বরং আলিমদের উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই ইল্ম উঠিয়ে নেবেন। বুখারিঃ ১০০
হাদীসঃ ’উমার ইবনু
আবদুল ’আযীয (রহ.) আবূ বকর ইবনু হাযম (রহ.)-এর নিকট এক চিঠিতে লিখেনঃ অনুসন্ধান কর,
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যে হাদীস পাও তা লিপিবদ্ধ করে নাও।
আমি
ধর্মীয় জ্ঞান লোপ পাওয়ার এবং আলিমদের বিদায় নেয়ার ভয় করছি এবং জেনে রাখ, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাদীস ব্যতীত অন্য কিছুই গ্রহণ করা হবে না
এবং
প্রত্যেকের উচিত ধর্মীয় জ্ঞানের প্রচার-প্রসার ঘটানো আর তারা যেন একসাথে বসে (ধর্মীয়
জ্ঞানের চর্চা করে), যাতে যে না জানে সে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। কারণ জ্ঞান গোপন না
হওয়া পর্যন্ত বিলুপ্ত হবে না।
হাদীসঃ ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস (রাযি.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অন্তর থেকে ’’ইল্ম উঠিয়ে নেন না, কিন্তু দ্বীনের আলিমদের উঠিয়ে নেয়ার ভয় করি।
যখন কোন আলিম অবশিষ্ট থাকবে না তখন লোকেরা মূর্খদেরকেই
নেতা বানিয়ে নিবে। তাদের জিজ্ঞেস করা হলে না জানলেও ফাতাওয়া প্রদান করবে। ফলে তারা
নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে, এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবে।
আল্লাহ তা‘আলা মানুষদের থেকে জোর করে ইলম ছিনিয়ে নেবেন না; বরং আলিমদের
উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই ইলম উঠিয়ে নেবেন।
(সহীহ
বুখারী হা/১০০ মুসলিম হা/২৬৭৩)
এই হাদীসের আলোকে ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ)
বলেনঃ বর্তমানে দ্বীনী ইল্ম কমে গেছে। অল্প
সংখ্যক মানুষের মাঝেই ইলম চর্চা সীমিত হয়ে গেছে।
সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে ইলমের আরো কমতি
হবে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর বাণী সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হবে।
ইমাম যাহাবীর যামানায় যদি এই অবস্থা হয়ে থাকে
তাহলে বর্তমানকালের অবস্থা কেমন হতে পারে?
(৭৩০৭; মুসলিম ৪৭/৪, হাঃ ২৬৭৩, আহমাদ ৬৫২১) (আধুনিক
প্রকাশনীঃ ৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০১)
আবদুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (إن الله لا يقبض العلم) আল্লাহ
তা‘আলা মানুষদের অন্তর থেকে ইলম উঠিয়ে নেবেন না।
এখানে ইলম দ্বারা বুঝানো হয়েছে কুরআন ও সুন্নাহ
এবং এ দুটি সম্পর্কিত জ্ঞান। (انتزاعاً ينتزعه من الناس) অর্থাৎ আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে
ইলম উঠিয়ে নেবেন না। অর্থাৎ মানুষের মধ্য থেকে ইলম আসমানে উঠিয়ে নিবেন না।
বরং তিনি ইলম উঠিয়ে নিবেন আলিমদের
উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই। অর্থাৎ আলিমদের মৃত্যু ও তাদের আত্মা উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে
ইলম উঠিয়ে নিবেন।
এমনকি যখন কোন আলিমকে আল্লাহ অবশিষ্ট রাখবেন না,
তখন লোকেরা জাহিলদেরকেই নেতা, প্রতিনিধি, বিচারক, মুফতি, ইমাম ও শাইখ হিসেবে গ্রহণ
করবে। (جهالاً) শব্দটি (جاهل) এর বহুবচন।
অতঃপর তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তখন তারা না
জেনেই ফাতওয়া দিবে ও বিচার কার্য পরিচালনা করবে।
ফলে তারা নিজেরা গোমরাহ হবে, অর্থাৎ তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হবে। আর অপরকেও গোমরাহ করবে। ফলে জাহিলকে লোকেরা আলিম মনে করবে।
দেখুন,
মিরকাতুল মাফাতীহ, (১/৪৬০); শরহে রিয়াদুস সালিহীন, (৫/৪৫২)
rasikul islam
0 Comments