Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

জাহান্নাম বিষয়ক হাদীস....

জাহান্নাম বিষয়ক হাদীস

🔶আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত।

রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা যখন জান্নাত সৃষ্টি করলেন, তখন জিবরাইল (আ.)-কে বললেন, যাও, জান্নাত দেখে আস। তিনি গিয়ে উহা এবং উহার অধিবাসীদের জন্য যেই সমস্ত জিনিস আল্লাহ তা‘আলা তৈরী করে রেখেছেন, সবকিছু দেখে আসলেন, এবং বললেন, হে আল্লাহ! তোমার ইজ্জতের কসম! যে কেহ এই জান্নাতের অবস্থা সম্পর্কে শুনবে, সে অবশ্যই উহাতে প্রবেশ করবে। (অর্থাৎ, প্রবেশের আকাঙ্খা করবে)। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতের চারপার্শে কষ্টসমূহ দ্বারা বেষ্টন করে দিলেন, অতঃপর পুনরায় জিবরাইল(আ.)-কে বললেন, হে জিবরাইল! আবার যাও এবং পুনরায় জান্নাত দেখে আস। তিনি গিয়ে উহা দেখে আসলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! এখন যা কিছু দেখলাম, উহার প্রবেশপথ যে কষ্টকর। আমার আশংকা হচ্ছে যে, কোন একজনই উহাতে প্রবেশ করবে না।

🔶রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেন, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা যখন জাহান্নামকে সৃষ্টি করলেন, তখন বললেন, হে জিবরাইল! যাও, জাহান্নাম দেখে আস। তিনি দেখে এসে বলবেন, হে আল্লাহ! তোমার ইজ্জতের কসম! যে কেহ এই জাহান্নামের ভয়ংকর অবস্থার কথা শুনবে, সে কখনও উহাতে প্রবেশ করবে না। (অর্থাৎ, এমন কাজ করবে, যাতে উহা হতে বেঁচে থাকতে পারে)। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের চারপার্শে প্রবৃত্তির আকর্ষণীয় বস্তু দ্বারা বেষ্টন করলেন এবং পুনরায় জিবরাইলকে বললেন, আবার যাও এবং দ্বিতীয়বার উহা দেখে আস। তিনি গেলেন এবং এবার দেখে এসে বললেন, হে আল্লাহ! তোমরা ইজ্জতের কসম করে বলছি, আমার আশংকা হচ্ছে, একজন লোকও উহাতে প্রবেশ ব্যতীত বাকী থাকবে না। -[আবু দাউদ, হা/৪৭৪৬, তিরমিযী, হা/২৫৬০, নাসাঈ, হা/৩৭৬৩, মিশকাত, হা/৫৪৫২, বাংলা অনুবাদ, এমদাদিয়া, ১০/১৭২]

🔶আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তা'আলা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ আযাব ভোগকারীকে জিজ্ঞেস করবেন, যদি পৃথিবীর ধন-সম্পদ তোমার হয়ে যায়, তবে তুমি কি আযাবের বিনিময়ে তা দিয়ে দিবে? সে উত্তর দিবে, হ্যাঁ। তখন আল্লাহ বলবেন, যখন তুমি আদাম আলাইহি আস-সাল্লাম এর পৃষ্ঠে ছিলে, তখন আমি তোমার নিকট এর থেকেও সহজ একটি জিনিস চেয়েছিলাম। সেটা হলো, তুমি আমার সঙ্গে কাউকে শরীক করবে না। কিন্তু তুমি তা না মেনে শিরক করতে লাগলে। -[বুখারীঃ ৩৩৪, ৬৫৩৮; মুসলিমঃ ২৮০৫]

🔶আব্দুল্লাহ ইবনে মাস’উদ(রা.) হতে বর্ণিত,

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামকে এমন অবস্থায় উপস্থিত করা হবে, যার ৭০ টি লাগাম হবে এবং প্রতিটি লাগামের সাথে ৭০ হাজার ফেরেশতা থাকবে, তাঁরা তা টেনে আনবে। -[মুসলিম, ‘জাহান্নামের আগুনের তাপের প্রখরতা’ অধ্যায়, হা/২৮৪২, মিশকাত, বাংলা অনুবাদ, এমদাদিয়া, ১০/১৬০, হা/৫৪২২]

🔶সামুরা ইবনে জুনদুব(রা.) হতে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ(সাঃ)বলেছেন, জাহান্নামীদের মধ্যে কোন কোন লোক এমন হবে, জাহান্নামের আগুন তার পায়ের টাখনু পর্যন্ত পৌঁছবে। তাদের মধ্যে কারো হাঁটু পর্যন্ত আগুন পৌঁছবে, কারো কারো কোমর পর্যন্ত এবং কারো কারো গর্দান পর্যন্ত পৌঁছবে। -[মুসলিম, হা/৭৩৪৯, মিশকাত, ‘জাহান্নাম ও তার অধিবাসিদের বর্ণনা’ অধ্যায়, হা/৫৪২৭, বাংলা অনুবাদ, এমদাদিয়া, ১০/১৬২]

🔶নু’মান ইবনু বাশীর (রা.) বলেন,

রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন, জাহান্নামীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সহজতর শাস্তি ঐ ব্যক্তির হবে, যাকে আগুনের ফিতাসহ দু’খানা জুতা পরান হবে, এতে তার মগয এমনভাবে ফুটতে থাকবে, যেমনভাবে তামার পাত্র ফুটতে থাকে। সে ধারণা করবে, তার অপেক্ষা কঠিন আযাব কেহ ভোগ করছে না, অথচ সে হবে সর্বাপেক্ষা সহজতর শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি।

-[মুসলিম, ‘জাহান্নামীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সহজতর শাস্তি’ অধ্যায়, হা/৫৩৯, মিশকাত, ‘জাহান্নাম ও তার অধিবাসিদের বর্ণনা’ অধ্যায়, হা/৫৪২৩, বাংলা অনুবাদ, এমদাদিয়া ১০/১৬১। বুখারী, ‘আবু তালেবের কিছ্‌ছা’ অধ্যায়, হা/৩৮৮৫, বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৩/৬২৮]

🔶আনাস ইবনে মালেক(রা.) হতে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, জাহান্নামে অনবরত (জ্বিন-মানুষ) কে নিক্ষেপ করা হবে। তখন জাহান্নাম বলতে থাকবে, আরো অধিক কিছু আছে কি? এভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত বলতে থাকবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজ পাঁ প্রবেশ করাবেন। তখন জাহান্নামের একাংশ অপর অংশের সাথে মিলে যাবে এবং বলবে, তোমার মর্যাদা ও অনুগ্রহের কসম! যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে।

-[বুখারী, ‘আল্লাহর ইযযত, গুণাবলী ও কালেমাসমূহের কসম করা’ অধ্যায়, হা/৬৬৬১, বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, ৬/১১৪, মুসলিম, হা/২৮৪৮, মিশকাত, হা/৫৪৫১, বাংলা অনুবাদ, এমদাদিয়া, ১০/১৭২]

عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «حُجِبت النار بالشهوات، وحُجبت الجنة بالمَكَاره»متفق عليه وهذا لفظ البخاري. وفي رواية لهما: «حُفَّت» بدل «حُجِبت».

আবূ হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জাহান্নাম প্রবৃত্তি দিয়ে বেষ্টিত। আর জান্নাত বেষ্টিত দুঃখ-ক্লেশ দিয়ে। মুত্তাফাকুন আলাইহি। এটি সহীহ বুখারীর শব্দ। তাদের উভয়ের অপর এক বর্ণনায় বর্ণিত, হুফ্ফাত হুজিবাতের পরিবর্তে। 

সহীহ - মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।

 ব্যাখ্যা:

হাদীসের অর্থ হলো, জান্নাতে পৌঁছার পথ মানুষের অপছন্দনীয় জিনিস দ্বারা বেষ্টিত; কেননা অন্তরের বিষয়ে মূলনীতি হলো সে সর্বদা আরাম-আয়েশের দিকে ঝুঁকে থাকে। এমনিভাবে হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া ও আল্লাহর আনুগত্য থেকে দূরে সরে যাওয়ার দ্বারা যখন ব্যক্তি তার নিজের ও জাহান্নামের মাঝের পর্দা সরিয়ে ফেলবে তখনই সে জাহান্নামে যাবে। সুতরাং কোনো ব্যক্তি পর্দা উন্মোচিত করলেই সে পর্দাবৃত স্থানে পৌঁছতে পারে। আর জান্নাতের পর্দা উন্মোচন হয় অপছন্দনীয় ও কষ্টকর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়লে (অর্থাৎ কষ্টকর কাজ সম্পাদন করলে) আর জাহান্নামের পর্দা উন্মোচিত হয় প্রবৃত্তির কাজে লিপ্ত হলে। নফসের অপছন্দনীয় কাজ হলো ইবাদতে কঠোর পরিশ্রম, নিয়মিতভাবে তা পালন, ইবাদত করতে কষ্ট সহ্য ও ধৈর্য ধারণ, রাগ সংবরণ, ক্ষমা, সহনশীলতা, সততা, অসদাচরণকারীর প্রতি ইহসান ও প্রবৃত্তি অনুসরণ থেকে ধৈর্য ধারণ করা ইত্যাদি। মানুষের নফস কখনও কখনও নিয়মিতভাবে সালাত আদায় করতে অপছন্দ করতে পারে; কেননা এতে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম ও দুনিয়াবী বিষয়ের প্রতি নফসের যে বিশাল কামনা রয়েছে তা থেকে তাকে বিচ্ছিন্নকরণ। আবার নফস কখনও জিহাদ, সম্পদ দান ইত্যাদি করতে অপছন্দ করে; কেননা নফস সম্পদের প্রতি আকৃষ্ট। এছাড়াও অন্যান্য আনুগত্যের কাজ করতে নফস অপছন্দ করে। মানুষ যদি তার প্রবৃত্তির কামনা ছিন্ন করে নফসের চাহিদা বিরোধী কর্ম সম্পাদন করতে পারে এবং আল্লাহর আদেশসমূহ মান্য করে এবং তাঁর নিষেধসমূহ থেকে বিরত থাকে তাহলে এগুলো জান্নাতে যাওয়ার কারণ হবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। অন্যদিকে যেসব প্রবৃত্তির কারণে মানুষের জাহান্নামে যাওয়া আবশ্যক হয় তা হলো হারাম প্রবৃত্তিসমূহ। যেমন, মদ, যিনা, পরনারীর দিকে দৃষ্টি দেওয়া, আমোদ-প্রমোদ ইত্যাদি। তবে বৈধ প্রবৃত্তি এসবের অন্তর্ভুক্ত হবে না; কিন্তু অতিরিক্ত করা মাকরূহ যাতে এগুলো হারামের দিকে নিয়ে না যায় অথবা অন্তর কঠিন না হয়ে যায় বা ইবাদত থেকে অমনোযোগী না করে অথবা দুনিয়াদারী অর্জনে ব্যস্ত না হয়ে পড়ে। 

 ফায়দাসমূহ:

1)গুনাহের কর্মসমূহে পতিত হওয়ার কারণ হলো, শয়তান খারাপ ও মন্দকে সু-সজ্জিত করে দেখায়, যার ফলে আত্মা তাকে সুন্দর দেখে সেদিকে ধাবিত হয়।

2)অনেক সময় আত্মা কোন কিছুকে অপছন্দ করে অথচ তাতে রয়েছে অধিক কল্যাণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমাদের উপর লড়াইয়ের বিধান দেয়া হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয় এবং হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।

3)আত্মার চাহিদার সাথে সর্বদা সংগ্রাম করা এবং তাকে কু-প্রবৃত্তি ও তার পছন্দনীয় বস্তু থেকে ফিরিয়ে রাখা খুব জরুরি।

4)জান্নাত ও জান্নাম বর্তমান বিদ্যমান দু’টি সৃষ্ট মাখলুক।


(ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে📚 এখানে পাবেন🎶প্রচুর অডিও সিরিজ🎶100 এর বেশী শায়খ ভিত্তিক অডিও 90 এর উপর 🎶বিষয় ভিত্তিক অডিও🌎অডিও কুরআন এবং অনলাইনে অডিও শুনুন🎶এছাড়াও বিষয় ভিত্তিক ভিডিও,♂সহীহ-সুন্নাহ-ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল,ইসলামিক পত্রিকা 📚 and অনেক জানা-অজানা-আর্টিকল 📚 বিষয় ভিত্তিক সিরিজ আকারে http://islamicebookandpic.in/ ইসলামিক গালারি 👇বিশেষ দ্রস্টব্যঃ-👇 ওয়েবসাইট sarolpoth.blogspot.com/ ইসলামিক সমস্থ প্রগ্রাম একসাথে পেতে http://salafimp3web.blogspot.com/👉 অডিও সমাহার👈 👉 https://salafi-pdfbooks.blogspot.com/ সমস্ত ইসলামিক বই👆

Post a Comment

0 Comments