সিয়াম রাখলে যে উপকার হয়।
🔘🔘সিয়ামের উপকারিতা
সিয়ামের বহু হিকমত ও
উপকারিতা রয়েছে। এর সম্পর্ক রয়েছে তাক্বওয়ার সাথে, যার কথা আল্লাহ্ তাআলা এই আয়াতে উল্লেখ
করেছেন: “…… যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো”। [সূরা বাকারা : ২:১৮৩]
🔘এই আয়াতের ব্যাখ্যা হলো: যদি একজন
মানুষ কেবল আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি পাওয়ার আশায় এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে বহু বৈধ
জিনিস পরিহার করতে পারে, তাহলে তার জন্য অবৈধ কাজগুলি পরিহার করা আরও সহজতর হয়ে যায়।
🔘যখন একজন মানুষের পেট খালি থাকে এবং
সে ক্ষুধার্ত থাকে, তখন তার অন্য বহু মনোপ্রবৃত্তি ক্ষুধা ও প্রবৃত্তির অনুভূতি হতে সুরক্ষিত
থাকে। কিন্তু যখন তার পেট পরিতৃপ্ত থাকে, তখন তার জিহ্বা, দৃষ্টি, হাত ও গুপ্তাঙ্গগুলি
ক্ষুধা অনুভব করতে শুরু করে। সিয়াম শয়তানকে পরাজিত করার পথ দেখায়। সিয়াম নিয়ন্ত্রণ
করে প্রবৃত্তিগুলিকে এবং সুরক্ষিত রাখে তার মনোপ্রবৃত্তিকে।
🔘যখন সওম পালনকারী ব্যক্তি ক্ষুধার
যন্ত্রণা অনুভব করে, তখন দরিদ্রের অনুভূতির ব্যাপারে তার অভিজ্ঞতা হয়। ফলস্বরূপ তার হৃদয়ে তাদের
প্রতি সহানুভূতির উদ্রেক ঘটে এবং তাদের ক্ষুধা নিবারণের উদ্দেশ্যে তাদের কিছু দান
করে। তাদের বিষয়ে শোনা আর তাদের কষ্ট ভাগ করে নেওয়া এক জিনিস নয়। যেরূপ একজন
অশ্বারোহী মানুষ যতক্ষণ নিচে নেমে পদচরণ না করবে ততক্ষণ সে বুঝতে পারবে না যে, পায়ে হাঁটার কষ্ট কী।
🔘সিয়াম মানুষকে আত্মপ্রবৃত্তি বর্জন ও
পাপ হতে দূরত্ব অবলম্বনের প্রশিক্ষণ দেয়। এটা একজন মানুষকে সাহায্য করে তার
প্রকৃতিকে জয় করতে এবং তার বদাভ্যাসগুলি পরিত্যাগ করতে। এছাড়া এটা মানুষকে
সুশৃঙ্খল ও সময়ানুবর্তী হওয়ার প্রশিক্ষণ দেয়, যা তাদের এমন অনেক সমস্যার সমাধান করে
দেয় যাতে বহু বিশৃঙ্খল লোক নিপতিত। তবে এটা কেবল তাদের জন্য, যারা এটাকে বাস্তবরূপ
দেয়।
🔘তাছাড়া সিয়াম মুসলমানদের ঐক্যের
বহিঃপ্রকাশ। কেননা উম্মাহ একই সময়ে সিয়াম শুরু করে ও ভঙ্গ করে। যারা আল্লাহর দিকে
অন্যদের আহ্বান করে, তাদের জন্যও এই সিয়াম একটি মহাসুযোগ করে দেয়। এই মাসে বহু মানুষ জীবনের প্রথম
মসজিদে আসে। আবার অনেকেই এমন্ও আছে যারা দীর্ঘদিন ধরে মসজিদে আসেনি। কিন্তু তাদের
হৃদয় উম্মুক্ত। সুতরাং আমাদের উচিত এই মহাসুযোগটিকে সর্বতোভাবে ব্যবহার করা এবং
মৃদু পদ্ধতিতে তাদেরকে উপদেশবাণী দেওয়া, সঠিক শিক্ষা দেওয়া, ফলপ্রসূ কথা বলা এবং
ন্যায় ও সৎ্কার্যে সহযোগিতা করা।
0 Comments