৪র্থ অধ্যায়: ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ)
·শাইখ পরিচিতি:
ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) বিংশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, মুহাক্বক্বিক্ব, মুফাসসির, ফাক্বীহ ও আদীব (সাহিত্যিক) ছিলেন। তাঁর পড়াশোনা আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি এখান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন ইমাম মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ১৩০৯ হিজরী মোতাবেক ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে মিশরের কায়রো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিশরের শারী‘আহ কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম শারী‘আহ কোর্টের সদস্য হয়েছিলেন। হাদীসশাস্ত্র, ফিক্বহশাস্ত্র, ‘আক্বীদাহশাস্ত্র এবং ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অসংখ্য পাণ্ডিত্যপূর্ণ লেখনী রয়েছে। তাঁর শ্রেষ্ঠ কর্ম হলো—মুসনাদে আহমাদের তাহক্বীক্ব; তিনি ৮০৯৯ টি হাদীসের তাহক্বীক্ব করতে পেরেছিলেন, যা মুসনাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সমপরিমাণ।
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে ইমাম আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ)’র ‘আক্বীদাহ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “শাইখ আহমাদ শাকির একজন সম্মানিত ‘আলিম। তিনি ‘আক্বীদাহগতভাবে সালাফী ছিলেন।” [দ্র.:https://m.youtube.com/ watch?v=Eo0hzFqiQCA(অডিয়ো ক্লিপ)]
বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম রাবী‘ বিন হাদী বিন ‘উমাইর আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] বলেন, “আমি বলছি, আল-‘আক্বীদাতুত্ব ত্বাহাউয়িয়্যাহ গ্রন্থটি আমরা কেবল আহলুস সুন্নাহ’র ভাষ্যগ্রন্থের মাধ্যমে চিনি। যেমন: ইবনু আবিল ‘ইয প্রণীত ভাষ্য। এই ভাষ্যগ্রন্থটি দুইজন আহলুস সুন্নাহ’র ‘আলিম তাহক্বীক্ব করেছেন। প্রথমজন হলেন প্রখ্যাত সালাফী ‘আলিম আহমাদ শাকির এবং দ্বিতীয়জন হলেন শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী।” [sahab.net]
ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেন, “শাইখ আহমাদ শাকির হাদীসশাস্ত্রের কিবার ‘আলিমদের অন্যতম।” [ইমাম রাবী‘ (হাফিযাহুল্লাহ), আয-যারী‘আহ ইলা বায়ানি মাক্বাসিদি কিতাবিশ শারী‘আহ, খণ্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ৪২০]
তিনি ১৩৭৭ হিজরী ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে পরলোকগমন করেন। আল্লাহ এই ক্ষণজন্মা মনীষীকে তাঁর রহমত দ্বারা ঢেকে দিন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসে তাঁর আবাস নির্ধারণ করুন। আমীন। সংগৃহীত: www.facebook.com/ SunniSalafiAthari (সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে)।
·
১ম বক্তব্য:
বিগত শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ, মুহাক্বক্বিক্ব ও সাহিত্যিক আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৩৭৭ হি./১৯৫৮ খ্রি.] বলেছেন,
الإخوان المسلمون خوارج العصر.
“মুসলিম ব্রাদারহুড আধুনিক যুগের খারিজী সম্প্রদায়।” [আল-ইসালাহ ম্যাগাজিন, ৪০শ সংখ্যা; পৃষ্ঠা: ১১; গৃহীত: আবুল হাসান ‘আলী বিন আহমাদ আর-রাযিহী, আর-রিসালাতুস সুগরা ইলা আখী আল-মুনতাযিম ফী জামা‘আতিল ইখওয়ানিল মুসলিমীন; পৃষ্ঠা: ৯০; দারু ‘উমার ইবনিল খাত্বত্বাব, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৮ হি./২০০৭ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
·
২য় বক্তব্য:
ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) মুসলিম ব্রাদারহুডের গুপ্তহত্যা কার্যক্রমের কঠিন সমালোচনা ও নিন্দা করেছেন। ১৯৪৮ সালের ২৮শে ডিসেম্বরে মিশরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহমূদ পাশা আন-নুক্বরাশীকে ‘আব্দুল মাজীদ হাসান নামক ব্রাদারহুডের এক কর্মী পুলিশের ছদ্মবেশে গুলি করে হত্যা করে। ইমাম আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে ২রা জানুয়ারি ১৯৪৯ ইং তারিখে ‘আল-আসাস’ পত্রিকায় “আল-ঈমান ক্বাইদুল ফাতকি (ঈমান গুপ্তহত্যার প্রতিবন্ধক)” শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেন। সম্পূর্ণ প্রবন্ধটির আরবি টেক্সট অনুবাদ-সহ পেশ করা হলো—
روَّع العالم الإسلامي والعالم العربي بل كثير من الأقطار غيرهما باغتيال الرجل، الرجل بمعنى الكلمة النقراشي الشهيد –غفر الله له، وألحقه بالصديقين والشهداء والصالحين–، وقد سبقت ذلك أحداث قدّم بعضها للقضاء، وقال فيه كلمته وما أنا الآن بصدد نقد الأحكام، ولكني كنت أقرأ كما يقرأ غيري الكلام في الجرائم السياسية وأتساءل: أنحن في بلد فيه مسلمون؟ وقد رأيت أن واجبًا علي أن أبين هذا الأمر من الوجهة الإسلامية الصحيحة حتى لا يكون هناك عذر لمعتذر، ولعلَّ الله يهدي بعض هؤلاء الخوارج المجرمين فيرجعوا إلى دينهم قبل أن لا يكون سبيل إلى الرجوع، وما ندري من ذا بعد النقراشي في قائمة هؤلاء الناس.
إن الله سبحانه توعد أشد الوعيد على قتل النفس الحرام في غير آية من كتابه: ﴿وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا﴾ [النساء: ٩٣]، وهذا من بديهيات الإسلام التي يعرفها الجاهل قبل العالم وإنما هذا في القتل العمد الذي يكون بين الناس في الحوادث والسرقات وغيرها القاتل يقتل وهو يعلم أنه يرتكب وزرًا كبيرًا.
أما القتل السياسي الذي قرأنا جدالاً طويلاً حوله فذاك شأنه أعظم وذلك شيء آخر.
القاتل السياسي يقتل مطمئن النفس راضي القلب يعتقد أنه يفعل خيرًا فإنه يعتقد بما بثَّ فيه مغالطات أنه يفعل عملاً حلالاً جائزًا إن لم يعتقد أنه يقوم بواجب إسلامي قصَّر فيه غيره، فهذا مرتد خارج عن الإسلام، يجب أن يعامل معاملة المرتدين، وأن تطبق عليه أحكامهم في الشرائع، وفي القانون هم الخوارج كالخوارج القدماء الذين كانوا يقتلون أصحاب رسول الله ويدعون من اعترف على نفسه بالكفر، وكان ظاهرهم كظاهر هؤلاء الخوارج بل خيرًا منه، وقد وصفهم رسول الله بالوحي قبل أن يراهم، وقال لأصحابه: «يحقر أحدكم صلاته مع صلاتهم، وصيامه مع صيامهم، يقرؤون القرآن لا يجاوز تراقيهم، يمرقون من الإسلام كما يمرق السهم من الرمية». [حديث أبي سعيد الخدري في صحيح مسلم ج: ١، ص: ٢٩٢-٢٩٣].
وقال أيضًا: «سيخرج في آخر الزمان قوم أحداث الأسنان، سفهاء الأحلام يقولون من قول خير البرية يقرؤون القرآن لا يجاوز حناجرهم يَمرقون من الدين كما يمرق السهم من الرمية؛ فإذا لقيتموهم فاقتلوهم، فإن في قتلهم أجرًا لمن قتلهم عند الله يوم القيامة». [حديث علي بن أبي طالب في صحيح مسلم، ج: ١، ص: ٢٩٣].
والأحاديث في هذا المعنى كثيرة متواترة، وبديهيات الإسلام تقطع بأن من استحل الدم الحرام فقد خلع ربقة الإسلام من عنقه.
فهذا حكم القتل السياسي هو أشد من القتل العمد الذي يكون بين الناس، والقاتل قد يعفو الله عنه بفضله وقد يجعل القصاص منه كفارة لذنبه بفضله ورحمته، وأما القاتل السياسي فهو مصرٌّ على ما فعل إلى آخر لحظة من حياته يفخر به ويظن أنه فعل فعل الأبطال، وهناك حديث آخر نصٌّ في القتل السياسي لا يحتمل تأويلاً فقد كان بين الزبير بن العوام وبين علي بن أبي طالب ما كان من الخصومة السياسية التي انتهت بوقعة الجمل، فجاء رجل إلى الزبير بن العوام فقال: اقتل لك عليًّا؟ قال: لا وكيف تقتله ومعه الجنود؟ قال: ألحق به فأفتك به، قال: لا إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «إن الإيمان قيد الفتك، لا يفتك مؤمن؟!». [حديث الزبير بن العوام رقم ١٤٢٩ من مسند الإمام أحمد بن حنبل: بتحقيقنا].
أي أن الإيمان يقيد المؤمن عن أن يتردى في هوة الردة، فإن فعل لم يكن مؤمنًا.
أما النقراشي فقد أكرمه الله بالشهادة له فضل الشهداء عند الله وكرامتهم، وقد مات ميتة كان يتمناها كثير من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم، تمناها عمر بن الخطاب حتى نالها فكان له عند الله المقام العظيم والدرجات العلى، وإنما الإثم والخزي على هؤلاء الخوارج القَتَلة مُستحلي الدماء، وعلى مَنْ يدافع عنهم، ويريد أن تتردى بلادنا في الهوة التي تردت فيها أوربا بإباحة القتل السياسي أو تخفيف عقوبته؛ فإنهم لا يعلمون ما يفعلون ولا أريد أن أتهمهم بأنهم يعرفون ويريدون، والهدى هدى الله.
“মুসলিম বিশ্ব এবং আরব বিশ্ব, বরং আরও অসংখ্য দেশ একজন ব্যক্তির গুপ্তহত্যায় মারা যাওয়ার ঘটনায় ভীত ও শঙ্কিত হয়েছে। সেই ব্যক্তি হলেন আন-নুক্বরাশী আশ-শাহীদ (আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন এবং সিদ্দীক্ব, শহীদ ও সৎ ব্যক্তিদের সাথে মিলিত করুন)।
ইতঃপূর্বে এ ব্যাপারে কিছু তরুণের ঘটনা গত হয়ে গেছে, একজন তরুণকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সে বিচারের সময় তার জবানবন্দি পেশ করেছে, আমি এখন বিচারের রায়ের সমালোচনা করতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমি রাজনৈতিক অপরাধের ব্যাপারে পড়েছি, যেমনভাবে অন্যরাও পড়েছে। আমি প্রশ্ন করছি, আমরা কি এমন দেশে রয়েছি, যে দেশে মুসলিমরা রয়েছে?
আমি মনে করলাম, এই বিষয়টি বিশুদ্ধ ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বর্ণনা করা আমার উপর আবশ্যক, যাতে করে কোনো ওজর পেশকারীর ওজর অবশিষ্ট না থাকে। হয়তো আল্লাহ ওইসকল খারিজী ক্রিমিনালদের হিদায়াত দিবেন, ফলে তারা প্রত্যাবর্তনের পথ রুদ্ধ হওয়ার আগেই নিজেদের দ্বীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। আমরা জানিনা, ওই লোকগুলোর তালিকায় নুক্বরাশী’র পর আর কে রয়েছেন?
মহান আল্লাহ তাঁর কিতাবে একাধিক আয়াতে অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করার ব্যাপারে ভয়াবহ শাস্তির হুমকি দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেছেন, “আর যে ইচ্ছাকৃত কোনো মু’মিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন।” (সূরাহ নিসা: ৯৩)
এটা ইসলামের মৌলিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত, যা ‘আলিম তো দূরের কথা জাহিল তথা অজ্ঞ ব্যক্তিও জানে। নিশ্চয় এটা ইচ্ছাকৃত হত্যার আওতাভুক্ত, যে হত্যা বিভিন্ন দুর্ঘটনা, অপহরণ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। অর্থাৎ, হত্যাকারী যখন হত্যা করে, তখন সে জানে যে, সে বড়ো গুনাহয় লিপ্ত হচ্ছে।
পক্ষান্তরে রাজনৈতিক হত্যা, যে ব্যাপারে আমরা দীর্ঘ বিতর্ক অধ্যয়ন করেছি, এর ব্যাপারটি আরও ভয়াবহ। এটা অন্য বিষয়।
রাজনৈতিক হত্যাকারী সন্তুষ্ট হৃদয়ে প্রশান্তচিত্তে হত্যা করে, আর এই বিশ্বাস পোষণ করে যে, সে ভালো কাজ করছে। সে ইসলামের আবশ্যকীয় কর্ম সম্পাদন করছে এই বিশ্বাস যদি নাও রাখে, তবুও সে বিভ্রান্তির কারণে মনে করে যে, সে বৈধ কাজ করছে। তাহলে এই ব্যক্তি একজন ইসলাম থেকে খারিজ মুরতাদ। তার সাথে মুরতাদদের ন্যায় আচরণ করা এবং তার উপর শরিয়তে বিদ্যমান মুরতাদদের বিধিবিধান প্রয়োগ করা ওয়াজিব। আইন অনুযায়ী তারা পূর্ববর্তী খারিজীদের ন্যায় খারিজী, যেই (পূর্ববর্তী) খারিজীরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবীদের হত্যা করেছিল এবং যারা নিজেদের কাফির বলে স্বীকৃতি দেয়—তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিল। তাদের বাহ্যিক অবস্থা এই খারিজীদের বাহ্যিক অবস্থার মতোই, বরং এর চেয়েও উত্তম।
রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে দেখার পূর্বেই ওয়াহী’র মাধ্যমে তাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। তিনি ﷺ তাঁর সাহাবীদের বলেছেন, “তোমাদের কেউ তাদের সালাতের তুলনায় নিজের সালাতকে এবং তাদের সিয়ামের তুলনায় নিজের সিয়ামকে নগণ্য বলে মনে করবে। এরা ক্বুরআন পাঠ করবে, কিন্তু ক্বুরআন তাদের কণ্ঠনালীর নীচে প্রবেশ করে না। তারা দ্বীন হতে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেমনভাবে তির শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়।” (সাহীহ বুখারী, হা/৩৬১০; সাহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪)
তিনি আরও বলেছেন, “শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে, যারা ক্ষুদ্র দাঁতবিশিষ্ট (অল্প বয়স্ক) ও স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন হবে। তারা সৃষ্টিজগতের সবচেয়ে ভালো কথা বলবে। তারা ক্বুরআন পাঠ করবে, কিন্তু তা তাদের গলার নীচে যাবে না। তির যেভাবে শিকার থেকে বেরিয়ে যায়, তারাও অনুরূপভাবে দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে। অতএব তোমরা তাদের সাক্ষাৎ পেলে তাদেরকে হত্যা করে ফেলবে। কেননা তাদেরকে যারা হত্যা করবে, তারা কেয়ামতের দিন আল্লাহ’র কাছে সাওয়াব পাবে।” (সাহীহ মুসলিম, হা/১০৬৬; ‘যাকাত’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ৪৮)
এই অর্থে অসংখ্য মুতাওয়াতির হাদীস আছে। আর ইসলামের মৌলিক জ্ঞানই জানিয়ে দেয়, যে ব্যক্তি হারাম রক্তকে হালাল গণ্য করে, সে তাঁর গলা থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলে।
এটা হলো রাজনৈতিক হত্যার বিধান। এটা মানুষের মধ্যে সংঘটিত ইচ্ছাকৃত হত্যার চেয়েও ভয়াবহ অপরাধ। সাধারণ হত্যাকারীকে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে ক্ষমা করতে পারেন এবং তার পাপের প্রায়শ্চিতস্বরূপ স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহে তার পক্ষ থেকে ক্বিসাস গ্রহণ করেন। পক্ষান্তরে রাজনৈতিক হত্যাকারী তার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের কর্মের উপর অটল থাকে, সে এ নিয়ে গর্ব করে এবং ধারণা করে যে, সে বীরের কাজ করেছে।
রাজনৈতিক হত্যার ব্যাপারে আরেকটি হাদীস আছে, যা কোনো ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না। যুবাইর ইবনুল ‘আওয়্যাম এবং ‘আলী ইবনু আবী ত্বালিবের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল, জঙ্গে জামালের মাধ্যমে যার সমাপ্তি ঘটে। এক ব্যক্তি যুবাইর ইবনুল ‘আওয়্যামের কাছে এসে বলে, “আমি কি আপনার জন্য ‘আলীকে হত্যা করব?” তখন তিনি বলেন, “না। আর কীভাবেই বা তুমি তাঁকে হত্যা করবে, যাঁর সাথে সেনাবাহিনী রয়েছে?” ব্যক্তিটি বলে, “আমি তার সাথে মিলিত হব এবং তাকে গোপনে হত্যা করব।” তখন যুবাইর (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন, “না। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “নিশ্চয় ঈমান গুপ্তহত্যার প্রতিবন্ধক। কোনো মু’মিন গুপ্তহত্যা করতে পারে না”।” [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪২৯; আমাদের (শাইখ আহমাদ শাকির প্রমুখ) তাহক্বীক্বকৃত; যুবাইর ইবনুল আওয়্যামের হাদীস]
অর্থাৎ, নিশ্চয় ঈমান মু’মিনকে ধর্মত্যাগের গর্তে পতিত হয়ে ধ্বংস হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সে যদি তা (গুপ্তহত্যা) করে, তাহলে সে আর মু’মিন থাকে না।*
[(*) ইমাম আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ)’র এই কথাটি ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে। কেননা বিশুদ্ধ মতানুসারে এই হাদীসটির দ্বারা মূল ঈমানকে নাকচ করা হয়নি। যেমন এই হাদীসগুলোতে মূল ঈমানকে নাকচ করা হয়নি:
ক. নাবী ﷺ বলেছেন, “যার আমানতদারিতা নেই, তার ঈমান নেই।” (আলবানী, সাহীহুল জামি‘, হা/৭১৭৯)
খ. নাবী ﷺ বলেছেন, “ব্যভিচারী যখন ব্যভিচার করে, তখন সে ঈমানদার থাকে না। চোর যখন চুরি করে, তখন সে ঈমানদার থাকে না। মদ্যপ যখন মদ পান করে, তখন সে ঈমানদার থাকে না।” (সাহীহ বুখারী, হা/২৪৭৫)
এই অর্থের আরও অনেক হাদীস রয়েছে। – অনুবাদক।]
পক্ষান্তরে আন-নুক্বরাশী, আল্লাহ তাঁকে শাহাদাতের মর্যাদা দিয়ে সম্মানিত করুন। আল্লাহ’র কাছে শহীদদের মর্যাদা ও সম্মান রয়েছে। তিনি এমন মৃত্যুতে মারা গেছেন, যে মৃত্যু কামনা করতেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অসংখ্য সাহাবী। ‘উমার ইবনুল খাত্বত্বাব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) এই মৃত্যু কামনা করতেন, তিনি এই মৃত্যু পেয়েছিলেন। আল্লাহ’র কাছে তাঁর মহান মর্যাদা এবং সুউচ্চ সম্মাননা রয়েছে।
নিশ্চয় পাপ এবং লাঞ্ছনা ওইসব রক্ত হালালকারী ঘাতক খারিজীদের উপর, যারা তাদেরকে ডিফেন্ড করে তাদের উপর এবং যারা চায় যে এই দেশ সেই ধ্বংসের গর্তে পতিত হোক যেই ধ্বংসে পতিত হয়েছে ইউরোপ তাদের উপর। আর সেই ধ্বংস হলো—রাজনৈতিক হত্যার বৈধতা প্রদান বা এই অপরাধের শাস্তি লঘুকরণ। নিশ্চয় তারা যা করছে, সে সম্পর্কে তারা অবগত নয়। আমি তাদেরকে এই অভিযোগে অভিযুক্ত করছি না যে, তারা জেনেশুনে এরকমটা চাচ্ছে। আর প্রকৃত হিদায়াত তো আল্লাহ’র হিদায়াত।” [জামহারাতু মাক্বালাতিল ‘আল্লামাহ আশ-শাইখ আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির; পৃষ্ঠা: ৪৭২-৪৭৫; দারুর রিয়াদ্ব, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৬ হি./২০০৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
·৩য় বক্তব্য:
ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) গুপ্তহত্যার ব্যাপারটি সংঘটিত হওয়ার পর দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন,
حركة الشيخ حسن البنا واخوانه المسلمين الذين قلبوا الدعوة الاسلامية إلى دعوة إجرامية هدامة، ينفق عليها الشيوعيون واليهود كما نعلم ذلك علم اليقين.
“শাইখ হাসান আল-বান্না’র দল এবং তাঁর মুসলিম ব্রাদারহুড ইসলামী দা‘ওয়াতকে অপরাধমূলক বিধ্বংসী দা‘ওয়াতে পরিবর্তন করেছে। তাদের দলে কমিউনিস্ট এবং ইহুদিরা ডোনেট করে, যা আমরা দৃঢ়ভাবে জানি।” [ইমাম আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ), শুঊনুত তা‘লীমি ওয়াল ক্বাদ্বা; পৃষ্ঠা: ৪৮; সংগৃহীত: sahab.net]
সম্মানিত পাঠক, চিন্তা করুন! এই কমিউনিস্টপোষ্য ও ইহুদিপোষ্য দলের অনুসারীরা আমাদের মুখলিস (একনিষ্ঠ) ও যাহিদ (দুনিয়াবিমুখ) ‘উলামাদের ব্যাপারে বলে, ‘এরা হলো—দরবারি, আহলে রিয়াল, আহলে ডলার’ ইত্যাদি। তাদের এ অপবাদ কতইনা জঘন্য, কতইনা নিকৃষ্ট!
এখানে একটি কথা বলা বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছি। যারা মানুষের কাছে ব্রাদারহুডের বিরোধিতা ও সমালোচনাকে শাইখ রাবী‘ আল-মাদখালীর ব্যক্তিগত মানহাজ হিসেবে দেখায় এবং সকল ব্রাদারহুড-বিরোধীকে ব্যাপকভাবে ‘মাদখালী’ বলে আখ্যা দেয়, তাদের কাছে নিজেদের এই খবিসমার্কা কর্মকে ডিফেন্ড করার জন্য আর কী অবশিষ্ট রইল? ‘মাদখালী’ ট্যাগদাতা সালাফী বিদ্বেষী ভণ্ডদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালীর জন্ম ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে, আর ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে ইমাম আহমাদ শাকিরের লেখা প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জানুয়ারিতে। অর্থাৎ, ইমাম আহমাদ শাকির যখন প্রবন্ধটি লিখেছেন, তখন ইমাম রাবী‘ ১৬ বা ১৭ বছরের কিশোর। তাহলে কি ওই স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন খারিজী সম্প্রদায় ইমাম আহমাদ শাকিরের মতো যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসকেও ‘মাদখালী’ ট্যাগ দিয়ে নিজেদের মূর্খতা-প্রদর্শনকে আরও বিস্তৃত ও প্রলম্বিত করবে?
·
অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
পরিবেশনায়: www.facebook.com/ SunniSalafiAthari(সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে)
·শাইখ পরিচিতি:
ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) বিংশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, মুহাক্বক্বিক্ব, মুফাসসির, ফাক্বীহ ও আদীব (সাহিত্যিক) ছিলেন। তাঁর পড়াশোনা আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি এখান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন ইমাম মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ১৩০৯ হিজরী মোতাবেক ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে মিশরের কায়রো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিশরের শারী‘আহ কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম শারী‘আহ কোর্টের সদস্য হয়েছিলেন। হাদীসশাস্ত্র, ফিক্বহশাস্ত্র, ‘আক্বীদাহশাস্ত্র এবং ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অসংখ্য পাণ্ডিত্যপূর্ণ লেখনী রয়েছে। তাঁর শ্রেষ্ঠ কর্ম হলো—মুসনাদে আহমাদের তাহক্বীক্ব; তিনি ৮০৯৯ টি হাদীসের তাহক্বীক্ব করতে পেরেছিলেন, যা মুসনাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সমপরিমাণ।
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে ইমাম আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ)’র ‘আক্বীদাহ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “শাইখ আহমাদ শাকির একজন সম্মানিত ‘আলিম। তিনি ‘আক্বীদাহগতভাবে সালাফী ছিলেন।” [দ্র.:https://m.youtube.com/
বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম রাবী‘ বিন হাদী বিন ‘উমাইর আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] বলেন, “আমি বলছি, আল-‘আক্বীদাতুত্ব ত্বাহাউয়িয়্যাহ গ্রন্থটি আমরা কেবল আহলুস সুন্নাহ’র ভাষ্যগ্রন্থের মাধ্যমে চিনি। যেমন: ইবনু আবিল ‘ইয প্রণীত ভাষ্য। এই ভাষ্যগ্রন্থটি দুইজন আহলুস সুন্নাহ’র ‘আলিম তাহক্বীক্ব করেছেন। প্রথমজন হলেন প্রখ্যাত সালাফী ‘আলিম আহমাদ শাকির এবং দ্বিতীয়জন হলেন শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী।” [sahab.net]
ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেন, “শাইখ আহমাদ শাকির হাদীসশাস্ত্রের কিবার ‘আলিমদের অন্যতম।” [ইমাম রাবী‘ (হাফিযাহুল্লাহ), আয-যারী‘আহ ইলা বায়ানি মাক্বাসিদি কিতাবিশ শারী‘আহ, খণ্ড: ৩; পৃষ্ঠা: ৪২০]
তিনি ১৩৭৭ হিজরী ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে পরলোকগমন করেন। আল্লাহ এই ক্ষণজন্মা মনীষীকে তাঁর রহমত দ্বারা ঢেকে দিন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসে তাঁর আবাস নির্ধারণ করুন। আমীন। সংগৃহীত: www.facebook.com/
·
১ম বক্তব্য:
বিগত শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ, মুহাক্বক্বিক্ব ও সাহিত্যিক আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৩৭৭ হি./১৯৫৮ খ্রি.] বলেছেন,
الإخوان المسلمون خوارج العصر.
“মুসলিম ব্রাদারহুড আধুনিক যুগের খারিজী সম্প্রদায়।” [আল-ইসালাহ ম্যাগাজিন, ৪০শ সংখ্যা; পৃষ্ঠা: ১১; গৃহীত: আবুল হাসান ‘আলী বিন আহমাদ আর-রাযিহী, আর-রিসালাতুস সুগরা ইলা আখী আল-মুনতাযিম ফী জামা‘আতিল ইখওয়ানিল মুসলিমীন; পৃষ্ঠা: ৯০; দারু ‘উমার ইবনিল খাত্বত্বাব, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৮ হি./২০০৭ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
·
২য় বক্তব্য:
ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) মুসলিম ব্রাদারহুডের গুপ্তহত্যা কার্যক্রমের কঠিন সমালোচনা ও নিন্দা করেছেন। ১৯৪৮ সালের ২৮শে ডিসেম্বরে মিশরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহমূদ পাশা আন-নুক্বরাশীকে ‘আব্দুল মাজীদ হাসান নামক ব্রাদারহুডের এক কর্মী পুলিশের ছদ্মবেশে গুলি করে হত্যা করে। ইমাম আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে ২রা জানুয়ারি ১৯৪৯ ইং তারিখে ‘আল-আসাস’ পত্রিকায় “আল-ঈমান ক্বাইদুল ফাতকি (ঈমান গুপ্তহত্যার প্রতিবন্ধক)” শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেন। সম্পূর্ণ প্রবন্ধটির আরবি টেক্সট অনুবাদ-সহ পেশ করা হলো—
روَّع العالم الإسلامي والعالم العربي بل كثير من الأقطار غيرهما باغتيال الرجل، الرجل بمعنى الكلمة النقراشي الشهيد –غفر الله له، وألحقه بالصديقين والشهداء والصالحين–، وقد سبقت ذلك أحداث قدّم بعضها للقضاء، وقال فيه كلمته وما أنا الآن بصدد نقد الأحكام، ولكني كنت أقرأ كما يقرأ غيري الكلام في الجرائم السياسية وأتساءل: أنحن في بلد فيه مسلمون؟ وقد رأيت أن واجبًا علي أن أبين هذا الأمر من الوجهة الإسلامية الصحيحة حتى لا يكون هناك عذر لمعتذر، ولعلَّ الله يهدي بعض هؤلاء الخوارج المجرمين فيرجعوا إلى دينهم قبل أن لا يكون سبيل إلى الرجوع، وما ندري من ذا بعد النقراشي في قائمة هؤلاء الناس.
إن الله سبحانه توعد أشد الوعيد على قتل النفس الحرام في غير آية من كتابه: ﴿وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا﴾ [النساء: ٩٣]، وهذا من بديهيات الإسلام التي يعرفها الجاهل قبل العالم وإنما هذا في القتل العمد الذي يكون بين الناس في الحوادث والسرقات وغيرها القاتل يقتل وهو يعلم أنه يرتكب وزرًا كبيرًا.
أما القتل السياسي الذي قرأنا جدالاً طويلاً حوله فذاك شأنه أعظم وذلك شيء آخر.
القاتل السياسي يقتل مطمئن النفس راضي القلب يعتقد أنه يفعل خيرًا فإنه يعتقد بما بثَّ فيه مغالطات أنه يفعل عملاً حلالاً جائزًا إن لم يعتقد أنه يقوم بواجب إسلامي قصَّر فيه غيره، فهذا مرتد خارج عن الإسلام، يجب أن يعامل معاملة المرتدين، وأن تطبق عليه أحكامهم في الشرائع، وفي القانون هم الخوارج كالخوارج القدماء الذين كانوا يقتلون أصحاب رسول الله ويدعون من اعترف على نفسه بالكفر، وكان ظاهرهم كظاهر هؤلاء الخوارج بل خيرًا منه، وقد وصفهم رسول الله بالوحي قبل أن يراهم، وقال لأصحابه: «يحقر أحدكم صلاته مع صلاتهم، وصيامه مع صيامهم، يقرؤون القرآن لا يجاوز تراقيهم، يمرقون من الإسلام كما يمرق السهم من الرمية». [حديث أبي سعيد الخدري في صحيح مسلم ج: ١، ص: ٢٩٢-٢٩٣].
وقال أيضًا: «سيخرج في آخر الزمان قوم أحداث الأسنان، سفهاء الأحلام يقولون من قول خير البرية يقرؤون القرآن لا يجاوز حناجرهم يَمرقون من الدين كما يمرق السهم من الرمية؛ فإذا لقيتموهم فاقتلوهم، فإن في قتلهم أجرًا لمن قتلهم عند الله يوم القيامة». [حديث علي بن أبي طالب في صحيح مسلم، ج: ١، ص: ٢٩٣].
والأحاديث في هذا المعنى كثيرة متواترة، وبديهيات الإسلام تقطع بأن من استحل الدم الحرام فقد خلع ربقة الإسلام من عنقه.
فهذا حكم القتل السياسي هو أشد من القتل العمد الذي يكون بين الناس، والقاتل قد يعفو الله عنه بفضله وقد يجعل القصاص منه كفارة لذنبه بفضله ورحمته، وأما القاتل السياسي فهو مصرٌّ على ما فعل إلى آخر لحظة من حياته يفخر به ويظن أنه فعل فعل الأبطال، وهناك حديث آخر نصٌّ في القتل السياسي لا يحتمل تأويلاً فقد كان بين الزبير بن العوام وبين علي بن أبي طالب ما كان من الخصومة السياسية التي انتهت بوقعة الجمل، فجاء رجل إلى الزبير بن العوام فقال: اقتل لك عليًّا؟ قال: لا وكيف تقتله ومعه الجنود؟ قال: ألحق به فأفتك به، قال: لا إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «إن الإيمان قيد الفتك، لا يفتك مؤمن؟!». [حديث الزبير بن العوام رقم ١٤٢٩ من مسند الإمام أحمد بن حنبل: بتحقيقنا].
أي أن الإيمان يقيد المؤمن عن أن يتردى في هوة الردة، فإن فعل لم يكن مؤمنًا.
أما النقراشي فقد أكرمه الله بالشهادة له فضل الشهداء عند الله وكرامتهم، وقد مات ميتة كان يتمناها كثير من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم، تمناها عمر بن الخطاب حتى نالها فكان له عند الله المقام العظيم والدرجات العلى، وإنما الإثم والخزي على هؤلاء الخوارج القَتَلة مُستحلي الدماء، وعلى مَنْ يدافع عنهم، ويريد أن تتردى بلادنا في الهوة التي تردت فيها أوربا بإباحة القتل السياسي أو تخفيف عقوبته؛ فإنهم لا يعلمون ما يفعلون ولا أريد أن أتهمهم بأنهم يعرفون ويريدون، والهدى هدى الله.
“মুসলিম বিশ্ব এবং আরব বিশ্ব, বরং আরও অসংখ্য দেশ একজন ব্যক্তির গুপ্তহত্যায় মারা যাওয়ার ঘটনায় ভীত ও শঙ্কিত হয়েছে। সেই ব্যক্তি হলেন আন-নুক্বরাশী আশ-শাহীদ (আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন এবং সিদ্দীক্ব, শহীদ ও সৎ ব্যক্তিদের সাথে মিলিত করুন)।
ইতঃপূর্বে এ ব্যাপারে কিছু তরুণের ঘটনা গত হয়ে গেছে, একজন তরুণকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সে বিচারের সময় তার জবানবন্দি পেশ করেছে, আমি এখন বিচারের রায়ের সমালোচনা করতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমি রাজনৈতিক অপরাধের ব্যাপারে পড়েছি, যেমনভাবে অন্যরাও পড়েছে। আমি প্রশ্ন করছি, আমরা কি এমন দেশে রয়েছি, যে দেশে মুসলিমরা রয়েছে?
আমি মনে করলাম, এই বিষয়টি বিশুদ্ধ ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বর্ণনা করা আমার উপর আবশ্যক, যাতে করে কোনো ওজর পেশকারীর ওজর অবশিষ্ট না থাকে। হয়তো আল্লাহ ওইসকল খারিজী ক্রিমিনালদের হিদায়াত দিবেন, ফলে তারা প্রত্যাবর্তনের পথ রুদ্ধ হওয়ার আগেই নিজেদের দ্বীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। আমরা জানিনা, ওই লোকগুলোর তালিকায় নুক্বরাশী’র পর আর কে রয়েছেন?
মহান আল্লাহ তাঁর কিতাবে একাধিক আয়াতে অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করার ব্যাপারে ভয়াবহ শাস্তির হুমকি দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেছেন, “আর যে ইচ্ছাকৃত কোনো মু’মিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন।” (সূরাহ নিসা: ৯৩)
এটা ইসলামের মৌলিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত, যা ‘আলিম তো দূরের কথা জাহিল তথা অজ্ঞ ব্যক্তিও জানে। নিশ্চয় এটা ইচ্ছাকৃত হত্যার আওতাভুক্ত, যে হত্যা বিভিন্ন দুর্ঘটনা, অপহরণ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। অর্থাৎ, হত্যাকারী যখন হত্যা করে, তখন সে জানে যে, সে বড়ো গুনাহয় লিপ্ত হচ্ছে।
পক্ষান্তরে রাজনৈতিক হত্যা, যে ব্যাপারে আমরা দীর্ঘ বিতর্ক অধ্যয়ন করেছি, এর ব্যাপারটি আরও ভয়াবহ। এটা অন্য বিষয়।
রাজনৈতিক হত্যাকারী সন্তুষ্ট হৃদয়ে প্রশান্তচিত্তে হত্যা করে, আর এই বিশ্বাস পোষণ করে যে, সে ভালো কাজ করছে। সে ইসলামের আবশ্যকীয় কর্ম সম্পাদন করছে এই বিশ্বাস যদি নাও রাখে, তবুও সে বিভ্রান্তির কারণে মনে করে যে, সে বৈধ কাজ করছে। তাহলে এই ব্যক্তি একজন ইসলাম থেকে খারিজ মুরতাদ। তার সাথে মুরতাদদের ন্যায় আচরণ করা এবং তার উপর শরিয়তে বিদ্যমান মুরতাদদের বিধিবিধান প্রয়োগ করা ওয়াজিব। আইন অনুযায়ী তারা পূর্ববর্তী খারিজীদের ন্যায় খারিজী, যেই (পূর্ববর্তী) খারিজীরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবীদের হত্যা করেছিল এবং যারা নিজেদের কাফির বলে স্বীকৃতি দেয়—তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিল। তাদের বাহ্যিক অবস্থা এই খারিজীদের বাহ্যিক অবস্থার মতোই, বরং এর চেয়েও উত্তম।
রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে দেখার পূর্বেই ওয়াহী’র মাধ্যমে তাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। তিনি ﷺ তাঁর সাহাবীদের বলেছেন, “তোমাদের কেউ তাদের সালাতের তুলনায় নিজের সালাতকে এবং তাদের সিয়ামের তুলনায় নিজের সিয়ামকে নগণ্য বলে মনে করবে। এরা ক্বুরআন পাঠ করবে, কিন্তু ক্বুরআন তাদের কণ্ঠনালীর নীচে প্রবেশ করে না। তারা দ্বীন হতে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেমনভাবে তির শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়।” (সাহীহ বুখারী, হা/৩৬১০; সাহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪)
তিনি আরও বলেছেন, “শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে, যারা ক্ষুদ্র দাঁতবিশিষ্ট (অল্প বয়স্ক) ও স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন হবে। তারা সৃষ্টিজগতের সবচেয়ে ভালো কথা বলবে। তারা ক্বুরআন পাঠ করবে, কিন্তু তা তাদের গলার নীচে যাবে না। তির যেভাবে শিকার থেকে বেরিয়ে যায়, তারাও অনুরূপভাবে দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে। অতএব তোমরা তাদের সাক্ষাৎ পেলে তাদেরকে হত্যা করে ফেলবে। কেননা তাদেরকে যারা হত্যা করবে, তারা কেয়ামতের দিন আল্লাহ’র কাছে সাওয়াব পাবে।” (সাহীহ মুসলিম, হা/১০৬৬; ‘যাকাত’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ৪৮)
এই অর্থে অসংখ্য মুতাওয়াতির হাদীস আছে। আর ইসলামের মৌলিক জ্ঞানই জানিয়ে দেয়, যে ব্যক্তি হারাম রক্তকে হালাল গণ্য করে, সে তাঁর গলা থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলে।
এটা হলো রাজনৈতিক হত্যার বিধান। এটা মানুষের মধ্যে সংঘটিত ইচ্ছাকৃত হত্যার চেয়েও ভয়াবহ অপরাধ। সাধারণ হত্যাকারীকে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে ক্ষমা করতে পারেন এবং তার পাপের প্রায়শ্চিতস্বরূপ স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহে তার পক্ষ থেকে ক্বিসাস গ্রহণ করেন। পক্ষান্তরে রাজনৈতিক হত্যাকারী তার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের কর্মের উপর অটল থাকে, সে এ নিয়ে গর্ব করে এবং ধারণা করে যে, সে বীরের কাজ করেছে।
রাজনৈতিক হত্যার ব্যাপারে আরেকটি হাদীস আছে, যা কোনো ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না। যুবাইর ইবনুল ‘আওয়্যাম এবং ‘আলী ইবনু আবী ত্বালিবের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল, জঙ্গে জামালের মাধ্যমে যার সমাপ্তি ঘটে। এক ব্যক্তি যুবাইর ইবনুল ‘আওয়্যামের কাছে এসে বলে, “আমি কি আপনার জন্য ‘আলীকে হত্যা করব?” তখন তিনি বলেন, “না। আর কীভাবেই বা তুমি তাঁকে হত্যা করবে, যাঁর সাথে সেনাবাহিনী রয়েছে?” ব্যক্তিটি বলে, “আমি তার সাথে মিলিত হব এবং তাকে গোপনে হত্যা করব।” তখন যুবাইর (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন, “না। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “নিশ্চয় ঈমান গুপ্তহত্যার প্রতিবন্ধক। কোনো মু’মিন গুপ্তহত্যা করতে পারে না”।” [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪২৯; আমাদের (শাইখ আহমাদ শাকির প্রমুখ) তাহক্বীক্বকৃত; যুবাইর ইবনুল আওয়্যামের হাদীস]
অর্থাৎ, নিশ্চয় ঈমান মু’মিনকে ধর্মত্যাগের গর্তে পতিত হয়ে ধ্বংস হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সে যদি তা (গুপ্তহত্যা) করে, তাহলে সে আর মু’মিন থাকে না।*
[(*) ইমাম আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ)’র এই কথাটি ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে। কেননা বিশুদ্ধ মতানুসারে এই হাদীসটির দ্বারা মূল ঈমানকে নাকচ করা হয়নি। যেমন এই হাদীসগুলোতে মূল ঈমানকে নাকচ করা হয়নি:
ক. নাবী ﷺ বলেছেন, “যার আমানতদারিতা নেই, তার ঈমান নেই।” (আলবানী, সাহীহুল জামি‘, হা/৭১৭৯)
খ. নাবী ﷺ বলেছেন, “ব্যভিচারী যখন ব্যভিচার করে, তখন সে ঈমানদার থাকে না। চোর যখন চুরি করে, তখন সে ঈমানদার থাকে না। মদ্যপ যখন মদ পান করে, তখন সে ঈমানদার থাকে না।” (সাহীহ বুখারী, হা/২৪৭৫)
এই অর্থের আরও অনেক হাদীস রয়েছে। – অনুবাদক।]
পক্ষান্তরে আন-নুক্বরাশী, আল্লাহ তাঁকে শাহাদাতের মর্যাদা দিয়ে সম্মানিত করুন। আল্লাহ’র কাছে শহীদদের মর্যাদা ও সম্মান রয়েছে। তিনি এমন মৃত্যুতে মারা গেছেন, যে মৃত্যু কামনা করতেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অসংখ্য সাহাবী। ‘উমার ইবনুল খাত্বত্বাব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) এই মৃত্যু কামনা করতেন, তিনি এই মৃত্যু পেয়েছিলেন। আল্লাহ’র কাছে তাঁর মহান মর্যাদা এবং সুউচ্চ সম্মাননা রয়েছে।
নিশ্চয় পাপ এবং লাঞ্ছনা ওইসব রক্ত হালালকারী ঘাতক খারিজীদের উপর, যারা তাদেরকে ডিফেন্ড করে তাদের উপর এবং যারা চায় যে এই দেশ সেই ধ্বংসের গর্তে পতিত হোক যেই ধ্বংসে পতিত হয়েছে ইউরোপ তাদের উপর। আর সেই ধ্বংস হলো—রাজনৈতিক হত্যার বৈধতা প্রদান বা এই অপরাধের শাস্তি লঘুকরণ। নিশ্চয় তারা যা করছে, সে সম্পর্কে তারা অবগত নয়। আমি তাদেরকে এই অভিযোগে অভিযুক্ত করছি না যে, তারা জেনেশুনে এরকমটা চাচ্ছে। আর প্রকৃত হিদায়াত তো আল্লাহ’র হিদায়াত।” [জামহারাতু মাক্বালাতিল ‘আল্লামাহ আশ-শাইখ আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির; পৃষ্ঠা: ৪৭২-৪৭৫; দারুর রিয়াদ্ব, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৬ হি./২০০৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
·৩য় বক্তব্য:
ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) গুপ্তহত্যার ব্যাপারটি সংঘটিত হওয়ার পর দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন,
حركة الشيخ حسن البنا واخوانه المسلمين الذين قلبوا الدعوة الاسلامية إلى دعوة إجرامية هدامة، ينفق عليها الشيوعيون واليهود كما نعلم ذلك علم اليقين.
“শাইখ হাসান আল-বান্না’র দল এবং তাঁর মুসলিম ব্রাদারহুড ইসলামী দা‘ওয়াতকে অপরাধমূলক বিধ্বংসী দা‘ওয়াতে পরিবর্তন করেছে। তাদের দলে কমিউনিস্ট এবং ইহুদিরা ডোনেট করে, যা আমরা দৃঢ়ভাবে জানি।” [ইমাম আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ), শুঊনুত তা‘লীমি ওয়াল ক্বাদ্বা; পৃষ্ঠা: ৪৮; সংগৃহীত: sahab.net]
সম্মানিত পাঠক, চিন্তা করুন! এই কমিউনিস্টপোষ্য ও ইহুদিপোষ্য দলের অনুসারীরা আমাদের মুখলিস (একনিষ্ঠ) ও যাহিদ (দুনিয়াবিমুখ) ‘উলামাদের ব্যাপারে বলে, ‘এরা হলো—দরবারি, আহলে রিয়াল, আহলে ডলার’ ইত্যাদি। তাদের এ অপবাদ কতইনা জঘন্য, কতইনা নিকৃষ্ট!
এখানে একটি কথা বলা বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছি। যারা মানুষের কাছে ব্রাদারহুডের বিরোধিতা ও সমালোচনাকে শাইখ রাবী‘ আল-মাদখালীর ব্যক্তিগত মানহাজ হিসেবে দেখায় এবং সকল ব্রাদারহুড-বিরোধীকে ব্যাপকভাবে ‘মাদখালী’ বলে আখ্যা দেয়, তাদের কাছে নিজেদের এই খবিসমার্কা কর্মকে ডিফেন্ড করার জন্য আর কী অবশিষ্ট রইল? ‘মাদখালী’ ট্যাগদাতা সালাফী বিদ্বেষী ভণ্ডদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালীর জন্ম ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে, আর ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে ইমাম আহমাদ শাকিরের লেখা প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জানুয়ারিতে। অর্থাৎ, ইমাম আহমাদ শাকির যখন প্রবন্ধটি লিখেছেন, তখন ইমাম রাবী‘ ১৬ বা ১৭ বছরের কিশোর। তাহলে কি ওই স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন খারিজী সম্প্রদায় ইমাম আহমাদ শাকিরের মতো যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসকেও ‘মাদখালী’ ট্যাগ দিয়ে নিজেদের মূর্খতা-প্রদর্শনকে আরও বিস্তৃত ও প্রলম্বিত করবে?
·
অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
পরিবেশনায়: www.facebook.com/