জান্নাত লাভের কতিপয় উপায় পর্ব-৫।
_______________ _______________ _________
সংকলনঃ-ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম।হাফিয্বাহ ুল্লাহ
সূত্রঃ-মাসিক আত-তাহরিক।
পোষ্টার ডিজাইনার-মুহাম্ মাদ ফাহিম।
_______________ _______________ __
_______________
সংকলনঃ-ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম।হাফিয্বাহ
সূত্রঃ-মাসিক আত-তাহরিক।
পোষ্টার ডিজাইনার-মুহাম্
_______________
২২. পিতামাতার সাথে সদাচরণ করা :
_______________ _______________ ___
..
পিতা-মাতার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়াতে আসে। তাই তাদের প্রতি সদাচরণ করা প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য করণীয়। এটা আল্লাহর নিকটে সর্বাধিক পসন্দনীয় আমলও বটে। এর বিনিময় হচ্ছে জান্নাত।
.
.
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল!
أَيُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللهِ قَالَ الصَّلاَةُ عَلَى وَقْتِهَا قَالَ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ ثُمَّ بِرُّ الْوَالِدَيْنِ، قَالَ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ الْجِهَادُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ-
‘আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পসন্দনীয় আমল কি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, সময়মত ছালাত আদায় করা। আবার জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কি? তিনি বললেন, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা। আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা’।[1]
.
.
অন্যত্র তিনি বলেন,رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ قِيْلَ مَنْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ- ‘তার নাক ধূলায় মলিন হোক (একথা তিনি তিনবার বললেন)। বলা হ’ল, সে ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে অথবা দু’জনের একজনকে পেল (তাদের সেবা-যত্নের মাধ্যমে) অথবা সে জান্নাত লাভ করতে পারল না’।[2]
.
.
পিতামাতার সেবা করা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
.
.
মু‘আবিয়া ইবনু জাহিমা হ’তে বর্ণিত একদা আমার পিতা জাহিমা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বললেন,
يَا رَسُولَ اللهِ أَرَدْتُ الْغَزْوَ وَجِئْتُكَ أَسْتَشِيْرُكَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ قَالَ نَعَمْ فَقَالَ الْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ عِنْدَ رِجْلِهَا-
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি জিহাদে যেতে ইচ্ছুক। আমি আপনার নিকট পরামর্শ নিতে এসেছি। তখন রাসূল (ছাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মাতা আছেন কি? লোকটি বললেন, হ্যাঁ। রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি তাঁর সেবা কর, তাঁর পায়ের নিকটে জান্নাত রয়েছে’।[3]
.
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবু উমামা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত এক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর খিদমতে হাযির হয়ে বললেন,يَا رَسُولَ اللهِ مَا حَقُّ الْوَالِدَيْنِ عَلَى وَلَدِهِمَا قَالَ هُمَا جَنَّتُكَ وَنَارُكَ- ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! সন্তানের উপর পিতামাতার কি হক? তিনি বললেন, তারা উভয় তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম’।[4]
.
.
২৩. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা :
_______________ _______________ ___
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা জান্নাতে প্রবেশ করার অন্যতম মাধ্যম। আবূ আইয়ূব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত যে, জনৈক ছাহাবী নবী করীম (ছাঃ)-কে বললেন,أَخْبِرْن ِىْ بِعَمَلٍ يُدْخِلُنِى الْجَنَّةَ. قَالَ مَا لَهُ مَا لَهُ وَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم أَرَبٌ مَالَهُ، تَعْبُدُ اللهَ، وَلاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيْمُ الصَّلاَةَ، وَتُؤْتِى الزَّكَاةَ، وَتَصِلُ الرَّحِمَ. ‘আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলুন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তার কী হয়েছে! তার কী হয়েছে! এবং বললেন, তার দরকার রয়েছে তো। তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সঙ্গে অপর কোন কিছুকে শরীক করবে না। ছালাত আদায় করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখবে’।[5]
.
.
আবূ আইঊব আনছারী (রাঃ) বলেন, জনৈক বেদুঈন নবী করীম (ছাঃ)-এর এক ভ্রমণকালে তাঁর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল,أَخْبِرْنِي ْ مَا يُقَرِّبُنِيْ مِنَ الْجَنَّةِ، وَيُبَاعِدُنِيْ مِنَ النَّارِ؟ قَالَ تَعْبُدُ اللهَ وَلا تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيْمُ الصَّلاةَ، وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَتَصِلُ الرَّحِم- ‘যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম হ’তে দূরবর্তী করবে, সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেন, ইবাদত করবে আল্লাহর এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না। ছালাত কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে’।[6]
.
.
২৪. প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করা :
_______________ _______________ ___
.
.
প্রতিবেশীর সাথে উত্তম ব্যবহার করার জন্য রাসূল (ছাঃ) বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, জিবরীল (আঃ) এসেই আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে উপদেশ দেন। মনে হচ্ছিল তিনি যেন প্রতিবেশীকে আমার উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবেন।
.
.
মানুষ অধিকহারে নফল ছালাত-ছিয়াম আদায় ও দান-ছাদাক্বা করেও যদি প্রতিবেশীর সাথে দুর্ব্যবহার করে তাহ’লে সে জান্নাতে যেতে পারবে না।
.
.
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি বলল,
يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ فُلاَنَةَ تُذْكَرُ مِنْ كَثْرَةِ صَلاَتِهَا وَصِيَامِهَا وَصَدَقَتِهَا غَيْرَ أَنَّهَا تُؤْذِيْ جِيْرَانَهَا بِلِسَانِهَا قَالَ هِيَ فِي النَّارِ، قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَإِنَّ فُلاَنَةَ تُذْكَرُ مِنْ قِلَّةِ صِيَامِهَا وَصَدَقَتِهَا وَصَلَاتِهَا وَإِنَّهَا تَصَدَّقُ بِالْأَثْوَارِ مِنْ الْأَقِطِ وَلَا تُؤْذِيْ بِلِسَانِهَا جِيْرَانَهَا قَالَ هِيَ فِي الْجَنَّةِ-
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অমুক মহিলা অধিক ছালাত পড়ে, ছিয়াম রাখে এবং দান-ছাদাক্বাহ করার ব্যাপারে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। তবে সে নিজের মুখের দ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট দেয়। তিনি বললেন, সে জাহান্নামী। লোকটি আবার বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অমুক মহিলা যার সম্পর্কে জনশ্রুতি আছে যে, সে কম ছিয়াম পালন করে, দান-ছাদাক্বাও কম করে এবং ছালাতও কম আদায় করে। তার দানের পরিমাণ হ’ল পনীরের টুকরা বিশেষ। কিন্তু সে নিজের মুখ দ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট দেয় না। তিনি বললেন, সে জান্নাতী’।[7]
.
.
প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী ব্যক্তি মুমিন নয় বলে রাসূল (ছাঃ) ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, واللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ قِيلَ : مَنْ يَا رَسُول الله؟ قَالَ الَّذِي لاَ يَأمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ- ‘আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। জিজ্ঞেস করা হ’ল হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! সে কে? তিনি বললেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ নয়’।[8]
.
.
এ ধরনের লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তিনি বলেন, لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ مَنْ لاَ يَأمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ- ‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ নয়’।[9]
.
.
২৫. ইয়াতীম প্রতিপালন করা :
_______________ ____________
সমাজের অনাথ-ইয়াতীম শিশুরা হয়ে থাকে অবহেলিত। তাদের দেখা-শুনা ও প্রতিপালনের কেউ থাকে না। ফলে তারা হয়ে ওঠে দুষ্টু চরিত্রের। বখাটেপনা তাদের পেয়ে বসে। এদের দ্বারা সমাজ কলুষিত হয়।
.
.
রাসূল (ছাঃ) এদের রক্ষার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের প্রতিপালনে অশেষ ছওয়াবের কথাও উল্লেখ করেছেন। সেই সাথে আরেক শ্রেণী আছে স্বামীহীনা বিধবা মহিলা। তাদের ভরণ-পোষণ, জৈবিক চাহিদা পূরণ এবং অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণেরও ব্যবস্থা থাকে না। এ শ্রেণীর মানুষকে রক্ষার জন্য রাসূল (ছাঃ) বিশেষভাবে আদেশ দিয়েছেন। এদের দেখাশুনায়ও অনেক ছওয়াব রয়েছে।
.
.
তিনি বলেন,السَّاعِي عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالْمِسْكِيْنِ كَالسَّاعِيْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ، وَأحْسِبُهُ قَالَ كَالْقَائِمِ لاَ يَفْتُرُ وَكَالصَّائِمِ النَّهَارِ لاَ يُفْطِرُ- ‘বিধবা ও মিসকীনের তত্ত্বাবধানকারী আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর মত। রাবী বলেন, আমার ধারণা, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এটাও বলেছেন, রাত্রি জাগরণকারী যে অলসতা করে না এবং ঐ ছিয়াম পালনকারীর মত যে কখনও ছিয়াম ভঙ্গ করে না’।[10]
.
.
রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন,أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ كَهَاتَيْنِ فِى الْجَنَّةِ. وَقَرَنَ بَيْنَ أُصْبُعَيْهِ الْوُسْطَى وَالَّتِى تَلِى الإِبْهَامَ ‘আমি ও ইয়াতীমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এদু’টির মত থাকব। আর তিনি স্বীয় মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলির পার্শ্ববর্তী (শাহাদত) আঙ্গুলি একত্র করলেন।[11]
.
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, كَافِلُ الْيَتِيمِ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ فِى الْجَنَّةِ ‘নিজের অথবা অন্যের ইয়াতীমের প্রতিপালক ও আমি জান্নাতে এ দু’টির মত থাকব’। বর্ণনাকারী মালেক বলেন, তিনি মধ্যমা ও শাহাদত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন।[12]
.
.
২৬. কন্যা সন্তান প্রতিপালন করা :
_______________ _______________
.
.
কন্যা সন্তানকে সমাজে হীন দৃষ্টিতে দেখা হয়। অথচ কন্যা সন্তান প্রতিপালন করা জান্নাত লাভের উপায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ. وَضَمَّ أَصَابِعَهُ. ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যাকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত প্রতিপালন করে, আমি ও সে ব্যক্তি ক্বিয়ামতের দিন এভাবে থাকব। এটা বলে তিনি স্বীয় আঙ্গুল একত্রিত করলেন’।[13]
.
.
তিনি আরো বলেন, مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ دَخَلْتُ أَنَا وَهُوَ الْجَنَّةَ كَهَاتَيْنِ. وَأَشَارَ بِأَصْبُعَيْهِ. ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যাকে প্রতিপালন করে, আমি ও সে ব্যক্তি জান্নাতে এ দু’টির মত থাকব। আর তিনি স্বীয় দু’আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন’।[14]
.
.
২৭. আল্লাহর জন্য ভালবাসা স্থাপন করা :
_______________ _______________ ______
.
.
সমাজের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একে অপরের সাথে সম্প্রীতি-সৌহার ্দ্যের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এই সম্পর্ক যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মানসে হয়ে থাকে তাহ’লে তার বিনিময় হচ্ছে জান্নাত।
.
.
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
قَالَ اللهُ تَعَالَى: وَجَبَتْ مَحَبَّتِىْ لِلْمُتَحَابِّي ْنَ فِىَّ، وَالْمُتَجَالِس ِيْنَ فِىَّ وَالْمُتَزَاوِر ِيْنَ فِىَّ، وَالْمُتَبَاذِل ِيْنَ فِىَّ.
‘আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘যারা আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পরস্পরকে ভালবাসে, আমার উদ্দেশ্যে সমাবেশে মিলিত হয়, আমার উদ্দেশ্যে পরস্পরে সাক্ষাৎ করে এবং আমার উদ্দেশ্যেই নিজেদের মাল-সম্পদ ব্যয় করে, আমার ভালবাসা তাদের জন্য অবধারিত’।[15]
.
.
তিনি আরো বলেন, إِنَّ اللهَ يَقُوْلُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْنَ الْمُتَحَابُّوْ نَ بِجَلاَلِىْ؟ اَلْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِىْ ظِلِّىْ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلِّىْ. ‘ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, আমার সুমহান ইয্যতের খাতিরে যারা পরস্পরে ভালবাসা স্থাপন করেছে, তারা কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় স্থান দিব। আজ আমার ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া নেই’।[16]
.
.
অন্য হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন,
أَنَّ رَجُلاً زَارَ أَخًا لَّهُ فِىْ قَرْيَةٍ أُخْرَى، فَأََرْصَدَ اللهُ لَهُ عَلَى مَدْرَجَتِهِ مَلَكًا فَلَمَّا أَتَي عَلَيْهِ قَالَ أَيْنَ تُرِيْدُ؟ قَالَ أُرِيْدُ أَخًا لِّىْ فِىْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ، قَالَ: هَلْ لَّكَ عَلَيْهِ مِنْ نِّعْمَةٍ تَرُبُّهَا؟ قَالَ: لاَ غَيْرَ أَنِّىْ أَحْبَبْتُهُ فِى اللهِ قَالَ فَإِنِّىْ رَسُوْلُ اللهِ إِلَيْكَ بِأَنَّ اللهَ قَدْ أَحَبَّكَ كَمَا أَحْبَبْتَهُ فِيْهِ-
‘এক ব্যক্তি অন্য এক গ্রামে তার মুসলমান ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে বের হ’ল। আল্লাহ তা‘আলা তার গমন পথে একজন অপেক্ষমান ফেরেশতা বসিয়ে রাখলেন। লোকটি যখন সেখানে পৌঁছল, তখন ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় যাচ্ছ?
.
.
সে বলল, ঐ গ্রামে একজন ভাই আছে, তার সাথে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি। ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, তার কাছে তোমার কোন অনুগ্রহ আছে কি, যার বিনিময় লাভের জন্য তুমি যাচ্ছ? সে বলল, না, আমি তাকে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালবাসি। তখন ফেরেশতা বললেন, আমি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তোমার কাছে এই সংবাদ দেওয়ার জন্য প্রেরিত হয়েছি যে, আল্লাহ তোমাকে অনুরূপ ভালবাসেন, যেরূপ তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাকে ভালবাস’।[17]
.
.
তিনি আরো বলেন,
إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ لَأُنَاسًا مَّا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ وَلاَشُهَدَاءَ، يَغْبِطُهُمُ الْأَنْبِيَاءُ وَالشُّهَدَاءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِمَكَانِهِمْ مِّنَ اللهِ. قَالُوْا: يَارَسُوْلَ اللهِ تُخْبِرُنَا مَنْ هُمْ؟ قَالَ: هُمْ قَوْمٌ تَحَابُّوْا بِرَوْحِ اللهِ عَلَى غَيْرِ أَرْحَامٍ بَيْنَهُمْ، وَلاَ أَمْوَالٍ يَّتَعَاطَوْنَه َا، فَوَاللهِ إِنَّ وُجُوْهَهُمْ لَنُوْرٌ وَّإِنَّهُمْ لَعَلَى نُوْرٍ، لاَيَخَافُوْنَ إِذَا خَافَ النَّاسُ، وَلاَيَحْزَنُوْ نَ إِذَا حَزِنَ النَّاسُ، وَقَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ: أَلاَ إِنَّ أَوْلِيْاءَ اللهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَهُمْ يَحْزَنُوْنَ-
‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক আছে, যারা নবীও নন এবং শহীদও নন। কিন্তু ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাদের মর্যাদা দেখে নবী-শহীদগণও ঈর্ষা করবেন। ছাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদেরকে বলুন, তারা কারা? তিনি বললেন, তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা শুধু আল্লাহর রূহ (কুরআনের সম্পর্ক) দ্বারা পরস্পরকে ভালবাসে। অথচ তাদের মধ্যে কোন প্রকার আত্মীয়তা নেই এবং তাদের পরস্পরে মাল-সম্পদের লেনদেনও নেই। আল্লাহর কসম! তাদের চেহারা হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা উপবিষ্ট হবেন নূরের উপর।
.
.
তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হবে না, যখন সমস্ত মানুষ ভীত থাকবে। তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ ত হবে না, যখন সকল মানুষ দুশ্চিন্তায় নিমগ্ন থাকবে। অতঃপর তিনি কুরআনের এই আয়াত তেলাওয়াত করেন, ‘জেনে রাখ! নিশ্চয়ই আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ তও হবে না’।[18]
.
.
_______________ _______________ ___________
[1]. বুখারী ২/৮৮২; মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৮ ‘ছালাত’ অধ্যায়।
[2]. মুসলিম হা/২৫৫১; মিশকাত হা/৪৯১২, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়।
[3]. আহমাদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৯৩৯; ছহীহুল জামে‘ হা/১২৪৯।
[4]. ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৪৭২৪।
[5]. বুখারী হা/১৩৯৬।
[6]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৪৯; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৫০৮।
[7]. আহমাদ, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৪৯৯২; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/২৫৬০।
[8]. বুখারী হা/৬০১৬; মিশকাত হা/৪৯৬২।
[9]. মুসলিম হা/৪৬; মিশকাত হা/৪৯৬৩।
[10].বুখারী হা/৬০০৭; নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত হা/৪৯৫১।
[11]. আবু দাউদ হা/৫১৫০, সনদ ছহীহ।
[12]. মুসলিম হা/২৯৮৩।
[13]. মুসলিম হা/২৬৩১; মিশকাত হা/৪৯৫০।
[14]. তিরমিযী হা/১৯১৪; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৯৭।
[15]. মুওয়াত্তা মালেক, মিশকাত, হা/৫০১১, সনদ ছহীহ।
[16]. মুসলিম হা/২৫৬৬, মিশকাত, হা/৫০০৬।
[17]. মুসলিম, হা/২৫৬৭; মিশকাত, হা/৫০০৭।
[18]. আবুদাঊদ হা/৩৫২৭, মিশকাত, হা/৫০১২, ছহীহ লি-গায়রিহি।
_______________ ____
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
_______________
..
পিতা-মাতার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়াতে আসে। তাই তাদের প্রতি সদাচরণ করা প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য করণীয়। এটা আল্লাহর নিকটে সর্বাধিক পসন্দনীয় আমলও বটে। এর বিনিময় হচ্ছে জান্নাত।
.
.
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল!
أَيُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللهِ قَالَ الصَّلاَةُ عَلَى وَقْتِهَا قَالَ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ ثُمَّ بِرُّ الْوَالِدَيْنِ،
‘আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পসন্দনীয় আমল কি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, সময়মত ছালাত আদায় করা। আবার জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কি? তিনি বললেন, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা। আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা’।[1]
.
.
অন্যত্র তিনি বলেন,رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ قِيْلَ مَنْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ- ‘তার নাক ধূলায় মলিন হোক (একথা তিনি তিনবার বললেন)। বলা হ’ল, সে ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে অথবা দু’জনের একজনকে পেল (তাদের সেবা-যত্নের মাধ্যমে) অথবা সে জান্নাত লাভ করতে পারল না’।[2]
.
.
পিতামাতার সেবা করা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
.
.
মু‘আবিয়া ইবনু জাহিমা হ’তে বর্ণিত একদা আমার পিতা জাহিমা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বললেন,
يَا رَسُولَ اللهِ أَرَدْتُ الْغَزْوَ وَجِئْتُكَ أَسْتَشِيْرُكَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ قَالَ نَعَمْ فَقَالَ الْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ عِنْدَ رِجْلِهَا-
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি জিহাদে যেতে ইচ্ছুক। আমি আপনার নিকট পরামর্শ নিতে এসেছি। তখন রাসূল (ছাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মাতা আছেন কি? লোকটি বললেন, হ্যাঁ। রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি তাঁর সেবা কর, তাঁর পায়ের নিকটে জান্নাত রয়েছে’।[3]
.
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবু উমামা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত এক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর খিদমতে হাযির হয়ে বললেন,يَا رَسُولَ اللهِ مَا حَقُّ الْوَالِدَيْنِ عَلَى وَلَدِهِمَا قَالَ هُمَا جَنَّتُكَ وَنَارُكَ- ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! সন্তানের উপর পিতামাতার কি হক? তিনি বললেন, তারা উভয় তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম’।[4]
.
.
২৩. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা :
_______________
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা জান্নাতে প্রবেশ করার অন্যতম মাধ্যম। আবূ আইয়ূব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত যে, জনৈক ছাহাবী নবী করীম (ছাঃ)-কে বললেন,أَخْبِرْن
.
.
আবূ আইঊব আনছারী (রাঃ) বলেন, জনৈক বেদুঈন নবী করীম (ছাঃ)-এর এক ভ্রমণকালে তাঁর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল,أَخْبِرْنِي
.
.
২৪. প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করা :
_______________
.
.
প্রতিবেশীর সাথে উত্তম ব্যবহার করার জন্য রাসূল (ছাঃ) বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, জিবরীল (আঃ) এসেই আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে উপদেশ দেন। মনে হচ্ছিল তিনি যেন প্রতিবেশীকে আমার উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবেন।
.
.
মানুষ অধিকহারে নফল ছালাত-ছিয়াম আদায় ও দান-ছাদাক্বা করেও যদি প্রতিবেশীর সাথে দুর্ব্যবহার করে তাহ’লে সে জান্নাতে যেতে পারবে না।
.
.
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি বলল,
يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ فُلاَنَةَ تُذْكَرُ مِنْ كَثْرَةِ صَلاَتِهَا وَصِيَامِهَا وَصَدَقَتِهَا غَيْرَ أَنَّهَا تُؤْذِيْ جِيْرَانَهَا بِلِسَانِهَا قَالَ هِيَ فِي النَّارِ، قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَإِنَّ فُلاَنَةَ تُذْكَرُ مِنْ قِلَّةِ صِيَامِهَا وَصَدَقَتِهَا وَصَلَاتِهَا وَإِنَّهَا تَصَدَّقُ بِالْأَثْوَارِ مِنْ الْأَقِطِ وَلَا تُؤْذِيْ بِلِسَانِهَا جِيْرَانَهَا قَالَ هِيَ فِي الْجَنَّةِ-
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অমুক মহিলা অধিক ছালাত পড়ে, ছিয়াম রাখে এবং দান-ছাদাক্বাহ করার ব্যাপারে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। তবে সে নিজের মুখের দ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট দেয়। তিনি বললেন, সে জাহান্নামী। লোকটি আবার বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অমুক মহিলা যার সম্পর্কে জনশ্রুতি আছে যে, সে কম ছিয়াম পালন করে, দান-ছাদাক্বাও কম করে এবং ছালাতও কম আদায় করে। তার দানের পরিমাণ হ’ল পনীরের টুকরা বিশেষ। কিন্তু সে নিজের মুখ দ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট দেয় না। তিনি বললেন, সে জান্নাতী’।[7]
.
.
প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী ব্যক্তি মুমিন নয় বলে রাসূল (ছাঃ) ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, واللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ قِيلَ : مَنْ يَا رَسُول الله؟ قَالَ الَّذِي لاَ يَأمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ- ‘আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। জিজ্ঞেস করা হ’ল হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! সে কে? তিনি বললেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ নয়’।[8]
.
.
এ ধরনের লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তিনি বলেন, لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ مَنْ لاَ يَأمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ- ‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ নয়’।[9]
.
.
২৫. ইয়াতীম প্রতিপালন করা :
_______________
সমাজের অনাথ-ইয়াতীম শিশুরা হয়ে থাকে অবহেলিত। তাদের দেখা-শুনা ও প্রতিপালনের কেউ থাকে না। ফলে তারা হয়ে ওঠে দুষ্টু চরিত্রের। বখাটেপনা তাদের পেয়ে বসে। এদের দ্বারা সমাজ কলুষিত হয়।
.
.
রাসূল (ছাঃ) এদের রক্ষার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের প্রতিপালনে অশেষ ছওয়াবের কথাও উল্লেখ করেছেন। সেই সাথে আরেক শ্রেণী আছে স্বামীহীনা বিধবা মহিলা। তাদের ভরণ-পোষণ, জৈবিক চাহিদা পূরণ এবং অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণেরও ব্যবস্থা থাকে না। এ শ্রেণীর মানুষকে রক্ষার জন্য রাসূল (ছাঃ) বিশেষভাবে আদেশ দিয়েছেন। এদের দেখাশুনায়ও অনেক ছওয়াব রয়েছে।
.
.
তিনি বলেন,السَّاعِي عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالْمِسْكِيْنِ
.
.
রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন,أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ كَهَاتَيْنِ فِى الْجَنَّةِ. وَقَرَنَ بَيْنَ أُصْبُعَيْهِ الْوُسْطَى وَالَّتِى تَلِى الإِبْهَامَ ‘আমি ও ইয়াতীমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এদু’টির মত থাকব। আর তিনি স্বীয় মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলির পার্শ্ববর্তী (শাহাদত) আঙ্গুলি একত্র করলেন।[11]
.
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, كَافِلُ الْيَتِيمِ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ أَنَا وَهُوَ كَهَاتَيْنِ فِى الْجَنَّةِ ‘নিজের অথবা অন্যের ইয়াতীমের প্রতিপালক ও আমি জান্নাতে এ দু’টির মত থাকব’। বর্ণনাকারী মালেক বলেন, তিনি মধ্যমা ও শাহাদত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন।[12]
.
.
২৬. কন্যা সন্তান প্রতিপালন করা :
_______________
.
.
কন্যা সন্তানকে সমাজে হীন দৃষ্টিতে দেখা হয়। অথচ কন্যা সন্তান প্রতিপালন করা জান্নাত লাভের উপায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ. وَضَمَّ أَصَابِعَهُ. ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যাকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত প্রতিপালন করে, আমি ও সে ব্যক্তি ক্বিয়ামতের দিন এভাবে থাকব। এটা বলে তিনি স্বীয় আঙ্গুল একত্রিত করলেন’।[13]
.
.
তিনি আরো বলেন, مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ دَخَلْتُ أَنَا وَهُوَ الْجَنَّةَ كَهَاتَيْنِ. وَأَشَارَ بِأَصْبُعَيْهِ.
.
.
২৭. আল্লাহর জন্য ভালবাসা স্থাপন করা :
_______________
.
.
সমাজের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একে অপরের সাথে সম্প্রীতি-সৌহার
.
.
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
قَالَ اللهُ تَعَالَى: وَجَبَتْ مَحَبَّتِىْ لِلْمُتَحَابِّي
‘আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘যারা আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পরস্পরকে ভালবাসে, আমার উদ্দেশ্যে সমাবেশে মিলিত হয়, আমার উদ্দেশ্যে পরস্পরে সাক্ষাৎ করে এবং আমার উদ্দেশ্যেই নিজেদের মাল-সম্পদ ব্যয় করে, আমার ভালবাসা তাদের জন্য অবধারিত’।[15]
.
.
তিনি আরো বলেন, إِنَّ اللهَ يَقُوْلُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْنَ الْمُتَحَابُّوْ
.
.
অন্য হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন,
أَنَّ رَجُلاً زَارَ أَخًا لَّهُ فِىْ قَرْيَةٍ أُخْرَى، فَأََرْصَدَ اللهُ لَهُ عَلَى مَدْرَجَتِهِ مَلَكًا فَلَمَّا أَتَي عَلَيْهِ قَالَ أَيْنَ تُرِيْدُ؟ قَالَ أُرِيْدُ أَخًا لِّىْ فِىْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ، قَالَ: هَلْ لَّكَ عَلَيْهِ مِنْ نِّعْمَةٍ تَرُبُّهَا؟ قَالَ: لاَ غَيْرَ أَنِّىْ أَحْبَبْتُهُ فِى اللهِ قَالَ فَإِنِّىْ رَسُوْلُ اللهِ إِلَيْكَ بِأَنَّ اللهَ قَدْ أَحَبَّكَ كَمَا أَحْبَبْتَهُ فِيْهِ-
‘এক ব্যক্তি অন্য এক গ্রামে তার মুসলমান ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে বের হ’ল। আল্লাহ তা‘আলা তার গমন পথে একজন অপেক্ষমান ফেরেশতা বসিয়ে রাখলেন। লোকটি যখন সেখানে পৌঁছল, তখন ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় যাচ্ছ?
.
.
সে বলল, ঐ গ্রামে একজন ভাই আছে, তার সাথে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি। ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, তার কাছে তোমার কোন অনুগ্রহ আছে কি, যার বিনিময় লাভের জন্য তুমি যাচ্ছ? সে বলল, না, আমি তাকে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালবাসি। তখন ফেরেশতা বললেন, আমি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তোমার কাছে এই সংবাদ দেওয়ার জন্য প্রেরিত হয়েছি যে, আল্লাহ তোমাকে অনুরূপ ভালবাসেন, যেরূপ তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাকে ভালবাস’।[17]
.
.
তিনি আরো বলেন,
إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ لَأُنَاسًا مَّا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ وَلاَشُهَدَاءَ،
‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক আছে, যারা নবীও নন এবং শহীদও নন। কিন্তু ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাদের মর্যাদা দেখে নবী-শহীদগণও ঈর্ষা করবেন। ছাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদেরকে বলুন, তারা কারা? তিনি বললেন, তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা শুধু আল্লাহর রূহ (কুরআনের সম্পর্ক) দ্বারা পরস্পরকে ভালবাসে। অথচ তাদের মধ্যে কোন প্রকার আত্মীয়তা নেই এবং তাদের পরস্পরে মাল-সম্পদের লেনদেনও নেই। আল্লাহর কসম! তাদের চেহারা হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা উপবিষ্ট হবেন নূরের উপর।
.
.
তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হবে না, যখন সমস্ত মানুষ ভীত থাকবে। তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্
.
.
_______________
[1]. বুখারী ২/৮৮২; মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৮ ‘ছালাত’ অধ্যায়।
[2]. মুসলিম হা/২৫৫১; মিশকাত হা/৪৯১২, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়।
[3]. আহমাদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৯৩৯; ছহীহুল জামে‘ হা/১২৪৯।
[4]. ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৪৭২৪।
[5]. বুখারী হা/১৩৯৬।
[6]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৪৯; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৫০৮।
[7]. আহমাদ, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৪৯৯২; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/২৫৬০।
[8]. বুখারী হা/৬০১৬; মিশকাত হা/৪৯৬২।
[9]. মুসলিম হা/৪৬; মিশকাত হা/৪৯৬৩।
[10].বুখারী হা/৬০০৭; নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত হা/৪৯৫১।
[11]. আবু দাউদ হা/৫১৫০, সনদ ছহীহ।
[12]. মুসলিম হা/২৯৮৩।
[13]. মুসলিম হা/২৬৩১; মিশকাত হা/৪৯৫০।
[14]. তিরমিযী হা/১৯১৪; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৯৭।
[15]. মুওয়াত্তা মালেক, মিশকাত, হা/৫০১১, সনদ ছহীহ।
[16]. মুসলিম হা/২৫৬৬, মিশকাত, হা/৫০০৬।
[17]. মুসলিম, হা/২৫৬৭; মিশকাত, হা/৫০০৭।
[18]. আবুদাঊদ হা/৩৫২৭, মিশকাত, হা/৫০১২, ছহীহ লি-গায়রিহি।
_______________
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
► আপনার যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন ও পরবর্তী আপডেট পেতে পেজটি লাইক দিয়ে রাখুন। কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।” [সহীহ মুসলিম/ ২৬৭৪,৬৮০৪]
► আমাদের পোস্টগুলি কপিরাইট মুক্ত! সুতরাং আপনি চাইলে পেজের কনটেন্টগুলো হুবহু কপি করে ফেসবুক বা যেকোন মাধ্যমে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে প্রচার করতে পারেন বিনা অনুমতিতে।
জায্বাকুমুল্লাহ ।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaiteজায্বাকুমুল্লাহ
0 Comments