হাদিস বিষয়ক
❓প্রশ্নঃ ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী ‘যে জাতি কোন নারীকে ক্ষমতাসীন করে সে জাতি কখনোই সফলকাম
হবে না’ (বুখারী)। এক্ষণে নারী নেতৃত্বাধীন দেশের পুরো দেশবাসী, না কেবল ভোটদাতারা এর অন্তর্ভুক্ত হবে?
ANSWER
🎤 কেবল ভোটদাতা বা সমর্থন দাতারাই এ হাদীছের
অন্তর্ভুক্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের উপর অনেক শাসক নিযুক্ত হবে।
যাদের কোন কাজ তোমরা পসন্দ করবে এবং কোন কাজ অপসন্দ করবে। এক্ষণে যে ব্যক্তি উক্ত
অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করবে, সে দায়িত্বমুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি
তা অপসন্দ করবে, সে (মুনাফেকী থেকে) নিরাপদ থাকবে। কিন্তু যে
ব্যক্তি তাতে সন্তুষ্ট থাকবে ও তার অনুসরণ করবে... (সে তাদের ন্যায় গোনাহগার হবে)
(মুসলিম হা/১৮৫৪, মিশকাত হা/৩৬৭১)।
মদীনার সনদ মূলতঃ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাসের
জন্য রাসূল (ছাঃ) ও মদীনার ইহূদীদের মধ্যেকার একটি চুক্তি পত্র। ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে যা সম্পাদিত হয়েছিল।
মদীনার সংখ্যাগুরু আউস ও খাযরাজ নেতাগণ আগেই ইসলাম কবুল করায় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর মদীনায় আগমনের পিছনে আউস ও খাযরাজ দুই প্রধান গোত্রের আমন্ত্রণ থাকায় তাদের সাথে সন্ধিচুক্তির কোন প্রশ্নই ছিল না। খাযরাজ গোত্রের আব্দুল্লাহ বিন উবাই নেতৃত্বের অভিলাষী থাকলেও গোত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু করার ক্ষমতা তার ছিল না। ফলে বদর যুদ্ধের পর সে এবং তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম কবুল করে। তবে সেসময় মদীনার সংখ্যালঘু ইহূদী সম্প্রদায় মুসলমানদের নবতর জীবনধারার প্রতি এবং বিশেষভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত থাকলেও অতি ধূর্ত হওয়ার কারণে প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়নি। সমস্যা ছিল কেবল কুরায়েশদের নিয়ে। তারা পত্র প্রেরণ ও অন্যান্য অপতৎপরতার মাধ্যমে মুনাফিক ও ইহূদীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাসূল (ছাঃ) ও তার সাথীদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে। একাজে তারা যাতে সফল না হয় সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ২য় হিজরীতে সর্বপ্রথম মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার বনু যামরাহ, বনু বুওয়াত্ব, বনু মুদলিজ প্রভৃতি গোত্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেন।
এভাবে রাসূল (ছাঃ) চেয়েছিলেন, যেন যুদ্ধাশংকা দূর হয় এবং সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ সময় মদীনায় ইহূদী চক্রান্ত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। যার নেতৃত্বে ছিল তাদের ধনশালী নেতা ও ব্যঙ্গ কবি কা‘ব বিন আশরাফ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কটূক্তি করাই ছিল যার স্বভাব। অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়। ফলে ইহূদীরা ভীত হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এলে রাসূল (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদনের আহবান জানান। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে এবং মুসলমানদের মধ্যে সার্বজনীন একটা দলীল লিখে দেন’ (আবুদাঊদ হা/৩০০০)।
অত্র হাদীছ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তি লিখনের এই বিষয়টি হিজরতের পরেই নয়, বরং ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে তা সম্পাদিত হয়েছিল।
অতএব ছহীহ হাদীছের আলোকে কেবল এটুকুই বলা যায় যে, এটি ছিল ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের পরের ঘটনা। হিজরতের পরপরই নয়। নিঃসন্দেহে চুক্তিটি ছিল পারস্পরিক সন্ধিচুক্তি। কিন্তু চুক্তিটি কি ছিল, তার ভাষা কি ছিল, সেখানে কয়টি ধারা ছিল, কিছুই সঠিকভাবে বলার উপায় নেই।
তবে পার্শ্ববর্তী নিকট ও দূরের গোত্রসমূহের সাথে সন্ধিচুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর ইহূদীদের সাথে অত্র চুক্তি সম্পাদনের ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী খিলাফতের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং মদীনা তার রাজধানীতে পরিণত হয়। অতএব মদীনার সনদ ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক চুক্তি, যার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ স্বার্থে ও একক লক্ষ্যে একটি উম্মাহ বা জাতি গঠিত হয়। আধুনিক পরিভাষায় যাকে ‘রাষ্ট্র’ বলা হয়। এই সনদ ছিল আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সর্বপ্রথম ভিত্তি স্বরূপ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘মদীনার সনদ’ অধ্যায়)।
মদীনার সংখ্যাগুরু আউস ও খাযরাজ নেতাগণ আগেই ইসলাম কবুল করায় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর মদীনায় আগমনের পিছনে আউস ও খাযরাজ দুই প্রধান গোত্রের আমন্ত্রণ থাকায় তাদের সাথে সন্ধিচুক্তির কোন প্রশ্নই ছিল না। খাযরাজ গোত্রের আব্দুল্লাহ বিন উবাই নেতৃত্বের অভিলাষী থাকলেও গোত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু করার ক্ষমতা তার ছিল না। ফলে বদর যুদ্ধের পর সে এবং তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম কবুল করে। তবে সেসময় মদীনার সংখ্যালঘু ইহূদী সম্প্রদায় মুসলমানদের নবতর জীবনধারার প্রতি এবং বিশেষভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত থাকলেও অতি ধূর্ত হওয়ার কারণে প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়নি। সমস্যা ছিল কেবল কুরায়েশদের নিয়ে। তারা পত্র প্রেরণ ও অন্যান্য অপতৎপরতার মাধ্যমে মুনাফিক ও ইহূদীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাসূল (ছাঃ) ও তার সাথীদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে। একাজে তারা যাতে সফল না হয় সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ২য় হিজরীতে সর্বপ্রথম মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার বনু যামরাহ, বনু বুওয়াত্ব, বনু মুদলিজ প্রভৃতি গোত্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেন।
এভাবে রাসূল (ছাঃ) চেয়েছিলেন, যেন যুদ্ধাশংকা দূর হয় এবং সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ সময় মদীনায় ইহূদী চক্রান্ত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। যার নেতৃত্বে ছিল তাদের ধনশালী নেতা ও ব্যঙ্গ কবি কা‘ব বিন আশরাফ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কটূক্তি করাই ছিল যার স্বভাব। অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়। ফলে ইহূদীরা ভীত হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এলে রাসূল (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদনের আহবান জানান। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে এবং মুসলমানদের মধ্যে সার্বজনীন একটা দলীল লিখে দেন’ (আবুদাঊদ হা/৩০০০)।
অত্র হাদীছ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তি লিখনের এই বিষয়টি হিজরতের পরেই নয়, বরং ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে তা সম্পাদিত হয়েছিল।
অতএব ছহীহ হাদীছের আলোকে কেবল এটুকুই বলা যায় যে, এটি ছিল ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের পরের ঘটনা। হিজরতের পরপরই নয়। নিঃসন্দেহে চুক্তিটি ছিল পারস্পরিক সন্ধিচুক্তি। কিন্তু চুক্তিটি কি ছিল, তার ভাষা কি ছিল, সেখানে কয়টি ধারা ছিল, কিছুই সঠিকভাবে বলার উপায় নেই।
তবে পার্শ্ববর্তী নিকট ও দূরের গোত্রসমূহের সাথে সন্ধিচুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর ইহূদীদের সাথে অত্র চুক্তি সম্পাদনের ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী খিলাফতের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং মদীনা তার রাজধানীতে পরিণত হয়। অতএব মদীনার সনদ ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক চুক্তি, যার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ স্বার্থে ও একক লক্ষ্যে একটি উম্মাহ বা জাতি গঠিত হয়। আধুনিক পরিভাষায় যাকে ‘রাষ্ট্র’ বলা হয়। এই সনদ ছিল আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সর্বপ্রথম ভিত্তি স্বরূপ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘মদীনার সনদ’ অধ্যায়)।
❓প্রশ্নঃ রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রোথিতকারী (পিতা) এবং যাকে প্রোথিত
করা হয়েছে (সন্তান) উভয়েই জাহান্নামী (আবুদাঊদ হা/৪৭১৭)। হাদীছটির সঠিক ব্যাখ্যা
জানতে চাই।
ANSWER
🎤 কন্যা সন্তান প্রোথিতকারিণী মাতা জাহান্নামে
যাবে তার উক্ত অপরাধ ও কুফরীর কারণে। কিন্তু উপরোক্ত হাদীছ অনুযায়ী প্রোথিত সন্তান
জাহান্নামে কেন যাবে তার ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণ বলেন, হাদীছটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার সাথে
সম্পৃক্ত। আর তা হ’ল মুলায়কা নাম্নী জনৈকা মহিলার দুই ছেলে এসে তার মা সম্পর্কে
রাসূল (ছাঃ)-কে প্রশ্ন করেন যে, আমার মা জাহেলী যুগে মারা গেছেন।
কিন্তু তিনি আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষাকারীণী, অতিথিপরায়ণা এবং বিভিন্ন সৎকর্মে
অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের একটি বোনকে প্রোথিত করার মাধ্যমে হত্যা করেন।
এমতাবস্থায় তার সৎকর্মসমূহ তার উক্ত পাপের কাফফারা হবে কি? জবাবে
রাসূল (ছাঃ) বললেন, প্রোথিতকারিণী ও প্রোথিত কন্যা উভয়ে জাহান্নামী
হবে। তবে যদি প্রোথিতকারিণী ইসলাম কবুল করত তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করতেন’ (আহমাদ
হা/১৫৯৬৫)। একই মর্মে আবুদাঊদে (হা/৪৭১৭, মিশকাত হা/১১২) হাদীছ এসেছে। এ বিষয়ে
ছাহেবে মির‘আত বলেন, এটি একটি বিশেষ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। হয়তবা ঐ
প্রোথিত কন্যা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) অহীর মাধ্যমে তার জাহান্নামী হওয়ার বিষয়টি
অবগত হয়েছিলেন (মির‘আত হা/১১২-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। কেননা ইসলামী শরী‘আতে নাবালকের
উপর কোন বিধান প্রযোজ্য হয় না। অতএব অপরাধী মাতার কারণে তার প্রোথিত সন্তান
জাহান্নামী হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপ অন্যজনে বহন করবে না’
(আন‘আম ৬/১৬৪)। অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) প্রোথিত সন্তানকে জান্নাতী বলেছেন
(আবুদাঊদ হা/২৫২১, মিশকাত হা/৩৮৫৬, সনদ ছহীহ)। অতএব অত্র হাদীছ দ্বারা পূর্বের
হাদীছটি ‘মানসূখ’ হ’তে পারে। জীবন্ত প্রোথিত কন্যা জিজ্ঞাসিত হবে মর্মে কুরআনেও
বর্ণিত হয়েছে (তাকভীর ৮১/৮৯)। বিস্তারিত- তাফসীরুল কুরআন ৩০ তম পারা, উক্ত
আয়াতের আলোচনা দ্রঃ।
❓প্রশ্নঃ ‘মুরসাল’ হাদীছ শরী‘আতের দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য কি?
ANSWER
🎤 যে হাদীছ কোন তাবেঈ মধ্যবর্তী রাবীর নাম না করে
সরাসরি রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তাকে ‘মুরসাল’ হাদীছ বলে। ‘মুরসাল’
হাদীছ যঈফ হাদীছের শ্রেণীভূক্ত। এ জন্য জমহূর মুহাদ্দেছীনের নিকটে মুরসাল হাদীছ
সাধারণভাবে দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (তাদরীবুর রাবী ১/১৯৮)।
তবে শর্তসাপেক্ষে ‘মুরসাল’ হাদীছ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যেমন ইমাম শাফেঈ সহ অপরাপর ইমামগণ উল্লেখ করেছেন- ১. রাবী উঁচু স্তরের তাবেঈ হওয়া। ২. রাবী যে রাবীর কাছ থেকে ‘ইরসাল’টি করেছেন তাঁকে ‘ছিক্বাহ’ বা বিশ্বস্ত বলে উল্লেখ করা। ৩. বিশ্বস্ত অন্য কোন রাবী’র বিরোধিতা না থাকা এবং ৪. নিম্নোক্ত চারটি শর্তের যে কোন একটি থাকা- যেমন (ক) অন্য কোন মুসনাদ সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (খ) অপর কোন মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (গ) ছাহাবীর কওল দ্বারা সমর্থিত হওয়া। অথবা (ঘ) অধিকাংশ বিদ্বানের মতামতের অনুকূলে হওয়া। এ সকল শর্ত পাওয়া গেলেই কেবল মুরসাল হাদীছ দলীল হিসাবে বিবেচিত হতে পারে (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৬/২০৬, তায়সীরু মুছত্বলাহিল হাদীছ পৃঃ ৬০)।
তবে শর্তসাপেক্ষে ‘মুরসাল’ হাদীছ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যেমন ইমাম শাফেঈ সহ অপরাপর ইমামগণ উল্লেখ করেছেন- ১. রাবী উঁচু স্তরের তাবেঈ হওয়া। ২. রাবী যে রাবীর কাছ থেকে ‘ইরসাল’টি করেছেন তাঁকে ‘ছিক্বাহ’ বা বিশ্বস্ত বলে উল্লেখ করা। ৩. বিশ্বস্ত অন্য কোন রাবী’র বিরোধিতা না থাকা এবং ৪. নিম্নোক্ত চারটি শর্তের যে কোন একটি থাকা- যেমন (ক) অন্য কোন মুসনাদ সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (খ) অপর কোন মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (গ) ছাহাবীর কওল দ্বারা সমর্থিত হওয়া। অথবা (ঘ) অধিকাংশ বিদ্বানের মতামতের অনুকূলে হওয়া। এ সকল শর্ত পাওয়া গেলেই কেবল মুরসাল হাদীছ দলীল হিসাবে বিবেচিত হতে পারে (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৬/২০৬, তায়সীরু মুছত্বলাহিল হাদীছ পৃঃ ৬০)।
❓প্রশ্নঃ আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ গ্রন্থে তাবূক যুদ্ধের ময়দানে রাসূল (ছাঃ)-এর সে
সারগর্ভ ভাষণ সংকলিত হয়েছে, তা ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত কি?
ANSWER
🎤 তাবূকের ময়দানে সমবেত সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য
রাসূল (ছাঃ) যে সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ ভাষণ প্রদান করেছিলেন তা বিভিন্ন ইতিহাস
গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৩-৭৪; ইবনু
কাছীর, আল-বিদায়াহ ৫/১৩-১৪; মুবারকপুরী, আর-রাহীক্ব
৪৩৫ পৃঃ)। কিন্তু এর সনদ ছহীহ নয়। ভাষণটি সম্পর্কে ইবনু কাছীর বলেন, হাদীছটি
‘গরীব’। এর মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক (نكارة) কথা রয়েছে এবং এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে’ (আল-বিদায়াহ ৫/১৪)।
আলবানী বলেন, এর সনদ ‘যঈফ’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/২০৫৯)। আরনাঊত্ব
বলেন, এর সনদ ‘অতীব দুর্বল’ (যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৪-
টীকা)।
সনদের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বক্তব্যগুলি বিভিন্ন ‘ছহীহ’ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আকরাম যিয়া উমারী বলেন, তাবূকের এই দীর্ঘ ভাষণটি বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। যদিও এর বক্তব্যগুলি বিভিন্ন হাদীছ থেকে গৃহীত। যার কিছু ‘ছহীহ’ কিছু ‘হাসান’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫৩৪, বিস্তারিত দ্রঃ ‘সীরাতুর রাসূল (ছাঃ)’, ৫৪২-৫৪৫ পৃঃ)।
সনদের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বক্তব্যগুলি বিভিন্ন ‘ছহীহ’ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আকরাম যিয়া উমারী বলেন, তাবূকের এই দীর্ঘ ভাষণটি বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। যদিও এর বক্তব্যগুলি বিভিন্ন হাদীছ থেকে গৃহীত। যার কিছু ‘ছহীহ’ কিছু ‘হাসান’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫৩৪, বিস্তারিত দ্রঃ ‘সীরাতুর রাসূল (ছাঃ)’, ৫৪২-৫৪৫ পৃঃ)।
❓প্রশ্নঃ জনৈক আলেম হাদীছ বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি পরহেযগার আলেমের পিছনে ছালাত আদায় করল সে যেন নবীর পিছনে ছালাত
আদায় করল। উক্ত হাদীছটি ছহীহ কি?
ANSWER
🎤 উক্ত মর্মের বর্ণনাটি ভিত্তিহীন (সিলসিলা যঈফাহ
হা/৫৭৩, ২/৪৪ পৃঃ)।
❓প্রশ্নঃ আল্লাহ তা‘আলা একদিন জিবরীল (আঃ)-কে কয়েকটি শহর ধ্বংস করতে বললে তিনি ঘুরে
এসে বললেন, শহরগুলির একটিতে একজন আল্লাহভীরু
ব্যক্তি রয়েছেন। কিন্তু তিনি তাঁকে সহই শহরটি ধ্বংস করার নির্দেশ দিলেন। বর্ণনাটির
সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
ANSWER
🎤 এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ, যা
বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (শু‘আবুল ঈমান হা/৭১৮৯; মাজমাউয
যাওয়ায়েদ হা/১২১৫৬; মিশকাত হা/৫১৫২)। এর সনদে উবায়েদ বিন ইসহাক্ব ও
আম্মার বিন সাইফ নামক দু’জন দুর্বল রাবী রয়েছেন (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, সিলসিলা
যঈফাহ হা/১৯০৪; হায়ছামী ও হাফেয ইরাক্বীও বর্ণনাটিকে যঈফ
বলেছেন)।
❓প্রশ্নঃ হাদীছে এসেছে, তোমরা অমুসলিমদের রাস্তার সংকীর্ণ
স্থানের দিকে ঠেলে দাও। এক্ষণে অমুসলিমদের সাথে আমাদের আচরণ কিরূপ হওয়া উচিত? তাদের সম্মান করলে বা কোন হাদিয়া দিলে গোনাহ হবে কি?
ANSWER
🎤 হাদীছটি নিম্নরূপ : তোমরা ইহূদী-নাছারাদেরকে
প্রথমে সালাম দিয়ো না। যখন তোমরা তাদের কাউকে রাস্তায় পাবে, তখন
তাকে রাস্তার সংকীর্ণ স্থানের দিকে যেতে বাধ্য করো (মুসলিম হা/২১৬৭, মিশকাত
হা/৪৬৩৫)।
যেসব অমুসলিম মুসলমানদের সাথে ধর্মের কারণে বিদ্বেষ পোষণ করে এবং শত্রুতা করে, তাদের বিষয়ে উক্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি ওদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা প্রেরণ করছ, অথচ ওরা তোমাদের নিকট যে সত্য এসেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে? রাসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে এই কারণে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহতে বিশ্বাস কর’ (মুমতাহিনা ৬০/১)।
তবে সাধারণভাবে অমুসলিমদের সাথে সদাচরণ করতে হবে। যাতে তারা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আল্লাহ বলেন, ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হ’তে বহিষ্কার করেনি, তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন করতে ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালবাসেন’ (মুমতাহিনা ৬০/৮)।
যেসব অমুসলিম মুসলমানদের সাথে ধর্মের কারণে বিদ্বেষ পোষণ করে এবং শত্রুতা করে, তাদের বিষয়ে উক্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি ওদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা প্রেরণ করছ, অথচ ওরা তোমাদের নিকট যে সত্য এসেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে? রাসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে এই কারণে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহতে বিশ্বাস কর’ (মুমতাহিনা ৬০/১)।
তবে সাধারণভাবে অমুসলিমদের সাথে সদাচরণ করতে হবে। যাতে তারা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আল্লাহ বলেন, ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হ’তে বহিষ্কার করেনি, তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন করতে ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালবাসেন’ (মুমতাহিনা ৬০/৮)।
❓প্রশ্নঃ ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর কবরের নিকটে এসে
বলেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি আল্লাহর
কাছে আপনার উম্মতের জন্য পানি প্রার্থনা করুন। তারা তো ধ্বংস হয়ে গেল’- এ ঘটনার
সত্যতা আছে কি?
ANSWER
🎤 আছারটি বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। যেমন
মালেকুদ্দার বলেন, ওমর (রাঃ)-এর যুগে লোকেরা দুর্ভিক্ষে পতিত হ’ল।
তখন জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর কবরের নিকটে এলো এবং বলল, হে
আল্লাহর রাসূল! আপনার উম্মতের জন্য পানি প্রার্থনা করুন। কারণ তারা ধ্বংস হয়ে গেল।
অতঃপর আল্লাহর রাসূল স্বপ্নে ঐ ব্যক্তির নিকটে এলেন এবং তাকে বলা হ’ল, ‘তুমি
ওমরের নিকটে যাও ও তাকে আমার সালাম বল। তাকে খবর দাও যে, তোমরা
পানি প্রার্থী। আর তাকে বল, তুমি সাধ্যমত জনগণের সেবা কর। অতঃপর ঐ ব্যক্তি
ওমরের নিকটে এল এবং তাকে এ খবর দিল। তখন ওমর (রাঃ) ক্রন্দন করলেন এবং বললেন, হে
আমার প্রতিপালক আমি সাধ্যমত চেষ্টা করব’ (ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩২০০২, ইবনু
কাছীর, আল-বিদায়াহ ৩/৫৬; বুখারী, তারীখুল কাবীর ৭/৩০৪)।
আছারটির সনদ যঈফ, যা থেকে দলীল গ্রহণ করা যায় না। কারণ (১) ঘটনাটি সঠিক নয়। (২) রাবী মালেকুদ্দার ন্যায়পরায়ণতা এবং স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অপরিচিত। যা মুহাদ্দেছীনের নিকট গ্রহণযোগ্য নয় (৩) এটি শরী‘আতের বিরোধী। কেননা দুর্ভিক্ষের জন্য শরী‘আতে ইস্তিসক্বার ছালাত আদায়ের বিধান রয়েছে। স্বয়ং ওমর (রাঃ) ইস্তিসক্বার ছালাত আদায় করেছেন এবং আববাস (রাঃ)-এর অসীলায় আল্লাহর নিকটে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন(বুখারী হা/১০১০; মিশকাত হা/১৫০৯)। (৪) ছাহাবায়ে কেরামের কারু থেকে এমন কোন আমল পাওয়া যায় না যে তারা দুর্ভিক্ষের সময় রাসূল (ছাঃ)-এর কবরে গিয়েছেন এবং তাঁর নিকটে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন। যদি এটি শরী‘আতসম্মত হ’ত, তাহ’লে খলীফা হিসাবে ওমর (রাঃ) নিজেই সর্বাগ্রে কবরের নিকটে যেতেন এবং রাসূল (ছাঃ) সরাসরি তাঁকেই স্বপ্ন দেখাতেন। (৫) সর্বোপরি এটি কুরআনের আয়াতের বিরোধী। যেখানে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন, তুমি কোন কবরবাসীকে শুনাতে পারো না’ (নমল ২৭/৮০. ফাত্বির ৩৫/২২)। মূলতঃ কবরপূজারীদের স্বার্থের অনুকূলে হওয়ায় তারা ভিত্তিহীন এই কাহিনীটিকে বিশুদ্ধ প্রমাণের জন্য গলদঘর্ম হয়ে থাকে। (বিস্তারিত আলোচনা দ্রঃ নাছিরুদ্দীন আলবানী, আত-তাওয়াস্সুল পৃঃ ১২০-২৪)।
আছারটির সনদ যঈফ, যা থেকে দলীল গ্রহণ করা যায় না। কারণ (১) ঘটনাটি সঠিক নয়। (২) রাবী মালেকুদ্দার ন্যায়পরায়ণতা এবং স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অপরিচিত। যা মুহাদ্দেছীনের নিকট গ্রহণযোগ্য নয় (৩) এটি শরী‘আতের বিরোধী। কেননা দুর্ভিক্ষের জন্য শরী‘আতে ইস্তিসক্বার ছালাত আদায়ের বিধান রয়েছে। স্বয়ং ওমর (রাঃ) ইস্তিসক্বার ছালাত আদায় করেছেন এবং আববাস (রাঃ)-এর অসীলায় আল্লাহর নিকটে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন(বুখারী হা/১০১০; মিশকাত হা/১৫০৯)। (৪) ছাহাবায়ে কেরামের কারু থেকে এমন কোন আমল পাওয়া যায় না যে তারা দুর্ভিক্ষের সময় রাসূল (ছাঃ)-এর কবরে গিয়েছেন এবং তাঁর নিকটে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন। যদি এটি শরী‘আতসম্মত হ’ত, তাহ’লে খলীফা হিসাবে ওমর (রাঃ) নিজেই সর্বাগ্রে কবরের নিকটে যেতেন এবং রাসূল (ছাঃ) সরাসরি তাঁকেই স্বপ্ন দেখাতেন। (৫) সর্বোপরি এটি কুরআনের আয়াতের বিরোধী। যেখানে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন, তুমি কোন কবরবাসীকে শুনাতে পারো না’ (নমল ২৭/৮০. ফাত্বির ৩৫/২২)। মূলতঃ কবরপূজারীদের স্বার্থের অনুকূলে হওয়ায় তারা ভিত্তিহীন এই কাহিনীটিকে বিশুদ্ধ প্রমাণের জন্য গলদঘর্ম হয়ে থাকে। (বিস্তারিত আলোচনা দ্রঃ নাছিরুদ্দীন আলবানী, আত-তাওয়াস্সুল পৃঃ ১২০-২৪)।
❓প্রশ্নঃ শরী‘আতে দলীল গ্রহণের ক্ষেত্রে ছহীহ দলীল না পাওয়ার ক্ষেত্রে যঈফ হাদীছ ও
ইজতিহাদের মধ্যে কোনটি অগ্রগণ্য হবে? বিস্তারিত জানতে চাই।
ANSWER
🎤 এক্ষেত্রে ইজতিহাদই অগ্রগণ্য হবে। কেননা ইজতিহাদ
হ’ল, কোন বিষয়ে কুরআন, ছহীহ সুন্নাহ ও ইজমায়ে ছাহাবার মধ্যে
স্পষ্ট সমাধান না পাওয়া গেলে উক্ত মূলনীতিগুলির আলোকে সমাধান দানের সার্বিক
প্রচেষ্টা চালানো। অন্যদিকে যঈফ হাদীছ কোন ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য নয়। ইমাম বুখারী, মুসলিম, ইয়াহইয়া
ইবনু মাঈন, ইবনুল আরাবী, ইবনু হযম, ইবনু
তায়মিয়াহ প্রমুখ শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিছগণ সকল ক্ষেত্রে যঈফ হাদীছ বর্জনযোগ্য
বলেছেন (বিঃ দ্রঃ জামালুদ্দীন ক্বাসেমী, ক্বাওয়াইদুত তাহদীছ; আশরাফ
বিন সাঈদ, হুকমুল ‘আমাল বিল হাদীছিয যঈফ)। শায়খ
নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘যঈফ হাদীছ অতিরিক্ত ধারণার ফায়েদা দেয়
মাত্র। তবে এ বিষয়ে সকল বিদ্বান একমত যে, তার উপর আমল করা বৈধ নয়’ (তামামুল
মিন্নাহ, পৃঃ ৩৪)। অতএব যঈফ হাদীছ কোন ক্ষেত্রেই দলীল
হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
❓প্রশ্নঃ যে ব্যক্তি কোন মুত্তাক্বী আলেমের সাথে সাক্ষাৎ করল, সে যেন স্বয়ং রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করল। এ বর্ণনাটির কোন সত্যতা আছে
কি?
ANSWER
🎤 বর্ণনাটি মওযূ বা জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৩৩৩, তাযকিরাতুল
মাওযূ‘আত ১/১৯)।
❓প্রশ্নঃ ‘আল্লাহ ততক্ষণ বিরক্ত হননা, যতক্ষণ না তোমরা বিরক্ত হও’ হাদীছটির ব্যাখ্যা কি? বিরক্ত হওয়ার গুণ কি আল্লাহর গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত?
ANSWER
🎤 এটি আল্লাহর গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত। আয়েশা (রাঃ)
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমার ঘরে
প্রবেশ করলেন যখন আমার পাশে জনৈকা মহিলা বসা ছিল। তিনি বললেন ইনি কে? আমি
বললাম, ইনি হাওলা বিনতে তুওয়াইত যিনি রাতে ঘুমান না
(অর্থাৎ ইবাদতে মগ্ন থাকেন)। একথা শুনে রাসূল (ছাঃ) বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন, তোমাদের
সাধ্য অনুযায়ী আমল কর। আল্লাহর কসম, আল্লাহ অতক্ষণ বিরক্ত হননা যতক্ষণ না
তোমরা বিরক্ত হয়ে পড়ো (মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/৩৮৮, বুখারী হা/৪৩; মুসলিম
হা/৭৮৫)। অত্র হাদীছে ‘আল্লাহ বিরক্ত হন না’ এর অর্থ হ’ল আল্লাহ তা‘আলা নেকী ও
ছওয়াব প্রদান থেকে বঞ্চিত করেন না। আর প্রকাশ্য অর্থে বিরক্ত হওয়া আল্লাহ তা‘আলার
গুণাবলীর অন্যতম। যেমন রেগে যাওয়া, হাসা ইত্যাদি। তবে এটা সৃষ্টির কোন
গুণাবলীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয় (শূরা ১১; শায়খ উছায়মীন, শারহু
রিয়াযুছ ছালেহীন ১/১৬১ হা/১৪২)। কোন ক্লান্তি আল্লাহকে স্পর্শ করে না (ক্বাফ ৩৮)।
কোন কোন আলেম মনে করেন, অত্র হাদীছ দ্বারা আল্লাহর বিরক্তি প্রকাশ পায়
না। যেমন কেউ বলল ‘আমি দাঁড়াব না যতক্ষণ না তুমি দাঁড়াবে ’ এ বাক্যটি ২য় ব্যক্তির
দন্ডায়মান হওয়াকে আবশ্যক করে না। অনুরূপ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বাণী, ‘যতক্ষণ
না তুমি বিরক্ত হবে, আল্লাহ বিরক্ত হবেন না’। এটা আল্লাহর জন্য
বিরক্ত হওয়া আবশ্যক করে না। তবে আল্লাহ তা‘আলা এ সকল ত্রুটি থেকে মুক্ত। এ হাদীছ দ্বারা
বিরক্তি সাব্যস্ত হলেও এটা অন্যদের মত নয় (ফাতাওয়া উছায়মীন ১/১৭৪)। অনুরূপভাবে বলা যায়
এটা কুরআনে বর্ণিত মাকর (কৌশল), কায়দ (ফন্দি), খিদা‘
(ধোঁকা)-এর মত আল্লাহর একটি গুণ যার প্রতি ঈমান আনা আবশ্যক(ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা
২/৪০২)।
❓প্রশ্নঃ হাদীছ গ্রন্থগুলি আগে সংকলিত হয়েছে না প্রচলিত চার মাযহাব আগে তৈরী হয়েছে? বিস্তারিত জানতে চাই।
ANSWER
🎤 রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগেই হাদীছ লেখা শুরু হয়।
মক্কা বিজয়ের পর তাঁর ভাষণের কিছু অংশ তিনি জনৈক আবু শাহকে লিখে দিতে বলেন (বুখারী
হা/২৪৩৪)। এছাড়া অন্যান্য প্রমাণও রয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে হাদীছের সংকলনকার্য
শুরু হয় খলীফা ওমর ইবনু আব্দিল আযীয (৯৯-১০১ হিঃ)-এর সময়ে। তাঁর নির্দেশে হাদীছ
সংকলনের কাজ শুরু হয় (বিস্তারিত দ্রঃ মুছতফা আল-আ‘যমী, দিরাসাত
ফিল হাদীছিন নববী ওয়া তারীখু তাদভীনিহি)।তৃতীয় শতাব্দী ছিল হাদীছ সংকলনের
স্বর্ণযুগ। প্রচলিত মাযহাবের জন্ম হয়েছে ৪র্থ শতাব্দীতে। যেমন শাহ অলিউল্লাহ
মুহাদ্দিছ দেহলভী (রহঃ) বলেন, ‘জেনে রাখ যে, ৪র্থ
শতাব্দী হিজরীর পূর্বে কোন মুসলমান কোন একজন নির্দিষ্ট বিদ্বানের মাযহাবের
তাক্বলীদের উপরে সংঘবদ্ধ ছিল না’ {হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ (কায়রো :
১৩৫৫/১৯৩৬), ১/১৫২ পৃঃ}। সুতরাং প্রচলিত
মাযহাব সমূহ সৃষ্টি হয়েছে হাদীছ সংকলন যুগের পরে।
❓প্রশ্নঃ ‘আদম সন্তানের পেট মাটি ব্যতীত পূর্ণ হবে না’ মর্মে হাদীছটির ব্যাখ্যা কি?
ANSWER
🎤 হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী
করীম (ছাঃ) বলেছেন, আদম সন্তানকে ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ দু’টি উপত্যকাও
যদি দেওয়া হয়, সে তৃতীয়টির আকাংখা করবে। আদম সন্তানের পেট মাটি
ব্যতীত অন্য কিছু পূর্ণ করতে পারবে না’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৭৩)। অত্র হাদীছে মৃত্যুর
আগ পর্যন্ত মানুষ যে দুনিয়ার প্রতি আসক্ত থাকবে তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
মৃত্যুর পর কবরের মাটি তার পেট তথা আকাংখা পূর্ণ করবে (নববী, শরহ
মুসলিম)। খাদ্য গ্রহণে মাধ্যমে উদরপূর্তি হলে যেমন মানুষের ক্ষুধা মিটে যায়, তেমনি
মৃত্যু মানুষের সকল আশা-আকাংখার পরিসমাপ্তি ঘটায়। অতএব ‘মাটি ব্যতীত’ অর্থ কবরের
মাটি ব্যতীত।
❓প্রশ্নঃ কোন হাদীছে এসেছে ক্বিয়ামতের দিন মানুষ উলঙ্গ অবস্থায় এবং কোন হাদীছে এসেছে
যে কাপড়ে দাফন হবে সে কাপড়ে পুনরুত্থিত হবে। উভয় হাদীছের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান কি?
ANSWER
🎤 ক্বিয়ামতের দিন মানুষকে বস্ত্রহীন অবস্থাতেই
পুনরুত্থিত করা হবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৩৬)। কোন হাদীছে বলা হয়নি
যে, কাফন পরা অবস্থায় উঠবে। কেবল একটি হাদীছে এসেছে, প্রত্যেক
বান্দা যে অবস্থায় মারা যাবে তাকে সে অবস্থায় উঠানো হবে (মুসলিম, মিশকাত
হা/৫৩৪৫)। এর সঠিক ব্যাখ্যা হচ্ছে এই যে, দুনিয়াতে ভালো কর্ম করে মারা গেলে
ভালো অবস্থায় আর মন্দ কর্ম করে মারা গিয়ে থাকলে মন্দ অবস্থায় উঠবে (মানাবী, ফায়যুল
ক্বাদীর ২/৪৪০)। যেমন বলা হয়েছে, ইহরাম অবস্থায় মারা গেলে তাকে
তালবিয়াহ পাঠ করা অবস্থায় উঠানো হবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৬৩৭)।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite
0 Comments