উল্কাপিণ্ড যে ভাবে খসে পড়ে।
শেষ
নবী মুহাম্মদ(সাঃ)এর নবুওয়তের আগ পর্যন্ত জ্বীন জাতি আকাশে প্রান্ত সীমা
পর্যন্ত গিয়ে ঘাপটি মেরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য লুকিয়ে থাকত।
আল্লাহ তা’আলা যখন কোন আদেশ করতেন ফেরেশতাদের, তখন ফেরেশতারা সেই আদেশ মুখে মুখে ছড়িয়ে দিত। শয়তান জ্বীন তখন টুকরো টুকরো কিছু খবর চুরি করে পৃথিবীতে এসে সেগুলোর সাথে বিভিন্ন মিথ্যা মিশিয়ে ভাগ্য গণনাকারীদের কাছে বলত, যার কিছু কিছু পরবর্তীতে সত্য হিসেবে প্রকাশ পেত।
❑রাসুল(সঃ)এর নবুওয়তের পরে আল্লাহ তা’আলা
উর্ধ্বাকাশ এবং নিচের আকাশের মাঝে একটি পর্দা দিয়ে দিলেন। ফলে শয়তান জ্বীনরা আর
কোন আদেশ শুনতে পেত না। বরং চুরি করে খবর শুনতে নিলেই জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তাদের
পিছু নিত।
হঠাত করেই এই রকম পরিবর্তনে অবাক হয়ে শয়তান তার
অধীনস্থ সকল জ্বীনদের পৃথিবীর আনাচে-কোনাচে পাঠিয়ে দিল মূল খবর বের করার জন্য- কি
এমন ঘটনা ঘটেছে যার কারণে উর্ধ্বাকাশ থেকে কোন খবর আনা যাচ্ছে না? খবরের সন্ধানে জ্বীনদের একদল যখন নাখালা নামের
জায়গা দিয়ে যাচ্ছিল,
রাসুল(সঃ)তখন সেই পথে
‘উকাজ’ নামের বাজারে ইসলামের দাওয়াতের জন্য যাচ্ছিলেন। জ্বীনদের দল যখন সেখানে
পৌঁছল,
রাসুল(সঃ)তখন সাহাবীদের নিয়ে ফজরের নামাজ পড়ছিলেন। রাসুল(সঃ)
এর মুখে কুরআনের তেলাওয়াত শুনেই জ্বীনদের সেই দল বুঝতে পারল কি কারণে তাদেরকে
উর্ধ্বাকাশে যেতে বাধা দেয়া হচ্ছিল। তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং নিজ
সম্প্রদায়ের কাছে সংবাদ নিয়ে ফেরত যায়। [বুখারী হা/৪৯২১; মুসলিম ১০৩৪)।
❑“বলুনঃ আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল কোরআন শ্রবণ
করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি; যা
সৎপথ প্রদর্শন করে। ফলে আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের
পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করব না। এবং আরও বিশ্বাস করি যে, আমাদের
পালনকর্তার মহান মর্যাদা সবার উর্ধ্বে। তিনি কোন পত্নী গ্রহণ করেননি এবং তাঁর
কোন সন্তান নেই। আমাদের মধ্যে নির্বোধেরা আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে বাড়াবাড়ির
কথাবার্তা বলত।” (সূরা জ্বীন ১-৪)
❑“আমরা
আকাশ পর্যবেক্ষণ করছি, অতঃপর দেখতে পেয়েছি যে, কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ।আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে
সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে
থাকতে দেখে।” (সূরা
জ্বীন, ৮-৯)
❑“নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি। এবং তাকে
সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে। ওরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ
করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষেপ করা হয়। ওদেরকে বিতাড়নের
উদ্দেশে। ওদের জন্যে রয়েছে বিরামহীন শাস্তি। তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে
জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।” (সূরা
আস-সাফফাত, ৬-১০)
❑
the author &editor: rasikulindia
website: sarolpoth.blogspot.com
0 Comments