▌দাওয়াহ ও হিকমাহ:
অনন্য দৃষ্টান্ত ও নাসীহাহ
·মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীস ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বর্তমান
যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, আশ-শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম রাবী‘ বিন হাদী বিন ‘উমাইর
আল-মাদখালী হাফিযাহুল্লাহ (জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.) বলেছেন—
.
[১]
.❝অতঃপর আমরা সুদানের কাসালাতে সফর করলাম। এটা ছিল মাশাআল্লাহ। আমরা সেখানে দাওয়াহ
দিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। আমরা কথা বলেছি এবং আল্লাহ সেখানকার লোকদের উপকৃত করেছেন।...
এটা একটা ছোটো শহর, তাই আমরা সেখানকার সব মসজিদে গিয়েছিলাম। তারা বললেন, ‘একটা মাত্র
মাসজিদ আছে যেখানে আমরা এখনো যাইনি। আর এটা হলো তিজানী (সুফি তরিকার) মানহাজের ওপর
প্রতিষ্ঠিত। আর এটা একটা মাসজিদ, যার ভিতরে আমরা এখনো প্রবেশ করতে পারিনি।’ কারণ তারা
ছিল খুবই গোঁড়া।
আমি বললাম, ‘আমরা সেখানে যেয়ে অনুমতি চাইব। তারা যদি আমাদের কথা বলার অনুমতি দেয়, আমরা
কথা বলব। তারা যদি আমাদের কথা বলতে অনুমতি না দেয়, আমরা চলে আসব। আর তা আল্লাহর ওপর
নির্ভরশীল। আমরা এখানে শক্তিপ্রয়োগ করে আসিনি।’ তো আমরা সেখানে গেলাম এবং ইমাম সালাত
আদায় করালেন। সালাত শেষে আমি সালাম দিলাম। ‘(আমি বললাম) আমি যদি এই ভাইদের উদ্দেশ্যে
ছোটো একটি বক্তব্য দেই, আপনি কি কিছু মনে করবেন?’ সে বলল, ‘এগিয়ে যান।’
আমি বললাম, বারাকাল্লাহু ফিক, এবং আমি আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিলাম। আর আমি তাওহীদের
দিকে, সুন্নাহর দিকে, ইত্যাদির দিকে দাওয়াত দিলাম। আর একই সময়ে আমি ভুলগুলোর এবং যেসব
ভ্রষ্ট আক্বীদাহ বর্তমান ছিল সেগুলোর খণ্ডন করলাম। যতক্ষণ না আমি আইশার হাদিসে আসলাম
যেখানে তিনি বলেছেন, ‘তিনটি বিষয় যদি কেউ সেগুলো তোমাদের বলে, তাহলে সে আল্লাহর ব্যাপারে
মহামিথ্যা কথা বলেছে। যে কেউ তোমাকে বলে, মুহাম্মাদ তাঁর রবকে দেখেছেন, সে আল্লাহর
ব্যাপারে একটা মহামিথ্যা কথা বলেছে। আর যে কেউ বলে মুহাম্মাদ ভবিষ্যৎ জানেন, আল্লাহর
ব্যাপারে সে একটা মহামিথ্যা কথা বলেছে। আর যে কেউ বলে, মুহাম্মাদ লোকদের কাছে পুরো
দ্বীন পোঁছে দেননি, আল্লাহর ব্যাপারে সে একটা মহামিথ্যা কথা বলেছে।’ (সহিহ মুসলিম,
হা/২৮৭; ইমান অধ্যায়; পরিচ্ছেদ: ৭৭)
সুতরাং সে উঠে দাঁড়ালো আর বললো, ‘ওয়াল্লাহি, মুহাম্মাদ তাঁর মাথায় যেই চক্ষুদ্বয় আছে,
তা দিয়ে তাঁর রবকে দেখেছেন।’ আমি তাকে বললাম, ‘জাযাকাল্লাহু খাইর।’ আইশার বিষয়টি হলো,
তিনি তাঁর (রাসূলুল্লাহ ﷺ) ব্যাপারে মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জানেন। আর তিনি বলেছেন যে তিনি তার রবকে
দেখেননি। আর আল্লাহর কসম, যদি তিনি তাঁর রবকে দেখতেন তাহলে তিনি তাকে বলতেন।’ সে কথা
বলতে লাগল। আমি তাকে বললাম, ‘আমার যা বলার আছে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর
আপনার যা খুশি আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমি যেটার ব্যাপারে জানি, তার জবাব দিব, আমি
যেটার ব্যাপারে জানি না, আমি আপনাকে বলব, আল্লাহ ভালো জানেন।’
আমি তাকে ছেড়ে দিলাম এবং কথা বলতে লাগলাম। আর আমি আসলে নিশ্চিত ছিলাম না, সে ছিল, না
চলে গিয়েছিল। আস্তে আস্তে আমি লোকদের মাঝে একজনকে বলতে শুনলাম, ‘ওয়াল্লাহি, এই 'যুল'
যা বলছেন তা হক।’ সুদানে যুল মানে হলো রাজুল (ব্যক্তি)। আস্তে আস্তে সে বলল, ‘ওয়াল্লাহি
এই ব্যক্তি যা বলছে তা হক।’ (সে এরূপ বলেছে কারণ দলীল হিসেবে আমি শুধু বলছিলাম) ‘আল্লাহ
বলেছেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন।’ বারাকাল্লাহু ফীক। তারপর ইশার আজান হলো, আর আমি আমার
বক্তব্য শেষ করলাম। তারপর ইকামত দেওয়া হলো। আর লোকেরা আমাকে সালাতের ইমামতি করার জন্য
এগিয়ে দিতে লাগলো।
আমি বললাম, ‘কখনো না, কখনো না, ইমাম সালাতের ইমামতি করবেন।’ তারা বলল, ‘ওয়াল্লাহি,
আপনি ইমামতি করবেন।’ তো আমি বললাম ‘ঠিক আছে’ এবং সালাতের ইমামতি করলাম। সালাত শেষে
আনসারুস সুন্নাহর তরুণরা এবং আমি মসজিদ ত্যাগ করলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইমাম কোথায়?’
তারা বললো, ‘তারা তাকে বের করে দিয়েছে!’ ‘কারা তাকে বের করে দিয়েছে?’ ‘তার নিজের জামাতের
লোকেরা তাকে বের করে দিয়েছে!’ ওয়াল্লাহি, এটাই ঘটেছিল। কিন্তু কেউ যদি তাদের কাছে আসত
এই বোকামি নিয়ে, আর তাদের অপমান করত, অর্থাৎ তিজানী, বুরুহানী ইত্যাদি বলে, যদি একজন
এসব বলত, তারা কি দাওয়াত গ্রহণ করত!?
কিন্তু তুমি যদি আসো হিকমাহ ও দয়ার্দ্রতা নিয়ে (তাহলে তোমার দাওয়াত গ্রহণ করা হবে)।
বারাকাল্লাহু ফীক। আল্লাহ তাদেরকে উপকৃত করেছিলেন! এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে উপকৃত
করেছিলেন! সুতরাং হে ভাইয়েরা, উপকারী ইলম কাজে লাগাও, আর শক্তিশালী অখণ্ডনীয় দলীল,
আর তোমার দাওয়াতে উপকারী হিকমাহ। আর তোমার ওপর জরুরি হচ্ছে, সকল সুন্দর আখলাকের অধিকারী
হওয়া যেগুলোর ব্যাপারে আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল হুদা ﷺ উৎসাহিত করেছেন। কারণ এগুলো
হলো বিজয়ের উপকরণ ও সাফল্যের উপকরণ।
আর আমার কথা বিশ্বাস করো, যখন আমি বলি, হিকমাহ ও আখলাক ব্যতিরেকে সাহাবারা ইসলাম ছড়িয়ে
দেননি এবং এটা মানুষের অন্তরে প্রবেশ করেনি। তরবারির চেয়ে বেশি (হিকমাহ ও উত্তম আখলাক
ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রেখেছে)। কারণ যে তরবারির মাধ্যমে ইসলামে প্রবেশ করে, হয়তো সে
দৃঢ় থাকবে না। যে ইসলামে প্রবেশ করে ইলম ও দলীলের মাধ্যমে, তারই থাকবে শক্তিশালী ঈমান।
সুতরাং এই উত্তম পন্থাগুলোর অনুসরণ করা তোমাদের জন্য জরুরি। আর তোমাদের জন্য জরুরি—ইলমের
ব্যাপারে গুরুতর হওয়া। আর দাওয়াতি ইলাল্লাহর ক্ষেত্রে গুরুতর হওয়াও তোমাদের জন্য জরুরি।❞
.
[২]
·
❝অতীতে আমি সুদানে সফর করেছিলাম। এখানে কি সুদানের কিছু লোক উপস্থিত আছে? আমি
পোর্ট সুদানে সফর করেছিলাম এবং আনসারুস সুন্নাহর তরুণরা আমাকে রিসিভ করেছিল। বারাকাল্লাহু
ফীক। তারা বলল, ‘ইয়া শাইখ, আমরা একটি বিশেষ বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’ আমি
বললাম, ‘এগিয়ে যাও।’
তারা বলল, ‘আপনি যা খুশি বলুন, বলুন আল্লাহ বলেছেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, বারাকাল্লাহু
ফীক। আর বিদ‘আত সংক্রান্ত বিষয়গুলো থেকে আপনার যা খুশি খণ্ডন করুন, আর তাদের যেসব ভ্রষ্টতা
আছে সেগুলো থেকে। আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে দু‘আ করা, কারো জন্য জবেহ করা, নযর মানা, ইস্তিগাসাহ
(বিপদে সাহায্য কামনা করা) ইত্যাদি। কিন্তু বলবেন না, অমুক অমুক ফিরক্বাহ বা অমুক অমুক
শাইখ। বলবেন না, তিজানিয়্যাহ ফিরক্বাহ, বা বুরহানিয়্যাহ ফিরক্বাহ, বা তাদের কোনো প্রধান
ব্যক্তি (-এর নাম)। শুধু তাদেরকে সঠিক আক্বীদাহ শেখান। এবং আপনি দেখবেন যে তারা আপনার
থেকে হক গ্রহণ কবে।’
আমি বললাম, ‘তাইয়্যিব (বেশ)।’ দেখলাম, তারা আমার থেকে হক গ্রহণ করছে। ‘আর তোমরা তাদেরকে
গালমন্দ কোরো না, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে,
শত্রুতা পোষণ করে অজ্ঞতাবশত।’ (সুরা আন‘আম: ১০৮) যখন তুমি তাদের শাইখকে অপদস্থ করবে,
অথবা বলবে, সে পথভ্রষ্ট, অথবা অমুক অমুক দলকে সমালোচনা করবে, তখন তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে
দিবে। তারা তোমার থেকে পালিয়ে যাবে, আর তোমার গুনাহ হবে। কারণ তুমি লোকদের তাড়িয়ে দিয়েছ।
যখন রাসূলুল্লাহ মু‘আয ও আবূ মূসাকে পাঠিয়েছিলেন, তিনি তাদের বলেছিলেন, ‘সহজ করো, কঠিন
কোরো না। আর সুসংবাদ দাও, লোকদের তাড়িয়ে দিও না।’ সুতরাং এটা সেসব পথের অন্তর্ভুক্ত
যাতে রয়েছে সহজতা, এছাড়াও রয়েছে সুসংবাদ। আর এটা কাউকে তাড়িয়ে দেয় না। ওয়াল্লাহি, আমি
কোনো মাসজিদে প্রবেশ করিনি যেখানে (আমাকে দেখে) লোকদের প্রফুল্ল চেহারা আমি দেখিনি।
আর আমি মসজিদ ত্যাগ করতে সক্ষমও হইনি এই অবস্থা ছাড়া যে, লোকজন আমাকে ঘিরে জমা হয়েছে,
তাদের বাড়িতে আমাকে দাওয়াত দিয়েছে। তো সুফিদের নেতারা, ঐ শয়তানগুলো, তারা এই পথের,
মানহাজের, দাওয়াতের ভয়াবহতা দেখতে পেল।
সুতরাং তারা জমা হলো আর একটা বক্তব্য প্রস্তুত করল, যেটার মাধ্যমে তারা আমাকে রদ করবে।
পরের দিন তারা এর বিজ্ঞাপন দিল, আমাকে নিয়ে বড়ো এক মাঠে একটা বক্তব্য দেওয়া হবে। তো
আমরা জমা হলাম এবং আমি বক্তব্য দিলাম। আমি যখন শেষ করলাম, তাদের নেতা উঠে দাঁড়াল। আর
আমি যেই ব্যাপারে বললাম, তার সাথে সে যোগ করল। বলল, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দু‘আ
করা বৈধ, তোমার ও আল্লাহর মাঝে অসিলা (মাধ্যম) গ্রহণ করা বৈধ, আল্লাহর সিফাত (গুণাবলি)
অস্বীকার করল ইত্যাদি। আর সে তার বাতিল মতবাদ বাতিল ব্যাখ্যার মাধ্যমে পুনঃবলবৎ করল।
সে যখন শেষ করল...। সে আসলে কোনো দলীল আনেনি। যা কিছু সে এনেছে সবগুলো ছিল দুর্বল ও
বানোয়াট হাদীস, আর পথভ্রষ্ট লোকদের উক্তি। তো আমি দাঁড়ালাম এবং বললাম, ‘আমার ব্যাপারটা
হলো, আপনারা আমাকে বলতে শুনেছেন, ‘আল্লাহ বলেছেন’, ‘রাসূলুল্লাহ বলেছেন,’ এবং আমি আপনাদের
জন্য প্রখ্যাত ও সম্মানিত উলামাদের উক্তি নিয়ে এসেছি। আর এই লোককে কি আপনারা এটা আনতে
দেখেছেন? তাকে কি বলতে শুনেছেন, ‘আল্লাহ বলেছেন’ এই কথা বলার ক্ষেত্রে যে, আল্লাহ ব্যতীত
অন্য কারো কাছে দু'আ করা বৈধ?
তার কাছ থেকে কি আপনারা মহান ইমামদের উক্তি শুনেছেন, যেমন ইমাম মালিক? না, আপনারা শোনেননি।
আপনারা শুধু শুনেছেন দুর্বল ও বানোয়াট হাদীস, আর সেসব লোকদের উক্তি যারা কিনা কুসংস্কারাচ্ছন্ন।’
যাইহোক, সে দাঁড়ালো আর আমাকে গালি দেয়া শুরু করলো। আমি তার দিকে তাকিয়ে হাসলাম এবং
তাকে গালি দিলাম না। আমি বললাম, ‘বারাকাল্লাহু ফীক, জাযাকাল্লাহু খাইর।’ এবং আমি প্রস্থান
করলাম। আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, পরের দিন ওই টাউনের লোকেরা তাদের
মসজিদ ও বাজারগুলোতে বলাবলি করছিল, ‘সূফীরা পরাজিত হয়েছে!’ ‘সূফীরা পরাজিত হয়েছে!’❞
.
[৩]
·
❝তোমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর দিকে দাওয়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করো;
সুস্পষ্ট দলিল ও প্রমাণ-সহ। তুমি যেখানেই যাও, বল, ‘আল্লাহ বলেছেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন।’
এরপরে তোমার দাওয়াতের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য সুপথপ্রাপ্ত ইমামগণের উক্তিগুলো নিয়ে আস, যাদেরকে
আহলুস সুন্নাহ ও আহলুল বিদ‘আহ সবাই ইমাম গণ্য করে। সুতরাং আমি নসিহত করছি আফ্রিকার
ভাইদের এবং তুর্কি ভাইদের, অথবা ভাইয়েরা যেখানকারই হোক। বল, ‘আল্লাহ বলেছেন’, ‘রাসূলুল্লাহ
বলেছেন’, ‘ইমাম অমুক এবং অমুক বলেছেন,’ আর এমন ইমামের নাম নাও, যাঁদের তারা সম্মান
করে।
তুমি যদি আফ্রিকাতে থাকো, বল, ‘ইবন আব্দিল বার বলেছেন’, ‘ইমাম মালিক বলেছেন’, এবং তাদের
ভুল আক্বীদাহগুলো এসকল ইমামের উক্তি দিয়ে রাদ্দ করো। যখন তুমি আল্লাহর কিতাব নিয়ে আসবে,
রাসূলের সুন্নাহ নিয়ে আসবে, সেসকল ইমামদের উক্তি নিয়ে আসবে যাদের তারা সম্মান করে,
তারা তোমার থেকে এটা কবুল করবে। এটা হলো হিকমাহ। কিন্তু তুমি যদি তাদের কাছে আসো, তুমি
নিজে একা, আর তোমার নিজ থেকে কথা বল, সেক্ষেত্রে তুমি কে!? তোমার থেকে কেউ এটা কবুল
করবে না। তোমার দাওয়াহ কবুল করা হবে না।
আল্লাহর কিতাবের পরে তোমাকে এমন উলামাদের বক্তব্য নিয়ে আসতে হবে লোকদের মাঝে যাদের
উঁচু মর্যাদা আছে। যেসব উলামাদের ব্যাপারে তারা নেতিবাচক কিছু বলতে পারবে না। বলো,
‘বুখারী (বলেছেন)’, তারা তাঁকে সম্মান করে। এমনকি সূফীরাও সব জায়গায় তাঁকে সম্মান করে।
বুখারী, মুসলিম এবং তাদের কিতাবাদিকে। এবং ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল, এবং আল-আওযাঈ, এবং
সুফইয়ান আস-সাওরী, প্রমুখ। তাদের আর আমাদের মাঝে (এসকল ইমামের বিষয়ে) বন্ধন আছে যে,
আমরা উভয়েই তাঁদেরকে বিশ্বস্ত মনে করি, যা কিনা রাফিদ্বাদের বিপরীত (অর্থাৎ রাফিদ্বারা
এসকল ইমামদেরও সম্মান করে না)।
সুতরাং সুযোগের এই বাতায়নগুলো কাজে লাগাও। এটা হিকমাহর অন্তর্ভুক্ত হে ভাইয়েরা। বলবে
না, ‘ইবন তাইমিয়্যাহ বলেছেন’, কারণ তারা এটা শুনতে চায় না। তারা তোমার কথা শুনবে না।
ইবন তাইমিয়্যাহর কথা সালাফীদের মাঝে উল্লেখ করো, যারা তাকে সম্মান করে। বারাকাল্লাহু
ফীক। আহলুল বিদ‘আহর মাঝে তুমি, ‘ইবন তাইমিয়্যাহ (বলেছেন)’, অথবা ‘মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল
ওয়াহহাব (বলেছেন)’ বলবে না, কারণ এর মাধ্যমে তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দিবে। তাদের কাছে
ঐসকল ইমামদের উল্লেখ করো, যাদের তাঁরা সম্মান করে।
কারণ তাদের নেতারা ইবনু তাইমিয়্যাহর খ্যাতি নষ্ট করে ফেলেছে, আর তারা মুহাম্মাদ বিন
আব্দুল ওয়াহহাবের খ্যাতি নষ্ট করে ফেলেছে, যেমনভাবে তারা দাওয়াতের অন্যান্য ইমামদের
খ্যাতি নষ্ট করে ফেলেছে। সুতরাং তাদের কাছে ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করো না। এটা হিকমাহর
অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং তুমি বলো, ইমাম মালিক বলেছেন, সুফইয়ান আস-সাওরী বলেছেন, আল-আওযাঈ
বলেছেন, ইবনু উয়াইনাহ বলেছেন, বুখারী বলেছেন, মুসলিম বলেছেন, তারা তোমার থেকে এটা কবুল
করবে।
আর তারা যদি এটা তোমার থেকে কবুল করে, পরবর্তীতে তারা হক জানবে। আর তারা ইবন তাইমিয়্যাহকে
সম্মান করবে এবং তার ব্যাপারে সত্যটা জানবে। তারা মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাবকে সম্মান
করবে এবং তার ব্যাপারে সত্যটা জানবে। বারাকাল্লাহু ফীক। এটা হলো হিকমাহর পন্থা যা আল্লাহ
তাবারাকা ওয়া তা‘আলার দিকে দাওয়াত দেওয়ার সময় আমাদের অনুসরণ করতে হবে। ‘আর তোমরা তাদেরকে
গালমন্দ করো না, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতা
পোষণ করে অজ্ঞতাবশত।’ (সুরা আন‘আম, আয়াত: ১০৮)❞
·উৎস:
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
[১]. https://youtu.be/KiLY8Q5GTlI।
[২]. https://youtu.be/-6eB5p7t-DM।
[৩]. https://youtu.be/bKSKIk4dVFw।
·
অনুবাদক: রিফাত রহমান সিয়াম
সম্পাদক: মুহাম্মাদ 'আবদুল্লাহ মৃধা
fb.com/SunniSalafiAthari
আমাদের ওয়েব সাইটঃ- https://rasikulindiaa.blogspot.com/
আমাদের ওয়েব সাইটঃ- https://salafi-pdfbooks.blogspot.com/
আমাদের ওয়েব সাইটঃ https://salafimp3web.blogspot.com/
0 Comments