ক্ষুধার্ত থাকুন!

ক্ষুধার্ত থাকুন!

.মাদীনাহর প্রখ্যাত ‘আলিমে দ্বীন, মাসজিদে নাবাউয়ীর সম্মানিত মুদার্রিস, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ড. ‘আব্দুর রাযযাক্ব বিন ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ আল-বদর (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৮২ হি.] বলেন:

."বান্দার উচিত কিছু সময় ক্ষুধার্ত থাকা আর কিছু সময় ভরা পেটে থাকা। ক্ষুধার উপকারিতা রয়েছে, ডাক্তারি উপকারিতা। দেহ সুস্থ রাখার জন্য এর উপকারিতার কথা চিকিৎসকগণ বলে থাকেন।

.কোনো ব্যক্তির জন্য ক্ষুধানুভাব থেকে সর্বদা মুক্ত থাকা উচিত নয়, (এমন যে,) অবসর পেলেই সে খাচ্ছে, ক্ষুধা অনুভব করছে না। বরং, দিনে এবং রাতে ক্ষুধার্ত থাকার অনেক উপকারিতা রয়েছে, স্বাস্থ্যের জন্য ব্যাপক উপকারিতা।

.এই কারণে সাহাবিগণ (رضي الله عنهم) বলেছেন, 'আমরা এমন এক কওম, যারা ক্ষুধার্ত না হওয়া পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করি না। আবার যখন আমরা খাই, তখন উদরপূর্তি করে খাই না।' ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'খাবার আকাঙ্ক্ষা থাকা অবস্থায় সে খাবার ছেড়ে উঠে পড়ে।'

.আমি এই উক্তিটি সম্পুর্ন করতে পারি এইভাবে, 'খাবার ছেড়ে উঠে যান যখন এ ব্যাপারে আপনার আরো প্রবৃত্তি রয়েছে, আর এটা ছেড়ে উঠবেন না যখন আপনি এ ব্যাপারে অভিযোগ করছেন।'

.অনেক মানুষ আছে যারা খাওয়া শেষে ব্যাথায় তাদের পেটে হাত দেয় আর বলে, অনেক খেয়ে ফেলেছি! আমার অসুস্থ লাগছে! পেট কেমন কেমন করছে!

.অনেক মানুষ এমনভাবে খায় যে তারা অভিযোগ করে বসে, তারা কতো বেশী খেয়েছে! কিন্তু উত্তম হতো যদি প্রবৃত্তি থাকা সত্ত্বেও খাবার ছেড়ে উঠে যেত, খাবারের ব্যাপারে অভিযোগ করা অবস্থায়, অসন্তুষ্ট অবস্থায় উঠে না গিয়ে। এটা নিয়ামাহ এর প্রতি কৃতজ্ঞতা কমিয়ে দেয়, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার নিয়ামাহ।

.সে উদরপূর্তি করে খায়, আবার অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ে। সে নিজেই নিজের সাথে এমনটা করেছে। এইজন্যই ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, 'সে খাবার ছেড়ে উঠে যায় যদিও তার বাসনা আছে।'

.আর এই উক্তিটির মাপকাঠি হলো রাসূলুল্লাহ এর বাণী, 'এক তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক তৃতীয়াংশ পানির জন্য আর এক তৃতীয়াংশ নিঃশ্বাসের জন্য।' হাদিসটিতে তিনি বলেন, '....কারো শিরদাঁড়া সোজা রাখতে কয়েক গ্রাস খাবারই যথেষ্ট। যদি তা সম্ভব না হয় তবে এক তৃতীয়াংশ পানির জন্য আর এক তৃতীয়াংশ নিঃশ্বাসের জন্য।'

.

ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 'সম্পূর্ণ পেট খাবার দিয়ে পূর্তি করা অনুচিত।' বাস্তবে কিছু মানুষের চিন্তাধারা হলো সে তিন ভাগের পুরোটাই খাবারের জন্য ব্যবহার করবে আর পানি এবং নিশ্বাস নিজেদের জন্য কিছু স্থান খুঁজে নিবে। পানি অল্প অল্প করে প্রবেশ করবে, আর নিঃশ্বাসের জন্য তো সেখানে জায়গা থাকবেই। তবে, তিন ভাগের পুরোটাই খাবারের জন্য। এতে নিজেরই ক্ষতি। সে খাবারটা থেকে তেমন উপকৃত হবে না যেমনটা হবার কথা ছিলো।

.সুবহানাল্লাহ। এই হাদিসের ব্যাপারে ইবনু রজব (রাহিমাহুল্লাহ) জামিউল উলুম ওয়াল হিকামে বর্ণনা করেন। আর আপনারা জানেন যে এই হাদিস ইবনু রজব আল-আরবাঈনের বর্ধিত অংশে যোগ করেছেন। আর বাস্তবে এই হাদিসটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু খুবই অর্থবহ হাদিসগুলোর একটি। এতে মানুষের জন্য ব্যাপক উপকার রয়েছে।

.ইবনু রজব বর্ণনা করেন, এক অমুসলিম চিকিৎসক হাদিসটি পড়েছেন। সে বলেছে, 'মানুষরা যদি এই হাদিসের উপর আমল করত তাহলে হাসপাতালের দরজাগুলো বন্ধ হয়ে যেত।'

.

আসলে মানুষের হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। কেননা পাকস্থলী থেকেই অনেক রোগ ছড়ায়, সেগুলো মূলত পাকস্থলী পূর্ণ থাকার কারণেই হয়।"

.উৎস: https://youtu.be/63kQ0C_CCNc

.অনুবাদক: আখলাক্ব-উয-যামান

সম্পাদক: 'আব্দুর রাহমান মৃধা

fb.com/SunniSalafiAthari

 আমাদের ওয়েব সাইটঃ- https://rasikulindiaa.blogspot.com/

আমাদের ওয়েব সাইটঃ-   https://salafi-pdfbooks.blogspot.com/

আমাদের ওয়েব সাইটঃ  https://salafimp3web.blogspot.com/

Post a Comment

0 Comments