কি ভাবে খারেজীদের চিনবেন? পর্ব ২
আসসালা-মু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহু।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা-র জন্য এবং অসংখ্য সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশেষ নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ-এর প্রতি।
► ওয়া'বাদ,
আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি শায়খ ফায়সাল বিন কাজ্জার কর্তৃক রচিত "খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্য" সম্বলিত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধের দ্বিতীয় পর্ব।
উল্লেখ্য যে, যেকোন আল্লাহর বান্দা কপি করতে চাইলে তা কোনরুপ কাটছাট ছাড়াই অনুবাদিত আর্টিকেল-টি যেন হবহু কপি করেন!
জায্বাকুমুল্লাহ।
-● বিঃদ্রঃ
অনুগ্রহ পূর্বক ১ম পর্বের ৩ নাম্বার পয়েন্টটা মনে রাখবেন যেখানে বলা হয়েছিল যে,
আমি এখানে যতগুলো বৈশিষ্টের কথা উল্লেখ করেছি, আমাদের সময়ে খারেজিদের ঘটানো অন্ততপক্ষে ৫টি (আমি আবারও বলছি, অন্ততপক্ষে ৫টি) বড় ধরণের ঘটনায় তার প্রত্যেকটি প্রকাশ পেয়েছে, যার ফলে এখানকার বর্ণনার সাথে তাদের মিলিয়ে নেয়া খুব সহজ এবং বাস্তবসম্মত হবে। আপনি যেকোনো সংবাদমাধ্যম অথবা যারা ঘটনাস্থলে জুলুমের শিকার হচ্ছে তাদের সাথে কথা বলেও এগুলোর ব্যাপারে জানতে পারবেন। সুতরাং আপনি যখন আজকের খারেজিরা যা করে তা সম্পর্কে পড়বেন এবং এই পোস্টে বর্ণিত বৈশিষ্টগুলোর সাথে তাদের কাজ মিলিয়ে দেখবেন তখন আপনি এই দুইয়ের মধ্যে হুবহু মিল খুঁজে পাবেন।
এবং আরও মনে রাখবেন:
নিম্নের বৈশিষ্টগুলো থেকে দুই একটি কারও মধ্যে থাকলেই সে খারেজি হয়ে যায় না। এমনটা মনে করা হলে তা হবে ভুল ধারণা। তবে, গত কয়েক দশক ধরে যা ঘটছে এবং এখন যা কিছু আমাদের চোখের সামনে ঘটে চলেছে তার আলোকে, এই বৈশিষ্টগুলোর অনেকগুলো সম্মিলিত হলে তা সুনিশ্চিতভাবে খাওারিজদের পরিচয় বহন করে। আর তবুও যদি কেউ তর্কের খাতিরে এগুলো মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে যেমনটা এই ডকুমেন্ট এর শুরুতে দেখানো হয়েছে, এরকম উচ্চমানের ফিতনা সৃষ্টিকারীদের হত্যা করা ওয়াজিব।
সুতরাং আর কালক্ষেপণ না করে, আসুন আমরা মুল আলোচনা শুরু করি।
■ চিহ্নিতকারী বৈশিষ্ট্যঃ (০১)
ইসলামের দলিলাদি নিজে নিজে ব্যাখ্যা করাঃ
খাওয়ারিজদের মধ্যে উপস্থিত সবচেয়ে বিপজ্জনক, সবচেয়ে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত এবং তাদের একান্ত নিজস্ব বৈশিষ্ট হচ্ছে যে তারা কখনোই সালাফদের এবং উলামাদের উপদেশ অনুসরণ করবে না। কখনোই না, দরকার হলে তারা ১০ হিজরি থেকে ৮০০ হিজরি পর্যন্ত প্রতিটি লোককে প্রত্যাখ্যান করবে যদি সেসব বক্তব্য তাদের নিজস্ব ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে যায়। তারা আধুনিক কালের অথবা ১৯ শতকে করা ব্যাখ্যাকে আঁকড়ে ধরে থাকবে কেননা এগুলো তাদের দৃষ্টিকোণের সাথে মিলে যায় এবং তারা নির্লজ্জভাবে সালাফদের মতবাদকে অস্বীকার করবে, যতই আপনি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করুন না কেন।
✍ উবাইদুল্লাহ ইবনে আবু রাফি বর্ণনা করেছেন: খারেজিরা আলি রাঃ এর সাথে বের হয়ে আসলো, এবং তারা বলল:
لَا حُكْمَ إِلَّا لِلَّهِ
আল্লাহর হুকুম ব্যতীত কোন হুকুম চলবে না (১২:৪০)
আলি রাঃ বললেন:
كَلِمَةُ حَقٍّ أُرِيدَ بِهَا بَاطِلٌ
কথাটি সত্য, কিন্তু একে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল জায়গায় প্রয়োগ (অথবা ভুল ব্যাখ্যা) করা হয়েছে।
[রেফ: সহীহ মুসলিম ১০৬৬;]
✍ ইমাম আল-নববী ব্যাখ্যা করেছেন: অর্থাৎ, তাদের বক্তব্যের সারকথা সত্যি ছিল। আল্লাহ্ বলেছেন:
আল্লাহর হুকুম ব্যতীত কোন হুকুম চলবে না [১২:৪০] অবশ্য, তারা এটা দিয়ে যা বুঝিয়েছিল, তা ছিল আলী রাঃ এর সমঝোতাকে প্রত্যাখ্যান করা।
[রেফ:শারহ সহীহ মুসলিম ৭:১৫২]
✍ আলী রাঃ কর্তৃক অপব্যাখ্যার খণ্ডন করা সম্পর্কে রাসুল সাঃ আগেই ভবিষৎবাণী করে গেছেন।
سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ يَقُولُ: كُنَّا جُلُوسًا نَنْتَظِرُ رَسُولَ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَخَرَجَ عَلَيْنَا مِنْ بَعْضِ بُيُوتِ نِسَائِهِ،
قَالَ: فَقُمْنَا مَعَهُ، فَانْقَطَعَتْ نَعْلُهُ، فَتَخَلَّفَ عَلَيْهَا عَلِيٌّ يَخْصِفُهَا،
فَمَضَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَضَيْنَا مَعَهُ، ثُمَّ
قَامَ يَنْتَظِرُهُ وَقُمْنَا مَعَهُ، فَقَالَ: " إِنَّ مِنْكُمْ مَنْ يُقَاتِلُ
عَلَى تَأْوِيلِ هَذَا الْقُرْآنِ، كَمَا قَاتَلْتُ عَلَى تَنْزِيلِهِ "، فَاسْتَشْرَفْنَا
وَفِينَا أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ فَقَالَ: " لَا، وَلَكِنَّهُ خَاصِفُ النَّعْلِ
". قَالَ: فَجِئْنَا نُبَشِّرُهُ، قَالَ: وَكَأَنَّهُ (1) قَدْ سَمِعَهُ (2)
আবু সাইদ আল-খুদরি রাঃ বর্ণনা করেন: একবার আমরা বসে আল্লাহ্র রাসুল সাঃ এর জন্য অপেক্ষা করছিলাম, যখন তিনি তাঁর কোন এক স্ত্রীর ঘর থেকে আসলেন। আসার পথে, তাঁর জুতা ছিড়ে গেল এবং আলি রাঃ থেমে তা মেরামত করতে লেগে গেলেন আর রাসুলাল্লাহ সাঃ হাটতে থাকলেন, এবং আমরা তাঁর পিছনে পিছনে চললাম। তারপর এক জায়গায় তিনি আলি রাঃ এর জন্য থামলেন এবং আমরা তাঁর সাথে থামলাম। তিনি বললেন: “তোমাদের মধ্যে এমন একজন আছে যে এই কুরআনের ব্যাখ্যার স্বার্থে লড়াই করবে ঠিক যেমন আমি এর ওহীর জন্য লড়াই করেছি”। সুতরাং আমরা পরস্পর জটলা করতে লাগলাম, এবং আবু বকর আর উমার তখন আমাদের সাথে ছিলেন। কিন্তু রাসুল সাঃ বললেন: “না, সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে জুতা মেরামত করছে”। সুতরাং আমরা আলি রাঃ কে এই সুসংবাদ পৌঁছে দিলাম এবং মনে হল যে তিনিও রাসুল সাঃ কি বলেছেন তা শুনতে পেয়েছেন।
[রেফ:মুসনাদ আহমাদ (১১৭৯০); শায়েখ সু’আইব আল-আরনাউত বর্ণনাটিকে সাহিহ বলেছেন; এই বর্ণনা আরও পাওয়া যাবে: শারহ মুশকিলুল আসার, খণ্ড ১০, হাদিস নং ৪০৫৮, পৃষ্ঠা ২৩৭; তারিখ উল ইসলাম ওয়া ওয়াফিয়াত আল মাশাহির ওয়াল আ’লাম খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৬৬; শারহ আস-সুন্নাহ খণ্ড ১০, হাদিস নং ২৫৫৭, পৃষ্ঠা ২৩২-২৩৩; মুসনাদ আবু ইয়া’লা খণ্ড ২ হাদিস নং ১০৮৬ পৃষ্ঠা ৩৪১-৩৪২ এই শব্দযোগে যে আবু বকর এবং উমার রাসুল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করেন “সেই ব্যক্তি কি আমি হে আল্লহর রাসুল?”]
প্রথম দিকের খারেজিরা “আল্লাহর হুকুম ব্যতীত কোন হুকুম চলবে না” (১২:৪০) এই আয়াতের অপব্যবহার করেছিল, যেসব বিষয়ে আল্লাহ্ সন্দেহাতীতভাবে বিধান জারি করে দিয়েছেন এবং যেসব বিষয় তিনি ব্যাখ্যা, পরামর্শ, এবং মানবীয় সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য উন্মুক্ত রেখেছেন, এই দুই প্রকার বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য না করার মাধ্যমে। আলী রাঃ কার্যকরভাবে তাদেরকে কুরআন দিয়ে রদ করে দেন।
✍ ইবনে হাজার বর্ণনা করেছেন: খারেজিরা আলীকে অভিযুক্ত করল এবং তারা বলল:
انْسَلَخْتَ مِنْ قَمِيصٍ أَلْبَسَكَهُ اللَّهُ وَمِنِ اسْمٍ سَمَّاكَ اللَّهُ بِهِ
ثُمَّ حَكَّمْتَ الرِّجَالَ فِي دِينِ اللَّهِ وَلَا حُكْمَ إِلَّا لِلَّهِ
তুমি তোমার আল্লাহ্ প্রদত্ত ক্ষমতা আর আল্লাহ্ প্রদত্ত নামকে পরিবর্তন করে দিয়েছ! এরপর তুমি মানুষের বিধান দিয়ে বিচার করেছ যেখানে "আল্লাহর হুকুম ব্যতীত কোন হুকুম চলবে না”। (১২:৪০)
যখন আলি একথা শুনলেন, তিনি লোকদের জড়ো করলেন এবং সবচেয়ে বড় মুসহাফটিকে নিয়ে আসতে বললেন তারপর তিনি সেটিকে হাত দ্বারা আঘাত করতে লাগলেন এবং বলতে থাকলেন
أَيُّهَا الْمُصْحَفُ حَدِّثِ النَّاسَ
হে মুসহাফ, লোকদের সাথে কথা বল!
তারা বলল, “এটা তো কোনও মানুষ না। এ তো হচ্ছে কাগজ আর কালি। আমরা সেই বিষয়ের ব্যাপারে কথা বলছি যা এ থেকে বর্ণিত হয়েছে”। আলি তখন একটি উপমা দেয়ার মাধ্যমে তাদের যুক্তিখণ্ডন করলেন, তিনি তাদের বললেন:
كِتَابُ اللَّهِ بَيْنِي وَبَيْنَ هَؤُلَاءِ يَقُولُ اللَّهُ فِي امْرَأَةِ رَجُلٍ
وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا الْآيَةَ وَأُمَّةُ مُحَمَّدٍ أَعْظَمُ
مِنِ امْرَأَةِ رَجُلٍ وَنَقَمُوا عَلَيَّ أَنْ كَاتَبْتُ مُعَاوِيَةَ وَقَدْ كَاتَبَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُهَيْلَ بْنَ عَمْرٍو وَلَقَدْ
كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
আল্লাহ্র কিতাব আমার এবং এই লোকদের মাঝে রয়েছে। পুরুষ এবং মহিলাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেছেন: তোমরা যদি তাদের দুজনের মধ্যে বিরোধের আশঙ্কা কর, তাহলে উভয়ের পরিবার থেকে একজন করে বিচারক পাঠাও… (৪:৩৫), নিশ্চয়ই মুহাম্মাদের জাতি কোন পুরুষ আর মহিলার ব্যাপারের চাইতে বড়।
তারা আমার উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে কারণ আমি মুয়াবিয়ার কাছে পত্র দিয়েছি অথচ আল্লাহ্র রাসুল সাঃ, সুহাইল বিন আমর এর সাথে পত্রযোগে কথা বলেছিলেন: নিশ্চয়ই আল্লহর রাসুলের মাঝে তোমাদের জন্য এক চমৎকার উদাহরণ রয়েছে। (৩৩:২১)
[রেফ:সুনান আল-বায়হাকি এর ফাতহুল বারী থেকে ১৬২৩০]
✍ ইবনে হাজার বলেন:
‘তাদের ব্যাপারে বলা হত যে তারা “তেলাওয়াতকারী”, কারণ তারা অক্লান্তভাবে কুরআনের তেলাওয়াত করতো এবং ইবাদতের ক্ষেত্রে ভীষণ আন্তরিকতা দেখাত। শুধু পার্থক্য এটাই ছিল যে তারা কুরআনের প্রকৃত উদ্দেশ্যকৃত ব্যাখ্যা বাদ দিয়ে তাদের মনগড়া উপায়ে এর ব্যাখ্যা করত, তারা উদ্ধত ছিল, এবং যুহদ অবলম্বনের ক্ষেত্রে, সালাতে বিনয় (খুশু) দেখানোর ব্যাপারে। এবং এরকম অন্যান্য বিষয়ে তারা বাড়াবাড়ি করত।
[রেফ: ফাতহুল বারী, ১৫:৩৭১]
■ চিহ্নিতকারী বৈশিষ্ট্যঃ (০২):
সবার আগে তাকফির করা, আগে এবং এখনও!
তারা আল্লাহ্র রাসুলের মেয়ে জামাই, আলি রাঃকে তাকফির করেছিল এবং যত মানুষ- রাসুল সাঃ এর নাপিত এবং ওহি লেখক মুয়াবিয়া রাঃ এর সাথে তার মধ্যস্ততাকে সমর্থন দিয়েছিল তাদেরকেও। অর্থাৎ তারা চোখের নিমিষে লক্ষাধিক মুসলিমকে তাকফির করেছিল এবং আমরা দেখতে পাই যে আজকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন না, বরং আজকের পরিস্থিতিও হবহু একই! খারেজিদের একজন আলি রাঃ এর দিকে হাক ছেড়েছিল যখন তিনি ফজরের সালাত আদায় করছিলেন, এই বলে:
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ
عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
“নিশ্চয়ই তোমার প্রতি এবং তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি ওহি হয়েছে, যদি তুমি আল্লাহ্র শরীক স্থির কর তবে নিঃসন্দেহে তোমার কর্ম তো সব নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে” (কুরআন ৩৯:৬৫)
“আলি রাঃ সালাতের ভেতর থেকেই এই আয়াত দিয়ে জবাব দিলেন
فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللهِ حَقٌّ وَلاَ يَسْتَخِفَّنَّكَ الَّذِينَ لاَ يُوقِنُونَ
“অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য। যারা দৃঢ় বিশ্বাসী নয় তারা যেন তোমাকে বিচলিত না করতে পারে”। (কুরআন ৩০:৬০)
[রেফ: তাফসীর ইবনে কাসির ৬/৩২৯, তাফসীর তাবারী ২০/১২১; ফাইযান শাইখ আল-হিন্দি এর মাধ্যমে সত্যায়িত]
✍শাইখুল ইসলাম ঈমাম ইবনে তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ (যার উক্তিসমূহ তারা তাদের খেয়ালখুশির মোতাবেক অপ্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করে এবং অপপ্রয়োগ করে) বলেছেন: ‘খারেজিরাই সর্বপ্রথম মুসলিমদেরকে তাদের গুনাহের কারণে কাফের ঘোষণা করে। তারা তাদের বিদ’আতের বিরোধিতাকারী সকলকে তাকফির করত, এবং রক্তপাত ঘটানো এবং সম্পদ কেড়ে নেয়াকে তারা বৈধ করে নিয়েছিল’।
[রেফ: মাজমু আল-ফাতাওয়া ৩:২৭৯]
■ চিহ্নিতকারী বৈশিষ্ট্যঃ ০৩:
ইরাক এবং শামের সাথে তাদের সম্পর্ক এবং অত্র অঞ্চলে তাদের ধ্বংস নিয়ে আসা!
✍ ইমাম ইবনে কাসীর (যিনি প্রসঙ্গত, নিজেও একজন মুজাহিদ ছিলেন) বলেছেন:
ال الحافظ ابن كثير الدمشقي ـ رحمه الله ـ في كتابه “البداية والنهاية”(١٠/ ٥٨٤-٥٨٥)
عن ما سيفعله الخوارج بالأمة إذا قووا
إذْ لو قَووا هؤلاء لأفسدوا الأرض كلها عراقاً وشاماً، ولم يتركوا طفلاً ولا طفلة،
ولا رجلاً ولا امرأة، لأن الناس عندهم قد فسدوا فساداً لا يصلحهم إلاّ القتل جملة
“তারা (খারেজিরা) যদি কোনদিন শক্তি অর্জন করতে পারে, তাহলে তারা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে – ইরাকে, শামে, (এবং সর্বত্র)। তারা কোন ছোট বালক কিংবা বালিকাকেও রেহাই দিবে না, আর না কোন পুরুষকে বা কোন মহিলাকে ছাড়বে (তাদেরকে হত্যা করা ব্যতিত)। এর কারণ হচ্ছে তারা বিশ্বাস করে যে মানুষেরা এত খারাপ হয়ে গেছে যে কোন কিছুই আর তাদেরকে বিশুদ্ধ করতে পারবে না একমাত্র গণহত্যা ছাড়া”।
রেফ: আল-বিদায়া ওয়াল-নিহায়া (১০/৫৮৪-৫৮৫)]
✍ইবনে আসাকির বর্ণনা করেন:
ولو أمكن الله الخوارج من رأيهم لفسدت الأرض ، وقُطعت السبل ، وقُطع الحج من بيت الله
الحرام ، وإذن لعاد أمر الإسلام جاهلية ، حتى يعود الناس يسثغيثون برؤوس الجبال ، كما
كانوا في الجاهلية ، وإذن لقام أكثر من عشرة أو عشرين رجلا ليس منهم رجل إلا وهو يدعو
إلى نفسه بالخلافة ، ومع كل رجل منهم أكثر من عشرة آلاف ، يقاتل بعضهم بعضا ، ويشهد
بعضهم على بعض بالكفر ، حتى يصبح الرجل المؤمن خائفا على نفسه ودينه ودمه وأهله وماله
، لا يدري أين يسلك ، أو مع من يكون
ওয়াহব ইবনে মুনাব্বিহ বলেছেন, “আমি ইসলামের প্রথম কাল সম্পর্কে জানতাম। আল্লাহ্র কসম, খারেজিদের কোনদিন এমন একটা দল হয়নি যাদের আল্লাহ্ তাদের পাপিষ্ঠতার দরুন বিভক্ত করেননি। এমন কোনদিন হয়নি যে এদের কেউ তার মতামত ব্যক্ত করেছে আর আল্লাহ্ তার গর্দানে আঘাত পরার ব্যবস্থা করেননি। মুসলিম জাতি কোনদিনও কোন খারেজির চারপাশে ঐক্যবদ্ধ হয়নি। আল্লাহ্ যদি খারেজিদের মতামতকে শিকড় গাড়তে দিতেন, তাহলে গোটা পৃথিবী অরাজকতায় পরিপূর্ণ হয়ে যেত, রাস্তাগুলোকে বন্ধ করে দেয়া হত, আল্লাহ্র পবিত্র ঘরে হাজ্জ করতে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেত, এবং ইসলাম জাহেলিয়াতের দিকে ফেরত যেতে থাকত যতদিন না মানুষ পর্বতসমূহে গিয়ে আশ্রয় নিত যেমনটা তারা জেহেলিয়াতের সময় নিয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে যদি দশ অথবা বিশজন উঠে আসতো, তাহলে তাদের মধ্যে এমন একজনও বাকি থাকতো না যে কিনা নিজের জন্য খিলাফা দাবি না করতো, তাদের প্রত্যেকের সাথে আরও দশ হাজার লোক থাকতো আর তারা সবাই, সবার সাথে লড়াই করতো এবং সবাই সবাইকে কাফির হওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করতো, যতক্ষণ না যে ব্যক্তি মুমিন সে নিজেও নিজের ঈমান, তার জীবন, তার পরিবার, তার সম্পদের ব্যাপারে ভীত বোধ করতে শুরু করত এবং সে বুঝে উঠতে পারত না যে তার কোথাও যাওয়া উচিৎ অথবা কার সাথে তার থাকা উচিৎ”।
[রেফ: তারিখ ইবনে আসাকির, শায়খ হাতিম আল আওনি হাফিযাহুল্লাহ এর দ্বারা সত্যায়িত]
❒ মুলঃ শায়খ ফায়সাল বিন কাজ্জার।
■ ভাষান্তর ও সম্পাদনাঃ+ আখতার বিন আমীর
● সহযোগিতায়ঃ এক দ্বীনী ভাই।
সহীহ-আকিদা(RIGP)
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্ pa-1
► ২য় পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্ pai 2
► ৩য় পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্pa-3
► ৪র্থ পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্pa-4
► ৫ম পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্pa-5
► ৬ষ্ঠ পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্pa-6
► ৭ম পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্ pa-7
► ৮ম পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্ pa-8
► ৯ম পর্বঃ
খারিজি চিহ্নিতকরণ ও তাদের বৈশিষ্ট্য ৯ম ও শেষ পর্ব!
■ আরও পড়তে সকল পর্ব পেতে লিঙ্কে ক্লিক -
খারেজীদের বিভ্রান্তির মুল কারণসমুহঃ
লিংকঃ ►https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1026321017528650&id=100004522838130
► আত্নঘাতি বোমা হামলা কি জায়েজ?
আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল উছাইমিন রাহিমাহুল্লাহ -
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1110488659111885&id=100004522838130
► আত্নঘাতি হামলার বিধানঃ
আল্লামাহ সালিহ আল ফাউজান হাফিয্বাহুল্লাহ -
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1110113882482696&id=100004522838130
► নিজেকে বিস্ফোরিত করে দেয়ার বিধানঃ
শাইখ ছলেহ আল মুনাজ্জিদ হাফিয্বাহুল্লাহ -
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1112068558953895&id=100004522838130
বল,এটিই আমার পথ।স্পষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে আল্লাহর দিকে আহবান করি নিয়মিত আপডেট পাবেন- Important Knowledge= নির্ভেজাল জ্ঞান পেতে ভিজিট করুন এই সাইটে- https://sarolpoth.blogspot.com আলাদা আলাদা সাজানো আছে... আপনি চাইলে ওয়েবসাইটটি এবং লেখাগুলি,বা অন্যান্য জিনিস গুলি শেয়ার করে বন্ধুদের জানিয়ে দিতে পারেন এতে আপনার ও আমার ইনশাআল্লাহ সাদকায়ে জারিয়া হবে.ইসলামিক বই পেতে-রাসিকুল ইন্ডিয়া serch rasikulindia
0 Comments