তথাকথিত মুফতি আমির হামজা সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয়......

#তথাকথিত_মুফতি_আমির_হামজা_সম্পর্কে_কিছু_কথা_না_বললেই_নয়...... 

সুরেলা কণ্ঠ আর মনোমুগ্ধকর/রোমান্টিক কিছু ওয়াজ করে রাতারাতি জনপ্রিয়তা লাভ করেন মুফতি আমির হামজা নামের এক দেশি বক্তা! কখনো কখনো পরিমনি/কখনো পির-খানকা/কখনো মমতাজ/কখনো যাকির নায়েক আবার কখনো আবেগী কিচ্ছা কাহিনী দিয়ে তিনি সরলমনা ভাই -বোনদের দৃস্টি কেড়েছিলেন!
অল্প দিনের মধ্যে কিছু অতিউৎসাহী আবেগী পোলাপাইন তাকে প্রমট করা শুরু করে, যাদের অধিকাংশ ই মুলত নিউ সালাফি/আহলে হাদিস!
ইউটিউব এ একের পর এক শিরোনাম আসে -
♣বাংলার যাকির নায়েক
♣যুগশ্রেস্ট বক্তা হেনতেন etc

মাঝেমাঝে তার মাহফিল গুলোতে শুনা যায়-
♥ বিদাতি জিকির
♥বিদাতি মুনাজাত
♥ পিরের হাতে বায়াত হওয়ার ভুয়া স্লোগান!
♥জাল জইফ হাদিসের সমাহার।etc

এরপর আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসে এই চুপা রুস্তমের মানহাজ!
একটি মাহফিলে সরাসরি বলে ফেলেন" বাংলাদেশে একমাত্র ইসলামী দল ই হল জামাত"
অকপটে শিকার করেন শিবিরের সাথে সম্পকের বিষয়টি! তখন ই আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়ে যায় এই চরমপন্থি ইখুয়ানি বক্তার মানহাজ!
আজ ইমাম আল-আউযায়ী (মৃত্যু-১৫৮ হিজরী) রহিমাহুল্লাহ বিখ্যাত সেই কথাটি মনে পড়ে গেল! তিনি বলতেন “যে ব্যক্তি আমাদের কাছে তার বিদআ’তকে লুকিয়ে রাখে, সে কখনো আমাদের কাছে তার সংগীদেরকে লুকিয়ে রাখতে পারবেনা।” আল-ইবানাহঃ ২/৪৭৬।

একের পর এক আজগুবি ফতওয়া দেওয়া শুরু করেন দেদ্বারছে...
♥ ইসলামে রাজতন্ত্র হারাম!
♥রাজতন্ত্রের বিরুদ্বে হোসাইন রাহ: যুদ্ধ করেছিলেন!
♥বাংলাদেশে কোরআনের একটি আয়াত ও কায়েম নাই!
♥যারা শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহযোগীতা করবে না তারা জাহান্নামি!

এসব বক্তব্য শুনার পর এই নব্য ইখুয়ানি সম্পকে গোপনে অনেক ভাইকে সতর্ক করার পর উল্টো তারাই আমাদেরকে এক্সট্রিম মনে করলো!!!
অবশেষে একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে উস্তাদ মতিউর রাহমান মাদানি হাফি: এই বক্তার সম্পকে সরাসরি বলে দেন- এই লোকের মানহাজ ভ্রান্ত, তার কাছ থেকে ইল্ম নিবেন না।এরা কিছু ভাল কথার সাথে সাথে অনেক বিষ মাখিয়ে আপনাদের খাইয়ে দিচ্ছে"!সে ভ্রান্ত চরমপন্থি /মুনকারিনে হাদিস ডা.মতিয়ারের সার্পোটার!তাই ইল্ম নেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন"

মুলত ওই বক্তব্য শুনার পর ই মুফতি ও তার ভক্তদের গায়ে তীব্র জ্বর উঠে যায়!

মুফতি আমির হামজা সাহেব মুনকারিনে হাদিস মুতাজিলা, খারেজী মতাদর্শের ধারক বাহক ও প্রচারকারী ••ডা. মতিয়ার রহমান এর প্রোগ্রামে গিয়ে তার ভুয়সী প্রশংসা করলেন!
তথাকথিত মুতাজিলাদের কুরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ভাষণে তিনি আর ও বলেন- "আমার ২৭ বছরের শিক্ষকদের কাছে যা পেয়েছি তা কিউআরএফ থেকে মাত্র তিনদিনের ওয়ার্কশপে পেয়েছি!!!বর্তমানে এই মুতাজিলাদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি!

মুলত কিউ. আর.এফের উসূল, আক্বীদা ভ্রান্ত। দ্বীন বুঝার উৎস সমূহের মধ্যে তারা মনে করে কমন সেন্স একটি। কমন সেন্সের খাতিরে তারা সুন্নাহ থেকে দূরে সরে যায়। কমন সেন্সের সাথে না মিললে সহীহ বুখারীর, সহীহ মুসলিমের হাদিস বাতিল করে দেয় তাহক্বীক ছাড়াই। তাদের মতে কবীরা গুনাহগার তওবা না করলে চিরস্থায়ী জাহান্নামী অথচ কুরআনে আছে আল্লাহ শিরক ছাড়া যে কোন গুনাহ মাফ করে দেন। এরকম আরো বাতিল আক্বীদা, মাসয়ালা এরা উদ্ভাবন করছে।
শীয়া ও কাদিয়ানী ফেতনার পর নিউ মুতাজিলা ফেতনা মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক ফিতনা! এই নিউ মুতাজিলা ফের্কা কলেজ ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের তাদের শয়তানি ফাঁদে ফেলে ব্রেইন ওয়াশ করে ফেলছে। এরা উপরে দেখায় এরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত কিন্তুু এরা এমন নিকৃষ্ট যে মুতাজিলা, মুর্জিয়া, আশারিয়াহ, কাদরিয়া সংমিশ্রণে এইদের আকীদা গঠিত। তবে এইদের প্রধান আকীদা হল মুতাজিলা। এইদের প্রধান শত্রু হল সালাফীরা। যারা নতুন সালাফী হয়েছে এরা হল এইদের প্রধান টার্গেট। এরা এই নিউ সালাফীদের সাথে এমন ভাবে আচরণ করে যেন মনে হয় এরাও সালাফী। আস্তে আস্তে এরা এই নিউ সালাফীদের ব্রেইন ওয়াশ করে ফেলে। অনেক মুসলিম দেশে এই জঘন্য ফের্কা নিষিদ্ধ।
এবার আপনি ই বিবেচনা করুন শাইখের আপত্তির জায়গায়টা & সতর্ক করাটা সঠিক ছিল কিনা?

কয়েকদিন আগে দেখলাম ওই মুফতি সাহেবের আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সেখানে তিনি ইচ্ছামত শাইখ মতিউর রাহমান মাদানি হাফি:কে গালিগালাজ করেছে! অথচ তার উচিত ছিল নিজের উপরে আনা অভিযোগ গুলোর পাল্টা জবাব দেওয়া অথবা মিথ্যা প্রমান করা?(যদিও আমরা জানি তিনি তা করতে সক্ষম নন)
তিনি শাইখ কে নিয়ে যা বললেন তা হল --
১/ মতিউর রাহমান মাদানি শুধু দাম্মামে এসি রুমে বসে বক্তব্য দেয়!মাঠেঘাটে আসেনা!!!
#জবাব-এটা বক্তার জাহালত!প্রথমত এসি রুমে বসে বক্তব্য দেওয়া কি হারাম? তাহলে এটা নিয়ে এত্ত বিষোধাগার কেন? তোমরা গাড়িতে/বাড়ি তে এসি লাগিয়ে ঘুমাতে পারো আর তারা দ্বিনি আলোচনা করলেই যত্ত দোষ! দিত্বীয়ত্ব, প্রবাসি বাংলাভাষীদের মধ্যে প্রায় ৯০% এর আকিদা/মানহাজ সংশোধনে উস্তাদ মতিউর রাহমান মাদানির ভুমিকা অনস্বীকার্য! তিনি এসি রুমে বসে যে খেদমত করছে/করেছে তার ৫% আপনার মত মুফতির সারা দুনিয়াতে ঘুরে ও করা সম্বব নয়!
কবুলিয়াত আল্লাহর হাতে, চারদিকে তাকিয়ে দেখলেই কিছুটা আচ করতে পারবেন।তাছাড়া তিনি শুধু সৌদি তে ই নয় বরং রাষ্ট্রীয় মেহমান হিসেবে কুয়েত/কাতার/আরব আমিরাত /বাহরাইন /মালয়েশিয়া /মালদ্বীপ সহ বেশ কয়েকটি দেশে পাব্লিক লেকচার দিয়েছেন!
কয়েকদিন আগেই "শাইখ" ডুবাইতে খোলা গ্রাউন্ডে বক্তব্য দিলেন!সুতরাং বক্তার এই অভিযোগ মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছুই নয়!

২/ এই খবিস/শয়তান(শাইখ মতিউর রাহমান) বাংলাদেশে ইসলাম কায়েমের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়!!!
তাকে(উস্তাদ মতিউর রাহমানকে) টাকা দিয়ে কিনে ফেলেছে ওরা!!!

♥#জবাব-সুবহান আল্লাহ! এই হল কথিত মুফতির ভাষা!!!
জনাব ফাসিকদের ন্যায় গালি দিয়ে কেন দলিলের মোকাবেলা করছেন? এটা তো দূর্বলদের লক্ষন!
চ্যলেঞ্জ করলাম সকল পাঠকদের- মাত্র একটা প্রমান দেখান যে, তিনি(উস্তাদ,মতিউর রাহমান) বাংলাদেশে ইসলাম কায়েমের বিরুদ্ধে কিছু বলেছে! আগামীকাল থেকেই শাইখ মতিউর রাহমান কে বয়কট করব।
তবে হ্যা, মওদুদি সাহেবের ভ্রান্ত থিউরির বিরোধীতা করার অর্থ যদি ইসলাম কায়েমের বিরোধীতা বলে চালিয়ে দেন তাহলে বলার কিছু ই নাই!
আরে ভাই আমরা তো রাষ্ট্রিয়ভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করছি না, বিরেধীতা করছি আপনার কর্মপদ্বতির!কোন মতবাদের বিরোধীতা করা মানেই কি ইসলামের বিরোধীতা করা???

আর উস্তাদ মতিউর রাহমান চাকুরী করে পরিবার চালান!যতটুকু জানি তিনি ছুটির দিনেও দাওয়াতি কাজে ব্যস্ত থাকেন! ওয়াজের বিনিময়ে পাব্লিকের পকেট ধোলাই করেন না!
এমন একজন দ্বায়ী ইল্লাল্লাহর উপর কি করে এমন অনুমান নির্ভর অপবাদ লাগিয়ে দিলেন যে "তাকে টাকা দিয়ে কি ফেলেছে"!!
অথচ অনুমান নির্ভরকথা/কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য রাসুল সা: কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।কারন এটাও চরম মিথ্যাচার।
আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল ﷺ বলেছেন,
ﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﺍﻟﻈَّﻦَّ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻈَّﻦَّ ﺃَﻛْﺬَﺏُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚ
-তোমরা ধারণা-অনুমান থেকে বেঁচে থাক কারণ ধারণা-অনুমান সর্বাপেক্ষা মিথ্যা কথা। [সহীহুল বুখারী হা/৬০৬৬, ৬৭২৪, সহিহ মুসলিম হা/৬৪৩০]

৩/বক্তব্যের এক ফাকে মুফতি সাহেব স্বরুপে ফিরে এসে বললেন--- গণতান্ত্রিক পদ্বতিতে ইসলাম কায়েমের জন্য তার দলকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় নিতে গিয়ে আপনার জান/মাল /রক্ত কোরবানী দেওয়ার বিনিময়ে ১০০শ গলাকাটা শহিদের সাওয়াব পাবেন!!!
#জবাব-প্রথমত এমন কোন হাদিস আছে কিনা তা আমার জানা নাই! হয়ত মুফতি সাহেব এটা নিজ থেকে মেরে দিছেন!যদি এমন হাদিস থেকেও থাকে তারপর ও প্রশ্ন থেকে যায় গণতন্ত্র দিয়ে ইসলাম কায়েমের এই থিউরি কবে আবিষ্কার হল???
পাব্লিকলি এমন বক্তব্য দিয়ে একদিকে লোকদেরকে নিজ দলের দিকে ডাকা হচ্ছে,অন্যদিকে বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে চরমপন্থি!

৪/ মতিউর রাহমান মাদানির কয়দিন জেল খেটেছেন?
তার উপর কেন জুলুম হচ্ছেনা?

♥#জবাব-মুফতি সাহেব হয়ত ভুলেই গেছেন-তিনি নিজেই শাইখের উপর জুলুম করেছেন নিজ বক্তব্য দ্বারা!এরা রাজনৈতিক কারনে নির্যাতিত হওয়া নেতাদের পুঁজি করে ইসলামাইজেশন করার অপচেষ্টা করছে!
যদি জেলে যাওয়া/মাইর খাওয়াই হক্বের মানদণ্ড হত, তাহলে এদেশে হিজবুত তাওহীদ /জে.এম.বি/আন্সারুল্লাহ বাংলাটিম তো আরও বেশি হক্ব পন্থি হয়ে যেত।
♣প্রশ্ন রইল-
এদেশে বাংলা ভাই,শাইখ আব্দুর রহমান,মুফতি হান্নান,এরা জেলে গিয়েছে,ফাসিতে ঝুলেছে তারা তো দুনিয়ার কোন স্বার্থে এই সব করেনি, তাদের ব্যপারে তোমাদের অভিমত কি? কারন তোমাদের উসুল হল হক্ব পন্থী হওয়ার জন্য জেল খাটা & ফাসিতে ঝুলতে হয়!

♣দ্বিতীয়ত্ব: হকপন্থি হওয়ার জন্য যদি জেলে যাওয়া মানদন্ড হয় আর তখন সরকার যদি তাগুত হয়-
তাহলে আসাদুল্লাহ আল গালিব স্যারকে জামাত বি এন পি সরকার জেলে খাটালো(সাড়ে ৩ বছর) মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তখন তাগুত কারা ছিল & হকপন্থি কারা ছিল? জানি এসব প্রশ্নে উত্তর পাবো না!
তাই আমার দ্বিনি ভাইবোন দের কে অনুরোধ করব দ্বিনের জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে অবশ্য ই সতর্কতা অবলম্বন করবেন!যার তার কাছ থেকে ইল্ম নিতে যাবেন না! কারন
ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সিরিন (রহঃ) বলেছেন,
إنَّ هذا العلم دين ؛ فانظروا عمَّن تأخذون دينكم
“নিশ্চয় এই ইলম দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং লক্ষ্য রেখো! কার নিকট থেকে তুমি তোমার দ্বীন গ্রহণ করছো।”(দারেমি)
কলাম-আখতার বিন আমির
ছালালাহ--ওমান