শুরু করছি মহান দয়ালু ও পরম করুণাময় আল্লাহর নামে। শান্তি অবতীর্ণ হোক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ, তার সঙ্গীসাথী ও পরিবারবর্গের ওপর।
•বর্তমানকালে যেসব কিতাবে সালাফী মানহাজ সুষ্ঠুভাবে তুলে ধরে হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি কিতাব হলো “আল-আজউয়িবাতুল মুফীদাহ ‘আন আসইলাতিল মানাহিজিল জাদীদাহ”, যেটি ফাদ্বীলাতুশ-শাইখ, আল-ইমাম, আল-‘আল্লামাহ ড. সালিহ বিন ফাওযান বিন ‘আবদিল্লাহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) এবং তার ছাত্র শাইখ জামাল ইবনু ফুরাইহান আল-হারিসী (হাফিযাহুল্লাহ) এর একটি যৌথকর্ম। কিতাবটির মূল অংশটি মানহাজ সম্পর্কে, বিশেষ করে বর্তমানকালে সালাফিয়্যাহ’র নামে যেসব বাতিল মানহাজ ও মূলনীতি ছড়ানো হয় সেগুলো সম্পর্কে ‘আল্লামাহ ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ)-কে করা প্রশ্ন ও প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে সাজানো হয়েছে। আর কিতাবটির টীকায় শাইখ হারিসী (হাফিযাহুল্লাহ) বিভিন্ন বিদ‘আতী মানহাজ, মূলনীতি এবং এগুলোর ধারক ও বাহকদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা, সমালোচনা ও রাদ্দ করেছেন। সম্পূর্ণ কিতাবটিই ‘আল্লামাহ ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) কর্তৃক সম্পাদিত, এবং এই কিতাবটি ‘আল্লামাহ ফাওযান ও শাইখ হারিসী (হাফিযাহুমাল্লাহ), উভয়ের মানহাজ এবং বিভিন্ন বাতিল মানহাজ ও মানহাজধারীদের ব্যাপারে তাদের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটায়। যেসব মুখোশধারী বিদ‘আতীরা ‘আল্লামাহ ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) সহ অন্যান্য কতিপয় সালাফী ‘উলামার পেছনে লুকিয়ে থেকে মানুষকে ধোঁকা দেয়, নিজেদের বাতিল মানহাজ প্রচার করে, এবং সালাফীদের সাথে শত্রুতা করে, তাদের বিরুদ্ধ এই কিতাবটি হলো সালাফীদের এক শক্তিশালী হাতিয়ার। কিতাবটির একস্থানে শাইখ হারিসী (হাফিযাহুল্লাহ) বর্তমানকালের যেসব দাঈ ও গোষ্ঠী পূর্ববর্তী ভ্রান্ত মতবাদগুলোর ধারক ও বাহক তাদের ব্যাপারে আলোকপাত করেন। নিম্নে আমরা পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার বঙ্গানুবাদ পেশ করছি।
•কেউ বলতে পারে, “কেন আপনারা সবসময় মু‘তাযিলাহ, জাহমিয়্যাহ, যানাদিক্বাহ, আশ‘আরী, খাওয়ারিজ এবং মুরজি’আহদের ব্যাপারে কথা বলেন? আর ‘আক্বীদাহ বিষয়ক মাসআলাহসমূহ আলোচনা করার ক্ষেত্রে সর্বদা কেন তাদের কথা উল্লেখ করেন? অথচ এই ফিরক্বাহগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং তাদের অনুসারীরাও এখন মাটির নীচে চলে গেছে। যেমনটা বলা হয়ে থাকে, ‘যুগ তাকে খেয়ে ও পান করে শেষ করে ফেলেছে’, সুতরাং এই আলোচনার (এসব ফিরক্বাহ’র বিরুদ্ধে কথা বলার) কোন প্রয়োজন নেই।”
আমরা বলি, –আর আল্লাহই তাওফীক্বদাতা– হ্যাঁ, এই ফিরক্বাহগুলো অতীতে ছিলো এবং এগুলোর প্রতিষ্ঠাতা ও অনুসারীরা অনেক যুগ আগেই মারা গেছে। তবে তাদের মতাদর্শ ও ‘আক্বীদাহ অস্তিত্বহারা হয়ে যায়নি। বরং তাদের দ্বারা প্রভাবিত অনুসারীরা আমাদের মাঝেই উপস্থিত রয়েছে। সুতরাং তাদের ‘আক্বীদাহ ও মতাদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়েছে। এমন লোকেরা রয়েছে, যারা এসব মতাদর্শ প্রচার ও প্রচলন করে।
মু‘তাযিলাহদের ‘আক্বীদাহ: এটি এখনো বিদ্যমান রয়েছে। বরং যারা নিজেদের ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত করে, তাদের অনেকের মধ্যে এটি (মু‘তাযিলী ‘আক্বীদাহ) ছড়িয়ে রয়েছে। কেননা শী‘আদের সকল উপদল –এমনকি যাইদিয়্যাহ’রাও– মু‘তাযিলী ‘আক্বীদাহর ওপর প্রতিষ্ঠিত।
আশ‘আরিয়্যাহ: বর্তমানে মুসলিম জনসাধারণের মধ্যে এই ফিরক্বাহ’র উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে।
ইরজা’: এটিও বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে। হানাফীরা শুধু তাসদীক্ব (সত্য বলে বিশ্বাস করা) এবং ক্বওল (মুখে স্বীকৃতি) কেই ঈমান মনে করে। তাদের মতে আমল ঈমানের অন্তর্ভুক্ত নয়। যদিও এই ইরজা’ আহলুল কালামদের সুপরিচিত ইরজা’র চেয়ে অধিকতর হালকা।
যদিও সকল যুগেই ‘আক্বীদাহর ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আদর্শ বিরোধী এই মতাদর্শ ও ‘আক্বীদাহগুলো ছিল, তথাপি প্রত্যেক যুগেই এমন কিছু লোক ছিল যারা এই ‘আক্বীদাহকে ডিফেন্ড করত।
সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটি (আল-লাজনাতুদ দা’ইমাহ লিল বুহূসিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) ৮ই রাবী‘উস সানী, ১৪২১ হিজরী তারিখে ২১৪৩৬ নং ফাতওয়ায় ইরজা’ থেকে সতর্ক করেছে।
স্থায়ী কমিটি বলেছে, “যারা আমলকে ঈমানের সংজ্ঞা থেকে বের করে দিয়েছে, সেই মুরজি’আহদের বক্তব্য: তারা বলে, অন্তর দ্বারা বিশ্বাস করাই হল ঈমান, অথবা স্রেফ অন্তর দ্বারা বিশ্বাস করা এবং মুখে উচ্চারণ করাই ঈমান। তাদের কাছ আমল স্রেফ পরিপূর্ণতার শর্ত (শারত্বে কামাল), ঈমানের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং যে ব্যক্তি অন্তর দ্বারা স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মুখে উচ্চারণ করেছে, সে তাদের নিকট পরিপূর্ণ মু’মিন; যদিও সে ওয়াজিব পরিত্যাগ ও হারাম সংঘটনের মত কর্মকাণ্ড করে থাকে। সে জান্নাতে প্রবেশের হক্বদার, যদিও সে কখনও কোন ভালো কাজ করেনি।...
নিঃসন্দেহে এই কথা বাত্বিল, সুস্পষ্ট ভ্রষ্টতা এবং কিতাব-সুন্নাহ ও পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকল আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আদর্শ পরিপন্থী। এই মতবাদ অকল্যাণ ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের জন্য (অন্যায়কর্মের বৈধতার) দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়।...”
[দ্রষ্টব্য: আত-তাহযীর মিনাল ইরজা’ ওয়া বা‘দ্বিল কুতুবিদ দা‘ইয়াতি ইলাইহি; পৃষ্ঠা: ৮-৯]
আর সর্বেশ্বরবাদী ও অন্যান্য যিনদীক্বদের ব্যাপারটি হল: তারাও (এই যুগে) বর্তমান রয়েছে। যেহেতু ইবনু ‘আরাবী আত্ব-ত্বাঈ’র অনুসারীরা বিদ্যমান রয়েছে। আর তারা হল চরমপন্থী সূফী।
এর ওপর ভিত্তি করে, যখন আমরা এসব ফিরক্বাহগুলোর ব্যাপারে আলোচনা করি, তখন আমরা পচা ও জীর্ণ অস্থির ব্যাপারে কথা বলি না। বরং আমরা এমন ফিরক্বাহসমূহের ব্যাপারে কথা বলি, যেগুলো বর্তমানে মুসলিমদের মাঝে বিদ্যমান রয়েছে। এটি এমন একটি বিষয়, যা কোন ত্বালিবুল ‘ইলমের অজানা নয়। এ ব্যাপারে –এই ফিরক্বাহগুলো সম্পর্কে আমাদের আলোচনার ব্যাপারে– কেবল তারাই আমাদের বিরোধিতা করে, যারা প্রকৃত বিষয় জানে না, কিংবা জেনেশুনে লোকদের মাঝে সংশয় সৃষ্টি করতে চায়, আর বাত্বিল ‘আক্বীদাহ ছড়িয়ে দিতে চায়।
সুতরাং তার জন্য জরুরি হল বিরোধিতা করার আগে সে জিজ্ঞাসা করবে। এটি একটি সংক্ষিপ্ত উত্তর। অন্যথায় এই বিষয়টি অনেক দীর্ঘ। আর আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।
•
আপনার সামনে কিছু উদাহরণ পেশ করা হল, যা স্পষ্ট করে দিবে যে, ওই ধ্বংসাত্মক ফিরক্বাহগুলোর মতাদর্শ এখনও বিদ্যমান রয়েছে:
এক. সাইয়্যিদ ক্বুত্বুব যিলালুল ক্বুরআনে (৪/২৩২৮) বলেছে, “ক্বুরআন হল আসমান-জমিনের মত বাহ্যিক সৃষ্টি (القرآن ظاهرة كونية كالأرض والسموات)।” এটি ক্বুরআনকে মাখলূক্ব (সৃষ্ট) বলার মতবাদ। জাহমিয়্যাহ ও অন্যান্যরা এই মত পোষণ করে থাকে।
সে ক্বুরআনের আয়াতসমূহকে তার যিলালুল ক্বুরআনে ‘মিউজিক্যাল টোন’, ‘মিউজিক্যাল স্টাইল’ প্রভৃতি বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত করেছে। উদাহরণস্বরূপ সূরাহ শামস, ফাজর, গাশিয়াহ, ত্বারিক্ব, ক্বিয়ামাহ প্রভৃতি সূরাহ’য়। সূরাহ আ‘লার তাফসীরে (যিলাল, পৃ. ৩৮৮৩) আল্লাহকে নির্মাতা (সানি‘) বলেছে। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ অনেক ঊর্ধ্বে রয়েছেন।
•
দুই. সে যিলালে (৬/৪০০২) সূরাহ ইখলাসের ব্যাখ্যায় বলেছে,
«إنها أحدية الوجود، فليس هناك حقيقة إلا حقيقته، وليس هناك وجود حقيقي إلا وجوده وكل موجود آخر فإنما يستمد وجوده من ذلك الوجود الحقيقي».
“নিশ্চয়ই এটি হল একক সত্তাগত অস্তিত্ব। তাঁর বাস্তবতা ছাড়া কোন বাস্তবতা নেই, আর তাঁর অস্তিত্ব ছাড়া কোন প্রকৃত অস্তিত্ব নেই। (তাঁর অস্তিত্ব ব্যতীত) অন্য যত অস্তিত্ব আছে, তার সবই ওই প্রকৃত অস্তিত্ব থেকে গৃহীত।” এটা সর্বেশ্বরবাদের ‘আক্বীদাহ।
আল-‘আল্লামাহ আশ-শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,
«قرأت تفسيره –يعني: ظلال القرآن لسيد قطب– لسورة الإخلاص، وقد قال قولًا عظيمًا فيها، مخالفًا لما عليه أهل السنة والجماعة؛ حيث إن تفسيره لها يدل على أنه يقول بوحدة الوجود».
“আমি তাঁর প্রণীত –অর্থাৎ, সাইয়্যিদ ক্বুত্বুবের যিলালুল ক্বুরআন– সূরাহ ইখলাসের তাফসীর পড়েছি। তিনি এতে ভয়াবহ কথা বলেছেন, যা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আদর্শ বিরোধী। তাঁর এই সূরাহ’র তাফসীর প্রমাণ করে যে, তিনি সর্বেশ্বরবাদের মত পোষণ করেন।”
[বারা’আতু ‘উলামাইল উম্মাহ, পৃষ্ঠা: ৪২]
আল-মুহাদ্দিস আশ-শাইখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,
«نقل سيد قطب كلام الصوفية ولا يمكن أن يفهم منه إلا أنه يقول بوحدة الوجود».
“সাইয়্যিদ ক্বুত্বুব সূফীদের কথা বর্ণনা করেছেন। এই কথা থেকে এটা ছাড়া অন্য কিছু বুঝা সম্ভব নয় যে, তিনি সর্বেশ্বরবাদের মত পোষণ করেন।”
[প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা: ৩৭]
এছাড়াও তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) শাইখ রাবী‘ বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) প্রণীত “আল-‘আওয়াসিম মিম্মা ফী কুতুবি সাইয়্যিদ ক্বুত্বুব মিনাল ক্বাওয়াসিম” গ্রন্থের প্রারম্ভিকায় (পৃষ্ঠা: ৩; ২য় প্রকাশ, ১৪২১ হি.) স্বহস্তে এই শব্দগুচ্ছ লিখেছেন,
«كل ما رددته على سيد قطب حق وصواب، ومنه يتبين لكل قارئ مسلم على شيء من الثقافة الإسلامية أن سيد قطب لم يكن على معرفة بالإسلام بأصوله وفروعه، فجزاك الله خير الجزاء أيها الأخ (الربيع) على قيامك بواجب البيان والكشف عن جهله وانحرافه عن الإسلام».
“আপনি সাইয়্যিদ ক্বুত্বুবকে যে রদ করেছেন তার সবই সত্য ও সঠিক। সামান্য হলেও ইসলামী সংস্কৃতির উপর আছে, এমন প্রত্যেক মুসলিম পাঠকের কাছে এথেকে স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হবে যে, সাইয়্যিদ ক্বুত্বুব ইসলামের মৌলিক ও শাখাগত কোন জ্ঞানের উপরই প্রতিষ্ঠিত ছিল না। হে ভাই রাবী‘, আপনি তার অজ্ঞতা ও ইসলাম থেকে তার বিপথগামী হয়ে যাওয়ার বিষয়টি উন্মোচিত করে যে অবশ্য পালনীয় কর্ম সম্পাদন করেছেন, তজ্জন্য আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।”
[এটি ‘আল-মাজাল্লাতুস সালাফিয়্যাহ’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে; ৭ম সংখ্যা; সন: ১৪২২ হিজরী; পৃষ্ঠা: ৪৬]
•
তিন. মুহাম্মাদ ক্বুত্বুব (সাইয়্যিদ ক্বুত্বুবের ভাই) বলেছে,
«إن الأمر يحتاج إلى دعوة الناس من جديد إلى الإسلام، لا لأنهم –في هذه المرة– يرفضون أن ينطقوا بأفواههم: لا إله إلا الله محمد رسول الله، كما كان الناس يرفضون نطقها في الغربة الأولى، ولكن لأنهم –في هذه المرة– يرفضون المقتضى الرئيسي لــ”لا إله إلا الله“ وهو: تحكيم شريعة الله».
“নিশ্চয়ই এটি জরুরি যে, লোকদেরকে নতুন করে ইসলামের দিকে ডাকতে হবে। একারণে নয় যে, (এই দফায়) তারা তাদের মুখ দিয়ে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” বলতে অস্বীকার করছে, যেমনভাবে লোকেরা দা‘ওয়াহর প্রথমদিকে এটি বলতে অস্বীকার করত। বরং একারণে যে, লোকেরা (এই দফায়) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র প্রধান দাবিকেই প্রত্যাখ্যান করছে। আর তা হল আল্লাহ’র আইন দিয়ে বিচার করা।”
[ওয়াক্বি‘উনাল মু‘আসির, পৃষ্ঠা: ২৯]
আমি বলছি: এটি ব্যাপকভাবে (মুসলিম) জনসাধারণের প্রতি তাকফীর। নচেৎ সে কীভাবে এই হুকুম দিতে পারে যে, তারা আল্লাহ’র আইন প্রত্যাখ্যান করেছে? আর কীভাবে সে তাদের সাথে ইসলাম পূর্ব যুগের জাহিলিয়্যাহ’র সাদৃশ্যতা দিতে পারে? কোনরূপ বিশদ বিবরণ (তাফসীল), অথবা যারা আল্লাহ’র আইন দিয়ে বিচার করে এবং যাদের আল্লাহ’র কিতাব ছাড়া অন্য কোন সংবিধান নেই তাদের জন্য কোনরূপ স্বতন্ত্রতা না করেই।
আর এ ধরনের সরলীকরণ এসব লেখকদের দ্বারা প্রায়শই ঘটে থাকে। যেন তারা আরব উপদ্বীপের কেন্দ্রে অবস্থিত সুবৃহৎ সালাফী ইসলামী রাষ্ট্রের অস্তিত্ব স্বীকার করে না এবং অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোতে আহলেহাদীস মুসলিম জনসাধারণ এবং তারা ব্যতীত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ, যারা সুন্নাহ এবং সালাফদের মাযহাবের সাহায্যকারী– তাদের অস্তিত্বও স্বীকার করে না।
আর এটিও একটি বিস্ময় যে, ওরা (তাকফীরীরা) –অথবা ওদের কেউ কেউ– যখন এ ধরনের মন্তব্য করে থাকে, তখন তারা এই ইসলামী রাষ্ট্র সৌদি আরবেই বসবাস করে। এগুলোতে (মন্তব্যগুলোতে) পাঠকদের জন্য বিপজ্জনক সংশয় (বিভ্রান্তি) রয়েছে। এসব কথা সরলমনা পাঠকদের বোঝায় যে, বর্তমানে এমন কোন ইসলামী রাষ্ট্র নেই, যেটি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” উচ্চারণ করে, এর দাবি অনুযায়ী কাজ করে এবং আল্লাহ’র আইন দিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করে। আর তাওহীদপন্থী ব্যক্তিবর্গ বা জামা‘আতের অস্তিত্ব ভূপৃষ্ঠে নেই। এটি
তাদের পক্ষ থেকে পাঠকদের সহিত প্রতারণা, তাদেরকে বিপথগামী করা ও তাদের মধ্যে সংশয় তৈরি করার মাধ্যম, যাতে তারা পাঠকদের তাকফীরের (ফিতনাহ’র) মধ্যে ফেলতে পারে। আর অসংখ্য পাঠক তাতে পতিতও হয়েছে।
অতএব ত্বালিবুল ‘ইলম যেন এই প্রাধান্য বিস্তারকারী বিষয়টির ব্যাপারে সতর্ক হয়, যেটি এ জাতীয় গ্রন্থের মাধ্যমে অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে সুপথপ্রদর্শন করুন।
•
চার. দা‘ওয়াহর সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে এমন একজন (সালমান আল-‘আওদাহ) বলেছে, “নিজের গুনাহ প্রকাশ করার অন্তর্ভুক্ত হল—একজন ব্যক্তি স্বীয় গুনাহ নিয়ে তার বন্ধুদের সামনে গর্ব করে। সে প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে শুরু করে যে, সে এটা এবং এটা করেছে। আর তারপর সে তার গুনাহের তালিকা পেশ করতে শুরু করে। এমন লোককে ক্ষমা করা হবে না! যদি না সে তাওবাহ করে। কারণ নাবী ﷺ তার ব্যাপারে রায় দিয়েছেন যে, তাকে ক্ষমা করা হবে না, ‘আমার সমস্ত উম্মাহকে ক্ষমা করা হবে...’।”
আমি বলছি, হাদীসের কোথায় আছে যে, আল্লাহ ওদের ক্ষমা করবেন না?! অতঃপর আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের কে বলেছে যে, কোন ব্যক্তি গুনাহরত অবস্থায় মারা গেলে –যদিও সে প্রকাশ্যে স্বীয় পাপের কথা ব্যক্ত করে– আল্লাহ তাকে তাওবাহ ছাড়া ক্ষমা করবেন না? সে ব্যক্তি কি আল্লাহ’র ইচ্ছাধীন নয়, তিনি যদি চান তাহলে তাকে মাফ করে দিবেন, আর তিনি যদি চান তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়ার পর জান্নাতে প্রবেশ করাবেন? অন্যথায় এটি তো খারিজী ও মু‘তাযিলীদের মতবাদ!
তারপর এই দা‘ঈ অব্যাহতভাবে বলেছে, “আরও জঘন্য এবং মারাত্মক বিষয় হল—তাদের মধ্যে
কারও এরূপ বলা যে, ‘আমার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে’, ‘আমার বান্ধবী রয়েছে’, ‘আমার কাছে (অশ্লীল) ম্যাগাজিন আছে’। এমন লোক গুনাহর কথা বর্ণনা করে পরিতৃপ্ত হয়। তাদের কেউ কেউ নিজেদের গুনাহ টেপসমূহে রেকর্ড করে। তাদের জন্য কোন সম্মান নেই। কেননা তারা তাদের এই কর্মের মাধ্যমে মুরতাদ হয়ে গেছে! সে রেকর্ড করে, কীভাবে এক তরুণীকে সে ধোঁকা দিয়েছিল এবং তার সাথে অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়েছিল। এটি রিদ্দাতুন ‘আনিল ইসলাম তথা ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়া। এমন লোক জাহান্নামে চিরস্থায়ীভাবে থাকবে, যদি না সে তাওবাহ করে।”
[“জালসাহ ‘আলার রাসীফ”– নামক অডিও ক্লিপ থেকে]
গায়করা যারা তরুণদের মাঝে তাদের ক্যাসেট বিতরণ করে, যে ক্যাসেটগুলো পাপকাজের দিকে এবং তরুণ-তরুণীদেরকে ধোঁকা দেওয়ার দিকে আহ্বান করে, তাদের ব্যাপারে সে বলেছে, “আমি এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত যে, এই কাজের কাজী সম্পর্কে কমপক্ষে এটা বলা যায় যে, সে গুনাহকে ছোট করে দেখে। আর নিঃসন্দেহে গুনাহকে ছোট করে দেখা –বিশেষত এটি যখন কাবীরাহ গুনাহ হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে এটি হারাম হয়– আল্লাহ’র সাথে কুফর। সুতরাং তাদের এই কাজ যে ইসলাম থেকে খারিজকারী কর্ম, সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আমি এটি বলছি এবং আমার হৃদয় এ ব্যাপারে প্রশান্ত ও সম্পূর্ণভাবে স্থিতিশীল।”
[“আশ-শাবাব আস’ইলাহ ওয়া মুশকিলাত”– শীর্ষক অডিও ক্লিপ থেকে]
আমি বলছি, নিশ্চয়ই তাকফীর এবং বিভিন্ন সংবাদের মাধ্যমে লোকদের মধ্যে পাপকাজের প্রচার করাকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যে, এটি গুনাহকে তুচ্ছ গণ্য করা– হিসেবে বিবেচিত, যা কুফরের দিকে ঠেলে দেয়; এটি কাবীরাহ গুনাহের কারণে তাকফীর করার অতি স্পর্ধা ও আল্লাহভীতির অভাব প্রমাণ করে। এটি খারিজীদের মানহাজ। যেহেতু তারা কাবীরাহ গুনাহের কারণে তাকফীর করে।
কেননা সে ব্যক্তি (পাপী) যা বলে, তথা পাপের কথা এবং পাপাচারীদের সাথে তার সম্পর্কের কথা বলে বেড়ানোর মতো বিষয়। এ জাতীয় কথাবার্তা দ্ব্যর্থবোধক। এগুলো ইস্তিহলালের (হারামকে হালাল বলে বিশ্বাস করা) সুস্পষ্ট ঘোষণা নয়। হতে পারে, তার এই মন্দ কাজের পেছনে কারণ হলো অজ্ঞতা। একারণে এক্ষেত্রে উপদেশ দেওয়াই বাঞ্ছনীয়, তাকফীর করা নয়। এটাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ত্বরীক্বাহ। আর গুনাহকে তুচ্ছ মনে করা ঠাট্টাবিদ্রুপের (ইস্তিহযা’) শামিল নয়। বরং প্রত্যেক গুনাহগার ব্যক্তি যে গুনাহ করে, হোক তা কাবীরাহ বা সাগীরাহ, সে তা (গুনাহ) ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ মনে করার পরই সংঘটন করে। সুতরাং যে ব্যক্তি গুনাহকে তুচ্ছ মনে করে, সে ঠাট্টাবিদ্রুপকারী (মুসতাহযী’) নয়। সুতরাং আর কে নিষ্পাপ রইল? আর আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।
•
পাঁচ. আরেকজন (নাসির আল-‘উমার) প্রশ্ন করে নিজেই জবাব দিয়ে বলেছে, “ভেবে দেখুন, আমাদের সমাজে যেসব মন্দ বিষয় উপস্থিত রয়েছে সেগুলো কি শুধুই গুনাহ? বর্তমানে অসংখ্য লোক মনে করে যে, সুদ স্রেফ একটি পাপ বা কাবীরাহ গুনাহ, মাদক ও নেশাদার দ্রব্য সেবন করা শুধুই গুনাহ, ঘুষ শুধু একটি পাপ অথবা একটি কাবীরাহ গুনাহ। না, হে আমার ভাইয়েরা! আমি এই ব্যাপারে গবেষণা করেছি এবং আমার কাছে এখন এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, আমাদের সমাজের অনেক লোক সুদকে হালাল মনে করে। আল্লাহর নিকট এথেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি! আমি আপনাদেরকে আল্লাহ’র ওয়াস্তে জিজ্ঞেস করছি, আপনারা কি জানেন যে, বর্তমানে আমাদের দেশের সুদী ব্যাংকগুলোতে দুই মিলিয়নেরও বেশি লোক জড়িত রয়েছে? আল্লাহ’র কসম, এই মিলিয়ন মিলিয়ন লোকেরা জানে যে সুদ হারাম, তথাপি তারা এই কাজ করছে এই অবস্থায় যে, এটি শুধুই একটি গুনাহ? না, আল্লাহ’র কসম!!
সুতরাং পাপাচারিতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার কারণে বর্তমান যেই ভয়াবহতা বিদ্যমান রয়েছে তা হল—অনেকেই এই কাবীরাহ গুনাহগুলোকে হালাল মনে করছে। আল্লাহ’র কাছে এথেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”
[“আত-তাওহীদ আওয়্যালান”– শীর্ষক অডিও ক্লিপ থেকে]
আমি (এই বক্তব্যের ব্যাপারে) অনুরূপ কথাই বলছি, যা আমি আগের উদাহরণের ব্যাপারে বলেছি: তবে আমার বুঝ অনুযায়ী এই বক্তব্যটি এর কথকের জন্য অধিক ক্ষতিকর। একারণে যে, সে ভয়ানক অতিরঞ্জন করে বলেছে, সমাজে সংঘটিত বিভিন্ন পাপাচারিতা যেমন সুদ গ্রহণ, মাদক সেবন এবং ঘুষ আদানপ্রদান, এগুলো নিছক পাপ বা কাবীরাহ গুনাহ নয়। আর সে এ ব্যাপারে আল্লাহর নামে শপথ করেছে।
আর এটি তেমনই, যেমনটি আমি পূর্বোক্ত উদাহরণের ব্যাপারে আমার কথায় ইশারা করেছি।
এভাবে দৃঢ় রায় দেওয়া যে, যে ব্যক্তি এই গুনাহগুলো করে সে এগুলোকে হালাল বলে বিশ্বাস করে, কারো কাছ থেকে এরূপ শোনা ছাড়াই যে, সে বলছে, ‘সুদ হালাল, ঘুষ খাওয়া হালাল, মাদক ও নেশাদার দ্রব্য সেবন করা হালাল’ –এ ধরনের অভিব্যক্তি না শুনেই তাকফীরের সিদ্ধান্তে যাওয়া, যে অভিব্যক্তিগুলো ইস্তিহলালের ব্যাপারে সঠিক প্রমাণভিত্তিক সাক্ষ্য দেয়–, বরং নিছক সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে তার ব্যাপারে এই অভিযোগ আনা, এটাই এই তাকফীরীর আল্লাহভীতির দুর্বলতা এবং চিন্তাশূন্য হওয়ার সুস্পষ্ট দলিল। এটি খারিজী ও মু‘তাযিলীদের মানহাজ।
সুতরাং তাদের প্রতি এবং তাদের মতো লোকদের প্রতি আমার নাসীহাত হল, এ ধরনের বক্তব্য থেকে ফিরে আসা, যেগুলো অন্যদের আগে তাদের নিজেদের জন্যই ক্ষতিকর। বস্তুত হক্বের দিকে প্রত্যাবর্তন করা বাত্বিলের মধ্যে ডুবে থাকার চেয়ে উত্তম।
•
ছয়. ‘আক্বীদাহ উপর জনৈক ডক্টর (সাফার আল-হাওয়ালী) এক উপসাগরীয় রাষ্ট্রের একটি রেস্তোরাঁর বিজ্ঞপ্তি হাতে নিয়ে বলেছে –আর সে এটা বলেছে আল্লাহ’র একটি গৃহে, সে মাসজিদের মর্যাদার দিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি–, “এই রেস্তোরাঁয় খোলামেলাভাবে বিভিন্ন পানীয় রয়েছে। অর্থাৎ, এখানে মদ পরিবেশন করা হয়, এছাড়াও এতে রয়েছে...। এটি মাদকদ্রব্য সেবন করার দিকে স্পষ্ট আহ্বান। মদ পানের পাশাপাশি এখানে রয়েছে নারী-পুরুষের সংমিলিত নৃত্য ও নগ্নতা। আমরা এই কুফর থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”
[শারহুল ‘আক্বীদাতিত্ব ত্বাহাউয়িয়্যাহ (২/২৭২); অডিও ক্লিপ থেকে]
সে তার একটি বইয়ে বলেছে, “নিশ্চয়ই আমাদের পত্রপত্রিকায় কুফর ও ইলহাদ প্রকাশিত হয়েছে, আমাদের মজলিসগুলোতে অন্যায় কাজকর্ম ছড়িয়ে পড়েছে, আমাদের রেডিও ও টেলিভিশনগুলোতে ব্যভিচারের দিকে আহ্বান করা হচ্ছে এবং আমরা সুদ হালাল বলে ঘোষণা করেছি।”
এই বই বিভিন্ন শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে— পাকিস্তানে “কাশফুল গুম্মাহ ‘আন ‘উলামাইল উম্মাহ”– শিরোনামে, আমেরিকাতে “ওয়া‘দ কীসিনজার”– শিরোনামে, এবং মিশরে “হাক্বাইক্বু হাওলা আহদাসিল খালীজ”– শিরোনামে।
আমি বলছি, আপনি দেখবেন যে, এই কথার কথক তার জন্য এটি বলা দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছে যে, আমরা সুদ এবং তদসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে হালাল ঘোষণা করেছি। অথচ আমরা –আলহামদুলিল্লাহ– সুদকে হালাল ঘোষণা করিনি, আর না করেছে আমাদের সমাজ। আর আমরা পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চলে স্রেফ মাদকদ্রব্যের বিস্তারকে কুফর মনে করি না, যা ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। বরং, যার দ্বারা আমরা আল্লাহ’র আনুগত্য করি তা হল—দা‘ওয়াহর সাথে নিজেদের সম্পৃক্তকারী ওই ব্যক্তিবর্গ যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছে, সেগুলো সবই পাপাচারিতা, কুফর নয়। বরং এগুলো সবই কুফর দূনা কুফর (ছোট কুফর), অর্থাৎ এমন কিছু অবাধ্যতামূলক কাজ ও কাবীরাহ গুনাহ, যেগুলো ওই কার্যাদি সম্পাদনকারী ব্যক্তির পরিপূর্ণ ঈমান থাকাকে নাকচ করে, মূল ঈমানকে নাকচ করে না। যেমনটি নাবী ﷺ বলেছেন, “ব্যভিচারী ব্যভিচার করা অবস্থায় মু’মিন থাকে না। চোর চুরি করা অবস্থায় মু’মিন থাকে না।...” [সাহীহ বুখারী, হা/২৩৪৩, ৫২৫৬, ৬৩৯০, ৬৪০০, ৬৪২৫]
নিঃসন্দেহে এখানে যেই ঈমানকে নাকচ করা হয়েছে, সেটা হল পরিপূর্ণ ঈমান। আমাদের শারী‘আহতে এর অনেক নজির রয়েছে। আমরা মহান আল্লাহ’র নিকট প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমাদেরকে দ্বীনের সমঝ দান করেন এবং ওই ব্যক্তিদের ও তাদের মতো যারা আছে তাদের হক্বের দিকে পথপ্রদর্শন করেন।
•
হে আমার পাঠক ভাই –ওহে, যে সালাফী মানহাজ প্রত্যাশা করো–, এই মতবাদগুলো বর্তমান যুগের কিছু দা‘ঈদের মধ্যেই পাওয়া যায়। সেসব তরুণ তো দূরের কথা, যারা ওই দা‘ঈদের দ্বারা বিপথগামী হয়েছে, যারা ওই দা‘ঈদের সামনে বসে এবং তাদের থেকে এই মতবাদ ও ‘আক্বীদাহগুলো গ্রহণ করে, যেগুলো সালাফী ‘আক্বীদাহকে ধ্বংস করে দেয়!
এরপরেও কি আপনি বলবেন, কেন আমরা এই পথভ্রষ্ট ও বিপথগামী ফিরক্বাহগুলোর –যেগুলো অনেক আগেই অতিক্রান্ত ও ধ্বংস হয়ে গেছে– ‘আক্বীদাহ ও মানহাজের ব্যাপারে কথা বলব? অথচ তাদের ‘আক্বীদাহ অবশিষ্ট রয়েছে এবং তাদের ভ্রষ্টতা বিদ্যমান রয়েছে!
সুতরাং গভীরভাবে চিন্তা করুন, –আল্লাহ আপনাকে সফলতা দিন– তাওহীদের দা‘ওয়াত, এই দা‘ওয়াতের উপর আমল করা, সর্বযুগে ও সর্বস্থানে সকল ফিরক্বাহ থেকে সতর্ক করা এবং কিতাব ও সুন্নাহ’র আলোকে ন্যায়নিষ্ঠ সালাফদের মানহাজের দিকে প্রত্যাবর্তন করার গুরুত্ব সম্পর্কে। আর আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।
•
তথ্যসূত্র:
ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ), আল-আজউয়িবাতুল মুফীদাহ ‘আন আসইলাতিল মানাহিজিল জাদীদাহ; পৃষ্ঠা: ৫৩-৬০; দারুল মিনহাজ, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৪ হিজরী (৩য় প্রকাশ); এই গ্রন্থের টীকা লিখেছেন শাইখ হারিসী (হাফিযাহুল্লাহ), আর টীকাগুলো ইমাম ফাওযান কর্তৃক সম্পাদিত হওয়ার পর গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে।
উৎস: salafipublications.com
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা ও
রিফাত রাহমান সিয়াম