রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব:
**জুলুম করে জায়গা-জমি এবং অন্যান্য কিছু জোরপূর্বক দখল করা হারাম।
[সহীহ
মুসলিম ৪০২৪-(১৩৭/১৬১০)]
রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করা
প্রত্যেক মুমিনের ঈমানী দায়িত্ব। কেননা এটি পবিত্র আমানত। প্রতিটি নাগরিকের এ আমানত
রক্ষা করা উচিৎ। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
❏‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত(১) তার হকদারকে ফিরিয়ে দিতে।(২) তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে(৩)। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন তা কত উৎকৃষ্ট(৪)! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্ৰষ্টা।(৫)
﴿۞ إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَىٰ أَهْلِهَا وَإِذَا حَكَمْتُم بَيْنَ النَّاسِ أَن تَحْكُمُوا بِالْعَدْلِ ۚ إِنَّ اللَّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُم بِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا﴾
(সুরা নিসা- ৫৮)
❏রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “লা ঈমানা, লিমান লা আমানাতা লা।’’ অর্থাৎ-
‘যার আমানতদারী নেই, তার ঈমান নেই’।
(মুসনাদে
আহমদ বায়হাকি,
মিশকাত, পৃষ্ঠা : ১৫)
❏রাষ্ট্রের
উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য, রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব
সম্পর্কে প্রিয় নবী সা: বলেন, ‘তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল। প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্ব
সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
(সহীহ
বুখারী-সহীহ বুখারী-৬৬৫৩, ৭১৩৮)
❏রাষ্ট্রীয়
গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, পাহাড়, মাটি, বন, বালি, আরো যে কোন সম্পদ যথাযথ ব্যবহার না করলে,
রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয় হবে। অপচয়কারী শয়তানের ভাই।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
‘নিশ্চয় অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই’।
(বনী
ঈসরাইল- ২৭)
ü আমাদের দেশে রয়েছে অনেক সরকারি
খাস জমিন, যা রাষ্ট্রীয় সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। সেখানে অবৈধ স্থাপনা, বাড়ি, ব্যবসার প্রতিষ্ঠান
বানানো, পাহাড় কাটা, বন উজাড় করা, নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের শামিল।
❏আয়েশা
(রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’যে ব্যক্তি
কারো জমি এক বিঘত পরিমাণ অন্যায়ভাবে দখল ক’রে নেবে, (কিয়ামতের দিন) সাত তবক (স্তর)
যমীনকে (বেড়িস্বরূপ) তার গলায় লটকে দেওয়া হবে।’’
[(বুখারী ২৪৫৩,৩১৯৫, মুসলিম ৪২২২, ৪০২৪-৩০(১৩৭/১৬১০) ,৩৯৮৭,৩৯৮৬]
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
·
১। প্রকৃত ইসলাম ধর্ম সমস্ত প্রকারের অধিকার
ও সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য সুব্যবস্থা নেওয়ার প্রতি আহ্বান জানায়। এবং বলপূর্বক পদ্ধতিতে
অন্য লোকের ভূমি ও সম্পত্তি দখল করা কঠোরভাবে হারাম ঘোষণা করে।
·
২। এই হাদীসটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যে ব্যক্তি
কোনো জমির মালিক হবে, সে ব্যক্তি জমির ভিতরে বা নীচে যা কিছু বস্তু থাকবে তারও সে মালিক
হবে। সুতরাং জমির ভিতরে বা নীচে যে সমস্ত পাথর, ভবন এবং মূল্যবান ধাতু প্রভৃতি থাকবে, সে সমস্ত জিনিসের
প্রকৃত মালিক হবে সেই ব্যাক্তি, যে ব্যক্তি হবে জমির মালিক। এবং জমির মালিক তার জমি
খনন করে তার ইচ্ছা মত জমির নীচে যেতে পারবে, যদি তাতে তার প্রতিবেশীর ক্ষতি না হয়।
·
৩। মুসলিম ব্যক্তির প্রতি প্রকৃত ইসলাম ধর্মের
শিক্ষা মেনে চলা অপরিহার্য। তাই তার জন্য অন্য কোনো লোকের সম্পত্তি চুরি করে বা বলপ্রয়োগ
করে অথবা জালিয়াতি করে কিংবা প্রতারণা করে অথবা ঘুষ দিয়ে নেওয়া জায়েজ নয়।
·
৪। এই হাদীসটির সারাংশ হলো এই যে, যে ব্যক্তি
কোনো ব্যক্তির জমির কোনো অংশ জুলুম জবরদস্তি করে দাবিয়ে নিবে, তাকে পরকালে কেয়ামতের
দিন দায়িত্ব দেওয়া হবে যে, সে যেন জমির ওই অংশটি পুনরুত্থিত হওয়ার স্থানে হাশরের ময়দানে
বহন করে নিয়ে যায়, যে অংশটি সে দুনিয়াতে অন্য লোকের কাছ থেকে জুলুম জবরদস্তি করে দাবিয়ে
নিবে। তাই উক্ত জমির অংশটি তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে গলা বন্ধের ফিতা বা দড়ির মত।
সুতরাং এখানে এটাও বলা যেতে পারে যে, উক্ত জমির অংশটি তার গলায় তাকে ঝুলিয়ে রাখার দায়িত্ব
দেওয়া হবে কিন্তু সে তা করতে পারবে না।
·
অতএব তাকে এই দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে মহা শাস্তি
প্রদান করা হবে। আর এটাও অর্থ হতে পারে যে, কোনো ব্যক্তির জমির কোনো অংশ জুলুম জবরদস্তি
করে যে ব্যক্তি দাবিয়ে নিবে, তার গলায় তার পাপকে দড়ির মত করে ঝুলিয়ে রাখা হবে। সুতরাং
তার পাপ তার গলায় ঝুলতে থাকবে। আবার এটাও অর্থ
বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি কোনো জমির অংশ জুলুম
জবরদস্তি করে দাবিয়ে নিবে, সেই জমিসহ তাকে ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে, এবং সেই জমি তার
গলায় হারের মত হয়ে থাকবে। এবং তার গলাকে এতই লম্বা চওড়া করা হবে যে, সেই জমি যেন তার
গলায় সঠিকভাবে স্থাপিত হয়ে যায়।
❏রাষ্ট্রীয় বা দেশীও সম্পদ আত্মসাৎ করা কবিরা গোনাহ। এর ফলে কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। মহান রাব্বুল আলামীন বলেন, ‘যারা আত্মসাৎ করে, তারা কিয়ামতের দিন আত্মসাৎকৃত সম্পদসহ উপস্থিত হবে। আর প্রত্যেকে তার উপার্জিনের ফল ভোগ করবে’।
সূরা
আলে ইমরানের (৩:১৬১), সহীহঃ সহীহাহ (২৭৮৮)।সুনান আত তিরমিজী ৩০০৯]
❏উমার ইবনে খাত্ত্বাব (রাঃ)
বলেন, যখন খাইবারের যুদ্ধ হল, তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিছু সাহাবী
এসে বললেন, অমুক অমুক শহীদ হয়েছে। অতঃপর তাঁরা একটি লোকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন এবং
বললেন, অমুক শহীদ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’কখনোই না। সে (গনীমতের)
মাল থেকে একটি চাদর অথবা আংরাখা (বুকখোলা লম্বা ও ঢিলা জামা) চুরি করেছিল, সে জন্য
আমি তাকে জাহান্নামে দেখলাম।
(মুসলিম ৩২৩)হাদীস
সম্ভার ২২৪৯
❏দুর্নীতি,
অন্যায়-অত্যাচার করা হারাম এবং অন্যায়ভাবে নেওয়া জিনিস ফেরৎ দেওয়া জরুরী।
(বুখারী ২৪৫৩, ৩১৯৫,
মুসলিম ৪২২২)
❏য়্যা’লা
বিন মুর্রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি অর্ধহাত পরিমাণও জমি জবর-দখল (আত্মসাৎ) করবে, সে ব্যক্তিকে
আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন ঐ জমির সাত তবক পর্যন্ত খুঁড়তে আদেশ করবেন। অতঃপর তা তার
গলায় বেড়িস্বরূপ ঝুলিয়ে দেওয়া হবে; যতক্ষণ পর্যন্ত না সমস্ত লোকেদের বিচার-নিষ্পত্তি
শেষ হয়েছে (ততক্ষণ পর্যন্ত ঐ সাত তবক আধ হাত জমি তার গলায় লটকানো থাকবে)!
(বুখারী ২৪৫৩, আহমাদ
১৭৫৭১, ত্বাবারানীর কাবীর ১৮১৪৬, ইবনে হিব্বান ৫১৪২, সহীহুল জামে’ ২৭২২)
❏রাসূল
সা. বলেন, আল্লাহর কসম! যারা রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা করবেনা, আমানতের খেয়ানত করবে, কিয়ামতের
দিন তারা উট কাঁধে নিয়ে উঠবে। সে চিৎকার করে আমার কাছে সাহায্য চাইবে, কিন্তু সে দিন
আমি তার কোনো সাহায্য করবো না।
আলোচ্য কুরান ও হাদিস দ্বারা
প্রমাণিত হয় যে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করা মুমিনের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য। এটি একটি
বিশাল আমানত।
_আলী (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর, যে নিজ পিতামাতাকে
অভিসম্পাত করে, আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর, যে গায়রুল্লাহর উদ্দেশ্যে যবেহ
করে, আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর, যে কোন দুষ্কৃতকারী বা বিদআতীকে আশ্রয় দেয়
এবং আল্লাহর অভিসম্পাত সেই ব্যক্তির উপর, যে ভূমির (জমি-জায়গার) সীমা-চিহ্ন পরিবর্তন
করে।
(মুসলিম ৫২৩৯)
❏আবূ
যার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে
ব্যক্তি সেই জিনিস দাবী করে, যে জিনিস তার নয়, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয় এবং সে
যেন নিজের ঠিকানা দোযখে বানিয়ে নেয়।
[(মুসলিম ২২৬), হাদীস
সম্ভার ২২৬২]
❏আবূ
সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের
দিনে প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের পাছায় একটা পতাকা থাকবে, যাকে তার বিশ্বাসঘাতকতা অনুপাতে
উঁচু করা হবে। জেনে রেখো! রাষ্ট্রনায়ক (বিশ্বাসঘাতক হলে তার) চেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক আর
অন্য কেউ হতে পারে না।
(মুসলিম
৪৬৩৫)
❏জাবের
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা অত্যাচার
করা থেকে বাঁচো, কেননা অত্যাচার কিয়ামতের দিন অন্ধকার স্বরূপ। (অর্থাৎ, অত্যাচারী সেদিন
আলো পাবে না)। আর তোমরা কৃপণতা থেকে দূরে থাকো। কেননা, কৃপণতা পূর্ববর্তী লোকেদেরকে
ধ্বংস করেছে। এ কৃপণতা তাদেরকে নিজেদের রক্তপাত করার এবং হারামকে হালাল জানার প্রতি
উদ্বুদ্ধ করেছে।
(মুসলিম ৬৭৪১)
❏আবূ
হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের
দিন প্রত্যেক হকদারের হক অবশ্যই আদায় করা হবে। এমন কি শিংবিহীন ছাগলকে শিংযুক্ত ছাগলের
নিকট থেকে বদলা দেওয়া হবে।
[(রিয়াদুস সালেহীন ২/২০৯ ২০৪; মুসলিম ৬৭৪৫,
৬৪৭৪-(৬০/২৫৮২)
তিরমিযী ২৪২০, আহমাদ ৭১৬৩, ৭৯৩৬, ৮০৮৯, ৮৬৩০)]
❏আবূ মূসা (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা অত্যাচারীকে অবকাশ দেন।
অতঃপর যখন তিনি তাকে পাকড়াও করেন, তখন তাকে ছাড়েন না। তারপর তিনি এই আয়াত পড়লেন, যার
অর্থ, তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও এরূপই হয়ে থাকে। যখন তিনি অত্যাচারী জনপদকে পাকড়াও
করে থাকেন। নিশ্চয়ই তাঁর পাকড়াও কঠিন যন্ত্রণাদায়ক।
(সূরা হূদ ১০২, সহীহ
বুখারী ৪৬৮৬, মুসলিম ৬৭৪৬, তিরমিযী ৩১১০)
❏অন্যের জমি দখল করা হারাম
:
ü
অন্যের
জমি জবরদখল করা ঘৃণিত অপরাধ। দেখা যায়, ক্ষমতার জোরে মানুষকে মাথা গোঁজার ঠাঁই বসতভিটা
থেকেও উচ্ছেদ করা হয়। অনেকে ভাই-বোনের জমি আত্মসাৎ করে। চাচা-জ্যাঠা এতিম ভাতিজা-ভাতিজির
জমি নিজ কব্জায় নিয়ে নেন। ইসলামের চোখে এসব চরম অন্যায়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি
অন্যায্যভাবে এক বিঘত জমিও আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন সেই জমিসহ সপ্ত জমিনের নিচে
তাকে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে।’
(সহীহ বুখারী: ২৪৫৪,
৩১৯৬)
❏শাসক কর্তৃক জনগণের অধিকার
নষ্ট করার শাস্তি :
ü
শাসকগোষ্ঠী
কখনো কখনো অন্যের অধিকার হরণ করার মতো ঘৃণ্য কাজ করে। অথচ বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘হে লোক সব! নিশ্চয়ই তোমাদের সৃষ্টিকর্তা এক এবং তোমাদের পিতাও
এক। তোমরা সবাই আদম থেকে আর আদম মাটি থেকে। আল্লাহর কাছে সে-ই সম্মানিত যে বেশি মুত্তাকি।
তাকওয়া ছাড়া আরবদের অনারবদের ওপর কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।’
(হুকুকুল ইনসান ফিল
ইসলাম : ৮)
§
❏ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকেই এক একজন রক্ষক এবং
তোমরা প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। আমীর রক্ষক, একজন ব্যক্তি
তার পরিবারের লোকদের রক্ষক, একজন নারী তার স্বামীর গৃহের ও সন্তানদের রক্ষক। এ ব্যাপারে
তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক, আর তোমাদের প্রত্যেককেই নিজ নিজ অধীনস্থ লোকদের
রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
(সহীহ বুখারী ৫২০০,
৮৯৩, ৪৮২১)
❏শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় নবীজির নির্দেশ :
ü
আধুনিক
এই দুনিয়ায়ও শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত হতে দেখা যায়। কল-কারখানার শ্রমিক থেকে বাসাবাড়ির
কাজের লোক, সর্বত্রই এরা অধিকার বঞ্চিত। শক্তিশালী কর্তৃক দুর্বলদের প্রতি জুলুম এক
নির্মম বাস্তবতা। নবীজি শ্রমিকের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন। শ্রমের ন্যায্যমূল্য
দিতে আদেশ করেছেন। ‘শ্রমিকের শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি পরিশোধ করার নির্দেশ
দিয়েছেন।’
(বায়হাকি, শুয়াবুল
ইমান, হাদিস : ১১৯৮৮)
❏ভাই কর্তৃক বোনের অধিকারে হস্তক্ষেপ :
ü
কিছু
মানুষ এত নিচু ও ইতর শ্রেণির, যারা বাটপারি ও চাতুরতায় নিজ বোনকেও রেহাই দেয় না। বোনকে
অধিকার বঞ্চিত করতে এরা কুণ্ঠিত ও শঙ্কিত হয় না। শরিয়ত প্রদত্ত ন্যায্য অধিকার থেকে
তারা বোনদের মাহরুম রাখে। এর মাধ্যমে তারা দুটি অপরাধে সংঘটিত হয়। আত্মীয়তার সম্পর্ক
ছিন্ন হয়। আর নবীজি বলেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না।’
(মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৬)
❏স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে অধিকার বঞ্চিত করা :
ü
স্ত্রী
স্বামীর অর্ধাঙ্গী। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কিছু অধিকার রয়েছে। স্বামীর কর্তব্য সেগুলো
পূরণ করা। স্ত্রীকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না করা। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
‘আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের ওপর অধিকার আছে, তেমনি স্ত্রীদেরও স্বামীদের ওপর ন্যায়সংগত
অধিকার আছে।’
(সুরা : বাকারাহ,
আয়াত : ২২৮)
ü
নবীজি
বিদায় হজের ভাষণে বলেছিলেন, ‘নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তোমরা তাদের
আল্লাহর আমানতস্বরূপ গ্রহণ করেছো। আর আল্লাহর নামেই তাদের নিজেদের জন্য বৈধ করেছ।’
(তিরমিজি, হাদিস
: ১১৬৩, ইবনু মাজাহ ১৮৫১)
❏প্রতিবেশীর অধিকারে হস্তক্ষেপ করা :
ü
ইসলাম
প্রতিবেশীর অধিকারের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছে। প্রত্যেক মুসলিমের উচিত প্রতিবেশীর
অধিকারের প্রতি খেয়াল রাখা। কোনোভাবে যেন তাদের অধিকার খর্ব না হয়- সেটা নিশ্চিত করা।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে
জ্বালাতন না করে।’
(বুখারি, হাদিস
: ৬০১৮)
❏লোভী ব্যক্তি
সম্পদ অর্জন করে ক্রয় করে :
ü
মানসিক
অশান্তি, ব্যস্ত হৃদয়,পরকালের কঠিন হিসাব। আর একজন কৃতজ্ঞ দরিদ্র ব্যক্তি ক্রয় করে
: আত্মিক প্রশান্তি, হতাশামুক্ত অন্তর,পরকালের সহজ হিসাব। লোভের নিন্দায় অসংখ্য হাদিস
বিবৃত হয়েছে। যার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত,প্রিয়নবী
(সা.) ইরশাদ করেন, যদি আদম সন্তানের জন্য স্বর্ণ ভরা একটা উপত্যকা' থাকে, তবুও সে তার
জন্য দু'টি উপত্যকা কামনা করবে। তার মুখ মাটি ব্যতীত অন্য কিছুতেই ভরবে না। তবে যে
ব্যক্তি তওবা করবে, আল্লাহ তার তাওবা কবুল করবেন।
(সহিহ
বুখারি : ৬৪৩৯)।
❏মানুষ বৃদ্ধ হওয়ার সাথে
সাথে তার পাপরাশিগুলো কমে যায়;
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আদম সন্তান বৃদ্ধ হয়ে যায়; কিন্তু দুটি
ব্যাপারে যুবকই থাকেঃ বেঁচে থাকার লোভ এবং সম্পদের মোহ।
(জামে তিরমিজি :
২৩৩৯)।
লোভ বহুপাপের জনক। এ লোভের কারণেই মানুষ এতিমের সম্পদ
আত্মসাৎ করে।বোনদের প্রাপ্য অংশ মেরে খায়। প্রতিপক্ষকে খুন করে ক্ষমতা দখল করে। এ লোভ
কতটা ভয়ংকর, সে বিষয়টি প্রিয়নবি (সা.) একটি হাদিসে দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝিয়েছেন,
❏কাব ইবনু মালিক আল-আনসারী
(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘকে ছাগলের পালে ছেড়ে দেয়া হলে পরে তা যতটুকু না ক্ষতিসাধন
করে, কারো সম্পদ ও প্রতিপত্তির লোভ এর চেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করে তার ধর্মের।
[(জামে তিরমিজি
: ২৩৭৬), সহীহ, রাওযুন নায়ীর
(৫-৭)।]।
এ লোভের কারণে পূর্ববর্তী উম্মত ধ্বংস হয়েছিলো। রাসূলুল্লাহ
(সা.) ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের ব্যাপারে দারিদ্রের ভয় করি না। কিন্তু তোমাদের ব্যাপারে
এ আশঙ্কা করি যে, তোমাদের উপর দুনিয়া এরূপ প্রসারিত হয়ে পড়বে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের
উপর প্রসারিত হয়েছিলো।
আর তোমরা ও দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে, যেমন তারা
আকৃষ্ট হয়েছিলো। আর তা তোমাদের বিনাশ করবে, যেমন তাদের বিনাশ করেছে।’
[(সহিহ বুখারি :
৩১৫৮) (মুসলিম ৫৩ হাঃ ২৯৬১,
আহমাদ ১৭২৩৪)]।
❏লোভ-লালসা মানুষের হীনতম একটি বৈশিষ্ট। ভাই-বোনের মাঝে ধন-সম্পদ নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ, আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ, পাড়া-পড়শীদের সঙ্গে মামলা-মকদ্দমা ইত্যাদি। এ-সবকিছু লোভেরই ফসল। ধারণ ক্ষমতার বাইরে মানুষ কিছু খেতে পারে না, করতে পারে না। এসব জানা সত্ত্বেও মানুষ অতিরিক্ত পাওয়ার নেশায় কত রকম ধান্দার পেছনে যে জীবন নষ্ট করে দেয়, তা আমাদের চারপাশের মানুষকে দেখলেই বুঝা যায়। যার কপালে যতটুকু লেখা আছে,ততটুকু তার কাছে আসবেই।এর জন্য অযথা লোভ করতে হবে না। জড়াতে হবে না তাকে নানারকম অপকর্মে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
পবিত্র কুরআনে বারবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আমানত
রক্ষার জন্য। সরকারি সম্পদ জনগণ ও দায়িত্বশীলদের কাছে আমানত
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের
নির্দেশ দিচ্ছেন, তোমরা আমানতকে তার মালিকের কাছে প্রত্যর্পণ করো বা ফেরত দাও।’
(সূরা আন-নিসা-৫৮)
কুরআনের আয়াত ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ
রক্ষা করা মুমিনের ঈমানি দায়িত্ব ও কর্তব্য। এটি একটি বিশাল আমানত।
❏দেশের প্রতি মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য :
❏১. দেশকে ভালোবাসা: মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা
মুমিনের বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর সব নবী-রাসূল মাতৃভূমিকে ভালোবাসতেন। সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন
প্রিয়নবী সা:। এ জন্য মহান আল্লাহ তাঁকে মাতৃভূমি মক্কায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেন।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই যিনি আপনার জন্য
কুরআনকে বিধান করেছেন তিনি আপনাকে অবশ্যই জন্মভূমিতে ফিরিয়ে আনবেন।’
(সূরা কাসাস-৮৫)
❏২.দেশের কল্যাণ কামনা করা :
মুমিন সবসময় দেশের কল্যাণ চায়। সে কখনো দেশের অকল্যাণ চায় না। আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীম বলেছিলেন, হে আমার রব! এটাকে নিরাপদ শহর করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনে(১) তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান করুন। তিনি (আল্লাহ) বললেন, যে কুফরী করবে তাকেও কিছু কালের জন্য জীবনোপভোগ করতে দিব, তারপর তাকে আগুনের শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করব। আর তা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল!
(সূরা
বাকারা-১২৬)
❏৩. শান্তি-শৃঙ্খলা
রক্ষা করা :
মুমিনের দায়িত্ব সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজ না করা। মহান আল্লাহ বলেন- আর যমীনে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা সেখানে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না(১) আর আল্লাহ্কে ভয় ও আশার সাথে ডাক(২) নিশ্চয় আল্লাহর অনুগ্রহ মুহসিনদের খুব নিকটে।(৩)
(সূরা আরাফ-৫৬)
❏৪. নিরাপত্তা
নিশ্চিত করা :
দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত
করার দায়িত্ব প্রধানত রাষ্ট্রের।
তবে যেহেতু মানুষই অপরাধ কর্মের অনুঘটক, তাই ইসলাম মানুষকে অন্যের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নষ্ট হয় এমন সব কিছু থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের ধন অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনেশুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারকগণকে ঘুষ দিও না।
(সূরা বাকারা-১৮৮)
❏রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘নিশ্চয়ই
তোমাদের জীবন, সম্পদ ও সম্ভ্রম পরস্পরের জন্য নিষিদ্ধ।’
(বুখারি-১০৫)
❏৫. মানবিক
সমাজ গঠন করা :
ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্কে যদিও এক মুমিন অপর মুমিনকে প্রাধান্য দেবে; কিন্তু মুসলমান ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সবার জন্য মানবিক মর্যাদা ও সাম্য নিশ্চিত করবে। কেননা সব মানুষই আদম আ:-এর সন্তান এবং আল্লাহ সবাইকে সম্মানিত করেছেন।
আল্লাহ্ বলেন, নিশ্চয় আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।
﴿۞ وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا﴾
(সূরা
বনি ইসরাইল-৭০)
❏৬. দেশের
উন্নয়নে কাজ করা :
দেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব
হলো দেশ ও জাতির উন্নয়নে সচেষ্ট হওয়া। কেননা, জাতির উন্নয়নের চাবিকাঠি আল্লাহ তার হাতেই
দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন- ‘আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ
না তারা নিজ অবস্থা নিজে পরিবর্তন করে।’
﴿لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِّن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ ۗ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُ ۚ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَالٍ﴾
(সূরা
রাদ-১১)
❏৭. পরিবেশ
রক্ষা করা :
আধুনিক পৃথিবীতে পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। বিজ্ঞানীদের মতে, এর ওপর নির্ভর করছে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ। ইসলাম প্রতিটি নাগরিককে
পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হতে বলে। এ জন্য ইসলাম অনর্থক বৃক্ষ নিধন, পশু-পাখি হত্যা, জলাধার
নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে। বিপরীতে পরিবেশের উন্নয়ন হয় এমন কাজে উৎসাহিত করেছে।
যেমন- বৃক্ষ রোপণ।
*নবী সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি
কোনো বৃক্ষ রোপণ করে, আল্লাহ এর বিনিময়ে তাকে ওই বৃক্ষের ফলের সমান প্রতিদান দেবেন।’
(মুসনাদে
আহমদ- ১২৪৯৭, ২৩৫৬৭, সহীহ বুখারী ২৩২০ (৬০১২, মুসলিম ২২/২, হাঃ ১৫৫৩, আহমাদ)
❏৮. জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা :
জাতীয় সম্পদ রক্ষায় প্রতিটি
মুমিনকে সচেষ্ট হতে হবে। যেমন ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহ: রাষ্ট্রীয় কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে
সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অর্থে জ্বালানো প্রদীপ নিভিয়ে দিতেন। বলতেন, ‘আমি মুসলমানের সেবায়
নিয়োজিত ছিলাম, তাই তাদের সম্পদ দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়েছিলাম। এখন তুমি আমার অবস্থা জানতে
চেয়েছ, তাই আমি আমার ব্যক্তিগত অর্থে প্রদীপ জ্বালালাম।
(আল
ইকতিসাদুল ইসলামী-২৫৬)
❏৯. ঐক্যবদ্ধ
থাকা :
সুনাগরিক হিসেবে মুসলমানের
দায়িত্ব হলো আল্লাহর নিদের্শনার ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকা। কেননা,
অনৈক্য জাতিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘তোমরা সবাই আল্লাহর
রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধরো এবং পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হইও না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ
স্মরণ করো, তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু এবং তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেছেন,
ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে। তোমরা তো অগ্নিকু-ের প্রান্তে ছিলে,
আল্লাহ তা থেকে তোমাদের রক্ষা করেছেন।’
(সূরা
আলে ইমরান-১০৩)
❏১০. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব
রক্ষা করা
:
মুমিন দেশকে ভালোবাসে। তাই দেশের স্বাধীনতা-সাবভৌমত্ব
রক্ষায় সে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকে।
ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘জাহান্নামের
আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না। আল্লাহর ভয়ে যে চোখ কান্না করে এবং আল্লাহর রাস্তায়
যে চোখ (নিরাপত্তার জন্য) পাহারা দিয়ে নিদ্রাহীন রাত পার করে।’
[সহীহ, মিশকাত (৩৮২৯), তা’লীকুর রাগীব (২/১৫৩)
, (সুনানে তিরমিজি-১৬৩৯), সহীহ আল জামি‘
৪১১৩, সহীহ আত্ তারগীব ১২২৯।]
0 Comments