Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

✅ বিবাহ পড়ানোর সুন্নতি পদ্ধতিঃ

  বিবাহ পড়ানোর সুন্নতি পদ্ধতিঃ

📚কুরআন, সহীহ সুন্নাহ ও সালাফদের দৃষ্টিতে দলীলসহ বিবরণ।

বিবাহ পড়ানোর সুন্নাতী পদ্ধতি হ’ল, প্রথমে বিবাহের খুৎবা পড়তে হবে, অতঃপর কিছু কথার মাধ্যমে বিবাহ বাস্তবায়ন করা।

কাজেই খুৎবা পড়ার পর মেয়ের পিতা বা অভিভাবক বা তাদের উপস্থিতিতে অন্য কেউ বরের সামনে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বলবেন, আমার মেয়ে ওমুক এতো নগদ ও এতো বাকী মোহরের বিনিময়ে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাযী তুমি তাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করো। তখন সে মেয়ের ওলী ও দুজন সাক্ষীকে শুনিয়ে বলবে, ‘ক্বাবিলতু’ (আমি গ্রহণ করলাম)।

এরূপ তিনবার হওয়া ভালো।


উত্তরে ছেলে বলবে, ‘আমি কবুল করলাম’ বা সম্মতিসূচক আল-হামদুলিল্লাহ বলবে। এভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়ে যাবে। অতপর ওলীসহ অন্যরা তাদের মঙ্গলের জন্য নিম্নের দু’আ পাঠ করবে।

আবূ হুরায়রা রযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো ব্যক্তির বিবাহ সম্পাদনকালে বলতেন,

 

উচ্চারণ:বা-রাকাল্লুহ লাকা ওয়া বা-রাকা আলাইকুমা ওয়া জামাআ বায়নাকুমা ফী খয়রিন।

‘আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন ও তোমাদের উভয়কে বরকত দান করুন। তিনি তোমাদের উভয়ের মাঝে দাম্পত্য মিলন কল্যাণমণ্ডিত করুন’।

উল্লেখ্য যে, বিবাহের খুৎবা দাঁড়িয়ে দেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।

তাছাড়া কনের কাছে গিয়ে বিবাহ পড়ানো বা তার জবানবন্দী গ্রহণেরও কোনো প্রমাণ নেই। বরং কনের অনুমতি অবিভাবক নিবে। সমাজে প্রচলিত এ সকল প্রথা মানব রচিত। যার কোনো শারঈ ভিত্তি নেই।


[📚 সূরা আলে ইমরানের ১০২, আন-নিসার ১ নং, আল-আহযাবের ৭০-৭১, (দারেমী, হা/২২০২; ইবনু মাজাহ, হা/১৮৯২; আবূ দাউদ, হা/২১১৮; নাসাঈ, হা/১৪০৪; মিশকাত, হা/৩১৪৯, ২৪৪৫)। , (তিরমিযী,২৪৪৫)। (মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৯৫৭; তিরমিযী, হা/১০৯১; আবূ দাউদ, হা/২১৩০; ইবনু মাজাহ, হা/১৯০৫; মিশকাত হা/২৪৪৫)। (ইবনু মাজাহ, হা/১৮৯২; আবু দাউদ,হা/২১১৮; নাসাঈ, হা/১৪০৪; দারেমী, হা/২২০২; মিশকাত, হা/৩১৪৯; আলে ইমরান, ৩/১০২; আন-নিসা, ৪/১; আল-আহযাব, ৩৩/৭০-৭১)|

উল্লেখ্য যে, বিবাহ বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো ১. মেয়ের ওলী বা অভিভাবকের অনুমতি (আবু দাউদ,, হা/২০৮৫; মিশকাত, হা/৩১৩০)। ২. কন্যার সম্মতি বা অনুমতি (সহীহ বুখারী, হা/৫১৩৬; সহীহ মুসলিম, হা/১৪১৯; মিশকাত, হা/৩১২৬)।]

সালাফ: ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল (আল-ইক্বনা: ৩/১৬২; কাশশাফুল কেনা: ৫/২১); ইমাম শাফি’ঈ (আল-উম্ম: ৫/৭); ইবনে কুদামাহ (আল-মুগনী: ৭/৭৪) 

 


 ১. বিবাহ বা ‘নিকাহ’ পড়ানোর সংজ্ঞা ও গুরুত্বঃ

🔹কুরআন:

“তোমরা নারীদের মধ্যে যাকে পছন্দ করো, তাদের সঙ্গে বিবাহ করো।”

📚সূরা আন-নিসা: আয়াত ৩

🔹ইসলাম বিয়ে (নিকাহ)-কে একটি ইবাদত ও সুন্নাহ হিসেবে নির্দেশ দিয়েছে, যা সামাজিক, মানসিক ও ধর্মীয় পূর্ণতা দেয়।


🕌 ২. বিবাহ সম্পাদনের জন্য শর্তসমূহ (সুন্নাহ অনুযায়ী)

📌 প্রথমত: ইজাব ও কাবুল (প্রস্তাব ও গ্রহণ)

ইজাব: কনের অভিভাবক বা প্রতিনিধি বলেন: “আমি অমুক মেয়েকে আপনার সঙ্গে বিয়ে দিলাম।”

কাবুল: বর বলেন: “আমি তাকে গ্রহণ করলাম।”

📗হাদীসঃ নবীনিজে ফাতিমা (র.আ)-এর বিয়েতে এই ইজাব-কাবুল পদ্ধতি অবলম্বন করেন।

📚 ইবনু মাজাহ, হাদীস: ১৮৮১ (সহীহ), (দারেমী হা/২২০২, ২২৭৭ মিশকাত হা/৩১৪৯, সনদ সহীহ)।

 

📌 দ্বিতীয়ত: ওয়ালী (অভিভাবক) থাকা আবশ্যকঃ

ওয়ালী ছাড়া কোনো বিয়ে নেই।

📚 তিরমিযী: ১১০১, আবু দাউদ: ২০৮৫ – সহীহ, সহীহুল জামে' – হাদীস: ৭৫৫৬

 

🟢কনে নিজে নিজের বিয়ে করতে পারে না; তার বৈধ অভিভাবক (ওয়ালী) থাকতে হবে।

📌 তৃতীয়ত: দুইজন সাক্ষী থাকাঃ

“ওয়ালী ও দুটি সাক্ষী ছাড়া বিয়ে সহীহ হয় না।”

স্বামীর গ্রহণ এবং ৪. দু’জন সাক্ষী।

দুইজন মুসলিম, বালেগ, ন্যায়বান পুরুষ সাক্ষী আবশ্যক।

📝আলবানী সহীহ বলেছেন। , (ইরওয়াউল গালীল: ১৮৩৯), 📚 ইবনু হিব্বান, হাদীস: ৪০৫৫

📌 চতুর্থত: মহর নির্ধারণ

বর কর্তৃক স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত হক

বেশি বা কম হতে পারে, চুক্তিভিত্তিক

মহর ঘোষণাও সুন্নাহ, তবে তাৎক্ষণিক দেওয়া আবশ্যক নয়

📚 সূরা নিসা: ৪

“নারীদের তাদের মহর খুশিমনে দাও।”


🕋 ৩. বিবাহের সময় খুতবা দেওয়া – সুন্নতি পদ্ধতি

 বিবাহ পড়ানোর সুন্নাতী পদ্ধতি হ’ল, প্রথমে বিবাহের খুৎবা পড়তে হবে।

নবী  বিবাহের সময় বিশেষ খুতবা পড়তেন। এটি সুন্নাহ।

📚সহীহ মুসলিম: হাদীস- ৮৬৮

🔹খুতবাতুন নিকাহ (সুন্নাহ খুতবা):

কোন বিয়েতে খুৎবা পূর্বে পাঠ করা না হ’লে ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) সে বিবাহ অনুষ্ঠান ত্যাগ করতেন।

 

(আবুন নাজা, আল-ইক্বনা’৩/১৬২; বাহূতী, কাশশাফুল কেনা’ ৫/২১)।

🌟৪. কে বিয়ে পড়াবে?

ইসলামি জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তি (আলেম)

ন্যায়বান অভিভাবক বা প্রতিনিধি (ওয়ালী)

প্রয়োজনে বর-কনে একে অপরকে ওয়াকালত দিতে পারে – তবে প্রকাশ্য সাক্ষীর উপস্থিতিতে।

📚 দলীল: সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২১৯২


🌟৫. বিবাহের পর ওয়ালিমা করা – সুন্নাহ।

“আবদুর রহমান ইবন আওফ (র.আ) যখন বিয়ে করলেন, নবী  বললেন– একটা ছাগল দিয়েই হোক, ওয়ালিমা করো। 

📚 সহীহ বুখারী: ৫১৭২

🔹ওয়ালিমা বিয়ের পর বর পক্ষ কর্তৃক খুশির মেজাজে খাবার পরিবেশন।


📚 সালাফদের দৃষ্টিতে:

 ইমাম শাফি'ঈ (রহ.) বলেন:

যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে, ওয়ালী ও সাক্ষীসহ বিয়ে করে এবং খুতবা পাঠ করে, সে সুন্নাহ অনুযায়ী বিয়ে করেছে।

📚আল-উম (৫/৭)

 ইবনে কুদামাহ (রহ.) বলেন:

ইজাব-কাবুল, ওয়ালী ও সাক্ষী ছাড়া বিয়ে বাতিল।

📚 আল-মুগনী (৭/৭৪)

 উপসংহার:

বিয়ে পড়ানো ইবাদত ও সুন্নাহর অংশ।

লোক দেখানো অনুষ্ঠান নয়; বরং সরলতা, তাওহীদ ও সুন্নাহর আলোকে করা উচিত।

সালাফগণ সবসময় সহজভাবে সুন্নাহর উপর বিয়ে সম্পাদন করতেন।

সকল কুসংস্কার, বিদআত, গান-বাজনা ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা ফরজ।

 

The post was created by Rasikul India

🌟 প্রচারে- রাসিকুল ইসলাম


Post a Comment

0 Comments