▌শিয়া-সুন্নি ঐক্য কি আদৌ সম্ভব?
·পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা সমগ্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি অবতীর্ণ হোক আল্লাহর বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের ওপর।
পর সমাচার এই যে, অধুনা জনপ্রিয় এক ‘সুন্নি দাবিদার’ মুফতি সাহেবকে বলতে শোনা গেছে, তিনি শিয়া সম্প্রদায়কে মুসলিম মনে করেন এবং তিনি শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার মত পোষণ করেন। আমরা ইতোমধ্যে শিয়াদের মৌলিক কুফরি ‘আক্বীদাহ সম্পর্কে জেনেছি এবং ইরানের শিয়ারা মুসলিম কি না সে সম্পর্কেও অবগত হয়েছি। ফালিল্লাহিল হামদ। তারপরেও যাঁরা জানেন না, তাঁরা “ইরানেরা শিয়ারা কি মুসলিম”– শীর্ষক নিবন্ধটি পড়ে দেখতে পারেন। নিবন্ধের লিংক: https://tinyurl(ডট)com/ tfzoctf।
এখন কথা হচ্ছে, শিয়া-সুন্নির মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব কি না, অথবা এর বাস্তবতা কতটুকু, আর যারা এরকম ঐক্য কামনা করে তাদের বিধানই বা কী—তা জানা দরকার। আসুন দেখি, যুগশ্রেষ্ঠ ‘আলিমগণ কী বলেন।
·
সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি, বিগত শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, শাইখুল ইসলাম, ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,
التقريب بين الرافضة وبين أهل السنة غير ممكن؛ لأن العقيدة مختلفة، فعقيدة أهل السنة والجماعة توحيد الله وإخلاص العبادة لله سبحانه وتعالى، وأنه لا يدعى معه أحد لا ملك مقرب ولا نبي مرسل، وأن الله سبحانه وتعالى هو الذي يعلم الغيب، ومن عقيدة أهل السنة محبة الصحابة رضي الله عنهم جميعا والترضي عنهم، والإيمان بأنهم أفضل خلق الله بعد الأنبياء، وأن أفضلهم أبو بكر الصديق، ثم عمر، ثم عثمان، ثم علي، رضي الله عن الجميع، والرافضة خلاف ذلك فلا يمكن الجمع بينهما، كما أنه لا يمكن الجمع بين اليهود والنصارى والوثنيين وأهل السنة، فكذلك لا يمكن التقريب بين الرافضة وبين أهل السنة لاختلاف العقيدة التي أوضحناها.
“রাফিদ্বী শিয়া এবং আহলুস সুন্নাহকে পরস্পরের কাছে আনা অসম্ভব। কেননা (এদের) ‘আক্বীদাহ আলাদা আলাদা। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ‘আক্বীদাহ হলো আল্লাহকে এক বলে গণ্য করা, ইবাদতকে আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ করা, এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, দু‘আর ক্ষেত্রে তাঁর সাথে আর কাউকে শরিক করা যাবে না, না কোনো নৈকট্যশীল ফেরেশতাকে, আর না কোনো প্রেরিত নাবীকে এবং এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, কেবল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলাই গায়েব জানেন।
আহলুস সুন্নাহর ‘আক্বীদাহর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে—সকল সাহাবীকে (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম) ভালোবাসা এবং তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, আর এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, তাঁরা হলেন নাবীগণের পরে আল্লাহর সর্বোত্তম সৃষ্টি, আর তাঁদের মধ্যে সর্বোত্তম হলেন আবূ বাকার আস-সিদ্দীক্ব, তারপর ‘উমার, তারপর ‘উসমান, তারপর ‘আলী। আল্লাহ তাঁদের সবার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। পক্ষান্তরে রাফিদ্বীরা এর বিপরীত। তাই রাফিদ্বী এবং আহলুস সুন্নাহর মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব নয়। যেমনভাবে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মূর্তিপূজারীদের সাথে আহলুস সুন্নাহর সমন্বয় করা সম্ভব নয়। অনুরূপভাবে রাফিদ্বী সম্প্রদায় এবং আহলুস সুন্নাহকে পরস্পরের কাছে আনা সম্ভব নয় ‘আক্বীদাহর ভিন্নতার কারণে, যে ‘আক্বীদাহ আমরা বর্ণনা করলাম।” [মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ; খণ্ড: ২৭; পৃষ্ঠা: ৩২৫]
·ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এবং সালাফী দা‘ওয়াতের মুজাদ্দিদ, ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন,
نسمع أناسا ممن لا بصيرة لهم بالعلم يقولون: نتحد مع الشيعة.
“আমরা কতিপয় লোককে বলতে শুনছি, যারা মূলত কোনো জাগ্রত জ্ঞান বা দূরদর্শিতা নেই—এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত, তারা বলে, ‘আমরা শিয়াদের সাথে ঐক্য করব’।” [আল-মুসারা‘আহ, পৃষ্ঠা: ৩৭; গৃহীত: সাহাব (sahab) ডট নেট]
·সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, بعض الدعاة وطلبة العلم يقولون عند التحدث عن الشيعة والرافضة إنهم إخواننا، هل يجوز أن نقول ذلك وما الواجب في ذلك؟ “কতিপয় দা‘ঈ এবং ত্বালিবুল ‘ইলম শিয়া ও রাফিদ্বীদের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, তারা আমাদের ভাই। আমাদের জন্য কি এই কথা বলা বৈধ? এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী?”
তিনি (হাফিযাহুল্লাহ) জবাবে বলেছেন,
نبرأ إلى الله منهم ونبرأ إلى الله من هذا القول، ليسوا إخواننا، والله ليسوا إخواننا، بل هم إخوان الشيطان، لأنهم يسبون أم المؤمنين عائشة رضي الله عنها زوج النبي ﷺ التي إختارها الله لنبيه ﷺ الصديقة بنت الصديق، ويكفرون أبا بكر وعمر ويلعنونهما ويكفرون الصحابة عمومًا إلا أهل البيت علي بن أبي طالب رضي الله عنه، مع أنهم هم أعداء علي بن أبي طالب، علي يبرأ منهم رضي الله عنه، بريءٌ منهم؛ علي إمامنا وليس إمامهم؛ إمام أهل السنة؛ ليس إمام الرافضة الخبثاء. فنحن نبرأ إلى الله منهم؛ وليسوا إخواننا؛ ومن قال إنهم إخواننا فليتب إلى الله ويستغفر الله؛ والله -جلّ وعلا- أوجب علينا البراءة من أهل الضلال وموالاة أهل الإيمان.
“আমরা আল্লাহর কাছে তাদের থেকে (নিজেদেরকে) মুক্ত ঘোষণা করছি এবং আল্লাহর কাছে এই কথা থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি। তারা আমাদের ভাই না। আল্লাহর কসম, তারা আমাদের ভাই না। বরং তারা শয়তানের ভাই। কেননা তারা মু’মিনদের জননী ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) কে গালি দেয়। যিনি ছিলেন নাবী ﷺ এর সহধর্মিনী, যাঁকে স্বয়ং আল্লাহ তাঁর নাবীর ﷺ জন্য নির্বাচিত করেছেন, এবং যিনি ছিলেন সিদ্দীক্ব তনয়া সিদ্দীক্বাহ।
তারা আবূ বাকার ও ‘উমারকে কাফির বলে এবং তাঁদেরকে অভিসম্পাত করে। তারা আমভাবে সকল সাহাবীকে কাফির বলে, শুধু আহলে বাইতের কয়েকজন সাহাবী বাদে, যে সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত হলেন ‘আলী বিন আবূ ত্বালিব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)। যদিও তারাই হলো ‘আলী বিন আবূ ত্বালিবের শত্রু। ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) নির্দোষ এবং তাদের থেকে মুক্ত। ‘আলী হলেন আমাদের ইমাম, তাদের ইমাম নন। তিনি আহলুস সুন্নাহ’র ইমাম, রাফিদ্বী খবিসদের ইমাম নন।
আমরা আল্লাহর কাছে তাদের থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি। তারা আমাদের ভাই না। যে ব্যক্তি বলেছে, তারা আমাদের ভাই, সে যেন আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করে। মহান আল্লাহ পথভ্রষ্টদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং মু’মিনদের সাথে মিত্রতা পোষণ করা আমাদের ওপর আবশ্যক করেছেন।” [দ্র.: www.tasfiatarbia(ডট)org/ vb/showthread.php?t=21030.]
·
ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অনুষদ সদস্য ও অধ্যাপক, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ‘আব্দুর রহমান বিন নাসির আল-বাররাক (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫২ হি./১৯৩৩ খ্রি.] বলেছেন, فالذي يدعو إلى التقريب بين السنة والشيعة إما جاهل بحقيقة المذهبين، وإما متجاهل مغالط “যে ব্যক্তি সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়কে পরস্পরের কাছে আনয়ন করার দিকে মানুষকে আহ্বান করে, সে হয় এই দুই সম্প্রদায়ের প্রকৃতত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ, আর না হয় অজ্ঞতার ভানকারী ভ্রষ্ট।” [দ্র.: https://tinyurl(ডট)com/ y2esu52w
(ইসলামওয়ে ডট নেটের আর্টিকেল লিংক)]
আহলুস সুন্নাহর যুগশ্রেষ্ঠ বিদ্বানগণের বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয়ে গেল যে, শিয়া-সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের দাবি করা সম্পূর্ণরূপে বাতিল, ভ্রান্ত এবং জুলুম। আল্লাহ আমাদেরকে এরকম বাতিল মতাদর্শ থেকে হেফাজত করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল ‘আলামীন।
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
www.facebook.com/ SunniSalafiAthari
·পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা সমগ্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি অবতীর্ণ হোক আল্লাহর বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের ওপর।
পর সমাচার এই যে, অধুনা জনপ্রিয় এক ‘সুন্নি দাবিদার’ মুফতি সাহেবকে বলতে শোনা গেছে, তিনি শিয়া সম্প্রদায়কে মুসলিম মনে করেন এবং তিনি শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার মত পোষণ করেন। আমরা ইতোমধ্যে শিয়াদের মৌলিক কুফরি ‘আক্বীদাহ সম্পর্কে জেনেছি এবং ইরানের শিয়ারা মুসলিম কি না সে সম্পর্কেও অবগত হয়েছি। ফালিল্লাহিল হামদ। তারপরেও যাঁরা জানেন না, তাঁরা “ইরানেরা শিয়ারা কি মুসলিম”– শীর্ষক নিবন্ধটি পড়ে দেখতে পারেন। নিবন্ধের লিংক: https://tinyurl(ডট)com/
এখন কথা হচ্ছে, শিয়া-সুন্নির মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব কি না, অথবা এর বাস্তবতা কতটুকু, আর যারা এরকম ঐক্য কামনা করে তাদের বিধানই বা কী—তা জানা দরকার। আসুন দেখি, যুগশ্রেষ্ঠ ‘আলিমগণ কী বলেন।
·
সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি, বিগত শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, শাইখুল ইসলাম, ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,
التقريب بين الرافضة وبين أهل السنة غير ممكن؛ لأن العقيدة مختلفة، فعقيدة أهل السنة والجماعة توحيد الله وإخلاص العبادة لله سبحانه وتعالى، وأنه لا يدعى معه أحد لا ملك مقرب ولا نبي مرسل، وأن الله سبحانه وتعالى هو الذي يعلم الغيب، ومن عقيدة أهل السنة محبة الصحابة رضي الله عنهم جميعا والترضي عنهم، والإيمان بأنهم أفضل خلق الله بعد الأنبياء، وأن أفضلهم أبو بكر الصديق، ثم عمر، ثم عثمان، ثم علي، رضي الله عن الجميع، والرافضة خلاف ذلك فلا يمكن الجمع بينهما، كما أنه لا يمكن الجمع بين اليهود والنصارى والوثنيين وأهل السنة، فكذلك لا يمكن التقريب بين الرافضة وبين أهل السنة لاختلاف العقيدة التي أوضحناها.
“রাফিদ্বী শিয়া এবং আহলুস সুন্নাহকে পরস্পরের কাছে আনা অসম্ভব। কেননা (এদের) ‘আক্বীদাহ আলাদা আলাদা। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ‘আক্বীদাহ হলো আল্লাহকে এক বলে গণ্য করা, ইবাদতকে আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ করা, এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, দু‘আর ক্ষেত্রে তাঁর সাথে আর কাউকে শরিক করা যাবে না, না কোনো নৈকট্যশীল ফেরেশতাকে, আর না কোনো প্রেরিত নাবীকে এবং এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, কেবল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলাই গায়েব জানেন।
আহলুস সুন্নাহর ‘আক্বীদাহর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে—সকল সাহাবীকে (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম) ভালোবাসা এবং তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, আর এই বিশ্বাস পোষণ করা যে, তাঁরা হলেন নাবীগণের পরে আল্লাহর সর্বোত্তম সৃষ্টি, আর তাঁদের মধ্যে সর্বোত্তম হলেন আবূ বাকার আস-সিদ্দীক্ব, তারপর ‘উমার, তারপর ‘উসমান, তারপর ‘আলী। আল্লাহ তাঁদের সবার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। পক্ষান্তরে রাফিদ্বীরা এর বিপরীত। তাই রাফিদ্বী এবং আহলুস সুন্নাহর মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব নয়। যেমনভাবে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মূর্তিপূজারীদের সাথে আহলুস সুন্নাহর সমন্বয় করা সম্ভব নয়। অনুরূপভাবে রাফিদ্বী সম্প্রদায় এবং আহলুস সুন্নাহকে পরস্পরের কাছে আনা সম্ভব নয় ‘আক্বীদাহর ভিন্নতার কারণে, যে ‘আক্বীদাহ আমরা বর্ণনা করলাম।” [মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ; খণ্ড: ২৭; পৃষ্ঠা: ৩২৫]
·ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এবং সালাফী দা‘ওয়াতের মুজাদ্দিদ, ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন,
نسمع أناسا ممن لا بصيرة لهم بالعلم يقولون: نتحد مع الشيعة.
“আমরা কতিপয় লোককে বলতে শুনছি, যারা মূলত কোনো জাগ্রত জ্ঞান বা দূরদর্শিতা নেই—এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত, তারা বলে, ‘আমরা শিয়াদের সাথে ঐক্য করব’।” [আল-মুসারা‘আহ, পৃষ্ঠা: ৩৭; গৃহীত: সাহাব (sahab) ডট নেট]
·সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, بعض الدعاة وطلبة العلم يقولون عند التحدث عن الشيعة والرافضة إنهم إخواننا، هل يجوز أن نقول ذلك وما الواجب في ذلك؟ “কতিপয় দা‘ঈ এবং ত্বালিবুল ‘ইলম শিয়া ও রাফিদ্বীদের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, তারা আমাদের ভাই। আমাদের জন্য কি এই কথা বলা বৈধ? এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী?”
তিনি (হাফিযাহুল্লাহ) জবাবে বলেছেন,
نبرأ إلى الله منهم ونبرأ إلى الله من هذا القول، ليسوا إخواننا، والله ليسوا إخواننا، بل هم إخوان الشيطان، لأنهم يسبون أم المؤمنين عائشة رضي الله عنها زوج النبي ﷺ التي إختارها الله لنبيه ﷺ الصديقة بنت الصديق، ويكفرون أبا بكر وعمر ويلعنونهما ويكفرون الصحابة عمومًا إلا أهل البيت علي بن أبي طالب رضي الله عنه، مع أنهم هم أعداء علي بن أبي طالب، علي يبرأ منهم رضي الله عنه، بريءٌ منهم؛ علي إمامنا وليس إمامهم؛ إمام أهل السنة؛ ليس إمام الرافضة الخبثاء. فنحن نبرأ إلى الله منهم؛ وليسوا إخواننا؛ ومن قال إنهم إخواننا فليتب إلى الله ويستغفر الله؛ والله -جلّ وعلا- أوجب علينا البراءة من أهل الضلال وموالاة أهل الإيمان.
“আমরা আল্লাহর কাছে তাদের থেকে (নিজেদেরকে) মুক্ত ঘোষণা করছি এবং আল্লাহর কাছে এই কথা থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি। তারা আমাদের ভাই না। আল্লাহর কসম, তারা আমাদের ভাই না। বরং তারা শয়তানের ভাই। কেননা তারা মু’মিনদের জননী ‘আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা) কে গালি দেয়। যিনি ছিলেন নাবী ﷺ এর সহধর্মিনী, যাঁকে স্বয়ং আল্লাহ তাঁর নাবীর ﷺ জন্য নির্বাচিত করেছেন, এবং যিনি ছিলেন সিদ্দীক্ব তনয়া সিদ্দীক্বাহ।
তারা আবূ বাকার ও ‘উমারকে কাফির বলে এবং তাঁদেরকে অভিসম্পাত করে। তারা আমভাবে সকল সাহাবীকে কাফির বলে, শুধু আহলে বাইতের কয়েকজন সাহাবী বাদে, যে সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত হলেন ‘আলী বিন আবূ ত্বালিব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)। যদিও তারাই হলো ‘আলী বিন আবূ ত্বালিবের শত্রু। ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) নির্দোষ এবং তাদের থেকে মুক্ত। ‘আলী হলেন আমাদের ইমাম, তাদের ইমাম নন। তিনি আহলুস সুন্নাহ’র ইমাম, রাফিদ্বী খবিসদের ইমাম নন।
আমরা আল্লাহর কাছে তাদের থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি। তারা আমাদের ভাই না। যে ব্যক্তি বলেছে, তারা আমাদের ভাই, সে যেন আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করে। মহান আল্লাহ পথভ্রষ্টদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং মু’মিনদের সাথে মিত্রতা পোষণ করা আমাদের ওপর আবশ্যক করেছেন।” [দ্র.: www.tasfiatarbia(ডট)org/
·
ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অনুষদ সদস্য ও অধ্যাপক, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ‘আব্দুর রহমান বিন নাসির আল-বাররাক (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫২ হি./১৯৩৩ খ্রি.] বলেছেন, فالذي يدعو إلى التقريب بين السنة والشيعة إما جاهل بحقيقة المذهبين، وإما متجاهل مغالط “যে ব্যক্তি সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়কে পরস্পরের কাছে আনয়ন করার দিকে মানুষকে আহ্বান করে, সে হয় এই দুই সম্প্রদায়ের প্রকৃতত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ, আর না হয় অজ্ঞতার ভানকারী ভ্রষ্ট।” [দ্র.: https://tinyurl(ডট)com/
আহলুস সুন্নাহর যুগশ্রেষ্ঠ বিদ্বানগণের বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয়ে গেল যে, শিয়া-সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের দাবি করা সম্পূর্ণরূপে বাতিল, ভ্রান্ত এবং জুলুম। আল্লাহ আমাদেরকে এরকম বাতিল মতাদর্শ থেকে হেফাজত করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল ‘আলামীন।
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
www.facebook.com/
0 Comments