তাবলিগ জামাতের ব্যাপারে

❝আর তাবলিগ জামাতের ব্যাপারে আমি সম্মাননীয় ভাই মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব আল-ওয়াসাবি হাফিযাহুল্লাহ লিখিত কথাই পেশ করছি। [১]
তিনি (শাইখ ওয়াসাবি) বলেছেন—
ক. তাবলিগ জামাতের লোকেরা দুর্বল হাদিস আমল করে, বরং বানোয়াট ও ভিত্তিহীন হাদিসও আমল করে।
খ. এদের মধ্যে অনেক বিদাত পাওয়া যায়। বরং এদের দাওয়াত বিদাতের ওপরই প্রতিষ্ঠিত। এদের দাওয়াতের মেরুদণ্ডই হলো সময় নির্দিষ্ট করে দাওয়াতে বের হওয়া—প্রত্যেক মাসে তিনদিন, বছরে চল্লিশ দিন, জীবনে চার মাস, ফি-হপ্তায় দুবার ভ্রমণ, একবার যে মসজিদে নামাজ পড়ে সেখানে, আরেকবার পরিবর্তনশীল অস্থায়ী কোনো স্থানে। আর প্রতিদিন দুটো হালাকা হবে। যে মসজিদে নামাজ পড়ে সেখানে একটা হবে, আরেকটা হবে বাড়িতে। তাদের আদর্শ গ্রহণ না করা পর্যন্ত কখনোই তারা একজন ব্যক্তির প্রতি সন্তুষ্ট হবে না। নিঃসন্দেহে তাদের এ কর্ম দ্বীনের মধ্যে নবআবিষ্কৃত বিদাত, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোনো দলিল অবতীর্ণ করেননি।
গ. এরা মনে করে, তাওহিদের দিকে দাওয়াত দিলে উম্মতকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঘ. এরা মনে করে, সুন্নাহর দিকে দাওয়াত দিলে উম্মতকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঙ. হাদিদা এলাকায় নিযুক্ত তাবলিগ জামাতের আমির বলেছে, ‘যে বিদাত জনমানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে, তা ওই সুন্নাতের চেয়ে উত্তম, যা মানুষদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে!’
চ. এরা পরোক্ষভাবে আহলুস সুন্নাহর প্রতি বিদ্বেষ জাহির করে।
ছ. ইঙ্গিতে ও প্রকাশ্যে এরা ফলপ্রসূ ইলমের ব্যাপারে মানুষদের নিরুৎসাহিত করে।
জ. এরা মনে করে, তাদের পথ না ধরলে মানুষের মুক্তি নেই। এ মর্মে তারা দৃষ্টান্ত পেশ করে নুহ আলাইহিস সালামের কিশতি দিয়ে। যে উক্ত কিশতিতে আরোহণ করেছে, সে পরিত্রাণ লাভ করেছে, আর যে তাতে আরোহণ করেনি, সে-ই ধ্বংস হয়েছে। তারা বলে, ‘আমাদের দাওয়াত ঠিক নুহ আলাইহিস সালামের কিশতির মতো।’ আমি জর্ডান ও ইয়েমেনে তাদের কাছ থেকে এ দৃষ্টান্তের বিবরণ শুনেছি।
ঝ. এরা তাওহিদুল উলুহিয়্যাহ এবং তাওহিদুল আসমা ওয়াস সিফাতের প্রতি গুরুত্ব দেয় না।
ঞ. তারা ইলম অর্জনের জন্য প্রস্তুত নয়। বরং এরা ইলম অর্জনের নিমিত্তে ব্যয়িত সময়কে পণ্ড মনে করে। উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও তাদের মধ্যে আরও বিচ্যুতি রয়েছে। শাইখ ওয়াসাবির বক্তব্য সমাপ্ত।❞
·
— ইয়েমেনের মুজাদ্দিদ, মুত্তাকি ইমাম মুকবিল বিন হাদি আল-ওয়াদিয়ি রাহিমাহুল্লাহ
·
❏ পাদটীকা:
[১]. শাইখ ওয়াসাবি ছিলেন ইয়েমেনের একজন প্রথিতযশা আলিম এবং ইমাম মুকবিলের অত্যন্ত নিকটের সেরা ছাত্র। তিনি ২০১৫ সালে মারা গিয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে রহম করুন। – অনুবাদক।
·
উৎস: ইমাম মুকবিল বিরচিত ‘আমাদের আকিদা ও দাওয়াত’ শীর্ষক গ্রন্থ। (প্রকাশিতব্য, ইনশাআল্লাহ)

Post a Comment

0 Comments