Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

▌‘উসমানী আযান কি বিদ‘আত?


▌‘উসমানী আযান কি বিদআত?
·. ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন
আর এটা ছিল সেই আয়াতের শেষাংশ, যা পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে, হে মুমিনগণ, জুমুআহর দিনে সালাতের জন্য যখন আহ্বান করা হয়, আল্লাহর জিকিরের দিকে অগ্রগামী হও এবং ক্রয়বিক্রয় বর্জন করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে। [সূরাহ জুমুআহ: ] সুতরাং জুমুআহর আযান হলে আল্লাহ মুমিনদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ব্যবসায়িক কাজকর্ম বাদ দিতে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো দ্বিতীয় আযান, যেটা ইমামের উপস্থিতিতে দেওয়া হয়। আর প্রথম আযানের ক্ষেত্রে কথা হলো, উসমান ইবনু আফফান (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) যখন দেখলেন মাদীনাহতে লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি (দ্বিতীয় আযানের) পূর্বে একটা আযান দেওয়ার নির্দেশ দিলেন, যাতে লোকেরা সালাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। সুতরাং এটি হলো ন্যায়নিষ্ঠ খলিফা উসমানের সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত, যাকে অনুসরণ করতে আমরা আদিষ্ট হয়েছি। যেমনটা নাবী বলেছেন, তোমাদের ওপর (অনুসরণীয়) হলো আমার সুন্নাহ এবং আমার পরে ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের সুন্নাহ। [আবূ দাঊদ, হা/৪৬০৭; সনদ: সাহীহ] আর যে বলে, এটি বিদআত, সে পথভ্রষ্ট এবং সে সাহাবাদেরকে ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাকে তাচ্ছিল্য করছে। আমরা বলি, তুমি যে এটাকে বিদআত দাবি করছ, এই বক্তব্যের মাধ্যমে তুমি নিজেই বিদ'আতী। এটা কীভাবে বিদআত হতে পারে, যেখানে রাসূল এটাকে সুন্নাহ বলেছেন?! (তিনি বলেছেন) আমার পরে ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের সুন্নাহ। কিন্তু ওই লোকেরা হলো স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন, যদিও তাদের বয়স বেশি। কীভাবে নিজেকে সুন্নাহপন্থি দাবি করার পর তুমি বলতে পার, সাহাবা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) এবং তাদের নেতা উসমান ভুল পথে পরিচালিত? বরং এই বক্তব্যের মাধ্যমে তুমিই একজন বিদআতপন্থি। [দ্র.: www.youtube.com/watch?v=mnXZqmEqQ9w.]
·. ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] প্রদত্ত ফতোয়া
প্রশ্ন: প্রশ্নকারী বলছেন, এই কথার সঠিকতা কতটুক যে, উসমানের আযান হলো বিদআত ভ্রষ্টতা?
উত্তর: এই কথাটাই বিদআত। যে এমনটা বলেছে, সে একটা বিদআতী (কথা বলেছে) রাসূল বলেছেন, তোমাদের ওপর অনুসরণীয় হলো আমার সুন্নাহ এবং আমার পরে ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের সুন্নাহ। উসমান কি ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের অন্তর্ভুক্ত নয়? হ্যাঁ? উসমান কি ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের অন্তর্ভুক্ত না? তিনি কি তৃতীয় খলিফা না? বেশ, তাহলে তিনি যেটার নির্দেশ দিয়েছেন, তা সুন্নাহ। ফজরের পূর্বের প্রথম আজানের মতোই (জুমুআহর) প্রথম আজান সুন্নাহ। এটা লোকদের জাগ্রত করার সুন্নাহ। উসমান এই আযানের নির্দেশ দিয়েছেন। যখন তিনি দেখলেন লোকেরা তাদের খামার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত, তারা যাতে সচেতন হয় এবং এর জন্য (জুমুআহর সালাতের জন্য) প্রস্তুতি নিতে পারে। সুতরাং এটা সুন্নাহ হয়ে গিয়েছে। আর এই লোক সুন্নাহ বিদআতের মধ্যে পার্থক্য জানে না। যে কোনো কিছু সে জানে না, সে সেটাকে বিদআত মনে করে। [দ্র.: www.youtube.com/watch?v=ag51LaIC8Ks.]
·. ইমাম সালিহ আল-ফাওযানের আরেকটি ফতোয়া
প্রশ্ন: দাঈদের একজন বলে, আমরা উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) কে বিদআতী বলি না, তবে আমরা বলি, জুমুআহর প্রথম আযান বিদআত। তিনি (প্রশ্নকারী) বলছেন, এই কথার ব্যাপারে হুকুম কী?
উত্তর: এটা (এই কথা) নিজেই বিদআত, এটা নিজেই বিদআত। এই লোক, সে হলো একজন বিদআতী। ধরনের কথা থেকে তার জিহ্বাকে হেফাজত করা তার জন্য ওয়াজিব। উসমান একজন ন্যায়নিষ্ঠ খলিফা। রাসূল বলেন, তোমাদের ওপর অনুসরণীয় হলো আমার সুন্নাহ এবং আমার পরে ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের সুন্নাহ। [আবূ দাঊদ, হা/৪৬০৭; সনদ: সাহীহ] এটাই কি সুন্নাহর জন্য তার আগ্রহ? যে সাহাবাদের বিদআতী বলে, খলিফাদের বিদআতী বলে! সুন্নাহ কি এরকম? আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই! এটা হলো অজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত এবং সুন্নাহ থেকে বিদআতের পার্থক্য না জানার অন্তর্ভুক্ত। [দ্র.: www.youtube.com/watch?v=hrO4ZLBBwwQ.]
. ইমাম সালিহ আল-ফাওযানের আরেকটি ফতোয়া
প্রশ্ন: জুমুআহর সালাতের প্রথম আযান, এটা কি মুয়াযযিনের পরে পুনরাবৃত্ত হবে?
উত্তর: এটা আযান। এই আযান শরিয়াসম্মত। কারণ এটা ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত। তৃতীয় খলিফা উসমান (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের একজন আলী ইবনু আবী তালিব, মুহাজির আনসারদের বর্তমান থাকা অবস্থায় এর আদেশ দেন। আর তারা এটা থেকে নিষেধ করেননি। তবে ইবনু আবি শাইবাহ তাঁর মুসান্নাফে ইবনু উমার থেকে যা বর্ণনা করেছেন, তা ব্যতিত, যিনি (ইবনু উমার) বলেছেন, এটা হলো বিদআত। ইবনু উমারের বর্ণনা উল্লেখ করার সময় ইবনু রাজাব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি ভালো বিদআত উদ্দেশ্য করেছেন, খারাপ বিদআত নয়। যেমনটা তাঁর পিতা তারাউয়ীহর সালাতের ব্যাপারে বলেছিলেন, এটা কতই না উত্তম বিদআত। অর্থাৎ এটি ভাষাগত দিক থেকে বিদআত, শারঈ দিক থেকে নয়। নাআম। [দ্র.: www.youtube.com/watch?v=gWbSnb8wLQY.]
বিশেষ দ্রষ্টব্য: জনৈক আরব দা জুমুআহর প্রথম আযানকে (উসমানি আযানকে) বিদআত আখ্যা দিয়ে সালাফী দাঈদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে একটি প্রবন্ধ লিখেছিল। সেখানে সে কিছু সালাফী উলামার মতকে নিজের মতের স্বপক্ষে উপস্থাপন করে এবং সাইয়্যিদুনা উসমানের শানেইচ্ছা বা অনিচ্ছায়অন্যায় মন্তব্য করে। তার এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ লেখার লা-জওয়াব রদ লিখেছেন মুহাদ্দিসুল মাদীনাহ ইমাম রাবী বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) অচিরেই শাইখের নিবন্ধটির অনুবাদ পেজ থেকে পাবলিশ করা হবে, ইনশাআল্লাহ।
·অনুবাদক: রিফাত রাহমান সিয়াম
সম্পাদক: মুহাম্মাদ 'আব্দুল্লাহ মৃধা
সালাফী: আক্বীদাহ্ মানহাজে

Post a Comment

0 Comments