Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

মানুষকে গাধা, কুকুর ইত্যাদি বলে সম্বোধনের ব্যাপারে সাবধান বাণী:



মানুষকে গাধা, কুকুর ইত্যাদি বলে সম্বোধনের ব্যাপারে সাবধান বাণী:
▬▬▬ ❂◯❂▬▬▬
◈ ১. আলা ইবনুল মুসাইয়েব তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তার পিতা (মুসাইয়েব) বলেছেন,
لاتقل لصاحبك يا حمار يا كلب يا خنزير فيقول لك يوم القيامة : أتراني خلقت كلبا أو حمارا أو خنزيرا
“তোমার সঙ্গী-সাথীকে হে গাধা, হে কুকুর, ওহে শুয়োর বলে সম্বোধন করবে না। অন্যথায় কিয়ামতের দিন সে তোমাকে বলবে, “তুমি কি মনে করতে যে, আমাকে কুকুর, গাধা বা শুয়োর রূপে সৃষ্টি করা হয়েছিল?” [মুসান্নিফে ইবনে আবি শায়বাহ, ৫/২৮২]

◈ ২. অনুরূপ কথা বর্ণিত হয়েছে, ইবরাহিম নাখঈ রাহ. থেকেও। [মুসান্নিফে ইবনে আবি শায়বাহ, ৫/২৮৩]

◈ ৩. ইমাম নওবী রাহ. বলেন,
"ومن الألفاظ المذمومة المستعملة في العادة قوله لمن يخاصمه: يا حمار، يا تيس، ياكلب، ونحو ذلك، فهذا قبيح لوجهين: أحدهما: أنه كذب. والآخر: أنه إيذاء
“নিন্দনীয় যে সব শব্দ সচরাচর ব্যবহৃত হয় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, ঝগড়াঝাঁটিতে প্রতিপক্ষকে বলা: হে গাধা, হে পাঠা/ছাগল, কুকুর ইত্যাদি। তা দুটি কারণে কুৎসিত:
এক: তা মিথ্যা, অন্যটি হল, কষ্টদায়ক।” [আল আযকার, পৃষ্ঠা নং ৩৬৫]

◈ ৪. আল্লামা শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায বলেন, কোন মুমিন ব্যক্তির জন্য কাউকে গাধা, কুকুর, শুয়োর, খচ্চর, গরু-ছাগল ইত্যাদি বলে ডাকা শোভনীয় নয়। বরং সবচেয়ে সুন্দর নামে সম্বোধন করা উচিত।

এ সব উপাধি দিয়ে মানুষকে সম্বোধন করা হলে পারস্পারিক বিদ্বেষ সৃষ্টি, মন-কষাকষি, ঝগড়াঝাঁটি বা মারামারি হতে পারে।” [শাইখের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট]

◈ ৫. আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন বলেন, "মানুষকে জীবজন্তু বা পশুর উপাধি দিয়ে ডাকা হারাম।”

বিন বায, উসাইমিন রাহ. উভয়েই নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা দলিল পেশ করেন:

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا يَسۡخَرۡ قَوۡمٞ مِّن قَوۡمٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُونُواْ خَيۡرٗا مِّنۡهُمۡ وَلَا نِسَآءٞ مِّن نِّسَآءٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُنَّ خَيۡرٗا مِّنۡهُنَّۖ وَلَا تَلۡمِزُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَلَا تَنَابَزُواْ بِٱلۡأَلۡقَٰبِۖ بِئۡسَ ٱلِٱسۡمُ ٱلۡفُسُوقُ بَعۡدَ ٱلۡإِيمَٰنِۚ وَمَن لَّمۡ يَتُبۡ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ

"হে ইমানদারগণ! কোনও মুমিন সম্প্রদায় যেন অপর কোনও মুমিন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীরাও যেন অন্য নারীদেরকে উপহাস না করে। কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারিনীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অন্যের প্ৰতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ উপাধিতে ডেকো না। ইমানের পর মন্দ উপাধি অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না তারাই তো যালিম।" [সূরা হুজুরাত: ১১]

ইমাম ইবনে কাসির রাহ. উক্ত আয়াতে ولا تنابزوا بالألقاب “আর তোমরা একে অপরকে মন্দ উপাধিতে ডাকিও না” এর ব্যাখ্যায় বলেন,
أي : لا تتداعوا بالألقاب ، وهي التي يسوء الشخص سماعها
“অর্থাৎ তোমারা একে অপরকে এমন সব উপাধি দ্বারা ডাকাডাকি করো না যা সে শুনতে অপছন্দ করে।” [তাফসিরে ইবনে কাসির]
আল্লাহ আমাদেরকে জন্তু-জানোয়ারের নামে মানুষকে সম্বোধনের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
▬▬▬ ❂◯❂▬▬▬
লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

Post a Comment

0 Comments