বিভ্রান্ত কিছু যুবকদের নিকট জিহাদি আলেম হিসেবে পরিচিত দুই জন ব্যক্তি সম্পকে!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া রাবাকাত্বহ
আমাদের এই পেজের সাথে যুক্ত প্রিয় ভাই ও বোনেরা---
আজ আমরা আলোচনা করব বর্তমানে বিভ্রান্ত কিছু যুবকদের নিকট জিহাদি আলেম হিসেবে পরিচিত দুই জন ব্যক্তি সম্পকে!
একজন হলেন আবু কাতাদাহ(uk) অপরজন হলেন আবু মুহাম্মদ আল মাগদিসি হাদাহুল্লাহ!
মুলত এরা উভয় ই খারিজি মানহাজের বক্তা যদিও তাদের বক্তগন ইল্মের ঘাটতির কারনে তা আচ করতে পারেন নি!
যাহোক, প্রথমেই আমরা শায়েখ আবূ 'আবদিল্লাহ আহমাদ বিন ইবরাহীম আবীল-'আইনাইন রচিত "ই'লানুন-নাকীর 'আলা গুলাতিত-তাকফীর" নামক বইটি থেকে তাকফীরপন্থিদের (যারা মুসলিমদের নির্দিষ্ট কিছু ত্রুটির কারণে কাফির বা অমুসলিম আখ্যা দেয়)তাদের ব্যাপারে কিছু কথা নকল করছি! বইটিতে লেখক তাকফীরপন্থিদের ব্যাপারে লেখা ছাড়াও জিহাদের অপপ্রয়োগকারীদের ব্যাপারে একটি আলাদা করে লেখা লিখেছেন। আরবি জানা কেউ বইটির অনুবাদ করতে পারলে খুব ভালো হত। আপাতত আমরা বইটির একটি জায়গা উল্লেখ করছি। এখানে শায়েখ তাকফীরপন্থিদের অবস্থা নিয়ে বলছেন:
"তাকফীর নিয়ে যারা চরমপন্থা অবলম্বন করে তাদের অধিকাংশই অন্যের অন্ধ অনুসরণকারী (আল-মুকাল্লিদাহ)। অল্প কিছু লোক ছাড়া। এই অল্প কিছু লোকই হচ্ছে এদের থিংক ট্যাংক। তারাই বিতর্কের রসদ যোগায়। বাকিরা সকলেই এদের অন্ধ গোঁড়া অনুসারী যারা নিজেদের বিশ্বাসকে ডিফেন্ড করার ক্ষমতা রাখে না। বরং কেউ যদি তাদের কাছে আল্লাহ্র কিতাব ও সুন্নাহ থেকে এমন কোনও প্রমাণ নিয়ে আসে যা তাদের বিশ্বাসের বিপরীতে যায় তাহলে তারা আবার ঐ অল্প কিছু লোকের কাছেই ফেরত আসে যাদের তারা নিজেদের ইমাম বা নেতা মনে করে। আর এই নেতারা - যারা এদের মাথায় চড়ে বসেছে - তারা শরি'আর শাস্ত্রগুলোতে কেবল ঐটুকুই খুঁজে বেড়ায় যা নিজেদের মতের সমর্থনে যায়। এদের সাথে যারাই মিশেছে, বা তাদের সাথে ছিলো তারা সত্যবাদী হয়ে থাকলে এটা স্বীকার করবে।
তাই এরকম অবস্থায় আমরা এই অন্যের অন্ধ অনুসরণকারীদের বলবো: নিজেদের সাথে সৎ হও এবং বোঝো যে তোমরা আসলেই মুকাল্লিদাহ (অন্ধ অনুসরণকারী)। সুতরাং তাকলীদ (অন্ধ অনুসরণ) যদি করতেই হয় তাহলে পূর্বের সৎকর্মশীল প্রকৃত 'আলেমদের (আস-সালাফ আস-সালেহ) অনুসরণ করাই সমীচীণ।
#কেন_আমাদের_নিকট_আবু_মুহাম্মদ_আল_মাগদিসি খারিজি হিসেবে পরিগণিত?
এই প্রশ্নের বিস্তারিত জবাব না দিয়ে সরাসরি সংক্ষিপ্ত আলোচনায় চলে যাই!
শুরুতেই বলে দেই এই মাকদেসী হল বর্তমান আধুনিক খারেজীদের থিংক ট্যাংক!একাধারে বেশ কিছু শাসককে সে সরাসরি তাকফির করেছে সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিয়েছে অথচ ওই শাসকদ্বয় মুসলিম!
তার বিষাক্ত তাকফিরের ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি সৌদিআরব, কুয়েতের মত দেশ গুলো! এমন কি অস্র চুরিতে ধরা পড়ার পরে সে সরাসরি কুয়েতের পুলিশ কেও কাফির ফতওয়া দিয়েছিল!
বিস্তারিত : http://www.takfiris.com/…/wdzlo-abu-muhammad-al-maqdisi-isa…
এছাড়া তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান হাফি: সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়ে একটি ছোট্ট পুস্তিকা রচনা করেছেন এই নব্য খারিজি। পুস্তিকাটির নাম الأجوبة الزكية على الأسئلة التركية আল-মুওয়াহহিদীন মিডিয়া সেটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছে এই শিরোনামে- Precise Answers To The Turkish Questions বাংলা অর্থ দাঁড়ায়- তুরষ্ক সংক্রান্ত প্রশ্নের পরিষ্কার জবাব।
উপরোক্ত কিতাবে তাকফীর নিয়ে বাড়াবাড়ি ও সীমালঙ্ঘন করেন এই মাগদিসি এবং সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসের অপবাদ লাগিয়ে এরদোগানের ব্যাপারে রিদ্দাহ তথা মুরতাদ হওয়ার ফাতাওয়া জারি করেন (ইন্নানিল্লাহ)অথচ এখনো দুনিয়ার বুকে রাব্বানি ওলামাগন জিবিত রয়েছেন এবং ওলামাদের কেউ ই এরদোগান কে তাকফির করেন নি!
উল্লেখ্য যে কাউকে মুরতাদ বলার অর্থই হল তাকে দ্বীন ইসলাম থেকে বের করে দেওয়া!আর ব্যক্তিটি যেহেতু শাসক তাই --
১. তাকে হত্যা করা হালাল এবং তার বিরুদ্ধে জিহাদ ও কিতাল(যুদ্ধ) ঘোষনা করা ফরজ হয়ে যাবে!
২.সন্ত্রাস ও আতংক সৃস্টি করা জায়েজ এবং বোমাবাজি ও ধংশলীলা ঘটানো জায়েজ হয়ে যাবে!
সর্বপরি, হত্যার জন্য প্রয়োজনে আত্নহত্যা জরুরি হয়ে যাবে !
উপরোক্ত কিতাবটির ডাউনলোড লিংক(আরবি).... http://www.mediafire.com/file/vxmptc0rehi4245
ইংলিশ ……http://bit.ly/2GDVWAs
মাগদিসির আরেক সহযোগী আবু কাতাদা আল-ফিলিস্তিনিও এক ই পথে হাটেন, যেহেতু উভয়ের আকিদা ও মানহাজ এক এবং অভিন্ন! সে তার বিভিন্ন বক্তব্য ও ফাতাওয়ায় তুরষ্ক এবং এরদোগানের বিষয়ে স্পষ্ট ফতওয়া জারি করেছেন! সরাসরি এরদোগানকে সুস্পষ্ট ভাষায় মুরতাদ বলে আখ্যা দিয়েছেন! (ইন্নানিল্লাহ)
ফতওয়ার লিংক..... http://bit.ly/2Iwqqoq
এছাড়া তুরষ্কের নেতৃত্বে সিরিয়ায় উত্তরাঞ্চলে দার’উল-ফুরাত’ বা ‘ইউফ্রেটিস শিল্ড’ নামে যে অভিযান চালানো হয়,সে ব্যাপারেও আবু কাতাদা যে ফাতাওয়া দেন,তাতেও তুরষ্ক ও এরদোগানের ব্যাপারে রিদ্দার ফাতাওয়া দেন।
ফাতাওয়াটির লিংক.... https://justpaste.it/1g706
আমাদের অবস্থান--
বর্তমানে জীবিতদের মাঝে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান – ইচ্ছায়/অনিচ্ছায় ক্বুরান ও সুন্নাহ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করেন না, কিন্তু নিজেকে মুসলিম দাবী করেন এবং মুসলিম দেশগুলোর প্রতি ভালোবাসা দেখান। সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজাতে তিনি সাহায্যও পাঠিয়েছেন এবং আরব বিশ্বকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে আহবান জানিয়েছেন – আল্লাহ তাকে এর জন্য উত্তম প্রতিদান দিন। আবার রাফেজিদের চর হুথি শিয়া দমনে আরব বিশ্বের সাথে একাগ্রতাও পোষন করেছেন! আমরা তার ভুলের কারণে তাকে গালি দেওয়া জায়েজ মনে করিনা বা তাকে কাফের ফতোয়া দেইনা, বরং তাকে মুসলিম শাসক বলেই মনে করি এবং আল্লাহ যেন তাকে হেদায়েত করেন সঠিক দ্বীনের উপরে, সেই দুয়া করি।
এছাড়া যেকোন মুসলিম শাসক মানব রচিত বিধান দিয়ে দেশ পরিচালনা করলেই তাকে কাফির বলা যাবেনা! এব্যাপারে ওলামাদের ফতওয়া সম্বলিত আমাদের আগের পোস্ট টি পড়তে পারেন --
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=982255215275064&id=304803546353571
সর্বশেষ-মুসলিম আমীর বা শাসকদের ব্যপারে আমাদের দৃষ্টিভংগি কেমন হওয়া উচিত?
(১) ইমাম আবু জাফর আত-তাহাবী রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২১ হিজরী), তার বিখ্যাত আহলে “আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আকীদা” নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেনঃ
“আমীর ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাকে আমরা জায়েয মনে করি না, যদিও তারা যুলুম-অত্যাচার করে। আমরা তাদেরকে অভিশাপ দিব না, এবং তাদের আনুগত্য হতে হাত গুটিয়ে নিব না। তাদের আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্যের সাপেক্ষে ফরয, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর অবাধ্যচরণের আদেশ দেয়। আমরা তাদের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য দুয়া করব।”
আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া।
(২) মুসলমান শাসকদেরকে গালিগালাজ করা, মিম্বারে বসে তাদের সমালোচনা করে, জনগণকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে উস্কে দেওয়া মনপূজারী, বেদাতী ও খারজীদের একটা লক্ষণ। ইমাম আল-বারবাহারি রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২৯ হিজরী) বলেছেন,
“যদি তুমি কোন ব্যক্তিকে দেখো সে শাসকদের জন্য বদদুয়া করছে, তাহলে জেনে রাখো সে একজন মনপূজারী, বিদআ'তী। আর তুমি যদি কোন ব্যক্তিকে দেখো যে, সে শাসকদের জন্য কল্যাণের দুয়া করছে, তাহলে সে একজন আহলে সুন্নাহ, ইন শা’ আল্লাহ।”
শরাহুস সুন্নাহঃ পৃষ্ঠা ১১৩-১১৪।
(৩) ইমাম আল-বারবাহারি রাহিমাহুল্লাহ আরো বলেছেন,
“যে ব্যক্তি কোন মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সে
ক. খারেজীদের মধ্যে একজন,
খ. সে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করলো,
গ. সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসের বিরোধীতা করলো এবং,
ঘ. তার মৃত্যু যেন ‘জাহেলী’ যুগের মৃত্যুর মতো।
শরাহুস সুন্নাহঃ পৃষ্ঠা ৪২।
শেষ কথা-
ফ্বিসক ও যুলুমের মত কুফরও দুইভাগে বিভক্ত। খারেজীদের বিভ্রান্তির মূল কারণ হল তারা ইত্তিহলালী ক্বলবী ও ইত্তিহলালী আমালী কুফরকে এক করে ফেলছে। অথচ ইত্তিহলালী আমালি কুফরের কারণে কোন মুসলিম কাফের হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত তা ইত্তিহলালী ক্বলবী হবে। অর্থাৎ আন্তরিকভাবে (মন থেকে আকীদাগতভাবে) কোন হারাম কাজকে যদি হালাল মনে করে তবেই কাফের হয়ে যাবে। যদি কোন ব্যক্তি বা শাসক সুদ কিংবা মদকে আমলগতভাবে হালাল করে কিন্তু আকীদাগতভাবে হারাম মনে করে তবেই এইক্ষেত্রে হুকুম হল তাকে কাফের বলা যাবে না। কেউ কালেমার স্বীকৃতি দিলে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কাফের বলা যাবে না যদিও সে আমলগত কুফরে লিপ্ত থাকে। যদি আকীদাগত কুফর তার কাছ থেকে মুখ দ্বারা কিংবা কাজে প্রকাশ পায় তবেই তখন কেবল তার উপর তাকফীরের হুকুম প্রযোজ্য হবে। হে যুবক সম্প্রদায়! মুসলিমকে তাকফীর করা খুবই ভয়াবহ ব্যপার। আর সেই মুসলিম যদি শাসক হয় তাহলে তাকে তাকফীর করা তো আরো ভয়ানক। কেননা, শাসকদের অনিচ্ছা স্বত্বেও অনেক কাজ করতে হয় যা কুফর পর্যায়ের। শাসক নামাজ পড়ছে, যাকাত দিচ্ছে, হজ্জ করছে ব্যক্তিগতভাবে ইসলামের বিধান পালন করছে তাহলে কিভাবে আপনি শাসককে তাকফীর করার সাহস দেখান! শাসক তো জনগণের প্রতিচ্ছবি। যেমন জনগণ তেমন শাসক। আপনি জনগণকে পাল্টান শাসকও পাল্টে যাবে।
অতএব, যারা এসব বক্তাদের খারিজি মানহাজের মনে করবে না, হয় তারা জাহিল আর না হয় নিজেরাও খারিজি মানহাজে অনুসারী!
আল্লাহতালা আমাদেরকে এসব পথভ্রষ্টদের থেকে হেফাজত করুন---আমিন
প্রচারে--ডা.যাকির নায়েক ফ্যান ক্লাব
এ্যাডমিন প্যানেল
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া রাবাকাত্বহ
আমাদের এই পেজের সাথে যুক্ত প্রিয় ভাই ও বোনেরা---
আজ আমরা আলোচনা করব বর্তমানে বিভ্রান্ত কিছু যুবকদের নিকট জিহাদি আলেম হিসেবে পরিচিত দুই জন ব্যক্তি সম্পকে!
একজন হলেন আবু কাতাদাহ(uk) অপরজন হলেন আবু মুহাম্মদ আল মাগদিসি হাদাহুল্লাহ!
মুলত এরা উভয় ই খারিজি মানহাজের বক্তা যদিও তাদের বক্তগন ইল্মের ঘাটতির কারনে তা আচ করতে পারেন নি!
যাহোক, প্রথমেই আমরা শায়েখ আবূ 'আবদিল্লাহ আহমাদ বিন ইবরাহীম আবীল-'আইনাইন রচিত "ই'লানুন-নাকীর 'আলা গুলাতিত-তাকফীর" নামক বইটি থেকে তাকফীরপন্থিদের (যারা মুসলিমদের নির্দিষ্ট কিছু ত্রুটির কারণে কাফির বা অমুসলিম আখ্যা দেয়)তাদের ব্যাপারে কিছু কথা নকল করছি! বইটিতে লেখক তাকফীরপন্থিদের ব্যাপারে লেখা ছাড়াও জিহাদের অপপ্রয়োগকারীদের ব্যাপারে একটি আলাদা করে লেখা লিখেছেন। আরবি জানা কেউ বইটির অনুবাদ করতে পারলে খুব ভালো হত। আপাতত আমরা বইটির একটি জায়গা উল্লেখ করছি। এখানে শায়েখ তাকফীরপন্থিদের অবস্থা নিয়ে বলছেন:
"তাকফীর নিয়ে যারা চরমপন্থা অবলম্বন করে তাদের অধিকাংশই অন্যের অন্ধ অনুসরণকারী (আল-মুকাল্লিদাহ)। অল্প কিছু লোক ছাড়া। এই অল্প কিছু লোকই হচ্ছে এদের থিংক ট্যাংক। তারাই বিতর্কের রসদ যোগায়। বাকিরা সকলেই এদের অন্ধ গোঁড়া অনুসারী যারা নিজেদের বিশ্বাসকে ডিফেন্ড করার ক্ষমতা রাখে না। বরং কেউ যদি তাদের কাছে আল্লাহ্র কিতাব ও সুন্নাহ থেকে এমন কোনও প্রমাণ নিয়ে আসে যা তাদের বিশ্বাসের বিপরীতে যায় তাহলে তারা আবার ঐ অল্প কিছু লোকের কাছেই ফেরত আসে যাদের তারা নিজেদের ইমাম বা নেতা মনে করে। আর এই নেতারা - যারা এদের মাথায় চড়ে বসেছে - তারা শরি'আর শাস্ত্রগুলোতে কেবল ঐটুকুই খুঁজে বেড়ায় যা নিজেদের মতের সমর্থনে যায়। এদের সাথে যারাই মিশেছে, বা তাদের সাথে ছিলো তারা সত্যবাদী হয়ে থাকলে এটা স্বীকার করবে।
তাই এরকম অবস্থায় আমরা এই অন্যের অন্ধ অনুসরণকারীদের বলবো: নিজেদের সাথে সৎ হও এবং বোঝো যে তোমরা আসলেই মুকাল্লিদাহ (অন্ধ অনুসরণকারী)। সুতরাং তাকলীদ (অন্ধ অনুসরণ) যদি করতেই হয় তাহলে পূর্বের সৎকর্মশীল প্রকৃত 'আলেমদের (আস-সালাফ আস-সালেহ) অনুসরণ করাই সমীচীণ।
#কেন_আমাদের_নিকট_আবু_মুহাম্মদ_আল_মাগদিসি খারিজি হিসেবে পরিগণিত?
এই প্রশ্নের বিস্তারিত জবাব না দিয়ে সরাসরি সংক্ষিপ্ত আলোচনায় চলে যাই!
শুরুতেই বলে দেই এই মাকদেসী হল বর্তমান আধুনিক খারেজীদের থিংক ট্যাংক!একাধারে বেশ কিছু শাসককে সে সরাসরি তাকফির করেছে সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিয়েছে অথচ ওই শাসকদ্বয় মুসলিম!
তার বিষাক্ত তাকফিরের ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি সৌদিআরব, কুয়েতের মত দেশ গুলো! এমন কি অস্র চুরিতে ধরা পড়ার পরে সে সরাসরি কুয়েতের পুলিশ কেও কাফির ফতওয়া দিয়েছিল!
বিস্তারিত : http://www.takfiris.com/…/wdzlo-abu-muhammad-al-maqdisi-isa…
এছাড়া তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান হাফি: সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়ে একটি ছোট্ট পুস্তিকা রচনা করেছেন এই নব্য খারিজি। পুস্তিকাটির নাম الأجوبة الزكية على الأسئلة التركية আল-মুওয়াহহিদীন মিডিয়া সেটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছে এই শিরোনামে- Precise Answers To The Turkish Questions বাংলা অর্থ দাঁড়ায়- তুরষ্ক সংক্রান্ত প্রশ্নের পরিষ্কার জবাব।
উপরোক্ত কিতাবে তাকফীর নিয়ে বাড়াবাড়ি ও সীমালঙ্ঘন করেন এই মাগদিসি এবং সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসের অপবাদ লাগিয়ে এরদোগানের ব্যাপারে রিদ্দাহ তথা মুরতাদ হওয়ার ফাতাওয়া জারি করেন (ইন্নানিল্লাহ)অথচ এখনো দুনিয়ার বুকে রাব্বানি ওলামাগন জিবিত রয়েছেন এবং ওলামাদের কেউ ই এরদোগান কে তাকফির করেন নি!
উল্লেখ্য যে কাউকে মুরতাদ বলার অর্থই হল তাকে দ্বীন ইসলাম থেকে বের করে দেওয়া!আর ব্যক্তিটি যেহেতু শাসক তাই --
১. তাকে হত্যা করা হালাল এবং তার বিরুদ্ধে জিহাদ ও কিতাল(যুদ্ধ) ঘোষনা করা ফরজ হয়ে যাবে!
২.সন্ত্রাস ও আতংক সৃস্টি করা জায়েজ এবং বোমাবাজি ও ধংশলীলা ঘটানো জায়েজ হয়ে যাবে!
সর্বপরি, হত্যার জন্য প্রয়োজনে আত্নহত্যা জরুরি হয়ে যাবে !
উপরোক্ত কিতাবটির ডাউনলোড লিংক(আরবি).... http://www.mediafire.com/file/vxmptc0rehi4245
ইংলিশ ……http://bit.ly/2GDVWAs
মাগদিসির আরেক সহযোগী আবু কাতাদা আল-ফিলিস্তিনিও এক ই পথে হাটেন, যেহেতু উভয়ের আকিদা ও মানহাজ এক এবং অভিন্ন! সে তার বিভিন্ন বক্তব্য ও ফাতাওয়ায় তুরষ্ক এবং এরদোগানের বিষয়ে স্পষ্ট ফতওয়া জারি করেছেন! সরাসরি এরদোগানকে সুস্পষ্ট ভাষায় মুরতাদ বলে আখ্যা দিয়েছেন! (ইন্নানিল্লাহ)
ফতওয়ার লিংক..... http://bit.ly/2Iwqqoq
এছাড়া তুরষ্কের নেতৃত্বে সিরিয়ায় উত্তরাঞ্চলে দার’উল-ফুরাত’ বা ‘ইউফ্রেটিস শিল্ড’ নামে যে অভিযান চালানো হয়,সে ব্যাপারেও আবু কাতাদা যে ফাতাওয়া দেন,তাতেও তুরষ্ক ও এরদোগানের ব্যাপারে রিদ্দার ফাতাওয়া দেন।
ফাতাওয়াটির লিংক.... https://justpaste.it/1g706
আমাদের অবস্থান--
বর্তমানে জীবিতদের মাঝে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান – ইচ্ছায়/অনিচ্ছায় ক্বুরান ও সুন্নাহ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করেন না, কিন্তু নিজেকে মুসলিম দাবী করেন এবং মুসলিম দেশগুলোর প্রতি ভালোবাসা দেখান। সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজাতে তিনি সাহায্যও পাঠিয়েছেন এবং আরব বিশ্বকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে আহবান জানিয়েছেন – আল্লাহ তাকে এর জন্য উত্তম প্রতিদান দিন। আবার রাফেজিদের চর হুথি শিয়া দমনে আরব বিশ্বের সাথে একাগ্রতাও পোষন করেছেন! আমরা তার ভুলের কারণে তাকে গালি দেওয়া জায়েজ মনে করিনা বা তাকে কাফের ফতোয়া দেইনা, বরং তাকে মুসলিম শাসক বলেই মনে করি এবং আল্লাহ যেন তাকে হেদায়েত করেন সঠিক দ্বীনের উপরে, সেই দুয়া করি।
এছাড়া যেকোন মুসলিম শাসক মানব রচিত বিধান দিয়ে দেশ পরিচালনা করলেই তাকে কাফির বলা যাবেনা! এব্যাপারে ওলামাদের ফতওয়া সম্বলিত আমাদের আগের পোস্ট টি পড়তে পারেন --
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=982255215275064&id=304803546353571
সর্বশেষ-মুসলিম আমীর বা শাসকদের ব্যপারে আমাদের দৃষ্টিভংগি কেমন হওয়া উচিত?
(১) ইমাম আবু জাফর আত-তাহাবী রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২১ হিজরী), তার বিখ্যাত আহলে “আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আকীদা” নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেনঃ
“আমীর ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাকে আমরা জায়েয মনে করি না, যদিও তারা যুলুম-অত্যাচার করে। আমরা তাদেরকে অভিশাপ দিব না, এবং তাদের আনুগত্য হতে হাত গুটিয়ে নিব না। তাদের আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্যের সাপেক্ষে ফরয, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর অবাধ্যচরণের আদেশ দেয়। আমরা তাদের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য দুয়া করব।”
আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া।
(২) মুসলমান শাসকদেরকে গালিগালাজ করা, মিম্বারে বসে তাদের সমালোচনা করে, জনগণকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে উস্কে দেওয়া মনপূজারী, বেদাতী ও খারজীদের একটা লক্ষণ। ইমাম আল-বারবাহারি রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২৯ হিজরী) বলেছেন,
“যদি তুমি কোন ব্যক্তিকে দেখো সে শাসকদের জন্য বদদুয়া করছে, তাহলে জেনে রাখো সে একজন মনপূজারী, বিদআ'তী। আর তুমি যদি কোন ব্যক্তিকে দেখো যে, সে শাসকদের জন্য কল্যাণের দুয়া করছে, তাহলে সে একজন আহলে সুন্নাহ, ইন শা’ আল্লাহ।”
শরাহুস সুন্নাহঃ পৃষ্ঠা ১১৩-১১৪।
(৩) ইমাম আল-বারবাহারি রাহিমাহুল্লাহ আরো বলেছেন,
“যে ব্যক্তি কোন মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সে
ক. খারেজীদের মধ্যে একজন,
খ. সে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করলো,
গ. সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসের বিরোধীতা করলো এবং,
ঘ. তার মৃত্যু যেন ‘জাহেলী’ যুগের মৃত্যুর মতো।
শরাহুস সুন্নাহঃ পৃষ্ঠা ৪২।
শেষ কথা-
ফ্বিসক ও যুলুমের মত কুফরও দুইভাগে বিভক্ত। খারেজীদের বিভ্রান্তির মূল কারণ হল তারা ইত্তিহলালী ক্বলবী ও ইত্তিহলালী আমালী কুফরকে এক করে ফেলছে। অথচ ইত্তিহলালী আমালি কুফরের কারণে কোন মুসলিম কাফের হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত তা ইত্তিহলালী ক্বলবী হবে। অর্থাৎ আন্তরিকভাবে (মন থেকে আকীদাগতভাবে) কোন হারাম কাজকে যদি হালাল মনে করে তবেই কাফের হয়ে যাবে। যদি কোন ব্যক্তি বা শাসক সুদ কিংবা মদকে আমলগতভাবে হালাল করে কিন্তু আকীদাগতভাবে হারাম মনে করে তবেই এইক্ষেত্রে হুকুম হল তাকে কাফের বলা যাবে না। কেউ কালেমার স্বীকৃতি দিলে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কাফের বলা যাবে না যদিও সে আমলগত কুফরে লিপ্ত থাকে। যদি আকীদাগত কুফর তার কাছ থেকে মুখ দ্বারা কিংবা কাজে প্রকাশ পায় তবেই তখন কেবল তার উপর তাকফীরের হুকুম প্রযোজ্য হবে। হে যুবক সম্প্রদায়! মুসলিমকে তাকফীর করা খুবই ভয়াবহ ব্যপার। আর সেই মুসলিম যদি শাসক হয় তাহলে তাকে তাকফীর করা তো আরো ভয়ানক। কেননা, শাসকদের অনিচ্ছা স্বত্বেও অনেক কাজ করতে হয় যা কুফর পর্যায়ের। শাসক নামাজ পড়ছে, যাকাত দিচ্ছে, হজ্জ করছে ব্যক্তিগতভাবে ইসলামের বিধান পালন করছে তাহলে কিভাবে আপনি শাসককে তাকফীর করার সাহস দেখান! শাসক তো জনগণের প্রতিচ্ছবি। যেমন জনগণ তেমন শাসক। আপনি জনগণকে পাল্টান শাসকও পাল্টে যাবে।
অতএব, যারা এসব বক্তাদের খারিজি মানহাজের মনে করবে না, হয় তারা জাহিল আর না হয় নিজেরাও খারিজি মানহাজে অনুসারী!
আল্লাহতালা আমাদেরকে এসব পথভ্রষ্টদের থেকে হেফাজত করুন---আমিন
প্রচারে--ডা.যাকির নায়েক ফ্যান ক্লাব
এ্যাডমিন প্যানেল