৃথিবীতে অনেক নবী এসেছেন রাম কি নবী হতে পারেনা?
  হিন্দু ও মুসলিমগন ধর্মের ক্ষেত্রে কিভাবে একই ধারনায় আসতে পারেন?
  ইসলাম কি বহু খোদায় বিস্বাস করে কারন অনেক স্থানে আমি-র পরিবর্তে আমরা ব্যবহার করা হয়েছে?


আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite
ইসলাম ও হিন্দুধর্ম সম্পকে হিন্দুগনের প্রশ্নোত্তর

Post a Comment

0 Comments