Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

যেভাবে আপনি রমজান মাসকে অভ্যর্থনা জানাবেন

যেভাবে আপনি রমজান মাসকে অভ্যর্থনা জানাবেন
·
সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতী যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ ও মুহাদ্দিস শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
প্রশ্ন: “সম্মানিত শাইখ, আমরা এই মহান (রমজান) মাসকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছি, এমতাবস্থায় মুসলিমদের প্রতি আপনার নসিহত কী?”
উত্তর: “সকল মুসলিমের প্রতি আমার নসিহত হলো, তারা যেন মহান আল্লাহকে ভয় করে, যাবতীয় পাপকাজ থেকে সত্যিকারের তাওবাহ করার মাধ্যমে এই মহান মাসকে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করে, দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে এবং তাদের সিয়াম ও কিয়ামের বিধিবিধান শিখে। যেহেতু নাবী ﷺ বলেছেন, مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّين “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের ‘ইলম দান করেন।” (সাহীহ বুখারী, হা/৭১; সাহীহ মুসলিম, হা/১০৩৭) নাবী ﷺ আরও বলেছেন, إِذَا دَخَلَ رَمَضَانُ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتْ الشَّيَاطِيْنُ “যখন রমজান মাস আগমন করে, তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।” (সাহীহ বুখারী, হা/৩২৭৭)
নাবী ﷺ অন্যত্র বলেছেন, إِذَا كَانَ أَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ صُفِّدَتِ الشَّيَاطِينُ وَمَرَدَةُ الْجِنِّ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ فَلَمْ يُفْتَحْ مِنْهَا بَابٌ. وَفُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ فَلَمْ يُغْلَقْ مِنْهَا بَابٌ وَيُنَادِي مُنَادٍ يَا بَاغِيَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ وَيَا بَاغِيَ الشَّرِّ أَقْصِرْ وَلِلَّهِ عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَة “শয়তান ও দুষ্ট জিনদেরকে রমজান মাসের প্রথম রাতেই শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয় এবং তার একটি দরজাও আর খোলা হয় না, আর জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং তার একটি দরজাও তখন আর বন্ধ করা হয় না। (এ মাসে) একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকে, হে কল্যাণ অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। আর হে পাপাসক্ত! বিরত হও। আর বহু লোককে আল্লাহ’র পক্ষ হতে এ মাসে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে।” (তিরমিযী, হা/৬৮২; ইবনু মাজাহ, হা/১৬৪২; সনদ: সাহীহ)
রাসূল ﷺ সাহাবীদের বলতেন, أَتَاكُمْ شَهْرُ رَمَضَانَ شَهْرُ بَرَكَةٍ يَغْشَاكُمُ اللهُ فِيْهِ، فَيَنْزِلُ الرَّحْمَةَ وَيَحُطُّ الْخَطَايَا وَيَسْتَجٍيْبُ الدُّعَاءَ، فَأَرُوا اللهَ مٍنْ أَنْفُسِكُمْ خَيْرًا، فَإِنَّ الشَّقِيَّ مَنْ حُرِمَ فِيْهِ رَحْمَةَ اللهِ “তোমাদের নিকট রমজান মাস আগমন করেছে। এটি বরকতের মাস, যে মাসে আল্লাহ তোমাদেরকে (কল্যাণ দিয়ে) আবৃত করেছেন। (এ মাসে) তিনি রহমত বর্ষণ করেন, গুনাহ মোচন করেন এবং প্রার্থনা কবুল করেন। সুতরাং তোমরা নিজেদের পক্ষ থেকে আল্লাহ’র নিকট কল্যাণমূলক কাজ প্রদর্শন করো। কেননা সেই তো সত্যিকারের হতভাগা, যে এ মাসে আল্লাহ’র রহমত থেকে বঞ্চিত হয়।” (দ্ব‘ঈফুত তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫৯২; সনদ: মাওদ্বূ‘, তাহক্বীক্ব: আলবানী)
“সুতরাং তোমরা নিজেদের পক্ষ থেকে আল্লাহ’র নিকট কল্যাণমূলক কাজ প্রদর্শন করো”– কথাটির অর্থ—তোমরা কল্যাণকর কাজ এবং আল্লাহ’র আনুগত্যের দিকে দ্রুত ধাবমান হও এবং মন্দকাজ থেকে দূরে থাক।
নাবী ﷺ বলেছেন, َمَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ “যে ব্যক্তি ঈমান-সহ সওয়াবের আশায় রমজান মাসে রোজা করবে, তার অতীতের সমস্ত (ছোটো) গুনাহ মাফ করা হবে। যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় তারাবির নামাজে দাঁড়াবে, তার পূর্ববর্তী (ছোটো) গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাতে ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত (ছোটো) গুনাহ ক্ষমা করা হবে।” (সাহীহ বুখারী, হা/১৯০১, ২০০৯)
নাবী ﷺ আরও বলেছেন, كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ الْحَسَنَةُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِي لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ ‏.‏ وَلَخُلُوفُ فِيهِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْك “মানব সন্তানের প্রতিটি নেক কাজের সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। মহান আল্লাহ বলেছেন, কিন্তু রোজা ব্যতীত। কেননা রোজা আমার জন্য। তাই আমি (নিজে) এর প্রতিদান দেব। সে আমারই জন্য স্বীয় প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে। রোজাদারের জন্য রয়েছে দুটি খুশি, যা তাকে খুশি করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশি হয় এবং যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন রোজার বিনিময়ে আনন্দিত হবে। নিশ্চয়ই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ’র নিকট কস্তুরীর গন্ধের চাইতেও সুগন্ধি।” (সাহীহ মুসলিম, হা/১১৫১; সিয়াম অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ৩০)
নাবী ﷺ বলেছেন, َإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي امْرُؤٌ صَائِمٌ “তোমাদের কেউ যেন রোজা পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়াবিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোজাদার ব্যক্তি।” (সাহীহ বুখারী, হা/১৯০৪; সাহীহ মুসলিম, হা/১১৫১) তিনি ﷺ আরও বলেছেন, مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ “যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহ’র কোনো প্রয়োজন নেই।” (সাহীহ বুখারী, হা/১৯০৩)
সুতরাং সকল মুসলিমের জন্য উপদেশ হলো, তারা আল্লাহকে ভয় করবে, তাদের রোজাকে হেফাজত করবে এবং যাবতীয় পাপকাজ থেকে তা (রোজা) রক্ষা করবে। মুসলিমদের জন্য কল্যাণকর কাজে জোর প্রচেষ্টা চালানো এবং বিভিন্ন আনুগত্যমূলক কাজে—যেমন দান-সদকা, বেশি বেশি কুরআন পড়া, তাসবীহ পড়া, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা, আল-হামদুলিল্লাহ বলা, তাকবীর দেওয়া, ক্ষমাপ্রার্থনা করা প্রভৃতি—প্রতিযোগিতা করা বিধেয়। কেননা এটা কুরআনের মাস। মহান আল্লাহ বলেছেন, شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ “রমজান মাস, যাতে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে।” (সূরাহ বাক্বারাহ: ১৮৫)
অতএব মু’মিনদের জন্য কুরআন পাঠে জোর প্রচেষ্টা চালানো বিধেয়। নারী-পুরুষ সকলের জন্য দিবারাত্রি বেশি বেশি কুরআন পড়া মুস্তাহাব। প্রত্যেক অক্ষরের জন্য একটি করে নেকি হয়, আর প্রত্যেক নেকি দশ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যেমনটি নাবী ﷺ থেকে বর্ণিত হয়েছে। সাথে সাথে যাবতীয় মন্দকাজ ও পাপাচারিতা থেকে দূরে থাকতে হবে, পরস্পরকে সত্য গ্রহণের উপদেশ দিতে হবে, পরস্পরের প্রতি হিতাকাঙ্ক্ষী হতে হবে এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করতে হবে।
এটি একটি মহান মাস। এ মাসে আমলসমূহকে বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। এ মাসে পাপকাজ করা বিপজ্জনক। সুতরাং রমজান মাসে মু’মিনের জন্য আল্লাহ কর্তৃক ফরজকৃত বিষয় পালন করতে জোর প্রচেষ্টা চালানো, আল্লাহ কর্তৃক হারামকৃত বিষয় থেকে সতর্ক থাকা এবং অনেক বেশি পরিমাণে আমল করতে সচেষ্ট হওয়া আবশ্যক। এ মাসে মু’মিনের জন্য বিভিন্ন কল্যাণকর কাজে জোর প্রচেষ্টা চালানো বিধেয়। যেমন: দান-খয়রাত, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া, জানাযাহ’য় গমন করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, বেশি বেশি কুরআন পড়া, বেশি বেশি জিকির, তাসবীহ, তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ), ইস্তিগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) ও দু‘আ করা প্রভৃতি।
মু’মিন বান্দা আল্লাহ’র প্রতিদানের আশা করবে এবং তাঁর শাস্তির ভয় করবে। আমরা আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন মুসলিমদেরকে সেসব কাজ করার তাওফীক্ব দেন, যেসব কাজ তাঁকে সন্তুষ্ট করে। আমরা আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমাদেরকে এবং সকল মুসলিমকে ঈমান-সহ সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা ও তারাবির নামাজ আদায় করার তাওফীক্ব দান করেন। আমরা আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমাদেরকে এবং সর্বস্থানের সকল মুসলিমদেরকে দ্বীনের জ্ঞান ও দ্বীনের ওপর অটলতা দান করেন এবং আল্লাহ’র ক্রোধ ও শাস্তিকে আনয়নকারী কর্মাবলি বেঁচে থাকার তাওফীক্ব দান করেন।
অনুরূপভাবে আমরা আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন সকল মুসলিম শাসক ও নেতাকে কল্যাণমূলক কাজ করার তাওফীক্ব দান করেন, তাঁদেরকে হিদায়াত দান করেন, তাঁদের অবস্থাসমূহ সংশোধন করেন, সকল ক্ষেত্রে তথা তাদের যাবতীয় ইবাদত ও আমলে এবং সকল কর্মক্ষেত্রে আল্লাহ’র আইন দিয়ে বিচার-ফায়সালা করার তাওফীক্ব তাঁদেরকে দান করেন। আমরা আল্লাহ’র কাছে তাঁদের জন্য এই তাওফীক্ব কামনা করি।
যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন, وَأَنِ احْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ “আর তাদের মধ্যে আল্লাহ’র নাজিলকৃত বিধান দিয়ে ফায়সালা করো।” (সূরাহ মাইদাহ: ৪৯) মহান আল্লাহ আরও বলেছেন, أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ ۚ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ “তারা কি তবে জাহিলিয়্যাতের বিধান চায়? আর নিশ্চিত বিশ্বাসী কওমের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহ’র চেয়ে কে অধিক উত্তম?” (সূরাহ মাইদাহ: ৫০) তিনি আরও বলেছেন, فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا “অতএব তোমার রবের কসম! তারা ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে তাদের অন্তরে কোনো দ্বিধা অনুভব না করে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয়।” (সূরাহ নিসা: ৬৫)
মহান আল্লাহ বলেছেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ ۖ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ۚ ذَٰلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا “হে মুমিনগণ, তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহ’র, আনুগত্য করো রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে কর্তৃত্বের অধিকারীদের। তারপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করো। যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখ। এটিই সর্বোত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।” (সূরাহ নিসা: ৫৯) মহান আল্লাহ আরও বলেছেন, قُلْ أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ “বলো, ‘তোমরা আল্লাহ’র আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য করো’।” (সূরাহ নূর: ৫৪) তিনি আরও বলেছেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا “রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ করো, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও।” (সূরাহ হাশর: ৭)
এটা সকল মুসলিম এবং তাদের নেতৃবর্গের ওপর অবশ্য করণীয়। মুসলিম শাসকবর্গ, ‘উলামায়ে কেরাম এবং জনসাধারণের ওপর আল্লাহকে ভয় করা, আল্লাহ’র বিধানের আনুগত্য করা এবং নিজেদের মধ্যে আল্লাহ’র আইন দিয়ে ফায়সালা করা আবশ্যক। কেননা এটি এমন আইন, যার মাধ্যমে অর্জিত হয় কল্যাণ, হিদায়াত, শুভ পরিণাম, আল্লাহ’র সন্তুষ্টি, আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সত্যের নিকট পৌঁছার এবং জুলুম থেকে দূরে থাকার সামর্থ্য।
আমরা আল্লাহ’র কাছে সকলের জন্য ভালো কাজ করার তাওফীক্ব, হিদায়াত, নিয়াত ও আমলের সঠিকতা কামনা করছি। হে আল্লাহ, আমাদের নাবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার পরিজন ও সাহাবীবর্গের ওপর দয়া ও শান্তি বর্ষণ করুন।”
·
তথ্যসূত্র:
ইমাম ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ), মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ; খণ্ড: ১৫; পৃষ্ঠা: ৫০-৫৫; দারুল ক্বাসিম, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২০ হিজরী (১ম প্রকাশ)।
·অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
www.facebook.com/SunniSalafiAthari

Post a Comment

0 Comments