❑মানসিক রোগী আর জ্বীনে ধরা রোগীর মধ্যে পার্থক্য?
অনেক সময় আমরা এ সমস্যায় পড়ে যাই। ঠিক করতে পারি না রোগটা কি মানসিক না-কি
পাগল, না কি জ্বীনে আছর থেকে রোগ দেখা দিয়েছে। অনেক সময় তাই আমরা
মানসিক-রোগীকে জ্বীনে ধরা রোগী বলে থাকি। তেমনি জ্বীনে ধরা রোগীকে মানসিক রোগী বলে
চালাতে চেষ্টা করি।
বিশেষ করে ডাক্তার ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা কোনভাবেই
জ্বীনের আছরকে স্বীকার করতে চান না। তারা এ জাতীয় সকল রোগীকে মানসিক রোগী বলে
সনাক্ত করে থাকেন।
পাগলামী-কে আরবীতে বলা হয় জুনুন। আর পাগল-কে বলা হয়
মাজনূন। আরবীতে এ জুনুন ও মাজনুন শব্দ দুটো কিন্তু জ্বীন শব্দ থেকেই এসেছে। যেমন
আল কুরআনে এসেছে:
“সে কেবল এমন এক লোক, যার মধ্যে পাগলামী রয়েছে। অতএব তোমরা তার সম্পর্কে কিছুকাল অপেক্ষা কর।”
এ কথাটি নূহ(আঃ)-এর সম্প্রদায়ের লোকেরা তার সম্পর্কে
বলেছিল। এ আয়াতে জ্বীন্নাতুন শব্দের অর্থ হল পাগলামী। কাজেই কাউকে পাগলামীর মত
অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখলে সেটা যেমন জ্বীনের আছরের কারণে হতে পারে, আবার তা মানসিক রোগের কারণেও হতে পারে। তবে এ বিষয়ের
বিশেষজ্ঞরা অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বিষয় নির্ধারণ করেছেন, যার
মাধ্যমে মানসিক রোগী আর জ্বীনে -ধরা রোগীর মধ্যে পার্থক্য করা যায়। এগুলো হল:
✔১.জ্বীনে ধরা রোগী কিছুক্ষণের জন্য বেহুশ হয়ে যায়। মানসিক রোগী বেহুশ হয়ে
পড়ে না।
✔২.কখনো কখনো জ্বীনে-ধরা রোগীর মুখ থেকে ফেনা বের হয়। দাতে খিল লেগে যায়।
মানসিক রোগীর মুখ থেকে ফেনা বের হয় না।
✔৩.জ্বীনে ধরা রোগী প্রায়ই সপ্নে সাপ, কুকুর,
বিচ্ছু, বানর, শিয়াল,
ইদুর ইত্যাদি দেখে থাকে। কখনো কখনো স্বপ্নে দেখে সে অনেক উচু স্থান
থেকে পড়ে যাচ্ছে।
✔৪.জ্বীনে ধরা রোগীর সর্বদা ভীতু ভাব থাকে। সর্বদা তার ভয় লাগে। মানসিক রোগীর
তেমন ভয় থাকে না।
✔৫.জ্বীনে ধরা রোগী নামাজ পড়া, কুরআন তেলাওয়াত, আল্লাহর যিকির ইত্যাদি
পছন্দ করে না। বরং এগুলো তার অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয়।
✔৬. জ্বীনে ধরা রোগী কখনো কখনো ভিন্ন ভাষা ও ভিন্ন ভঙ্গিতে কথা বলে।
✔৭.জ্বীনে ধরা রোগী অধিকাংশ সময় স্বাভাবিক থাকে। মাঝে মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ
করে।
✔৮.জ্বীনে ধরা রোগী থেকে অনেক সময় আশ্চর্যজনক বিষয় প্রকাশ হয়ে থাকে। যেমন
অল্প সময়ে সে বহু দূরে চলে যায়। গাছে উঠে সরু ডালে বসে থাকে ইত্যাদি।
✔৯. জ্বীনে ধরা রোগীর কাছে স্বামী, ঘর-সংসার, স্ত্রী-সন্তানদের ভাল লাগে
না।
✔১০.জ্বীনে ধরা রোগীর উপর যখন জ্বীন চড়াও হয় তখন
ক্যামেরা দিয়ে তার ছবি তুললে ছবি ধোয়ার মত অস্পষ্ট হয়। দেখা গেছে আশে পাশের
সকলের ছবি স্পষ্টভাবে উঠেছে কিন্তু রোগীর ছবিটি ধোয়াচ্ছন্ন। এটা কারো কারো নিজস্ব
অভিজ্ঞতা। মনে রাখতে হবে অভিজ্ঞতা সর্বদা এক রকম ফলাফল নাও দিতে পারে।
কিন্তু বড় সমস্যা হবে তখন, যখন রোগীটি
নিজেকে জ্বীনে ধরা বলে অভিনয় করে কিন্তু তাকে জ্বীনে ও আছর করেনি আর সে মানসিক রোগীও
নয়। সে তার নিজস্ব একটি লক্ষ্য পূরণের জন্য জ্বীনে ধরার অভিনয় করছে। এ অবস্থায়
অভিভাবকের করণীয় হল, তারা তাকে তার দাবী পুরণের আশ্বাস
দেবে। তাহলে তার জ্বীন ছেড়ে যাবে। পরে তার দাবীটি যৌক্তিক হলে পূরণ করা হবে আর
অযৌক্তিক হলে পূরণ করা হবে না। এরপর যদি সে আবার জ্বীনে ধরার অভিনয় করে তাহলে
তাকে জ্বীনে ধরা রোগী বলে আর বিশ্বাস করার দরকার নেই। অনেক সময় শারিরিক শাস্তির
ভয় দেখালে এ ধরনের বাতিল জ্বীন চলে যায়।
❑ the author &editor: rasikulindia
website: sarolpoth.blogspot.com
0 Comments