▌দা‘ওয়াতের উদ্দেশ্য কি রাষ্ট্র কায়েম করা?
·সৌদি ফতোয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য, যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] প্রদত্ত ফতোয়া—
প্রশ্ন: “এখানে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্নকারী বলছেন, নিম্নোক্ত দাবিগুলোর ক্ষেত্রে আপনার সিন্ধান্ত কী? (দাবিগুলো হলো:) রাষ্ট কায়েম করা এবং রাজত্ব তলব করা হচ্ছে দা‘ওয়াতের মূল উদ্দেশ্য। দ্বিতীয় দাবি: গোপন শাসক ও গুপ্তসংঘের কাছে বা‘ইআত করা যায়। তৃতীয় দাবি...” [শাইখ এই পর্যন্ত শুনেই উত্তর দেওয়া শুরু করেছেন]
উত্তর: “দা‘ওয়াতের উদ্দেশ্য হলো একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করা এবং তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা। প্রত্যেক রাসূল তাঁদের স্ব স্ব জাতিকে সর্বাগ্রে এই দা‘ওয়াত প্রদান করেছেন। তাঁরা বলেছেন, “হে আমার জাতি, তোমরা (কেবল) আল্লাহর ইবাদত করো; তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোনো উপাস্য নেই।” [১] নাবী ﷺ সর্বপ্রথম তাওহীদের দিকে দা‘ওয়াত দিয়েছেন। তিনি মক্কায় তেরো বছর অবস্থান করেছেন এবং (মানুষকে) তাওহীদের দা‘ওয়াত দিয়েছেন। তিনি ﷺ যখন মু‘আয (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) কে ইয়েমেনে পাঠালেন, তখন তিনি তাঁকে উদ্দেশ করে বললেন, “তুমি আহলে কিতাবদের একটি সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছ। অতএব তাদের প্রতি তোমার প্রথম আহ্বান হবে, তারা যেন এই সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর রাসূল। তারা যদি তা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ দিনে রাতে তাদের প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেছেন। তারা যদি তা মেনে নেয়, তাহলে তুমি তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, (তাদের ধন-সম্পদে) আল্লাহ তাদের প্রতি জাকাত ফরজ করেছেন, যা তাদের ধনশালীদের থেকে গ্রহণ করা হবে।” [২]
এটা হলো দা‘ওয়াতের মানহাজ তথা নীতি বা পন্থা। নাবীগণ আমাদেরকে এই মানহাজই দেখিয়ে গেছেন। এটা দা‘ওয়াতের মানহাজ নয় যে, আমরা মানুষকে হুকুমতের দিকে আহ্বান করব, মানুষকে রাজত্ব প্রতিষ্ঠার দিকে আহ্বান করব। বরং আমরা মানুষকে (আল্লাহর) দ্বীনের দিকে আহ্বান করব, তাওহীদের দিকে আহ্বান করব। এটাই সর্বপ্রথম বিষয়। আমরা মানুষকে এই বিষয়ের দিকে দা‘ওয়াত দিব। আমরা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিকে এবং শাসকের আনুগত্য করার দিকে আহ্বান করব। এটা হলো আল্লাহর দিকে (প্রকৃত) আহ্বান। এটাই শরিয়তের বিধান এবং এটাই ইসলামের বিধান। না‘আম।”
·পাদটীকা:
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
[১]. সূরাহ আ‘রাফ: ৫৯, ৬৫, ৭৩, ৮৫; সূরাহ হূদ: ৫০, ৬১, ৮৪; সূরাহ মু’মিনূন: ২৩।
[২]. সাহীহ বুখারী, ২১৪৯; সাহীহ মুসলিম, হা/১৯।
·উৎস:
ফতোয়ার ভিডিয়ো ক্লিপটি ‘আল-ফিরক্বাতুন নাজিয়াহ’ নামক ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেওয়া হয়েছে।
0 Comments