❑জ্বীন কি
মানুষকে আছর করে?(ভর করে)
এর উত্তর হল,অবশ্যই জ্বীন মানুষকে আছর করতে পারে। স্পর্শ দ্বারা পাগল করতে পারে। মানুষের
উপর ভর করতে পারে। তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তার জীবনের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম
ব্যাহত করতে পারে।
এটা বিশ্বাস করতে হয়। তবে এ
বিষয়টি কেহ অবিশ্বাস করলে তাকে কাফের বলা যাবে না। সে ভুল করেছে, এটা বলা হবে।
❑সাহর:
❑মানুষের ওপর
জ্বীন ভর করাকে সাহর বলা হয়। এটি এমন একটি অবস্থা যখন মানুষের নিজের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং সাময়িক স্মৃতি বিভ্রম ঘটে। একে আসর করাও বলে।
কুরআনে বলা হয়েছে,
❑“যারা সুদ
খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান
আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়।” (সূরা বাক্বারা, ২৭৫)
এ আয়াত দ্বারা যে সকল বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝা যায়: এক, যারা সুদ
খায় তাদের শাস্তির ধরণ সম্পর্কে ধারণা। দুই. শয়তান বা জ্বীন মানুষকে
স্পর্শ দ্বারা পাগলের মত করতে পারে। তিন, মানুষের
উপর শয়তান বা জ্বীনের স্পর্শ একটি সত্য বিষয়। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
চার, জ্বীন-শয়তানের এ স্পর্শ দ্বারা মানুষ যেমন আধ্যাত্নিক দিক দিয়ে
ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি শারীরিক দিক দিয়েও অস্বাভাবিক হয়ে যায়।
❑নিশ্চয় যারা তাকওয়া অবলম্বন
করেছে যখন তাদেরকে শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা স্পর্শ করে তখন তারা আল্লাহকে
স্মরণ করে। তখনই তাদের দৃষ্টি খুলে যায়। (সূরা আল আরাফ:
২০১)
❑এ আয়াত থেকে যা
বুঝে আসে তা হল:
এক, যারা মুত্তাকী বা আল্লাহ ভীরু তাদেরকেও জ্বীন বা শয়তান স্পর্শ করতে
পারে। তারা মুত্তাকী হয়েও জ্বীন বা শয়তানের আছরে নিপতিত হতে পারে।
দুই, যারা মুত্তাকী তাদের শয়তান বা জ্বীন স্পর্শ করলে তারা আল্লাহ-কেই
স্মরণ করে। অন্য কোন কিছুর দ্বারস্থ হয় না।
তিন. মুত্তাকীগণ জ্বীন বা শয়তান দ্বারা স্পর্শ হয়ে
আল্লাহকে স্মরণ করলে তাদের সত্যিকার দৃষ্টি খুলে যায়। (সূরা আল আরাফ: ২০০)
❑আয়েশা(রাঃ)
থেকে বর্ণিত রাসুল(সঃ) বলেছেন,
“শয়তান আদম সন্তানের শরীরে প্রবাহিত
হয়, যেমন রক্ত শরীরে প্রবাহিত।” (বুখারী, ৩৩/২৫১। মুসলিম, ২১৭৫)।
❑ইমাম আহমদের ছেলে আব্দুল্লাহ
থেকে বর্ণিত, “আমি আমার বাবা(ইমাম আহমাদ) কে বললাম-কিছু
মানুষ মানুষের শরীরে জ্বীনের ভর করাকে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন- ও আমার সন্তান,
তারা মিথ্যা বলছে। আসর করা অবস্থায় অসুস্থ লোকের মুখ দিয়ে
জ্বীন কথাও বলতে পারে।” (মাজমু ফতোয়া-
ইবনে তাইমিয়াহ ১৯/১২)
❑আয়েশা(রাঃ) থেকে বর্ণিত: গত রাতে একটি শক্তিশালী জ্বীন আমার
উপর চড়াও হতে চেয়েছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল আমার নামাজ নষ্ট করা। আল্লাহ তার
বিরুদ্ধে আমাকে শক্তি দিলেন। (বর্ণনায়:
বুখারী, সালাত অধ্যায়)
❑ইমাম ইবনে হাজার
আসকালানী(রহঃ) এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আয়েশা(রাঃ) থেকে বর্ণিত নাসায়ীর বর্ণনায় আরো এসেছে যে,রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন, আমি তাকে ধরে ফেললাম। আছাড় দিলাম ও
গলা চেপে ধরলাম। এমনকি তার জিহবার আদ্রতা আমার হাতে অনুভব করলাম।
❑অন্য হাদিসে উল্লেখ করা
হয়েছে, রাসুল(সঃ) একবার একটি অসুস্থ বালকের
সাক্ষাত পেয়েছিলেন যার ওপর জ্বীনের ভর ছিল। রাসুল(সঃ) ছেলেটির দিকে ফিরে জোরে
বলেন-“ও আল্লাহর শত্রু, বের হয়ে আসো। ও আল্লাহর শত্রু,
বের হয়ে আসো। ছেলেটি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।” (ইবনে মাজাহ, ৩৫৪৮। আহমদ ৪/১৭১, ১৭২)।
❑ the author
&editor: rasikulindiawebsite: sarolpoth.blogspot.com
0 Comments