সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা সংক্রান্ত মাসআলা ও বিধান
হাদীস: বানী ইস্রাঈল তখনই ধ্বংস হয়েছিল, যখন তাদের মহিলারা এই জিনিস ব্যবহার করতে আরম্ভ করেছিল।
عن حُميد بن عبد الرحمن: أنه سمع معاوية رضي الله عنه عام
حَجَّ على المِنْبَر، وتناول قُصَّة من شَعْرٍ كانت في يَدِ حَرَسِيٍّ، فقال: يا
أهل المدينة أين عُلَمَاؤُكُمْ؟! سمعت النبي صلى الله عليه وسلم يَنْهَى عن مثل
هذه، ويقول: «إنما هَلَكَت بَنُو إسرائيل حين اتَّخَذَهَا نساؤُهُم».
হুমাইদ ইবনে আব্দুর রাহমান থেকে বর্ণিত, তিনি হজ্জ করার বছরে মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু
‘আনহু-কে মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন—ঐ সময়ে তিনি জনৈক দেহরক্ষীর হাত থেকে এক
গোছা চুল নিজ হাতে নিয়ে বললেন, ‘হে মদীনাবাসীগণ! তোমাদের আলেমগণ কোথায়? আমি রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ জিনিস (ব্যবহার) নিষেধ করতে শুনেছি। তিনি বলতেন, “বানী ইস্রাঈল তখনই ধ্বংস হয়েছিল, যখন তাদের মহিলারা এই জিনিস ব্যবহার করতে আরম্ভ করেছিল।”
সহীহ - মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।
ব্যাখ্যা:
হুমাইদ ইবনে আব্দুর
রাহমান ইবন আওফ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সংবাদ দেন যে, তিনি হজ্জ করার বছরে মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-কে মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন—ঐ সময়ে তার হাতে ছিল এক গোছা চুল। আর তা ছিল এমন চুল যার কতক কতকের সাথে জোড়া
লাগানো। যা তার কোন খাদেম থেকে তিনি নিয়েছেন যে তার দেহ রক্ষার খেদমতে নিয়োজিত
ছিল। তারপর তিনি বললেন, ‘হে মদীনাবাসীগণ! তোমাদের আলেমগণ কোথায়? এ অন্যায় কর্ম নিষেধ করা ছেড়ে দেওয়া এবং তা পরিবর্তনে তাদের অবহেলা প্রদর্শনের
কারণে তিনি তাদের প্রতি বিরক্ত হয়ে কথা বলেন। তারপর তিনি তাদের জানান যে, রাসূলল্লাহ
সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জানিয়েছেন যে, “বানী ইস্রাঈল তখনই ধ্বংস হয়েছিল, যখন তাদের মহিলারা এই জিনিস ব্যবহার করতে আরম্ভ করেছিল এবং তা তাদের চুলের সাথে জোড়া
লাগাতে শুরু করে। এ অন্যায়সহ আরও অন্যায় কর্ম যা তাদেরকে করতে নিষেধ করা হয়েছিল তা
করার পর তাদের স্বীকৃতি থাকার কারণে তারা সবাই একত্রে ধ্বংস হয়েছে। [নববীর শরহু মুসলিম (১৪/১০৮), ফাতহুল বারী (৬/৫১৬) ]
হাদীস: যায়দ ইবন আরকাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, একদা তিনি একদল লোককে পূর্বাহ্নের (চাশতের) সালাত পড়তে দেখলেন। তিনি বললেন, ‘যদি ওরা জানত যে, নামায এ সময় ছাড়া অন্য সময়ে পড়া উত্তম। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আওয়াবীন (আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী)দের নামায যখন উঁটের বাচ্চার পা বালিতে গরম অনুভব করে।”
হাদীস
عن زَيد بن أرْقَم رضي
الله عنه : أنه رأى قوما يصلُّون من الضُّحى، فقال: أمَا لقد عَلِموا أن الصلاة في
غير هذه السَّاعة أفضل، إن رسول الله صلى الله عليه وسلم ، قال: «صلاة
الأَوَّابِين حين تَرْمَضُ الفِصَال».
যায়দ ইবন আরকাম কর্তৃক বর্ণিত, একদা তিনি দেখলেন একদল লোক পূর্বাহ্নের
(চাশতের) সালাত পড়ছে। তিনি বললেন, ‘যদি ওরা জানত যে, সালাত এ সময় ছাড়া অন্য সময়ে পড়া উত্তম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আওয়াবীন (আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী)দের
সালাত হচ্ছে যখন উঁটের বাচ্চার পা বালিতে গরম অনুভব করে তখন।”
সহীহ - এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
ব্যাখ্যা:
যায়দ ইবন আরকাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু দেখলেন, একদল লোক পূর্বাহ্নের (চাশতের) সালাত পড়ছে। তখন তিনি উল্লেখ করলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, “যখন উঁটের বাচ্চার পা বালিতে গরম অনুভব করে তখন হচ্ছে আওয়াবীন (আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী)দের সালাত। অর্থাৎ পূর্বাহ্নের (চাশতের) সালাতের উত্তম সময় হচ্ছে সূর্য কঠিনভাবে ওপরে উঠার সময়। যখন যমীনে সূর্যের গরম বেশি পড়ার কারণে উটের বাচ্চার পা পুড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এটিই সে ওয়াক্ত যাতে আল্লাহর অনুগত ও তার প্রতি অধিক প্রত্যাবর্তনকারী বান্দাগণ পূর্বাহ্নের (চাশতের) সালাত আদায় করেন।
0 Comments