বিদ‘আ‘ত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো:-
الشئ المخترع على غير مثال سابق
অর্থ- নবসৃষ্ট বা নব উদ্ভাবিত এমন কোন বিষয়, যার কোন দৃষ্টান্ত ইতিপূর্বে গত হয়নি।
শারী‘য়াতের দৃষ্টিতে বিদ‘আত হলো- আল্লাহ 0 প্রবর্তিত নীতি, পন্থা ও পদ্ধতি বহির্ভূত নীতি, পন্থা বা পদ্ধতিতে আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করা।
কিংবা এভাবেও বলা যায় যে, বিদ‘আত হলো:- এমন কোন পন্থা বা পদ্ধতিতে আল্লাহ্র (b) ‘ইবাদাত করা, যা রাছূল 1 এবং খুলাফায়ে রাশিদাহ্র অনুসৃত পন্থা ও পদ্ধতি বহির্ভূত।
বিদ‘আতের প্রথম যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে, সেটা ক্বোরআনে কারীমের নিম্নোক্ত আয়াত থেকে নেয়া হয়েছে:-
أَمْ لَهُمْ شُرَكَاء شَرَعُوا لَهُم مِّنَ الدِّينِ مَا لَمْ يَأْذَن بِهِ اللَّهُ.১
অর্থাৎ- তাদের কি এমন কোন শরীক আছে যারা তাদের জন্য এমন ধর্মপন্থা প্রবর্তন করে দিয়েছে যার অনুমতি আল্লাহ দেননি?২
বিদ‘আতের দ্বিতীয় অর্থটি রাছূল 1 এর নিম্নোক্ত হাদীছ থেকে নেয়া হয়েছে:-
عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ، تَمَسَّكُوا بِهَا، وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ.৩
অর্থ- তোমাদের উপর অবশ্য কর্তব্য হলো আমার এবং আমার পরে খুলাফায়ে রাশিদাহ্র ছুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করা। তোমরা এটাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো এবং মাঁড়ি দাত দিয়ে একে কামড়ে ধরো (অর্থাৎ সুদৃঢ়ভাবে ছুন্নাতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকো) এবং নতুন প্রবর্তিত বা উদ্ভাবিত বিষয়-বস্তু (বিদ‘আত) হতে সাবধান থেকো।৪
অতএব যদি কেউ রাছূলুল্লাহ 1 এবং তাঁর খুলাফায়ে রাশিদাহ্র ছুন্নাহ বহির্ভূত কোন পন্থা ও পদ্ধতিতে আল্লাহ্র (8) ‘ইবাদাত করে, তাহলে তার এই ‘ইবাদাত আল্লাহর (7) নাম ও গুণাবলী (আছমা ও সিফাত) সম্পর্কিত হোক কিংবা আল্লাহ্র (0) আদেশ নিষেধ বা তাঁর নিদের্শিত নিয়ম কানুন, বিধি-বিধান তথা শারী‘য়াত সম্পর্কিত হোক, সর্বাবস্থায়ই সে বিদ‘আতী তথা ইছলামে নতুন প্রথা প্রবর্তনকারী বলে গণ্য হবে।
তবে এ ছাড়া মানব জীবনের অন্যান্য স্বাভাবিক, অভ্যাসজাত বিষয়াদী এবং সামাজিক রীতি-প্রথা সম্পর্কিত অন্যান্য ছোট-খাঁটো সাধারণ যে সব বিষয় রয়েছে, সে সব বিষয়ে নতুন কিছু প্রবর্তনকে যদিও শাব্দিক অর্থে বিদ‘আত বলা হয়, তবে তা শারী‘য়াতের দৃষ্টিতে বিদ‘আত নয় এবং রাছূল 1 আমাদেরকে যে সব বিদ‘আত থেকে সতর্ক ও সাবধান করেছেন, এগুলো সে সবের পর্যায়ভুক্ত নয়।
ইছলামে বিদ‘আতে হাছানাহ বলতে কিছু নেই, বরং দ্বীনের (‘ইবাদাতের) মধ্যে যে কোনরূপ নতুন কিছু আবিষ্কার বা প্রবর্তনই হচ্ছে বিদ‘আত এবং তা কঠোরভাবে নিন্দনীয়, নিষিদ্ধ এবং প্রত্যাখ্যাত।
(সূত্র:- মাজমূ‘উ ফাতাওয়া লিশ্শাইখ সালিহ্ আল ‘উছাইমীন, ভলিয়ম- ২, পৃষ্ঠা নং- ২৯১)
১. سورة الشورى- ٢١ ↩
২. ছূরা আশ্শুরা- ২১ ↩
৩. أحمد, أبو داؤد, الترمذي و إبن ماجه ↩
৪. মুছনাদে ইমাম আহ্মাদ, আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ↩
নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন sahih-akida.simplesite.com jannaterpoth.wildapricot.org