Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

মুসলিম বিশ্বে খ্রীস্টান মিশনারী স্কুল ও কলেজের অপকৌশল (পর্ব-১)

মুসলিম বিশ্বে খ্রীস্টান মিশনারী স্কুল ও কলেজের অপকৌশল (পর্ব-১)

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

সাধারণ মুসলিমদের মাঝে তাদের ধর্মীয় নেতা, আলেম বা হুজুরদের প্রতি দুই ধরণের উগ্র মনোভাব লক্ষ্য করা যায়।

প্রথমতঃ একশ্রেণীর লোকদের মাঝে হুজুরদের প্রতি অন্ধভাবে অতিভক্তি লক্ষ্য করা যায়। তারা তাদের পছন্দের হুজুর, আলেম বা মাওলানা, পীর-বুজুর্গ বা শায়খদের কথা অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, তারা যা বলে বুদ্ধিহীন প্রাণীর মতো তারা তা-ই করে। অনেক নামধারী মুসলিম তাদের ধর্মীয় নেতাদের এমনভাবে “পূজা” করে, ক্বুরআনে আল্লাহ তাআ’লা যা বলেছেন, সহীহ হাদীসে রাসূলুল্লাহ বলেছেন, তার চেয়ে তারা তাদের হুজুরদের কথাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।

দ্বিতীয়তঃ মুসলিম নামধারী আরেক শ্রেণীর লোক রয়েছে, যারা প্রথম শ্রেণীর লোকদের সম্পূর্ণ বিপরীত। কিছু লোক রয়েছে যারা নিজেরা ক্বুরআন ও হাদীস পড়ে না, দ্বীন শিখার কোন আগ্রহ নাই। কিন্তু সমাজের লোকেরা যা বলে, তাদের বাপ-দাদারা ইসলামের নামে যা করে আসছে, তাদের ‘হাওয়া’ বা প্রবৃত্তির সাথে যেটা মনোঃপূত হয়; সেটাকেই তারা ‘ইসলাম’ বলে মনে করে। কোন আলেম বা হুজুর যদি ক্বুরআন বা হাদীস থেকে ইসলামের কোন কথা বলেন, কিন্তু তা যদি তাদের মতের বিরুদ্ধে যায়, তখন তারা হুজুর বা আলেমদের আপত্তিকর ভাষায় গালি-গালাজ ও দোষারোপ করা আরম্ভ করে। এমন লোকেরা নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে দাবী করলেও তাদের অজ্ঞতার কারণে, কিংবা তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণের কারণে মুসলিমদের মাঝে সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তিত্ব অর্থাৎ আলেম বা হুজুর শ্রেণীর লোকদের প্রতি বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করে।

এমন লোকেরা অনেক সময় ইসলামের প্রকাশ্য শত্রু কাফির-মুশরিক বা মুনাফিকদের প্রোপাগান্ডায় বিশ্বাস করে ব্রেইনওয়াশড হয়। কাফির মুশরিকদের এমনই একটা প্রোপাগান্ডা হচ্ছে, “ট্রাডিশনাল হুজুর মাওলানারা সব বোকা এবং নির্বোধ, এরা সাইয়েন্স ও টেকনোলজি কিছুই জানে না। এরা ক্বুরআন এবং হাদীসের নামে ‘ফতোয়াবাজি’ করে মুসলিমদেরকে ব্যাকডেটেড বানিয়ে রেখেছে।”

আলেম বা হুজুর বিদ্বেষী অনেক মুসলিমদের মাঝে কাফির-মুশরিকদের মতো একই রকম মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। আমি একটা উদাহরণ উল্লেখ করছি।

২০১৬-১৭ এর দিকে একবার আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে ল’ পাশ করে নিন্ম আদালতে বিচার কাজ পরিচালনা করে এমন একজন “জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট”-এর কথা শুনছিলাম। তিনি তার বক্তব্যে ব্রিটিশ শাসনের সময় হুজুরদের সমালোচনা করে বলেন,

“একসময় আমাদের হুজুরেরা ইংরেজী পড়া হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন...কিন্তু এখন সেই হুজুরেরা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে, এখন কিন্তু তারা আর “ইংরেজী পড়া হারাম”, এই ফতোয়া দেয় না...। আমাদের দেশের হুজুরেরা ইসলামকে সঠিকভাবে প্রেজেন্ট করতে না পারলেও নোমান আলী খানের মতো ইন্টারন্যাশানাল স্কলাররা(!) কিন্তু সঠিক ইসলাম মানুষের মাঝে প্রচার করছে...।”

সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন একজন ব্যক্তি দ্বারা মুসলিমদের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা প্রচারণা বন্ধের লক্ষ্যে সেই ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্যের শেষে আমি ব্যক্তিগতভাবে তার সাথে কথা বলে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম, আমাদের হুজুরদের মাঝে একশ্রেণীর লোকেরা বাকোয়াজ করে, এটা সত্য। কিন্তু আপনার “একসময় আমাদের হুজুরেরা ইংরেজী পড়া হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন”, এই কথা যথার্থ নয়।

আসল কথা হচ্ছে, ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ দখল করার পর তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে স্থানীয় কিছু লোকদেরকে খ্রীস্টানধর্মে ধর্মান্তরিত করে তাদের “অনুগত দাস” বানানোর লক্ষ্যে একটা নীল নকশা বাস্তবায়ন করে। আর তা হচ্ছে, যেহেতু দেশের সরকারী ক্ষমতায় ইংরেজরা, তাদের ভাষা হচ্ছে ইংরেজী। সেই সূত্রে উচ্চপদস্থ এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারী পদে চাকুরী পাওয়ার জন্য ইংরেজী ভাষা শিখা বাধ্যতামূলক করা হয়। ইংরেজী ভাষা শিখানোর জন্য বিভিন্ন “খ্রীস্টান মিশনারী” স্কুল বা কলেজ খোলা হয়, যেখানে খ্রীস্টান ধর্ম প্রচারকেরা ইংরেজী ভাষা শিখানোর আড়ালে তাদের ছাত্রদেরকে খ্রীস্টান মতবাদে দীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করতো। খ্রীস্টানদের এই ঘৃণ্য অপকৌশল বুঝতে পেরে তৎকালীন মুসলিম আলেম এবং নেতাদের অনেকেই খ্রীস্টান মিশনারীদের স্কুলে পড়া হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন। তৎকালীন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় হুজুরদের সেই ফতোয়া সঠিক ছিল। কেননা ইংরেজী ভাষা না শিখার কারণে মুসলিমরা হয়তো সরকারী চাকুরী না পেয়ে দুনিয়ার দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে যাবে, কিন্তু এতে মুসলিম ছেলে-মেয়দের দ্বীন নিরাপদ থাকবে। কারণ খ্রীস্টানদের স্কুলে পড়ে অনেকে ‘খ্রীস্টান’ হয়, অনেকে মুসলিম নামধারী ‘সেকুলার’ বা ‘মুনাফেক’ হয়। অনেকে হয়তো মুসলিম থাকে; কিন্তু বিভিন্ন এই ধরণের খ্রীস্টান বা সেকুলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার কারণে নানা ধরণের হারাম এবং পাপাচারে লিপ্ত হয়ে দ্বীন এবং চরিত্রকে নষ্ট করে।

যাই হোক, এই কথা বলার পর আমি তাকে উপদেশ দিলাম, এ ধরণের বিষয়ে কথা বলার ব্যাপারে আরও সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য। কেননা আপনি একটা কথা বলছেন, যা হয়তো আপনার দৃষ্টিতে সঠিক, কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনায় তা সঠিক না-ও হতে পারে। তিনি আমাকে কথা দিলেন, বিষয়টা আরও যাচাই করে দেখবেন।

একজন মানুষ অন্তত ১৬-১৮ বছর একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করার পর ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচারক হয়। এই ১৬ বা ১৮ বছর পড়াশোনা করার পরেও উপরে উল্লেখিত একজন মুসলিম ব্যক্তি ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপারে সম্পূর্ণ “ব্রেইনওয়াশড” হয়ে আলেমদের প্রতি বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে বড় হয়েছেন। এর জন্য যেমন দ্বীন সম্পর্কে উদাসীন তার পিতা-মাতা দায়ী, একইভাবে তিনি যে ‘সেকুলার’ শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়াশোনা করে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অজ্ঞ থেকে গেছেন, সেই শিক্ষা ব্যবস্থা-ও দায়ী।

___________________________________

মুসলিম বিশ্বে খ্রীস্টান মিশনারী স্কুল ও কলেজের অপকৌশল (পর্ব-২)

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়েছে, কিন্তু তাদের সহযোগীতায় খ্রীস্টান মিশনারীদের পরিচালিত স্কুল-কলেজে অধ্যায়নরত মুসলিম ছেলে-মেয়েদেরকে বেদ্বীন বা খ্রীস্টান বানানো চক্রান্ত এখন পর্যন্ত বিদ্যমান।

যেমন আমাদের দেশে নটর ডেম এবং হলি ক্রস এই দুইটি কলেজ অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। এ কারণে অনেক বাবা-মা তাদের ছেলেকে নটর ডেম কলেজে এবং মেয়েকে হলি ক্রস স্কুল বা কলেজে পড়াতে চান। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে, নটর ডেম এবং হলি ক্রস মূলত ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

নটর ডেমঃ

(১) নটর ডেম (Notre Dame) শব্দের অর্থ হচ্ছে Our Lady, যার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈসা আ’লাইহিস সালামের কুমারী মাতা মারইয়াম বা ইংরেজীতে Mary (ম্যারী) আ’লাইহাস সালাম। খ্রীস্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ঈসা আ’লাইহিস সালাম হচ্ছেন ঈশ্বরের পুত্র এবং তিনি নিজেও ঈশ্বর (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক), এ কারণে তাদের নিকট ঈসার মাতা ম্যারী একজন divine (ডিভাইন) বা ঐশ্বরিক অর্থাৎ পূজনীয় ব্যক্তিত্ব। খ্রীস্টান ধর্ম সম্পর্কে যার সামান্য ধারণা আছে এমন সকলেই জানেন, খ্রীস্টানরা ম্যারীর পূজা করে।

(২) নটর ডেম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। তখন এর প্রিন্সিপাল ছিলেন জন জে. হ্যারিংটন। বর্তমান প্রিন্সিপাল হেমন্ত পিয়াস রোজারিও এবং ভাইস প্রিন্সিপাল লিওনার্দো শংকর রোজারিও, এরা সবাই খ্রীস্টান। এমনকি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ৭২ বছরে মোট ১১ জন প্রিন্সিপাল দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের সবাই ছিলেন খ্রীস্টান।

(৩) নটর ডেম কলেজের লোগোর দিকে এক পলক তাকালেই বুঝা যায়, এর লোগোতে যে জিনিসকে সবচেয়ে বেশি ‘ফোকাস’ করা হয়েছে তা হচ্ছে লাল রঙ্গের ক্রস চিহ্ন। ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের ধর্মমত অনুযায়ী ক্রস হচ্ছে, ঈসাকে ঈশ্বরপুত্র হিসেবে মানবমুক্তির জন্য কুরবানী করার প্রতি বিশ্বাসের প্রতীক বা চিহ্ন। এই বিশ্বাসের কারণে খ্রীস্টানরা ক্রস চিহ্নকে পবিত্র জ্ঞান করে এবং বিপদ-আপদের সময় আশ্রয় বা সাহায্য প্রার্থনার মাধ্যম হিসেবে মনে করে, যেমনিভাবে হিন্দুরা মূর্তির মাধ্যমে তাদের দেব-দেবীর কাছে সাহায্য বা আশ্রয় প্রার্থনা করে। ক্রস চিহ্নের সাথে সম্পূর্ণ শির্কি বিশ্বাস জড়িত, এ কারণে ক্রস চিহ্ন সম্বলিত কোন পোশাক পরিধান করা মুসলিমদের জন্য মোটেও জায়েজ নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

أَرْسَلَنِي بِصِلَةِ الأَرْحَامِ وَكَسْرِ الأَوْثَانِ وَأَنْ يُوَحَّدَ اللَّهُ لاَ يُشْرَكُ بِهِ شَىْءٌ

“আমাকে আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য, সমস্ত মূর্তি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিতে, আল্লাহকে এক বলে ঘোষণা করতে এবং তার সাথে কোন কিছু শরীক না করতে পাঠানো হয়েছে।” সহীহ মুসলিমঃ ১৮১৫।

যেহেতু ক্রস একপ্রকার পূজনীয় মূর্তি এবং খ্রীস্টানদের ধর্মীয় প্রতীক, এই হাদীসের আলোকে সমস্ত মুসলিম আলেম একমত, ক্রস চিহ্ন ধারণ করা নাজায়েজ। অথচ খ্রীস্টানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার কারণে কত যে মুসলিম ছেলে বা মেয়ে অপবিত্র ক্রস চিহ্ন সম্বলিত ইউনিফর্ম পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে!

(৪) খ্রীস্টান মতবাদ প্রচারকে গতিশীল করা এবং খ্রীস্টান মিশনারীদেরকে তাদের ধর্মান্বরিত করার কাজে উদ্ধুব্ধ করার জন্য ১৯৮৬ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু “পোপ ফ্রান্সিস” ২০১৭ সালে তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে ভিজিট করতে আসেন। সেই ভিজিটে তিনি নটর ডেম কলেজের মুসলিম ছাত্রদেরকে মানবতার বাণী শোনান।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, নটর ডেম কলেজে অধিকাংশ ছাত্রই মুসলিম। মুসলিম মেজরিটি একটি স্কুলে একজন বিদেশী খ্রীস্টান ধর্মগুরু বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত নটর ডেম বা হলি ক্রস কলেজে মক্কা বা মদীনার বড় কোন আলেম ভিন্ন ধর্মের ছাত্রদের নয়, শুধুমাত্র মুসলিম ছাত্রদের উদ্দেশ্যে কোন বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন কি?

ইসলাম এবং মুসলিম স্বার্থ বিরোধী এ কেমন গণতন্ত্র? এটা কিসের সেকুলারিজম? গণতন্ত্র এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে আর কত ধোঁকা মুসলিমদেরকে গিলানো হবে?

শায়খ ওয়াসী উল্লাহ আব্বাস হা’ফিযাহুল্লাহর মত হচ্ছে, পথভ্রষ্ট কিন্তু মুসলিম এমন ব্যক্তির নিকট ইংরেজী বা গণিতের মতো দুনিয়াবী বিষয় শিখা ঠিক নয়। এর বিপরীতে, অনেক মুসলিম বাবা-মা তাদের সন্তানদেরকে সাইয়েন্স বা কমার্স পড়ানোর লোভে খ্রীস্টান ধর্মগুরুর ‘ওয়াজ’ শোনার ব্যাপারে আপত্তি করার দুঃসাহস(!) করে না।

হলি ক্রস স্কুল এন্ড কলেজঃ

(১) “হলি ক্রস কলেজ”-এর নামের মাঝেই মারাত্মক শির্ক লুকিয়ে আছে। খ্রীস্টানদের কাছে ক্রস একটি পবিত্র প্রতীক, এ কারণে তারা হলি ক্রস বা পবিত্র ক্রুশ বলে। কিন্তু ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, ক্রসের সাথে মারাত্মক শির্কি আকীদা যুক্ত থাকার কারণে ক্রস কোন পবিত্র চিহ্ন নয়, বরং যাবতীয় শির্ক হচ্ছে অপবিত্র বা নাপাক। আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লা রাসূলুল্লাহ -কে ওয়াহী নাযিলের একেবারে শুরুতেই যাবতীয় শির্ক পরিহার করার আদেশ দিয়ে বলেছিলেন,

وَ الرُّجۡزَ فَاہۡجُرۡ

“আপনি (শির্কের) অপবিত্রতা বর্জন করুন।” সূরা আল-মুদ্দাসসিরঃ ৫।

মুসলিম কোন দেশে “হলি ক্রস” নামে কোন পাবলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া মোটেও ঠিক নয়। কেননা, একজন ছাত্র/ছাত্রী যতবার তার কলেজের নাম বলছে বা লিখছে, সে মূলত একটি শির্কি বাক্য উচ্চারণ করছে। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন।

আপনারা খ্রীস্টানদের দেশে “রেড ক্রস” নামে একটি প্রতিষ্ঠান দেখতে পাবেন, মুসলিম বিশ্বে আপত্তির কারণে সেই একই প্রতিষ্ঠান রেড ক্রসের পরিবর্তে “রেড ক্রিসেন্ট” নামে কাজ করে।

(২) ১৯৫০ সালে ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানের “আর্চবিশপ” অর্থাৎ ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু লরেন্স এল. গার্নারের অনুরোধে সিস্টার অগাস্টিন ম্যারী হলি ক্রস কলেজে প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি ছিলেন তার প্রথম প্রিন্সিপাল । বর্তমান প্রিন্সিপালের নাম শিখা গোমেজ। বিগত ৭০ বছরে হলি ক্রস স্কুল ও কলেজে ৫ জন স্থায়ী এবং ৩ ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হিসেবে কাজ করেছেন, তারা সবাই ছিলেন খ্রীস্টান।

(৩) নটর ডেমের মতোই হলি ক্রস স্কুল এন্ড কলেজের লোগোতে ক্রসের চিহ্ন যুক্ত রয়েছে। এছাড়া এটাতে অতিরিক্ত হলি ক্রস কলেজের মোটো “SPES UNICA” কথাটি যুক্ত রয়েছে।

আমি নেটে সার্চ করে যা বুঝলাম, এটা খ্রীস্টান ধর্ম প্রচারকদের একটি শির্কি বাণী। হলি ক্রস স্কুল এন্ড কলেজ খ্রীস্টানদের মিশনারী (Sisters of the Holy Cross)-এর সাথে এফিলিয়েটেড। Sisters of the Holy Cross এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বলা হয়েছে,

Ave Crux Spes Unica (ইংরেজীতে Hail to the Cross, Our Only Hope).

নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক!

আপনারা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এখান থেকে,

https://www.saintmarys.edu/meaning-of-spes-unica

(৪) হলি ক্রস স্কুল এন্ড কলেজের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে “কলেজ প্রার্থনা” হিসেবে বাংলাতে ব্রাহ্ম মতবাদে বিশ্বাসী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা লিখা থাকলেও, ইংলিশে যে college song দেওয়া হয়েছে তার সাথে বাংলার কোন মিল নেই!

Orient skies smile upon us,

As we pledge our love anew,

Holy Cross, we shall be loyal,

Holy Cross we shall be true.

বাংলাতে রবীন্দ্রনাথের সকল ধর্মমতের সাথে সামাজস্যপূর্ণ এমন কবিতা বাছাই করার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু ইংলিশ কবিতাতে অত্যন্ত্য নগ্নভাবে খ্রীস্টানদের ক্রুশ পূজা ঢুকানো হয়েছে।

হলি ক্রস স্কুল এন্ড কলেজের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে ঢুকে আপনারা খুব সহজেই আমাদের কথার সত্যতা জানতে পারবেন -

http://www.hcc.edu.bd/

___________________________________

(চলবে ইন শা আল্লাহ) https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/

 

Post a Comment

0 Comments