Can one perform Sunnah or Nafl prayers anywhere in the mosque? Or should one pray in a specific place in the mosque?
🕋 মসজিদর
যে কোন জায়গায় কি সুন্নাত বা নফল সালাত আদায় করা যায়? না মাসজিদের নির্দিষ্ট জায়গায়
সালাত করবে ? এই গুলি সুন্নাত, না মোস্তাহাব, না জায়েজ/ মাকরুহ ইত্যাদি আসুন যেনে নিই।
🌿 মসজিদের নির্দিষ্ট জায়গায় ফরয সালাত আদায় করা কি ঠিক? না মাসজিদের যে
কোন জায়গায় আদায় করবে ?
🔹 সংক্ষিপ্ত
উত্তর:
হ্যাঁ, মসজিদের যে কোনো পবিত্র স্থানে
সুন্নত সালাত আদায় করা সর্বসম্মতভাবে জায়েয (বৈধ) এতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, এবং
এটি সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। মাসজিদে
নামাজের জন্য কোনো নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ বাধ্যতামূলক নয়— বরং পরিবর্তন করা সুন্নাতের
অংশ।
দলিল:ইমাম নববী (রহ.) তাঁর
আল-মাজমু' শারহুল মুহাযযাব খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২০৪, 'শারহুল মুসলিম' (সহীহ
মুসলিমের ব্যাখ্যা)-তেও এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।]
হাদিসে মসজিদে নামাজ আদায়ের
ফজিলত সম্পর্কে অনেক বর্ণনা রয়েছে। তবে, নফল বা সুন্নত নামাজের জন্য মসজিদের কোনো
নির্দিষ্ট স্থান বাধ্যতামূলক করা হয়নি। শান্তি বজায় রাকখার কথা বলা হয়েচছে।
📚 রেফারেন্স [আবু দাউদ: ৪৬৫)।
*এখানে কারো বাধা দেওয়ার অধিকার নেই যে তুমি এখানে কেন আদায় করছ। মুসল্লির
যেখানে ভালো লাগবে সেই পবিত্রও জায়গায় বা স্থানে সালাত আদায় করবে। তবে ফরজ ব্যাতিত
সুন্নাত ও নফল বাড়িতে পড়া উত্তম।
📚 রেফারেন্স [সহীহ
মুসলিম,হাদীস নং: ১৫২৪, আন্তর্জাতিক নং: ৭১২]
📝 দলিল ও ব্যাখ্যা:
🌿 ১. জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে ও
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
রাসূলুল্লাহ ﷺ
বলেন: "পুরো পৃথিবী আমার
জন্য মসজিদ ও পবিত্র করা হয়েছে..."
📚 রেফারেন্স: 📚 [সহীহ বুখারী: ৩৩৫ | সহীহ মুসলিম:
৫২১, ৫২৩] (৪৩৮, ৩১২২; মুসলিম ৫/১, হাঃ
৫২১ আহমাদ ১৪২৬৮) (আ.প্র. ৩২৩, ই.ফা. ৩২৮)]
অর্থাৎ, মুমিন যে কোনো পবিত্র স্থানে নামায পড়তে পারে, বিশেষ করে মসজিদ তো ইবাদতের স্থান।
২. রাসূলুল্লাহ ﷺ
সাহাবাদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে সালাত আদায় করেছেন।
🌿 জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন:
“রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) মসজিদের যেকোনো দিকেই নামায পড়তেন যেটা সহজ হতো।”
📚 রেফারেন্স: [ ইবন হিব্বান: (১৭২৮) | সহীহ সনদে বর্ণিত, সুনানে আবু দাউদ: 489, 492 সুনানে তিরমিযী: 313, 317] সুনানে ইবনে মাজাহ: 745]
🕋 ৩. একই জায়গায় সব সময় নামাজ না পড়ার
নির্দেশ:
রাসূলুল্লাহ ﷺ
বলেন: অর্থ: “তোমাদের কেউ যেন সব নামাজ এক জায়গায় না পড়ে।”
📚 রেফারেন্স: ইমাম বায়হাকি, "সুনান الكبرى":
(৩/৩৯৬) (সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং: ২৪৬) সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস নং: ৭৫৮। ফতোয়া
ইবনে বায রহঃ fotoya
ibne baz roh:]
🔸 উদ্দেশ্য: যাতে অহংকার বা নির্দিষ্ট
জায়গার প্রতি অন্ধ অনুরাগ না হয়। তাই স্থান পরিবর্তন করা উত্তম।
🕋 ৪. ইজতিহাদ ও
মতামত:
🌿
ইমাম নববী (রহ.)
বলেন:
"সুন্নাত সালাত মসজিদের যে কোনো
জায়গায় আদায় করা জায়েয। তবে মাঝে মাঝে স্থান পরিবর্তন করা মুস্তাহাব।"
📚 রেফারেন্স: [আল-মাজমু'
শারহুল মুহাযযাব (৪/২০৪), সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, হাদিস নং: 1007]
🌿 ইমাম নববী (রহ.) উল্লেখ করেছেন যে, ফরজ সালাত আদায়ের পর যে ব্যক্তি
সুন্নাত সালাত আদায় করতে চায়, তার জন্য মুস্তাহাব হলো সে তার বসার স্থান থেকে
সরে গিয়ে অন্য স্থানে সালাত আদায় করবে, অথবা কথা বলবে, অথবা বের হয়ে যাবে (এবং
অন্য স্থানে সালাত আদায় করবে)।
এর বিভিন্ন কারণ তিনি উল্লেখ করেছেন, যেমন:
🌿 কিয়ামতের
দিন অধিক স্থানের সাক্ষ্য: বিভিন্ন স্থানে সালাত আদায় করলে সেসব স্থান
কিয়ামতের দিন ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষী দেবে।
🌿 শয়তানের
ধোঁকা থেকে বাঁচা: একই স্থানে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে শয়তানের ধোঁকা ও
ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্ত থাকা কঠিন হতে পারে।
🌿 বরকত
বৃদ্ধি: বিভিন্ন স্থানে ইবাদত করার মাধ্যমে বরকত বৃদ্ধি
পায়।
✅ উপসংহার:
🔹 মসজিদের নির্দিষ্ট
কোনো স্থানে শুধু সুন্নত সালাত আদায় করা শর্ত নয়। বরং:
ü যেকোনো
পবিত্র জায়গায় আদায় করা জায়েয।
ü মাঝে
মাঝে স্থান পরিবর্তন
করাও সুন্নাহর অংশ।
ü কেবল
ইমামের পেছনে ফরজ নামাজ আদায়ে কাতার নির্ধারিত হয়, কিন্তু ব্যক্তিগত সুন্নত ও নফল সালাতে
নির্দিষ্ট স্থান বাধ্যতামূলক নয়।
📌 শিক্ষা:
ü নির্দিষ্ট জায়গার প্রতি মোহ থাকা বা সেখানে না পেলে বিরক্ত হওয়া উচিত নয়।
ü মসজিদজুড়ে পবিত্রতা বজায় রেখে নামায পড়া ইসলামের উদারতা ও সহজতর বিধানের অংশ।
🕋 কারণ
ও রেফারেন্স:
🌿 ১.
ফরয ও সুন্নাত সালাতের
মধ্যে পার্থক্য করা: রাসূলুল্লাহ (সা.) ফরয সালাত এবং পরবর্তী
সুন্নাত বা নফল সালাতের মধ্যে পার্থক্য করতে বলেছেন। এর দুটি প্রধান পদ্ধতি হাদীসে
এসেছে:
🌿
কথা বলার মাধ্যমে: ফরয সালাত শেষে কিছু কথা বলা।
🌿
স্থান পরিবর্তনের
মাধ্যমে: ফরয সালাত আদায়ের স্থান থেকে একটু সরে অন্য জায়গায়
সুন্নাত সালাত আদায় করা।
**দলিল:**
মুআবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা যেন এক সালাতের সাথে অন্য সালাতকে
মিলিয়ে না দেই যতক্ষণ পর্যন্ত কথা না বলি বা বের না হয়ে যাই।"
📚 রেফারেন্স:
(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৮৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন: ৮০৯)।
📝ব্যাখ্যা: এই হাদীসের ব্যাখ্যায় উলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, ফরয এবং সুন্নাতের মধ্যে পার্থক্য করার উদ্দেশ্য হলো, উভয় সালাতকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা। স্থান পরিবর্তন এর একটি উত্তম পদ্ধতি। এর ফলে, এক স্থানে সালাতের রুকু-সিজদা করার পর অন্য স্থানে রুকু-সিজদা করলে কিয়ামতের দিন ওই স্থানগুলো বান্দার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।
🌿 ২. ঘরে সুন্নাত আদায় করা উত্তম: সর্বোত্তম হলো, ফরয সালাতের পর সুন্নাত সালাতগুলো ঘরে গিয়ে আদায় করা। এতে রিয়া (লোক দেখানো) থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং ঘরে বরকত আসে।
**দলিল:**
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: "হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঘরে সালাত আদায় কর। কেননা,
ব্যক্তির উত্তম সালাত হচ্ছে তার ঘরের সালাত তবে ফরয সালাত ব্যতীত।"
📚 রেফারেন্স: (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৮১)।
🌿 ৩. যদি মসজিদে একান্ত আদায় করতেই হয়:
যদি কোনো কারণে মসজিদে সুন্নাত আদায় করতেই হয় (যেমন: সময় নেই, ঘরে উপযুক্ত পরিবেশ
নেই), তাহলে ফরয সালাত আদায়ের স্থান থেকে একটু ডানে, বামে, সামনে বা পেছনে সরে গিয়ে,
বা মসজিদের অন্য কোনো খালি জায়গায় আদায় করা উত্তম। একদম ফরযের কাতার বা ইমামের ঠিক
পেছনেই যে আদায় করতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এমনকি, অনেক ফকিহ এটিকে মাকরুহ
বলেছেন, যদি এর দ্বারা অন্য মুসল্লিদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটে বা মনে হয় যে ফরয সালাতের
সাথে মিলিয়ে ফেলা হচ্ছে।
📘 উপসংহার:
ü
যারা মসজিদের একদম সামনে বা ফরযের কাতারের ঠিক পেছনেই সুন্নাত সালাত আদায় করেন, তারা সাধারণত সুবিধার জন্য বা দ্রুত আদায় করার জন্য করেন। এটি নাজায়েজ নয়, তবে সুন্নাহসম্মত এবং উত্তম পদ্ধতি হলো স্থান পরিবর্তন করে আদায় করা, বা সম্ভব হলে ঘরে গিয়ে আদায় করা। এটি কোনো বাধ্যতামূলক নিয়ম নয় যে, সুন্নাত সালাত মসজিদের একদম নির্দিষ্ট একটি স্থানেই আদায় করতে হবে। মুসল্লিরা মসজিদের যেকোনো পবিত্র ও খালি স্থানে সুন্নাত সালাত আদায় করতে পারেন, তবে ফরযের স্থান থেকে একটু সরে গেলে উত্তম হয়।
🕋বিষয়ঃ মসজিদের নির্দিষ্ট
স্থানে ফরয সালাত আদায় করার অপছন্দনীয়তাঃ
প্রশ্ন নম্বর: ২২২৪৫৫
🎉আমি কিছু লোককে দেখি, তারা মসজিদের একটি নির্দিষ্ট স্থানেই সালাত আদায় করেন– হয় ইমামের পেছনে বা প্রথম কাতারের ডান দিকে। এই কাজটি কি সুন্নাহসম্মত?
🎉
উত্তর:
সকল প্রশংসা
আল্লাহর জন্য এবং সালাত ও সালাম তাঁর রাসূলের উপর। অতঃপর:
এই কাজটি সুন্নাহসম্মত নয়, বরং সুন্নাহ
বিরোধী। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই কাজ থেকে নিষেধ করেছেন।
📝 হাদীস
ও ব্যাখ্যা:
🎉আব্দুর রহমান ইবন
শিবল (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন:
"রাসূলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন:
কাক
ঠোকরানোর মতো সিজদা করা থেকে (নাকরাতুল গুরাব)।"
📚 রেফারেন্স:
[ইমাম আহমাদ (৩/৪২৮) এবং আবূ দাঊদ (৮৬২)]
📝
ব্যাখ্যা: এর অর্থ হলো, সিজদায় এত দ্রুত ওঠা-বসা করা
যেন কাক কোনো কিছু ঠোকরানোর সময় যেমন অল্প সময় নেয়, ঠিক তেমনই। অর্থাৎ, সিজদায়
প্রয়োজনীয় সময় না দেওয়া।
🎉 হিংস্র পশুর মতো হাত বিছিয়ে সিজদা করা
থেকে (ইফতিরাশুস সাব')।
📝 ব্যাখ্যা: এর অর্থ হলো, সিজদার সময় বাহুদ্বয়কে মাটি থেকে
উঁচু না রেখে হিংস্র পশু বা কুকুরের মতো মাটিতে বিছিয়ে দেওয়া।
এবং পুরুষের জন্য মসজিদে একটি নির্দিষ্ট
স্থানকে অভ্যাসে পরিণত করা থেকে, যেমন উট তার বসার স্থানকে অভ্যাসে পরিণত করে (তাওয়াতুনুর
রাজুলুল মাকানা ফিল মসজিদ)।"
এর
অর্থ হলো, কোনো ব্যক্তি মসজিদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে সালাত আদায় করতে অভ্যস্ত হয়ে
যাওয়া, যেন সে ওই স্থান ছাড়া অন্য কোথাও সালাত আদায় করে না। যেমন উট তার চারণভূমি
বা বসার জন্য নির্ধারিত আরামদায়ক স্থান ছাড়া অন্য কোথাও বসে না।
📚 রেফারেন্স: [আলবানী (রহ.) তার 'সিলসিলাতুস সাহিহাহ'
(১১৬৮) গ্রন্থে এর শাহেদ (সমর্থক বর্ণনা) এর কারণে এটিকে হাসান বলেছেন।]
🕋 উলামায়ে কেরামের উক্তি:
🎉শাইখুল
ইসলাম ইবন তাইমিয়া (রহ.) বলেন:
"কারো জন্য মসজিদের কোনো অংশকে
এমনভাবে নির্দিষ্ট করে নেওয়া জায়েজ নয় যে সে অন্যকে সেখানে সালাত আদায় করতে
বাধা দেবে। বরং নবী (সা.) উটের মতো স্থানকে অভ্যাসে পরিণত করা থেকে নিষেধ করেছেন।
উলামায়ে কেরাম বলেছেন: এর অর্থ হলো, কোনো ব্যক্তি মসজিদের একটি নির্দিষ্ট স্থানকে
নিজের জন্য নির্দিষ্ট করে নেওয়া, যেখানে সে ছাড়া অন্য কেউ সালাত আদায় করে
না।"
অতএব, মসজিদে কোনো ব্যক্তির জন্য একটি
নির্দিষ্ট স্থানকে নিজের জন্য নির্দিষ্ট করে সেখানে সালাত আদায় করা মাকরূহ
(অপছন্দনীয়)।
📚 রেফারেন্স:
[তাঁর গ্রন্থ "মাজমূউল ফাতাওয়া" (২২/১৯৫)]
📝 হাদীসটির
ব্যাখ্যা:
ইমাম শামসুল হক
আজিমাবাদী (عون المعبود)
বলেন:
🎉এর দুটি ব্যাখ্যা রয়েছে—
১) কেউ যদি
মসজিদের একটি নির্দিষ্ট জায়গা পছন্দ করে নেয় এবং সব সময় সেখানেই নামায পড়ে, অন্য
কোথাও পড়ে না—তাহলে সে নিষিদ্ধ কাজ করছে। ঠিক যেমন উট একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসে
এবং অন্যত্র বসতে চায় না।
২) কেউ যদি
সিজদার সময় উটের মতো আচরণ করে, অর্থাৎ আগে হাঁটু রাখে, পরে হাত রাখে।
*তবে দ্বিতীয়
অর্থ এখানে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এতে
“স্থান নির্ধারণ” প্রসঙ্গ বোঝায় না। সুতরাং অধিকাংশ আলেম প্রথম অর্থকেই গ্রহণ
করেছেন।
🎉 ইমাম ইবন হজর (رَحِمَهُ
ٱللّٰهُ) বলেন:
❝এর নিষেধাজ্ঞার কারণ হলো—এতে লোক
দেখানো, অহংকার, নিজের প্রশংসা লাভের মনোভাব, কুসংস্কার ইত্যাদির জন্ম হতে পারে,
যা ইবাদতের খালিস নিয়ত নষ্ট করতে পারে।❞
📚 রেফারেন্স: [ফাতহুল বারী,
১/৫২]
🎉ইমাম শাওকানী বলেন:
❝এমন নির্দিষ্ট জায়গা না করার মধ্যে
আরেকটি হিকমত হলো: মুসল্লিকে যেন বহু স্থানে সেজদা করার সুযোগ দেওয়া হয়—যাতে
প্রতিটি জায়গা কিয়ামতের দিন সাক্ষী হতে পারে।❞
📚 রেফারেন্স: [নাইলুল আওতার, অনুবাদসহ]
🕋 নির্দিষ্ট
স্থানে সালাত আদায়ের কুফল ও হিকমত:
উলামায়ে কেরাম এই নিষেধের
বিভিন্ন হিকমত এবং এর থেকে উদ্ভূত কিছু খারাপ পরিণতি উল্লেখ করেছেন:
🌿
১. ইবাদতের স্বাদ ও মিষ্টতা হারানো:
নির্দিষ্ট স্থানে বারবার সালাত আদায় করার কারণে ইবাদতটি অভ্যাসে পরিণত হতে পারে,
যার ফলে ইবাদতের প্রকৃত স্বাদ ও মিষ্টতা হারিয়ে যায়।
🌿
২. রিয়া (লোক দেখানো) ও প্রসিদ্ধি: এতে
রিয়া এবং প্রসিদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। যেমন, মানুষ বলতে পারে, "এটা তো অমুকের
সালাতের স্থান।"
🌿
৩. অন্যের অধিকার খর্ব করা: কখনও কখনও এই
অভ্যাস অন্যকে ওই স্থানে সালাত আদায় করা থেকে বঞ্চিত করতে পারে, যা অন্যের প্রতি
জুলুম।
🎉হাফিয
ইবন হাজার (রহ.) বলেন: "এর হিকমত হলো: এটি
প্রসিদ্ধি, রিয়া, সুম'আহ (শুনানো), অভ্যাস ও কামনা-বাসনার দাসত্বের দিকে নিয়ে
যেতে পারে। আর এসবই মারাত্মক বিপদ, যা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা আবশ্যক।"
🎉শাইখ
জামাল উদ্দীন আল-কাসিমী (রহ.) বলেন:
"কিছু জামা'আত আদায়কারী একটি
নির্দিষ্ট স্থান বা কোণ পছন্দ করে, হয় ইমামের পেছনে, বা মিম্বরের পাশে, বা তার
সামনে, বা দেয়ালের ডান বা বাম পাশে, অথবা শেষ প্রান্তে উঁচু সুফফাতে। তারা সেখানে
ছাড়া ইবাদত করতে বা অবস্থান করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। যদি তারা দেখে যে কেউ
তাদের আগে সেখানে বসেছে, তবে হয়তো তাকে সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য করে, কারণ
স্থানটি তাদের জন্য সংরক্ষিত।
অথবা তারা ক্রুদ্ধ হয়ে চলে যায় বা 'লা
হাওলা ওয়া লা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ' বা 'ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি
রাজি'উন' পাঠ করে। এমনকি তারা ওই স্থানে অবস্থানকারীকে আচমকা বলতে পারে যে, এই
স্থানটি তাদের বহু বছর ধরে নির্দিষ্ট! আর কখনও কখনও অজ্ঞ ইবাদতকারীদের মধ্য থেকে
তাদের সঙ্গীদের সাহায্যে তাকে সেখান থেকে উঠিয়ে দিতে পারে।
এছাড়া আরও অনেক মূর্খতা রয়েছে, যা অধিকাংশ
মসজিদকে গ্রাস করেছে। এটা গোপন নয় যে, মসজিদের কোনো নির্দিষ্ট স্থানের প্রতি
ভালোবাসা অজ্ঞতা, রিয়া বা সুম'আহ থেকে জন্ম নেয়, যেন মানুষ বলে: 'সে তো অমুক
স্থানে ছাড়া সালাত আদায় করে না,' অথবা 'সে তো প্রথম কাতারের লোক।' এই ধরনের
খেয়াল বা ভালোবাসা আমলকে নষ্ট করে দেয়, আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।
যদি এই নির্দিষ্ট স্থান গ্রহণকারী ব্যক্তি
এমন উদ্দেশ্য নাও করে, তবুও সে ইবাদতের স্বাদ হারায় অতিরিক্ত অভ্যস্ততার কারণে
এবং এই স্থানের প্রতি অত্যধিক আগ্রহের কারণে, যার ফলে ওই নির্দিষ্ট স্থানটি ছাড়া
তাকে মসজিদে আর কিছুই টানে না। অথচ এ থেকে নিষেধ এসেছে।"
📚 রেফারেন্স:
[ তার "ইসলাহুল মাসাজিদ মিনাল বিদা'ই ওয়াল আওয়া'ইদ" গ্রন্থে]
🎉
শাইখ আলবানী (রহ.) আল-কাসিমী (রহ.) এর কথার উপর মন্তব্য করে বলেন: "আমি একজন সাধারণ মানুষ দেখেছি, যে ইমামের ঠিক পেছনে ছাড়া সালাত আদায় করে না। সে এক চুল পরিমাণও ডানে বা বামে সরে না। যদি কোনো আলেমও তাকে সেই স্থানে বাধা দেয়, তবে সে এমনভাবে তাকায় যা তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।"
🎉শাইখ
আব্দুল্লাহ আল-ফাওজান বলেন:
"রাসূলুল্লাহ (সা.) নিষেধ
করেছেন যে, মানুষ যেন মসজিদে একটি নির্দিষ্ট স্থানকে উটের মতো অভ্যাসে পরিণত
করে... মানুষ কর্তৃক মসজিদের একটি নির্দিষ্ট স্থানকে আঁকড়ে ধরা ইবাদতের স্বাদ
কেড়ে নিতে পারে; কারণ এর প্রতি অতিরিক্ত মোহ ও আগ্রহের কারণে।
এছাড়াও, এটি
প্রসিদ্ধি, রিয়া এবং সুম'আহের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আর এতে কিয়ামতের দিন তার
পক্ষে সাক্ষ্যদানকারী ইবাদতের স্থানগুলো বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগও নষ্ট হয়। কিছু
নির্দিষ্ট স্থান আঁকড়ে ধরা ব্যক্তি অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে যদি তাকে তার
স্থানে দেখে, এবং হয়তো তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য করে বা তার উপর বিরক্ত
হয়।"
📚 রেফারেন্স:
[ তাঁর "আহকাম হুযুরিল মাসাজিদ" গ্রন্থে]
🎉 মসজিদ ও নামায পড়ার
জায়গা সম্পর্কিতঃ স্বালাতে মুবাশ্শির : আব্দুল হামিদ ফাইজি
আল মাদানী এর বই থেকে।
মহানবী (ﷺ) বলেন, “---আর সারা পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ (নামাযের জায়গা) এবং
পবিত্রতার উপকরণ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তির নিকট
যে কোন স্থানে নামাযের সময় এসে উপস্থিত হবে, সে যেন সেখানেই নামায পড়ে নেয়।”
1.
📚 রেফারেন্স: (বুখারী ৪৩৮নং,
মুসলিম প্রমুখ)
কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সারা পৃথিবীর (সমস্ত জায়গাই) মসজিদ
(নামায ও সিজদার স্থান)।
2.
📚 রেফারেন্স: [আবূদাঊদ, সুনান,
তিরমিযী, সুনান, দারেমী, সুনান, মিশকাত ৭৩৭নং)]
🌿 একদা আবূ যার (রাঃ) মহানবী (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, পৃথিবীতে
সর্বপ্রথম কোন্ মসজিদ স্থাপিত হয়? উত্তরে তিনি বললেন, “হারাম (কা’বার) মসজিদ।”
আবূ যার বললেন, তারপর কোন্টি? তিনি বললেন, “তারপর মসজিদুল আকসা।” আবূ যার বললেন,
দুই মসজিদ স্থাপনের মাঝে ব্যবধান কত ছিল? তিনি বললেন, “চল্লিশ বছর। আর শোন, সারা
পৃথিবী তোমার জন্য মসজিদ। সুতরাং যেখানেই নামাযের সময় এসে উপস্থিত হবে, সেখানেই
নামায পড়ে নেবে।”
3.
📚 রেফারেন্স: (বুখারী, মুসলিম,
মিশকাত ৭৫৩নং)
নির্মিত গৃহ্ মসজিদ ছাড়া অন্য স্থানেও নামায পড়ার বৈধতা
উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার জন্য এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য।
4.
লিনংক[ https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=19§ion=224 ]
🎉 ফরয সালাতের জামাতের শেষে সুন্নাত সালাত মসজিদে আদায় করলে ফরযের
স্থান থেকে আগে-পিছে বা ডানে-বামে সরে সুন্নাত আদায় করা উত্তম।
🎉 ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) স্পষ্টভাবেই উল্লেখ করেছেন যে, ইমামের জন্য যে স্থানে
দাঁড়িয়ে ফরয পড়েছেন সেই স্থানে দাঁড়িয়ে সুন্নাত আদায় করা মাকরূহ। মুক্তাদির জন্য স্থান
পরিবর্তন উত্তম, তবে একই স্থানে সুন্নাত পড়লে মুক্তাদী গোনাহগার হবেন না।
5. 📚 রেফারেন্স: [রাহে
বেলায়াত তৃতীয় অধ্যায় - দৈনন্দিন যিকর ওযীফা জামাতে সালাত আদায়ের কতিপয়
অবহেলিত সুন্নাত, Abdulla Jahangir Rah:]
🕋 নফল সালাতের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট স্থানের অনুমতি:
দ্বিতীয়ত:
নফল সালাতের ক্ষেত্রে মসজিদে একটি নির্দিষ্ট স্থানে সালাত আদায় করা জায়েজ।
দলিল:
ইয়াযীদ ইবন আবি উবাইদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: "আমি সালামা ইবনুল আকওয়া' (রা.)
এর সাথে আসতাম, তিনি কুরআনের পাশে যে স্তম্ভটি আছে, তার কাছে সালাত আদায় করতেন। আমি
বললাম: হে আবু মুসলিম, আমি দেখি আপনি এই স্তম্ভের কাছে সালাত আদায় করতে আগ্রহী। তিনি
বললেন: আমি নবী (সা.) কে এর কাছে সালাত আদায় করতে আগ্রহী দেখেছি।"
📚 রেফারেন্স: (বুখারী, হাদীস: ৫০২; মুসলিম, হাদীস:
৫০৯)।
ü ইবন রজব
(রহ.)
"ফাতহুল বারী" (২/৬৪৪-৬৪৮) গ্রন্থে বলেন: "এই হাদীসে প্রমাণ রয়েছে
যে, নফল সালাতের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি মসজিদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে সালাত আদায়
করতে অভ্যস্ত হলে দোষ নেই। একটি বর্ণনায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই
সালাতটি নফল ছিল। আর পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পুরুষের জন্য মসজিদে একটি
স্থানকে অভ্যাসে পরিণত করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে... এরপর তিনি পূর্বে বর্ণিত
হাদীসটি উল্লেখ করে তার সনদ নিয়ে কথা বলেছেন এবং বলেছেন: আমাদের সঙ্গীরা নিষেধের
হাদীসকে ফরয সালাতের সাথে এবং অনুমতির হাদীসকে নফল সালাতের সাথে সম্পর্কিত
করেছেন।"
🕋 ঘরের ক্ষেত্রে:
এই বিধান শুধুমাত্র মসজিদের জন্য প্রযোজ্য। ঘরের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি নিজের ঘরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে সালাত আদায় করতে চাইলে কোনো সমস্যা নেই।
দলিল: উতবান ইবন মালিক (রা.) এমনটি করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে সমর্থন করেছেন।
📚 রেফারেন্স:
(বুখারী, হাদীস: ৪২৪; মুসলিম, হাদীস: ৩৩)।
🌿
নবী (সা.) তাঁর "শারহু মুসলিম" (১৫/১৬১)
গ্রন্থে বলেন: "এর মধ্যে প্রমাণ রয়েছে যে, ঘরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে সালাত
আদায় করতে অভ্যস্ত হওয়া জায়েজ। তবে মসজিদে নিষেধ করা হয়েছে রিয়া ইত্যাদি
আশঙ্কায়।"
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
ভাল জানেন।
📚 রেফারেন্স:সূত্র:
ইসলাম সুওয়াল ও জাওয়াব ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
📝 একটি হাদিসের
ব্যাখ্যা ও প্রাসঙ্গিকতা:
🌿 ১.
হাদীসের প্রেক্ষাপট ও
বিধান: এই হাদীসটি নফল
সালাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সালামা ইবনুল আকওয়া' (রা) মসজিদে
একটি নির্দিষ্ট স্তম্ভের কাছে নফল সালাত আদায় করতে আগ্রহী ছিলেন কারণ তিনি নবী
(সা) কে সেখানে নফল আদায় করতে দেখেছেন। এর দ্বারা বোঝা যায় যে, নফল সালাতের জন্য মসজিদে একটি
নির্দিষ্ট স্থানকে বেছে নেওয়া জায়েজ, যদি এর পেছনে কোনো শরীয়তসম্মত কারণ বা
নবীজির সুন্নাহর অনুসরণ থাকে।
🌿 ২.
ফরয সালাতের পর স্থান
পরিবর্তনের সুন্নাহ: পূর্বে উল্লেখিত হাদীস (মুআবিয়া রা. থেকে
বর্ণিত, মুসলিম: ৮৩৪) এবং উলামায়ে কেরামের ব্যাখ্যা অনুসারে, ফরয সালাতের পর সুন্নাত বা নফল সালাত
আদায়ের জন্য স্থান পরিবর্তন করা সুন্নাহসম্মত। এর উদ্দেশ্য হলো
ফরয ও নফল সালাতের মধ্যে পার্থক্য করা এবং বেশি স্থানে সিজদার চিহ্ন রাখা।
🌿
৩. উভয় হাদীসের
সমন্বয়: উলামায়ে কেরাম এই দুটি ধরনের হাদীসের মধ্যে সমন্বয়
সাধন করেছেন:
🌿
ফরয সালাতের ক্ষেত্রে: ফরয সালাতের জন্য মসজিদে কোনো
নির্দিষ্ট স্থানকে অভ্যাসে পরিণত করা মাকরূহ (অপছন্দনীয়)। কারণ এটি রিয়া (লোক
দেখানো) বা অন্যকে বাধা দেওয়ার মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
🌿
নফল সালাতের ক্ষেত্রে: নফল সালাতের জন্য মসজিদে কোনো
নির্দিষ্ট স্থান বেছে নেওয়া জায়েজ, বিশেষত যদি ওই স্থানে নবী (সা)-এর নফল
আদায়ের কোনো প্রমাণ থাকে। যেমন, মদিনার মসজিদে নববীতে 'রওজাতুল জান্নাহ' নামক
স্থানে সালাত আদায়ের বিশেষ ফজিলত রয়েছে।
🕋 এটি কি বাধ্যতামূলক?
না, ইয়াযীদ ইবন
আবি উবাইদের হাদীসটি বাধ্যতামূলক
কোনো নিয়ম নয়। এটি কেবল একটি বিশেষ ঘটনা যেখানে সালামা ইবনুল
আকওয়া' (রা) নবী (সা)-এর অনুসরণ করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে নফল সালাত আদায়
করতেন। এর অর্থ এই নয় যে, প্রত্যেককে মসজিদে নফল সালাত আদায়ের জন্য একটি
নির্দিষ্ট স্থান বেছে নিতে হবে বা সেখানেই আদায় করতে হবে।
🕋 কোনটি
সুন্নাহ: স্থান ত্যাগ করা নাকি নির্দিষ্ট স্থানে আদায়?
🎉 ফরয সালাতের ক্ষেত্রে:
ফরয সালাতের জন্য নির্দিষ্ট
স্থানে সালাত আদায় করা সুন্নাহ বিরোধী এবং মাকরূহ। ফরয সালাতের পর
স্থান পরিবর্তন করা সুন্নাহ
সম্মত।
🎉 নফল সালাতের
ক্ষেত্রে:
সর্বোত্তম সুন্নাহ হলো
ঘরে নফল সালাত আদায় করা।
যদি মসজিদে নফল আদায় করতেই হয়, তাহলে
ফরযের স্থান থেকে সরে গিয়ে
আদায় করা উত্তম।
তবে,
যদি কোনো নির্দিষ্ট স্থানে
নবী (সা)-এর নফল আদায়ের প্রমাণ থাকে এবং সেই স্থানটি বেছে নেওয়া হয়, তাহলে তা জায়েজ
ও মুস্তাহাব (পছন্দনীয়) হতে পারে, কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়।
🎉
সারসংক্ষেপ: আপনার উল্লিখিত হাদীসটি নফল সালাতের
ক্ষেত্রে একটি বিশেষ উদাহরণ। এর দ্বারা মসজিদের নির্দিষ্ট স্থানে ফরয সালাত আদায়
করা বা স্থান পরিবর্তন না করাকে বৈধতা দেওয়া হয় না। বরং, ফরয সালাতের পর স্থান
পরিবর্তন করা বা ঘরে নফল আদায় করা উভয়ই সুন্নাহসম্মত এবং অধিক উত্তম।
1.
📚 রেফারেন্স:
https://islamqa.info/ar/answers/
222455/كراهة-تخصيص-مكان-معين-في-المسجد-لا-يصلي-الفريضة-الا-فيه
The
post was created by Rasikul
India
PDF
generated by👋 রাসিকুল ইসলাম
0 Comments