সালাফী মানহাজের বৈশিষ্ট্য (পর্ব-০৫)
সহীহ আকিদা RIGP
সালাফী মানহাজের বৈশিষ্ট্য (পর্ব-০৫)
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ
সালাফী মানহাজের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মানুষদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয়া ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা। এই কাজটি ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কুরআন ও সুন্নাহতে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ-এর প্রতি উৎসাহিত করে অসংখ্য নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে।
প্রত্যেক নবী-রাসূল এই দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর সাহাবীগণ, তাবিঈ, তাবে তাবিঈ, ইমাম ও মুজাদ্দিদগণ সবাই নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী এই দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই এই কাজটি সালাফী মানহাজের বৈশিষ্টে পরিণত হয়েছে।
“সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ” ছাড়া কোনো মানবসমাজ টিকবে না। সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি গড়ে ওঠার পেছনে এর ভূমিকা অত্যধিক। কুরাআনে আল্লাহ তা’আলা মুসলিমদেরকে উত্তম জাতি বলে ঘোষণা করে তাদেরকে তিনটি কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এই তিনটি কাজের মধ্যে প্রথম দুটি কাজই হচ্ছে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ।
আল্লাহ বলেন,
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِতোমরা হলে সর্বোত্তম উম্মত, যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর যদি আহলে কিতাব ঈমান আনত, তবে অবশ্যই তা তাদের জন্য কল্যাণকর হত। তাদের কতক ঈমানদার। আর তাদের অধিকাংশই ফাসিক। (সূরা আলে ইমরান, আয়াতঃ ১১০)
অন্য আয়াতে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন,
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌআর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়িম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত-তাওবাহ, আয়াতঃ ৭১)
যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছেন তাদের মৌলিক চারটি কাজের দুইটিই হচ্ছে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ।
আল্লাহ বলেন,
الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِতারা এমন যাদেরকে আমি যমীনে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে; আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই অধিকারে। (সূরা আল-হাজ্জ, আয়াতঃ ৪১)
হাদীসের মধ্যেও সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ দেয়ার নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন,
مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِতোমাদের কেউ অন্যায় কিছু দেখে সে যেনো তা হাত দ্বারা বাধা দেয়, আর যদি হাত দিয়ে বাধা দিতে না পারে তাহলে মুখ (কথা) দিয়ে বাধা দিবে, আর যদি সে তাও না পারে তাহলে যেনো অন্তত অন্তর দিয়ে বাধা দেয়। এটিই ঈমানের দুর্বলতম স্তর। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১৮৬)
উপরিউক্ত আয়াত-হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা ইসলামের একটি বৈশিষ্ট্য এবং প্রত্যেক মুসলিমের আবশ্যিক দায়িত্ব। তবে এই দায়িত্ব প্রত্যেকের মেধা, ক্ষমতা ও পদ-পদবির কারণে কমবেশি হয়।
রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী বা পুলিশ প্রধান কিংবা পরিবারের কর্তার আর একজন সাধারণ মানুষের এই ক্ষেত্রে দায়িত্ব এক নয়। এই কাজ করার জন্য শর্ত রয়েছে। বিশেষ করে অন্যায় থেকে নিষেধ করার ক্ষেত্রে নীতিমালা ও শর্তাবলি রয়েছে। যে যার মত যার তার ওপরে যদি এই দায়িত্ব প্রয়োগ করতে যায় তাহলে এর উদ্দেশ্য ব্যহত হবে এবং পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। যা কখনই কাম্য নয়।
সাহাবীগণ, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণ সব সময়ই সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের পরবর্তীতে তাদের অনুসারীরাও প্রত্যেক যুগে এমনকি আজকের যুগেও এই কাজ করে যাচ্ছেন। কিয়ামত পর্যন্ত তারা তাদের এই দায়িত্ব পালন করে যাবেন, ইনশা-আল্লাহ। কেউ কেউ অভিযোগ তোলেন যে সালাফী মানহাজের অনুসারীরা সৎ কাজের আদেশ দেন না ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন না। তাদের এই বক্তব্য সঠিক নয়।
তবে এই মানহাজের অনুসারীর দাবীদার কেউ যদি না করেন তাহলে সেটা ব্যক্তিগত ত্রুটি। এটি মানহাজের ত্রুটি নয়। আর কেউ যদি এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সালাফদের মানহাজকে অনুসরণ না করে নিজস্ব চিন্তাচেতনার ভিত্তিতে এই কাজ করতে যান তিনি পথভ্রষ্ট হবেন নিশ্চিত।
এজন্যই দেখা যায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিম শাসকদেরকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার কাজ সাধারণ জনগণদের কেউ কেউ একাকী কিংবা কয়েকজন মিলে গ্রুপ বানিয়ে ইচ্ছামত নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়ে “সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার” নামে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধে নেমে পড়ে। ফলে শাসকের পতন তো করতে পারেই না উল্টো লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুর প্রাণহানি হয়। কখনো শাসকের পতন হলেও আগের শাসক থেকে বেশি খারাপ শাসক ক্ষমতা দখল করে। ফলে অবস্থা আরো খারাপ হয়।
এই কথার উদ্দেশ্য এই নয় যে, শাসককে সংশোধন করা যাবে না বা তার প্রতি সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ দায়িত্ব প্রযোজ্য নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে, সালাফদের নীতি ও মানহাজকে অনুসরণ না করে এই কাজ করতে গেলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। অতীতেও হয়েছে এখনো হচ্ছে।
সালাফদের ব্যাখ্যা অনুযায়ীই সালাফী মানহাজের বৈশিষ্ট্য বুঝতে হবে এবং ধারণ করতে হবে। তাদের বুঝের বাইরে গিয়ে বুঝতে গেলে সমস্যা নতুন নতুন সমস্যা সৃষ্টি হবে এবং আগের সমস্যা বাড়বে।
সহীহ আকিদা RIGP
সালাফী মানহাজের বৈশিষ্ট্য (পর্ব-০৫)
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ
সালাফী মানহাজের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মানুষদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয়া ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা। এই কাজটি ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কুরআন ও সুন্নাহতে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ-এর প্রতি উৎসাহিত করে অসংখ্য নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে।
প্রত্যেক নবী-রাসূল এই দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর সাহাবীগণ, তাবিঈ, তাবে তাবিঈ, ইমাম ও মুজাদ্দিদগণ সবাই নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী এই দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই এই কাজটি সালাফী মানহাজের বৈশিষ্টে পরিণত হয়েছে।
“সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ” ছাড়া কোনো মানবসমাজ টিকবে না। সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি গড়ে ওঠার পেছনে এর ভূমিকা অত্যধিক। কুরাআনে আল্লাহ তা’আলা মুসলিমদেরকে উত্তম জাতি বলে ঘোষণা করে তাদেরকে তিনটি কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এই তিনটি কাজের মধ্যে প্রথম দুটি কাজই হচ্ছে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ।
আল্লাহ বলেন,
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِতোমরা হলে সর্বোত্তম উম্মত, যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর যদি আহলে কিতাব ঈমান আনত, তবে অবশ্যই তা তাদের জন্য কল্যাণকর হত। তাদের কতক ঈমানদার। আর তাদের অধিকাংশই ফাসিক। (সূরা আলে ইমরান, আয়াতঃ ১১০)
অন্য আয়াতে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন,
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌআর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়িম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত-তাওবাহ, আয়াতঃ ৭১)
যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছেন তাদের মৌলিক চারটি কাজের দুইটিই হচ্ছে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ।
আল্লাহ বলেন,
الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِতারা এমন যাদেরকে আমি যমীনে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে; আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই অধিকারে। (সূরা আল-হাজ্জ, আয়াতঃ ৪১)
হাদীসের মধ্যেও সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ দেয়ার নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন,
مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِতোমাদের কেউ অন্যায় কিছু দেখে সে যেনো তা হাত দ্বারা বাধা দেয়, আর যদি হাত দিয়ে বাধা দিতে না পারে তাহলে মুখ (কথা) দিয়ে বাধা দিবে, আর যদি সে তাও না পারে তাহলে যেনো অন্তত অন্তর দিয়ে বাধা দেয়। এটিই ঈমানের দুর্বলতম স্তর। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১৮৬)
উপরিউক্ত আয়াত-হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা ইসলামের একটি বৈশিষ্ট্য এবং প্রত্যেক মুসলিমের আবশ্যিক দায়িত্ব। তবে এই দায়িত্ব প্রত্যেকের মেধা, ক্ষমতা ও পদ-পদবির কারণে কমবেশি হয়।
রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী বা পুলিশ প্রধান কিংবা পরিবারের কর্তার আর একজন সাধারণ মানুষের এই ক্ষেত্রে দায়িত্ব এক নয়। এই কাজ করার জন্য শর্ত রয়েছে। বিশেষ করে অন্যায় থেকে নিষেধ করার ক্ষেত্রে নীতিমালা ও শর্তাবলি রয়েছে। যে যার মত যার তার ওপরে যদি এই দায়িত্ব প্রয়োগ করতে যায় তাহলে এর উদ্দেশ্য ব্যহত হবে এবং পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। যা কখনই কাম্য নয়।
সাহাবীগণ, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণ সব সময়ই সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের পরবর্তীতে তাদের অনুসারীরাও প্রত্যেক যুগে এমনকি আজকের যুগেও এই কাজ করে যাচ্ছেন। কিয়ামত পর্যন্ত তারা তাদের এই দায়িত্ব পালন করে যাবেন, ইনশা-আল্লাহ। কেউ কেউ অভিযোগ তোলেন যে সালাফী মানহাজের অনুসারীরা সৎ কাজের আদেশ দেন না ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন না। তাদের এই বক্তব্য সঠিক নয়।
তবে এই মানহাজের অনুসারীর দাবীদার কেউ যদি না করেন তাহলে সেটা ব্যক্তিগত ত্রুটি। এটি মানহাজের ত্রুটি নয়। আর কেউ যদি এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সালাফদের মানহাজকে অনুসরণ না করে নিজস্ব চিন্তাচেতনার ভিত্তিতে এই কাজ করতে যান তিনি পথভ্রষ্ট হবেন নিশ্চিত।
এজন্যই দেখা যায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিম শাসকদেরকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার কাজ সাধারণ জনগণদের কেউ কেউ একাকী কিংবা কয়েকজন মিলে গ্রুপ বানিয়ে ইচ্ছামত নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়ে “সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার” নামে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধে নেমে পড়ে। ফলে শাসকের পতন তো করতে পারেই না উল্টো লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুর প্রাণহানি হয়। কখনো শাসকের পতন হলেও আগের শাসক থেকে বেশি খারাপ শাসক ক্ষমতা দখল করে। ফলে অবস্থা আরো খারাপ হয়।
এই কথার উদ্দেশ্য এই নয় যে, শাসককে সংশোধন করা যাবে না বা তার প্রতি সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ দায়িত্ব প্রযোজ্য নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে, সালাফদের নীতি ও মানহাজকে অনুসরণ না করে এই কাজ করতে গেলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। অতীতেও হয়েছে এখনো হচ্ছে।
সালাফদের ব্যাখ্যা অনুযায়ীই সালাফী মানহাজের বৈশিষ্ট্য বুঝতে হবে এবং ধারণ করতে হবে। তাদের বুঝের বাইরে গিয়ে বুঝতে গেলে সমস্যা নতুন নতুন সমস্যা সৃষ্টি হবে এবং আগের সমস্যা বাড়বে।
0 Comments