🔶তাবলিগ জামাতের ব্যাপারে আমার সকল বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিব কিনা
ভাবছি। অনেক আহলেহাদিস ভাইয়ের কাছে বিশিষ্ট নির্ভরযোগ্য বিদ্বান ডা. জাকির নায়েক
যেহেতু তাবলিগ জামাতকে ভালো দল এবং আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত দল বলেছেন, সেহেতু আমাদেরও হক্কানি আহলেহাদিস হিসেবে উচিত
হবে, তাবলিগ জামাতকে আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত বলা। ডা.
জাকির নায়েক তাঁর কথায় আরও যুক্ত করেছেন, সৌদি আরব যে
তাবলিগ জামাতকে নিষিদ্ধ করেছে, সেটা ভুলক্রমে করে ফেলেছে।
🔶সুতরাং
সৌদি আরবের প্রায় সব মসজিদে যেসব খতিব তাবলিগ জামাতের বিরুদ্ধে খুতবা দিয়েছেন, তাঁরাও ভুলভাল খুতবা দিয়েছেন। তার মধ্যে একটা রেফারেন্স-সমৃদ্ধ খুতবা
আমরা অনুবাদও করেছিলাম। মুশকিল হলো, এটা এমন বিষয়,
যেটাকে আমরা ‘রুকুর পরে হাত বাঁধব নাকি
বাঁধব না’ টাইপের বিষয় বলে যেকোনো এক পক্ষ নেওয়ার পরেও
সালাফি থাকতে পারি না। সালাফি উলামাদের কাছে তাবলিগ জামাত হলো লিটমাস পেপারের মতো,
যে এদের সমর্থন করবে সে ওদেরই অন্তর্ভুক্ত বিদাতি হবে, আর যে ওদের বিরোধিতা করবে সে তাবলিগের মতো বিদাতি হিসেবে বিবেচিত হবে
না।
🔶·যেমন মক্কার মুহাদ্দিস ইমাম হামুদ বিন আব্দুল্লাহ আত-তুওয়াইজিরি
রাহিমাহুল্লাহ(মৃত: ১৪১৩ হি.) বলেছেন,
ﻭﻫﺬﻩ ﺍﻟﺮﻭﺍﻳﺔ
ﻋﻦ ﺍﻹﻣﺎﻡ
ﺃﺣﻤﺪ ﻳﻨﺒﻐﻲ
ﺗﻄﺒﻴﻘﻬﺎ ﻋﻠﻰ
ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﻤﺪﺣﻮﻥ
ﺍﻟﺘﺒﻠﻴﻐﻴﻴﻦ
ﻭﻳﺠﺎﺩﻟﻮﻥ ﻋﻨﻬﻢ
ﺑﺎﻟﺒﺎﻃﻞ، ﻓﻤﻦ
ﻛﺎﻥ ﻣﻨﻬﻢ
ﻋﺎﻟﻤﺎً ﺑﺄﻥ
ﺍﻟﺘﺒﻠﻴﻐﻴﻴﻦ
ﻣﻦ ﺃﻫﻞ
ﺍﻟﺒﺪﻉ ﻭﺍﻟﻀﻼﻻﺕ
ﻭﺍﻟﺠﻬﺎﻻﺕ،
ﻭﻫﻮ ﻣﻊ
ﻫﺬﺍ ﻳﻤﺪﺣﻬﻢ
ﻭﻳﺠﺎﺩﻝ ﻋﻨﻬﻢ؛
ﻓﺈﻧّﻪ ﻳﻠﺤﻖ
ﺑﻬﻢ، ﻭﻳﻌﺎﻣﻞ
ﺑﻤﺎ ﻳﻌﺎﻣﻠﻮﻥ
ﺑﻪ، ﻣﻦ
ﺍﻟﺒﻐﺾ ﻭﺍﻟﻬﺠﺮ
ﻭﺍﻟﺘﺠﻨُّﺐ،
ﻭﻣﻦ ﻛﺎﻥ
ﺟﺎﻫﻼً ﺑﻬﻢ،
ﻓﺈﻧﻪ ﻳﻨﺒﻐﻲ
ﺇﻋﻼﻣﻪ ﺑﺄﻧﻬﻢ
ﻣﻦ ﺃﻫﻞ
ﺍﻟﺒﺪﻉ ﻭﺍﻟﻀﻼﻻﺕ
ﻭﺍﻟﺠﻬﺎﻻﺕ،
ﻓﺈﻥ ﻟﻢ
ﻳﺘﺮﻙ ﻣﺪﺣﻬﻢ
ﻭﺍﻟﻤﺠﺎﺩﻟﺔ
ﻋﻨﻬﻢ ﺑﻌﺪ
ﺍﻟﻌﻠﻢ ﺑﻬﻢ،
ﻓﺈﻧﻪ ﻳُﻠﺤﻖ
ﺑﻬﻢ ﻭﻳُﻌﺎﻣﻞ
ﺑﻤﺎ ﻳُﻌﺎﻣﻠﻮﻥ
ﺑﻪ.
🔶‘‘ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল রাহিমাহুল্লাহর এই
উক্তিটি ওই লোকদের ওপর প্রয়োগ করা উচিত, যারা (বিদাতি) তাবলীগীদের
প্রশংসা করে এবং অন্যায়ভাবে তাদের পক্ষে বিতর্ক করে। ঐ লোকদের মধ্যে যে ব্যক্তি
জানে যে, তাবলিগিরা বিদাতি, পথভ্রষ্ট
এবং মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত। এতদ্সত্ত্বেও সে তাদের
প্রশংসা করছে এবং তাদের পক্ষ নিয়ে বিতর্ক করছে, তবে তাকে
ঐ বিদাতি তাবলিগিদের সাথেই যুক্ত করা হবে (অর্থাৎ তাদের মতাবলম্বী গণ্য করতে হবে)।
আর তার সাথে ঐরূপ আচরণই করা হবে, যেরূপ আচরণ তাবলিগিদের
সাথে করা হয়। তথা ঘৃণা, বিদ্বেষ, পরিত্যাগ ও বর্জনের আচরণ।
🔶পক্ষান্তরে
যে ব্যক্তি তাদের সম্পর্কে জানেনা। তাকে জানিয়ে দেওয়া জরুরি যে, তাবলিগিরা বিদাতি, পথভ্রষ্ট এবং মূর্খদের
অন্তর্ভুক্ত। এরপরেও সে যদি তাদের প্রশংসা করা এবং তাদের পক্ষ নিয়ে বিতর্ক করা
পরিত্যাগ না করে, তবে তাকে তাদেরই মতাবলম্বী গণ্য করতে
হবে। আর তার সাথে ঐ আচরণই করা হবে, যে আচরণ তাদের সাথে
করা হয়।’’ [শাইখ হামুদ আত তুওয়াইজিরি রাহিমাহুল্লাহ,
আল-কাওলুল বালিগ ফিত তাহযিরি মিন জামাআতিত তাবলিগ; পৃষ্ঠা: ২৩০-২৩১; দারুস সামিয়ি, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৪ হি./১৯৯৩
খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
🔶·এখন আমি পড়েছি শাঁখের করাতের মুখে! তাবলিগকে ডা. জাকির নায়েকের মতো
সঠিক বললে সালাফি উলামাদের দৃষ্টিতে আহলেহাদিস থাকা যায় না, আবার তাবলিগকে আহলুস সুন্নাহ বলার কারণে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে বলেও
বড়ো এক সালাফি জনগোষ্ঠীর কাছে আহলেহাদিস থাকা যায় না। চিন্তা করছি, কী করা যায়।
🔶আবেগী
হওয়া যাবে না। জাকির নায়েকের এই এক ভুলের কারণে সালাফিয়াত থেকে তাকে খারিজ করা
যাবে না। আপনি জানেন, তাঁর মাধ্যমে কতলোক
মুসলিম হয়েছে?! বিদাতি বলার এসব ফালতু ট্রেন্ড ছাড়ুন।
প্রাচীন মুতাজিলিদের মাধ্যমে কতলোক মুসলিম হয়েছিল জানেন? সুতরাং
মুতাজিলিদের বিদাতি বলে ইসলামের ক্ষতি করবেন না। সালাফি উলামারা যেই জাহমিয়া
সম্প্রদায়কে কাফির ফতোয়া দিয়েছিলেন, সেই জাহমিয়াদের ইমাম
জাহম বিন সাফওয়ানের মাধ্যমেও প্রাচীন ভারতের অনেক লোক ইসলাম গ্রহণ করেছিল। সুতরাং
জাহমিয়াদের বিদাতি-কাফির বলে ইসলামের ক্ষতি করবেন না। খালি আবেগ দিয়ে একে ওকে
বিদাতি ফতোয়া মারা ভালো মানুষের কাজ নয়, বলে দিলাম! আমি
ডা. জাকির নায়েকের পক্ষে থাকার চেষ্টা করছি। আমাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,
ভাইয়েরা।
·🔶বি.দ্র.: সংযুক্ত ভিডিয়োটি হুদা টিভি(Huda TV) থেকে নেওয়া হয়েছে। এক ভাইয়ের আইডিতে
বাংলা সাবটাইটেল-যুক্ত ভিডিয়ো পেলাম। সেটা কমেন্টে দিয়ে দিচ্ছি, ইনশাআল্লাহ।
0 Comments