▋আসিম আল হাকিমের বিভ্রান্তি। (পর্ব-৩) .

আসিম আল হাকিমের বিভ্রান্তি। (পর্ব-৩) .

আসিম সাহেবের নিকট তার ওয়েবসাইটে একটি প্রশ্ন করা
হয় যে, “শাইখ, আপনি শাইখ রাবী বিন হাদী আল-মাদখালি সম্পর্কে কি জানেন?” জবাবে আসিম সাহেব বলেন, “আমি ব্যাক্তিগতভাবে তাকে চিনি না এবং তার সম্পর্কে কোনকিছু শুনিনি।
তবে, আমি জানি যে, সে আলিম এবং দ্বায়ীদের ক্রমাগত সমালোচনা করে, তাদের লেবেলিং করে
এবং তাদের অধিকাংশ তার কর্মপন্থার অনুসারী না হওয়ার দরুন সে সহজেই তাদের আহলুস সুন্নাহর
বাহিরে ঠেলে দেয়। একজনের উচিত তাকে এড়িয়ে যাওয়া ও প্রকৃত আলিমদের বক্তব্য
শোনা। যেমন- ইবনু বায ও ইবনু উসাইমিন।

: https://www.bakkah.net/en/wpcontent/uploads/2012/08/HUDA-TV-star-talks-about-shaykh-rabee-al-madkhalee.jpg

উপরোক্ত মন্তব্যের পর আসীম সাহেব তার নিজের জন্য উজর
পেশ করে পোষ্ট করেন যাতে তিনি বলেন, “যখন আমাকে শায়খ রবী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল,
তখন আমি তার সম্পর্কে খুব কমই জানতাম এবং আমি তার সম্পর্কে কয়েক লাইন পড়েছিলাম।”
--[পোষ্ট লিংক কমেন্টে দ্রষ্টব্য] কয়েক লাইন পড়েই আহলুস সুন্নাহর কোন ইমামের প্রতি বেফাঁস মন্তব্য
করা যুলুমের অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়াও আসীম সাহেবের ওজর পেশকারী পোষ্টে একাধিক গলদ রয়েছে। আসীম সাহেব তার পোষ্টে বলেন, “আমি ঐসকল অনারব সালাফি দাবিদারদের
উগ্র আচরণ খেয়াল করেছি যারা সারা জীবন ধরে শুধু আলেম উলামা এবং দ্বায়ীদের সমালোচনায় ব্যস্ত,যদিও তারা
আক্বীদার মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কেই জানে না।” --[পোষ্ট লিংক কমেন্টে দ্রষ্টব্য]

এখানে অনারব সালাফি বলতে উনি ব্রিটেনের স্পাবসকে উদ্দেশ্য
করেছেন ও তাদের নামে একাধিক অপবাদ দিয়েছেন। উনি বলতে চেয়েছেন তারা শুধু আলেম এবং দ্বায়ীদের
সমালোচনা করে। তারা নাকি আক্বীদার মৌলিক বিষয়গুলোর ব্যাপারেই জানেনা। নাউজুবিল্লাহ।
এটা উনার অপবাদ। আক্বীদা ও মানহাজে স্পাবসের খেদমত অনস্বীকার্য। ইনসাফ পন্থী কেউ তা
অস্বীকার করতে পারবে না। স্পাবসের ব্যাপারে শাইখ উবেইদ আল-জাবির হাফেজাহুল্লাহ বলেন, “মাকতাবাতুস
সলাফিয়্যার (স্পাবস) কর্তৃপক্ষের শুকরিয়া জ্ঞাপন করি। তাদের মুখ্য হলো আমার পুত্রতুল্য- আবু খাদিজা আব্দুল ওয়াহেদ ইবনে সলেহ। আবু হাকিম বেলাল ইবন আহমদ। আবু আইয়াদ
আমজাদ রফিক। এবং তাদের সহকর্মী ভায়েরা। মূলত এই মাকতাবাতুস সলাফিয়্যাকে (স্পাবকে) আল্লাহ আমাদের
জন্য পশ্চিমা (দেশগুলোতে) পৌছার একটি মাধ্যম বানিয়ে দিয়েছেন। অনুরুপ ভাবে, ওয়ালিল্লাহিল হামদ আমাদের পূর্বাঞ্চলের
পুত্রতুল্যরা ইহার (স্পাবসের) মাধ্যমে আমাদের কাছে পৌছাতে পেড়েছে। হইয়াকুমুল্লাহু জামীয়ান।”

https://youtu.be/9JfHq48Dl0k

স্পাবসের প্রশংসা করা মানে তাদের মাসুম সাবস্ত করা
নয়। তাদের মধ্যে কিছু উগ্রতা বিদ্যমান। হক্বপন্থি আলেমদের ক্ষেত্রে তাদের তাহযীর গ্রহণযোগ্য
নয়। কিন্তু তাই বলে তাদের আক্বীদায় মিসকিন বলা কিংবা তাদের খেদমত অস্বীকার করার কোন
উপায় নেই। আসীম সাহেব আরো বলেন, “তারা ইসলামকে ডিফেন্ড করে না, বরং সুনির্দিষ্ট
ব্যক্তিকে ডিফেন্ড করে এবং তাদের আনুগত্য, অনুসরণের ভিত্তি হলো " কারা শায়খ রবীকে
ভালোবাসে এবং ভালোবাসে না" --[পোষ্ট লিংক কমেন্টে দ্রষ্টব্য]

 এখানে তিনি আরেকটা অপবাদ দিয়েছেন ও নিজের অজ্ঞাতার পরিচয়
দিয়েছেন। স্পাবস নাস্তিক ও মুছতাসরিকীনদের আপবাদ ও শোবহাতের জবাব খুবই সুক্ষ্মভাবে
দিয়ে থাকে। নাস্তিকদের নিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে এর আহরহ প্রমাণ বিদ্যমান। আসিম সাহেবের
হুটহাট বিলাদলিল জবাবের থেকে উক্ত ওয়েবসাইটের জবাব গুলো কাফির নাস্তিকদের কোমড় ভেঙে
দেওয়া উপযুক্ত। http://www.aboutatheism.net/index.cfm

একই পোষ্ট আসিম সাহেব বলেন, “কেউই একথা অস্বীকার করতে
পারবে না যে, তাঁরা [ ইবনে বায এবং ইবনে উসাইমিন ] আরও অধিক ইল্মসম্পন্ন। তাঁরা এমন
আলেম ছিলেন যে, আপনি তাদের থেকে ইলম নিতে পারবেন এবং শিষ্টাচার শিখতে পারবেন। এমনকি
তারা বিভ্রান্ত -বাতিল ফিরক্বাদেরকে খণ্ডন করতে গিয়েও কখনোই একটা অশালীন কথা বলেন নি।
তাদের ২ জনের জ্ঞান, শিখানোর পদ্ধতি এবং ভিন্নমত পোষণকারীদের সাথে আচরণের বিষয়গুলো নিঃসন্দেহে শায়খ রবীর তুলনায় উৎকৃষ্ট ছিলো।”--[পোষ্ট লিংক কমেন্টে
দ্রষ্টব্য] আহলুস সুন্নাহর আলিমদের মধ্যে ভাগাভাগি করা কিংবা একদলকে নরমপন্থি
ও অন্যদলকে কঠোরপন্থি হিসাবে উপস্থাপন করা জাহালতের অন্তর্ভুক্ত বরং প্রত্যেক আলিমেরই
নিজস্ব ফিল্ড রয়েছে। শাইখ ইবনে বায এবং ইবনে উসাইমিন শাইখ রাবী থেকে অধিক ইল্মসম্পন্ন;
একথা সত্য হলেও তিনি এরদ্বারা কি প্রমান করতে চাচ্ছেন?! শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া
রাহিমাহুল্লাহ তার ছাত্রদের থেকে অধিক ইল্মসম্পন্ন ছিলেন। তার মানে কি আমরা শুধু ইবনু
তাইমিয়া থেকে গ্রহন করবো তার তার ছাত্রদের কুৎসা রটাবো?! বিদআতীর ব্যাপারে শাইখ রাবী হাফেজাহুল্লাহর কঠোরতা নিন্দনীয়
নয় বরং এটা সালাফদের মানহাজের অন্তর্ভুক্ত। এজন্যই তো ইমাম ইবনু বায ও ইবনু উসাইমিন
রাহিমাহুল্লাহ শাইখ রাবী হাফেজাহুল্লাহর প্রকৃত অবস্থা জানা সত্বেও তার প্রশংসা করছেন
ও কঠোরতার নিন্দা করেননি। আসিম সাহেব উনার পোস্টে ইবনু বায ও ইবনু উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহদের
অনুসরণ করতে বলেন। তাহলে শাইখ রাবীর ব্যাপারে আমারা তাদের অবস্থানের অনুসরণ করবো না
আসিম সাহেবের?! নিচে ইমাম ইবনু বায ও ইবনু উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ শাইখ রাবী হাফেজাহুল্লাহ
সম্পর্কে কি বলেছেন তা উল্লেখ করা হলো-- বিগত শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম 'আব্দুল
'আব্বীঝ বিন 'আব্দুল্লাহ বিন বাঝ (রহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,
یا شیخ ربیع، رد على كل من يخطئ، لو أخطأ ابن باز رد» .«عليه، لو أخطأ ابن إبراهيم رد عليه “হে শাইখ রবী’, যারা ভুল করে আপনি তাদের প্রত্যেককে
রদ করুন। ইবনু বাঝ যদি ভুল করে, তাঁকে রদ করুন। স্বয়ং ইবনু ইবরাহীম (১ম গ্র্যান্ড
মুফতী) যদি ভুল করেন, তবে তাঁকেও রদ করুন।” [ শাইখ খলিদ বিন দ্বহউয়ী আয-যুফীরী (হাফিযাহুল্লাহ),
আছ-ছানাউল বাদী' মিনাল 'উলামাই ‘আলাশ শাইখ রবী’; পৃষ্ঠা: ১১; ২য় প্রকাশ (ছাপা ও সন
বিহীন)] বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুফাসসির মুহাদ্দিছ ফাক্বীহ ও উস্থূলবিদ আশ-শাইখুল
'আল্লামাহ ইমাম মুহাম্মাদ বিন স্বলিহ আল-উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./ ২০০১
খ্রি.] কে শাইখ রবী’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, الظاهر أن هذا السؤال لا حاجة إليه، وكما سئل الإمام عن إسحاق بن راهويه -رحمهم الله الجميع- فقال: مثلى يسأل .«عن إسحاق! بل إسحاق يسأل عني “প্রকৃতপক্ষে এই প্রশ্নের কোন প্রয়োজন নেই। যেমনভাবে
ইমাম আহমাদকে (তাঁর উস্তায) ইমাম ইসহাক্ব বিন রাহওয়াইহ (রহিমাহুমুল্লাহু জামী'আ) সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, আমার মত ব্যক্তিত্ব ইসহাক্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত
হবে! বরং ইসহাক্বকেই আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।”

[ ইউটিউব লিঙ্ক: https://m.youtube.com/watch?v=K8ay0hdX24g; “ইতহাফুল কিরাম”— শীর্ষক অডিও ক্লিপ থেকে সংগৃহীত;
গৃহীত: আছ-ছানাউল বাদী' মিনাল ‘উলামাই ‘আলাশ শাইখ রবী’; পৃষ্ঠা: ১৫] [ফাৎওয়া গুলো সম্মানিত বড়ভাই আব্দুল্লাহ মৃর্ধা ভাইয়ের লেখনী থেকে
কপি করা হয়েছে] সম্পূর্ণ পোষ্টের লিংক- facebook.com/story.php?story_fbid=642111899592795&id=100013819720094 উলামাদের মধ্যে ভাগাভাগি করা গোমরাহি। বাতিলপন্থিদের ক্ষেত্রে কঠোরতার
দরুন শাইখ রাবী কোন নতুন মানহাযের সূচনা করেননি বরং তিনি সালাফদের পন্থাই অনুসরণ করছেন। উলামদের দুইভাগে ভাগ করা সম্পর্কে শাইখ রাবী হাফেজাহুল্লাহ বলেন,
“এটি সালাফি মানহাযের শত্রুদের একটি পন্থা। সালাফদের মধ্যে এমন ব্যাক্তি ছিলেন যারা
কঠোর এবং এমন ব্যাক্তি ছিলেন যারা নম্র তবে তারা কখনোই একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান
গ্রহণ করেননি। বরং তারা বাতিলপন্থিদের ব্যাপারে কঠোরতা আরোপকারীদের সম্মান করতেন। (উদাহরণ সরূপ) হাম্মাদ ইবনু সালামাহ। ইমাম আহমদ তার প্রশংসা করতেন ও তার বিরুদ্ধে যারা বলতো তাদের দ্বীন
নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যাক্তি হাম্মাম ইবনু সালামাহর বিরুদ্ধে কথা বলবে,
তাহলে তার দ্বীনের ব্যাপারে সন্দেহ করো কারণ তিনি বিদআতিদের ব্যাপারে কঠোল ছিলেন’ বাতিলপন্থিদের ব্যাপারে কঠোরতা আরোপ করা সালাফদের মধ্যে পূন্যের
কাজ ছিলো। https://m.youtube.com/watch?v=yCQVd7sKjr0


Post a Comment

0 Comments