বিবাহ-সম্পর্কিত _প্রশ্নোত্তর❓অধ্যায় ০১

   বিবাহ-সম্পর্কিত বিষয়ক প্রবন্ধ_
প্রশ্নঃ বিবাহের ক্ষেত্রে বর্তমানে বৃহৎ আকারে ওয়ালীমা করার যে সামাজিক রীতি প্রচলিত রয়েছে, এরূপ ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান কি অপচয়ের অন্তর্ভুক্ত হবে?
ANSWER
শরীআতে ওয়ালীমা করার জন্য জোর তাকীদ এসেছে। তাই সামর্থ থাকলে এরূপ করায় বাধা নেই। আল্লাহ তাআলা বান্দার উপর তাঁর প্রদত্ত নেমতের নিদর্শন দেখতে ভালোবাসেন (আবুদাউদ হা/;৪০৬৩; মিশকাত হা/৪৩৫২; ছহীহুল জামেহা/২৫৪) রাসূল (ছাঃ) একটি বকরী দিয়ে লেও ওয়ালীমা করার নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী হা/২০৪৮; মুসলিম হা/১৪২৭; মিশকাত হা/৩২১০) তিনি যয়নব (রাঃ)-কে বিবাহের পর লোকদেরকে গোশত-রুটি খাইয়েছিলেন (বুখারী হা/৪৭৯৪; মুসলিম হা/১৪২৮; মিশকাত হা/৩২১২) ওয়ালীমায় গরীবদের বঞ্চিত করা যাবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, নিকৃষ্ট খানা ওয়ালীমার খানা, যাতে কেবল ধনীদের দাওয়াত দেওয়া হয় এবং গরীবদের বাদ দেওয়া হয়’ (বুখারী হা/৫১৭৭; মুসলিম হা/১৪৩২; মিশকাত হা/৩২১৮) তবে গান-বাজনা, অহেতুক আলোকসজ্জা ইত্যাদি অপচয় থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন, ‘অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই’ (ইসরা ১৭/২৭)
প্রশ্নঃ পাত্র বিদেশে থাকা অবস্থায় তাকে শরীআতসম্মত পন্থায় বিবাহ করার পদ্ধতি কি?
ANSWER
🎤 বিবাহ সামনা সামনি হওয়াই বিধেয়। একান্ত বাধ্যগত কারণে দেশী প্রবাসীর মধ্যে বিবাহের ক্ষেত্রে ক্বাযী ছাহেব সাধারণ বিবাহের ন্যায় প্রথমে বিবাহের খুৎবা পাঠ করবেন, যা দুই পক্ষ শুনবে (দারেমী হা/২২০২; মিশকাত হা/৩১৪৯) অতঃপর অভিভাবক কর্তৃক মেয়ের সম্মতি নিয়ে টেলিফোন, মোবাইল বা যেকোন অডিও বা ভিডিও কলের মাধ্যমে দুজন ন্যায় পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতিতে মেয়ের অভিভাবক বা কাযী ছাহেব ছেলেকে বিবাহের প্রস্তাব দিবেন। অপর প্রান্ত থেকে ছেলেকবুলবললে বিবাহ সম্পাদন হয়ে যাবে (আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১৩০; ইরওয়াউল গালীল /২৪০) তবে কোনরূপ ধোঁকার আশ্রয় নিলে বিবাহ বাতিল বলে গণ্য হবে।
প্রশ্নঃ আমি খুব সামান্য বেতনের চাকুরী করি, যা দিয়ে স্ত্রীর ভরণ পোষণ সম্ভব নয়। অথচ আমার পিতা-মাতা আমাকে বিবাহ দিতে চান। এক্ষণে আমার করণীয় কি?
ANSWER
🎤 এমন অবস্থায় বিবাহ করাই উত্তম হবে। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত আছে, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও ... তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছলতা দান করবেন’ (নূর ২৪/৩২) ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের বিবাহের ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন, স্বাধীন ক্রীতদাস সকলকে বিবাহের নির্দেশ দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে তাদেরকে অভাবমুক্ত করার অঙ্গীকার করেছেন (তাফসীর ত্বাবারী ১৯/১৬৬; ইবনু কাছীর /৫১-৫২ আয়াতের ব্যাখ্যা) রাসূল (ছাঃ) বলেন, তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ স্বীয় কর্তব্য হিসাবে নির্ধারণ করেছেন, তাদের একজন , বিবাহে ইচ্ছুক ব্যক্তি যে বিবাহের মাধ্যমে পবিত্র জীবন যাপন করতে চায় (তিরমিযী হা/১৬৫৫; মিশকাত হা/৩০৮৯; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৩০৮,১৯১৭)
প্রশ্নঃ জনৈকা বিধবা মহিলা একটি মেয়ে সন্তান সহ জনৈক বিপত্নীক পুরুষকে বিবাহ করে, যার আগে থেকে একটি ছেলে সন্তান আছে। এক্ষণে উক্ত মেয়ে ছেলের মাঝে বিবাহ বৈধ হবে কি?
🎤 বৈধ হবে। কারণ যে সকল নারীকে বিবাহ করা হারাম, বিমাতার পূর্ব স্বামীর কন্যা তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় (নিসা /২৪; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা /৬০০; উছায়মীন, মাজমূফাতাওয়া ২১/১৯৯; ফাতাওয়া ছালেহ ফাওযান /২৫৮)
প্রশ্নঃ বিবাহের পূর্বে পাত্র পাত্রীকে দেখতে পারে। কিন্তু পাত্রী পাত্রকে দেখতে পারবে কি?
ANSWER
🎤 বিবাহের উদ্দেশ্যে পাত্রী পাত্রকে দেখতে পারে। কারণ সাধারণভাবেই প্রবৃত্তির বশবর্তী না হয়ে নারী যেকোন পুরুষকে দেখতে পারে (বুখারী হা/৯৮৮) তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকের উপস্থিতিতে দেখবে। কেননা তার সম্মতি ব্যতীত বিবাহ জায়েয নয় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩১২৬)
প্রশ্নঃ ইসলামে একাধিক বিবাহ জায়েয থাকা সত্ত্বেও রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক আলী (রাঃ)-কে ফাতেমা (রাঃ) থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ করতে নিষেধ করার কারণ কি ছিল?
ANSWER
🎤 একাধিক বিবাহ বৈধ হওয়া সত্ত্বেও রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক আলী (রাঃ) দ্বিতীয় বিবাহ করতে নিষেধ করার কারণ ছিল এই যে, তিনি ইসলামের চির শত্রু আবু জাহলের মেয়েকে বিবাহ করতে চেয়েছিলেন। আবু জাহলের মেয়ের সাথে একই ঘরে ফাতিমা (রাঃ) সংসার করলে তাঁর ফিৎনায় পড়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। তাই আল্লাহর শত্রুর মেয়ের সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর মেয়ে একত্রে সংসার করুক এটা রাসূল (ছাঃ) সমর্থন করতে পারেননি। যেমন তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি হালালকে হারাম করছি না এবং হারামকে হালাল করছি না। কিন্তু আল্লাহর কসম! আল্লাহর রাসূলের কন্যা এবং আল্লাহর দুশমনের কন্যা কখনো একত্র তে পারে না (বুখারী হা/৩১১০; মুসলিম হা/২৪৪৯) উপরোক্ত বক্তব্যে রাসূল (ছাঃ) যে একাধিক বিবাহকে নিষেধ করেননি তা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত।

অতএব রাসূল (ছাঃ) তাঁর মনের সংকীর্ণতার কারণে নয় বরং আলী ফাতিমা (রাঃ) উভয়ের ইহকালীন কল্যাণ পরকালীন মঙ্গলের কথা ভেবেই আলী (রাঃ)-কে আবু জাহলের মেয়েকে বিবাহ করতে নিষেধ করেছিলেন (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী /৩২৯; নববী, শরহ মুসলিম /১৯৯; যাদুল মাআদ /১১৯)
প্রশ্নঃ বিবাহের মোহরানা হিসাবে কোন নারী যদি বিবাহের পর স্বামীর সাথে হজ্জে যেতে ইচ্ছা করে, তবে তা মোহরানা হিসাবে গ্রহণযোগ্য হবে কি?
ANSWER
🎤 স্ত্রীর হজ্জের খরচ বহন করাকে বিবাহের মোহরানা হিসাবে নির্ধারণ করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) কুরআনের সূরা শিক্ষা দানকেও বিবাহের মোহরানা হিসাবে গণ্য করেছেন (বুখারী হা/৫০২৯; মুসলিম হা/১৪২৫; মিশকাত হা/৩২০২)
প্রশ্নঃ ঝগড়ার মধ্যে স্বামী তার স্ত্রীকে তার সাথে সংসার করতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে স্ত্রীর ভুল সিদ্ধান্তের কারণে মহল্লার বখাটে ছেলেরা হস্তক্ষেপ করে বিবাহের কাবিন নামা নিয়ে যায় এবং কাযী অফিসের মাধ্যমে তালাক নামা লিখে এনে উভয়ের অসম্মতিতে
ANSWER
🎤 প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উক্ত তালাক বৈধ হয়নি। কারণ জোর করে বা ভয়-ভীতি দেখিয়ে তালাক হয় না (ইবনু মাজাহ হা/২০৪৩; মিশকাত হা/৬২৮৪; ইরওয়া হা/১০২৭, সনদ ছহীহ) ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘জোর করে বা অসম্মত ব্যক্তির তালাক বৈধ নয়’ (বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/১৪৮৮১; ইরওয়া হা/২০৪৬; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২০/৪২-৪৩) দ্বিতীয়তঃ এটি তালাক ধরে নিলেও এখানে একটি মাত্র তালাক হয়েছে। যেক্ষেত্রে স্ত্রীকে রাজআতের মাধ্যমে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার রয়েছে (মুসলিম হা/১৪৭২; আবুদাউদ হা/২২০০) তবে রাজআত করার নির্ধারিত সময়-সীমা অর্থাৎ ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হওয়ায় নতুন বিবাহের মাধ্যমে উক্ত স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে (বাক্বারাহ /২৩২; বুখারী হা/৪৫২৯)
প্রশ্নঃ কোন মহিলা স্বামী থাকা অবস্থায় অন্য পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ তে পারবে কি? বিশেষতঃ বার বার বলা সত্ত্বেও স্বামী যদি তালাক না দেয় সেক্ষেত্রে করণীয় কি?
ANSWER
🎤 পারবে না। কারণ স্বামীর সাথে উক্ত মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। এক্ষণে স্বামী তালাক দিতে না চাইলে মোহরানা ফেরৎ দিয়েফিসখে নিকাহকরবে এবং এক ঋতুকাল ইদ্দত শেষে অন্যের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে (নাসাঈ হা/৩৪৯৭খোলা কারিনীর ইদ্দতকালঅনুচ্ছেদ)
প্রশ্নঃ কোন নারী বা পুরুষ কর্তৃক একে অপরকে সরাসরি বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া শরীআতসম্মত কি?
ANSWER
🎤 উভয় পরিবারের মধ্যে প্রস্তাব আদান-প্রদানের মাধ্যমে বিবাহ সংঘটিত হওয়াই বিবাহের শরীআতসম্মত পদ্ধতি। পুরুষের জন্য এটা জায়েয লেও সরাসরি প্রস্তাব প্রদান শালীনতা আদবের বরখেলাফ। অতএব একজন পুরুষ কোন নারীর বৈধ অভিভাবকের নিকটে বিবাহের প্রস্তাব পাঠাবে (আহমাদ হা/২৫৮১০; হাকেম হা/২৭০৪, সনদ হাসান; বুখারী হা/৫১২২) আর নারী অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত বিবাহ করতে পারে না (আবূদাঊদ, তিরমিযী প্রভৃতি, মিশকাত হা/৩১৩১বিবাহঅধ্যায় অনুচ্ছেদ) তাই নারী তার বৈধ অভিভাবকের মাধ্যমে বিবাহের প্রস্তাব পেশ করতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিভাবক সার্বিক বিবেচনায় সম্মত লে পাত্রীর সম্মতি নিয়ে বিবাহের ব্যবস্থা করবেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১২৬)
প্রশ্নঃ বিবাহের সময় ছেলে-মেয়েদের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করা যাবে কি?
ANSWER
🎤 এগুলি বিজাতীয় কুসংস্কার থেকে এসেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি সেই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭পোষাকঅধ্যায়) অতএব এগুলি অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
প্রশ্নঃ মোহরানার সম্পদের হকদার স্ত্রী না তার পিতা? পিতা সে টাকা ব্যবহার করলে পরে তা ফেরত দিতে হবে কি?
ANSWER
🎤 উক্ত সম্পদের হকদার স্ত্রী (নিসা /) স্ত্রী চাইলে স্বীয় পিতাকে হাদিয়া হিসাবে দিতে পারে এবং পিতাও চাইলে ঋণ হিসাবে কিছু নি
প্রশ্নঃ স্ত্রী স্বামীর নিকটে বা স্বামী স্ত্রীর নিকটে কোন কাজের ব্যাপারে কৈফিয়ত চাইতে পারে কি? বিশেষত তাদের কেউ যদি অপরের অপসন্দের কাজ করে থাকে?
ANSWER
🎤 উভয়ে উভয়ের কল্যাণের জন্য সৎ পরামর্শ দিতে পারে। তবে যথাযোগ্য কোন বিষয়ে কৈফিয়ত চাওয়ার অধিকার পরিবার প্রধান হিসাবে কেবল স্বামীর জন্য নির্দিষ্ট। আল্লাহ বলেন, ‘পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল। ....নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগত... (নিসা ৩৪) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘স্বামী তার পরিবারের সদস্যদের দায়িত্বশীল এবং স্ত্রী তার স্বামীর গৃহের সন্তানদের দায়িত্বশীল’(বুখারী হা/২৫৫৪; মুসলিম হা/১৮২৯; মিশকাত হা/৩৬৮৫) স্ত্রী কৈফিয়ত নয় বরং স্বামীর সংসারের কল্যাণের জন্য সৎ পরামর্শ দিবে। এছাড়া স্বামীর নিশ্চিত শরীআত বিরোধী কোন কর্মকান্ডের ক্ষেত্রে সৎ নিয়তে বাধা দিবে
প্রশ্নঃ স্ত্রী সহবাসের নিষিদ্ধ সময় এবং উপকারী দিনসমূহ সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন।
ANSWER
🎤 এর কোন নিষিদ্ধ বা নির্ধারিত সময় নেই। বরং আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেত স্বরূপ। সুতরাং তোমরা তোমাদের ক্ষেতে যেভাবে ইচ্ছা গমন কর’ (বাক্বারাহ ২২৩) এছাড়া শুক্রবারে মিলিত হওয়ার ব্যাপারে আলী (রাঃ) বর্ণিত হাদীছটিমুনকারতথা যঈফ (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৯৪) এছাড়া বিভিন্ন দিনে মিলনের বিভিন্ন ফযীলত সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে, তা শীআদের তৈরী জাল বর্ণনা মাত্র (খোমেনী, তাহরীরুল ওয়াসায়েল, বিবাহ অধ্যায়) তবে হায়েয-নেফাসের সময় সহবাস নিষিদ্ধ (বাক্বারাহ ২২২; বুখারী হা/২২৮; মিশকাত হা/৫৫৭)
প্রশ্নঃ বিবাহের কিছুদিন পর স্ত্রী সংসার ত্যাগ করে চলে যায়। এমতাবস্থায় উক্ত মহিলার অবশিষ্ট মোহরানা পরিশোধ করতে হবে কি?
ANSWER
🎤 এরূপ অবস্থায় স্বামীকে আর কিছুই দিতে হবে না। বরং স্ত্রী স্বেচ্ছায় সংসার ত্যাগ করতে চাইলে তাকে স্বামী প্রদত্ত পুরা মোহরানা ফেরত দিয়েখোলা’- মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন তে হবে (বুখারী হা/৫২৭৩; মিশকাত হা/৩২৭৪)
প্রশ্নঃ কবিরাজের মাধ্যমে মেয়ে তার পরিবারের সদস্যদের বশ করিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবাহ সম্পাদন বৈধ হয়েছে কি? যদি বৈধ না হয় সেক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?
ANSWER
🎤 এরূপ বিবাহ বৈধ নয়। বরং এভাবে জাদুর মাধ্যমে কোন কিছু করা কবীরা গুনাহ (বুখারী হা/৫৬২) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘নিশ্চয়ই ঝাড়-ফুঁক করা, কোন কিছু ঝুলানো এবং স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালবাসা বৃদ্ধি করার যেকোন মাধ্যম অবলম্বন করা শিরক’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৫৫২) এক্ষণে অভিভাবকের সম্মতি নিয়ে পুনরায় নিয়ম মাফিক বিবাহ সম্পাদন করতে হবে।
প্রশ্নঃ পিতা-মাতার বিচ্ছেদের পর কোন সন্তান পিতা বা মাতা যেকোন একজনের তত্ত্বাবধানে বড় হওয়ার পর উভয়ের সম্পদেই কি সে অংশীদার হবে?
ANSWER
বিবাহের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তান পিতা-মাতা উভয়ের সম্পত্তির অংশীদার হবে(নিসা /১১) কার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হয়েছে সম্পদের অংশ পাওয়ার ক্ষেত্রে সেটি ধর্তব্য নয়।
প্রশ্নঃ পাঁচবছর পূর্বে স্ত্রীকে এক তালাক দিয়ে রাজআত করেছিল। কিছুদিন পূর্বে উক্ত স্ত্রীকে গর্ভবতী অবস্থায় দুই তালাক দিয়েছে। এক্ষণে পুনরায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে স্বামীর করণীয় কি?
ANSWER
🎤 পূর্বে প্রদত্ত তালাকটি ধর্তব্য হবে এবং দ্বিতীয় বারের দুতালাক যদি একই বৈঠকে সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে এটা এক তালাক হিসাবে গণ্য হবে (মুসলিম হা/১৪৭২-৭৩; আবুদাঊদ হা/২১৯৬) অতএব মোট দুতালাক হওয়ায় স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ায় বাধা নেই (বাক্বারাহ /২২৯) তবে যদি ইদ্দতকাল তথা তালাক প্রদানের দিন থেকে তিন মাস অতিক্রান্ত হয় অথবা গর্ভবতী অবস্থায় তালাক দেওয়ার পর গর্ভ খালাস হয়ে যায়, তাহলে নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফিরিয়ে নিতে হবে (বাক্বারাহ ২৩২; তালাক ;বুখারী হা/৫১৩০)
প্রশ্নঃ স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর কতদিন পর্যন্ত খোরপোষ দেওয়ার শারঈ নির্দেশনা রয়েছে?
ANSWER
🎤 স্বামী স্ত্রীকে রাজঈ তালাক দিলে ইদ্দতকাল পর্যন্ত খোরপোষ দিবে (নাসাঈ হা/৩৪০৩; ছহীহাহ হা/১৭১১; আল-ইসতিযকার ১৮/৬৯) আর তালাকপ্রাপ্তা তিন তালাক বায়েন হয়ে গেলে তাকে কোন খোরপোষ দিতে হবে না (মুসলিম হা/১৪৮০; মিশকাত হা/৩৩২৪; ছহীহুল জামেহা/৭৫৫১) তবে স্ত্রী গর্ভবতী লে সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত তালাক প্রদানকারী স্বামীকে তার খোরপোষের ব্যবস্থা করতে হবে দুধ পান করালে তাকে উপযুক্ত মজুরী দিতে হবে (ত্বালাক ৬৫/০৪) অপর দিকে খোলাপ্রাপ্তা নারী কোন খোরপোষ পাবে না (ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৮৮১৪, ১৮৪৯৭)
প্রশ্নঃ মুসলিম হা/১৪৮০-এর বর্ণনায় অনুযায়ী রাসূল (ছাঃ) ফাতেমা বিনতে ক্বায়েস (রাঃ)-কে মুআবিয়া (রাঃ)-এর সাথে তার দরিদ্রতার কারণে বিবাহ দেননি। অন্যদিকে তিরমিযী হা/১০৮৪-তে পরহেযগারিতা চরিত্র দেখে বিবাহের নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষণে উভয় হাদীছের মাঝে সামঞ্জস্য বিধান কি হবে?
ANSWER
🎤 প্রস্তাব দানকারী তিনজন ছাহাবী মুআবিয়া, আবু জাহম ওসামা বিন যায়েদ (রাঃ) সকলেই পরহেযগারিতা চারিত্রিক দিক থেকে উত্তম ছিলেন। সেকারণ রাসূল (ছাঃ) অন্যান্য দিক সমূহ বিবেচনা করে ওসামা (রাঃ)-এর সাথে বিবাহ দিয়েছিলেন। যেমন আবুবকর ওমর (রাঃ) উভয়ে ফাতিমা (রাঃ)-কে বিবাহ করার প্রস্তাব দিলে বয়সে অনেক ছোট বলে রাসূল (ছাঃ) তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে আলী (রাঃ) প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণ করেন (নাসাঈ হা/৩২২১; মিশকাত হা/৬০৯৫, সনদ ছহীহ)
স্মর্তব্য যে, রাসূল (ছাঃ) বিবাহের ক্ষেত্রে ধন-সম্পদ, বংশ-মর্যাদা সৌন্দর্যের উপর পরহেযগারিতাকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮২, ৩০৯০, ‘বিবাহঅধ্যায়) কিন্তু বাকী তিনটির দিকে লক্ষ্য রাখতে নিষেধ করেননি। অতএব বিবাহের ক্ষেত্রে পরহেযগারিতা ছাড়াও অন্যান্য দিক বিবেচনা করায় কোন বাধা নেই।
প্রশ্নঃ বিবাহের পূর্বে পাত্রী দেখার ক্ষেত্রে পাত্র পক্ষ থেকে কোন কোন পুরুষের জন্য পাত্রী দেখার অনুমোদন রয়েছে?
ANSWER
🎤 বিবাহের উদ্দেশ্যে মেয়ের অভিভাবকের সম্মতিক্রমে কেবলমাত্র পাত্র তার প্রস্তাবিত পাত্রীকে দেখতে পারে। পাত্র ব্যতীত কোন গায়ের মাহরাম পুরুষ পাত্রী দেখতে পারবে না। তবে পরিবেশ বা আনুসঙ্গিক বিষয় সমূহ দেখার জন্য অভিভাবকগণ খোঁজ-খবর নিতে পারবেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলল, আমি আনছারদের এক মেয়েকে বিবাহ করতে ইচ্ছুক। তিনি বললেন, তুমি তাকে প্রথমে দেখে নাও। কারণ আনছার মহিলাদের চোখে দোষ থাকে (মুসলিম হা/১৪২৪, মিশকাত হা/৩০৯৮বিবাহঅধ্যায়) রাসূল (ছাঃ) বলেন,তোমরা বিবাহের জন্য উপযুক্ত পাত্রী নির্বাচন কর (ইবনু মাজাহ হা/১৯৬৮; ছহীহাহ হা/১০৬৭) তিনি আরো বলেন, যখন তোমাদের কেউ কোন পাত্রীকে প্রস্তাব দিবে সম্ভব লে সে যেন পাত্রীকে দেখে। যা বিবাহের জন্য সহায়ক হবে (আবুদাউদ হা/২০৮২; মিশকাত হা/৩১০৬; ছহীহাহ হা/৯৯) অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, পাত্রী দর্শনে পরস্পরে মহববত সৃষ্টি হয়’ (ইবনু মাজাহ হা/১৮৬৫; মিশকাত হা/৩১০৭; ছহীহাহ হা/৯৬)
স্মর্তব্য যে, বিবাহের পর স্ত্রীকে স্বামীর ভাই, চাচা, মামা, ভগ্নিপতি সহ অন্যান্য গায়ের মাহরাম পুরুষ থেকে অবশ্যই পর্দা করতে হবে (নূর ২৪/৩১; মুত্তাফাক্বআলাইহ, মিশকাত হা/৩১০২)
প্রশ্নঃ জান্নাতে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে বিবি মারিয়াম, মূসার বোন কুলছূম এবং ফেরাঊনের স্ত্রী আসিয়ার বিবাহ হবে। উক্ত কথার সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
ANSWER
উক্ত মর্মে বর্ণিত কথাটি মিথ্যা (সিলসিলা যঈফাহ হা/৮১২)
প্রশ্নঃ শরীআতের দৃষ্টিকোণ থেকে একজন স্ত্রী থাকা উত্তম, নাকি একাধিক স্ত্রী? বিস্তারিত জানতে চাই।
ANSWER
🎤 শারীরিক, অর্থনৈতিক ইনছাফ রক্ষার ব্যাপারে ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির জন্য একাধিক বিবাহ করা উত্তম। কেননা একজন স্ত্রীর প্রতি ইহসান, শিক্ষাদান ভরণ-পোষণের ফলে যে নেকী অর্জিত হয়, একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে সে অনুপাতে নেকী বেশী হয় (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব) তবে উপরোক্ত শর্তাবলী পূরণে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য একজন স্ত্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাই উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘...তাহলে অন্য মেয়েদের মধ্য থেকে যাদের তোমরা ভাল মনে কর দুই, তিন বা চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পার। কিন্তু যদি তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে পারবে না বলে ভয় কর, তাহলে মাত্র একটি বিবাহ কর...’ (নিসা /০৩) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা অধিক সোহাগিনী অধিক সন্তানদায়িনী মহিলাকে বিবাহ কর। কারণ আমি ক্বিয়ামতের দিন তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে গর্ব করব’ (আবুদাঊদ হা/২০৫০; মিশকাত হা/৩০৯১ সনদ ছহীহ)
প্রশ্নঃ দ্বিতীয় বিবাহের জন্য স্ত্রীর অনুমতি যরূরী কি? একাধিক স্ত্রীর মাঝে ইনছাফ না করতে পারার পরিণতি কি?
ANSWER
🎤 শারঈ দৃষ্টিতে পূর্ব স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তাআলা মুসলিম পুরুষকে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছেন (নিসা ) তবে বিবাহ করার চেয়ে স্ত্রীদের মাঝে ইনছাফ করার বিষয়টি বেশী যরূরী কঠিন। এজন্য একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে ইনছাফের বিষয়টি ভাবতে হবে একাধিক স্ত্রী থাকলে ইনছাফ করা আবশ্যক। কেননা নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘কারো নিকট যদি দুজন স্ত্রী থাকে আর সে তাদের মাঝে ইনছাফ না করে, তাহলে সে ক্বিয়ামতের দিন এক অঙ্গ পতিত অবস্থায় উঠবে’ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২৩৬) তবে পারিবারিক শান্তির স্বার্থে পূর্ব স্ত্রীর সম্মতি গ্রহণ করা ভাল।
প্রশ্নঃ আল্লাহ বলেন, ব্যভিচারী পুরুষ ব্যভিচারিণী নারী ব্যতীত বিবাহ করে না এবং ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ ব্যতীত বিবাহ করে না’ (নূর ) আয়াতটির সঠিক মর্মার্থ কি?
ANSWER
🎤 উক্ত আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য , কোন সৎকর্মশীল পুরুষের জন্য কোন ব্যভিচারিণী নারীকে বিবাহ করা বৈধ নয়, যতক্ষণ না সে তওবা করে। অনুরূপ এর বিপরীত। অর্থাৎ তওবা করলে বিবাহ করা জায়েয। ইমাম আহমাদ বলেছেন, কোন সৎকর্মশীল পুরুষের সাথে কোন ব্যভিচারিণী নারীর বিবাহ শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ না সে তওবা করে। অনুরূপ কোন সতী নারীর সাথে কোন ব্যভিচারী পুরুষের বিবাহ শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ না সে তওবা করে (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা নূর আয়াত)
প্রশ্নঃ আমি আমার দাদীর বুকের দুধ খেয়ে বড় হয়েছি। অতঃপর গত বছর পূর্বে আমার আপন ফুফুর মেয়ের সাথে আমার বিবাহ হয়েছে। বিবাহ সঠিক হয়েছে কি?
ANSWER
🎤 উক্ত বিবাহ সঠিক হয়নি। কারণ এক্ষেত্রে দাদী দুধ মা হওয়ায় উক্ত মেয়েটি আপনার দুধ বোনের মেয়ে তথা আপন ভাগ্নী হিসাবে গণ্য হবে। যাকে বিবাহ করা হারাম (নিসা /২৩) রাসূল (ছাঃ) তাঁর চাচা হামযা (রাঃ) একই মায়ের দুধপান করেছিলেন। সেকারণ হামযার মেয়ের সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া লে তিনি বলেন, সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা সে আমার দুধ ভাইয়ের মেয়ে। বংশীয় সূত্রে যে সকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, দুগ্ধ পান সূত্রেও সেসকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম (বুখারী হা/২৬৪৫; মুসলিম হা/১৪৪৭; মিশকাত হা/৩১৬১) সে রাসূলের চাচাতো বোন। কিন্তু দুধপানের কারণে ভাতিজী হয়ে গেছে। অনুরূপ ফুফাতো বোন হওয়া সত্ত্বেও দুধপানের কারণে এখন সে আপনার আপন ভাগ্নীতে পরিণত হয়েছে। অতএব উক্ত বিবাহ বিচ্ছিন্ন করা আবশ্যক (বুখারী, মিশকাত হা/৩১৬৯)
প্রশ্নঃ জাওনিয়ার সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিবাহ হয়েছিল কি? তিনি কেন তাকে তালাক দিয়েছিলেন?
ANSWER
🎤 জাওনিয়ার (الجونية) সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিবাহ তালাকের ব্যাপারে আয়েশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীছটিই যথেষ্ট। যেখানে তিনি বলেন, জাওনের কন্যাকে যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট (একটি ঘরে) পাঠানো ল। আর তিনি তার নিকটবর্তী লেন, তখন সে বলল, আমি আপনার থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তুমি তো মহান সত্তার কাছে পানাহ চেয়েছ। অতএব তুমি তোমার পরিবারের সাথে মিলিত হও (বুখারী হা/৫২৫৪) অতএব জাওনিয়া বিবাহের পর রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে বসবাসে অস্বীকৃতি জানালে তিনি তাকে তালাক প্রদান করেন (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : ফাৎহুলবারী, উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা)
প্রশ্নঃ আমাদের এলাকার ইমাম ছাহেব একই বৈঠকে জনৈক ব্যক্তিকে দিয়ে তার স্ত্রীকে তিন তালাক প্রদান করান। অতঃপর বৈঠকেই উক্ত মহিলাকে অপর এক পুরুষের সাথে বিবাহ দেন। উক্ত তালাক বিবাহ সঠিক হয়েছে কি?
ANSWER
উক্ত তালাক বিবাহ দুটিই শরীআতের দৃষ্টিতে অবৈধ হয়েছে। প্রথমতঃ একসাথে তিন তালাক দিলে সেটি এক তালাক হিসাবে গণ্য হবে (মুসলিম হা/১৪৭২-৭৩; আবুদাঊদ হা/২১৯৬, সনদ হাসান) কেননা তালাকের সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে পৃথক পৃথকভাবে তিন তুহুরে তিনবার তালাক দেওয়া (বাক্বারাহ /২২৯; তালাক্ব ৬৫/-) দ্বিতীয়তঃ সঠিকভাবে তালাক সম্পন্নের পর ইদ্দত শেষে উক্ত মহিলা অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে (বাক্বারাহ /২২৮) ইদ্দতের মধ্যে বিবাহের কোন সুযোগ নেই।
প্রশ্নঃ স্ত্রীর জীবদ্দশায় যদি স্বামী মোহরানা পরিশোধ না করেন, তাহলে তার মৃত্যুর পর তা পরিশোধ করতে হবে কি?
ANSWER
🎤 স্বামীর জন্য ফরয কর্তব্য স্ত্রীর জীবদ্দশায় মোহরানা পরিশোধ করা (নিসা , মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩) জীবদ্দশায় তা পরিশোধ করা না লে মৃত্যুর পর স্ত্রীর ওয়ারিছদের মধ্যে মোহরানার অর্থ বণ্টন করে দিতে হবে। অতঃপর স্বামী অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অজ্ঞতাবশে কোন মন্দ কাজ করে, অতঃপর যদি সে তওবা করে নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে তিনি (তার ব্যাপারে) ক্ষমাশীল দয়াবান’ (আনআম /৫৪)
প্রশ্নঃ একসাথে দুই স্ত্রীর ভরণ-পোষণের ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিবাহ করা শরীআত সম্মত হবে কি?
ANSWER

🎤 রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মোহর ভরণ-পোষণের সামর্থ্য থাকার শর্তে বিবাহের নির্দেশ দিয়েছেন। আর সামর্থ্য না থাকলে ছিয়াম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮০, মিরক্বাত /১৮৬) যেখানে প্রথম বিবাহের জন্যই সামর্থ্যের শর্তারোপ করা হয়েছে, সেখানে সামর্থ্যহীন অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ জায়েয হয় কিভাবে? উল্লেখ্য যে, রাসূল (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে অভাবমুক্ত হওয়ার জন্য একাধিক বিবাহ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৪০০ আলোচনা দ্রঃ)

Post a Comment

0 Comments