বিপদজনক বক্তা & তাদের ভক্তবৃন্দ থেকে সাবধান......

বিপদজনক বক্তা & তাদের ভক্তবৃন্দ থেকে সাবধান......
-
ইদানীং নিজেকে মু'তাদিল দাবিদার কিছু হিজবি টাইপের বক্তাগন ঔক্যের ঝাণ্ডা উড়িয়ে তাদের বিষ মাখানো মানহাজ প্রচার করছে!
এক্ষেত্রে একটা কথা না বললেই নয় আর তা হল কিছু বক্তা আজকাল উম্মাহর ঔক্যের সপ্নদ্রস্টা হিসেবে শাইখ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহি: কে নিজেদের "আইডল" হিসেবে উপস্থাপন করছে! কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল কিছু ক্ষেত্রে পদস্খলন ঘটলেও স্যার রাহি: ছিলেন আকিদার ক্ষেত্রে এক আপোষহীন আলেমেদ্বীন!
অথচ তথাকথিত এসকল বক্তাগন ঔক্যের ঝাণ্ডা উড়াতে চাইলেও তাদের থেকে কখনো একটি সতন্ত্র "আকিদার লেকচার" দুরবিন দিয়ে ও খুজে পাবেন না!
এদের লেকচার এর একটা বিশাল সময় জুড়ে থাকে শুধু ফজিলতে বয়ান!
শিরিক সম্পকে আমভাবে আলোচনা করলেও শিরিকের মুল হোতাগনের নাম ভুলেও মুখে আনেন না কারন এতে হয়ত নিজের আকাবিরের গায়েও ময়লা লাগতে পারে!
বিদাতের সংজ্ঞা বর্ননা করলেও বিদাতি আলেমদের বিরুদ্বে প্রকাশ্য কিছু বলেন না! কারন এতে নাকি ঔক্য বিনস্ট হয়ে যাবে!
ভক্তগন হয়ত দলবিমুখ আলেম ভেবে বসে আছেন কিন্তু আসলেই কি এরা দলবিমুখ?
একটু তাকিয়ে দেখুন তো এদের বন্ধু কারা?কাদের সাথে এদের উঠাবসা!
আপনি এদের ভাসমান চেহারা স্কিনে দেখলেও আমরা এদের অন্দরমহলের খবর জানি!
এখন তো কিছু বক্তা সালাফি আলেমদের সাথে দিনেরবেলা এক ই টেবিলে বসেও রাতেরবেলায় চরমপন্থিদের সার্পোট দিচ্ছে আবার গোপনে বিদাতিদের সাথেও মিটিং চালায় যা দুঃখজনক!

তাইতো আমরা এসব প্রবৃদ্বির অনুসারীদের কাছেও বসিনা & তাদের থেকে ইল্ম ও নেই না! কারন
ইমাম আবু কিলাব রাহঃবলতেন-
"তোমরা প্রবৃত্তির অনুসারীদের কাছে বসো না , তাদের সাথে তর্ক বিতর্ক করো না। কেননা আমি তাদের অনিষ্ট থেকে কোনো অবস্থাতেই নিরাপদ মনে করি না। তারা তোমাদের ভ্রষ্টতার মধ্যে নিমজ্জিত করবে অথবা তোমাদের জানা বিষয়ে সন্দেহ -সংশয় ঢুকিয়ে দিবে।"
(দারেমী -১/১২০)

মুলত প্রবৃদ্বির অনুসারীগন কৌশলে আহলে হাদিস/সালাফি মাসলাক কে ভুল প্রমানে উঠে পড়ে লেগেছে অথচ আপনি ফজিলতের ধোকায় পরে বেখবর!!!
এদের প্রধান স্লোগান হচ্ছে "ইয়ে ভি ঠিক হ্যায়, ও ভি ঠিক হ্যায়"
অর্থাৎ উভয় নৌকায় "পা" ফেলে রাখে, যাতে আপনি এদের বয়কট করতে না পারেন & সুযোগ বুঝে নিজেদের বিষ মাখানো মানহাজের দিকে আহবান করে !
প্রকৃতপক্ষে তারা ‘সালফে সালেহীন’ (সাহাবীদের) আক্বীদাহ (ধর্মীয় বিশ্বাস) ও মানহাজে (কর্ম পদ্ধিত বা চলার নীতিতে) বিশ্বাসী নয়। কিন্তু তারা সেটা প্রকাশ করেনা বা তাদের আক্বিদাহ কি, তা কখনো স্পষ্ট করে বলেনা। অনেক সময় তারা মনভোলানো যুক্তি ও কথার দ্বারা আহলে সুন্নাহর বিরোধীতা করে এবং কৌশলে তার ভক্ত-শ্রোতাদেরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। এমন ব্যক্তি যারা মূলত বিদআ’তের অনুসারী, কিন্তু মানুষের কাছে নিজেদের বিদআ’তকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে, তাদের চেনার সহজ উপায় হচ্ছেঃ সে কার সাথে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা রাখে, সে কোন ব্যক্তিদের সাথে উঠা-বসা করে, কার প্রশংসা করে, সেইদিকে লক্ষ্য করা। কারণ, একজন মানুষ সাধারণত তার বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়ে থাকে।
.
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “একজন মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং সে যেনো লক্ষ্য রাখে, সে কার সাথে বন্ধুত্ব করছে।” তিরমিজিঃ ২৩৭৮, হাদীসটি হাসান সহীহ, শায়খ আলবানী রাহিমাহুল্লাহ।
.
ইমাম আল-আউযায়ী (মৃত্যু-১৫৮ হিজরী) রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমাদের কাছে তার বিদআ’তকে লুকিয়ে রাখে, সে কখনো আমাদের কাছে তার সংগীদেরকে লুকিয়ে রাখতে পারবেনা।” আল-ইবানাহঃ ২/৪৭৬।
.
অনেক নামধারী ইসলামী বক্তা ও লেখক প্রকাশ্য বিদআ’তি ব্যক্তি বা দলগুলোকে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে সমর্থন করার চেষ্টা করে।আর আপনি হয়ত তাদেরকে নিরপেক্ষ ভেবে বসে আছেন! হায় আফসোস!
এরা নাবিক সেজে আপনাকে ঠিক ই জাহাজে উঠিয়ে নিচ্ছে কিন্তু মাঝ ধরিয়াতে গিয়ে ছেড়ে দিবে কারন নাবিক নিজেইতো পথহারা! তখন হয় আপনি সেখানে ভাসমান অবস্থায় ই পড়ে থাকবেন, আর না হয় নিজেই নাবিক হয়ে উল্টো পথে গিয়ে নঙ্গর ফেলবেন!

এমন ব্যক্তিদের ব্যপারেও আমাদের আলেমরা সতর্ক করেছেন।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “যে ব্যক্তি বিদআ’তীদের প্রতি সু-ধারনা রাখে এবং এই দাবি করে যে, তাদের অবস্থা অজ্ঞাত, তাহলে তাকে তাদের (বিদআ’তীদের) অবস্থা সম্বন্ধে অবহিত করতে হবে। সুতরাং, সে যদি বিদআ'তীদের ব্যপারে বিরোধী মনোভাবাপন্ন না হয়, এবং তাদের প্রতি প্রতিবাদমূলক মনোভাব প্রকাশ না করে, তাহলে তাকেও বিদআ’তীদেরই মতাবলম্বী ও দলভুক্ত বলে জানতে হবে।” মাজমুয়া ফাতাওয়াঃ ২/১৩৩।


সালাফগন যদি ওইসব বক্তার মত এত উদারপন্থী (মুলত জগাখিচুড়ী) হতেন, তাহলে হক্ব বাতিল সব মিশ্রিত হয়ে একাকার হয়ে যেত!এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের
একজন মাশহুর আলেমেদ্বীন শাইখ মুবাসসির আহাম্মেদ রাব্বানি হাফি: আফসোস করে বলেছিলেন" যদি সবার থেকে ভাল /ভাল কথা গুলো নিবো, এই থিউরি তে আমরা চলতাম, তাহলে তো কাদিয়ানী /শিয়াদের থেকেও ইল্ম নিতাম!
কারন ওদের ও কিছু ভাল কথা রয়েছে!এমন কি কাদিয়ানী রা তো কোরআনের তাফসীরও করেছে!
যারা নিজেদের "মানহাজ" কে জলাঞ্জলি দিয়েছে শুধুমাত্র তাদের পক্ষেই এমনটা সম্বব"।

কিন্তু কিছু ভাই অজ্ঞতাবশত ই হোক, আর জেনে শুনেই হোক এসকল আহলুল হাওয়াদের বক্তব্য /লিখনি দেদ্বারছে বিলি করছে অথচ
ইমাম ইবনু সীরীন (রহিমাহুল্লা-হ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়:— "আহলুল হাওয়াদের বক্তব্য শোনার ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?"
তিনি জবাব দিলেন:— "আমরা ওদের বক্তব্যও শুনিনা এবং ওদেরকে সম্মানও করি না।"
[সিয়ার আ'লাম নুবালা: ৪/৬১১]

ইমাম হাসান আল-বাসরী (রহিমাহুল্লাহ) আরও বলেন:— "বিদাতি ও আহলুল হাওয়াদের সাথে বসবে না, তাদের সাথে তর্ক করবে না, তাদের কথাও শুনবে না।"
[দারেমীর সুনানে বর্ণিত হয়েছে (১/১২১)]

কথিত এসব উদারপন্থী বক্তারা মুলত "জগাখিচুড়ী" মানহাজের অনুসারী! এরা উভয়ের সাথেই উঠা বসা করে।আর এ কারণেই আক্বীদায় শিরক ও আমলে বিদ’আতেই যথেষ্ট সংমিশ্রণ রয়েছে এমন দলের বিরুদ্বেও এদের সরাসরি লিখনি /বক্তব্য পাওয়া দুষ্কর!বরং লোকচক্ষুর আড়ালে এরাই বাতিলের হাত কে শক্তিশালী করে!
তাই ইল্ম নেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
কলাম--আখতার বিন আমির
ছালালাহ-ওমান