মুসাফিরের জন্য রোজা রাখা নিষিদ্ধ নাকি ঐচ্ছিক ...



মুসাফিরের জন্য রোযা রাখা নিষিদ্ধ নাকি ঐচ্ছিক ?
  মুসাফিরের জন্য রোযা রাখা নিষিদ্ধ নাকি ঐচ্ছিক
আল্লাহ বলেন,
রমযানের মাস, এ মাসেই কুরআন নাযিল করা হয়েছে , যা মানব জাতির জন্য পুরোপুরি হিদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন শিক্ষা সম্বলিত, যা সত্য –সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয় ৷

কাজেই এখন থেকে যে ব্যক্তি এ মাসের সাক্ষাত পাবে তার জন্য এই সম্পূর্ণ মাসটিতে রোযা রাখা অপরিহার্য এবং যে ব্যক্তি রোগগ্রস্ত হয় বা সফরে থাকে, সে যেন অন্য দিনগুলোয় রোযার সংখ্যা পূর্ণ করে ৷ ১৮৬ আল্লাহ তোমাদের সাথে নরম নীতি অবলম্বন করতে চান, কঠোর নীতি অবলম্বন করতে চান না ৷ তাই তোমাদেরকে এই পদ্ধতি জানানো হচ্ছে, যাতে তোমরা রোযার সংখ্যা পূর্ণ করতে পারো এবং আল্লাহ তোমাদের যে হিদায়াত দান করেছেন সে জন্য যেন তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে ও তার স্বীকৃতি দিতে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো 
সুরা বাকারা- ২.১৮৫
ক)       মুহাম্মদ(স:)  বলেছেন, ভ্রমন একটা শাস্তি, যখন কোন ব্যাক্তি ভ্রমন করে,তখন এটা তার জন্য শাস্তিস্বরুপ। ভ্রমন খুবই অসুবিধাজনক কারন ভ্রমনের  সময় তাকে অনেক বিপদ-আপদের ভিতর দিয়ে চলতে হয়”।       বুখারী ,উমরাহ-১৮০৪
খ)      ‘সাহাবা হামজা(রা:) সবসময় রোযা রাখার ইচ্ছা করেছিলেন এমনকি ভ্রমনেও। একথা শুনে মুহাম্মাদ(সা:) বল্লেন, ভ্রমনে কেউ রোযা রাখতে পারো বা নাও পারো কেউ যদি ভ্রমনে কোন সমস্যায় না পড়ে, তাহলে সে রাখতে পারে।
বুখারী-রোযা হাদিস-১৯৪৩
মহান আল্লাহ বলেন, ‘এ কতিপয় নিদিষ্ট দিনের রোযা ৷ যদি তোমাদের কেউ হয়ে থাকে রোগগ্রস্ত অথবা মুসাফির তাহলে সে যেন অন্য দিনগুলোয় এই সংখ্যা পূর্ণ করে ৷ আর যাদের রোযা রাখার সামর্থ আছে (এরপরও রাখে না)তারা যেন ফিদিয়া দেয় ৷ একটি রোযার ফিদিয়া একজন মিসকিনকে খাওয়ানো৷ আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সানন্দে কিছু বেশী সৎকাজ করে , তা তার জন্য ভালো ৷ তবে যদি তোমরা সঠিক বিষয় অনুধাবন করে থাকো ৷ তাহলে তোমাদের জন্য রোযা রাখাই ভালো’ ৷      বাকারা-১৮৪
গ)       হযরত আনাস(রা:) বলেন, “ যখন আমরা মুহাম্মা(স:)-এর সাথে ভ্রমনে যেতাম তখন আমাদের দলের কেউ কেউ রোযা রাখত আবার অনেকে রাকত না।কিন্তু যারা রোযা রাখতো তারা, যারা রাখতোনা তাদের সমালোচনা করতো।যারা রাখতোনা তারা রোযাদারদের সমালোনা করতো না”            বুখারী-রোযা হাদিস-১৯৪৭
ঘ)       আবু দারদা(রা:) হতে বর্নিত, ‘কোন এক সময়  হযরত মুহাম্মাদ(সা:)-এর সাথে আমরা ভ্রমন করছিরাম ও ভ্রমনটি খুবই কষ্টকর ছিল। পুরোদলে হযরত মুহাম্মাদ(স:) ও আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা(রা:)  ছাড়া আর কেউ রোযা ছিলেন না’।
মুসলিম রোযা-২৪৯২
ঙ)       “মুহাম্মাদ(স:)-এর সাথে  একটি দল ভ্রমন করছিলো, যেখানে কিছু সাহাবী রোযা ছিলেন কিছু ছিলেন না। এই অবস্থায়  মুহাম্মাদ(স:) জানতে পালেন যে, রোযা তাদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যাচ্ছে, তখন তিনি রোযা ভেংগে ফেল্লেন”।
মুসলিম-রোযা হাদিস-২৪৭২-৭৩
চ)       এসমস্ত হাদিস থেকে জানা গেল ভ্রমনে  রোযা রাখাকে মুহাম্মাদ(স:)  পছন্দ করতেন, যদি সেটা কষ্টকর না হয়ে দাড়ায়। বেশী প্রয়োজন হলে , রোযা ভেংগে  ফেলতেন।তবে ভেংগে ফেলা রোযা রমজান মাসের পরে সবগুলো পূরন করে দিতে হবে ।কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে,  ফিদিয়া আদায় করতে হবে অর্থাৎ একজন অভাবগ্রস্থ মানুষকে খাওয়াতে হবে।  রমযানের  পরে কোন ব্যাক্তি যখন একাকী রোযা রাখে, তখন সেটা তার পরিবারের জন্য সমস্যার কারন হতে পারে। সুতরাং রোযা  রাখাই উত্তম।

Post a Comment

0 Comments