🔳→সালাফ পরিচিতি: পার্ট- ১

^এটা সালাফগনের মানহাজ নয়!

১. এটা সালাফদের নয়! Part: 1, Copying is prohibited. Only sharing is allowed.

এটা সালাফ' গণের মানহাজ নয় যে, সুন্নাহর ক্ষেত্রে কারো অবস্থার খোঁজখবর নেওয়া ব্যতীত তার কাছ থেকে ইলম' গ্রহণ করা। যেহেতু বলা হয়েছে: প্রকৃতপক্ষে এই ইলমই দীন, সুতরাং আপনি তার দিকে দৃষ্টি রাখুন যার থেকে আপনি দীন গ্রহণ করছেন। [এটা সালাফগণের মানহাজ নয় !পেজ- ১৬]

🔘টীকা-১

🔳→সালাফ পরিচিতি: সালাফ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, পূর্বে গত হওয়া। সেটা দুভাবে হতে পারে,

১) পূর্বের ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। যেমন:

আল্লাহ বলেন, “ফলে পরবর্তীদের জন্য আমরা তাদেরকে অতীত ইতিহাস ও দৃষ্টান্ত করে রাখলাম।” [সূরা আয-যুখরুফ: ৫৬]

অন্য বই থেকেঃ

🔘সালাফ(السلف) শব্দটি আরবী। মূল বর্ণ হচ্ছে 'সীন'(س), 'লাম'(ل) ও 'ফা'(ف)।

'সালাফ' শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে: অতীত, বিগত, পূর্ববর্তী, অগ্রজ, পূর্বসূরি ইত্যাদি।

ভাষাবিদ ইবনু মানযূর রাহি. বলেন,

🔘'সালাফ'হচ্ছে, আপনার অগ্রজ বাপদাদা ও আত্মীয়স্বজন; যারা বয়স ও মর্যাদায় আপনার ওপরে। এ কারণে তাবেয়ীদের প্রথম যুগকে 'সালফে সালেহ' বলা হয়। (লিসানুল আরব, ৯/১৫৯)]

এই অর্থে রাসূল স. স্বীয় কন্যা ফাতিমাহ যাহরা রাযি.-কে বলেন,আমি তোমার উত্তম সালাফ বা অগ্রজ। [( সহীহ মুসলিম, ২৪৫০)]

২) পূর্বের কোনো কাজ বা আদর্শ। যেমন:

আল্লাহ বলেন, “যারা সুদ খায় তারা তার ন্যায় দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এটা এ জন্য যে, তারা বলে, ‘ক্রয়- বিক্রয় তো সুদেরই মতো'। অথচ আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন। অতএব, যার নিকট তার রব-এর পক্ষ হতে উপদেশ আসার পর সে বিরত হলো, তাহলে অতীতে যা হয়েছে তা তারই এবং তার ব্যাপার আল্লাহর ইখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় আরম্ভ করবে তারাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।” [সূরা আল-বাকারাহ: ২৭৫]

অনুরূপ “নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃপুরুষ যাদেরকে বিয়ে করেছে, তোমরা তাদেরকে বিয়ে করো না; তবে পূর্বে যা সংঘটিত হয়েছে (সেটা ক্ষমা করা হলো) নিশ্চয় তা ছিল অশ্লীল, মারাত্মক ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট পন্থা।” [সূরা আন-নিসা: ২২] অনুরূপ- সূরা আন-নিসা: ২৩; আল-মায়িদাহ: ৯৫; আল-আনফাল: ৩৮; সূরা ইউনুস: ৩০; আল-হাক্কাহ: ২৪]

৩)পরিভাষায় একজন মানুষের সালাফ হচ্ছে, তার পূর্বে তার পিতৃপুরুষ বা নিকটাত্মীয়দের যারা মারা গেছে। তারা আবার ভালো কিংবা মন্দ উভয় হিসেবেই সালাফ হতে পারে। কিন্তু সাধারণত খারাপ কাজের ব্যাপারে পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করলে মানুষ সেটাকে ভালোভাবে গ্রহণ করে না। সেটা মূল্যায়নযোগ্য হয় না। সেটার অনুসরণ করতেও বলা হয় না। [এটা সালাফগনের মানহাজ নয়! পেজ নং- ১৭-১৮]

তাই আমাদের এখানে উদ্দেশ্য কেবল ‘সালাফে সালিহীন' বা সৎ ব্যক্তিবর্গ যারা আমাদের আগে গত হয়েছেন।এমতাবস্থায় সালাফে সালিহীনের সংজ্ঞা কী এ ব্যাপারে আলিমগণের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে:

☑১. সালাফে সালিহীন কেবল সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম।

☑২. সালাফে সালিহীন কেবল সাহাবায়ে কিরাম ও তাদের সুন্দর অনুসারী তাবিয়িগণ।

☑৩. তারা সাহাবা, তাবিয়ি ও তাবিয়িগণের অনুসারীরা।

☑৪. তারা তৃতীয় শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত আলিমগণ ।

☑৫. তারা পঞ্চম শতাব্দীর আগ পর্যন্ত। বস্তুত সময় দিয়ে নির্ধারণ করা সঠিক হবে না। কারণ বড়ো বড়ো ফিরকাগুলো সাহাবায়ে কিরামের পরপরই বের হয়ে পড়েছিল।

[ড. মুহাম্মাদ বা কারীম বা আবদুল্লাহ, ওয়াসাত্বিয়্যাতু আহলিস সুন্নাতি বাইনাল ফিরাক্কি ৯৬-১০১]

তাহলে সালাফ হচ্ছেন সাহাবায়ে কিরাম, আর যারা সাহাবায়ে কিরামের সুন্দর অনুসরণ করেছেন সেসব নির্ধারিত তাবিয়ি ও নির্ধারিত আতবাউত তাবিয়ি, দীনের বিখ্যাত ইমামগণ, যাদের ইমামত ব্যাপারে সকলেই সাক্ষ্য প্রদান করে।' [সাফারীনী, লাওয়ামিউল আনওয়ার আল-বাহিয়্যাহ (১/২০)]

এতে করে সেসব লোক ‘সালাফ'-এর সংজ্ঞা থেকে বেরিয়ে যাবে যারা সাহাবায়ে কিরামের পরে এসেছেন কিন্তু তারা বিদআতে যুক্ত হয়েছেন, খারিজি, রাফিদি, কাদারিয়া, মুরজিয়া, জাবরিয়্যাহ, জাহমিয়্যাহ, মুতাযিলাহ, কাররামিয়্যাহ ইত্যাদি নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। সুতরাং সাহাবায়ে কিরাম ও তাদের সুন্দর অনুসারীরাই সালাফি; কারণ—

১.আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তার দিকে যারা প্রত্যাবর্তন করে তাদের পথে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ বলেন, “আর তোমার পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সঙ্গে শির্ক করার জন্য পীড়াপীড়ি করে, যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই,

-তাহলে তুমি তাদের কথা মেনো না এবং দুনিয়াতে তাদের সঙ্গে বসবাস করবে সদ্ভাবে আর যে আমার অভিমুখী হয়েছে তার পথ অনুসরণ করো। তারপর তোমাদের ফিরে আসা আমারই কাছে, তখন তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে অবহিত করব।” [সূরা লুকমান: ১৫] [এটা সালাফগনের মানহাজ নয়! পেজ নং- ১৮-১৯]

ইমাম ইবনুল কাইয়িম বলেন, “প্রত্যেক সাহাবি আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী; সুতরাং তাদের পথ, কথা, আকীদাহ-বিশ্বাস অনুসরণ করা ফরয।” [ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন (৪/১২০)]

২. অনুরূপ আল্লাহ তাআলা বলেন,

“আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা ইহসানের সঙ্গে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তিনি তাদের জন্য তৈরি করেছেন জান্নাত, যার নিচে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। এ তো মহাসাফল্য।” [সূরা আত-তাওবাহ: ১০০]

এখানেও আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর সন্তুষ্টি জ্ঞাপন করেছেন যারা সাহাবায়ে কিরাম (মুহাজির ও আনসার)দের সুন্দর অনুসরণ করবে। সুতরাং সালাফি মানহাজের অনুসারী হওয়া ব্যতীত অন্য কিছু হওয়ার সুযোগ কোথায়? আহলুস সুন্নাহ যদি নিজেদের সালাফি নাম প্রদান করে তাতেও সমস্যা নেই; কারণ এটি তাদের বৈশিষ্ট্যগত একটি নাম। তাদেরকে যেভাবে সুন্নি বলা হয়, তেমনি তাদেরকে সালাফি বলার মধ্যেও কোনো সমস্যা নেই। [আর-রুহাইলি, মাওকিফু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামাআতি মিন আহলিল আহওয়ায়ি ওয়াল বিদআ (১/৬৩)]

সুতরাং বিভিন্ন ফিরকার উদ্ভব হওয়ার পরে যারা নিজেদের আকীদাহ ও মানহাজকে সাহাবায়ে কিরামের আকীদাহ ও মানহাজের ওপর বিশুদ্ধ করতে চেয়েছে তারাই সালাফ, তাদের দিকে সম্পৃক্ত করে নিজেদের মানহাজকে ‘সালাফি মানহাজ’ বলার মধ্যে কোনো অসুবিধা নেই।।

৩.এ সালাফ ও সালাফি মানহাজের পরিচিতি প্রদানের মাধ্যমে সালাফগণের আদর্শ প্রকাশিত হবে, বিদআতিদের ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট হবে। রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেন,

“তোমরা আমার আদর্শকে আকঁড়ে ধর, খুলাফায়ে রাশিদার আদর্শকে আঁকড়ে ধর, গোড়ালির দাঁত দিয়ে তা কামড়ে থাক, নব উত্থিত বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাক; কারণ প্রতিটি নব উত্থিত বিষয়ই বিদআত, আর প্রতিটি বিদআতই পথভ্রষ্টতা।” [আহমাদ, আল-মুসনাদ, হাদীস নং ১৭১৪৪; আবু দাউদ, আস-সুনান, হাদীস নং ৪৬০৭; ইবন মাজাহ, আস-সুনান, হাদীস নং ৪২]

৪.রাসূলুল্লাহ(সাঃ) নাজাতপ্রাপ্ত ফিরকার(যারা জাহান্নামে যাবে না সেসবের পরিচয় দেওয়ার সময় বলেছেন,

“তারা হবে সেসব লোক যারা আমি যার ওপর আছি আর আমার সাহাবিগণ যার ওপর আছে।” [তিরমিযি, আল-জামিউ, হাদীস নং ২৬৪১; হাসান সনদে]

৫.ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অনুকরণ করতে চাও, তাহলে সে যেন যারা মারা গেছে তাদের অনুকরণ করে, আর তারা তো হচ্ছেন রাসূলুল্লাহ(সাঃ)-এর সাহাবিগণ, যারা এ উম্মাতের সবচেয়ে উত্তম লোক; অন্তরের দিক থেকে নেককার, ইলমের দিক থেকে গভীর, কৃত্রিমতা প্রকাশে সবচেয়ে কম। তারা এমন এক জাতি, যাদেরকে আল্লাহ তাআলা তাঁর নবির সাথিত্বের জন্য, দীনকে অন্যদের কাছে বহন করার জন্য চয়ন করেছেন। সুতরাং তোমরা তাদের চরিত্রের সঙ্গে ও তাদের পথে বিচরণ করার মাধ্যমে তাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করো; কারণ তারা সকলেই ছিল সরল-সঠিক পথের ওপর।” [বাগাওয়ি, শারহুস সুন্নাহ (১/২১৪)] [ এটা সালাফগণের মানহাজ নয় ! পেজ নং- ২০ ]

🔳 এটা সালাফগণের মানহাজ নয় ! পেজ নং- ২১ ]

৬. ইমাম আহমাদ বলেন, “আমাদের কাছে আকীদাহ ও সুন্নাতের মূলনীতি হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ (*)-এর সাহাবিগণ যে পথের ওপর ছিল তা আঁকড়ে থাকা, তাদের অনুসরণ-অনুকরণ করা ও বিদআত পরিত্যাগ করা।” [লালেকাঈ, শারহু উসূলি ইতিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামাআহ (১/১৫৬)] [ এটা সালাফগণের মানহাজ নয় ! পেজ নং- ২০ -২১ ]

☑বইঃ "এটি সালাফগণের মানহাজ নয়!"

☑মুল লেখকঃ শাইখ ড. মুহাম্মাদ ইবন উমার ইবন সালিম বাযমূল।

☑অনুবাদ,সম্পাদনা ও ব্যখ্যাঃ শাইখ  ড. আবু বকর মুহাম্মাদ জাকারিয়া।

☑Convert Text:- Rasikul Islam (india )

☑My Website: https://sarolpoth.blogspot.com

☑Time of publication: 15-02-2023 ; Time: 07:15

Copying is prohibited. Only sharing is allowed.

(ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে📚 এখানে পাবেন🎶প্রচুর অডিও সিরিজ🎶100 এর বেশী শায়খ ভিত্তিক অডিও 90 এর উপর 🎶বিষয় ভিত্তিক অডিও🌎অডিও কুরআন এবং অনলাইনে অডিও শুনুন🎶এছাড়াও বিষয় ভিত্তিক ভিডিও,♂সহীহ-সুন্নাহ-ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল,ইসলামিক পত্রিকা 📚 and

 অনেক জানা-অজানা-আর্টিকল 📚বিষয় ভিত্তিক সিরিজ আকারে http://islamicebookandpic.in/ ইসলামিক গালারি 

👇বিশেষ দ্রস্টব্যঃ-👇 ওয়েবসাইট sarolpoth.blogspot.com/ ইসলামিক সমস্থ প্রগ্রাম একসাথে পেতে http://salafimp3web.blogspot.com/👉 অডিও সমাহার👈 👉 https://salafi-pdfbooks.blogspot.com/ সমস্ত ইসলামিক বই👆