এতিম ও গরিব-অসহায় মানুষকে খাদ্য দান করা জান্নাতে প্রবেশের অন্যতম উপায়
▬▬▬➰▬▬▬
প্রশ্ন: কুরআনে আল্লাহ তাআলা এতিম ও মিসকিনদেরকে খাদ্য দানের কথা বলেছেন। প্রশ্ন হল, এতিম-মিসকিন কারা? তাদেরকে খাদ্য খাওয়ানোর মর্যাদা কতটুকু?
উত্তর:
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا
"তারা আল্লাহর ভালবাসায় অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে খাবার দেয়।" (সূরা ইনসান/দাহর: ৮)
এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, জান্নাতবাসী লোকদের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য যে, তারা অভাবী, অনাথ-এতিম শিশু ও বন্দিদেরকে খাবার দান করে (চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক।)
▪ এতীম (অনাথ) বলা হয় ঐ শিশুকে, যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় তার পিতাকে হারিয়েছে।
আপনি আপনার চারপাশে অনুসন্ধান করলে বা এতিমখানা/অরফেন সেন্টারগুলোতে খোঁজ নিলে অনেক এতিম শিশুর সন্ধান পাবেন। চট্টগ্রামের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিলবে অসংখ্য পিতৃহারা এতিম শিশু। কত অসহায় শিশু তাদের পিতৃ স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়ে সমাজে লাঞ্ছনা-বঞ্চনা সহ্য করে বড় হচ্ছে। কত নারী স্বামী হারিয়ে তার এতিম সন্তানকে বুকে নিয়ে অমানবিক পরিস্থিতিতে জীবনের ঘানি বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। যাদের একটু খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা প্রয়োজন। প্রয়োজন সঠিক শিক্ষার। এদের দায়িত্ব নেয়া অনেক মর্যাদাপূর্ণ কাজ, অনেক সওয়াবের কাজ। এ মর্মে কুরআন ও হাদিস পর্যাপ্ত বক্তব্য এসেছে।
আখিরাতে এতিম প্রতিপালনকারীদের মর্যাদা অপরিসীম। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ :قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِلُ الْيَتِيمِ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ فِي الْجَنَّةِ وَأَشَارَ مَالِكٌ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى. رواه مسلم
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমি ও এতিম প্রতিপালনকারীর অবস্থান জান্নাতে এই দুই অঙ্গুলির ন্যায় পাশাপাশি হবে। চাই সেই এতিম তার নিজের হোক অথবা অন্যের। (বর্ণনাকারী) মালিক বিন আনাস রা. তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করলেন। ( সহিহ মুসলিম)
সুতরাং যে ব্যক্তি জান্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথী হতে চায় সে যেন এতিম শিশুদের দেখাশোনা ও প্রতিপালনের যত্নশীল হয়।
▪ মিসকিন বলা ঐ সকল অভাবী লোকদেরকে যাদের উপার্জন তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। সব সময় অভাব-অনটনে ডুবে থাকে এবং আর্থিক সঙ্কটে বহু কষ্টে জীবন যাবন করে।
আর আমাদের সমাজে ফকির-মিসকিন তথা সহায়-সম্বলহীন দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত মানুষের অভাব নাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এদেরকে খাদ্য দান করা জান্নাত লাভের অন্যতম সহজ উপায়।
আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি,
يَا أيُّهَا النَّاسُ أَفْشُوا السَّلاَمَ وَأطْعِمُوا الطَّعَامَ وَصِلُوا الأرْحَامَ وَصَلُّوا والنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُوا الجَنَّةَ بِسَلاَمرواه الترمذي وقالحديث حَسَنٌ صَحِيْحٌ
“হে লোকেরা, তোমরা সালাম সম্প্রসারণ কর, খাদ্য খাওয়াও, রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ এবং মানুষ যখন (রাতে) ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা (তাহাজ্জুদের) নামায পড়। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (তিরমিযী ২৪৮৫, ইবনে মাজাহ ১৩৩৪, ৩২৫১, হাকিম ৪২৮৩, সহীহ তারগীব ৬১০ নং)
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
▬▬▬➰▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
fb/AbdullaahilHadi
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
▬▬▬➰▬▬▬
প্রশ্ন: কুরআনে আল্লাহ তাআলা এতিম ও মিসকিনদেরকে খাদ্য দানের কথা বলেছেন। প্রশ্ন হল, এতিম-মিসকিন কারা? তাদেরকে খাদ্য খাওয়ানোর মর্যাদা কতটুকু?
উত্তর:
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا
"তারা আল্লাহর ভালবাসায় অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে খাবার দেয়।" (সূরা ইনসান/দাহর: ৮)
এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, জান্নাতবাসী লোকদের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য যে, তারা অভাবী, অনাথ-এতিম শিশু ও বন্দিদেরকে খাবার দান করে (চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক।)
▪ এতীম (অনাথ) বলা হয় ঐ শিশুকে, যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় তার পিতাকে হারিয়েছে।
আপনি আপনার চারপাশে অনুসন্ধান করলে বা এতিমখানা/অরফেন সেন্টারগুলোতে খোঁজ নিলে অনেক এতিম শিশুর সন্ধান পাবেন। চট্টগ্রামের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিলবে অসংখ্য পিতৃহারা এতিম শিশু। কত অসহায় শিশু তাদের পিতৃ স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়ে সমাজে লাঞ্ছনা-বঞ্চনা সহ্য করে বড় হচ্ছে। কত নারী স্বামী হারিয়ে তার এতিম সন্তানকে বুকে নিয়ে অমানবিক পরিস্থিতিতে জীবনের ঘানি বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। যাদের একটু খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা প্রয়োজন। প্রয়োজন সঠিক শিক্ষার। এদের দায়িত্ব নেয়া অনেক মর্যাদাপূর্ণ কাজ, অনেক সওয়াবের কাজ। এ মর্মে কুরআন ও হাদিস পর্যাপ্ত বক্তব্য এসেছে।
আখিরাতে এতিম প্রতিপালনকারীদের মর্যাদা অপরিসীম। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ :قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِلُ الْيَتِيمِ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ فِي الْجَنَّةِ وَأَشَارَ مَالِكٌ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى. رواه مسلم
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমি ও এতিম প্রতিপালনকারীর অবস্থান জান্নাতে এই দুই অঙ্গুলির ন্যায় পাশাপাশি হবে। চাই সেই এতিম তার নিজের হোক অথবা অন্যের। (বর্ণনাকারী) মালিক বিন আনাস রা. তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করলেন। ( সহিহ মুসলিম)
সুতরাং যে ব্যক্তি জান্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথী হতে চায় সে যেন এতিম শিশুদের দেখাশোনা ও প্রতিপালনের যত্নশীল হয়।
▪ মিসকিন বলা ঐ সকল অভাবী লোকদেরকে যাদের উপার্জন তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। সব সময় অভাব-অনটনে ডুবে থাকে এবং আর্থিক সঙ্কটে বহু কষ্টে জীবন যাবন করে।
আর আমাদের সমাজে ফকির-মিসকিন তথা সহায়-সম্বলহীন দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত মানুষের অভাব নাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এদেরকে খাদ্য দান করা জান্নাত লাভের অন্যতম সহজ উপায়।
আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি,
يَا أيُّهَا النَّاسُ أَفْشُوا السَّلاَمَ وَأطْعِمُوا الطَّعَامَ وَصِلُوا الأرْحَامَ وَصَلُّوا والنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُوا الجَنَّةَ بِسَلاَمرواه الترمذي وقالحديث حَسَنٌ صَحِيْحٌ
“হে লোকেরা, তোমরা সালাম সম্প্রসারণ কর, খাদ্য খাওয়াও, রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ এবং মানুষ যখন (রাতে) ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা (তাহাজ্জুদের) নামায পড়। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (তিরমিযী ২৪৮৫, ইবনে মাজাহ ১৩৩৪, ৩২৫১, হাকিম ৪২৮৩, সহীহ তারগীব ৬১০ নং)
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
▬▬▬➰▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
fb/AbdullaahilHadi
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
0 Comments